যমুনা কিনারে

রাধা বলে তুমি কত চাহ দান

রাধা বলে ”তুমি কত চাহ দান
বলহ কি নিতে চাহ ।
যা নিবে তা দিব নাহি ভাঙ্গাইব
সবারে ছাড়িয়া দিহ।।”
কানু বলে ”ভাল বলিলে আমারে
বুঝহ আমার কাছে।
উচিত হইলে তাহা দিয়া যাবে
আন কথা হয় পাছে।।
অমূল্য রতন নিবত এখন
বেণীর যে হয় দান।
এক লাখ নিব ইহার উচিত
ইহাতে না হয় আন।।
সিঁথার সিন্দুরে দুই লাখ নিব
নাসার বেশরে রাই।
তিন লাখ নিব মুকুতার দান
বেশের উপধা নাই।।
হাসির সোসর পাঁচ লাখ পর
নিব সে এখনি গণি।
যাহার হাসির মিশালে পড়য়ে
কত মাণিকের কণি।।’
কহে চণ্ডীদাস শুন রসময়
এত কি দানের লেখা।
এ ঘাটে তরুণী গোপের রমণী
আর কি পাইব দেখা।।

অন্তঃকথন:
পদটি দান পর্যায়ভুক্ত। রাধা বলেন,'তুমি কত দান নিতে চাও বলো। যা নেবে, তাই দেব, কম দেব না, সকলকে ছেড়ে দাও।' কানু বলে,'ভালোই বলেছ আমাকে, এবার বুঝে দেখো। যা উচিত তাই দিয়ে যেও, অন্য কথা যেন না হয়। এখন নেব অমূল্য রত্ন, বেণীর যা শুল্ক হয়। এক লাখ নেব, এটাই উচিত, এর অন্যথা হবে না। সিঁথির সিঁদুরের জন্য দুই লাখ নেব। নাসার সৌন্দর্যের জন্যও তাই নেব, রাই। তিন লাখ নেব মুক্তের শুল্ক, বেশের তো উপমা নেই। হাসির জন্য পাঁচ লাখ, এখনি গুনে নেব, সে হাসির সঙ্গে মিশে গড়িয়ে পড়ে কত যে মানিক কণা!' চণ্ডীদাস বলেন, 'শোনো রসময়, এত দানের হিসেব! এ ঘাটে আর কোনো গোপ তরুণীর দেখা পাব!'

পদকর্তা:চণ্ডীদাস
রাগ:যতিশ্রী
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:মুনমুন ঘোষ

সন্ধিনী