বর্ষাণে শ্রীশ্রীজীর মন্দিরে কীর্ত্তন

শ্রীশ্রীরাধারমণো জয়তি

(১৩৪৮ সাল, ২৭শে কার্ত্তিক বৃহস্পতিবার সকালে)

‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই গৌরহরি বোল।’’
ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’ [মাতন]

জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

জপ,–রাম রাম হরে হরে—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম
রমে রামে মনোরমে—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

[ঝুমুর]

শ্রীরাধারমণ রাম—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

শ্রী,–‘‘গোবিন্দ-মুখারিন্দ, নিরখি মন বিচারো।’’ রে !

নিরখি মন বিচারো রে

শ্রীরাধিকা-নয়ন-রঞ্জন মুখ—নিরখি মন বিচোরো রে
শ্রীরাধা-নয়ন-রঞ্জন মখ—নিরখি মন বিচারো রে
‘শ্রীরাধা-নয়ন-রঞ্জন মুখ’—
যে মুখ—দেখতে রাধা অনিমিখ—শ্রীরাধা-নয়ন-রঞ্জন মুখ

যে মখ,–অনিমিখ দেখতে সাধ করে গো

আমাদের ভানুনন্দিনী—যে মুখ,–অনিমিখ দেখতে সাধ করে গো

শ্রীরাধা-নয়ন-অঞ্জন মুখ
নিরখি মন বিচারো রে

কিশোর-নয়ন-রঞ্জন-মুখ—নিরখি মন বিচারো রে
অলকা-আবৃত বদন—নিরখি মন বিচারো রে
হাসিয়া বাঁশিয়া বদন—নিরখি মন বিচারো রে

বংশী-গানামৃত-ধাম

ও-ত’ বদন নয় গো—বংশী-গানামৃত-ধাম
‘ও-ত’ বদন নয় গো—
লাবণ্যামৃত-জন্মস্থান-ও-ত’ বদন নয় গো

‘‘নিরখি মন বিচারো। রো !
চন্দ্র-কোটি ভানু-কোটি,’’
ছার,–গগন-চাঁদে কিসে বা গণি

শ্রীগোবিন্দের,–অকলঙ্ক-মুখচাঁদের আগে—ছার,–গগন-চাঁদে কিসে বা গণি

গগন-চাঁদে কলঙ্ক আছে
গগন-চাঁদে প্রতিপদ আছে

বদন-চাঁদ,–অকলঙ্ক নিশিদিশি ষোল-কলা—গগন-চাঁদে প্রতিপদ আছে

‘‘চন্দ্র-কোটি ভানু-কোটি, কোটি-মদন ওয়ারো।। রে !!
সুন্দর কপোল লোল,’’

সহজেই হাসিমাখা

সুন্দর-লোল-কপোল—সহজেই হাসিমাখা

‘‘সুন্দর কপোল লোল, পঙ্কজ-দল-নয়না।
অধরবিম্ব মধুর-হাস,’’

হাসি নয় যেন চাঁদ ফাটল

আমার শ্রীগোবিন্দ-মুখে—হাসি নয় যেন চাঁদ ফাটল

হাসি নয় যেন ফাটল শশী

ঝরিল অমিয়া রাশি রাশি—হাসি নয় যেন ফাটল শশী

হাসি নয় ও-যে প্রেমের ফাঁসি

আঁখি-পাখী-ধরা ফাঁসি—হাসি নয় ও-যে প্রেমের ফাঁসি

আঁখি-পাখী-ধরা ফাঁসি

বরজ-ললনার—আঁখি-পাখী-ধরা ফাঁসি

মন-প্রাণ,–উদাসী ক’রে করে দাসী

হাসি নয় ও-যে প্রেমের ফাঁসি—মন-প্রাণ,–উদাসী করে করে দাসী

‘‘অধর-বিম্ব মধুর-হাস, কুন্দ-কলিকা দশনা।।’’

হাসি নয় যেন চাঁদ ফটল

তার মাঝে,–দস্তপাঁতি-কুন্দ ফুটল—হাসি নয় যেন চাঁদ ফাটল

‘‘কুন্দ-কলিকা দশনা।।
‘‘মণি-কুণ্ডল মকরাকৃতি,’’

গণ্ডস্থলে ভাল দোলে

মকরাকৃতি-কুণ্ডল—গণ্ডস্থলে ভাল দোলে

মুখ ব্যাদান করে দোলে

গোবিন্দের কানের মকর-কুণ্ডল—মুখ ব্যাদান করে দোলে
মনোমীন গিলিবে বলে—
বরজ-ললনার—মনোমীন গিলিবে বলে

মুখ ব্যাদান করে দোলে

‘‘মণি-কুণ্ডল মকরাকৃতি, অলকা ভৃঙ্গপুঞ্জ।’’

অলকা নয় যেন ভৃঙ্গাবলী

আমার শ্রীগোবিন্দ-মুখে—অলকা নয় যেন ভৃঙ্গাবলী

অলকারূপে বিরাজিছে

দেখে এই মনে হয়—যেন,–অলকারূপে বিরাজিছে
বরজ-আলি-চিত-ভৃঙ্গাবলী—যেন—অলকারূপে বিরাজিছে
নীল-কমল-মধু পিবে বলে—যেন—অলকারূপে বিরাজিছে
‘নীল-কমল-মধু পিবে বলে’—
গোপনে গোবিন্দ-মুখ—নীল-কমল পিবে বলে

অলকারূপে বিরাজিছে

‘‘অলকা ভৃঙ্গপুঞ্জা।
কেশরক তিলক বন্‌য়ো,’’

মদন-বিজয়ী ধবজা

নন্দকিশোরের নাসায় কেশরের তিলক—মদন-বিজয়ী ধ্বজা

‘‘কেশরক তিলক বনয়ো, সোনে মোড়ি গুঞ্জা।।

পরিসর-হিয়ায় দোলে

স্বর্ণমণ্ডিত-গুঞ্জাহার-পরিসর-হিয়ায় দোলে
বরজ,–ললনা-চিত দোলাবে বলে—পরিসর-হিয়ায় দোলে

‘‘সোনে মোড়ি গুঞ্জা।।’’
‘‘নবজলধর তড়িতাম্বর,’’

নবীন-নীরদ-কাঁতিয়া

রাধার প্রাণ-গোবিন্দ হে—নবীন-নীরদ-কাঁতিয়া

নবজলধর-ভাতিয়া
বিনোদ-রঙ্গিয়া
ত্রিভঙ্গ-ভঙ্গিয়া

শ্যাম,–বিনোদিয়া আমাদের—‘‘নবজলধর’’
‘‘নবজলধর তড়িতাম্বর,’’

দেখে এই মনে হয়

শ্যাম-অঙ্গে পীতাম্বর—দেখে এই মনে হয়

যেন,—পীতাম্বর হয়েছে গো

থির-বিজুরী-বরণী রাই—যেন,–পীতাম্বর হয়েছে গো
নিরন্তর,–শ্যাম-অঙ্গ-সঙ্গ লাগি’—যেন,–পীতাম্বর হয়েছে গো

‘‘নবজলধর তড়িতাম্বর, বনমালা গলে শোহে।
লীলানট সুরকো পহুঁ, রূপে জগমন মোহে।।’’

একা মেনে আমি নই গো

সে-যে জগ-মনোমোহনিয়া—একা মেনে আমি নই গো

সেই,–‘‘শ্রীনন্দনন্দন, গোপীজন-বল্লভ,
শ্রীরাধা-নায়ক নাগর শ্যাম।
সো শচীনন্দন, নদীয়া-পুরন্দর,
সুর-মুনিগণ-মনোমোহন-ধাম।।
জয় নিজ-কান্তা,- কান্তি-কলেবর,
জয় নিজ-প্রেয়সী-ভাব-বিনোদ।।’’

অপরূপ রহস্য রে

নিগূঢ়-গৌরাঙ্গ-লীলার—অপরূপ রহস্য রে

সবর্ব-বাঞ্চা-পূর্ত্তি লীলা

প্রাণ-রাধা-রাধারমণের—সর্ব্ব-বাঞ্ছা-পূর্ত্তি লীলা

হইল ইচ্ছার উদগম

ব্রজ-বিহারী-নন্দনন্দনের—হইল ইচ্ছার উদ্‌গম
রাধার,–প্রেমমাধুর্য্যাধিক্য দেখে—হইল ইচ্ছার উদগম

আমি ত’ ভূবন-মোহন
কে আমারে মুগ্ধ করে

রাধা-মাধুরী দেখে বলছেন—কে আমারে মুগ্ধ করে

আমি উহায় আস্বাদিব

যে আমারে মুগ্ধ করছে—আমি উহায় আস্বাদিব

তাই,–হইল ইচ্ছার উদগম

কৈছন রাধা-প্রেমা, কৈছন মধুরিমা,
কৈছন সুখে তিঁহ ভোর !’’

শ্রীরাধিকার প্রেম কেমন
প্রেমের মাধুরী কেমন
রাধা-প্রেমে কি বা সুখ

‘‘এ তিন বাঞ্ছিত-ধন, ব্রজে নহিল পূরণ,
কি করিব না পাইয়া ওর।।’’

কিছুতেই আস্বাদিতে নারিলাম

কতই না চেষ্টা করিলাম—কিছুতেই আস্বাদিতে নারিলাম

তাই, ‘‘—ভাবিয়া দেখিল মনে রাধার স্বরূপ বিনে,
এ বাসনা পূর্ণ কভু নয়।’’

আমা হতে হবে না

এই তিন-বাঞ্ছা পূরণ—আমা হতে হবে না
আমি ত’ লীলার বিষয়-বটি—আমা হতে হবে না
আশ্রয়-জাতীয়-সুখাস্বাদন—আমা হতে হবে না

আমায়,–বিভাবিত হতে হবে

আশ্রয়-জাতীয়-ভাবে—আমায়,–বিভাবিত হতে হবে

তাই,–‘‘রাধাভাব-কান্তি ধরি’, রাধাপ্রেম গুরু করি’,
আসি,–নদীয়াতে করিল উদয়।।’’

সবাই বলে গৌরহরি

নদীয়া-বিহারী হেরি—সবাই বলে গৌরহরি

তা-ত নয়, তা-ত নয়
ও-যে আমাদের রাই-কিশোরী

ও-ত’ নয় গৌরহরি—ও-যে আমাদের রাই-কিশোরী

বঁধুর বিরহ সইতে নারি
পলকে প্রলয় গণে

শ্যাম-বঁধুর অদর্শনে—পলকে প্রলয় গণে

কোটি-যুগ মানে গো

এক-পলক না দেখিলে—কোটি-যুগ মানে গো

বঁধুর বিরহ সইতে নারি
ফিরছে বঁধুকে বুকে ধরি’

আমাদের প্রাণ-কিশোরী—ফিরছে বঁধুকে বুকে ধরি’

যেন,—ভিন্ন মনে করো না

ব্রজ আর নদীয়া—যেন,–ভিন্ন মনে করো না

ব্রজের,–নিভৃত-কুঞ্জের নিভৃত-কুঞ্জ
নবদ্বীপরূপে বেকত

ব্রজের,–গুপত-কুঞ্জের গুপত-কুঞ্জ-নবদ্বীপরূপে বেকত

নদীয়ায় নিরন্তর বিহরে

পরস্পর বুকে ধরে—নদীয়ায় নিরন্তর বিহরে

নিরন্তর জড়াজড়ি

কখনও নয় ছাড়াছাড়ি—নিরন্তর জড়াজড়ি

অপূর্ব্ব মিলন রে

পরস্পর বিপরীত—অপূর্ব্ব মিলন রে
রাই কানু, কানু রাই—অপূর্ব্ব মিলন রে
এ-যে,–মূরতিমন্ত প্রেমবৈচিত্ত্য—অপূর্ব্ব মিলন রে

মিলনে দুই রসের খেলা
মিলা অমিলা রসের খেলা

নিগূঢ়-গৌরাঙ্গ-লীলা—মিলা অমিলা রসের খেলা
নিরন্তর-মিলনে—মিলা অমিলা রসের খেলা

সেই কথার সার্থকতা

‘‘যাহার চরিত রে।’’


বর্ণিয়াছেন সাধুগণ—যাহার চরিত রে
নিরন্তর ক্রীড়াপর—যাহার চরিত রে

কেমন করে হবে বল

নিরন্তর ক্রীড়া—কেমন করে হবে বল
নিরন্তর মিলন না হলে—কেমন করে হবে বল
সদাই মিলিত না থাকিলে –- কেমন করে হবে বল
নিরন্তর ক্রীড়া বল—কেমন করে হবে বলে

সেই কথার সার্থকতা
সার্থকতা মূরতি

নিরন্তর ক্রীড়া-শকতির—সার্থকতা মূরতি

নিরন্তর-ক্রীড়ার মূরতি

বুকে ধরে আছে মাতি—নিরন্তর-ক্রীড়ার মূরতি

ঐ মূরতি হৃদে ধর

নিরন্তর ক্রীড়া ভোগ কর—ঐ মূরতি হৃদে ধর

সেই,–গৌর-মূরতি হৃদে ধর
সে-যে,–আশ-মিটান মূরতি রে

প্রাণ-রাধা-রাধারমণের—সে-যে,–আশ-মিটান মূরতি রে

শুধু কেবল যুগলের নয়
এ-যে,–বাঞ্ছা-পূর্ত্তিকারী লীলা

নিগূঢ়-গৌরাঙ্গ-লীলা—এ-যে,–বাঞ্ছা-পূর্ত্তিকারী লীলা
ব্রজজন-সঙ্গে যুগলকিশোরের—এ-যে,–বাঞ্ছা-পূর্ত্তিকারী লীলা

সকলের বাঞ্ছা পূরণ হল

ব্রজের সখা-সখীর—সকলের বাঞ্ছা পূরণ হল
স্থাবর-জঙ্গম-গুল্মলতা—সকলের বাঞ্ছা পূরণ হল
সঙ্কীর্ত্তন-রাসরঙ্গে—সকলের বাঞ্ছা পূরণ হল

সেই মূরতি দেখবার লাগি’

মিলনেতে কেমন মাধুরী—সে মূরতি দেখবার লাগি’

রাধার মনে উঠল সাধ
আমি একবার দেখব

প্রাণ-বঁধুর হয় কি মাধুরী—আমি একবার দেখব
‘প্রাণ-বঁধুর হয় কি মাধুরী’—
আমার সঙ্গে মিলনে—প্রাণ-বঁধুর হয় কি মাধুরী

আমি একবার দেখব
সেই মাধুরী আস্বাদিছে

রাধা গদাধররূপে—সেই মাধুরী আস্বাদিছে

সেবা-সুখ মিটাইছে

আস্বাদ ত’ মিটে নাই—তাই,–সেবা-সুখ মিটাইছে
অনঙ্গ নিতাই হয়ে—সেবা-সুখ মিটাইছে

নিতাই অনঙ্গমঞ্জরী

আস্বাদিতে সে মাধুরী—নিতাই অনঙ্গমঞ্জরী

সব মূর্ত্তিমান রে
মূরতি ধরেছে

অনঙ্গ-কেলি—মূরতি ধরেছে
শ্রীনিত্যানন্দরূপে—মূরতি ধরেছে

অনঙ্গ-কেলি মূর্ত্তিমন্ত

নিগূঢ়-শ্রীনিত্যানন্দ—অনঙ্গ-কেলি মূর্ত্তিমন্ত

মূরতি ধরেছে

যুগলকিশোরের বিলাস—মূরতি ধরেছে
ঠাকুর-নরহরিরূপে—মূরতি ধরেছে

বিলাসের মনে সাধ উঠেছে
যুগল সুখ-পায় বটে
এবার আমি আস্বাদিব

আমার কি মাধুরী—এবার আমি আস্বাদিব

তাই,–বিলাস বিলাস আস্বাদিছে

ঠাকুর-নরহরিরূপে—তাই,–বিলাস বিলাস আস্বাদিছে

যদি অনুভব করতে চাও
যদি,–ভোগ করতে সাধ থাকে

বিলাসের পরিণতি-লীলা—যদি,–ভোগ করতে সাধ থাকে

তবে,–রাধাপদ আশ্রয় কর

শ্রী,–গুরুরূপা-সখীর আনুগত্য—তবে,–রাধাপদ আশ্রয় কর

আমাদের,–কতই-গুণের রাই-কিশোরী

গরবিণী ভানুনন্দিনী—আমাদের,–কতই-গুণের রাই-কিশোরী

‘‘মহাভাব-রূপ, দীপ্ত-চিন্তারত্নে, যাঁহার শরীর পূত। রে !
সখীর প্রণয়, কুঙ্কুমে যে জন, উজল-সুকাঁতি-যুত।। রে !!
যে নারী-রতন, ধরি, ক্ষণে ক্ষণ, নব নব রূপ কত। রে !
নিখিল-ভুবন, মোহন-নাগরে, মোহিতেছে অবিরত।। বে !!
যাঁহার বিমল, শ্রীতনু তটিনী, দিনে ধরে তিন-রূপ।’’ রে !

রাই জয় জয় রাধে রাধে

পূরায় শ্যামের মন-সাধে—রাই জয় জয় রাধে রাধে

[মাতন]

‘‘যাঁহার বিমল, শ্রীতনু-তটিনী, দিনে ধরে তিন-রূপ। রে !
তাহে নিতি নিতি, কেলি করে সুখে, রসিক-নাগর-ভূপ।।’’রে !!

আমার রাই-কলেবর

কৃষ্ণ-কেলি-সরোবর—আমার রাই-কলের

‘‘পূর্ব্বাহ্নে কারুণ্য, অমৃত-তরঙ্গ, হেলে দুলে তাহে ধায়। রে !
মধ্যাহ্নে তারুণ্য, অমৃত-প্রবাহ সবেগে বহিয়া যায়। রে !!
সায়াহ্নে লাবণ্য, সুধা-বন্যা কি বা, উদয় হয় গো আসি।’’ রে !

নিরন্তর কেলি করে

পূবর্বাহ্নে, মাধ্যাহ্নে, সায়াহ্নে—নিরন্তর কেলি করে

তিন-ধারা প্রবাহিত

কৃষ্ণ-কেলি-পারাবারে—তিন-ধারা প্রবাহিত
কারণ্য, তারুণ্য, লাবণ্যামৃত—তিন-ধারা প্রবাহিত

তিন-ধারাময়-সরোবরে

আমাদের,–রাস-বিলাসী কেলি করে—তিন-ধারাময়-সরোবরে

[মাতন]
যদি সাঁতার দিতে চাও

সেই কেলি-পারাবারে—যদি সাঁতার দিতে চাও
হংস-চক্রবাক হয়ে—যদি সাঁতার দিতে চাও

রাধা-গদাধরের শরণ লও
এমন সম্বন্ধ ভুলে গেছ
জেনেও সম্বন্ধ ভুলে গেছ
জেনেও সম্বন্ধ ভুলে গেছ
নিজ নিজ সম্বন্ধ ভুলে গেছ
তার কি রাধার সেবা মিলে

রাধা-গদাধরের কৃপা না হলে—তার কি রাধার সেবা মিলে

[মাতন]
সেবা-স্বভাব জাগায়ে দেয়

গদা –রাধা কৃপাকরে—সেবা-স্বভাব জাগায়ে দেয়

রাধা-গদাধরের শরণ লও

গোরারসে ডুবে যাও—রাধা-গদাধরের শরণ লও

[মাতন]

‘গোরা-রসে ডুবে যাও’—
মহা,–রাস-বিলাসের পরিণতি—গোরা-রসে ডুবে যাও
যুগল-উজ্জ্বল-রস-নির্য্যাস—গোরা-রসে ডুবে যাও
রাধা-গদাধরের শরণ লও—গোরা-রসে ডুবে যাও

[মাতন]
গোরা-রসে ডুবলে পরে
নিরন্তর গান করবে

‘‘দণ্ডে দণ্ডে তিলে তিলে, গোরা-রূপ না হেরিলে,
মরমে মরিয়া যেন থাকি।
সাধ হয় নিরন্তর, হেম-কান্তি-কলেবর,
সতত হিয়ার মাঝে রাখি।।’’

সে কেমনে বাঁচবে

জড়াজড়ি বুকে না ধরে—সে কেমনে বাঁচবে

‘‘তিলেক না দেখি তায়, পাঁজর ধ্বসিয়া যায়,
ধৈরজ ধরিতে নাহি পারি।
‘‘অনুরাগের ডুরি দিয়া, অন্তরে কি করে সিয়া,
না জানি তার কতই ধার ধারি।।
সুরধুনীর কূলে গিয়া, কুল দিব ভাসাইয়া,
অনল জ্বালিয়া দিব লাজে।
গৌরাঙ্গ সম্মুখে করি,’ হেরিব নয়ন ভরি,’
দিন যায় মিছামিছি কাজে।।’’

বল বল ভাই গৌর বল

আর কি লাগে না ভাল—বল বল ভাই গৌর বল

[মাতন]
বল,–জয় জয় গৌরহরি

রাই-কানু জড়াজড়ি—বল,–জয় জয় গৌরহরি

[মাতন]

‘‘ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’

[মাতন]

‘‘গৌরহরি বোল, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।’’

[মাতন]

——

প্রেমসে কহো শ্রীরাধে শ্রীকৃষ্ণ বলিয়ে—
প্রভু-নিতাই-শ্রীচৈতন্য-অদ্বৈত-শ্রীরাধারাণীকী জয় !
শ্রীবর্ষাণকী জয় !
প্রেমদাতা-পরমদয়াল-পতিতপাবন-শ্রীনিতাইচাঁদকী জয় !
করুণাসিন্ধু-গৌরভক্তবৃন্দকী জয় !
শ্রীশ্রীনাম-সঙ্কীর্ত্তনকী জয় !
খোল-করতালকী জয় !
শ্রীনবদ্বীপধামকী জয় !
শ্রীনীলাচলধামকী জয় !
শ্রীবৃন্দাবনধামকী জয় !
অনন্তকোটি-শ্রী-ব্রাহ্মণ-বৈষ্ণবকী জয় !
আপন আপন শ্রীগুরুদেবকী জয় !

‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই গৌরহরি বোল।।’’



অভিসার আক্ষেপানুরাগ কুঞ্জভঙ্গ খণ্ডিতা গীতগোবিন্দ গোষ্ঠলীলা দানলীলা দূতী ধেনুবৎস শিশুহরণ নৌকাখন্ড পূর্বরাগ বংশীখণ্ড বিপরীত বিলাস বিরহ বৃন্দাবনখন্ড ব্রজবুলি বড়াই বড়াই-বচন--শ্রীরাধার প্রতি মাথুর মাধবের প্রতি দূতী মান মানভঞ্জন মিলন রাধাকৃষ্ণসম্পর্ক হীন পরকীয়া প্রেমের পদ রাধা বিরহ রাধিকার মান লখিমাদেবি শিবসিংহ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন শ্রীকৃষ্ণের উক্তি শ্রীকৃষ্ণের পূর্বরাগ শ্রীকৃষ্ণের মান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ংদৌত্য শ্রীগুরু-কৃপার দান শ্রীরাধা ও বড়াইয়ের উক্তি-প্রত্যুক্তি শ্রীরাধার উক্তি শ্রীরাধার প্রতি শ্রীরাধার প্রতি দূতী শ্রীরাধার রূপবর্ণনা শ্রীরাধিকার পূর্বরাগ শ্রীরাধিকার প্রেমোচ্ছ্বাস সখীতত্ত্ব সখীর উক্তি সামোদ-দামোদরঃ হর-গৌরী বিষয়ক পদ