অসীম সুসর সাজল সুন্দর
নবীন কিশোরী গোরী।
মঙ্গল-বচন যত ব্রজজনা
কুঞ্জেতে লইল সরি।।
রত্ন-সিংহাসনে বসাই যতনে
উজল করল রাধা।
হুলাহুলি দিয়া যত গোপীগণ
আনন্দে নাহিক বাধা।।
কেহ শিরে দেই দূর্ব্বাদল আনি
কেহ সে দিছেন ধান।
কেহ কেহ ফেঁকে শিরের দুপাশে
গুবাক সুগন্ধ পান।।
নানা ফুল পুষ্প দধি মীন ঘট
রাখল সম্মুখে ধরি।
রতন প্রদীপ জ্বালল দুসারি
হেম ঘটে থাপি বারি।।
মলয়-চন্দন মৃগমদ ঘন
অগোর কস্তূরী চুয়া।
নিকুঞ্জ-মাঝারে কুটীর-ভিতরে
ডারল গোপিনী লয়া।।
সুগন্ধ কুসুম বিছাই চৌদিকে
অতি সে সৌরভ বাসি।
মধু-লোভে অলি লাখ লাখ কোটী
তাহাতে উড়িয়া বসি।।
নানা বাদ্য বাজে তাল মান রসে
মৃদঙ্গ ঝাঁঝরি বীণা।
শঙ্খ করতাল মদন-ভেউর
রবার খঞ্জরি পিনা।।
পাখোয়াজ বাজে কাহাল রসাল
বেণুর শবদ রসে।
বাঁশী করতাল এ সব মণ্ডল
ঘণ্টা কলরব শেষে ।।
এই সব যন্ত্র বাজয়ে সুতন্ত্র
জয় জয় উঠে ধ্বনি।
মঙ্গল সুচার বেদ সে বিধান
করল যতেক ধনী।।
বৈঠল কিশোরী আসন উপরি
রাজ-আভরণ সাজে।
জয় জয় দিল গোপিনী-মণ্ডল
রাধিকা করল মাঝে।।
ময়ূর ধরিল আড়ানি শিরেতে
ময়ূরী ধরিল তা।
ফেকন ধরিয়া রাই শিরে দিয়া
এই দুই রহল তথা।।
রাজভাট ডাকে কোকিলা কোকিল
ডাহুকি ডাহুক বলে।
ভ্রমর-ঝঙ্কারে শানাই শবদ
তাহা সে গাইল ভালে।।
চণ্ডীদাস বলে– অপরূপ লীলা
কুঞ্জে রাধা ভেল রাজা।
রমণী-মাঝারে রমণী-মোহন
বাঁধিয়া দিল যে ধ্বজা।। aaa