যমুনা কিনারে

অপনা মন্দির বৈসলি অছলহু

অপনা মন্দির বৈসলি অছলহু
ঘর নহি দে সর কেবা।
তহিখনে পহিলা পাহুন আএল
বরিসএ লাগল দেবা।।
কে জান কি বোলতি পিসুন পরৌসিনি
বচনক ভেল অবকাসে।।
ঘর অন্ধার নিরন্তর ধারা
দিবসহি রজনী ভানে।
কওনক কহব হম কে পতিআএত
জগত বিদিত পচবানে।।

( শ্রীখগেন্দ্র নাথ মিত্র ও শ্রীবিমানবিহারী মজুমদার সম্পাদিত ” বিদ্যাপতির পদাবলী ” বইটিতে পাঠান্তর পাওয়া গেছে )

অপনা মন্দির বেসলি অছলিহু
ঘর নহি দোসর কেবা
তহিখনে পহিআ পাহোন আএল
বরিসএ লাগল দেবা।।
কে জান কি বোলতি পিসুন পরৌসিনি
বচনক ভেল অবকাসে।
ঘর অন্ধারা নিরন্তর ধারা
দিবসহি রজনী ভানে।
কঞোনক কহব হমে কে পতিআএত
জগত বিদিত পঞ্চবাণে।।
ভনই বিদ্যাপতীত্যাদি

অন্তঃকথন:
এক নারী তার অবৈধ প্রণয়ের কথা বলছে, কেমন করে একদিন তার সেই প্রেমের সমাগম হল সেই গল্পই বলতে গিয়ে সে বলছে, আমি তো একা একা নিজের ঘরে বসে ছিলাম, ঘরে আর কেউ ছিল না তাই বসনও তেমন সামলে রাখিনি, এমন সময়ই অতিথি ঘরে এলো! এদিকে আবার তখনই দেবতা বর্ষণ শুরু করলেন। কে জানে দুষ্ট প্রতিবেশিনী জানতে পারলে কি কুকথা রটাবে! ঘর আঁধার, বাইরেও চারদিক কালো করে অঝোর ঝরে বৃষ্টি পড়ছে, দিনের বেলাকেও রাত বলে মনে হচ্ছিল! এর বেশি আমি আর কি বলব? আর বললেও কেই বা আমার কথা বিশ্বাস করবে এমন পরিবেশে মদনের প্রভাবের কথা তো জগতের সকলেই জানে! এই পদটি রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পদ নয়, সাধারণ পরকীয়া প্রেমের পদ। এই জাতীয় পরকীয়া প্রেমরসাত্মক কবিতার একটি ধারা সংস্কৃত সাহিত্য থেকেই প্রচলিত ছিল, লৌকিক সাহিত্যে তো এর বিস্তার ছিলোই। বিদ্যাপতি রচিত এই রাধাকৃষ্ণ সম্পর্কহীন পরকীয়া প্রেমের পদগুলি পাঠ করলে বোঝা যায় যে এর ওপরে প্রাথমিক ভিত্তি করেই রাধাকৃষ্ণ পরকীয়া প্রেমের পদগুলি রচিত হয়েছিল। রসমাধুর্য্য ছাড়াও রাধাকৃষ্ণের প্রেমের মূল কাঠামোটি নির্মাণ করার ক্ষেত্রে এই পদগুলির গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী