২১৫ – এথাঁ আণ সহ্মে আহ্মে দেখী

ঝী সকলে।।
এথাঁ আণ সহ্মে আহ্মে দেখী। অমৃতেঁ সিঞ্চঊ দুই আখী।। ২
তার সব বিটপ আণিআঁ। তার মাঝেঁ রাধাক দেখিআঁ।।
বুয়িল বড়ায়ি সত্বর বচনে। জর লআঁ জাইবোঁ বিজনে।। ৩
আইহনের মাএর আদেশে। জল লআঁ রাধা গেলি পাশে।।
তা দেখি বড়ায়ির হরিষে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪

২১৬ – এবেঁ মলয় পবন ধীরেঁ বহে

এবেঁ মলয় পবন ধীরেঁ বহে। ল। মনমথক জাগাএ।। ল।।
সুগন্ধি কুসুমগণ বিকসএ। ল। ফুটি বিরহিহৃদয়ে।। ল ।। ১
তোর দরশন বিণি রাধা ল বড় বিকল কাহ্নাঞিঁ ল। তোর বিরহদহনে ।। ধ্রু
ঘর তেজি ঘোর বনে বসে কাহ্নাঞিঁ ল সুতে ধরণীশয়নে।
আহোনিশি তোর নাম সোঁঅরে ল আতি বড়ই যতনে।। ২
এবেঁ সত্বর গমন করি রাধা ল পুর কাহ্নাঞিঁর আশে।
বাসলীচরণ শিরে বন্দিআঁ ল গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৩
কোড়ারাগঃ।। একতালী।।

২১৭ – তোহ্মা না দেখিআঁ রাধা বিকল কাহ্নাঞিঁ

তোহ্মা না দেখিআঁ রাধা বিকল কাহ্নাঞিঁ । এবেঁ আহ্মাক পাঠায়িল তোর ঠাই।। ১
তোহ্মাক বুয়িল কাহ্নাঞিঁ বিনয়বচনে। বৃন্দাবন আসি মোরে দেঊ দরশনে।। ২
আহ্মার সাসুড়ী বড়ায়ি বড় খরতর। সব খন রাখে মোরে ঘরের ভিতর।। ৩
কেমনে জায়িবোঁ বড়ায়ি তার বৃন্দাবনে। মনত গুণিআঁ বোল উপায় আপণে।। ৪
ব্রত ছল করি ফুল তুলিবাক তরেঁ। বৃন্দাবন যাসি তোক কিছু নাহিঁ ডরে।। ৫
সখি সব সঙ্গে করি চলিহলি রাধা । তবেঁ আইহনের মাএ না করিব বাধা ।। ৬
ব্রতের মরম আইহনের মাএ জাণে। প্রবোধিতেঁ নারিবোঁ তাক এ সব বচনে ।। ৭
আহ্মার হৃদয়ে বড়ায়ি আছে উপাএ। সেসি প্রকারে বৃন্দাবনগতি হএ ।। ৮
রাধার বদন চুম্বী বুইল বড়ায়ি। আপণে উপায় তোহ্মে কহ মোর ঠায়ি ।। ৯
তাহাক করিব আহ্মে বড়য়ি যতনে। সুখেঁ লআঁ যাইব তোক বৃন্দাবনে।। ১0
মোর সব সখির সাসুড়ি থান গিআঁ । হেন বোল তা সমাক কিছু ভরছিআঁ।। ১১
বিকি নহে আইহনের মাএর কারণে। তাক ভরছিলেঁ বহু ঝি দহী বিকণে।। ১২
ভাল বুয়িলেঁ রাধা মোর গমন উপাএ। এখনে হেনক কাম করিতেঁ জুআএ।। ১৩
এয়ি গিআঁ সাধোঁ কাম তোর উপদেশে। বাসলী শিরে ধরী গাইল চণ্ডীদাসে।। ১৪
মালবরাগঃ।। রুপকং।। বিচিত্র লগনী।। দণ্ডকঃ।।

২১৮ – গোপকুল নঠ হএ তোহ্মার কারণে

অথাভিমন্যুজননী জরতীলপিতানুগাঃ ।
রোষাবেশবশাদ্গোপ্যস্তদূদুর্ব্বচনশুগৈঃ।।

গোপকুল নঠ হএ তোহ্মার কারণে। কুবুধি কত উপজে তোহ্মার মণে।।
আপণা সদৃশ কেহ্নে দেখ সব নারী। এ কালের বহু সব নহে সতন্তরী ।। ১
ষোল সহস্র গোপী রাধা সঙ্গে যাএ। তভোঁ তোর মণের সংশয় না পালাএ ।। ধ্রু
তোর কুবচন সব গোপীজন কহে। তাক সুণী ঘরের বাহির কেহো নহে।।
দধি দুধ ঘৃত ঘোল হাটে না বিকাএ। এবেঁ গোআলার গেল জীবন উপাএ।। ২
তোহ্মে এবেঁ গোআলত ভৈলা বড় জাতী। আজি হৈতেঁ আহ্মারা হৈলাহোঁ একমতী।।
আপণ আপণ বহু হাটক পাঠায়িব। তোহ্মার ঘরত অন্ন পাণি না খাইব ।। ৩
এ বোল সুণিআঁ ডরে আইহনের মাত্র। প্রণাম করিআঁ বুইল তা সহ্মার পাএ।।
কালি হৈতেঁ যাইবে রাধা মথুরা নগর। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবর।। ৪
গুজ্জরীরাগঃ।। যতিঃ।।

২১৯ – তোর রতি আশোআশেঁ গেলা আভিসারে

অবসরমধিগম্য সম্যগেতং
সরভসমর্ত্তিভরাদুপেতা রাধাং।
হরিচরিতবিশেষমুল্লিখন্তী
ব্যধিতমনোজবশাং রসেন বৃদ্ধা।।

তোর রতি আশোআশেঁ গেলা আভিসারে। সকল শরীর বেশ করী মনোহরে।।
না কর বিলম্ব রাধা করহ গমনে। তোহ্মার শঙ্কেতবেণু বাজাএ যতনে।। ১
কালিনীর তীরে বহে মন্দ পবনে। তোহ্মাক চিন্তিতেঁ আছে নান্দের নন্দনে।। ধ্রু
তোর তনুগত রেণু চলিল পবনে। তাহাকো করএ কাহ্ন আতি বহুমানে।।
পাখি বসিতেঁ তরুপাতচলনে। তোহ্মার গতি শঙ্কিআঁ রচয়ে শয়নে ।। ২
চাহে দশ দিশ কাহ্ন চকিত নয়নে। কত খনে আইসে রাধা এহি করী মণে।।
তেজহ সুন্দরি রাধা মুখর মঞ্জীর । সত্বরেঁ চলহ কুঞ্জ এ ঘন তিমির ।। ৩
কৃষ্ণের হৃদয়ে রাধা রতি বিপরীতে। শোভে মেঘমালে যেহেন তড়িতে।।
গলিত বসন হীন রসন জঘনে। আপণে আরোপ গিআঁ পল্লবশয়নে।। ৪
মানী বড় ভৈল কাহ্নাঞিঁ শেষ রজনী। তার পুর মনোরথ মোর বোল সুণী ।।
এবেঁ আযুগত রাধা বিলম্ব গমনে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে।। ৫
দেশবরাড়ীরাগঃ।। লঘুশেখরঃ।।

২২0 – প্রভাত সময় ভৈল সব সখিজজনে

অথাভিমন্যুজননী যানায় মথুরাং প্রতি।
আদিদেশ তরো রাধা রসালসমনা যযৌ।।

প্রভাত সময় ভৈল সব সখিজজনে। একচিত্ত যুগতী করিল সাবধানে।।
দধি দুধ ঘৃত ঘোল সাজিআঁ পসারী। রাধা সঙ্গে চলি জাই হাট মথুরা ।। ১
রাধা চলি জাএ ল চিত্তের হরিষে।
চলি জাএ গোআলিনী হাস পরিহাসে। আইহনের মাএর পাইআঁ আদেশে ।। ল ।। ধ্রু
রাধিকা লয়িল সঙ্গে সব সখীজন। মাথাত পসার লআঁ করিল গমন ।।
ডাক দিআঁ আনায়িল বড়ায়ি করি সঙ্গে ।।২
তখনে হাসিআঁ বুয়িল সহ্মাক বড়ায়ি। এবেঁসি নাতিনী সব মণে সুখ পাই।।
নানা ফুল ফুটিলছে মাঝবৃন্দাবনে। তাক পিন্ধি মথুরাক করিঊ গমনে।। ৩
এহা শুণী সহ্মে ভৈলা উল্লসিতমন। বাট কাঢ়ায়িল বড়ায়ি জাইতেঁ বৃন্দাবন।।
সহ্মাঞিঁ চলিলা বড় মনের হরিষে। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে।। ৪
কহুগুজ্জরীরাগঃ।। একতালী।।

২২১ – পথে জায়িতেঁ কথা কহে সুবুধী বড়ায়ি

পথে জায়িতেঁ কথা কহে সুবুধী বড়ায়ি। এবেঁ সুচরিত ভৈল সুন্দর কাহ্নাঞিঁ।।
বাটদাণ হাটদান আর ঘাটদানে। সব আধিকার তেজিবসে বৃন্দাবনে।। ১
এবেঁ সব লোকের সে করে উপকার। ধরম দেখিআঁ সে তেজিল পরদার।। ধ্রু
কাহাকো না বোলে কাহ্নায়িঁ এখো খরবাণী। তাহার চরিত্র এবেঁ আহ্মে ভালেঁ জাণী।।
হাটুআ লোকেরেঁ তোষে দিআঁ ফুল ফলে। আগু বাঢ়ায়িআঁ থোএ যমুনার কূলে ।। ২
বড়ই সুন্দর এবেঁ দেখি দামোদর। তাক না করিহ তোহ্মে সব কিছু ডর।।
তাহাক দেখিলেঁ মোর বোলে পায়িবেঁ সাখী।
লাভে তাক দেখিআঁ জুড়ায়িবে দুই আখী।। ৩
এ সব কথা কহে বড়ায়ি মনের উল্লাসে। সহ্মে মেলিলা গিআঁ বৃন্দাবন পাশে।।
বৃন্দাবনের ফুলে সহ্মার হৈল আশ। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাস।। ৪
ধানুষীরাগঃ।।

২২২ – একেঁ একেঁ ঋতুগণে বিলাস কৈল আপণে

অথ বৃন্দাবনাদেত্য রভসান্মধুসূদনঃ।
সখিজনবৃতাং রাধামিদমাহ মনোহরং।।

আল রাধে।
একেঁ একেঁ ঋতুগণে বিলাস কৈল আপণে কুসুমিত সব তরুগণে।
তীন ভুবন মাঝেঁ কথাঁহো না দেখিলেঁ দৈব নিয়োজন হেন থানে।।
ফুটিল গুলাল মাহ্লী মালতী মাধবী লতা লবঙ্গ দোলঙ্গ নেআলী।
শেবতী কনক যূথী সুথী কনক কেতকী পারলি দুলালী।। ১
আল রাধে।
সরস কর মন সত্বরে কর গমন দেখি আসি মোর বৃন্দাবন।
দিবস রআনী এথাঁ একোহি না জাণী নাহিঁ লাগে রবির কিরণে।। ধ্রু
আস্নই আসাঢ়িয়া ভূমিচম্পক চম্পক গন্ধটগর বনমাহ্লী।
নাগেশর কেশর আর তিণিশ শিরিষ বহুল মহুল সেআলী।।
সিঅলি কুসুম্ভ ওড় রেবতী রাঙ্গনাগর ধাতকী আমুলিঅ করবীরে।
আশোক কিংশুক চুআঁ চিতা খঞ্চী কাঞ্চন বন্ধুলী মন্দারে।।২
কুজা কুটুজ কদম্ব বাসক কেন্দু কুন্দ ধুথুর মথুর সিন্ধুবারে।
রবি লোধ ছাতীঅন ভান্টি দুধিআকন কসাল পিআল ডগরে।।
মালতী মধুকর বাড়িআল সৈনাহুল কালকাসুন্দা আসনে।
গম্ভারী গন্ধপিপ্পলী ভাঁটি ঘাটাপারলী পিপলী কাপাসি আসনে ।। ৩
ছোলঙ্গ নাগরঙ্গ কামরঙ্গ আম্বু লেম্বু ডালিম্ব জাম্বু ডালিম্ব জাম্বীর আম্বড়া।
চেরু বেরু অফেরুস জলপায়ি থেকর চালিতা তেন্তলি সাতকড়া।।
আঁওলা কমলা পাণিআল লবলী বদরী বোহারী করঞ্জকরণে।
আম্ব ডালিম্ব ডৌহাকু কুড়ুম চালনি আঁব হিঞ্চী পিআল টাভাগণে।। ৪
গুআ নারিকেল কন্ঠোআল তাল কদলক পিণ্ডখাজুর শ্রীফলে।
খিরী খাজুর বনকেন্দু মহুকুত আর যত তরু মিষ্ট ফলে।।
সুগন্ধ চন্দন ঘন রকত চন্দন বন অগথ কপিথ সুন্দরী।
খদির পিণ্ডার বর দেবদারু আগুরু নবধর সুগন্ধেসরী।। ৫
মহুল কাসিমল সরল ভালা ভিলোল চাম্ভলী সুকল লোচনে।
তেজপাত ভোজপাত চাম্পাতী চাকলি আতজিআ আপূত বণে।।
পাকড়ী নাকড়ী বন সোনাকড়ী সাহড় আঁকোড় কুহয় বহড়া।
কাঠ লাড়িকা সাজ কড়য়ি আড়য়ি রাজ আর্জুন গর্জ্জুন হরিড়া।। ৬
আকোরল জিঙ্গালরু দ্রাক্ষ সুদর্শন মাহাসুন্ধী বাজবারণে।
জয়ন্তী বিষকরঞ্জ তমাল হেন্তালপুঞ্জ পদ্মকাষ্ঠ আর ছাঞিঁয়ণে।।
লতা আম্ব কুশিআর পাকিল দ্রাক্ষা আপার লতা জাম্বু শোভে চারি পাশে।
খরমুজা কাঙ্কড়ী বাঙ্গী আমৃত কাঙ্কড়ী পেঁহুটী সাড়ার সোআশে।। ৭
কুসুমসমূহমধু পিআ মধু মধুমত্ত মধুকর নিকরে মধুর ঝঙ্কারে।
কুসুমিত লতাকুঞ্জে বেঢ়িল বিবিধ গুঞ্জে মনমথ করে ঝঙ্কারে।।
বহে সুশীতল বাএ কোকিল পঞ্চম গাএ রএ আর নানা পক্ষিগণে।
সুণে মৃগকুল বসে গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে বন্দিআঁ বাসলীচরণে।। ৮
পাহাড়ীআরাগঃ ।। যতিঃ ।।

২২৩ – বৃন্দাবন কথা শুণী বড়ায়ির মুখে

বৃন্দাবন কথা শুণী বড়ায়ির মুখে। গোআল যুবতী সব পাইল বড় সুখে।।
সহ্মাক লয়িআঁ রাধা করিআঁ যুগতী। বৃন্দাবন দেখিবারে হৈলা একমতী।। ১
রাধা সব সখি সমে করিল গমনে। তখণ সহ্মার মণে বেধিল মদনে।। ধ্রু
আতি বড় পাইল রাধা মনত হরিষে। বাট কাঢ়ায়িল বড়ায়ি বৃন্দাবন দিশে ।।
আগু করী বড়ায়িক চন্দ্রাবলী জাএ। চিত্তের হরিষে সব গোপী গীত গাএ।। ২
বৃন্দাবন জাএ রাধা রস পরিহাসে। আড় নয়নে দেখে কাহ্নাঞিঁক পাশে।।
খসাআঁ বান্ধিল পুণী কুন্তলভার। সঘন ছাড়িল রাধা হাম্বী আপার।। ৩
চুম্বন করিল রাধা সখির বদনে। ভাল গীত গাএ বুলী পড়িল মদনে।।
হেনমতেঁ গেলী রাধা মাঝবৃন্দাবনে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে।। ৪
রামরীরাগঃ।। রুপকং।।

২২৪ – হের চন্দ্রাবলী রাধা মাঝবৃন্দাবনে

অশরীররশাবেশবসাম্বীক্ষ্য রশালসঃ ।
সাকুতং মাধবঃ প্রাহ রাধিকামিদমাদরাৎ।।

হের চন্দ্রাবলী রাধা মাঝবৃন্দাবনে। কুসুমসমূহে শোভে সব তরুগণে।।
তাত সুললিত … ভ্রমরের রোল। আছুক মানুষ দেবলোক পড়ে ভোল ।।১
রাধা তোর মোর দেখি মাঝবৃন্দাবনে। আজি সে সফল হ…ন যৌবনে।। ধ্রু
শপথ করিআঁ রাধা বোলোঁ এ বচনে। তোহ্মার আন্তরে কৈলোঁ এ বৃন্দাবনে।।
একা ঠায়ি থুয়িআঁ রাধা মাথার পসার। ফুল পহ্র ফল খাঅ ত্রিভুবনে সার ।। ২
এহা বন আদভুত আছে থানে থানে। আহ্মা ছাড়ী তাক আন কেহো নাহিঁ জাণে।।
তোহ্মাক দেখাওঁ লআঁ কর আনুমতী। তথাঁক না লইহ লোক কেহো সংহতী ।। ৩
সকল শরীর মাঝেঁ তোহ্মে যেন সার। তেহ্ন সব বন মাঝেঁ এ বন আহ্মার।।
এহাত উচিত হএ তোহ্মার বিলাস। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাস।। ৪
রামিগরীরাগঃ ।। রুপকং ।।

২২৫ – তোর সঙ্গে জাইব মাঝ বনে

তোর সঙ্গে জাইব মাঝ বনে। আর সংহতী এড়িব কেনমণে।।
যত দেখ মোর সখিগণে। কাহারো ভাল নহে মণে।। ল কাহ্নাঞিঁ ।। ১
তেহ্ন কর উপায় আপণে। ভাল বোলে যেহ্ন সখিগণে।।ধ্রু
ফুঁলে ফলেঁ বৃন্দাবন শোভে। তা দেখি সহ্মাতেয়ি লোভে।।
কেহো না এড়িবে তোর লাগে। সহ্মে হয়িব তোর আগে।। ২
সামী সাসু দুইহো খরতর। আর খল সকল নগর ।।
সব তোর মোর দোষ চাহে । তেসিঁ মোর মন থীর নহে।। ৩
তোর মনে হেন পড়িহাসে। ফুল ফলের দিআঁ আশে।।
সখিগণে নেহ চারি পাশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে ।। ৪
গুজ্জরীরাগঃ ।। রুপকং ।।

২২৬ – আপণে কহিলে মোর মনের কথা

রাধা ল। আপণে কহিলে মোর মনের কথা। সুণিআঁ খণ্ডিল সব বেথা।।
ষোল সহস্র তোর সখিগণ। সহ্মার তোষিব আহ্মে মন ।। ১
রাধা ল। করিআঁ বিবিধ তনু আহ্মে দেবরাজে। বিলসিবোঁ গোপীসমাজে।। ধ্রু
চির সময় সঞ্চিত উভয় তোর মণে। খণ্ডায়িবোঁ আজি ভালমণে।।
একেঁ একেঁ রাধা যত গোপীগণ দেখী। আজি সে করায়িবোঁ তোর সখী।।২
কেহো কাহাকো যেন না করে উপহাস। তেহ্নমতেঁ করিব বিলাস।।
তা সহ্মার হৃদয় হরিআঁ নিল আহ্মে। পাছে জনী রোষ কর তোহ্মে।। ৩
এ বোল বুলিআঁ কাহ্নাঞিঁ মণের উল্লাসে। গেলা সব গোপীগণ পাশে।।
সহ্মাক বুইল কাহ্নাঞিঁ রতি পতিআশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে ।। ৪
দেশাগরাগঃ ।। রূপকং ।।

২২৭ – সুণ গোপীগণ আহ্মার বচন

সুণ গোপীগণ আহ্মার বচন আভয় দিলোঁ মো আপণে।
নিজ মন সুখে ফুল তুলী লআঁ যাহ যাহার যেনমণে ।। ১
চির জীঅ কাহ্নাঞিঁ কুলের নন্দন আহ্মারে দিলেঁ আভএ।
যেন জীঅ তোহ্মে যেহ্ন লোক তাহার উচিত হেনন হএ। ল কাহ্নাঞিঁ।। ২
এ বোল শুণিআঁ কাহ্নাঞিঁ খণেক মনে বিমরিষে।
আজি হয়িব মোর কাজের সিধী পুরী চির আভিলাসে।। ৩
কাহ্নের বদন আতি সুশোভন দেখিআঁ যুবতীগণে।
দৈব নিয়োজন মদন বাণে বিকলি ভৈল পরাণে।। ৪
এক তরুণীকে দেখায়িল কাহ্নাঞিঁ হোর ফুল আতি উচে।
তাক লাগি কর তুলিলেক গোপী কাহ্নাঞিঁ ধরিল কুচে ।। ৫
আয়র গোপী বুয়িল কাহ্নাঞিঁ ফুল আছে দূর ডালে।
কেমনে পায়িবোঁ এ ফুল কাহ্নাঞিঁ উপায় বোল সকালে ।। ৬
তাহাক তুলিআঁ ধরিল কাহ্নাঞিঁ সে ফুল তোলএ আপণে।
তুলিতেঁ নাম্বায়িতেঁ পায়িল আলিঙ্গন কাহ্নাঞিঁ বিনি যতনে।। ৭
আয়র গেপী ফুল তুলিবাক লাগিল ঝাঁটল বনে।
গাছের পাত তাহাক ঝাপিলেক না দেখিল একো জনে ।। ৮
সে বনের মাঝেঁ দেব দামোদর মিলিল দৈব ঘটনে ।
পায়িল গোপী আপণ মনে চুম্বিল তার বদনে।। ৯
পবনে চলিল গাছের পাত তাত ভয়মনী ছলে।
কোহ্নে গোপীগণ চঞ্চল নয়ন ধরিল তাহার গলে।। ১0
হের ভাল ফুঅ হোর ভাল ফল বুলিআঁ দেব মুরারী ।
দূরক নিআঁ পুরিআঁ কোলে কৈল গোপী নারী।। ১১
হেনমনে বনে হরিল কাহ্নাঞিঁ সকল গোপীর মণে।
অনন্ত নামে বড়ু চণ্ডীদাস গায়িল দেবী বাসলীগণে।। ১২
পাহাড়ীআরাগঃ।। ক্রীড়া।। প্রকীণ্ণক।। লগনী।। দণ্ডকঃ।।

২২৮ – লাজ ভয় তেজিআঁ সকল গোপীগণে

লাজ ভয় তেজিআঁ সকল গোপীগণে। মিলিআঁ বুইল গিআঁ গোবিন্দচরণে।।
আহ্মা না হেলিহ গোসাঞিঁ আনের বচনে।
আজি হৈতেঁ আহ্মে সহ্মে তোহ্মার শরণে।। ১
তোহ্মে দেব বনমালী নান্দের নন্দন। আজি হৈতেঁ গোপীর হৃদচন্দন।। ধ্রু ।।
আহ্মার ধরহ আর এক বচন। কতো খন দেখি গোসাঞিঁ তোর বৃন্দাবন।।
এড়িতেঁ না ফুরে মন এখো খনে। কমন আন্তরে তোহ্মে হরিলেহেঁ মনে ।। ২
বুঝিবারে নারিল তোহ্মারে জগন্নাথ। পাত পাতিআঁ কেহ্নে নাহিঁ দেহ ভাত।।
আসত নিফল দুখ সহন না জাএ। ত্রিভুবনজনমন গোচর তোহ্মাএ ।।৩
এ বচ শুণী উল্লসিত ভৈল কাহ্ন। আমৃতেঁ সিঞ্চিল আপণার দুঈ কান।।
গোপীগণমন তোষিবারে কৈল মন। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ।। ৪
বসন্তরাগঃ ।। একতালী ।।

২২৯ – বুঝিআঁ গোপীর মনে

বুঝিআঁ গোপীর মনে। আল। খণেক গুণিল কাহ্নে।
ষোল সহস্র গোপী তোষিবোঁ কেমনে।।
আনেক হয়িআঁ তখনে। বিলসিল গোপীগণে। যাহারে রমএ সেসি দেখে কাহ্নে।। ১
আল। সব গোপীজন জাণে। মোএঁ সে পায়িলোঁ এ বনে শ্রীমধুসূদনে।। ধ্রু
ফুটিল কুসুম পুঞ্জে। সরস ভ্রমর গুঞ্জে। এক এক নারি লআঁ এক এক কুঞ্জে ।।
চির মনোরথ পুরী। রসময় মন করি। বৃন্দাবন মাঝে রতি ভুঞ্জিল মুরারী।। ২
একেঁ একেঁ গোপীজনে। সহ্মে জাণিল আপণে। রাধাতে আধিক কাহ্ন মণে।।
কাহ্নাঞিঁ তাহাক জাণী। কিছু না বুয়িল বাণী।
রাধা চন্দ্রাবলী মণে কৈল চক্রপাণী।। ৩
সংহরী সকল দেহে। গোপী কুঞ্জগেহে। বিকল গোবিন্দ মুরারী রাধার নেহে।।
গেলা রাধিকার পাশে। সুরতি রসের আশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
কোড়রাগঃ।। ক্রীড়া।।

২৩0 – আহা কে না সুতীত্থে

নিন্দন্ত্যঃ সুপ্রসংসন্ত্যঃ পরাং দামোদরপ্রিয়াম্।
প্রাপুর্গোপপ্রিয়াঃ ক্ষোভি পরং কৃষ্ণ পরস্পরা।।

আহা
কে না সুতীত্থে তপ কৈল ভাগ্যমতী। কে নারী কাহ্নের সঙ্গে করে সুরতী।।
কাহ্ন বিনী আভাগিনী গোপযুবতী। দেখ সহ্মে নিকুঞ্জে গোবিন্দ গেলা কতী।। ১
হরি হরি।
সুন্দর সে গীর গাআঁ বাআঁ করতালী। দেখ পাঅচিহ্ন কথাঁ গেলা বনমালী।। ধ্রু
কে না কুশক্ষেত্রে বিধিবতেঁ কৈল দান। কাহার ফলিল পুক্ষর পুন্য সিনান।।
কাহাকে মিলিল আজি পুষ্ট মহাসিধী।
কারেঁ হাথেঁ হাথেঁ নিআঁ বিধি দিল নিধী।। ২
কে না কেদারশির পরসিল করে। কে না তপ তপিল বদধী বটেশ্বরে।।
কে গাঅ তেজিল গঙ্গাসঙ্গত সাগরে। যা লআঁ কুঞ্জে কুঞ্জে বুলে গদাধরে।। ৩
হেনমতেঁ বিলপিলা সকল যুবতী। লাগ না পাইআঁ দেব আধিপতী।।
রোষিলি রাধিকা দিল খর বচন। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ।। ৪
পাহাড়ীআরাগঃ।। ক্রীড়া।।

২৩১ – রাঙ্কে যেন ভাত পাআঁ

রাঙ্কে যেন ভাত পাআঁ না এড়ে নিধনে নিধী।
তেন গোপীগণ এড়িতেঁ কাহ্নাঞিঁ হারায়িল সকল বুধী।।
একেঁ চাহিলেঁ আরেঁ পায়িলেঁ আপণ মণের সুখে।
সব গোপী নারী মিলিআঁ এবেঁ কি রঞ্জসি মোর মুখে ।। ১
ভাল উপদেশ দিলোঁ মো তোরে আপণার মতিমোষে।
এখণে তাহার ফল ভুঞ্জোঁ মোএঁ আপণে আপণ দোষে ।। ধ্রু
এখন আহ্মার থানক আইলাহা মুখে তোর নাহিঁ লাজে।
পুণী সেই গোপীগণ পাস যাহা তোহ্মে মোর নাহিঁ কাজে।।
যে পরপুরুষ সমে নেহ করে তার হএ হেন গতী।
দৈব দোষে কাহ্ন তোহ্মাত ভজিলোঁ বঞ্চিলোঁ আপণ পতী।। ২
যেহেন বাহির তেহেন ভিতর সরূপেঁ জাণিলোঁ তোরে।
কপট সাগর হৃদয় তোক্ষার নাছি মোর গোচরে।।
এবেঁ ভালমতেঁ তোহ্মাক জাণিলোঁ নিবারিলোঁ মো হৃদয়ে।
টেটন নটক লোক সমে নেহ কোহ্নো কালে ভাল নহে।। ৩
শপথ করিআঁ বুইলোঁ মো তোরে না জায়িবোঁ তোহোর পাশে।
তোহ্মার চরিত্র দেখিআঁ কাহ্নাঞিঁ কে নাহিঁ ঊপহাসে।।
এ বোল সুণিআঁ কাহ্নের মণে ভৈল বড় তরাসে।
রাধা সম্বোধিআঁ বুলিল বচন গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।।৪
ভাঠিআলীরাগঃ।। ক্রীড়া।।

২৩২ – যদি কিছু বোল বোলসি

যদি কিছু বোল বোলসি তবেঁ দশনরুচি তোহ্মারে।
হরে দুরুবার ভয় আন্ধকার সুন্দরি রাধা আহ্মারে।।
তোহ্মার বদন সংপুন চান্দ আধর আমিআঁ লোভে।
পরতেখ তোর নয়নচকোর যুগল নিশ্চল শোভে।। ১
মদনবাণে দগধ ভৈলোঁ তোর আকারণ মাণে।
বদনকমলমধুপান দিআঁ রাখহ মোর পরাণে।। ধ্রু।।
যবেঁ সত্যেঁ কোপ কয়িলেঁ তবেঁ মোরে হান নয়নবাণে।
দৃঢ় ভুজযুগেঁ বন্ধন করিআঁ অধর দংশ দশনে।।
তোহ্মে সে মোহোর রতন ভূষন তোহ্মে সে মোহোর জীবনে।
এহা বুঝি রাধা মোরে দয়া কর বুলি তেঁ আতি যতনে।। ২
তোহ্মার নয়ন মলি নলিন আধরে কোকননদ রূপে।
মদনবাণে কৃষ্ণক রঞ্জিলেঁ হএ তোর আনুরূপে।।
এ তোর কুচ শোভে মণি জঘনে নাদ করউ রসনে।
বোল হৃদয়ত করোঁ মো তোহোর থলকমল চরণে।। ৩
মদন গরল খণ্ডন রাধা মাথার মণ্ডন মোরে।।
চরণপল্লব আরোপ রাধা মোর মাথার উপরে।।
পালাউ আহ্মার মদনবিকার সত্বরেঁ করহ আদেশে।
বাসলীচরণ শিরে বন্দিআঁ গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।।৪
পাহাড়ীআরাগঃ।। ক্রীড়া।।

২৩৩ – লক্ষকের বৃন্দাবন মোর ফুলবাড়ী

অবধীর্য্য কাকুমিতি রাধিকয়াভিদধে ন কিঞ্চিন সরোষতয়া।
অথ স ত্রপাভরমনা বিহিত প্রতিঘং মুরজিৎ।।

লক্ষকের বৃন্দাবন মোর ফুলবাড়ী। নিষধিতেঁ কেহ্নে রাধা কৈল ফুলধাড়ী।। বড়ায়ি ।। ১
হাথে বাঁশী করি গেন্ডু খেলাওঁ গোকুলে। দেখোঁ বৃন্দাবন পসি কে বা ফুল তোলে ।। ২
ফুল ফল তুলি লৈল ডালে ভাঙ্গী রঙ্গে।। ষোল সহস্র গোপীজন করী সঙ্গে।। ৩
মোর বনতরুডালেঁ সজায়িআঁ আঙ্কুড়ী। ফুল তুলি লৈল রাধা ভাঙ্গিআঁ পাখুড়ী।। ৪
লবঙ্গ দোলঙ্গ খোঁপা বান্ধিআঁ উল্লাসে। গুলাল মালতীমালে করিল বিলাসে।। ৫
যৌবন গরবেঁ রাধা কিছু নাহিঁ জাণে। মোর বৃন্দাবন পসী মোক নাহিঁ চিহ্নে ।। ৬
বৃন্দাবন দেখি মোর পোড়এ আন্তর।
তোহ্মা দেখী রাধার না করোঁ আথান্তর।। ৭
যত ব ফুল ফল নিল তার দেন্ত কৌড়ী। নহে বা বান্ধিআঁ রাখিবোঁ দৃঢ় দৌড়ী।। ৮
এভোঁহো সুন্দরি রাধা ধরু মোর বোল। কৌড়ীর আন্তরেঁ মোরে দেউ চুম্ব কোল।। ৯
আকারণে বোলে রাধা মোরে আনুখর। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবর।। ১0
মালবরাগঃ।। রুপকং।। দণ্ডকঃ।।

২৩৪ – আনেক যতন করি নান্দের নন্দন

নিশম্য কৃষ্ণবচনং মহারোষমতী সতী।
জরতী রাধিকামাধিবতীমিতি ততোবদৎ।।

আনেক যতন করি নান্দের নন্দন। আহ্মা হাথেঁ আনায়িল তোহ্মা বৃন্দাবন।।
আসিতেঁ তোহ্মাক দেখী হরষিত মন। আগু গেলা দেখায়িতেঁ তোহ্মাক তরুগণ।। ১
এহে। এবেঁ মোক বোলে কাহ্নাঞিঁ সব বিপরীত।
হেন বুঝোঁ রাধা তোঁ করিলি কুচরীত।। ধ্রু
তার বৃন্দাবনক আয়িলাহোঁ চিরকালে। তুলী লৈল নানা ফুল ভাঙ্গি লৈল ডালে।।
জত আপরাধ কৈল জাণহ আপণে।
তার বোল না ধরিলেঁ মরসিব কেহ্নে।। ২
তোহ্মার চরিত্র রাধা না বুঝিএ ভাল। কাহ্নাঞিঁকে ভাণ্ডিতেঁ পারিবেঁ কত কাল।।
আনুরোধ এড়ায়িতেঁ নারিবি তাহার। বুঝিআঁ রাখহ রাধা মোর উপকার।। ৩
যত ফুল ফল নিলেঁ চাহে কৌড়ী। না দিলেঁ বান্ধিআঁ থুয়িতেঁ সজ কৈল দড়ী।।
বান্ধিআঁ রাখিলেঁ বলে হৈব জাতী নাশ। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাস।। ৪
রামগিরীরাগঃ ।। আঠতালা।।

২৩৫ – সহ্মারে বুয়িলোঁ বড়ায়ি সজাইআঁ

সহ্মারে বুয়িলোঁ বড়ায়ি সজাইআঁ আঙ্কুড়ী। বৃন্দাবনে ফুল পাত না ভাঙ্গে পাখুড়ী।।
কৃষ্ণেঁ দেখিলেঁ বড়ায়ি পারিবেক গালী। আঞ্চলে ধরিব আর বুলিব ধামাল ।। ১
তবেঁ বোল ফুল তোল বড়ায়ি। যা নাহিঁ আইসে কাহ্নাঞিঁ।। ধ্রু
ফুল তুলিহ বড়ায়ি চাম্পা নাগেশ্বর। গাছ না ভাঙ্গি ফল না লৈহ বিথর।।
কৃষ্ণ দেখিলেঁ বড়ায়ি লয়িবেক কর। সুণিআঁ সাসুড়ী যায়িতেঁ না দিব ঘর।। ২
আতি না তুলিহ বড়ায়ি গুলাল মালতী। কনক যূথিকা মাহ্লী লবঙ্গ সেয়তী।।
কৃষ্ণ যবেঁ দেখিবেক গাছ পাতেঁ পাতেঁ। তবেঁ কাহাকেহো ঘর না দিবে যাইতেঁ ।। ৩
এবেঁ ফল ধরিলেক আহ্মার বচনে। আসিআঁ বিরোধিল মথুরা গমনে।।
এবেঁ মোর থানে নাহিঁ তাহাক উপাএ। বাসলী শিরে বন্দী চণ্ডীদাস গাএ ।।
কোড়রাগঃ।। একতালী।।

২৩৬ – তোএঁ না গুণসি মনে

অস্মিন্নবসরে রাধাং মাধব প্রাহ সত্বরং।
পেশলাপেশলং পুষ্পবাণবাণজ্বরাতুরঃ।।

তোএঁ না গুণসি মনে। আল করিবোঁ যতনে ।
নিজ ধন দিআঁ সুন্দরী রাধা নির্ম্মায়িলোঁ এ বৃন্দাবনে।।
আনেক ফুল তুলিলেঁ । আল বহুত ফল খায়িলেঁ।
আর আনুচিত কৈলেঁ রাধা ডাল ভাঙ্গিআঁ পেলায়িলেঁ ।।১
রাধা কৈল বৃন্দাবন নাশে।
সে ফুল তুলিআঁ নিলেঁ যাহার যোজন বাসে।। ধ্রু
যূথী কেশর সেঅথী। মাধবীলতা মালতী।
সকল ফুল লআঁ রাধা তোহ্মে না থুয়িলেঁ কতী।।
তোহ্মে আইহন গোআলী। আহ্মে দেব বনমালী।।
আণ সব ফুল সজআঁ শয়ন তোর মোর করী কেলী ।।২
যবেঁ সে ফুল না দিবেঁ। তবেঁ সমুচিত ফল পাইবেঁ।
চোরবাদেঁ তোহ্মা বান্ধিআঁ থুয়িবোঁ কেমণে ঘর জাইবেঁ।।
এভোঁ সুন মোর বোল। দেহ মোরে চুম কোল।
অভিনব তোর রূপ যৌবন দেখিআঁ পড়িলোঁ ভোলে।। ৩
কেহ্নে হেন কাম কৈলে। সব ফুল ফল লৈলে।
বৃন্দাবন মাঝে পসিআঁ রাধা সব তরু শুন কৈলেঁ।।
দেখিআঁ পোড়ে হৃদয়ে। যেন মোর প্রাণ জাএ।
কাহাকে কহিবোঁ কেন পাতিআএ বড়ু চণ্ডীদাস গাএ।। ৪
পাহাড়ীআরাগঃ।। ক্রীড়া।।

২৩৭ – মো নাহিঁ নাশি তোর বৃন্দাবনে

মো নাহিঁ নাশি তোর বৃন্দাবনে সুণ ল সুন্দর কাহ্মাঞিঁ ।
পথিক লোক তাক উপভোগে ল তাত মোর দোষ নাহিঁ ।। ১
মিছা দোষ মোরে না দিহ কাহ্নাঞিঁ ল মো জাওঁ রাজপথে।। ধ্রু
মো যবেঁ জাণিতোঁ হেন করিবেঁ তো ল তবেঁ নাসিতোঁ এ বাটে।
নাহিঁ যাইতোঁ দধি দুধ বিকণিতেঁ ল কাহ্নাঞিঁ মথুরার হাটে।। ২
না জাণো কি তোর মণে রোষ আছে ল মোর দোষ তেকারণে।
তোহ্মাক হেন বুলিতেঁ না জুআএ তোহ্মে নান্দের নন্দনে ।। ৩
এহা পথেঁ আরবার নাহিঁ জাইবোঁ ল দেহে যা জীউ বসে।
বাসলীচরণ শিরে বন্দিআঁ গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
কোড়ারাগঃ।। লঘুশেখরঃ।।

২৩৮ – যদি যাসি রাধা তোএঁ এ রাজপথে

যদি যাসি রাধা তোএঁ এ রাজপথে। মোর বৃন্দাবন কেহ্নে আইলা অথবেথে।।
যাতি আজি নষ্ট ভৈল আঅর সেয়তী। এত পুষ্প নঠ কৈলেঁ কাহার যুগতী।। ১
রাধে ল আল কি ফুরিল মণে। কেহ্নে ভাঁগিল রাধা মোর বৃন্দাবনে ।। ধ্রু
লবঙ্গ মালতী রাধা ভাঙ্গিলে আপার। দনা মরুআ ভাঙ্গিলে দুলালের ডাল।।
দূতার বোলে ভাঙ্গসি বৃন্দাবন। নাহিঁ জাণো নারী তোর কেহেন মন।। ২
মাহ্লী কুন্দ ভাঁগিলেঁ তোঁ আয়র নেআলী। মাধবীলতা ভাঁগিলেঁ আঅর পারলী।।
বৃন্দাবন ভাঁগি মোর করিলেঁ বিকল। পায়িবেঁ আহ্মার থানে উচিত ফল।। ৩
যাবেঁ তিরীবধে নাহীঁ থাকে ডর । তবেঁ আজি মারিআঁ পাঠাও যমঘর ।।
মোঞিঁ সে জাণো মোর হেন করে মন। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ ।। ৪
গুজ্জরীরাগঃ।। রুপকং।।

২৩৯ – তোহ্মার বচন কাহ্নাঞিঁ ধরিআঁ মণে

তোহ্মার বচন কাহ্নাঞিঁ ধরিআঁ মণে। সব সখি লআঁ আইলোঁ তোর বৃন্দাবনে।।
সব ফুল তুলী লৈল তোহ্মার আদেশে। এবেঁ কেহ্নে তুলি দেহ মোরে চুরী দোষে ।। ১
না বোল না বোল মিছা দেব চক্রপাণী। তোমার বদনে কেহ্নে আইসে হেন বাণী।। ধ্রু
ফুল ফল কাহ্নাঞিঁ কিছু নাহিঁ হাথে। এবেঁ ফুল কথাঁ পায়িবোঁ জগন্নাথে।।
গুটি চারি ফুল হের আছে মোর হাথে। তাক নেহ তোর মনের সোআথে।। ২
বড়ার বহুআরী আহ্মে বড়ার ঝিআরী। ফুল চুরী বাদ আহ্মে সহিতেঁ না পারী।।
না দেখিল না শুণিল বোলহ উত্তর। তোহ্মাতে আধিক আর নাহিঁক নাগর ।। ৩
মিছাকেহ্নে বোল এবেঁ সুন্দরমুরারী। তোর ফুল তুলী লৈল সব গোপনারী।।
ছাড়হ নিলজ কাহ্ন কপট বচন। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ।। ৪
রামগিরীরাগঃ।। রুপকং।।

২৪0 – তমাল কুসুম চিকুরগণে

বৃন্দাবনীয়প্রসবপ্রক্কঌপ্তাং
পশ্যামি রাধে ভবতীং পুরস্তাৎ।
বিশ্রাণয় ত্বং কুসুমন্ববামে
বামেথবা মোদবিধায়ি দেহং।।

তমাল কুসুম চিকুরগণে। নীল কুরুবক তোর নয়নে।। ১
সুপুট নাসা তিলফুলে। দেখি তোর গণ্ডযুগ মহুলে।। ২
আধর সুরঙ্গ বান্ধুলী ফুলে। কণ্ণযুগ তোর এ বগহুলে।। ৩
মুকুলিত কুন্দ তোর দশনে। খস্তরী কুসুম তোর বসনে।। ৪
ভুজযুগ হেমযূথিকামালে। অএশাকতবক করযুগলে।। ৫
মুকুলিত থলকমল তন। রোমরাজী তাত আতয়ীগণে।।৬
গভীর নাভী নাগেশর ফুলে। কনক কেতকী জংঘযুগলে।। ৭
চরণকমল থলকমলে। আঙ্গুলী চম্পককলিকা [১২৬/১]জালে।। ৮
নখরনিকর দেখি গুলালে। শিরীষ কুসুম তনু সকলে ।। ৯
কনক চম্পক কুসুমপান্তী। তোহ্মার সকল শরীরকান্তী।। ১0
নেআলী সেআলী মাহ্লী বিকসে। তোহ্মার মধুর ঈষত হাসে।। ১১
দেখোঁ মো তোর ফুলশরীরে।। গাইল চণ্ডীদাস বাসলীবরে।। ১২
পাহাড়ীআরাগঃ।। ক্রীড়া।। দণ্ডকঃ।।

২৪১ – সকল পুরুষ মাঝেঁ

কাহ্নঞিঁ ল
সকল পুরুষ মাঝেঁ তোহ্মে বড় নাগর তোহ্মারে তে দিবেক উত্তর।
ছাড়হ অলঞ্জাল না কর কচাল এড় যাওঁ মথুরা নগর ।। ১
কাহ্নাঞিঁ ল বুঝিল বুঝিল তোহ্মার এক বচনে লাজে দিআঁ তিনাঞ্জলী।
নিজ পতি না চাহিলোঁ তোহ্মাক উপেখিলোঁ সহিলোঁ সাসুননন্দগালী।। ২
বিষম পুরুষ জাতী কঠিন হৃদয় আতী তাক নাহিঁ কিছু পরকার।
ছার তিরী যরম শিরীষ কুসুম মন বঢ় মানে তিন উপকার ।।৩
তোহ্মার নেহ সকল কমলিনীদলজল চঞ্চল দুঈহো পাড়িহাসে।
এড়হ আর আশে চলি জাহা নিজ বাসে গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
দেশাগরাগঃ।। রুপকং।।

২৪২ – তোহ্মাতে মজিল মোর মনে ল

তোহ্মাতে মজিল মোর মনে ল।
আল হের সুন প্রাণ রাধা ল কেহ্নে বোল নিঠুর বচনে।।
হের মোর বৃন্দাবনে ল।
আল হের সুন প্রাণ রাধা ল নিফল করহ কি কারণে।। ১
নানা ফুলে বুলে ভ্রমরে।
আল হের সুণ প্রাণ রাধা ল তভোঁ কি মালতী পাসরে।। ধ্রু
এ তোর নব যৌবনে ল আহোনিশি জাগ মোর মণে।
তাহাত তোহ্মা রমণে ল খেতি করে আহ্মার পরাণে ।। ২
মন ঝুরে তোর নামে ল সংসারত তোহ্মা কৈলোঁ সারে।
তোর বোলেঁ গোপীগণে ল তুষিআঁ তেজিলোঁ পরকার।। ৩
তোতে মন না বিচলে ল বোল মোরে বৈশোঁ তোর পাশে।
খণ্ডুক আহ্মার দুখ হঊক মন সুখ গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
ককূরাগঃ।। রুপকং।।

২৪৩ – তিরীর সভাব মণে করে

কৃষ্ণস্য প্রেমবচসা রাধা সাদরমানসা।
বশাভবাদশাবাশু কুসুমাসুগসঙ্গতা ।।

তিরীর সভাব মণে করে। প্রাণ কাহ্নাঞিঁ ল তাত রোষ না কর নাগরে।।
এ তোহ্মার বচনে। প্রাণ কাহ্নাঞিঁ ল সব কোপ খণ্ডিল এখনে।। এ আ।। ১
আল হের এহি জাগে তোহ্মার চরণে।
প্রাণ কাহ্নাঞিঁর ল আহ্মা সম না করিহ আনে।। ধ্রু
তোহ্মার আহ্মার দুঈ মণে। এক করী গান্থি মদনে।। ২
বিধি কৈল তোর মোর নেহে। একই পরাণ এক দেহে।।
সে নেহ তেঅজ নাহিঁ সহে। সে পুণি আহ্মার দোষ নহে।। ৩
কে বলিতেঁ পারে তোর গুণে। একেঁ একেঁ বসে মোর মনে।।
এবেঁ আসি বৈশ মোর পাশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
ভাঠিআলীরাগঃ।। রুপকং।।

২৪৪ – যত মনোরথ ছিল তাহাক সফল

যত মনোরথ ছিল তাহাক সফল কৈল নানাবিধ দিআঁ আলিঙ্গনে।
রাধার তন পরসে যেহ্ন আমৃত কলসে সিনায়িল শ্রীমধুসূদনে।। নাএ ।। ১
রসে হূরিআঁ মণে। কাহ্ন কৈল কেলি বৃন্দাবনে।। নাএ ।। ধ্রু
বদনে বদল কৈল উচিতেঁ আমৃতেঁ বৃষ্টি ভৈল।।
দিন নয়ন ঘন ঘনে রস বসে ঘনে ঘনে কমলে খঞ্জন সংযোজিল ।। ২
যোতী বসন রসনে দুঈ কিশলয় যেহ্নে দামোদরেঁ মধু পান কৈল।
নানা থানক চুম্বীল আধরে আধর দিল বিঅ পোআলেঁ এক ভৈল।। ৩
পরসিল ঘন ঘন রাধার জঘন কৈল মনমথ পরিতোষে।
দুইহো মনের উল্লাসে করিল বনবিলাসে গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
দেশবরাড়ী।। আঠতালা।।