২৫৫ – যাই যমুনার পাণিকে আইস সখি
রাধিকালাভলোভেন ভেজে স যমুনাতটং।
সা চ রাধাপি সংচিন্ত্য সখীরম্বুপরা যযৌ।।
যাই যমুনার পাণিকে আইস সখি মোর সঙ্গে।
যমুনা জলে কুম্ভ ভরিআঁ আসিব এ বড় রঙ্গে।।
হেন বুলী রাধা কলসী লআঁ জাএ গজগড়ি ছান্দে।
আলকেঁ শোভে বদন তাহার যেহেন কলঙ্ক চান্দে।। ১
আল। পাইল রাধা কালীদহ কুল লইআঁ সখি সমাজে।
ঘাটত ভেটিল নান্দের পো কাজ না বুয়িল লাজে।। ধ্রু
হাসিতেঁ খেলিতেঁ গোপ নারীগণ লাগিলা যমুনাতীরে।
কাহ্নাঞিঁর মুখ কমল দেখিআঁ কেহো না ভরিল নীরে।।
কেহো না পারিল করেঁ ধরিতেঁ খসিল দেহ বসনে।
ওহার এহার মুখ চাহে সব কাহ্রো থির নহে মনে।। ২
তখন নয়ন নিমেষ না কৈল দেখি প্রিয় বনমালী।
সকল গোআল যুবতী রহিলা যেহ্ন কনক পুতলী।।
এখো পাঅ কেহো চলিতেঁ নারে বুলিতেঁ নারে বচনে।
কাহ্নাঞিঁ নাম পৃথিবীর চান্দ তাহাত লাগিল মনে ।। ৩
আনেক যতন করিআঁ রাধা গেলি কাহ্নের সংমুখে।
বুইল কাহ্নাঞিঁরে খাণিএখ ঘুচ সখি পাণি নেঊ সুখে।।
পরিহাস রসেঁ দেব দামোদর যেহ্ন নাহিঁ পরিচএ।
তেহ্নমতেঁ বুয়িল রাধাক উত্তর বড়ু চণ্ডীদাস গাএ।।৪
পাহাড়ীআরাগঃ।। ক্রীড়া।।
২৫৬ – কাহার বহু তোঁ কাহার রাণী
কাহার বহু তোঁ কাহার রাণী। কেহ্নে যমুনাতে তোলসি পাণী।। ১
বড়ার বহু মো বড়ার ঝী। আহ্মে পাণি তুলী তোহ্মাত কী।। ২
কাখের কলস নাম্বাঅ তোহ্মে। কথা চারি পাঁচ কহিব আহ্মে।। ৩
যার কান্ধ বসে দোষর মাথা। সেসি আহ্মা সমে কহিবে কথা।। [১৩৩/২] ৪
তাম্বুলে নেহ আইহনের রাণী। তোর বচনে জীএ চক্রপাণী।। ৫
তাম্বূল দিআঁ মোরে বোলসী। খুদ বড়সিএঁ রুহী বান্ধসী ।। ৬
এহা যমুনাত মো আধিকারী। আহ্মার বচন সুণ সুন্দরী।। ৭
তোর মোর আর বচন নাহীঁ । বুঝিল তোহ্মার মতী কাহ্নাঞিঁ।। ৮
সুদ্ধ সুবন্নের মোর কিঙ্কিণী। এহা নেহ মোর ধরহ বাণী।। ৯
গোআলিনী আহ্মে নহোঁ নাচুনী। মোর কাজ নাহিঁ তোর কিঙ্কিণী।। ১0
হের ষোল হাথ মোর পাটোল। এহা নেহ মোর ধরহ বোল।। ১১
সুদ্ধ সুবন্নের মোহোর বাঁশী। এহা নেহ রাধা পসত বসী।। ১২
তোর বাঁশী মোএঁ ঘসি না ঘাটোঁ। তাক হাথে করী দুধ না আউটোঁ।। ১৩
তোর পাটোলের সুণ কথা। সে মোহার ঘৃত ভাণ্ডের নাথা।। ১৪
মাথার মুকুট জলে রতনে। এহা নেহ রাধা রাখহ সমানে।। ১৫
বাহিরেঁ ভিতরেঁ তোঁ কাহ্ন কাল। মুকুট ধুয়িআঁ আহুকিতেঁ ভাল।। ১৬
ডালিম সদৃশ তন তোহ্মারে। তাহাত মজিল মন আহ্মারে।। ১৭
মাহাকাল ফল আহ্মার তনে। দেখিতেঁ ভাল ভখিতেঁ মরণে ।। ১৮
রাধার নিঠুর সুণিআঁ বাণী। মনত ভয় পাইল চক্রপাণী।। ১৯
রস রাখে রাধা না দিল আশে। বাসলী বন্দী গায়িল চণ্ডীদাসে।। ২0
কোড়রাগঃ।। ক্রীড়া।। লগনী।। দণ্ডকঃ।।
২৫৭ – বাহু তুলিলেঁ কেশ বন্ধন ছলে
বাহু তুলিলেঁ কেশ বন্ধন ছলে।
ঘন ঘন বিকাশিলেঁ বদন কমলে।।
আঙ্গভঙ্গ কৈলেঁ কেহ্নে মোর বিদ্যমানে।
এবেঁ আলিঙ্গন দিআঁ রাখহ পরাণে।।
কিসকে ঘুচায়িলেঁ রাধা নেতের আঞ্চল।
দেখায়িলেঁ কুচভার করায়িলেঁ বিকল।।ধ্রু।।
যমুনার তীরে রাধা কদমের তলে।
তরল করিলেঁ কেহ্নে নয়নযুগলে।।
আধ মুখ ঢাকিলেঁ সরুঅ বসনে।
তেকারণে রাধা ধরিতেঁ নারোঁ মনে।
যুমনা নদীর রাধা তুলিতেঁ পাণী।
কেহ্নে ধীরেঁ ধীরেঁ বুইলেঁ মধুরস বাণী।।
তোহ্মার কারণে রাধা রাখোঁ মো গোকুল।
তোহ্মে জাণ কাজের আহ্মার আদিমূল।।
বাতল হয়িলোঁ মো তোহ্মার দোষে।
তোরে করিতেঁ জুআএ মোর পরিতোষে।।
যমুনার তীরে থাকোঁ তোর পতিআশে।
বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে।
দেশবরাড়ীরাগঃ।। লঘুশেখরঃ।।
২৫৮ – আঊলাইল কুন্তল মোর সত্বর গমনে
আঊলাইল কুন্তল মোর সত্বর গমনে। করযুগ তুলী তার করিলোঁ বন্ধনে।।
শ্রমের কারণে হাম্ভী হৈল ঘন ঘনে। গাঅ মোড়িএ কাহ্নাঞিঁ আলস্য কারণে।। ১
তোহ্মা দেখি যদি মোর বিচলিল মনে। তবেঁ মোরে জীতেঁ না জুআএ এখনে।। ধ্রু
পবনে চলিল মোর হৃদয়বসনে। দৈবযোগেঁ তাত তোর পড়িল নয়নে।।
লাজ ভএঁ ভৈল মোর তরল নয়নে। সত্বরেঁ ঢাকিলোঁ মুখ দেহের বসনে।।২
যমুনা নদীর আহ্মে তুলিল পাণী। এহো দোষ নহে যেন বুয়িলোঁ খর বাণী।।
জীবার আন্তরে কাহ্নাঞিঁর রাখহ গোকুল।
পাপ পামর তোর জাণোঁ আদিমূল। ৩
আপদ পাএ যাক না চিহ্নে আপণা। এহা জাণী তেজ কাহ্নাঞিঁ নাগরপণা।।
পাগল হৈলা কাহ্নাঞিঁ নিজন মতিমোশে। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে।। ৪
।। রামগিরীরাগঃ।। রূপকং।।
২৫৯ – রাধা সমে নেহা ভৈল তোহ্মার বিদিত
নিপীয় পুরষম্বাচ রাধায়া মধুসূদনঃ।
বিধুরৌঽভিদধৌ বৃদ্ধাং মাধুরীমদিদং বচঃ।।
রাধা সমে নেহা ভৈল তোহ্মার বিদিত । তবে কেহ্নে রাধা বোলে মোরে বিপরীত।।
মোএঁ নাহিঁ করোঁ তার ঠায়ি কিছু দোষে।
না জাণো নিঠুর রাধা বোলে কোণ রোষে।। ১
আহা। বোলহ রাধারে মোর পরাণ বড়ায়ি। সরস বচন দিআঁ জিআঅ কাহ্নাঞিঁ ।। ধ্রু
মনত গুণিলোঁ বড়ায়ি মোর বড় ভাগ। সব গোপী মেলি কৈল মোতে আনুরাগ।।
হেনই সম্ভেদে রাধা হআঁ সব আগে। বিলস বুইল রাধা আহ্মার ভাগে।। ২
কান পাতিআঁ মোর সুণ এক বাণী। আপণার সুখেঁ নেঊ যমুনার পাণী।।
আছু আন কাম তাক না করোঁ যতনে। দুলভ হয়িল তার সরস বচনে।।৩
আপণেই জাণ বড়ায়ি আহ্মার হৃদয়ে। রাধিকার নাম সুণী যেহেন ঝুরএ।।
যমুনার তীরে থাকোঁ তোর পতিআশে। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে।। ৪
পাহাড়ীআরাগঃ।। ক্রীড়া।।
২৬0 – কভোঁ না কইল কাহ্নাঞিঁ
কৃষ্ণস্য বচনং শ্রুত্বা বৃদ্ধা বচনপণ্ডিতা।
রাধামভিদধে বৃত্তং স্মারয়ন্তী পুরাভয়ং।।
কভোঁ না কইল কাহ্নাঞিঁ তোর কিছু দোষে।
আকারণে কেহ্নে রাধা কৈলেঁ তারে রোষে।।
তোত লাগি কোণ কাম না করিল কাহ্নে। এবেঁ রাধা কেহ্নে কর তার আপমাণে।। ১
আহ্মার বচন শুন রাধা চন্দ্রাবলী। সরস বচন দিআঁ তোষ বনমালী।।ধ্রু
কোহ্নো গোপী না বুইল তারে খর বাণী। তোহ্মে কেহ্নে তাহাত হয়িলা আগুআনী।।
তেকারণে আসুখিল হৈল চক্রপাণী ।
আনেক বুইল মোরে আভিমানবাণী ।। ২
জাণিলোঁ রাধা তোত কিছু নাহিঁ বুধী। হেনই মিলন হাথে কনক নিধী।।
যে বচন বোলে কাহ্ন তাত পাত কান। এতেকেই মণে পরিতোষ পাএ কাহ্ন ।। ৩
আহ্মার বচনে রাধা না করিহ হেলা। যৌবনসাগরে তোর কাহ্নাঞিঁ ভেলা।।
না পরিহর রাধা কাহ্নের বচন। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ।।৪
গুজ্জরীরাগঃ।। যতিঃ।।
২৬১ – গোপী মেলী যমুনার তীরে
আল বড়ায়ি। গোপী মেলী যমুনার তীরে। আইলাহোঁ নিবারেঁ এহা নীরে।। ল।।
প্রথম তেঁ করিল বিরোধা। হেন না জাণিল বোলে বাধা।। ১
নাহিঁ চিহ্ন তোহ্মে চক্রপাণী। তেঁসি মোরে বোল হেন বাণী।। ধ্রু
কাজ পড়িলেঁ দুষ্ট কাহ্নে। ইষ্ট মিত্র কেহো নাহিঁ চিহ্নে।।
হেন দুরুজন সে কাহ্নাঞিঁ । মামী মাঊসী তার ঠায়ি নাহীঁ ।। ২
নাহিঁ বারে লোক সমাজে। নাহিঁ তার দুয়ি চৌখে লাজে।।
যেহ্ন তেহ্ন লএ নিজ কাজে। হেন সে আজল দেবরাজে।। ৩
বড় দুষ্টমতী সে জে কাহ্ন। আহ্মা ছাড়ী নাহিঁ জাণে আন।।
তাহাক না দিহ রস আশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
ধানুষীরাগঃ।। একতালী।।
২৬২ – রাধা ল। তোর মোর সুদৃঢ় নেহা ল
রাধাবচমাচম্য জরত্যা প্রতিপাদিতং ।
জগাদ কাতরঃ কৃষ্ণঃ সতৃষ্ণো রাধিকামিদং।।
রাধা ল। তোর মোর সুদৃঢ় নেহা ল। ভৈল একই পরাণ একই দেহা।।
ল রাধা। কিছু নাহিঁ করোঁ আপরাধা। তভোঁ কোপ তোর এ বড় ধান্ধা।। ১
না বোল না বোল রুখ বাণী। তোর যৌবনের বস চক্রপাণী।। ধ্রু
আহ্মে তোর প্রিয় বনমালী। তারে না বুঝিলেঁ চন্দ্রাবলী।।
সুণ সুণ রাধা চন্দ্রাবলী। এবেঁ মোর দৈব বড় বলী।। ২
যে কারণে যমুনার জলে। সুদ্ধ কৈল তাক জাণহ সকলে।।
বুঝ ভাবী আপণ আন্তরে। আজি কর এহা জল সফলে।। ৩
আধিকার জায়াণিলোঁ রাধা। তোকে মরমেঁ না কৈলোঁ বিরোধা।।
কান পাত করলোঁ মো ঊত্তরে। গাইল চণ্ডীদাস বাসলীবরে।। ৪
মালবরাগঃ।। রুপকং।।
২৬৩ – তোহ্মার বোলে কেহো কাহ্নাঞিঁ
তোহ্মার বোলে কেহো কাহ্নাঞিঁ না বহিব পাণী।
ঊচিত নিফল হৈব তোর জল ভাবি বুঝ চক্রপাণী।। ১
তোহ্মে পাণি নেহ সুন্দরি রাধা যত পড়িহাসে মণে।
কমন গুণে এহা পাণি নিব সকল যুবতীগণে ।। ২
আহ্মে পাণি নিব মোর সকল সখিজন জাইব শুন কলসে।
এহাক দিখেআঁ সকল লোকেঁ মোক করিব উপহাসে।। ৩
লোকে উপহাস করিব তোহ্মাক তাক আহ্মে ভালেঁ জাণী।
বিণি যাচিলেঁ কাহাকো না দিব এনা এক ফুট পাণী।। ৪
আহ্মে সখি সব বহুত কাহ্নাঞিঁ এক তোহ্মে এহা তীরে।
মাগু কিলেঁ তোহ্মা কিলায়িআঁ কাহ্নাঞিঁ নীব যমুনার নীরে।। ৫
তোর সখিগণ সুন্দরি রাধা কিছু করিতেঁ না পারে।
এ তোর যৌবন উন্নত রাধা মারিতেঁ পারে আহ্মারে।। ৬
আবোল না বোল সুন্দর কাহ্নাঞিঁ হের ধরোঁ চরণে।
আবাল গোপাল না-কর জঞ্জাল পাণি নেঊ সখিগণে।। ৭
নাগরী রাধা কান পাতিআঁ সুণিআঁ এক বচনে।
সব সখিগণে পাণী ভরায়িআঁ নগর যাহা আপণে।। ৮
পাণি ভরায়িআঁ ঘাটত উঠিআঁ নিচল পাতিআঁ কানে।
সরূপেঁ সুন্দর দেব দামোদর সুণিব তোর বচনে।। ৯
এ বোল সুণিআঁ সুন্দর কাহ্নাঞিঁ আতি হরষিত মতী।
করিল সকল গোপ যুবতীক জল নিতেঁ আনুমতী।। ১0
পাণি তুলিআঁ কাহ্নের পাশে রাধা পাতিল কানে।
কিছু বা কহিল সুন্দর কাহ্নাঞিঁ কপোলে কৈল চুম্বনে।। ১১
তখন রাধা রোষ করিআঁ সত্বর গমনে জাএ।
বাসলী চরণ শিরে বন্দিআঁ বড়ু চণ্ডীদাস গাএ।। ১২
দেশাগরাগঃ।। ক্রীড়া।। প্রকীণ্ণক।। লগনী।।
২৬৪ – কাছের কলসিএঁ রাধা তুলিলেঁ পাণী
কাছের কলসিএঁ রাধা তুলিলেঁ পাণী। মধু রসময় তোর বোল খাণী খাণী।
হৃদয়ে কাঞ্চুলী শোভে কানড়ে কুণ্ডলে। আদিত্য জিণিআঁ উয়িল কিরণ মণ্ডলে।। ১
ধীরেঁ ধীরেঁ যাহা গোআলিনী সুণ মোর বোল।
রহিআঁ রহিআঁ দেহ বিরহের কোল।। ধ্রু
আহ্মা লয়িআঁ রাধা পাণি লয়িআঁ যাসি। রোষে মন দিআঁ কেহ্নে মোরে না তরাসী।।
কমন কারণে রাধা না কাঢ়সি রাএ। বিরহ আনলে মোর বিদগধ গাএ।। ২
রোষ পরিহর রাধা মোর বোল সুন। রোষে বিনাসে দেহে এ সকল গুণ।।
আধিকার কৈল আহ্মে যমুনার ঘাটে। কলসি ভাঁগিবোঁ বোল না ধরিলেঁ বাটে।। ৩
পুরুব আপর কথা রাধা মনে গুন। এভোঁহো সুন্দরি রাধা মোর বোল সুন।।
এ বোলেঁ উলটি রাধা চাহিল নয়নে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে ।। ৪
দেশবরাড়ীরগাঃ।। লঘুশেখরঃ।।
২৬৫ – ভাল মন্দ কত লোক পথ মাঝে যাএ
ভাল মন্দ কত লোক পথ মাঝে যাএ।
তাহাক বারিআঁ বোল বুলিতেঁ জুআএ।।
যেহ্ন তোহ্মে গোপ কথা করহ বিকাশ। বুঝিল তোহ্মার কাজে নাহিঁ কিছু ভাষ।। ১
পথত বারহ মন নান্দের নন্দন। কি কারণে ঝগড় করহ সব খন।। ধ্রু
দুর্জ্জন সাসুড়ী মোর ঘরতে আছএ। আবোল বুলিতেঁ তাক নাহিঁ কিছু ভএ।।
পুরুবেঁ যে কৈল তত জাণিআঁ আপুণী। ঘাটে বাটে হেন কেহ্নে বোল চক্রপাণী।। ২
এখনে তেজহ কাহ্নাঞিঁ আরতী বচন। তোহ্মে কি না জানহ মন্দ ভাল সখিগণ।।
কেহো যবেঁ বেকত করিহে এহা কাজ। আহ্মার খাঁখার তবেঁ তোহ্মে পাইবেঁ লাজ।। ৩
বোলাবুলি রাধিকা পাইল নিজ ঘর। ভয় মানী কাহ্নাঞিঁ তেজিল সে উত্তর।।
আপণ আপণ ঘর গেলা সখিগণ। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ।। ৪
দেশাগরাগঃ।। লঘুশেখরঃ।।
২৬৬ – কালীদহে দি আহ্মে ঝাঁপে ল
রাধিকাবাচমাচম্য চতুরো মধুসূদনঃ।
জগাদ জরতীং গত্বা করুণং রভসাদিদং।।
কালীদহে দিল আহ্মে ঝাঁপে ল।
আল হের বড়ায়ি। জিলোঁ মোঞঁ গোকুল আগে ল ।।
আর কৈলোঁ নানা যতনে।
আল হের বড়ায়ি। তভোঁ না থাকিলোঁ তার মণে।। ১
হরি হরি। এর কালে রাধার কারণে ল।
আল হের বড়ায়ি। তভোঁ তোষ নাহিঁ তার মণে ল।। ধ্রু
সব সখি মেলী গোআলিনী । লআঁ গেলা যমুনার পাণী।।
না দিঁলেক সরস বচনে। তেকারণে পোড়ে মোর মণে।। ২
কিবা আছে রাধিকার মণে। তাহাকেহো জানহ আপণে।।
আহ্মে ত না কৈল কিছু দোষে। মিছা রাধা কেহ্নে কৈল রোষে ।। ৩
বোলহ রাধারে মোর বাণী। সুখেঁ নেঊ যমুনার পাণী।।
সে পাণী সোধিলোঁ তার আশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
বেণাবলীরাগঃ।। রূপকং।।
২৬৭ – এত কাল রাধা তোর গেল শিশুভাবে
নিপীয় বচনং সাধু জরতী মধুবিদ্ধিষঃ।
রাধিকামধিকামর্ষ রাধিকামাহ ভারতীং।।
এত কাল রাধা তোর গেল শিশুভাবে। তেঁসি না জাণিলি নিজ আপণ লাভে।।
এবেঁ তোহ্মে আসি ভৈলা এ ভর যুবতী। তভোঁ কি কারণে তোঞঁ করসি বিমতী।। ১
সাগর রস নাগর সুন্দর কাহ্নাঞিঁ। তোর ভাগেঁ কাকুতি করএ তোর ঠায়ি।। ধ্রু
সুন্দর যুবক সমে যে হএ শৃঙ্গার। সকল সংসার মাঝে সেই সুখ সার।।
এহা বুঝী কাহ্ন তোরে মানায়িলোঁ যতনে। কোন অবুধির বোলেঁ করসি বিমনে।। ২
কভোঁ না বুলিব আহ্মে তোর আনুচীত। যেহো সখি দেখ তোর কেহো নহে হীত।।
আপণ কাজক লাগি সবই বিকলী। সহ্মেঞিঁ চাহেন্ত তোক রোষু বনমালী।। ৩
আহ্মার বচন রাধা পরিভাব মণে। যমুনাক যাইউ রাধা লয়িআঁ সখিগণে।।
তথাঁ গিআঁ তোষ কাহ্নাঞিঁ সরস বচনে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে।। ৪
গুজ্জরীরাগঃ।। যতিঃ।।
জরতী বচসা রাধাং চলিতাং যমুনামনু।
জগাদ চতুরঃ কৃষ্ণঃ সমাশ্বাসপুরস্মরং।।
২৬৮ – হরিষেঁ আইলা রাধা তোহ্মে এহা তীরে
হরিষেঁ আইলা রাধা তোহ্মে এহা তীরে। আজি সফল হৈব যমুনার নীরে।। ১
উপস্থিত হৈল হের গিরীশ সমএ। শীতল গম্ভীর জলে রহিতেঁ সুখাএ।। ২
পুরুবেঁ আছিল এহো দহে নাগগণে। এহাত নাহিতেঁ ভয় লাগে তেকারণে ।। ৩
নাহিবারেঁ সখিগণ চাহে এহা জলে। তবেঁ নাহিঁ নাহে ডরে পাণী লআঁ চলে।। ৪
কালীনাগ পাঠায়িল সাগরের পার। এবেঁ মিছা ডর কর জলে যমুনার।। ৫
আহ্মার বচন সুন্দরী রাধা ধর। আহ্মে আগেঁ লাম্বী তবেঁ জলের ভিতর।। ৬
কুবুধি তেজিআঁ যবেঁ ণাম্ব এহা জলে। তবেঁ আহ্মে ণাম্বি লআঁ এ সখি সকলে।। ৭
জলত ণাম্বিল কাহ্নাঞিঁ দেখে সখিগণে।
উনমত নহিহ মোর বিরহ বচনে।। ৮
আনুমতি দিআঁ কাহ্নাঞিঁ ণাম্বায়িল জলে। পাছত করিআঁ রাধা আর গোপীকুলে।। ৯
জলকেরি করে কাহ্নাঞিঁ আপণার সুখে। মনমথ ভাবেঁ দেখে সব গোপী মুখে।। ১0
কাহ্নাঞিঁক দেখি রাধা উল্লসিত মনে। আর তাক দেখি থীর নহে গোপীগণে।। ১১
সহ্মার জলকেলিত লাগিল মনে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে।। ১২
রামগিরীরাগঃ ।। প্রকীণ্ণক ।। চিত্রকং ।। লগনী ।। একতালী ।। দণ্ডকঃ ।।
২৬৯ – জলে ডুবিল জনার্দ্দনে আল
জলে ডুবিল জনার্দ্দনে আল। রাধার ছুয়িল জঘনে।।
চমকিলী রাধা ঊঠিআঁ দেখিল কাহ্নে।। এ ।।
ঘন চালিআঁ বসনে। আল। রাধিকা আড় নয়নে। চাহিআঁ কাহ্নের মণে। চিআইল মদনে।। ১
আল। পুরী চির মনোরথে। জলকেলি কৈল কালীদহে জগন্নাথে ।। ধ্রু
কাহারো ধরিআঁ পাএ। দূর জল লআঁ জাএ।
ডরেঁ সে গোলিনী কাহ্নাঞিঁ কাহ্নাঞিঁ বোলএ।।
ডুবিআঁ কাহারো তনে। গুপতেঁ ধরিল কাহ্নে।
ভাবেঁ সে নিচলে গোপী থাকিলী তখনে।। ২
কাহারো নিতম্বে হাথে। রসে দিল জগন্নাথে। উলটি কৃষ্ণের সেহো ধরিলেক হাথে।।
কাহ্নাঞিঁ হাথ খসাইআঁ। ডুপেঁ পদ্মবন গিআঁ।
গোপী ভাণ্ডী চির রহিলা মুখ তুলিআঁ।। ৩
উঠি বুইল বচনে। ধরী বড়ায়ির চরণে। রাধা চন্দ্রাবলী লআঁ সব গোপীগণে।।
জলে রহি নিরাসে। দেখি মণে মণে হাসে। গাইল বাসলী বন্দিআঁ বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
কোড়ারাগঃ।। ক্রীড়া।।
২৭0 – জলত ণাম্বিল কাহ্নাঞিঁ মোর পরতেখ
জলত ণাম্বিল কাহ্নাঞিঁ মোর পরতেখ। এখনে কেমনে বড়ায়ি হয়িল আদেখ।।
আকাশে উঠিল কিবা পসিল পাতালে। কিবা মরি গেল কাহ্নাঞিঁ যমুনার জলে।। ১
বোলহ পরাণ বড়ায়ি সরূপেঁ আহ্মারে।
কমণ উপাএ পায়িব দেব দামোদরে।। ধ্রু
ষোল সহস্র গোপী একলা দামোদরে। ডুবিআঁ মাইলেন্ত কাহ্নাঞিঁ জলের ভিতরে।।
হেন বুলি সব লোকে দুসহ উত্তরে। তাহাক গুণিতেঁ ভৈল দগধ আন্তরে।। ২
সব গোপী মিলি চাহিআঁ বনমালী। কথাঁহো না পায়িলোঁ তাক ভয়িলোঁ স বিকলী।।
সরূপেঁ লক্ষিএ বড়ায়ি কাহ্নের বনমালী। কথাঁহো না পায়িলোঁ তাক ভয়িলোঁ স বিকলী।।
সরূপেঁ লক্ষিএ বড়ায়ি কাহ্নের মরণ। এতেকেঁ হারায়িল বুধী সব গোপীগণ ।। ৩
জীয়ন্ত থাকিত যবেঁ নান্দের নন্দনে। এত খনে আবসই হৈত দরসনে।।
আপণেঞিঁ করহ সে বুধি পরকারে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবরে।। ৪
ভাঠিয়ালীরাগঃ।। রুপকং।।
২৭১ – আল রাধা তোর মুখে শুণী হেন বাণী
আল রাধা তোর মুখে শুণী হেন বাণী। এহা জলে মৈল চক্রপাণী ।। ল
আল রাধা বড় দুখ উপজিল মনে। শরীরত হরিলোঁ চেতনে।। ১
আল রাধা যাবত কেহো নাহিঁ সুনে। তাবত করি ঘর গমনে।। ধ্রু
সখিসব নিষধ যতনে। কেহো তার না কহিএ মরণে।।
এ বারতা যবেঁ বাহিরাএ। সহ্মার পরাণ তবেঁ জাএ।। ২
একইতি মাএর ছাওআল। সুন্দর বাল গোপাল।।
তোত লাগি যমুনাত মৈল। এবেঁ তোর মণে সুখ ভৈল।। ৩
কালী সহ্মে হয়িআঁ এক ঠায়ি । ভালমতেঁ চাহিব কাহ্নাঞিঁ।।
তবেঁ তার পায়িব ঊদ্দেশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
ধানুষীরাগঃ।। একতালী।।
২৭২ – রাধা ঘর গেলি দেখিআঁ কাহ্নে
সখী সখিবৃতাং রাধাং বৃদ্ধাবচনসংযতা।
জগামগারমাগারং বহন্তী মানসং শুচঃ।।
রাধা ঘর গেলি দেখিআঁ কাহ্নে। জলত হৈতে ঊঠিল তখনে।।
গুপতেঁ রহিলা সে বৃন্দাবনে। কেহো না জাণিল দৈব ঘটনে।। ১
নাগর কাহ্নাঞিঁ কইল কপটে। রস ভুঞ্জিবারেঁ যমুনা তটে।। ধ্রু
যবেঁ গেল রাতী এক পহর। তবেঁ সে কাহ্নাঞিঁ গেল নিজ ঘর।।
রাধার রূপ সোঁঅরী গোবিন্দে। সকল রজনী না গেল নিন্দে।। ২
তাম্বাচূড়া রাএ হৈল বিহাণ। যমুনা তীরেঁ চলিলা কাহ্ন।।
কদম্ব গাছে চড়ী বনমালী। রহিলা রাধার পন্থ নেহালী।। ৩
মনে মনরথ সব আরতী। রসিক কাহ্নাঞিঁর কইল যুগতী।।
রাধার করিবোঁ পাঞ্চ সঙ্গতী। গাইল চণ্ডীদাস বাসলীগতী।। ৪
মল্লাররাগঃ।। রুপকং।।
২৭৩ – বড়ায়ির বচন ধরিআঁ রাধা মনে
অধিরজনীবিরামং রামরম্বারিপুরূররমভজত রাধা মাধবোন্বেষণায়।
অতনুমতনুবাণব্যূহদাহং বহন্তীতটমনু যমুনায়া স্তূয়মানা সখীভিঃ।।
বড়ায়ির বচন ধরিআঁ রাধা মনে। ডাক দিআঁ সখিগণ আণায়িল তখনে।। ১
কাখেত কলসী করি বড়ায়ি তূলে। চলী ভৈলী চন্দ্রাবলী যমুনার কূলে ।। ২
নাহিবার কাল নহে বড়ায়ি বিহাণে। তেঁ না নিল কেহো গোপী দুঅজ বসনে।। ৩
চারী ভীত চাহি রাধা বুইল বচনে। কুলত কাপড় থুয়িআঁ জলে চাহি কাহ্নে ।। ৪
সব সখি বুইল রাধা ভাল বুয়িলেঁ কাজ।
কেহো ত পুরুষ নাহিঁ এথাঁ কিসে লাজ ।। ৫
হেন পরিভাবি রাধা লয়িআঁ গোপীকুলে। বসন তেজি নাম্বিলী যমুনার জলে।। ৬
রাধিকা চাহিল কাহ্ন আলোড়িআঁ জলে। তাক না পাইআঁ ভৈলী হৃদয়ে বিকলে।। ৭
সব সখি সম্বোধিআঁ রাধা বুইল বাণী। আহ্মাক মারিআঁ কথাঁ গেলা চক্রপাণী।। ৮
সখিসব মিলী রাধা বড়ায়ির পাএ। বুইল কাহ্ন পায়িব বড়ায়ি কমণ উপাএ ।। ৯
তরু হৈতেঁ তখনে ণাম্বিলা দামোদর। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবর।। ১0
রামগিরীরাগঃ।। একতালী।। দণ্ডকং।।
২৭৪ – গোপীর বসন হার লয়িআঁ দামোদর
আহা। গোপীর বসন হার লয়িআঁ দামোদর। উঠিলা গিআঁ কদম্ব তরুর উপর।।
তথাঁ থাকী ডাক দিআঁ বুইল বনমালী। কি চাহি বিকল হঅ সকল গোআলী।। ১
নিকট আইস মোর সব গোপীগণে। আজি কথা সুণ মোর মরণ জীবনে।। ধ্রু
দেখি হরষে তা সব গোপ যুবতী।
গাছের উপরে কাহ্নাঞিঁ উল্লসিত মতী। ।।
হরিআঁ গোপীর হার আঅর বসনে।
হাসো হাসে খলিখলি কাহ্নাঞিঁ গুরুঅ মনে।। ২
কূলে পরিধান নাহিঁ দেখি গোপনারী। হৃদঞঁ জাণিল তবেঁ নিলক মুরারী।।
তবেঁ বড় গল করী বুইল জগন্নাথে। তোহ্মার বসন হের আহ্মার হাথে।। ৩
যাবত না উহিবেঁহে জলের ভিতর। তাবত বসন নাহিঁ দিব দামোদর।।
এহা জাণী তাড়ত উঠিআঁ নেহ বাস। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাস।। ৪
পাহাড়ীআরাগঃ।। ক্রীড়া।।
২৭৫ – জলেঁ চাহিবারেঁ তবেঁ নান্দের নন্দনে
অথ রাধা হরিং বীক্ষ্য তরোঃ শিখরগোচরং।
বলনীতপরীধানংভূষণং হ্রীযুতাবদৎ।।
জলেঁ চাহিবারেঁ তবেঁ নান্দের নন্দনে। ঘাটত থুইল সহ্মে হার বসনে।।
সখিসব মেলিআঁ ণাম্বিলান্ত জলে। হার বসন কাহ্নঞিঁ লআঁ গেল বলে।।
আয়ি মোর লাজ নিলজ বনমালী।
জলে বিবসিনী ডাক পাড়েরে গোআলী।। ল ।। ধ্রু
জলতে উঠিলা রাহী আধ করি তলে। দক্ষিণ করেঁ ঢাকিআঁ কুচযুগলে।।
কাহ্নক বুইল তোর মুখেঁ নাহিঁ লাজ। বড়ার বহুক করসি হেন কাজ ।। ২
দূরত থাকিআঁ বুইল জগন্নাথ। তড়াত উঠিআঁ রাধা কর যোড়হাথ।।
তড়ে হাথ যোড় করী বুয়িল চন্দ্রাবলী। হার বসন দেহ দেব বনমালী।। ৩
রাধার চরিত্র দেখি দেব দামোদর। নেত বসন দিল রাধার উপর।।
হার লুকায়িআঁ রাধাক দিল বাস। বাসলী শিরে বন্দী গাইল বড়ু চণ্ডীদাস।। ৪
রামগিরীরাগঃ।। রুপকং।।
২৭৬ – আল বড়ায়ি সাত পাঁচ সখিজন লআঁ
রাধায়া বাচমাচম্য নিরন্তররসান্তরঃ
তামেবোপহসন্ কৃষ্ণো জগাদ জরতীমিদং।।
আল বড়ায়ি সাত পাঁচ সখিজন লআঁ। জলেত লাম্বিলী লাঙ্গট হআঁ। ল ।। ল ।।
আল বড়ায়ি নাহিঁ মণে রাধা গুরুজনে।
হেন তিরী জিআএ আইহনে।। ল ।। ১
আল বড়ায়ি কেহ্নে রাধা হেন কাম করে। বিবসিনী লাম্বএ নীরে।। ল ।। ধ্রু
ধরী তোহ্মে আহ্মার বচনে। নিষধ রাধাক যতনে।।
আর বার হেন না করিহে। পুরুষের আখি নিবারিহে।। ২
দিল আহ্মে সহ্মাবেঁ বসন। তভোঁ কেহ্নে রাখিকা বিমন ।।
তাহাকে ত নাহিঁ পরকারে। না জাণো কি আর বোলে মোরে ।। ৩
পুছ গিআঁ রাধাক যতনে। বাস পাআঁ রহিলছে কেহ্নে।।
আহ্মাক না এড়ে কিবা আশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
ধানুষীরাগঃ।। একতালী।।