যমুনা কিনারে

লোচন নীর তটিনি নিরমানে

লোচন নীর তটিনি নিরমানে।
করএ কমলমুখি তথিহি সনানে।।
সরস মৃনাল করই জপমালী।
অহনিস জপ হরি নাম তোহারী।।
বৃন্দাবন কাহ্নু ধনি তপ করই ।
হৃদয়বেদি মদনানল বরই।।
জিব কর সমিধ সমর কর আগী।
করতি হোম বধ হোএবহ ভাগী।।
চিকুর বরহিরে সমরি করে লেঅই
ফল উপহার পয়োধর দেঅই
ভনই বিদ্যাপতি সুনহ মুরারী।
তুঅ পথ হেরইত অছি বর নারি।।

অন্তঃকথন:
দূতী এসে মাধবকে রাধারানীর বিরহদশা বর্ননা করে বলছেন, শ্রীমতীর চোখের জলে যেন নদীর সৃষ্টি হয়েছে। আর সেই নদীতেই কমলমুখির নিত্য স্নান। হে হরি, নিজের চোখের জলে স্নান করে সরস মৃণালকে জপমালা করে রাধা অহর্নিশি তোমারই নাম জপ করে। কানাই, ধনী বৃন্দাবনে তপস্যা করছে, যজ্ঞবেদীর আগুনের মত তা হৃদয়বেদীতে মদনানল জ্বলছে। রাই জীবনকে ইন্ধন করেছে আর স্মৃতিকে আগুন করে হোম করে চলেছে, এমন চললে সে আর বেশীদিন বাঁচবে না। তখন কিন্তু তুমিই তার বধের ভাগী হবে। যজ্ঞে আহুতি দেবার জন্য সে যেন তার দীর্ঘ চিকুর গুছিয়ে হাতে তুলে নিয়েছে,আর সুডোল দুটি পয়োধর ফল হিসেবে অগ্নিতে উপহার দিচ্ছে! অর্থাৎ দূতী বলতে চাইছেন, রাধারানী তোমার চিন্তায় তোমার আশায় দিনে দিনে যেন বিরহের আগুনে জ্বলে ক্ষীণ শীর্ণ হয়ে পড়ছেন, এখনো কেবল প্রাণ টুকু আছে, হরি তুমি না গেলে সেটুকুও থাকবে না। দূতীর কথার প্রতিধ্বনি করে বিদ্যাপতিও শ্রীহরিকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, হে মুরারি, সুন্দরী নারী শুধু তোমারই জন্য পথ দেখছে!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী