কহে তবে কংসে– “গোপকুল-বংশে
জম্মিল গোলোক-হরি।
নন্দ-ঘরে তার উৎপতি হইল
সে জন আমার বৈরী।।
রিপু বলবান জে দেশে জন্মিল
তাহার কল্যাণ নাঞি।
কণ্টক থাকিতে জানিহ দুর্গতি
কহিল তোমার ঠাঞি।।
সভা বলাইঞা এই সারদ্ধার
করিল অসুরগণে ।
নন্দের কুমারে বিষস্তন পানে
বধিতে করিলা মনে।।
তুমি গিয়া ওথা মার নন্দ-সুত
বিষের ভোজন পানে।
এই সে কারণে আইল সদনে
ভাবিআ তোমার স্থানে।।
আমি সে থাকিলে সভা বর্ত্তা-দশা
এ কথা কহিব ভালে।
কন্টক মরিলে সুখে রাজ্য হয়ে
তোরে সে কহিএ হেলে।।”
“ভাল ভাল”বলি পুতুনা কহেন–
“জাইঞা গোকুল-পুরে।।
বিষস্তন পানে বধিব বালক
নিশ্চয়ে কহিল তোরে।।
রাজ-আভরণ দেহত আনিঞা
উত্তম বসন ভাতি।
এ সব পারিআ মাআধারী হয়া
গোকুলে যাইব তথি।।”
নানা অলঙ্কার সুবস্ত্র সুন্দর
দিলা সে পুতুনা-পাছে।।”
কহে কংস তবে “শুনহ, ভগিনি
উখানী আস্যহ পাছে।”
কহেন পুতুনা– “মোর আছে জানা
জাহাই করিব আমি।।
বালক বধিআ এক দণ্ড পরে–
নিশ্চয়ে জানিহ তুমি।।”
এ কথা শুনিয়া হরস রাজার
আনন্দে নাহিক ঔর ।
নিজ-নিকেতন কংসের গমন
সুখেতে হইলা ভোর।।
কহে গিআ তবে কংস নৃপবর
আপন বান্ধব পাশে।
কহিতে লাগল সকল বির্ত্তান্ত
সভার মনেতে বাসে।।
“পাঠাইল তাই শুন কহি, ভাই,
পুতুনা গোকুলে গেলা।
নানা অভরণে বিধির বিধানে
ভগিনী পুতুনা নিলা।।”
গমন করিল গোকুল-নগরে
কহিল সভার স্থানে।
অবোধ কংসের বচন শুনিঞা
দিন চণ্ডিদাস ভণে।।