‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
‘‘জয় জয় শ্রীগৌরসুন্দর সর্ব্বগুরু।’’
ভাইরে আমার,–সর্ব্বগুরু গৌরহরির—প্রাণভরে জয় দাও ভাই
ভাইরে আমার,–জগদ্গুরু গৌরহরির—প্রাণভরে জয় দাও ভাই
‘জগদ্গুরু গৌরহরি’—
নিত্যানন্দ-হৃদ্বিহারী—জগদ্গুরু গৌরহরি
ভক্তজন-বাঞ্ছা-কল্পতরু—জয় জয়,–গৌরহরি জগদ্গুরু
গৌর হে,–‘‘জীব প্রতি কর প্রভু শুভ দৃষ্টিপাত।।’’
আমার,–প্রেমাবতার গৌরহরি—একবার,–চাও হে নয়ন-কোণে
এই,–অশান্ত-জগৎ-পানে—একবার,–চাও হে নয়ন-কোণে
তোমার এই,–ত্রিতাপে দগ্ধ জগৎ-পানে—একবার,–চাও হে নয়ন-কোণ
কাল-কলির পীড়ন-ফলে—ত্রিতাপানলে জগৎ জ্বলে
চাহি কৃপা নয়ন-কোণে—বিশ্বম্ভর রাখ জগতেরে
জয় জয় শ্রীকরুণাসিন্ধু দয়াময়।।
শেষ খণ্ড কথা ভাই শুন একমনে।
শ্রীগৌরসুন্দর বিহরিলেন যেমনে।।’’
‘‘ঠাকুরো থাকিয়া কথোদিন নীলাচলে।
পুনঃ গৌড়দেশে আইলেন কুতূহলে।।
গঙ্গাতীরে—তীরে প্রভু লইলেন পথ।
স্নান-পানে গঙ্গার পূরিল মনোরথ।।
গৌড়ের নিকটে রামকেলি গ্রামে গেলা।
নাটশালা হৈতে প্রভু পুনঃ ফিরি আইলা।।’’
বাহির হয়ে নীলাচল হতে—প্রভু চলিলেন মথুরাতে
পানিহাটি রামকেলি হয়ে—প্রভু চলিলেন মথুরাতে
বহু লোকসঙ্খট্ট ঙয়ে—ফিরলেন কানাই নাটশালা হতে
নীলাচল যাবার লাগি—আইলেন পুনঃ রামকেলিতে
শ্রীরূপ সনাতন দুইজনে—ব্রজে যাবার আজ্ঞা দিলেন
প্রকাশিতে লুপ্ত লীলাস্থানে—ব্রজে যাবার আজ্ঞা দিলেন
লুপ্ত-ব্রজ প্রকাশ-তরে—ব্রজে যাবার আজ্ঞা দিলেন
নাচে সঙ্কীর্ত্তনে মহাপ্রেমে মত্ত হৈয়া।।
নিরখিয়া শ্রীখেতরী গ্রাম দিশাপানে।
অদ্ভুত আনন্দধারা বহে দুনয়নে।।
নরোত্তম বলিয়া ডাকয়ে বারে বারে।
ভক্তবাৎসল্যেতে স্থির হৈতে না পারে।।’’
‘পদ্মার তীরে আসি কহে ধরে প্রেম লহ।
নরোত্তম নামে প্রেম তারে তুমি দিও।।’’
একদিন প্রাণ গৌরহরি নিজ নামানন্দে মেতে
সঙ্কীর্ত্তন-নৃত্যাবেশে—নিজ নামানন্দে মেতে
হেমদণ্ডবাহু তুলে—ডেকেছিলেন নরু নরু বলে
খেতরী গ্রামের পানে চেয়ে—ডেকেছিলেন নরু নরু বলে
নরোত্তমে আকর্ষিয়ে—রামকেলি হতে ফিরবার কালে
ভাগীরথীর তীরে তীরে—রামকেলি হতে ফিরবার কালে
রাখিলেন নিজ-প্রেম
ভাগ্যবতী পদ্মার কাছে—রাখিলেন নিজ-প্রেম
তোমার,–দিলাম আমার প্রেম-সম্পত্তি—এই ধর লও পদ্মাবতী
আমার,–নরু জন্মিবে অবিলম্বে
তোমার তীরে খেতরী গ্রামে—আমার,–নরু জন্মিবে অবিলম্বে
নরু তার মায়ের সনে—আসিলে তোমা অবগাহনে
তারে দিও এই প্রেমধনে—আসিলে তোমা অবগাহনে
পুনঃ আইলেন গঙ্গাতীরে
কথোদিনে আইলেন অদ্বৈত-মন্দিরে।।’’
গঙ্গাতীরে আসতে আসতে—উপনীত শান্তিপুরে
শ্রীসীতানাথের ঘরে—উপনীত শান্তিপুরে
সঙ্গে,–নিত্যানন্দ-আদি প্রিয়গণ—শান্তিপুরে আইলা শচীনন্দন
নিজ,–নাথে পেয়ে শ্রীঅদ্বৈত—আনন্দে হইলেন মত্ত
আসি মিলিল যত ভকত
মধুলুব্ধ ভ্রমরের মত—আসি মিলিল যত ভকত
হেরিবারে প্রাণ শচীসুত—আসি মিলিল যত ভকত
চারিদিক হতে ভক্তগণ—সবাই মিলিলেন আসি
দেখিবারে প্রাণ গোরাশশী—সবাই মিলিলেন আসি
শচীমাতা সঙ্গে লয়ে—আইলেন সব নদীয়াবাসী
তাদের,–আঁখি চকোর আছে উপবাসী—আইলেন সব নদীয়াবাসী
প্রভু-সনে ভক্তগণের—হইল মহা সম্মিলন
দেখি প্রাণশচীসুত—সবাই হইলা উনমত
প্রভু শ্রীসীতানাথের প্রীতে—দশদিন রহিলেন শান্তিপুরে
কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—দশদিন রহিলেন শান্তিপুরে
সবারে ভাসালেন প্রেম-পাথারে—দশদিন রহিলেন শান্তিপুরে
করিলেন মহামহোৎসব
মাধবপুরীর আরাধনা দিনে—করিলেন মহামহোৎসব
সাঙ্গোপাঙ্গে গৌরহরি—করিলেন মহামহোৎসব
‘সাঙ্গোপাঙ্গে গৌরহরি’—
নিত্যানন্দ সঙ্গে করি—সাঙ্গোপাঙ্গে গৌরহরি
জানাইলেন অদ্বৈত-তত্ত্ব
মহা ঐশ্বর্য্যের বিকাশ দেখায়ে—জানাইলেন অদ্বৈত-তত্ত্ব
চলে গোরা কুতূহলী
শ্রীঅদ্বৈত শিব বলি—চলে গোরা কুতূহলী
আইলা কুমারহট্ট শ্রীবাস-মন্দিরে।।’’
শান্তিপুর হতে বাহির হয়ে—আইলেন প্রভু কুমারহট্টে
শ্রীবাস-পণ্ডিতের ঘরে—আইলেন প্রভু কুমারহট্টে
তার,–নিজ-নিষ্ঠা জানাবার তরে—পরীক্ষা করলেন তারে
আপনার গৌরাঙ্গ-নিষ্ঠা—শ্রীবাস-পণ্ডিত জানাইলা
হাতে তিন তালি দিয়ে—শ্রীবাস-পণ্ডিত জানাইলা
যাব না কাহার পাশ—করিব তিন উপবাস
ঝাঁপ দিব গঙ্গাজলে
তখন,–আবেশে বলেন গৌরহরি
কি কথা বল শ্রীবাস
অন্নাভাবে হবে তোর উপবাস—কি কথা বললি শ্রীবাস
যদি,–লক্ষ্মী কখনও ভিক্ষা করে—অভাব খটিবে না তোরে
শ্রীবাসের তাঁর প্রতি নিষ্ঠা—জানালেন জগতেরে
রসময় গোরা বনমালী
নিত্যানন্দাদি সঙ্গে করি
তবে গেলা পানিহাটি রাঘব-মন্দিরে।।’’
রাঘব-পণ্ডিতের ঘরে—আইলেন প্রভু পানিহাটিতে
নিভৃতে কহিলা কিছু রহস্য উত্তর।।’’
নিভৃতে রাঘব-পণ্ডিতের কাছে—নিজ-গূঢ়-রহস্য প্রকাশিলেন
রাঘবের,–নিতাইগত প্রাণ জেনে—নিজ-গূঢ়-রহস্য প্রকাশিলেন
‘যা’,–প্রকাশ করি নাই কারো স্থানে—গোপনে রেখেছিলাম আপন প্রাণে
তোমার,–প্রীতি দেখি নিতাই-ধনে—সে মরম, কথা কই তোমার স্থানে
‘যা’,–কভু বলি নাই জানে না আনে—সে মরম,–কথা কই তোমার স্থানে
রাঘব তোমায় নিজ-গোপ্য কই—আমার,–দ্বিতীয় নাই নিতাই বই
সেই করি আমি এই বলিল তোমারে।।’’
আমি,–নিতাই-চাঁদের খেলার পুতুল
যেমন নাচায় তেমনি নাচি—আমি,–নিতাই-চাঁদের খেলার পুতুল
এই আমি অকপটে কহিল তোমারে।।’’
এই,–সত্য কহিলাম তোমার নিভৃতে—আমার,–সকল কর্ম্ম নিতাই হতে
আমার,–কর্ম্ম করতে বিনে নিতাই—আর জগতে কেউ নাই
আমার,–কর্ম্ম করতে নিতাই বিনে—কেউ নাই আর ভুবনে
এই গূঢ় জেনো অন্তরে—আমার কার্য্য যে কিছু করে
সে আমার,–কার্য্য করে অবহেলে
নিতাই যার বুকে খেলে—সে আমার,–কার্য্য করে অবহেলে
সে,–বুকে ধরুক নিতাইচাঁদ—আমার,–কাজ করবার যায় আছে সাধ
জগদ্গুরু নিতাই যে হৃদে ধরে—সেই,–আমার কার্য্য করতে পারে
আবেশে বললেন ঠাকুর লোচন
প্রাণগৌরাঙ্গের এই মরম—আবেশে বললেন ঠাকুর লোচন
আমার ঠাকুর অবধূত—অভিন্ন চৈতন্য-তনু
ঠাকুর লোচন বললেন তাই—অভিন্ন চৈতন্য-তনু নিতাই
‘‘মহা যোগেন্দ্রেরও যাহা পাইতে দুর্ল্লভ।
নিত্যানন্দ হৈতে তাহা হইব সুলভ।।
এতেকে হইয়া তুমি মহা সাবধান।
নিত্যানন্দ সেবিহ যেহেন ভগবান।।’’
আমার নিতাই ভজ তবে—আমার পূজা করা হবে [মাতন]
আছিলেন কথোদিন গৌরাঙ্গ শ্রীহরি।।
তবে প্রভু আইলেন বরাহনগরে।
মহা ভাগ্যবন্ত এক ব্রাহ্মণের ঘরে।।’’
পানিহাটি গ্রাম ধন্য করে—প্রাণগৌর আইলা বরাহনগরে
রঘুনাথ বিপ্রের ঘরে—প্রাণগৌর আইলা বরাহনগরে
প্রভু দেখি ভাগবত লাগিলা পড়িতে।।’’
দেখি ভাগবত মূরতি শচীসুত—পড়িতে লাগিলা শ্রীভাগবত
ভাগবতের মূর্তি দেখে—ভাগবত স্ফুর্তি পেল রঘুনাথের
যার মুখে,–ভাগবত শুনেন চৈতন্য গোসাঞি—তার ভাগ্যের সীমা নাই
ভাবনিধি শচীসুত—হৈলা ভাব উনমত
গোবিন্দ গৌরাঙ্গ হয়ে—আস্বাদিতে এসেছে এবার
নিজ-নাম-রূপ-গুণ-লীলা—আস্বাদিতে এসেছে এবার
ভক্তমুখে শুনি নিজ-কথামৃত—আজ তাই হলেন উনমত
যেন,–প্রেমসিন্ধু হল উতরোল—গৌরমুখেও নয় বোল বোল
শুনি,–নিজকথা পীযূষ ধার—
সেহো বিপ্র পড়ে পরানন্দে মগ্ন হৈয়া।’’
ভাগ্যবান বিপ্র আজ—পরানন্দ-পাথারে দেয় সাঁতার
যার কথা তারে শুনায়—পরানন্দ-পাথারে দেয় সাঁতার
তার সুখের ওর নাই আর—পরানন্দ-পাথারে দেয় সাঁতার
যা শুনতে—ভাগবত আসি হল মূর্ত্ত—তার,–ভাগবত পাঠ আজ হল সার্থক
রঘুনাথের মুখে ভাগবত শুনি—নাচে গোপা ন্যাসিমণি
প্রভু আপনায় ভুলিয়া—নাচে আনন্দে মাতিয়া
আপনার কথা শুনিয়া—নাচে আনন্দে মাতিয়া
শুনি,–রঘুনাথ-মুখে ভাগবত—ভাবভরে নাচে শচীসুত
নিজ-ভক্তি-মাধুরী—আস্বাদিছেন গৌরহরি
ধরণীর সৌভাগ্য বাড়ায়—ও ত’ আছাড় পড়া নয়
যার রজে,–গড়ি যায় গৌর গুণমণি—ভাগ্যবতী বরাহনগর ভূমি
প্রাণগৌর বুকে ধরেছ তুমি—ধন্য ধন্য বরাহনগর ভূমি
রাই সম্পুটে নীলমণি—আজ,–হৃদে ধরে বরাহনগর ভূমি
ব্রজ-রাসস্থলী হতে—বুঝি হয়েছে সৌভাগ্যবতী
বৃন্দাবনের রাসস্থলী—এ মূরতি ত পায় নাই বুকে
এ যে জড়াজড়ি জড়াজড়ি—সে ত ছাড়াছাড়ি ছাড়াছাড়ি
শ্রীগুরুচরণ হৃদে ধরে—অনুভব কর ভাই রে
প্রেমবৈচিত্ত্য মূরতি ধরে—নেচেছে কি রাসস্থলীতে
বরাহনগর ভূমি—আজ বুকেতে ধরিছে সুখে
রাইকানু মিলিত—মূরতি—আজ বুকেতে ধরিছে সুখে
মহা,–রাসবিলাসের পরিণতি—আজ বুকেতে ধরিছে সুখে
‘মহা,–রাসবিলাসের পরিণতি’—
রাইকানু একাকৃতি—মহা,–রাসবিলাসের পরিণতি
সাক্ষাৎ বিলাস বিবর্ত্ত—আজ বুকেতে ধরিছে সুখে
বিবর্ত্তে বিলাস-রঙ্গী—আজ বুকেতে ধরিছে সুখে
বরাহনগর পুন্যভূমি—তাই বলি—তুমি অতি ভাগ্যবতী
বুকে—ধরেছ গৌর নাটুয়া মূরতি—তাই বলি,–তুমি অতি ভাগ্যবতী
আছাড় দেখিতে সর্ব্বলোকে পায় ত্রাস।।
এইমত রাত্রি তিন-প্রহর-অবধি।
ভাগবত শুনিয়া নাচিলা শুণনিধি।।’’
ভাগবত শুনে প্রেমে হয়ে ভোরা—তিনপ্রহর-অবধি নাচিল গোরা
এ যে আশ মিটান-লীলারে –আস্বাদিছে স্বমাধুরী
ভক্তভাব অঙ্গীকার করি—আস্বাদিছে—স্বমাধুরী
কেউ যেন মনে করো না একদিন নেচেছিলেন
তার,–ত্রিকাল-সত্য লীলায়—আজ সেই দিন বটে
ভাগবত পাঠ শুনে—নেচেছিলেন তিন প্রহর
সেই নটন বন্ধ হয় নাই আজও প্রভু নাচিছে
তার,–ত্রিকাল-সত্য-লীলায়—আজও প্রভু নাচিছে
যার,–প্রেম-নেত্রের বিকাশ হয়েছে—ভাগ্যবান জনে দেখছে
প্রত্যক্ষ করে গেছে
নৃত্যের ইঙ্গিত—প্রত্যক্ষ করে গেছে
এই আসনে নূপুররে কড়াই—প্রত্যক্ষ করে গেছে
ভাগ্যবান ডবুবাবু—প্রত্যক্ষ করে গেছে
শ্রীমন্দিরে রয়েছে
নূপুরের কড়াই—শ্রীমন্দিরে রয়েছে
নটন নয় সীমাবদ্ধ—এখনও নাচ্ছে
বাহ্য পাই বসিলেন শ্রীশচীনন্দন।
সন্তোষে বিপ্রেরে করিলেন আলিঙ্গন।।’’
ভাগবত শুনি সন্তোষে—রঘুনাথে কৈলেন কোলে
আইস আইস আইস বোলে—রঘুনাথে কৈলেন কোলে
‘আইস আইস আইস বোলে’—
আমায় এ কি সুখ দিলে—আইস আইস আইস বোলে
আলিঙ্গিয়ে দিলেন সেই মহাধন
যা ব্রজে মঞ্জীরা পায় নাই—আলিঙ্গিয়ে দিলেন সেই মহাধন
মঞ্জরীরা জড়াজড়ি—চেয়ে কেবল দেখেছে
পায় নাই বুকে ধরতে—চেয়ে কেবল দেখেছে
ভাগবত-আচার্য্যের বক্ষোপরি—আজ সেই জড়াজড়ি
কভু নাহি শুনি আর কাহারও মুখেতে।।
এতেকে তোমার নাম ‘ভাগবতাচার্য্য’।
ইহা বৈ আর কোন না করিহ কার্য্যে।।’’
ভাগবত পাঠ বিনে—কোন কার্য্য করো না
পূর্ণ হবে মনোরথ—পড়ো তুমি ভাগবত
সভে করিলেন মহা জয় হরিধ্বনি।।’’
ভাগবতাচার্য্য পদবী শুনি—সবে করে হরিধ্বনি
তোমায়,–গৌর কৈলেন আত্মসাৎ–বলে,–জয় জয় রঘুনাথ (মাতন)
এই পুণ্য ভূমিতে এসে—প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠ্ছে
শ্রীগুরুদেবের কৃপা-প্রেরণায়—প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠ্ছে
ভাগবতাচার্য্যের ভবন—এই সেই পুণ্য ভূমি
যেথা নাচিলেন গৌর-গুণমণি—এই সেই পুণ্য ভূমি
ভাগ্যবান ভাগবতাচার্য্যের পাট—এ যে,–গৌর-নাচা ভূমি রে
প্রভু আইলা বরাহনগরে
আজ,–পানিহাটি গ্রাম হতে—প্রভু আইলা বরাহনগরে
রঘুনাথ-বিপ্রের ঘরে—প্রভু আইলা বরাহনগরে
তাঁর প্রকট-বিহার-লীলায়—প্রভু আইলা বরাহনগরে
নিতাই সনে যুগল হয়ে—প্রভু আইলা বরাহনগরে
ভক্তগণ সঙ্গে লয়ে—প্রভু আইলা বরাহনগরে
রঘুনাথ-মুখে ভাগবত শুনি—নেচেছিলেন তিনি প্রহর অবধি
গৌর আগমনে বরাহনগরে—বয়েছিল প্রেমের পাথার
তখন জন্ম হল না—দেখিতে তা পেলাম নারে
নটন-পর শচীদুলালে—দেখিতে ত পেলাম নারে
এই বারহনগর, ভাগবতাচার্য্যের ঘরে—দেখিতে ত পেলাম নারে
প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠছে
এই সেই নাচবার দিন
এই সে পুণ্য ভূমি
শ্রীগুরু-মুখে শুনেছি মোরা
ত্রিকাল-সত্য গৌর লীলা—শ্রীগুরু-মুখে শুনেছি মোরা
যে দিন যে লীলা করেছেন যেখানে-গৌরের,–সে লীলা প্রকট সেখানে
যে হৃদে ধরেছে শ্রীগুরু-চরণে—অনুভব করে ভাগ্যবান জনে
গৌর নাচিছে প্রেমভরে
এই,–ভাগবতীচর্য্যের ঘরে—গৌর নাচিছে প্রেমভরে
ত্রিকাল-সত্য-লীলায়—গৌর নাচিছে প্রেমভরে
আজ,–রঘুনাথ-বিপ্রের ঘরে গৌরাঙ্গ-সুন্দর।।’’
শ্রীগুরু-বাক্য হৃদে ধরে—আজ,–এসেছি বড় আশা করে
‘শ্রীগুরু-বাক্য হৃদে ধরে’—
ত্রিকাল-সত্য গৌরলীলা—শ্রীগুরু-বাক্য হৃদে ধরে
শ্রীগুরু-বাক্য হৃদে ধরে—আজ,–এসেছি বড় আশা করে
‘শ্রীগুরু-বাক্য হৃদে ধরে’—
ত্রিকাল-সত্য গৌরলীলা—শ্রীগুরু-বাক্য হৃদে ধরে
আজ গৌরের,–আগমন দিনে জেনে—আজ,–এসেছি বড় আশা করে
‘আজ গৌরের,–আগমন দিন জেনে—
এই,–পুণ্যভূমি বরাহনগরে—আজ-গৌরে,-আগমন দিনে জেনে
দেখিব মোরা নয়নভরে
নয়ন-রঞ্জন—গোরা রঘুনাথের ঘরে—দেখিব মোরা নয়নভরে
হা,–প্রাণ গৌড়গুণমণি,–আজ,–নিশ্চয় এসেছে তুমি
এই বরাহনগরে,–ভাগবতাচার্য্যের ঘরে—আজ,–নিশ্চয় এসেছে তুমি
তুমি,–করেছ হেথা আগমন—পেয়েছি তার নিদর্শন
মধুর নীলাচল হতে—এসেছিন শ্রীমহাপ্রসাদ
লীলাশক্তির প্রেরণায়—এসেছেন শ্রীমহাপ্রসাদ
এই মনে হয়—বুঝি,–পাঠায়েছেন প্রতাপরুদ্র
তোমার,–আগমন দিন জেনে—পাঠায়েছেন প্রতাপরুদ্র
নৈলে,–এসেছে কার আকর্ষণে
শত শত নরনারী—নৈলে,–এসেছে কার আকর্ষণে
যাদের,–আঙ্গিনা বিদেশ তারা—নৈলে,–এসেছে কার আকর্ষণে
দেহ ধর্ম্ম পাসারিয়ে—নৈলে,–এসেছে কার আকর্ষণে
দেহ গেহ ভুলাইয়ে—কে তাদের এনেছে টেনে
প্রাণগৌর তোমা বিনে—কে তাদের এনেছে টেনে
শত শত নরনারীগণে—যদি,–টেনে এনেছ নিজগুণে
ভোগ লালসা তাদের ঘুচায়ে দাও
প্রাকৃত—রূপরসগন্ধস্পর্শশব্দের—ভোগ লালসা তাদের ঘুচায়ে দাও
ছায়া দেখে মুগ্ধ হয়ে—সবাই এদের পিছে পিছে ছুটে
কোথা গেলে পাব বলে—সবাই এদের পিছে পিছে ছুটে
দিবানিশি দুঃখ ভোগ করে—সবাই এদের পিছে পিছে ছটে
একবার দেখা দাও—তাদের এই দুঃখ ঘুচাও
জগবাসী নরনারী—নিশিদিশি মরমে ঝুরি
হেরি তোমার,–অখিল রসামৃত মূরতি—নিশিদিশি মরমে ঝুরি
প্রাকৃত,–ভোগবাসনা পাসরি—নিশিদিশি মরমে ঝরি
হা গৌর প্রাণ গৌর—একবার দেখা দাও
প্রাকৃত,–রূপরসগন্ধ স্পর্শশব্দে—আর কতনি থাকব মেতে
তোমায় দেখতে পাব বলে—আজ,–মনে বড় আশা হয়েছে
এত লোকের আগমন দেখে—আজ,–মনে বড় আশা হয়েছে
ওহে,–সীতানাথের আনানিধি—একবার দাঁড়াও
ওহে,–নদীয়া বিনোদিয়া—একবার দাঁড়াও
ওহে,–প্রাণ শচীদুলালিয়া—একবার দাঁড়াও
ওহে,–শ্রীবাস-অঙ্গনের নাটুয়—একবার দাঁড়াও
ওহে,–রসরাজ গৌরাঙ্গ নট—একবার দাঁড়াও
কোথা হে,–সঙ্কীর্ত্তন সুলম্পট—একবার দাঁড়াও
কোথা হে,–গদাধরের প্রাণবঁধুয়া—একবার দাঁড়াও
কোথা হে,-–কীর্ত্তন-কেলিরস-বিনোদিয়া—একবার দাঁড়াও
কোথা,—নরহরির চিতচোর—একবার দাঁড়াও
কোথা,–রসময়-গৌরকিশোর—একবার দাঁড়াও
কোথা আমার,–নিতাই-পাগল-করা গোরা—একবার দাঁড়াও
কোথা আমার,–পাগলের চিতচোর—একবার দাঁড়াও
‘কোথা আমার,–পাগলের চিতচোর’—
যার মুখে,–শুনেছি তোমার গুণের কথা —কোথা আমার,–পাগলের
একবার দেখা দাও চকোর আঁখি উপবাসী আছে
তোমার,–মুখ-সুধা পিবে বলে—চকোর আঁখি উপবাসী আছে
দেখিতে ত দাও নাই
যখন,–প্রকট-লীলায় বিহরিলে—দেখিতে ত’ দাও নাই
‘যখন,–প্রকট-লীলায় বিহরিলে’—
এই,–সুরধনীর তীরে তীরে—যখন,–প্রকট-লীলায় বিহরিলে
তখন জনম দাও নাই—দেখিতে ত পাই নাই
গমনে নটন বচনে গান—দেখিতে ত’ পাই নাই
সেই লীলা-অদর্শন-শেল—নিশাদিশি জ্বলছে হিয়ায়
শ্রীগুরুবাক্য হৃদে ধরে
ত্রিকালসত্য তোমার লীলা—এই,–শ্রীগুরুবাক্য হৃদে ধরে
যেখানে,–যখন তোমার লীলাকাল—ছুটে যাই ভাই ভাই মিলে
গৌর তোমায় দেখব বলে—ছুটে যাই ভাই ভাই মিলে
এই যে আমরা খুঁজে এলাম
গঙ্গাতীর ঘুরে ঘুরে—এই যে আমরা খুঁজে এলাম
শ্রীসীতানাথের ঘরে—গিয়েছিলাম শান্তিপুরে
প্রভু তোমায় দেখব নয়নে—বড় সাধ ছিল মনে
পাগল। প্রভু নিতাই সনে—বড় সাধ ছিল মনে
মাধবপুরীর আরাধনা দিনে—বড় সাধ ছিল মনে
মহামহোৎসব-রঙ্গে—বড় সাধ ছিল মনে
হতাশ প্রাণে ফিরে এলাম
বুকের ব্যথা বুকে ধরে—হতাশ প্রাণে ফিরে এলাম
তোমার ভক্ত শ্রীবাসের ঘরে—আবার গেলাম আশা করে
তোমার আগমন দিনে জেনে—আবার গেলাম আশা করে
কোথায় আছ শ্রীবাস পণ্ডিত
একবার দেখাও হে
তোমার অঙ্গনের নাটুয়া মুরতি—একবার দেখাও হে
কেঁদে কেঁদে ফিরে এলাম—দেখাও নাই দেখতে পাই নাই
তোমার আগমন দিন জেনে—কাল গেলাম পানিহাটিতে
ব্যাকুল হয়ে ডাকলাম কোথা আছ রাঘব পণ্ডিত
তোমার,–গৃহবিহারী গৌরহরি—একবার দেখাও হে
গুনব নিতাই-রহস্য-কথা
গৌরহরি বলবেন তোমায়—শুনব নিতাই-রহস্য-কথা
দেখা পেলাম না তোমধনে
ফিরে এলাম হতাশ-প্রাণে—দেখা পোলাম না তোমাধনে
পুনঃ পুনঃ বাধা পেয়ে—আজ,–এসেছি বড় আশা করে
প্রাণ-গৌর তোমায় দেখব বলে—আজ,–এসেছি বড় আশা করে
এখানে তোমার আগমন জেনে—আজ,–এসেছি বড় আশা করে
হা গৌর প্রাণ গৌর—একবার দেখা দাও
একবার দেখাও হে
তোমার ঘরের নাটুয়া গৌরে—একবার দেখাও হে
সেই,–চিতচোর চূড়ামণিরে—একবার দেখাও হে
শ্রীভাগবত শুনাইয়ে—কোথা নাচাইছ তারে
তোমার ঘরে এসেছেন—তোমারই ত’ অধিকার
তুমি দেখালে দেখাতে পার—তোমারই ত’ অধিকার
তোমার–হাতে ধরা গৌর-গুণনিধি—দয়া করে দেখালে দেখি
আমাদের,–গৌর দেখবার নাই শকতি—দয়া করে দেখালে দেখি
একমাত্র কৃপা সম্বল—গৌর দেখবার নাই কোন বল
আজ,–এসেছি বড় আশা করে
তোমার,–ঘরে গৌর আগমন জেনে—আজ,–এসেছি বড় আশা করে
এই ত তোমার বসতি ভূমি—ভাগবতাচার্য্য কোথা তুমি
কোথা নাচিতেছেন শচীসুত
তোমার মুখে,–শুনি ভক্তির মহিমা শ্লোক—কোথা নাচিতেছেন শচীসুত
কোথা ভাগবত পড়িছ তুমি—কোথা,–নাচিতেছেন গোরা গুণমণি
গৌরপ্রিয় ভাগবতাচার্য্য—একবার দেখাও হে
কনক-রুচির গৌর—একবার দেখাও হে
কনক-রুচির গৌর—একবার দেখাও হে
সর্ব্বচিত্তৈক চৌর—একবার দেখাও হে
প্রকৃতি মধুর-দেহ—একবার দেখাও হে
পূর্ণ লাবণ্য-গেহ—একবার দেখাও হে
সৌন্দর্য্যের সার মাধুর্য্যের পার—একবার দেখাও হে
মহাভাবের আধার—একবার দেখাও হে
তোমার গৌর তোমারই থাকবে—ভয় নাই আমরা লয়ে যাব না
দুর্ব্বাসনার কিঙ্কর মোরা—কি দিয়ে তারে বেঁধে রাখব
কপটতার মূরতি মোরা—কি দিয়ে তারে বেঁধে রাখব
ভালবাসতে জানি না—কি দিয়ে তারে বেঁধে রাখব
শুধু একবার দেখব
প্রাণে প্রাণে ভোগ করিব
মুরতি দেখব—প্রাণে প্রাণে ভোগ করিব
যার,–নামে ঘরের বাহির করে—তার,–মূরতি কত শকতি ধরে
কথা যে কইছ না
তবে কি তারে দেখাবে না
তোমার,–ঘরে এসেছে গৌরসোণা—তবে কি তারে দেখাবে না
দেখব বলে চিতচোর—কত,–আশা করে এলাম তোমার ঘরে
তুমিও যে কথা কইলে না হে—কত,–আশা করে এলাম তোমার ঘরে
কে প্রাণগৌর দেখাইবে—আর কার কাছে যাব
বলে দে বলে দে
ওগো ধনী সুরধুনী-বলে দে বলে দে
প্রাণগৌর কোথা আছে—বলে দে বলে দে
আর কার কাছে যাব
কোথা আছ প্রভু নিতাই
পরাণ গৌরাঙ্গ লয়ে—কোথা আছ প্রভু নিতাই
তুমিও ত কথা কইলে না
অগতির গতি দাতা—তুমিও ত কথা কইলে না
কে এমন বান্ধব আছে
লায়ে যাবে গৌরের কাছে—কে এমন বান্ধব আছে
আমাদের আপন বলতে—সেই ত আছে জগমাঝে
যে,–যেচে এসে হাত ধরেছে—সেই ত আছে জগমাঝে
অশেষ-দোষের দোষী জেনে—অঙ্গীকার করেছে
সাধ্য সাধন নির্ণয় করা-নাম উপদেশ করেছে
আর ভয় নাই বলে—নাম উপদেশ করেছে
ওগো আমার দরদী
ওগো আমার ব্যথার ব্যথী
ওগো তুমি কোথায় গো
বেড়াইছ লুকাইয়ে
গৌর সন্ধান বলে দিয়ে—বেড়াইছ লুকাইয়ে
খুঁজে খুঁজে হলাম সারা—সন্ধান ত পাই নাই
কত রঙ্গে বিহরিছ—তুমি ত তার সঙ্গেই আছ
ত্রিকালসত্য—লীলায় বরাহনগরে—সঙ্গেই ত এসেছ
তুমি ত বাঁধা পড়েছ
যেদিনে হাত ধরেছ—তুমি ত বাঁধা পড়েছ
অভাব নিয়ে গৌর না দিলে—নিষ্কৃতি তা নাই তোমার
তারে একবার দেখাও হে
যার,–নাম শুনায়ে ঘরের বাহির করেছ—তারে একবার দেখাও হে
হৃদিপটে এঁকে নেব
শ্রীগুরু-গৌরাঙ্গ-বিহার—হৃদিপটে এঁকে নেব
তার আগে শুধাব
একটা কথা শুধাব
ভোগের স্বভা নাই আমাদের—তারে দেখি কিবা ভোগ করি
চোখের দেখা দেখব—একটা কথা শুধাব
সকল সুখেই করছ বঞ্চিত
প্রকট-লীলা ত দেখাও নাই—সকল করছ বঞ্চিত
শ্রীগুরু-মুখের কথা স্মঙরি—আশাপথ চেয়ে আছি
প্রতিজ্ঞা করেছ তুমি
সর্ব্বত্র প্রচার হইবে মোর নাম রে।।’’
এই কথা শুধাব—সে দিনের আর কদিন বাকী
বল বল প্রাণগৌর—সে দিনের আর কদিন বাকী
আমরা দেখতে পাব না কি—সে দিনের আর কদিন বাকী
তোমার বাক্য পূর্ণ হবার—দেখি না ত’ অনুকূল রীতি
এষা সব যে বিপরীত দেখি—দেখি না ত’ অনুকূল রীতি
কালকলির পীড়নে—অশান্তি-অনলে জগৎ জ্বলে
হা নাথ বিশ্বম্ভর—প্রতিকার কি হবে না
নাম-প্রেমে বিশ্ব ভরবে—করে আশা পূর্ণ হবে
তারেই ত বলতে হবে
তোমার কার্য্য যার দ্বারে—তারেই ত বলতেহবে
আর একবার বলে দাও
তোমার,–অভিন্ন-তনু নিতাই-চাঁদে–আর একবার বলে দাও
তেমনি করে,–হাতে ধরে কেঁদে কেঁদে—আর একবার বলে দাও
তোমার,–বিশ্বম্ভর নাম পূর্ণ করতে—আর একবার বলে দাও
তোমার,–আজ্ঞা পালন করে নাই সে—মেতে আছে তোমায় লয়ে
জীবেরে দশা ভুলে গেছ—মেতে আছে তোমায় লয়ে
কোথা আছ প্রভু নিতাই
বড় দুঃখ হতেছে মোদের—কোথা আছ প্রভু নিতাই
বিশ্বম্ভর নামে যে কলঙ্ক রটছে—কোথা আছ প্রভু নিতাই
কোথা আছ আত্ম গোপন করে
তোমার ধর্ম্ম পাসরিয়ে—কোথা আছ আত্ম গোপন করে
তোমার প্রভু বিশ্বম্ভর—তোমার,–হাতে ধরে বলে দিয়েছে
নাম-প্রেম দিতে আচগুালে—তোমার,–হাতে ধরে বলে দিয়েছে
আসুরিক বৃত্তি যাদের—তারা কি গো তোমার ন
তাদের আসুরিক স্বভাব—ঘুচাইতে কি পাব না
তোমার,–হৃদে বিহরে বিশ্বম্ভর—তুমি সর্ব্ব-শক্তি ধর
প্রাণ-গৌর-আজ্ঞা শিরে ধরে—তেমনি করে আবার চল
আজ্ঞা পালন হয় নাই তোমার—তেমনি করে আবার চল
তেমনি করে সেধে যেচে—নাম-প্রেমে জগৎ মাতাও
কলিজীবের পাপতাপ নিতে—কিন্তু তোমায় বলব না
সে দিনের কথা মনে হলে—প্রাণ কেঁদে উঠে গো
দুই ভায়ের পাপ নিয়ে—তোমার অঙ্গ আলি হল
জগজীবের পাপ নিতে—আর তোমায় বলব না
তুমি গৌর-সেবা বিগ্রহ—তুমি কেন পাপতাপ নিবে
আমরা,–তোমার চির কিঙ্কর থাকতে—তুমি কেন পাপতাপ নিবে
‘আমরা,–তোমার চির কিঙ্কর থাকতে’—
তোমার দাস—অঙ্গীকার করেছে মোদের—আমরা,–তোমার চির
তোমায়,–পাপ নিতে দিব না
আমরা থাকতে পাপের বোঝা—তোমায়,–পাপ নিতে দিবে না
তোমার দাসের দাস এই—গরবেতে বলি গো
আমরা তোমার সম্বন্ধ রাখি—আমরা আছি পাপেপ খনি
জগজীবের পাপতাপ—কুড়ায়ে লয়ে দাও আমাদের
জগবাসীর দুর্দ্দৈব লয়ে—আমরা নরকে যাব
তুমি,–নাম-প্রেমে জগৎ মাতও—আমরা নরকে যাব
আমা হেন পতিত-জনে—যদি,–উদ্ধারিতে সাধ থাকে
পতিত-পাবন নাম সার্থক করতে—যদি,–উদ্ধারিতে সাধ থাকে
যদি,–করতে চাও নামের সার্থকতা—তবে,–শুন শুন আমার কথা
নাম,–সার্থক করবার উপায় শুন—নাম ধরেছে পতিত-পাবন
আমি যাব না তোমার কাছে
জগতের একজনও বাকী থাক্তে—আমি যাব না তোমার কাছে
গৌর-নাম-প্রেমে মত্ত সবাই—যেদিন দেখব কেউ বাকী নাই
গরব করে বলব
পতিত-পাবন-বাণী উড়াইব—গরব করে বলব
আমার আমার আমার আমার—আমার প্রভু নিত্যানন্দ
গৌর-নাম-প্রেমে জগৎ মাতাল—আমার প্রভু নিত্যানন্দ
অগতিরে গতি দিতে—কেউ নাই এ জগতে
আমার,–প্রভু নিত্যানন্দ বিনে—কেউ নাই এ জগতে
আর কোন নাই বাসনা—এই কর আমার নিতাই-সোণা
গৌর পাবার অধিকার নাই—চাই না তোমার গৌর চাই না
সে যে,–রূপ-সনাতনের সাধনের ধন—কোন গুণে সেই গৌর পাব
সে যে,–দাস রঘুনাথের সাধ্য-নিধি—কোন গুণে সে গৌর পাব
যেখানে যাব দেখতে পাব
ঘরে ঘরে সবাই ঝুরছে
ম্লেচ্ছ-যবনাদি নরনারী—ঘরে ঘরে সবাই ঝুরছে
দ্বেষাদ্বেষ ভুলে গিয়ে—ঘরে ঘরে সবাই ঝুরছে
হা গৌর প্রাণ গৌর বলে—ঘরে ঘরে সবাই ঝুরছে
বিরোধ মিটে গেছে—সব,–একপ্রাণ হয়ে গেছে
সবাই এক প্রভুর দাস—স্বভাব জেগেছে
ভোগের স্বরূপ জেগে উঠেছে—অনুরাগে সবাই বলছে
মরমে মরিয়া যেন থাকি।
সাধ হয় নিরন্তর, হেমকান্তি কলেবর,
সতত হিয়ার মাঝে রাখি।।
তিলেক না দেখি তায়, পাঁজর ধসিয়া যায়,
ধৈরয ধরিতে নাহি পারি।
অনুরাগের ডুরি দিয়া, অন্তরে কি করে সিয়া,
না জানি তার কতই ধার ধারি।।’’
স্বভাব জেগেছে—বিরোধ গেছে—অনুরাগে সবাই বলছে
অনল জ্বালিয়া দিব লাজে।
গৌরাঙ্গ সম্মুখে করি, হেরিব নয়নভরি,
দিন যায় মিছামিছি কাজে।।’’
ওহে ও প্রেম-বিতরণ-ধাতা—তবে ঘুচবে মনের ব্যথা
আমরা কি দেখতে পাব না
সবাই ভজবে গৌরসোণা—আমরা কি দেখতে পাব না
গৌরহরি-হরিবোল-জগভরি উঠবে রোল
পাগল হয়ে বেড়াব
ভাই ভাই একপ্রাণে—পাগল হয়ে বেড়াব
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
ভাগবত-আচার্য্যের ঘরে—গৌর নাচে প্রেমভরে
‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌর-হরিবোল।।’’