‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
যে তিথিতে কৃষ্ণচন্দ্রের উদয়—যাইরে তিথির বালাই যাই রে
ভাদ্র কৃষ্ণাষ্টমী তিথি—যাইরে তিথির বালাই যাই রে
জগৎ,–মঙ্গলময় আসবে জেনে—সকল মঙ্গল উদয় হল রে
গোকুল-মঙ্গলের সেবা কর্বে বলে—সকল মঙ্গল উদয় হল রে
‘গোকুল-মঙ্গলের সেবা করবে বলে’—
আপন আপন সার্থকতা তরে—গোকুল-মঙ্গলের সেবা করবে বলে
নিজ নিজ মঙ্গল আশে—সকল মঙ্গল উদয় হল রে
‘নিজ নিজ মঙ্গল আশে’—
মঙ্গল-কাল পরশে—নিজ নিজ মঙ্গল আশে
‘মঙ্গল-কাল পরশে’—
শ্রীকৃষ্ণ-জন্মকাল,–মঙ্গল-কাল পরশে
নিজ নিজ মঙ্গল আশে—সকল মঙ্গল উদয় হল রে
এ তিথির যোগ পেয়ে—সকল মঙ্গল মঙ্গল হল রে
এ তিথি-নক্ষত্রের—বালাই লয়ে মরে যাই রে
যার যোগ কৃষ্ণ জন্ম তার—বালাই লয়ে মরে যাই রে
প্রেমায় আকুল অঙ্গ ধরণে না যায়।।’’
মহাভাবনিধি প্রাণগোরা—রাধাভাবে হল ভোরা
ভোগ করিতে নিজ পূর্ব্ব জন্মলীলা—রাধাভাবে হল ভোরা
প্রেমজলে পূর্ণ হইল নয়ন-যুগল।।’’
হয়ে রাধাভাবে বিভাবিত—পুলকিত গৌর-অঙ্গ
মহাভাবিনীর ভাবে আরূঢ় হয়ে—স্বরূপ-রামারায়ের বদন চেয়ে বলে
আজ,–আমার বঁধুর জন্মতিথি—ওগো আমার মরম সখী
স্বরূপ-রামরায়ের ধরি’ গলে—গৌরের,–নয়ন-যুগল ভরল জলে
আজ,–আমার বঁধুর জন্মতিথি বলে—গৌরের,–নয়ন-যুগল ভরল জলে
আনন্দের আনন্দ বাড়ল মনে—গৌরের,–নয়ন-যুগল ভরল জলে
মঙ্গল আচরণ কর বলে—গোরা ভাসে নয়ন-জলে
‘মঙ্গল আচরণ কর বলে’—
আজ,–ব্রজ-মঙ্গলের জন্মদিন—মঙ্গল আচরণ কর বলে
গৌর-সেবাগত প্রাণ তাদের—মুখ চাইলেই জাগে প্রাণে
গৌরের সাধ হয়েছে,–কোন রস আস্বাদনে—মুখ চাইলেই জাগে প্রাণ
স্বরূপাদি প্রিয়গণের—আনন্দ আর ধরে না রে
‘স্বরূপাদি প্রিয়গণের’—
গৌরের ভাবিনী স্বভাব দেখে—স্বরূপাদি প্রিয়গণের
যাবটে নিজ-ভবনে নিরজন—মনে গণে আছে বৃন্দাবনে
ব্রজ-মঙ্গল নন্দলালের—জন্ম-কথা গান করে
প্রাণের অনুরাগ-ভরে—জন্ম-কথা গান করে
চেয়ে,–গৌররাধোর বদন—জন্ম-কথা গান করে
ভাবনিধি প্রাণ-গৌরাঙ্গের—আনন্দ আর ধরে না রে
বঁধুর জন্মকথা শুনে—আনন্দ আর ধরে না রে
জয় ব্রজ-যুবরাজ বলে—আনন্দেতে নৃত্য করে
ব্রজজন-জীবন—বলে,–জয় জয় নন্দনন্দন
জয় নন্দদুলাল বলে—গৌর নাচে হেলে দুলে
উদিবে জেনে গোকুল-শশী—সকল-মঙ্গল মিলিল আসি
‘উদিবে জেনে গোকুল-শশী’—
বরজ-আকাশে আসি’—উদিবে জেনে গোকুল-শশী
পাপ-তম-বিনাশী—উদিবে জেনে গোকুল-শশী
সকল-মঙ্গল উদয় হল
গোকুল-মঙ্গলের সেবা করবে বলে—সকল-মঙ্গল উদয় হল
গ্রহ, রাশি, তারাগণ—সকলেরই প্রসন্ন মন
আসিবে বোলে আনন্দ-ঘন—সকলেরই প্রসন্ন মন
আনন্দঘন শ্যামের—বুঝি পেয়েছে আগমন-বার্ত্তা
স্থাবর জঙ্গম গুল্মলতা—তাই আজ,–সকলেই আনন্দে মাতা
নদ-নদী সরোবর—যেন কত হাসিতেছে
‘নদ-নদী সরোবর’—
নির্ম্মল সলিল-পূর্ণ—নদ-নদী সরোবর
যেন,–প্রেমনেত্রের বিকাশ হয়েছে
হৃদয় নির্ম্মল হয়ে গেছে—যেন,–প্রেমনেত্রের বিকাশ হয়েছে
প্রেমময় আসবে দেখবে বলে—যেন,–প্রেমনেত্র্রের বিকাশ হয়েছে
আনন্দময়ের হবে আগমন—তাই,–আজ সকলেরই মনে আনন্দ
অশিত অষ্টমী তিথি রোহিণী মিলন।।’’
শুভরাশি তিথি গ্রহ নক্ষত্র—সবাই হইল মিলিত
গভীর নিনাদে ঘন পয়োদ উদয়।।’’
আনন্দ হুঙ্কার বটে—ও ত,–মেঘের গর্জ্জন নয় রে
কোটী কোটী চাঁদ যেন উদয় আকাশ।।’’
গগন-চাঁদের কিরণ তুচ্ছ করে—শ্যাম-চাঁদের উদয় হল রে
গোকুল-চাঁদ ব্রজাকাশে উঠ্ল—যেন,–কোটী চাঁদের উদয় হল
আপন প্রভাব জানাইতে—তাই বুঝি, –উদয় হল ঘোর-নিশিতে
আঁধার রজনী নৈলে—চাঁদের কি শোভা
মৃদঙ্গ পনহ কীর কপিনাশ মাধুরী।।
শঙ্খ দুন্দুভি বাজে পরম হরিষে।
জয় জয় সুরকুল কুসুম বরিয়ে।।’’
কৃষ্ণ-আবির্ভাব দেখিবার—কেমনে সৌভাগ্য পেল
কেবা তাদের বার্ত্তা দিল—কেমনে সৌভাগ্য পেল
মা যোগমায়া পৌর্ণমাসী—বুঝি বার্ত্তা দিয়েছেন
মা যোগামায়ার আনুগত্যে—সৌভাগ্য হল দেখিবারে
লীলামৃত বরিষণ হবে জেনে—তাদের,–আনন্দ আর ধরে না রে
সুরকুল জয় দিয়ে—কুসুম বরিষণ করে
গোকুল-চাঁদের প্রকাশেতে—সকল তাপ দূরে গেল রে
আপন সেবার সময়—জেনে—মলয়-পবন প্রবাহিত
নন্দের নন্দন যেই—শচীসুত হইল সেই
এ দ্বিজ মাধব কহে কিঙ্কর তাহার।।’’
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভুর—প্রাণভরে জয় দাও ভাই
‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌরহরিবোল।’’