হেনক সময় প্রভাত হইল
সাজল সকল লোক।
দধি দুগ্ধ সর শকটে পূরল
পাইল দারুণ শোক।।
রথের সাজন করিতে তখন
সেই সে অক্রূর মতি।
‘চল, চল’ বলি পড়ে হুলাহুলি
পরমাদ পড়ে তথি।।
নন্দ বলে–“বাপু, কৃষ্ণ হলধর
করহ বেশের সাজ।
মধুপুর-ঘর যাইতে হইল
ভূপতি কংসের মাঝ।।
নানা পরিপাটি নীল ধড়া আঁটি
বাঁধল বিনোদ চূড়া।
নানা ফুলদাম বেশ অনুপাম
তাহে মালতীর বেড়া।।
হেম মুকুতার বেড়ি তার মালা
কি তার গাঁথনি পাশে।
তা দেখি সকল নাগরী ভুলল
ভুলল গোকুল-দেশে।।
তাহা সুশোভন অতি বিলক্ষণ
নব ময়ূরের পাখা।
যেমন আকাশে আসিয়া বেড়ল
ইন্দ্রধনু দিল দেখা।।
চন্দনে লেপিত শ্রীঅঙ্গ-শোভন
এ তাড় বলয়া সাজে।
সোনার ঘুঙ্গুর বাজয়ে মধুর
সোনার নূপুর বাজে।।
দুই এক বেশ সমান সাজল
কি তার কহিব কথা।
করেতে মোহন বাঁশীটি শোভন
দেখিতে হৃদয়ে ব্যথা।
হলধর-হাতে শিঙ্গাটি সাজল
দুহুঁ সে মায়ের কাছে।
চণ্ডীদাস বলে– “দেখিয়া জননী
পরাণ তেজয়ে পাছে।।”