যমুনা কিনারে

আদরে অধিক কাজ নহি বন্ধ

আদরে অধিক কাজ নহি বন্ধ।
মাধব বুঝল তোহর অনুবন্ধ।।
আসা রাখহ নএন পঠাএ।
কত খন কৌসলে কপট নুকাএ।।
চল চল মাধব তোহ জে সআন।
তাবে বোলিঅ জে উচিত ন জান।।
কসিঅ কসৌটী চিহ্নিঅ হেম।
প্রকৃতি পরেখিঅ সুপুরুখ পেম।।
পরিমলে জানিঅ কমল পরাগ।
নয়নে নিবেদিঅ নব অনুরাগ।।
ভনই বিদ্যাপতি নয়নক লাজ।
আদরে জানিঅ আগিল কাজ।।

অন্তঃকথন:
বহুবল্লভ শ্রীকৃষ্ণের আচরণে রাধারানী মান করেছেন! মাধবের প্রণয়বাক্যের উত্তরে শ্রীমতী বলছেন, এখন আর আমায় আদর দেখিয়ে কি হবে? অনেক আদর তো দেখলাম, অধিক আদরে আর আমার কাজ নেই বঁধু! তোমার অনুরোধ আমি সবই বুঝতে পারছি! কাতর নয়নে দৃষ্টি হেনে তুমি আমায় আশা করছ, কিন্তু তোমার কপটতা কৌশল করে আর কতক্ষণ লুকোবে? যাও যাও মাধব, তুমি যে চতুর তা আমি সবিশেষ জানি! তোমার কাতরতা তাকে দেখাও যে তোমায় চেনে না, মধুর বাক্য তাকে গিয়ে বলো যে তোমায় উচিত জানে না! কষ্টি পাথরে ঘষে সোনা চিনতে হয়, আর সুপুরুষের প্রেম তার প্রকৃতি পরীক্ষা করেই জানা যায়! কমলের পরাগ তার পরিমলেই জানা যায় তেমনি নয়নের নিবেদনেই নব অনুরাগ জানা যায়! অর্থাৎ, শ্রীমতী বলতে চাইছেন, তোমার প্রকৃতি আমি যথাযথই চিনেছি বনমালী, সবই যে তোমার ছল আমি তা জানি। আমার চক্ষুলজ্জা আছে তাই আমি তোমার সঙ্গে কথা বলছি মাধব! বিদ্যাপতি সেই চক্ষুলজ্জার কথা বর্ণনা করে মন্তব্য করছেন, প্রকৃত আদরে মধ্যে দিয়েই ভবিষ্যতের কাজ আগাম জানা যায়!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী