যমুনা কিনারে

জতহি প্রেম-রস ততহি দুরন্ত

জতহি প্রেম-রস ততহি দুরন্ত।
পুনু কর পলটি পিরিত গুনমন্ত।।
সবতহু সুনিয়ে অইসন বেবহার।
পুনু টূটএ পুনু গাঁথিএ হার।।
এ কহ্ন কহ্নু তোহহি সআন।
বিসরিএ কোপ করিএ সমধান।।
প্রেমক অঙ্কুর তোহে জল দেল।
দিন দিন বাঢ়ি মহাতরু ভেল।।
তুঅ গুন ন গুনল সউতিন আছ।
রোপি ন কাটিএ বিসহুক গাছ।।
জে নেহ উপজল প্রানক ওর।
সে ন করিঅ দুর দুরজন বোল।।
জগত বিদিত ভেল তোহ হম নেহ।
এক পরান কএল দুই দেহ।।
ভনই বিদ্যাপতি কর উদাস।
বড়ক বচন করিএ বিসবাস।।

অন্তঃকথন:
রাধা মাধবের কলহ হয়েছে, মাধব মান করে আছেন। রাধারানী এই মান ভাঙাবার জন্য বলছেন, প্রেমরস যত বেশি হয় ততই দুরন্তও হয়, গাঢ় প্রেমে কলহও অধিক হয়। তা বলে ত কেউ ছেড়ে চলে যায় না, যে গুণবান সে আবার ফিরে প্রেম করে। সকলের কাছেই শুনি হার ছিঁড়ে গেলে আবার নতুন করে গাঁথে, মানান্তে আবার মিলন হয়। হে কানাই, হে কানাই তুমি চতুর, সব ভুলে রাগের অবসান ঘটাও। মনে করে দেখো, প্রেমের অঙ্কুরে তুমি জল দিলে, দিনে দিনে সে প্রেমাঙ্কুর বেড়ে মহাতরু হয়ে উঠল। সপত্নী থাকা সত্ত্বেও তোমার গুণে আমি তা গণনা করলাম না, সতীনজ্বালাও সহ্য করলাম শুধু তোমারই জন্য! দেখ, বিষবৃক্ষও কেউ রোপণ করলে কাটে না, আর এতো প্রেমের অমৃত তরু! যে স্নেহ প্রাণের সীমায় উৎপন্ন হল,তাকে দুর্জনের কথায় শেষ কোরো না! তোমার আমার প্রেম জগতে বিদিত, বিধাতা আমাদের এক প্রাণ দুই দেহ করে গড়েছেন। রাধারানী বলতে চাইছেন তুমি সেকথা ভুলো না মাধব, মান ভুলে ফিরে এসো। বিদ্যাপতি আশ্বাস দিয়ে বলছেন, রাধারানী তুমি আশা ছেড়ো না, মাধব মানে উদাসীন হবেন, ফিরে আসবেন, মহত লোকের কথায় বিশ্বাস রাখতে হয়!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী