যমুনা কিনারে

অকামিক মন্দির ভেলি বহার

অকামিক মন্দির ভেলি বহার।
চহুঁদিস সুনলক ভমর-ঝঁকার।।
মুরছি খসল মহি ন রহলি থীর।
ন চেতএ চিকুর ন চেতএ চীর।।
কেও সখি গাবএ কেও কর চার।
কেও চানন গদে করএ সঁভার।।
কেও বোল মন্ত্র কান তর জোলি।
কেও কোকিল খেদ ডাকিনি বোলি।।
অরে অরে অরে কাহ্নু কি রভসি বোরি।
মদন-ভুজঙ্গ ডসু বালহি তোরি।।
ভনই বিদ্যাপতি এহো রস ভান।
এহি বিস-গারুড় এক পএ কান।।

অন্তঃকথন:
মাধব বিহনে রাধারানীর কত যে দুর্দশা সে কথাই দূতী এসে বলছেন মাধবকে, যদি তাতে মাধবের মন টলে আর তিনি রাধারানীর কাছে যান! দূতী বলছেন, কোনো কারণে অকস্মাৎ ঘরের বাইরে সে পা রেখেছিল আর অমনই চতুর্দিকে ভ্রমরের গুঞ্জন শুনে আর নিজেকে স্থির রাখতে পারলো না, বেহুঁশ হয়ে মাটিতে পড়ে গেলো, মাথার চুল গায়ের বসন কিছুই সামলাবার কথা মনে রইলো না! ভেবে দেখো কানাই, তোমার অদর্শনে শ্রীমতীর এমনই দশা যে ভ্রমর গুঞ্জন শুনেও মূর্চ্ছা যায়! কোনও সখী এসে গান গেয়ে মূর্চ্ছা ভাঙানোর চেষ্টা করে, কেউ বা গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, কেউ আবার শীতল চন্দন আর নানা গন্দদ্রব্য লেপন করে উপশম দেবার চেষ্টা করে। কেউ রাধারানীর জ্ঞান ফিরয়ে আনার জন্য কানে মন্ত্র পড়ে দেয়, কোনো সখী কোকিলকে ডাকিনী বলে দূরে তাড়িয়ে দেয়, যাতে কুহুতানে রাধারানীর আবার না কিছু হয়! দূতী রাধারানীর সংবাদ দিতে মাধবকে তিরস্কার করে বলেন, ওরে ওরে কানাই, কী কৌতুকে তুমি মজে আছো যে প্রিয়ার কথা একেবারে ভুলেছো? ওদিকে মদন-ভুজঙ্গ যে তোমার প্রিয়াকে দংশন করেছে, তার যে প্রাণ সংশয়! বিদ্যাপতি এই রসের ভাব ব্যখ্যা করে বলছেন, এই মদন-সর্পের গড়ুর, এ বিষের একমাত্র ওষুধ কানাই!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী