শ্রীশ্রী গুণ্ডিচা-মার্জ্জন-লীলা কীর্ত্তন

‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাইগৌরহরিবোল।’’
‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
‘‘আজুরে শ্রীজগন্নাথের গুণ্ডিচামার্জ্জন।’’

চলিলেন প্রাণ-শচীনন্দন

ত্রিকালসত্য-লীলায় নিজগণ-সনে—চলিলেন প্রাণ-শচীনন্দন

রাধাভাবে ভোর প্রাণগোরা
করিবেন আজ গুণ্ডিচা মার্জ্জন

কুঞ্জশয্যা-আবেশেতে—করিবেন আজ গুণ্ডিচা মার্জ্জন
‘কুঞ্জশয্যা-আবেশেতে’—
পরাণবঁধু আসবে বলে—কুঞ্জশয্যা আবেশেথে

করিবেন গোরা গুণ্ডিচা মার্জ্জন

‘‘আজুরে শ্রীজগন্নাথের গুণ্ডিচামার্জ্জন।
হায়রে—হেনদিনে কোথা প্রভু শ্রীরাধারমণ।।’’

আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা

ভাই ভাই ভাই মিলে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা
গুণ্ডিচা-মন্দির-মার্জ্জনে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা
প্রাণগৌর-লীলা—গাইতে গাইতে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা
গুণ্ডিচা-মার্জ্জন-লীলা গাইতে গাইতে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা
‘প্রাণগৌর-লীলা গাইতে গাইতে’—
মধুর-নীলাচল-পথে—প্রাণগৌর-লীলা গাইতে গাইতে

আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা

হেলে দুলে প্রেমতরঙ্গে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা
মধুর-কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা

কার সঙ্গে যাব মোরা
কেবা ভোগ করাইবে

ভাবাবেশে কীর্ত্তনরঙ্গে—কেবা ভোগ করাইবে
গুণ্ডিচা-মার্জ্জন-লালা—কেবা ভোগ করাইবে

একবার এস হে

ও,–পাগলা প্রভু রাধারমণ—একবার এস হে
ও,–নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—একবার এস হে

তেমনি করে এস হে

তোমার,–প্রিয়গণ সঙ্গে লয়ে—তেমনি করে এস হে
আজ,–নিতাই-গৌর-প্রেমাবেশে—তেমনি করে এস হে
ভাবাবেশে,–গৌরলীলা গাইতে গাইতে—তেমনি করে এস হে

আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা

প্রাণগৌর-লীলা ভোগ করিতে—আজ,–কার সঙ্গে যাব মোরা

আজ,–তেমনি করে চল প্রভু

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—আজ,–তেমনি করে চল প্রভু
হেলে দুলে প্রেমতরঙ্গে—আজ,–তেমনি করে চল প্রভু
মধুর-কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—আজ,–তেমনি করে চল প্রভু
প্রাণগৌর-লীলা গাইতে গাইতে—আজ,–তেমনি করে চল প্রভু
তোমার,–প্রিয়গণ সঙ্গে লয়ে—আজ,–তেমনি করে চল প্রভু
গৌরাঙ্গের,–ভাবোল্লাস-লীলা গাইতে গাইতে—আজ,–তেমনি করে চল প্রভু
প্রাণগৌরাঙ্গ-কিশোরীর—মধুর,–ভাবোল্লাস-লীলা গাইতে গাইতে

আজ,–তেমনি করে চল প্রভু

তোমার সঙ্গে যাব মোরা—আজ,–তেমনি করে চল প্রভু

আজ,–তোমার সঙ্গে যাব মোরা

গৌরাঙ্গের,–ভাবোল্লাস-লীলা গাইতে গাইতে—আজ,–তোমার সঙ্গে

যাব মোরা

হেলে দুলে প্রেমতরঙ্গে—আজ,–তোমার সঙ্গে যাব মোরা
মধুর কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—আজ,–তোমার সঙ্গে যাব মোরা

মধুর,–ভাবোল্লাস-লীলা গাইতে গাইতে—আজ,–তোমার সঙ্গে যাব মোরা

ভাবাবেশে গাইবে তুমি

তোমার সঙ্গে গাইব মোরা—ভাবাবেশে গাইবে তুমি

ভাবাবেশে গাও তুমি

তোমার আনুগত্যে গাইব মোরা—ভাবাবেশে গাও তুমি

এস আমার পাগলা প্রভু

ভাবাবেশে,–গৌরলীলা গাইতে গাইতে—এস আমার পাগলা প্রভু

ভাবাবেশে গান কর

গুণ্ডিচা-মার্জ্জন-লীলা—ভাবাবেশে গান কর

ভাবাবেশে গাও গৌরলীলা

তোমার সঙ্গে সঙ্গে গাইব মোরা—ভাবাবেশে গাও গৌরলীলা

‘‘নিশি শেষে উঠি আমার শ্রীশচীনন্দন।’’

রাধাভাবে ভোরা গোরা

বিরহে আকুল সদা—রাধাভাবে ভোরা গোরা

রাধিকা-ভাবিত-মতি

ভাবনিধি গৌরাঙ্গ আমার—রাধিকা-ভাবিত-মতি

‘‘নিশিশেষে উঠি আমার শ্রীশচীনন্দন।
স্বরূপ-রামানন্দে বলেন মধুর-বচন।।’’

বলে,–ও ললিতে ও বিশাখে

গৌরাঙ্গ-কিশোরী বলে—ও ললিতে ও বিশাখে

বলে,–শুন শুন প্রাণসখি

বলে দোঁহার করে ধরি’—শুন শুন প্রাণসখি

আজ,–নিশিশেষে দেখেছি সুস্বপন

কিশোরী-ভাবিত-মতি গৌর বলে—আজ,–নিশিশেষে দেখেছি সুস্বপন
ব্রজে আসবে ব্রজের জীবন—আজ,–নিশিসেষে দেখেছি সুস্বপন
এবে দেখি তার অনুকূল-আজ,–নিশিশেষে দেখেছি সুস্বপন

ব্রজে আসবে ব্রজের জীবন

কাল নিশিপরভাতে—ব্রজে আসবে ব্রজের জীবন(মাতন)

আমার,–পরাণবঁধু আসবে ব্রজে

কাল নিশিপরভাতে—আমার,–পরাণবঁধু আসবে ব্রজে

আসবে আমার পরাণবঁধু

নিশিপরভাত হলে—আসবে আমার পরাণবঁধু
বহুদিন পরে ব্রজে—আসবে আমার পরাণবঁধু

চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া

আসবে আমার প্রাণবঁধুয়া—চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া (মাতন)

(ঝাঁজপিটা মঠ হইতে যাত্রা)

চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া

আসবে আমার প্রাণবঁধুয়া—চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া
প্রিয়নর্ম্ম-সখী-সাথে—চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া

এত বলি’ গৌরকিশোরী
সজ্জা-সম্ভার সঙ্গে লয়ে
মৃৎকুম্ভ কাঁখে করি’
সম্মার্জ্জনী করে ধরি’
বলে,–চল প্রাণ-সহচরী

মার্জ্জন-সম্ভার করেতে ধরি’—বলে,–চল প্রাণ-সহচরী
কুঞ্জাসজ্জা সম্মার্জ্জনে—বলে,–চল প্রাণ-সহচরী

চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া

আসবে আমার প্রাণবঁধুয়া—চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া [মাতন]

(পথে যাইতে যাইতে)

নেচে যায় প্রাণ-গৌরহরি

স্বরূপ,–রামরায়ের করে ধরি—নেচে যায় প্রাণ-গৌরহরি (মাতন)

হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী

সঙ্গে নিতাই-অনঙ্গমঞ্জরী—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
দক্ষিণ মধুমতী-নরহরি—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
পারিষদ-সহচরী ঘেরি’—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
নিতাই,–গদাধর-নরহরির হাত ধরি’—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
বিংশতিভাব-ভূষণ পরি’—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
সঙ্গে লয়ে মনোবৃত্তি-সহচরী-হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
নীলাচল-ব্রজের পথে আলো করি’—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
এই,–নীলাচল-ব্রজের পথে—হেলে দুলে যায় গৌর কিশোরী
নিকুঞ্জসেবা—সম্ভার সঙ্গে করি’—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
আজ,–প্রেমময়—বাদর করি’—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
আজ,–নিতাই-অনঙ্গের গলা ধরি’—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
বিংশতি-ভাব-হিল্লোলে—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
ঘিরে পারিষদ-সহচরী—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী
বিলাসকুঞ্জ সাজাইতে—হেলে দুলে যায় গৌর-কিশোরী

যায় নীলাচল-ব্রজের পথে

নিকুঞ্জসজ্জা-মনোরথে—যায় নীলাচল-ব্রজের পথে
রঙ্গিনী-সঙ্গিনী-সাথে—যায় নীলাচল-ব্রজের পথে
পারিষদ-সহচরী-সাথে—যায় নীলাচল-ব্রজের পথে

চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া

ওগো প্রাণ-সহচরী—চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া
আসবে আমার প্রাণবঁধুয়া—চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া

হেলে দুলে যায় গৌর-রাধা

বলে,–পূরবে আমার মনসাধা—হেলে দুলে যায় গৌর-রাধা
পুরাতে অপূর্ণ-সাধা—হেলে দুলে যায় গৌর-রাধা

যায়,–গৌর-কিশোরী হেলে দুলে

নিকুঞ্জ সাজাবে বলে—যায়,–গৌর-কিশোরী হেলে দুলে

বলে,–আজ কুঞ্জ সাজাব

কাল পরাবঁধু পাব—বলে,–আজ কুঞ্জ সাজাব

যায়,–গৌর-কিশোরী হেলে দুলে

বিংশতি-ভাব-হিল্লোলে—যায়,–গৌর-কিশোরী হেলে দুলে

মনে মনে এই গণে

পুরবে আমার মনসাধা—মনে মনে এই গণে

আজ, আসবে ব্রজের মন্মথ

পূরাবে আমার মনোরথ—আজ,–আসবে ব্রজের মন্মথ

চলে যেতে নেচে যেছে
গমন-নটন-লীলা

কিশোরী-ভাবিত-মতি গৌরাঙ্গের—গমন-নটন-লীলা

চলে যেতে নেচে যেছে

নাটুয়া-মূরতি নটন-গতি—চলে যেতে নেচে যেছে
বিংশতি-ভাব-হিল্লোলে—চলে যেতে নেচে যেছে

ভাবাবেশে হল নটিনী

নটিনীর শিরোমণি—ভাবাবেশে হল নটিনী

চলে যেতে নেচে যেছে

প্রাণ-গৌরাঙ্গের, গমনই নটন বচনই গান—চলে যেতে নেচে যেছে
নটিনী-মূরতি গৌর আমার—চলে যেতে নেচে যেছে

ও,–‘‘গমন নটন লীলা, বচন সঙ্গীত কলা,’’

সঙ্গীতেতে কথা কইছে

কোকিলা-কলভাষিণী—সঙ্গীতেতে কথা কইছে
‘কোকিলা-কলভাষিণী’—
নটিনীর শিরোমণি—কোকিলা—কলভাষিণী (মাতন)

সঙ্গীতেতে কথা কইছে
যেন,–কতশত-কোকিল কূহরিছে

পঞ্চমরাগজিনি যেন—কতশত-কোকিল কূহরিছে

না না তাতে তুলনা হয় না।
যেন,–আমিয়া সিন্ধু উথলিছে

জগৎ,–অমৃতময় করবে বলে—যেন,–অমিয়া সিন্ধু উথলিছে (মাতন)

ও,–‘‘মধুর চাহনি আকর্ষণ।’’

আজ,–তারই আঁখি মন হরিছে

একবার,–হরি বোলে যার পানে চাইছে—আজ,–তারই আঁখি মন হরিছে

তার স্বভাব জাগায়ে দিছে

একবার যার পানে চাইছে—তার স্বভাব জাগায়ে দিছে

স্বভাব জাগায়ে দিছে

বরজ-গোপিকার—স্বভাব জাগায়ে দিছে

সবারে কৈল গোপনারী

নীলাচলে যত নরনারী—সবারে কৈল গোপনারী [মাতন]

গোরা-চাহনি কিবা মধুর

জাগল স্বভাব বরজ-বধুর—গোরা-চাহনি কিবা মধুর (মাতন)

হেলে দুলে যায় গৌরকিশোরী

নীলাচল-ব্রজের পথে—হেলে দুলে যায় গৌরকিশোরী
কুঞ্জ-সজ্জা-মনোরথে—হেলে দুলে যায় গৌরকিশোরী

যায়,–গৌরকিশোরী হেলে দুলে

কর দিয়ে নিতাই-অনঙ্গের গলে—যায়,–গৌরকিশোরী হেলে দুলে
আমার,–পরাণবঁধু আসবে বলে—যায়,–গৌরকিশোরী হেলে দুলে
‘পরাণবণধু আসবে বলে’—
আজ নিশি গেলে কাল সকালে—পরাণ বঁধু আসবে বলে

যায়,–গৌরকিশোরী হেলে দুলে
আবেশে বলে গৌরকিশোরী

স্বরূপের কর ধরি’—আবেশে বলে গৌরকিশোরী

বলে,–চল প্রাণ-সহচরী
কেমনেতে ধৈর্য্য ধরি

কাল আসবে বংশীধারী—আজ,–কেমনেতে ধৈর্য্য ধরি

তখন,–হাসি হাসি মিলল আসি’

সীতানাথ-পৌর্ণমাসী—তখন,–হাসি হাসি মিলল আসি’
‘সীতানাথ-পৌর্ণমাসী’—
যা হতে এইসব খেলা—সেই,–সীতানাথ-পৌর্ণমাসী

হাসি হাসি মিলল আসি’
বলে,–কোথা যাও দিবাভাগে

পৌর্ণমাসী,–করে ধরে বলে ও-কিশোরী—কোথা যাও দিবাভাগে
রঙ্গিনী, সঙ্গিনী সাথে—কোথা যাও দিবাভাগে
সখী-সঙ্গে অনুরাগে—কোথা যাও দিবাভাগে

বলে,–কোথা যাও সঙ্গিনী-সাথে

মনোরথে ব্রজের পথে—কোথা যাও সঙ্গিনী-সাথে

আবেশে বলে গৌরকিশোরী
বলে,–শুনগো মা পৌর্ণমাসী
দুঃখের নিশি পোহাল আসি’
আজ, নিশি শেষে দেখেছি স্বপন

কাল,–আসবে প্রাণের বংশীবদন—আজ,–নিশি শেষে দেখেছি স্বপন
ব্রজে আসবে ব্রজের জীবন—আজ,–নিশি শেষে দেখেছি স্বপন

ব্রজে আসবে কালশশী

আজ,–পোহাইলে দুঃখের নিশি—ব্রজে আসবে কালশশী

তাই চলেছি দিবাভাগে

কুঞ্জ-সজ্জা-মনসাধে—তাই চলেছি দিবাভাগে
সখী-সঙ্গে অনুরাগে—তাই চলেছি দিবাভাগে

তাই,–দিবাবাগে ব্রজের পথে

কুঞ্জ-সজ্জা-মনসাথে—তাই,–দিবাভাগে ব্রজের পথে

আজ কুঞ্জ সাজাব

কাল পরাণ-বঁধু পাব—আজ কুঞ্জ সাজাব

(মাতন)
যায়,–গৌরকিশোরী হেলে দুলে

নিকুঞ্জের-সাজাবে বলে—যায়,–গৌরকিশোরী হেলে দুলে

পৌর্ণমাসী সুখে ভাসে

গৌরকিশোরীর কথা শুনে—পৌর্ণমাসী সুখে ভাসে
মৃদু মন্দ মন্দ হাসে—পৌর্ণমাসী সুখে ভাসে

আবার দেখব কুঞ্জবনে

রাইকানু একাসনে—আবার দেখব কুঞ্জবনে

যায়,–গৌরকিশোরী হেলে দুলে

নিকুঞ্জ সাজাব বলে—যায়,–গৌরকিশোরী হেলে দুলে
পারিষদ সব সহচরী মিলে—যায়,–গৌরকিশোরী হেলে দুলে
নিকুঞ্জ সাজাব বলে—যায়,–গৌরকিশোরী হেলে দুলে

(মাতন)
আজ,–কুঞ্জ সাজাব নবসাজে

হেরিতে,–ব্রজ-নব—যুবরাজে—আজ,–কুঞ্জ সাজাব নবসাজে
সহচরী চলগো সবে—আজ,–কুঞ্জ সাজাব নবসাজে

আজ,–কুঞ্জ সাজাব মনের মত

কাল,–আসবে ব্রজের মনমথ—আজ,–কুঞ্জ সাজাব মনের মত (মাতন)

আজ কুঞ্জ সাজাব সুখে

কাল,–প্রভাতে পাব প্রাণবঁধুকে—আজ কুঞ্জ সাজাব সুখে

(মাতন)

ভাবোন্মাদে ভোরা গোরা বলে—আজ কুঞ্জ সাজাব সুখে

(শ্রীশ্রীগুণ্ডিচাদ্বারে আগমন)

আসিয়া গুণ্ডিচার দ্বারে

রাধাভাবে ভোরা গোরা—আসিয়া গুণ্ডিচার দ্বারে
ভাবোল্লাসে ভোরা গোরা—আসিয়া গুণ্ডিচার দ্বারে

স্বরূপ,–রামরায়ের করে ধরে বলে
বলে,–ও ললিতে ও বিশাখে
ডাক ত্বরা বৃন্দাদেবীকে
আবেশে বলেন গৌরকিশোরী

যেন,–সম্মুখে বৃন্দাদেবী হেরি—আবেশে বলেন গৌরকিশোরী

শুন ওগো বনদেবী
আজ,–নিশিশেষে দেখেছি সুস্বপন

ব্রজে আসবে ব্রজের জীবন—আজ,–নিশিশেষে দেখেছি সুস্বপন

ব্রজে আসবে ব্রজের জীবন

কাল নিশি পরভাবে—ব্রজে আসবে ব্রজের জীবন

সবাই কুঞ্জ সাজাও গিয়া

যাও যাও ত্বরা করি’—সবাই কুঞ্জ সাজাও গিয়া
আসবে আমার প্রাণবঁধুয়া–সবাই কুঞ্জ সাজাও গিয়া

(মাতন)
কর মঙ্গল আচরণ

ব্রজে আসবে ব্রজের জীবন—কর মঙ্গল আচরণ

(মাতন)

নিকুঞ্জের প্রতিদ্বারে—পূর্ণঘট কর স্থাপন

কর কদলী আরোপণ

পূর্ণঘট কর স্থাপন—কর কদলী আরোপণ

বাঁধ,–আম্রপল্লব সারি সারি

সাজাও সবে কুঞ্জ ভরি’—বাঁধ,–আম্রপল্লব সারি সারি

সাজাও সবে কুঞ্জপথ

আসবে ব্রজের মনমথ—সাজাও সবে কুঞ্জপথ
ও ললিতে ও বিশাখে—সাজাও সবে কুঞ্জপথ
সুগন্ধি-সুকোমল-ফুলে—সাজাও সবে কুঞ্জপথ

যেন,–চলে যেতে লাগে না পায়ে

সুকোমল-পুষ্প দাও বিছায়ে—যেন,–চলে যেতে লাগে না পায়ে

পুষ্প চয়ন কর গিয়া

কুঞ্জবনে বনে বনে—পুষ্প চয়ন কর গিয়া

সবে বৃন্তচ্যুত করি

সুগন্ধি-সুকোমল-পুষ্প—সবে বৃন্তচ্যুত করি’

সাজাও সবে কুঞ্জপথ

যেন,–লাগে না আমার বঁধুর পদে—সাজাও সবে কুঞ্জপথ
‘যেন,–লাগে না আমার বঁধুর পদে’—
যখন আসবে কুঞ্জপথে—যেন,–লাগে না আমার বঁধুর পদে

(মাতন)
সাজাও সবে নিকুঞ্জ
সাজাও নিভৃত নিকুঞ্জ

মনসাধে সবাই মিলে—সাজাও নিভৃত-নিকুঞ্জ

সাজাও সবে ত্বরা করি’

কুঞ্জে আসবে কুঞ্জবিহারী—সাজাও সবে ত্বরা করি’

(মাতন)
পরাণবঁধু আসবে ব্রজে

আজ নিশি পরভাতে—পরাণবঁধু আসবে ব্রজে(মাতন)

ব্রজের জীবন ব্রজে আসবে

দুঃখের নিশি পোহাইবে—ব্রজের জীবন ব্রজে আসবে

সুখের প্রভাত উদয় হবে

ব্রজের জীবন ব্রজে আসবে—সুখের প্রভাত উদয় হবে

(মাতন)
আসবে ব্রজের মনমথ

পূরাইতে গোপীর মনোরথ—আসবে ব্রজের মনমথ(মাতন)

চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া

আসবে আমার প্রাণবঁধুয়া—চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া

(মাতন)

(শ্রীগুণ্ডিচা-মন্দিরে প্রবেশ)

চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া

আসবে আমার প্রাণবঁধুয়া—চল কুঞ্জ সাজাই গিয়া

কুঞ্জ সাজাই মনোরথে

কাল পাব প্রাণনাথে—কুঞ্জ সাজাই মনোরথে,

(মাতন)
আজ কুঞ্জ সাজাব সুখে

কাল পরাণ-বঁধু ধরব বুকে—আজ কুঞ্জ সাজাব সুখে

(মাতন)
কাল,–ব্রজবাসী জীবন পাবে

ব্রজে আসবে ব্রজের জীবন—কাল,–ব্রজবাসী জীবন পাবে (মাতন)

নীলাচল-ব্রজের পথে

কাল পাব প্রাণনাথে—নীলাচল-ব্রজের পথে

(মাতন)
জুড়াবে গোপীর মনজ্বালা

হেরি,–কেলিকদম্ব-মূলে কালা—জুড়াবে গোপীর মনজ্বালা

আজ কুঞ্জ সাজাব গিয়া

কাল পরাণ-বঁধু পাব—আজ কুঞ্জ সাজাব গিয়া

এত বলি’ গৌরকিশোরী
স্বরূপ-রামরায়ের করে ধরি’
বলে,–ও ললিতে ও বিশাখে
কুঞ্জ-শয্যা কর সবে

নিজ-নিজ-গণ লয়ে—কুঞ্জ-শয্যা কর সবে

চল সাজাই নিকুঞ্জ
সাজাই সবে মনসাধে
মৃৎকুম্ভ লয়ে কাঁধে

সম্মার্জ্জনী ধরি’ করে—মৃৎকুম্ভ লয়ে কাঁখে

আবেশে বলে শচীনন্দন
কর হে গুণ্ডিচা মার্জ্জন
গুণ্ডিচা মার্জ্জন কর

(শ্রীগুণ্ডিচামার্জ্জন আরম্ভ)

‘‘গৌরাঙ্গ-আদেশ পাইয়া যত পরিকর।’’
গুণ্ডিচামার্জ্জন করে আনন্দ অন্তর।’’

গুণ্ডিচা মার্জ্জন করে

গৌরাঙ্গকিশোরী আমার—গুণ্ডিচা-মার্জ্জন করে

গুণ্ডিচা,–মার্জ্জন করে গৌরকিশোরী

সঙ্গে লয়ে পারিষদ-সহচরী—গুণ্ডিচা,–মার্জ্জন করে গৌরকিশোরী

সবাই,–গুণ্ডিচা মার্জ্জন করে
সাবই,–হরি বলি’ করে মার্জ্জন
মুখে হরি হরিধ্বনি
সবার মুখে হরিধ্বনি

সবার করে সম্মার্জ্জনী—সবার মুখে হরিধ্বনি (মাতন)

‘‘গৌরহরিবোল, হরিবোল, হরিবোল হরিবোল।।’’

(শ্রীগুণ্ডিচা মার্জ্জন করিয়া শ্রীইন্দ্রদ্যুম্নে যাত্রা)

‘‘শ্রীগুণ্ডিচামার্জ্জন করি’ শ্রীগৌরাঙ্গ রায়।।’’

রাধাভাবে ভোরা গোরা
ভাবোন্মাদে ভোরা গোরা

পারিষদ—সহচরী-সঙ্গে—ভাবোন্মাদে ভোরা গোরা
গুণ্ডিচামার্জ্জন আবেশে—ভাবোন্মাদে ভোরা গোরা

‘‘শ্রীগুণ্ডিচামার্জ্জন করি’ শ্রীগৌরাঙ্গ রায়।’’

নিকুঞ্জসজ্জা-আবেশে

পরাণবঁধু আসবে ব’লে—নিকুঞ্জসজ্জা আবেশে
‘পরাণবঁধু আসবে ব’লে—
কাল নিশি পরভাতে—পরাণবঁধু আসবে বসে

নিকুঞ্জ-সজ্জা আবেশে

‘‘শ্রীগুণ্ডিচামার্জ্জন করি শ্রীগৌরাঙ্গ রায়।
নিজ,–পারিষদ-সঙ্গে রঙ্গে ইন্দ্রদ্যুম্নে যায়।।’’

ইন্দ্রদ্যুম্নে যায় গৌরহরি

গুণ্ডিচা মার্জ্জন করি’—ইন্দ্রদ্যুম্নে যায় গৌরহরি

(মাতন)

(ইন্দ্রদ্যুম্নে গমন।)

ইন্দ্রদ্যুম্নে যায় রে

গুণ্ডিচা মার্জ্জন করি’—ইন্দ্রদ্যুম্নে যায় রে
‘গুণ্ডিচা মার্জ্জন করি’—
কিশোরী-ভাবাবেশে—গুণ্ডিচামার্জ্জন করি’

ইন্দ্রদ্যুম্নে যায় রে
মত্ত গোরা ভাবোল্লাসে

কিশোরী-আবেশে –মত্ত গোরা ভাবোল্লাসে
পরাণবঁধু আসবে বলে মত্ত গোরা ভাবোল্লাসে
কুঞ্জ-সজ্জা-আবেশে—মত্ত গোরা ভাবোল্লাসে

ইন্দ্রদ্যুম্নে যায় গৌরকিশোরী (মাতন)

লয়ে নিজগণ-সহচরী—ইন্দ্রদ্যুম্নে যায় গৌরকিশোরী
গুণ্ডিচা মার্জ্জন করি—ইন্দ্রদ্যুম্নে যায় গৌরকিশোরী

হেলে দুলে যায় রে

গৌরাঙ্গকিশেরী আমার—হেলে দুলে যায় রে

মাঝে নেচে যায় গৌরকিশোরী

লয়ে পারিষদ—গোপনারী—মাঝে নেচে যায় গৌরকিশোরী

(মাতন)

যেন,–গোপীমণ্ডলী ঘেরা ভানুদুলারী—মাঝে নেচে যায় গৌরকিশোরী

আমরি কি শোভা মরি মরি

ব্রজ-মাঝে,–নেচে যেছে গৌরকিশোরী—আমরি কি শোভা মরি মরি
যেন,–গোপীমণ্ডলী-মাঝে ভানুদুলারী—আমরি কি শোভা মরি মরি

হেলে দুলে যায় রে

স্বরূপ,–রামরায়ের কাঁধে হাত দিয়ে—হে দুলে যায় রে
রাধাভাবে ভোরা প্রাণগোরা—হেলে দুলে যায় রে
বঁধুর,–আগমন কথা কইতে কইতে—হেলে দুলে যায় রে
শোভার বালাই লয়ে মরে যাই—হেলে দুলে যায় রে

‘‘ইন্দ্রদ্যুম্নতীরে আসি’ শ্রীগৌরাঙ্গ রায়।
যমুনার কালজল হেরি একদিঠে চায়।।’’

একদিঠে চায় রে

রাধাভাবে ভোরা প্রাণগোরা—একদিঠে চায় রে
ইন্দ্রদুম্নের কালজল-পানে—একদিঠে চায় রে

‘‘ইন্দ্রদ্যুম্ন হেরি গোরা শ্রীযমুনা উদ্দীপনে।
আনন্দে জলকেলি করে নিজগণ-সনে।।
ইন্দ্রদ্যুম্ন-নীরে গোরা পারিষদ-সঙ্গে।
মধুর জলকেলি করে প্রেমতরঙ্গে।।’’

গোরা জলকেলি করে

ইন্দ্রদ্যুম্নের নীল-নীরে—গোরা জলকেলি করে

(মাতন)

‘‘গৌরপ্রেম-সরোবর, কি অপরূপ মনোহর।। ধ্রু ।।
শ্রীরাধাকৃষ্ণৃ-প্রেমবিকারের বারি, উঠতেছে ঢেউ নিরন্তর।
তাতে অদ্বৈত মকর, খেলছে নিরন্তর,
তা দেখে কামকুম্ভীরিণী, হতেছে অন্তর,
নিত্যানন্দপ্রেম-বাতাসেতে, উঠতেছে ঢেউ আনিবার।
শ্রীবাসাদিগদাধর, ঠাকুর-নরহরি আর,
বাসুদেব মুকুন্দদত্ত, স্বরূপদামোদর,
তারা সবে হংস হয়ে, সেই সরোবরে দেয় সাঁতার।
যত নদেনাগরী, তারা যায় সারি সারি,
কার হাতে স্বর্ণ ঝারি, কক্ষে গাগরী,
তারা,–সরোবরে জল আনতে গিয়ে ফিরে আসতে নারে আর।
সেই সরোবরেতে, কি শোভা হয় তাতে,
নীলকমল ঢাকা আছে, স্বর্ণপদ্মেতে।
মধুপানে মত্ত নবীন, মাধাই না পায় কিছু তার।’’


—- ০ —-


‘‘ইন্দ্রদ্যুম্ননীরে গোরা পারিষদ সঙ্গে।
মধুর জলকেলি করে প্রেমতরঙ্গে।।’’

(আইটোটায় গমন।)


ইন্দ্রদ্যুম্নে জলকেলি করি গোরারায়।
নিজগণ সঙ্গে লয়ে আইটোটায় যায়।।’’

আইটোটায় যায় গৌরহরি

ইন্দ্রদ্যুম্নে স্নান করি’—আইটোটায় যায় গৌরহরি (

মাতন)

‘‘আইটোটায় আসি আমার শ্রীশচীনন্দন।
নিজগণ লইয়া করেন প্রসাদ ভোজন।।’’

বসাইলা সারি সারি

নিজগণে গৌরহরি—বসাইলা সারি সারি
মহাপ্রসাদ-ভোজন-রঙ্গে—বসাইলা সারি সারি

মাঝে বসিলেন গৌরহরি

চারিদিকে পারিষদ ঘেরি’—মাঝে বসিলেন গৌরহরি

মহাপ্রসাদ করেন ভোজন

নিজগণ-সনে শচীনন্দন—মহাপ্রসাদ করেন ভোজন
স্বরূপগোঁসাই করেন পরিবেশন—মহাপ্রসাদ করেন ভোজন
হরিবলি শ্রীশচীনন্দন—মহাপ্রসাদ করেন ভোজন

আনন্দের পাথার বয়ে যায়

নীলাচলে আইটোটায়—আনন্দের পাথার বয়ে যায়
এই আইটোটার উপবনে—আনন্দের পাথার বয়ে যায়
মহাপ্রসাদ ভোজন-লীলায়—আনন্দের পাথার বয়ে যায়

(মাতন)

‘‘গৌরহরিবোল, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।।’’
‘‘শ্রীগুরুপ্রেমানন্দে নিতাইগৌরহরিবোল’’

শ্রীগুণ্ডিচামার্জ্জন-লীলা সম্পূর্ণ।


অভিসার আক্ষেপানুরাগ কুঞ্জভঙ্গ খণ্ডিতা গীতগোবিন্দ গোষ্ঠলীলা দানলীলা দূতী ধেনুবৎস শিশুহরণ নৌকাখন্ড পূর্বরাগ বংশীখণ্ড বিপরীত বিলাস বিরহ বৃন্দাবনখন্ড ব্রজবুলি বড়াই বড়াই-বচন--শ্রীরাধার প্রতি মাথুর মাধবের প্রতি দূতী মান মানভঞ্জন মিলন রাধাকৃষ্ণসম্পর্ক হীন পরকীয়া প্রেমের পদ রাধা বিরহ রাধিকার মান লখিমাদেবি শিবসিংহ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন শ্রীকৃষ্ণের উক্তি শ্রীকৃষ্ণের পূর্বরাগ শ্রীকৃষ্ণের মান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ংদৌত্য শ্রীগুরু-কৃপার দান শ্রীরাধা ও বড়াইয়ের উক্তি-প্রত্যুক্তি শ্রীরাধার উক্তি শ্রীরাধার প্রতি শ্রীরাধার প্রতি দূতী শ্রীরাধার রূপবর্ণনা শ্রীরাধিকার পূর্বরাগ শ্রীরাধিকার প্রেমোচ্ছ্বাস সখীতত্ত্ব সখীর উক্তি সামোদ-দামোদরঃ হর-গৌরী বিষয়ক পদ