বচনের অগোচর বৃন্দাবন স্থান যার
সুপ্রকাশ প্রেমানন্দ ঘন।
যাহাতে প্রকট সুখ নাহি জরা মৃত্যু দুঃখ
কৃষ্ণ লীলা-রস অনুক্ষণ।।
রাধাকৃষ্ণ দুহুঁ প্রেম শতধারা যেন হেম
যাহার হিল্লোল রসসিন্ধু।
চকোর-নয়ন প্রেম কামরতি করে ধ্যান
পিরিতি যুগ্মের দুহুঁ বন্ধু।।
রাধিকা প্রেয়সীবরা বামদিগে মনোহরা
কনক-কেশর-কান্তিধরে।
অনুরাগে রক্ত শাড়ি নীলপট্ট মনোহারী
অঙ্গে ভাল অভরণ বরে।।
করএ লোচন প্রাণ রূপলীলা দুহু পান
আনন্দে মগন সহচরী।
বেদবিদ্যা অগোচর রতন বেদীর পর
সেবোঁ নিতি কিশোর কিশোরী।।
দুর্লভ ভজন হেন নাহি ভজ হরি কেন
কি লাগি মরহ ভববন্ধে।
ছাড় অন্য ক্রিয়াকর্ম নাহি দেখ বেদ ধর্ম্ম
ভক্তি কর কৃষ্ণ পদদ্বন্দ্বে।।
বিষয় বিষম গতি নাহি ভজ ব্রজপতি
(শ্রী)নন্দ নন্দন সুখ সার।
স্বর্গ আর অপবর্গ সংসার নরক ভোগ
সর্ব্বনাশা সে জন ধিঃকার।।
দেহেতে না করি আস্থা মন্দ রীতে যম শাস্তা
দুঃখের সমুদ্র কর্ম্ম গতি।
দেখিঞা শুনিঞা ভজ সাধু শাস্ত্র যত জজ
যুগল চরণে কর গতি।।
জ্ঞানকাণ্ড কর্ম্মকাণ্ড কেবল বিষের ভাণ্ড
অমৃত বলিয়া কেনে খায়।
নানা যোনি ফিরি ফিরি কদর্য্য ভক্ষণ করি
তার জন্ম অধঃপাতে যায়।।
রাধাকৃষ্ণে নাহি রতি অন্য জনে বলে পতি
প্রেমভকতি নাহি জানে।
নাহি ভক্তি সন্ধান ভরমে করএ ধ্যান
বৃথা তার সে ছার জীবনে।।
জ্ঞান কর্ম কহে লোক নাহি জানে ভক্তিযোগ
নানামতে হইয়া অজ্ঞান।
তার কথা নাহি শুনি পরমার্থ তত্ত্ব জানি
প্রেমভক্তি ভক্তগণ-প্রাণ।।
জগৎ ব্যাপক হরি অজ ভব আজ্ঞাকারী
মধুর মূরতি লীলাকথা।
এই তত্ত্ব জানে যেই পরম ঈশ্বর সেই
তার সঙ্গ করিহ সর্বথা।
পরম নাগর কৃষ্ণ তাহে হয় সতৃষ্ণ
ভজ তাঁরে ব্রজ ভাব লঞা।
রসিক ভকত সঙ্গে রহিব পিরিতি রঙ্গে
ব্রজপুরে বসতি করিয়া।
শ্রীগুরু ভকত জন তাহার চরণে মন
আরোপিয়া কথা অনুসারে।
সখির সর্বথা মত হৈয়া তাঁর অনুযুত
সদা বিহর ব্রজপুরে।।
লীলারস সদা গান যুগল কিশোর প্রাণ
প্রার্থনা করিব অভিলাষে।
জীবনে মরণে এই আর কথা কিছু নাঞি
কহে দীন নরোত্তম দাসে।।