এ কথা শুনিয়া নাগর-শেখর
গদ্‌গদ ভেল তনু।
কমল-নয়নে ধারা বরিখয়ে
মুগধ হইল কানু।।
পীত বসন ধরিয়া সঘন
মুছত নয়ন লোর।
দশমী দশার শেষ রব শুনি
তাহাই হইল ভোর।।
“শুনহ সজনি কহিতে কি হয়ে
কেমন দেখিলে রাধা।
নিশ্চয় কহিবে আছে কি বাঁচিয়া
আমার সে তনু আধা।।
সে নব কিশোরী তারে কি পাসরি
হৃদয়ে আছয়ে জাগি।
সে হেন পীরিতি করিতে না পেয়ে
সদাই উঠিছে আগি।।
যারে না দেখিলে তিলেক না জীয়ে
হিয়া বিদরিয়া মরি।
দেখিলে জুড়াই সে মুখমণ্ডল
কহিল মরম ভোরি।।
রাধার কারণ গোঠে মাঠে ঘাটে
চরাই ধেনুর পাল।
পথের মাঝারে কদম্ব-তলায়
দান সিরজিল ভাল।।
মধুর মুরলী ধরিয়া অঙ্গুলী
বদনে মিশায়ে ভালি।
আনের মিশালে ফুঁকিয়ে রসালে
সদা রাধা রাধা বলি।।
সে নব নাগরী কেমনে পাশরি
শুনহ বচন মোর।”
চণ্ডীদাস কহে– “তুরিতে গমন
নহেবা হইবে ভোর।।”