৩০৯ – বড়ায়ি লইআঁ রাহী গেলী সেই থানে

অনঙ্গসঙ্গরে রাধা ভঙ্গং প্রাপ্য কুরঙ্গদৃক্।
আলসাঙ্গলতা রঙ্গাত জরতীসহিতা যযৌ।।

বড়ায়ি লইআঁ রাহী গেলী সেই থানে। সখিসবে বুইল রাধা লড়িঊ সিনানে।। ১
ষোল শত গোপী গেলা যমুনার ঘটে।
তা দেখিআঁ কাহ্নাঞিঁ পাতিল নাটে।। ২
খনে করতাল খনে বাজাএ মৃদঙ্গ। তা দেখি রাধিকার সখিগণে রঙ্গ।। ৩
আর যত বাদ্য গণ আছের কাহ্নাঞিঁ। পতিদিনে নানা ছান্দে বাএ সেহি ঠাই ।। ৪
তা দেখিআঁ না তুলিলী আইহনের রাণী।
সৃজি কাহ্নাঞিঁ তবেঁ মোহন বাঁশী।। ৫
সাত গুটি বিন্ধ তাত করি আনুপাম। সবুণ্ণের সাম্বী হিরার বান্ধির কাম।। ৬
হরিয়ে পুরিআঁ কাহ্নাঞিঁ তাহাত ওঁকার। বাঁশীর শবদেঁ পারে জগ মোহিবার।। ৭
যমুনার ঘাটে রাদা বাঁশীনাদ সুণী। জল লআঁ ঘর আয়িলী আইনের রাণী।।৮
বৃন্দাবনে বাঁশী বাএ নান্দের নন্দন। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ।। ৯
পাহাড়ীআরাগঃ।। একতালী।। দণ্ডকঃ।।

৩১০ – কে না বাঁশী বাএ বড়ায়ি

নিপীয় বংশনিনদং রাধা কংসভয়াতুরা।
বেদিতুম্বাদকন্তুস্যাজ্জগাদ জরতীমিদং।।

কে না বাঁশী বাএ বড়ায়ি কালিনী নইকূলে।
কে না বাঁশী বাএ বড়ায়ি এ গোঠ গোকুলে।।
আকুল শরীর মোর বেআকুল মন।
বাঁশীর শবদেঁ মো আঊলাইলোঁ রান্ধন।। ১
কে না বাঁশী বাএ বড়ায়ি সে না কেন জনা।
দাসী হআঁ তার পাএ নিশিবোঁ আপনা।।ধ্রু।।
কে না বাঁশী বাএ বড়ায়ি চিত্তের হরিষে।
তার পাএ বড়ায়ি মোঁ কৈলোঁ কোণ দোষে।।
অঝর ঝরএ মোর নয়নের পাণী।
বাঁশীর শবদেঁ বড়ায়ি হারায়িলোঁ পরাণী।। ২
আকুল করিতেঁ কিবা আহ্মার মন।
বাজাএ সুসর বাঁশী নান্দের নন্দন।।
পাখি নহোঁ তার ঠাঞি উড়ি পড়ি জাওঁ।
মেদনী বিদার দেউ পসিআঁ লুকাওঁ।। ৩
বন পোড়ে আগ বড়ায়ি জগজনে জাণী।
মোর মন পোড়ে জেহ্ন কুম্ভারর পণী।।
আন্তর সুখাএ মোর কাহ্ন আভিলাসে।
বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে।। ৪
কেদাররাগঃ।। রুপকং।।

৩১১ – সুসর বাঁশীর নাদ সুণী আইলোঁ

নিশম্য কৃষ্ণবচনং স্মরজ্বরতুরাতুরা।
যমুনা তীরাগতও রাধাহ জরতীমিদং।।

সুসর বাঁশীর নাদ সুণী আইলোঁ মো যমুনাতীরে।
শোভন কলসী করে ধরিআঁ পরিলোঁ যমুনানীরে।।
বড়ায়ি ল।। বাঁশীর নাদ না শুণী এবেঁ কাহ্ন গেলা কিবা দূরে।
প্রাণ বেআকুল ভৈল এবেঁ কিমনে জায়িবোঁ ঘরে।।১
বড়ায়ি ল ।। তোহ্মে কি দেখিলেঁ জায়িতেঁ পথে।
কাল কাহ্নাঞিঁ চাঁচর কেশে কুসুম শোভিত মাথে।।ধ্রু
আহোনিশি মো আন না জাণো এত দুখ কহিবোঁ কাএ।
কাহ্নের ভাবেঁ চিত্ত বেআকুল লাজে মোঁ না কান্দো রাএ।।
যমুনাতীরে কদমের তলে কাহ্ন মোরে দিলে কোলে।
তাহা সুঁঅরিআঁ বিকলী ভৈলোঁ কাহ্ন বিরসিল ভোলে।। ২
চারি দিগেঁ তরু পুষ্প মুকুলিল বহে বসন্তের রাএ।
আম্বডালে বসী কুয়িলী কুহলে লাগে বিষবাণঘাএ।।
চান্দ সুরুজের ভেদ না জাণো চন্দন শরীর তাএ।
কাহ্ন বিণি মোর এবেঁ এক খন এক কুল যুগ ভাএ।।৩
বাঁশীর শবদেঁ প্রাণ হরিআঁ কাহ্ন গেলা কোণ দিশে।
তা বিণি সকল আন্তর দহে যেন বেআপিল বীষে।।
এবেঁ আণিআঁ দেহ নান্দের নন্দন পুর ত আহ্মার আশে।
বাসলীচরণ শিরে বন্দিআঁ গাইল চণ্ডীদাসে।। ৪
শ্রীরাগঃ।। ক্রীড়া।।

৩১২ – এবেঁ বড় নয়নে মো না দেখোঁ সুন্দরী

এবেঁ বড় নয়নে মো না দেখোঁ সুন্দরী কথাঁ গেলেঁ পায়িব আহ্মে শ্রীকৃষ্ণ হরী।।
হেনক ঊপায় মোক বলে চন্দ্রাবলী। তবেঁ মো তোহ্মাক আণি দিবোঁ বনমালী।। ১
যত কিছু বুয়িলেঁ মোর পরাণনাতিনী। বড় দুখ ঊপজিল মণে তাক সুণী ।। ধ্রু
যমুনা নদীতে মো কেমনে হৈবোঁ পার। ঘড়িআল কুম্ভীর তাহাত আপার।।
শকতিঞঁ পার হয়িলা চন্দ্রাবলী রাণী। তথাঁ বা কেমনে পায়িব দেব চক্রপাণী ।। ২
সেহি বৃন্দাবন মাহা ঘোর ভয়ঙ্কর । বাঘ ভালুক তাএ বসে বিথর ।।
তাহার আগত রাধা এড়ায়ি কেমনে। হেনক ঊপায় তোহ্মে কহ মোর থানে।। ৩
ভরিল যমুনাত তোহ্মা কৈল পার। তোহ্মা হেতু কান্ধে বহিল দধিভার।।
তভোঁ তোর ভালমতেঁ না পুরিল আশ। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাস।। ৪
শ্রীরাগঃ ।। যতিঃ।।

৩১৩ – আইস ল বড়ায়ি মোর রাখহ পরাণ

আইস ল বড়ায়ি মোর রাখহ পরাণ। সহিতেঁ না পারোঁ মদন পাঁচ বাণ।।
সরস বসন্ত ঋতু কোকিল রাএ। আধিক বিরহশিখি হৃদএ জলএ ।। ১
কি বুধি করিবোঁ বড়ায়ি বোলহ এখন। যে বুধি করিলেঁ রহে আহ্মার জীবন।।ধ্রু
কে বোলে চন্দন চাঁদ আতি সুশীতল। আহ্মার মনত ভাএ যেহেন গরল।।
নব কিশলয় ভৈল দহন সমান। ঘাঅত উপরে ঘাঅ বাঁশীর সান।। ২
নানা তরু লতা বন ঘোর আন্ধকার। বৃন্দাবন চল বড়ায়ি ত্রিভুবনে সার।।
ধরণ না জাএ বড়ায়ি আহ্মার যৌবন। প্রাণ রাখ আণি দেহ নান্দের নন্দন।। ৩
আহ্মার বচন শুণ তোহ্মে বড়ি মা। না জাণ কেমণ করে আহ্মার গা।।
বিণি কাহ্নে চঞ্চল আহ্মার জীবন। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ।। ৪
কোড়ারাগঃ।। রূপকং।।

৩১৪ – আষাঢ় শ্রাবণ মাসে মেঘ বরিষে

আষাঢ় শ্রাবণ মাসে মেঘ বরিষে যেহ্ন ঝরএ নয়নের পাণী।
আল বড়ায়ি।
সংপুটে প্রণাম করি বুইলোঁ সব সখিজনে কেহো নান্দে কাহ্নঞিকে আণী।। ১
আল বড়ায়ি চাহা চাহা। কোণ দিগেঁ মৌহরী বাজে।।ধ্রু।।
রূপস দেখিএ যথাঁ নানা ফুল ফল গড়া সেই সে কাহ্নঞিঁর দেশ।
নান্দের নন্দন কাহ্ন … … … সোঁঅরিতেঁ পাঞ্জর শেষ।। ২
কাহ্নঞিঁ বিহাণে মোর সকল সংসার ভৈল দশ দিগ লাগে মোর শূন।
আঞ্চলের সোনা মোর কে না হরি লআঁ গেল কিবা তার কৈলোঁ অগুণ।। ৩
তোহ্মার আগত সত্যে বুয়িলোঁ বড়ায়ি তোর বোল না করিবোঁ আনে।
আণিআঁ কাহাঞিঁ দেহ বড়ু চণ্ডীদাস গাএ বন্দিআঁ বাসলীচরণে।। ৪
কোড়ারাগঃ।। রুপকং।।

৩১৫ – উত্তম গোআলকুলে আহ্মার জরম

উত্তম গোআলকুলে আহ্মার জরম। তোহ্মাকে জুগত নহে এ সব করম।।
দুচারিণী যার মা তার হেন গতী। সেসি পর পুরুষের বাঞ্ছএ সুরতী।। ১
সুণহ নাতিনী তোক কিছু নাহিঁ বুধী।
কথাঁ গিআঁ পাইব আহ্মে কাহ্নাঞিঁর সুধী।। ধ্রু
এ সব কামত যে বা ঊপসন্ন হএ। পাপ বেআপিত সে ধরম করে খএ।।
আপণাঁ চিহ্নিআঁ থাক আইহনের রাণী। লোকেঁ জণি সুণে তোর এ সব কাহিনী।। ২
শিশু হয়িতেঁ জাণো তোর মাএর চরীত। তার ঝিউ হআঁ তোর কেহ্নে হেন চীত ।।
পুরুবে যে কাজ হৈল সে ভৈল গুপতে। এবেঁ তোর মন তাক বেকত করিতেঁ।।৩
সুণহ সুন্দরি তোহ্মে আইহনের দাসী। এ সব করমে কেহ্নে ভয় না বাসসী।।
হেন কাম করিলেঁ নাসিবো তোর পাশে। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে।। ৪
গুজ্জরীরাগঃ।। যতিঃ।।

৩১৬ – মো জে সখি সব সঙ্গে করিবোঁ

মো জে সখি সব সঙ্গে করিবোঁ। মাহ্লী মালতী ফুল গাথিবোঁ।।
দূতা তোক লয়িআঁ কাহ্নের মুখ দেখিবোঁ। খাট পালঙ্কি গঢ়ায়িবোঁ।।
আল। সুবণ্ণে মঢ়ায়িবোঁ। কাহ্নাঞিঁ লইআঁ রতিঞঁ পোহাইবোঁ।।
এবেঁ শুণিআঁ বাঁশীর ধুনী। আল। মরিবোঁ জালী আগুণী।
কাহ্নের সকল দোষ খণ্ডিবোঁ আপুণী।। ১
তোরে মা না এড়িবোঁ দূতী ল। বোলহ কাহ্নেরে রাধাক দেঊ সমতী ল।। ধ্রু
মো জে সখি সব সঙ্গে করিবোঁ। মাহ্লী মালতী ফুল গাথিবোঁ ।
দূতা তোক লয়িআঁ কাহ্নের মুখ দেখিবোঁ। মো জে কস্তূরি কপুর খাইবোঁ।
কিশলয় শয়ন বিছাইবোঁ। কাহ্ন আলিঙ্গিআঁ সকল দেহ জুড়ায়িবোঁ ।।২
তার বাঁশীর শবদ শুণী। পরাণ জাএ মোর গুণী।
সুণ তোঁ দূতা আণি দেহ চক্রপাণী।।
দেবের বর যদি পাওঁ। এখনে তবেঁ পাখি হওঁ ।
আপণে ঊড়িআঁ কাহ্নের ঠায়ি জাওঁ।। ৩
সে গোবিন্দ গোপনন্দনে। মোর কুচযুগের চন্দনে।
সব সখি লআঁ তার করিবোঁ বন্দনে।।
আন বড়ায়ি কাহ্ন মোর থানে। সঙ্গে জাইঊ বৃন্দাবনে।
গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে।। ৪
রামগিরীরাগঃ।। রুপকং।।

৩১৭ – কিসক মরিতেঁ চাহ তোহ্মে

আল রাধা। কিসক মরিতেঁ চাহ তোহ্মে। চাহিআঁ কাহ্নাঞিঁ আণি দিব আহ্মে ।। ল।।
বুঝাইআঁ বুলিবোঁ তারে বাণী। যেহ্ন সে আইসে চক্রপাণী।। ল ।। ধ্রু
আল রাধা বৃন্দাবনে কাহ্নাঞিঁ বোঁ। তোর সঙ্গে সুরতী করায়িবোঁ ।। ল।। ধ্রু
যত দুখ দেখিলোঁ তোহ্মারে। একেঁ কহিবোঁ কাহ্নেরে।।
আবসি সোঁঅরি তোর নেহে। কাহ্নাঞিঁ আসিব কুঞ্জগৃহে।। ২
যত কিছু বসে তোর মণে। নিবেদিহ কাহ্নের থানে।।
তবেঁ তোক না ছাড়িব কাহ্নে। সরূপেঁ বুইলোঁ তোর থানে।। ৩
হেন বেলে মাঝ বৃন্দাবনে। কাহ্নাঞিঁ বাঁশীত দিল সানে।।
সুণী রাধা পাইল হরিষে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
ধানুষীরাগঃ।। একতালী।।

৩১৮ – হাথে ভাণ্ড মাথে করী চান্দ

বংশীনিনাদতরলা তরলাঞ্চললোচনা
জগাদ রুচিরং রাধা ভারতীং জরতীং প্রতি।।

বড়ায়ি। হাথে ভাণ্ড মাথে করী চান্দ চন্দন চর্চ্চিত গাএ।
যমুনার তীরে কদমের তলে কে না বাঁশী বোলাএ ।। ১
রাধা। পাএ মগর খাড়ু হাথে বলয়া মাথে ঘোড়াচুলা।
ধুলাএ ধূসর নীল কলেবর সেই সে নান্দের বালা।।২
তোর সঙ্গে বড়ায়ি মথারাক জাইএ তোর সঙ্গে নিতি আসী।
গোকুলত থাকে বাছাক রাখে কথাঁ পাইলে হেন বাঁশী।। ৩
রাধা তোঞঁ মুগরী গোআলী না জাণ কাহ্নের শুধী।
তোহোর আন্তরে চতুর কাহ্নাঞিঁ পাতএ আশেষ বুধী।। ৪
আতি মনোহর বাজাএ সুসর সুণিআঁ পরাণ জাএ।
কিরূপ বাঁশী বোল বড়ায়ি কেমণে তাক বাজাএ।। ৫
বাঁশীর বিন্দত মুখ সংযোজিআঁ সপত সর বাজাএ।
নাগর শেখর নান্দের সুন্দর বড়ু চণ্ডীদাস গাএ।। ৬
দেশাগরাগঃ।। ক্রীড়া।। লগনী।। দণ্ডকঃ।।

৩১৯ – ঘরেত বাহির হইআঁ নাগর কাহ্নাঞিঁ

এতাং শ্রুত্বা রুপসরোহংসী বংশীকথামথ।
জগাদ রাধা মধুরাভারতীং জরতীং প্রতি।।

ঘরেত বাহির হইআঁ নাগর কাহ্নাঞিঁ কোণ দিগেঁ সার ণীসারে।
বাঁশীর শবদেঁ চিত্ত বেআকুল বড়ায়ি জাইবোঁ তার অনুসারে।। ১
দুখ বাঁশীর শবদেঁ গো বড়ায়ি। ঘোলে ঘরত মাথানি না বুলে।। ধ্রু
বৃন্দাবন পসিআঁ সুন্দর কাহ্নাঞিঁ বাঁশী বাএ সুললিত ছান্দে।
হার কঙ্কন বড়ায়ি সব তেআগিবোঁ সুণী তাক বুক কে বা বান্ধে।। ২
চলি জাইতেঁ চাহোঁ বড়ায়ি পাঅ নাহিঁ চলে হারায়িলোঁ সখিজন সঙ্গে।
এবে বাঁশীনাদ সুণী দেহ কাহ্ন আণী গাইল চণ্ডীদাস বাসলীচরণে।। ৩
কোড়ারাগঃ।। লঘুশেখরঃ।।

৩২০ – খনে বসী থাকে কাহ্নাঞিঁ যমুনীর তীরে

রাধায়া প্রেরিত বৃদ্ধা হরেরন্বেষণং প্রতি।
ইদং জগাধ বচনং রাধকামাধিকাতরাং।।

খনে বসী থাকে কাহ্নাঞিঁ যমুনীর তীরে।
গেন্ডুআ খেলাএ খনে গোকুল ভিতরে।। ১
কথাঁ গিআঁ চন্দ্রাবলী চাহিব কাহ্নাঞিঁ। সরূপ করিআঁ বোল আহ্মার ঠাই।। ধ্রু
খণে বৃন্দাবনে খনে বাঁশী বোলায়িতেঁ নিশ্চল বোলহ লাগ পাইব কেনমতেঁ ।। ২
হারা উদ্দেশে কত বেড়ায়িব আহ্মে। বুঢ়া মানুষকে দয়া না করহ তোহ্মে।। ৩
কাকুতী করিআঁ বোলোঁ খেমা কর মনে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে।। ৪
গুজ্জরীরাগঃ।। রুপকং।।

৩২১ – কাল কোকিল রএ কাল বৃন্দাবনে

কাল কোকিল রএ কাল বৃন্দাবনে। এবেঁ কাল হৈল মোকে নান্দের নন্দনে।।
প্রাণ আকুল ভৈল বাঁশীর নাদে। এবেঁ আসিআঁ কাহ্নাঞিঁ দরশন নাঁদে।। ১
আহ্মা উপেখিআঁ গেলা নান্দের নন্দন। তাহাত মজিল চিত না জাএ ধরণ।। ধ্রু
আগর চন্দনে বড়ায়ি শরীর লেপিআঁ। কেলি কৈল যেই বৃন্দবনত পসিআঁ।।
নাগর কাহ্নাঞিঁ সমে বিবিধ বিধানে। এবেঁ লআঁ চল বড়ায়ি সে বৃন্দাবনে।। ২
বড়ার বৌহারী আহ্মে বড়ার ঝী। কাহ্ন বিণি মোর রূপ যৌবনে কী।।
এ রূপ যৌবন লআঁ কথাঁ মোএঁ জাওঁ। মেদনী বিদার দেউ পসিআঁ লুকাওঁ।। ৩
মন্দ পবন বহে কালিনী নইতীরে। কাহ্নাঞিঁ সোঁঅরী মোর চিত নহে থীরে।।
এবেঁ আকুল কৈলে মোরে নান্দের নন্দন। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে।। ৪
রামগিরীরাগঃ।। আঠতালা।।

৩২২ – যবেঁ আহ্মা দিআঁ কাহ্নাঞিঁ

যবেঁ আহ্মা দিআঁ কাহ্নাঞিঁ পাঠায়িলে তাম্বুল ।
তখন কি বুঝিআঁ না কৈলে আণুকূল।। ১
পুনরপি কান্ধে বহিলেঁ দধিভার । তবেঁ কেহ্নে না পালিলে বচন তাহার।। ২
যখন শরতরৌদে ধরিলেক ছাতী। তখন বোলায়িলেঁ রাধা আপণাক সতী।। ৩
তোহ্মা সমে করিব যমুনাজলে কেলী। হেন বুঝী কালীয় দলিল বনমালী।। ৪
নানা ফুল আরোপিল নির্ম্মিল বৃন্দাবন। তোহ্মার বিলাস হেতু নান্দের নন্দন।। ৫
তোহ্মাত লাগিআঁ এত কৈল দামোদরে। তভোঁ তাক দোষ দেসি তোঞঁ বারে বারে।। ৬
এখন বোলহ রাধা আহ্মার মরন। এবেঁ কথাঁ পাইব আহ্মে নান্দের নন্দন ।। ৭
মোর বোল শুন রাহী ছাড় তার আশ। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাস।। ৮
মালবরাগঃ।। রূপকং।।

৩২৩ – সুসর বাঁশরি নাদ শুণিআঁ বড়ায়ি

সুসর বাঁশরি নাদ শুণিআঁ বড়ায়ি রান্ধিলোঁ যে সুনহ কাহিনী।
আম্বল ব্যঞ্জনে মো বেশোআর দিলেঁ সাকে দিলোঁ কানাসোআঁ পাণী।। ১
রান্ধনের জুতী হারয়িলোঁ বড়ায়ি। সুণিআঁ বাঁশীর নাদে।। ধ্রু
নান্দের নন্দন কাহ্ন আড়বাঁশী বাএ যেন রএ পঞ্জরের শুআ।
তা সুণিআঁ ঘৃতে মো পরলা বুলিআঁ ভাজিলো এ কাঁচা গুআ।। ২
সেইত বাঁশীর নাদ সুনিআঁ বড়ায়ি চিত্ত মোর ভৈল আকুল।
ছোলঙ্গ চিপিআঁ নিমঝোলে খেপিলোঁ বিণি জলে চড়াইলোঁ চাউল।। ৩
যমুনার তীরে কদম তরুতলে তহি বসি কাহ্ন বাএ বাঁশে।
তাক আণিআঁ বড়ায়ি রাখহ পরাণ গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
কোড়ারাগঃ।। একতালী।।

৩২৪ – আজি ভাল না শুনো মো তোহ্মার বচন

আজি ভাল না শুনো মো তোহ্মার বচন। আপণার গুণ কহ আঊলাআঁ রান্ধন।। ১
আপণার সুখে কাহ্নাঞিঁ ভ্রমে বৃন্দাবনে। লাজ না বাস বুলিতেঁ হেন বচনে।।ধ্রু
তাহাক আণিতেঁ তোহ্মে নাম্বায়িলেঁ আম্বলে।
ছোলঙ্গ চিপিআঁ রস দিলেঁ নিমঝোলে।।২
চল চাহা গিআঁ রাধা বৃন্দাবন পাশে। তথাঁ কাহ্নাঞিঁ… গাইল চণ্ডীদাসে।। ৩
গুজ্জরীরাগঃ।। রুপকং।।

৩২৫ – নিধায় কলসং কুক্ষৌ বৃদ্ধয়া

নিধায় কলসং কুক্ষৌ বৃদ্ধয়া সহ রাধিকা।
জগাম যমুনাতীরং কৃষ্ণান্বেষণতৎপরা।।

কাখেত কলসী বড়ায়ী জাওঁ ধীরে ধীরে। চতুর্দ্দিশ চাহোঁ বড়ায়ি যমুনার তীরে।।
বাঁশীনাদ সুনি কাহ্ন দেখিতে না পাও।
মেদিনী বিদার দেঊ পসিঞাঁ লুকাওঁ।। ল।। ১
চাহা চাহা আল বড়ায়ি যমুনাক তীরে। বাঁশীর শবদেঁ প্রাণ কেহ জণি করে ল।। ধ্রু
শীতল মনোহর বাঁশী কে না বাএ। ডালত বসিঞাঁ যেহ কুয়িলী কাঢ়ে রা।।
উল্লসিত হইলো বড়ায়ি তার নাদ সুণী।
না পায়িঞাঁ কাহাঞিঁ বড়ায়ি তেজিবোঁ পরাণী।। ২
যমুনার তীরে বড়াই কদমের তলে। পূর্ণ ঘিট পাতী বড়ায়ি চাহি ত মঙ্গলে।
মঙ্গল পায়িলে হয়ে চিত্তের সোআথে। তবেসি মেলিব এথাঁ প্রিয় জগন্নাথে।। ৩
এবে মঙ্গল চাহীঞাঁ দেখিলো বড়ায়ি। কাহ্নাঞিঁ পায়িবাক তাত এক চিহ্ন নাহী।।
এখণ বড়ায়ি মোরে বোলহ উপাএ। বাসলী শিরে বন্দী চণ্ডীদাস গায়ে।। ৪
কোড়রাগঃ।। রূপকং।।

৩২৬ – অনেক প্রকারে চাহিল বৃন্দাবন

অনেক প্রকারে চাহিল বৃন্দাবন। কথাহো না পায়িল কাহ্নের দরশন।।
আজি সুন্দরী রাধা চলি জায়ি ঘর। এবে মন নিবারি মোহোর বোল ধর।। ১
এখন আর কিছু উপায় নাহী।। কালী পরভাতে আসি চাহিব কাহ্নাঞিঁ।। ধ্রু
বিহাণ আইলাহোঁ হৈল সাঁঝ উপসন। গোঠে হৈতেঁ ঘর আজি আসিআঁ আইহন।।
তোহ্মাক না দেখিআঁ রোষিব আহ্মারে। না জাণো আয়ুর কিবা করএ আহ্মারে।। ২
কোপছলেঁ পরিখে তোহ্মার মতি কাহ্নে। এখন পায়িবাক তাক না কর যতনে।।
বিরহেঁ বিকল হআঁ তোহ্মার থানে। আপণে মেলিব আসি নাগর কাহ্নে।। ৩
আহ্মাত আধিক তোর কে করিবে হিত। সব খন তোর কাজে জাগে মোর চিত।।
হেন বুলী বড়ায়ি লয়িআঁ গেলী ঘর। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবর।। ৪
গুজ্জরীরাগঃ।। যতিঃ।।

৩২৭ – প্রথম পহের গোআল গেলা নিন্দ

প্রথম পহের গোআল গেলা নিন্দ। আচম্বিত বাঁশীধুনী করলি গোবিন্দ।।
উত্তরলী হয়িলী রাহী বাঁশীর নাদে। বিরহেঁ বিকলী হআঁ গোআলিনী কান্দে।।১
শ্রীরঘুনন্দন গোবিন্দ হে। অনাথী নারীক সঙ্গে নে।। ধ্রু
দুঅজ পহরে নিন্দে আকুল আইহন।
নাছে গিআঁ চাহে রাহী চমকিত মনে। কথাহোঁ না পায়িল কাহ্নের দরশনে।।২
তিঅজ পহর রাতী কোকিল রএ। বেআকুলী গোআলিনী মনত গুণএ।।
এভোঁ নাইল সে ত নান্দের পূত। কোকিলের নাদ মোকে যেহ্ন যমদূত।। ৩
চৌঠ পহরে গুণিআঁ পাঁচ সাতে। বিরহেঁ মুরুছা গেলী রাধিকা প্রভাতে।।
মুখ জল দিআঁ বড়ায়ি করায়িল চেতন। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ।।৪
ভৈরবীরাগঃ।। যতিঃ।।

৩২৮ – সুণহ সুন্দরী রাধা বচন আহ্মার

অথ রাধা পুরো বীক্ষ্য স্মরজ্বরভরাতুরাং।
চতুরা জরতী প্রাহ যমুনাগমনং প্রতি।।

সুণহ সুন্দরী রাধা বচন আহ্মার। যমুনাক যাই ছলে পাণী আণিবার।।১
তোহ্মার বচনে যমুনাক আহ্মে জাইব। তথাঁ গেলেঁ কেমনে কাহ্নাঞিঁর নাগ পাইব।। ২
তথাঁ বাঁশী চোরায়িতেঁ করিঊ যতনে।
যমুনার তীরে সব খন থাকে কাহ্নে ।। ৩
তার বাঁশী নিলেঁ হিতকি হয়িব মোর। সরূপ করিআঁ কহ পাএ ধোরোঁ তোর।।৪
বাঁশীত লাগিআঁ তোকে নান্দের নন্দন। আপুণী বুলিব আসী কাকুতীবচন।। ৫
কদমের তলে যবেঁ কাহ্ন থাকে বসী। তবেঁ তার কেনমতেঁ চোরায়িব বাঁশী।। ৬
নিন্দউলী মন্ত্রে থাক নিন্দাইব আন্ধি। তবেঁ তার বাঁশী লআঁ ঘর জাইহ তুহ্মি।। ৭
কেহো যবেঁ বাঁশী হাথে দেখিব আহ্মারে। তবেঁ তাক সম্বোধিব কমণ ঊত্তরে।। ৮
বাঁশী গুটি থুইহ তোহ্মে কলসে ভীতর। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবর।। ৯
রামগিরীরাগঃ।। একতালী।। দণ্ডকঃ।। লগনী।।

৩২৯ – যমুনার তীরে কদম তরুতলে

গত্বা রাধাযুতা বৃদ্ধা মাধবং যামুনে তটে।
নিদ্রালু বিদধে মন্ত্রৈর্ব্বংশাপহরণাশয়া।।

যমুনার তীরে কদম তরুতলে বাঅ বহে সুশীতলে।
তথাঁ বশিআঁ সে দেবরাজ পুরিল বাঁশীত শরে।।
নিদ্রাহো আসিআঁ চাপিল কাহ্নে তেঁসি না গেলা ঘরে।
নব কিশলয় শয়নে সুতিল বাঁশীত দিআঁ সিঅরে।। ১
আল। কাহ্ন নিন্দ গেলা হেলে।
দৈব নিবন্ধন খন্ডন না জাএ বাঁশী হারায়িল ভোলে।। ধ্রু
সকল সখিগনে যমুনাক গেলা আণিবারেঁ পাণী।
কদম তলাত নিন্দ গেল কৃষ্ণ দেখিল আইহনরাণী।।
ধীরে ধীরে তার নিকট গিআঁ বাঁশী চোরায়িআঁ সত্বরে।
কাখের কুম্ভত ভিথর থুয়িআঁ রাধা লড়িলা ঘরে।। ২
ঘরত গিআঁ সে চন্দ্রাবলী ভূমিত থুয়িআঁ কলসী।
উল্লসিত মনে বাহির করিআঁ পুণি পুণি চাহে বাঁশী।।
পাছে লুকায়িল রাধিকা বাঁশী যথাঁ নাহিঁ জাএ আনে।
মনত গুণিআঁ কৈল আর নাহিঁ দিব কাহ্নে ।। ৩
নিদ্রা ভাঙ্গিআঁ সত্বর হয়িআঁ কাহ্নাঞিঁ তুলীল গাএ।
চারি পাশ চাহী বাঁশী না পায়িআঁ কাঢ়িলান্ত দীর্ঘ রাএ।।
বেআকুল হয়ি বড়ায়ি দেখিআঁ বিলপিলা শ্রীনিবাসে।
বাসলীচরণ শিরে বন্দিআঁ গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
পাহাড়ীরাগঃ।। ক্রীড়া।।

৩৩০ – আনেক যতন করি আলোচিআঁ কাজে

আনেক যতন করি আলোচিআঁ কাজে। বাঁশী নির্ম্মিল আহ্মে গোকুলসামাজে।।
শোভে রতনজড়িত বাঁশী আহ্মারে। নাদে মোহো জাএ সকল সংসারে।। ল ।।১
বাঁশী হারায়িলোঁ বড়ায়ি ল আল গোকুলে আসিআঁ।
হাকান্দ করুণা করোঁ ভূমিত লোটায়িআঁ।। ধ্রু
এবেঁ কে না নীল মোহন বাঁশে। মুকুতার ঝারা পাটথোপ দুই পাশে।।
মাণিকে খঞ্চিল তথি সোনার পাতা। সুরপতী জাণে মোর বাঁশীর বারতা।। ২
বাঁশী হারায়িআঁ কাহ্ন মনে খেদ করে। তাহাক চাহিআঁ কাহ্ন বুলে ঘরে ঘরে।।
মাথাত হাথ দিআঁ কান্দন্তি গদাধরে। তাহাক শুণিআঁ রাধা পায়িল বড় ডরে।। ৩
মণত গুণিআঁ পাছে দেব চক্রপাণী। দুঈ হাথে মুছিলান্ত নয়নের পাণী।।
তবেঁ সবে কহিলান্ত বড়ায়ির থানে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে।।৪
কোড়ারাগঃ।। যতিঃ।।

৩৩১ – না কান্দ না কান্দ কাহ্নাঞিঁ

না কান্দ না কান্দ কাহ্নাঞিঁ সুণহ বচনে। কাতর কিকে হয় কমললোচনে।।
অযাত্রাঞঁ গোকুল কইলেঁ গমনে। শিয়রত বাঁশী হারায়িল তেকারণে।। ১
সুণহ সুণহ কাহ্ন না কর আতোষে। আহ্মে সব কহিআঁ দিব বাঁশীর উদ্দেশে।। ধ্রু
আহ্মার বচনে তোহ্মে কর অবধান। গোপীকুলের তোহ্মে কৈলেঁ আপমান।।
তেকারণে এবেঁ আহ্মে করি আনুমান। তেঁ সহ্মে চোরায়িল বাঁশী তোর কাহ্ন।। ২
বাঁশীর উদ্দেশ তোক কহিল মুরারী। গোপী মাঝেঁ বাঁশী তোর কেহো কৈল চুরী।।
ষোল শত যুবতীক কর যোড় হাথ। তবেঁ বাঁশী পায়িবেঁ শুন জগন্নাথ।। ৩
যোড় হাথে কাকুতি কৈল বনমালী। তা দেখিআঁ ঈসত হাসিলী চন্দ্রাবলী।।
বুঝিআঁ রাধাক বাঁশী মাঙ্গিল কাহ্নে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে।। ৪
মল্লাররাগঃ।। রূপকং।।

৩৩২ – আহ্মার বাঁশীর শবদেঁ ল

আহ্মার বাঁশীর শবদেঁ ল। আল হের রাধা খণ্ডএ সকল আপদে।
আল রাধে জার ধুনী সরগদুআরে।। ল।। ১
মোরে বাঁশীগুটি দিআঁ মেণ দাণে। আল হে রাধা বারেক রাখহ সমানে ল।। ধ্রু
বাঁশী পাইল হর গৌরী বরে। দেখিতেঁ আতি মনোহরে।
যার নাদেঁ গোকুল রহে।। ২
সুণ তোঁ আইহনের গোআলী। আকুলনা কর বনমালী।।
বাঁশী দেহ তেজিআঁ জঞ্জালে। হের তোর ধরিলোঁ আঁচলে।। ৩
সুণী কি বুলিহে বাপ নান্দে। বাঁশী হারায়িলোঁ মো নিন্দে ।।
বাঁশী দিআঁ পুর মোর আশ। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস।। ৪
বেলাবলীরাগঃ।। রূপকং।।

৩৩৩ – ঘৃত দধি দুধে বড়ায়ি পসার সাজিলোঁ গো

কৃষ্ণস্য বচনং শ্রুত্বা রাধিকাধিমতী সতী।
বেপমানতনুস্তন্বী জগাদ জরতীমিদং।।

ঘৃত দধি দুধে বড়ায়ি পসার সাজিলোঁ গো বিকে জাইতেঁ মথুরা নগরী।।
আঞ্চলে ধরিআঁ মোক কাহ্নাঞিঁ রহাএ গো।
বোলে তোঞঁ বাঁশী কৈলী চুরী।। ১
আল হের না জাণো বাঁশীর শুধী।
আল ল বড়ায়ি। ছাওয়াল কাহ্নাঞিঁ বল করে।। ধ্রু
তেজিলোঁ মো তার চীর নূপুর কঙ্কন বড়ায়ি তেজিলোঁ মো সব আভরণে।
বারে বারে কাহ্নাঞিঁ মোকে ধিকাধিক বোলে গো যত কিছু তোহ্মার কারণে।। ২
গলাত পাথর বান্ধি দহে পইসওঁ কিবা মরোঁ আনলে পুড়িআঁ।
তবেঁ বা মোঞঁ কাহ্নের ঝগড় এড়াওঁ কিবা মরোঁ খরল খায়িআঁ।। ৩
আহ্মার আন্তরে বড়ায়ি বোলহ কাহ্নরে গো চন্দ্রাবলী মাঙ্গে পরিহারে।
না কর ঝগড় বড়ু চণ্ডীদাসে গো গাইল বাসলীবরে।। ৪
ভাটিআলীরাগঃ।। একতালী।।

৩৩৪ – মাঞঁ নিষধিল পুতা কাহ্নে ল

রাধিকাবাচমাচম্য জরত্যা প্রতিপাদিতং।।
উবাচ কাতরঃ কৃষ্ণঃ বংশোৎপাদনহেতবে।।

মাঞঁ নিষধিল পুতা কাহ্নে ল।
না করিহ গোঠ সঘনে। সেহো বোল না শুণিল কানে ল।
আল হের বড়ায়ি হে। তেঁ মোর বাঁশী নিল আনে।। হে ।। ১
হরি হরি। কেনা পরাণে দুখ দিল।
আল হের। বিরহবিনোদ বাঁশী নিল হে।। ধ্রু
মোর বাঁশী ত্রিভুবনে জাণী।। খিঞ্চিল মাণিকে হিরা মণী।।
বাঁশী নিআঁ রাধা নাহিঁ মানে। সে নিল জাণো আনুমানে।। ২
বাঁশী হারাইল বনমালী। সুণী বাপ মাঞঁ দিব গালী।।
তাক ধন দিব চক্রপাণী। যে মোর বাঁশী দিব আনী।। ৩
নাহিঁ করোঁ কিছু আপরাধা। বাঁশী নিআঁ প্রাণে মারে রাধা।।
বোল তারে দিঊ মোর বাঁশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
বেলাবলীরাগঃ।। একতালী।।

৩৩৫ – বাপ নন্দ গোপ মাঅ যশোদা

কৃষ্ণস্য বচনং শ্রুত্বা জরত্যা প্রতিপাদিতং।
অথ রাধা নিরাবাধা পুন প্রাহ গদাধরং।।

বাপ নন্দ গোপ মাঅ যশোদা জগতে বিদিত তোরে।
তার পুত্র হআঁ দেব দামোদর মিছা চুরী দোষ মোরে।। ১
এথাঞিঁ শিয়রে বাঁশী আরোপিআঁ সুতিআঁ আছিলোঁ আহ্মি।
পাণী নিবারেঁ আসিআঁ সে বাঁশী নিলেহেঁ তুহ্মি।। ২
বড়ার ঝিআরী বড়ার বৌহারী আহ্মে আইহনের রাণী।
আহ্মে বাঁশী তোর চোরায়িল কাহ্নাঞিঁ মুখে আন হেন বাণী।। ৩
আহ্মে সে তোহ্মার সকল বেভার রাধা জাণোঁ ভালমতেঁ।
তেঁসি পুছি আহ্মে তোহ্মার থানে বাঁশী নিলেঁ কোণ ভিতে ।। ৪
মিছা বোল তেজ সুন্দর কাহ্নাঞিঁ সত্য কর পরমাণে।
আহ্মে যত বড় মন্দ লোক কাহ্ন তাক সখিজন জাণে।। ৫
না বোল না বোল নাগরী রাধা মোরে হেন দুষ্ট বাণী।
এথাঞিঁ আহ্মার তোহ্মে নিহ্নে বাঁশী সকল লোকে ভালেঁ জাণী।। ৬
তেজিআঁ সংশয় কর পরতয় কাহ্নাঞিঁ মোর বচনে।
কোণ কাজেঁ তোর বাঁশী হরিআঁ আমান করিব আহ্মে ।। ৭
যত আলঙ্কার বহুমূল সার সব রাধা মোর নে।
সুবণ্ণে জড়িত হিরাঞঁ রচিত বাঁশীগুটি মোরে দে।। ৮
নাহিঁ বোলোঁ তোরে কপট উত্তরে সত্য বুয়িলোঁ দামোদরে।
মোঞঁ নাহিঁ নেওঁ তোহ্মার বাঁশী ঝগড় না কর মোরে।। ৯
নটকী গোআলী ছিনারী পামরী সত্যে ভাষ নাহিঁ তোরে।
তোঞঁ নিলী বাঁশী গাইল চণ্ডীদাস দেবী বাসলীর বরে।। ১০
পাহাড়ীরাগ।। ক্রীড়া।। লগনী।। দণ্ডকঃ।।

৩৩৬ – কোণ আসুভ খনে পাঅ বাঢ়ায়িলোঁ

কোণ আসুভ খনে পাঅ বাঢ়ায়িলোঁ। হাঁছী জিঠী আয়র ঊঝঁট না মানিলোঁ ।।
শুন কলসী লই সখি আগে জাএ। বাঞঁর শিআল মোর ডাহিনেঁ জাএ ।। ১
বাঁশীত লাগিআ মোর কি ভৈল বড়ায়ি। আখায়িল ঘাআত বিষ জালিল কাহ্নাঞিঁ।। ধ্রু
কথো দূর পথে মোঁ দেখিলো সগুণী। হাথে খাপর ভিখ মাঙ্গএ যোগিনী।
কান্ধে কুরুআ লআঁ তেলী আগে জাএ। সুখান ডালত বসি কাক কাঢ়ে রাএ।। ২
ঘৃত দধি বড়ায়ি দহতে পেলায়িবোঁ। যোগিনীরূপেঁ মো দেশান্তর লইবোঁ।।
আনলকুণ্ডত কিবা তনু তেআগিবোঁ।
কাহ্নত লাগিআঁ কিবা বিষ খাইআঁ মরিবোঁ। ৩
বোলওঁ সুন্দর কাহ্নাঞিঁ করিআঁ করুণে। লোটাআ ভূমিত ধরী তোক্ষ্মার চরণে।।
কিসক কাহ্নাঞিঁ করিআঁ মোক দেহ হেন দোষে। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে।। ৪
ভাঠিআলীরাগঃ।। যতিঃ।।

৩৩৭ – কিসক নাগরী রাধা ষোড়সি কান্দনে

কিসক নাগরী রাধা ষোড়সি কান্দনে। তিরীকলা পাতি ভাণ্ডিবারেঁ চাহ কাহ্নে।।
সপ্ত লাখের মোর চুরী করি বাঁশি। না জাণো বাঁশির সুধী আপণে বোলসী।। ১
আপণা চিহ্নিআ বাঁশী দেহ মোরে আণী। যবেঁ তোর পরাণ না লৈব চক্রপাণী।। ধ্রু
সব আভরণ তোর কাঢ়িআঁ লইবোঁ। বাঁশীত লাগিআঁ তোক বান্ধিআঁ রাখিবোঁ।।
জীবার আশ যবেঁ আছএ তোক্ষ্মার। ঝাঁট করী বাঁশীগুটী দিআর আক্ষ্মার।। ২
বাঁশী পায়িঁলে কিছু না বুলিব গদাধর। আপণার সুখে রাধা জাইহ তোক্ষ্মে ঘর।।
যবেঁ বা না দিবি ভাণ্ডিবি আক্ষ্মারে। এখনী পরাণে তোর লঈবোঁ অবিচারে।। ৩
আপণা চিহ্নিআ… বাঁশী দেহ মোরে।
নহে পাঁচ আবথা করিব আক্ষ্মে তোক্ষ্মারে।।
এহা সুণী বড়ায়িতে উপজিল হাস। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাস।। ৪
আহেররাগঃ।। একতালী।।

৩৩৮ – হারায়িল তোক্ষ্মার বাঁশী তেঁসি বড়ায়িতে

হারায়িল তোক্ষ্মার বাঁশী তেঁসি বড়ায়িতে হাসী মোর বোল সুণ চক্রপাণী।
বুলী চৌর পৈসে ঘরে গিহ্রীক সত্বর করে হেন দুঠ বড়ায়ির বানী।।১
কিকে কাকুতী করসি চল কাহ্নাঞিঁ বড়ায়ি নিলে বাঁশী। নাএ।। ধ্রু
বুঢ়ী বড় আছিদরী ভাণ্ডে তোহ্মা মায়া করী তার মন বুঝিতেঁ না পারী।
দুঠ মন মিঠ দেখে আত্ম সম পর দেখে চাহা বাঁশী তাহাক মুরারী।। ২
দেখি তোহ্মা আসুখ মোর মণে বড় দুখ মো কেহ্নে হরিবোঁ তোর বাঁশী।
তোহ্মেঞিঁ বড় সিআন আপণে গুণিআঁ যান বড়ায়ি পরক বিনাসী।। ৩
আহ্মার বোল পরান তাক না করিহ আন চল তোহ্মে বড়ায়ির পাশে।
বাঁশীর তত্ত্ব কহিল আহ্মে দোষ এড়ায়িল গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
দেশবরাড়ীরাগঃ।। আঠতালা।।

৩৩৯ – তোঁ বড়ায়িক দেসি দোষে বড়ায়ি

তোঁ বড়ায়িক দেসি দোষে বড়ায়ি তোহ্মাক দোষে সব মোর করমের ফল।
দুহাঁর কপট হাসী চোরাআঁ আহ্মার বাঁশী রাধা মোর না কর বিকল।। ১
কেহ্নে আমান করসী।
আহ্মে জাণী তোহ্মে নিলেঁ বাঁশী।। নাএ ।। ধ্রু
তোরে বোলোঁ চন্দ্রাবলী আকুল মো বনমালী তোহ্মে কৈল চুরী মোর বাঁশী।
কথাঁ নিআঁ বাঁশী এড়ি মিছাঞঁ দোষসি বুঢ়ী হৃদয়ত ভয় না মানসী।। ২
কহ তোঁ আহ্মার থানে কিবা আছে তোর মনে দুখ দেহ মোরে কি কারণে।
বাঁশী দেহ একবার মাণিবোঁ উপকার এহাত না কর তোহ্মে আনে।। ৩
দৈবেঁ মোক নিন্দ পাইল তোহ্মে এথাঁ বাঁশী নিল বাঁশী দেহ না কর নিরাশ।
দেবী বাসলীচরণ করী শিরে বন্দন গাইল বড়ু চণ্ডীদাস।।৪
দেশবরাড়ীরাগঃ।। আঠতালা।।

৩৪০ – ভাদরমাসের তিথি চতুত্থীর রাতী

ভাদরমাসের তিথি চতুত্থীর রাতী। জল মাঝেঁ দেখিলোঁ মো কি নিশাপতী।।
পূণ্ণ কলসে কিবা ভরিলোঁ হাথে। তেকারণে বাঁশী চুরী দোষসি জগন্নাথে ।। ১
জাণি মেণ আল বড়ায়ি কাহ্নের কাঁহিণী। কলঙ্ক থুয়িল মোর বাঁশীচুরণী।। ধ্রু
গুরুর আসনে কিবা চাপিআঁ বসিলোঁ। জলের আখর কিবা ভূমিত লেখিলোঁ ।।
খণ্ড বিচনীরঁ বাঅ তুলী লৈলোঁ গাএ।
তেকারণে কাহ্নাঞিঁ বাঁশী চুরী দোষাএ।। ২
চান্দ সুরুজ বাত বরুণ সাখী। যে তোর বাঁশী নিল সে খাঊ দুয়ি আখী।।
যবেঁ মো চুরী কৈলোঁ হআঁ নারী সতী। তবেঁ কালসাপ খাইএ আজিকার রাতী।। ৩
এখণে আছিল বাঁশী তোহ্মার এই ঠাএ। আগু গেলী গোআলিনী সে বা লই জাএ।।
আহ্মে বাঁশী নীএ শ্রীমধুসূদন। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ।। ৪
ভাঠিআলীরাগঃ।। রুপকং।।

৩৪১ – গাই রাখিতেঁ নিন্দ গেলোঁ বাঁশী মাথে

রাধা বৃদ্ধাং ভৃশং শুদ্ধাং বিমৃষ্য কৃতকৈতবাং ।
বঞ্চনং কুরুষে যন্মে সর্ব্বং তদ্বিদিতং মম।।

গাই রাখিতেঁ নিন্দ গেলোঁ বাঁশী মাথে।
সে না বাঁশী আল রাধা নিলী কোণ ভিতে।। ১
নান্দের নন্দন কাহ্নাঞিঁ বোলোঁ মো তোহ্মারে।
কথাঁ বাঁশী হারায়িয়াঁ দোষসি আহ্মারে।। ২
এথাঞিঁ আছিল বাঁশী রাধা মোর নিলেঁ কোণ ভিতে।। ৩
বিচারিআঁ চাহ মোর দধির পসারে।
কথাঁ বাঁশী হারায়িআঁ দোষসি আহ্মারে।। ৪
না বোল না বোল রাধা হেন দুঠবাণী।
তোহ্মে বাঁশী চোরায়িলেঁ আহ্মে ভালেঁ জাণী।। ৫
চান্দ সুরুজ মোর আছে দুয়ি সাখী।
আহ্মা মিছা দোষ কাহ্ন খাইবি দুঈ আখী।। ৬
সপ্ত লাখের মোর বাঁশী করী চুরী।
আহ্রো গালী দেহ মোরে রাধিকা নাগরী।। ৭
ঘৃত দুধ নঠ মোর ঘোলের পসার।
গোহারী করিবোঁ রাঝা কংসের দুআর।।৮
তোর কংশাসুরক নাহিঁক মোর ডরে।
হের ধরিলোঁ বলে তোহোর আঞ্চলে।। ৯
মিছা চুরীদোষ দিআঁ জাইতেঁ দেহ বাধা।
আজী কৈলি আথান্তর করিবেক রাধা।। ১০
বিণি বাঁশী দিলেঁ তোর নাহিক গমনে।
এহা বুঝী কর মোরে বাঁশীগুটি দাণে।। ১১
সত্যেঁ নাহিঁ নেওঁ বাঁশী তোর গদাধর।
গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবর।। ১২
রামগিরীরাগঃ।। একতালী।। লগনী।। দণ্ডকঃ।।

৩৪২ – সুদ্ধ সুবণ্ণে শোভিত আহ্মার বাঁশী

নিপীয় রাধাবচনং নিষেধপরুক্ষরং।
বংশীমুদ্দিশ্য কংশারি র্ব্বিললাপ নিরন্তরং।।

সুদ্ধ সুবণ্ণে শোভিত আহ্মার বাঁশী নাল বিন্ধিল তার বাহিরে।।
অ প্রাণ। সুণিআঁ কি বুলিহে বলভদ্র ভাই বাঁশী হারায়িলোঁ মো শিঅরে।। ১
অ প্রাণ ধরণ না জাএ সুন্দরি রাধে। কে না নিল মোহন বাঁশী ।। ধ্রু
ঋগ যজু সাম আথর্ব্ব চারী বেদ গাওঁ মো বাঁশীর সরে।।
সুণী সব দেবগণে কি বুলিহে আহ্মারে কে না নীল বাঁশী সিঅরে।। ২
হার কেয়ূর রাধা সব মোর নে। বাঁশীগুটি আণী মোক দে।।
বনমালা আভরণ তাহা তোক দিবোঁ যে বোলসি তাহাক করিবোঁ ।।৩
তোহ্মে মোর বাঁশী নিলে সুন্দরি ধা মোর মনে হেন পড়িহাহে।।
বাসলীচরণ শিরে বন্দিআঁ । আনন্ত বড়ু গাইল চণ্ডীদাসে।। ৪
দেশবরাড়ীরাগঃ।। রুপকং।।

৩৪৩ – যমুনাক আইলোঁ নীতেঁ পাণী

যমুনাক আইলোঁ নীতেঁ পাণী। আল।
তোর বাঁশী সুধিহো না জাণী।। কাহ্নাঞিঁ হে।।
হআঁ তোহ্মে দেব চক্রপাণী। আল।
কেহ্নে বোল হেন দুষ্টবাণী।। ল কাহ্নাীঞিঁ হে।। ১
শিঅরে হারায়িআঁ তোহ্মে বাঁশী।
মিছা কেহ্নে আহ্মারে দোষসি।। ল কাহ্নাীঞিঁ ।। ধ্রু
হয়িল মোর এতেক বএসে। কেহো নাহিঁ দিল চুরীদোষে।।
সব লোক মোরে ভালেঁ জাণে। চুরিণী হয়িলাহোঁ তোর থানে।। ২
আতি রতিবেআকুল হআঁ। কমণ তিরীক বাঁশী দিআঁ।।
সাধিলেহেঁ আপণার কাজে। আহ্মা কেহ্নে দোষ দেবরাজে।। ৩
সরূপেঁ বুয়িলোঁ মো কাহ্নাঞিঁ। তোর বাঁশী আহ্মে নাহিঁ পাই।।
যাক দিলেঁ চল তার পাশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে। ৪
গুজ্জরীরাগঃ।। রুপকং।।

৩৪৪ – সুণহ আইহনদাসী তোঁ মোর চোরায়িলি বাঁশী

সুণহ আইহনদাসী তোঁ মোর চোরায়িলি বাঁশী তেঁসি তোর পাছে বেড়ায়িএ।
বাঁশীগুটী দেহ যবেঁ বড় পুন পাহ তবেঁ বাঁশী পাইলেঁ সুখেঁ ঘর জাইএ।। আল রাধা।। ১
সুণহ নটক কাহ্ন কেহ্নে কর আপমান তোর বাঁশী আহ্মে নাহিঁ নীএ।
বাঁশী যবেঁ পাইএ তবেঁ ঘসি ঘাটিএ চারি চীর করি বা পোড়াইএ ।। ২
সগ্‌র্গ মর্ত্য পাতালে চিন্তিআঁ চাহিলোঁ মনে তোঁ মোর নিআঁছিস বাঁশী।
ঊচিতেঁ গরুঅ মনে তোঞঁ মুচুকে হাসী তাক দেহ আইহনের দাসী।। ৩
পান্তরে হারাআঁ বাঁশী মোর থানে খোজসি এহা না সহে মোর পরাণে।
হেন যবেঁ বোলে আন কাটোঁ তার নাক কান তোহ্মা তেজোঁ ভাগিনা কারণে।। ৪
বাপ বসুল মোর মাঅ দৈবকী ল সব দেবেঁ আহ্মা ভালেঁ জাণে।
গোআলার ঝি তোহ্মে রাধা চন্দ্রাবলী ল ধিক বোল মোক কি কারণে ।।৫।।
আহ্মে ত আইহনদাসী আহ্মাতে চাহসি বাঁশী সুণী তোক রোষিব কাঁশে।
না বোল নিঠুর বাণী আহ্মে দেব চক্রপাণী দেহ মোরে বাঁশীর আশে।
বাসলীচরণ শিরে বন্দিআঁ ল গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৭
কহুরাগঃ।। রুপকং।। লগনী।। দণ্ডকঃ।।

৩৪৫ – ষোল শত রাধার সঙ্গিণী

নিরাসসবনেনাহং রাধায়া বিকলীকৃতঃ ।
বংশলাভায় বৃদ্ধে ত্বমুপায়ং বদ সংপ্রতি।।

ষোল শত রাধার সঙ্গিণী। আল। তার থান চলহ আপুণী। ।। ল কাহ্নাঞিঁ ।
একেঁ একেঁ কর যোড়হাথে। আ তবেঁ বাঁশী পাইবেঁ জগন্নাথে।। ল কাহ্নাঞিঁ।। ১
কত কান্দ নেতে মোছ লোহে। আল।
আন্তর পোড়এ মোর নেহে।। ল কাহ্নাঞিঁ ।। ধ্রু
আহ্মে হরি ত্রিভুবনে জাণী। আল। কেমণে করিব যোড়হাথ ।। ল বড়ায়ি।। ২
এত বড় মোর আপমাণে। আল। সুণি হইব রাধার মণে।। ল কাহ্নাঞিঁ ।। ৩
যোড়হাথে বুলিহ বচনে। সুখী হইব রাধার মণে।। ল কাহ্নাঞিঁ।।৩
কেহ্নে তোঞঁ কাজ না বুঝসি । তণ্ডী কয়িলেঁ না পাইবেঁ বাঁশী।। ধ্রু
যোড়হাথ করিলেঁ বড়ায়ি। তবেঁ কি দিবেক বাঁশী রাহী।।
পাছে জণি লোক ঊপহাসে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে ।। ৪
হের গিআঁ তোহ্মার বচনে। হাথ যোড় করে দেব কাহ্নে।। ধ্রু
গুজ্জরীরাগঃ।। যতিঃ।। চিত্রকং।। লগনী।।

৩৪৬ – মেঘ যেহ্ন আষাঢ় শ্রাবণে

প্রমুক্তকাকুবচনং কৃতসংঘতলং পুরঃ ।।
বিলোক্য মাধবং বৃদ্ধা রাধিকামিদমাদধে।।

মেঘ যেহ্ন আষাঢ় শ্রাবণে। ঝরে তার পাণী নয়নে গো।।
কান্দিআঁ মলিন কৈল মুখে। কত তার দেখিবোঁ দুখে গো।। ১
বাঁশির শোকেঁ চক্রপাণী। এবেঁ তাক বাঁশী দেহ বাঁশী আনী।। ধ্রু
যোড়হাথ কৈল দেব কাহ্নে। এবেঁ তাক বাঁশী দেহ দাণে।।
নাহিঁ পিন্ধে উত্তম বসনে। শরীরে দুবল ভৈল কাহ্নে ।। ২
মোর বোল সুণ আবগাহী। কাহ্নের পিরিতী কর রাহী।।
দেহ বাঁশী কাহ্নের হাথে। তুষ্ট হঊ দেব জগন্নাথে।। ৩
যেবা রাধা আছে তোর মণে। কাহ্নাঞিঁকে বোল সে আপণে।।
তাক করিব কাহ্নাঞিঁর হরিষে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
ধানুষীরাগঃ।। একতালী।।

৩৪৭ – বুলিতেঁ নারিএ তোর চরিতে

বৃদ্ধাবচনমাকর্ণ্য রাধা প্রাহ গদাধরং।
সাদরং সপ্রবন্ধঞ্চ পঞ্চবাণশরাতুরা।।

বুলিতেঁ নারিএ তোর চরিতে। খণেকেঁ তোর হএ আন চিতে।।
এবেঁ করিলেঁ তোহ্মে যোড়হাথ। কাজ বুঝিআঁ দেব জগন্নাথ ।। ১
সরূপেঁ বোলহ বড়ায়ির থানে। মোর বোল না করিবেঁ কি আনে।। ধ্রু
আহ্মাক এড়িআঁ গেলা বৃন্দাবনে। বাঁশী বাজায়িলেঁ তোহ্মে থানে থানে।।
তাক শুণী ভৈলোঁ বেআকুলী। তোর বিরহে প্রিয় বনমালী।। ২
এভোঁ কাহ্নাঞিঁ থীর কর মন। কভোঁ না লঙ্ঘিহ মোর বচন।।
তবেঁ মেলিবেক বাঁশী তোহ্মারে। সরূপেঁ তোক বুইলোঁ দামোদরে।। ৩
কভোঁ কি না দিবে আহ্মাক দুখে। এহা বোল আপণ মুখে।।
তবেঁ কহিবোঁ মো বাঁশী ঊদ্দেশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।। ৪
শৌরীরাগঃ।। রুপকং।।

৩৪৮ – মন দিআঁ সুণ বড়ায়ি বচন আহ্মার

রাধিকাবাচমাচম্য প্রমোদভরমন্থরঃ।
বংশীলাভত্বরাবেশাজ্জগোদ জরতীমিদং।।

মন দিআঁ সুণ বড়ায়ি বচন আহ্মার। সরূপ কহিবোঁ তোর থানে।। বড়ায়ি গো।।
যে বচন বুইল রাধা তোহ্মার গোচরে
তাক মোঞঁ না করিবোঁ আনে।। বড়ায়ি গো ।। ১
পরাণ বড়ায়ি তোহ্মে বোলহ রাধারে। বাঁশী দিআঁ জীআঊক মোরে।। ধ্রু
যত কিছু করিলোঁ মোঞঁ রাধার আতোষে। তার ফল পাইলোঁ নিজ দোষে।।
মণে গুণিআঁ এবেঁ কৈলোঁ মোঞঁ সার। না লঙ্ঘিব বচন রাধার ।। ২
তোহ্মে জাণহ বড়ায়ি মোহোর বেভার। অবিচল বচন আহ্মারে।। ৩
আহ্মার চরিত্র বিদিত তোর থানে। আর তাক কেহো নাহিঁ জাণে।।
রাধার বচন আহ্মে পালিব আবসে। বাসলী বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে।। ৪
দেশাগরাগঃ।। রুপকং।।

৩৪৯ – কাহ্নাঞিঁ তোর কথা শুণী বড়ায়ির মুখে

কৃষ্ণস্য বচনং শ্রুত্বা জরত্যা প্রতিপাদিতং।
মধুরং মাধবং প্রাহ রাধিকাধিমতী সতী।।

কাহ্নাঞিঁ তোর কথা শুণী বড়ায়ির মুখে।
কহিতেঁ না পারোঁ তাক যত পাইলোঁ দুখে ।। ১
তোহ্মার বিরহে মোঁ হয়িলোঁ বেআকুলী।
তে কারণে তোর বাঁশী নিলোঁ বনমালী।।২
রাধা। বিরহে আকুলী ভৈল আপণার দোষে।
আহ্মার বাঁশী তোঁ চোরায়িলি রোষে।। ৩
আহ্মার খাঁখার যবেঁ না করহ তোহ্মে।
তবেঁ কি বিরহ দুখ তোক দিএ আহ্মে।।৪
কাহ্নাঞিঁ। যে কারণে খাঁখার তোহ্মার মোঞঁ কৈলোঁ।
তে কারণে বিরহ আনলে পুড়ি মৈলোঁ।। ৫
আর কভোঁ চঞ্চল না করিহ মনে।
মোক রোষ না করিহ কাহারো বচনে।। ৬
তোক প্রতি মোর মণে নাহিঁ কিছু রোষে।
এহা তত্ব করী জাণী দেহ মোরে বাঁশে ।। ৭
বাঁশী দিআঁ কর মোর মন সোআথ।
সহজেঁ তোহ্মাক সুখী হইব জগন্নাথ।। ৮
বিরহে আকুলী যবেঁ চাহোঁ মো তোহ্মারে।
তখন আসিহ তোহ্মে আতি অবিচারে।। ৯
হের ভাল মতেঁ চাহি নেহ কাহ্নাঞিঁ বাঁশী।
আজি হৈতেঁ চন্দ্রাবলী হৈল তোর দাসী ।। ১০
সব দোষ মরসিল তোর চন্দ্রাবলী।
আর তোর অহিত না করে বনমালী।। ১১
হেন মতেঁ বাঁশী পাআঁ হরষিত মণে।
কালী নই তীরে হৈতেঁ ঘর গেলা কাহ্নে ।। ১২
পাছে রাধিকা লআঁ বড়ায়ি গেলী ঘর।
গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবর।। ১৩
রামগিরীরাগঃ।। বিচিত্র।। লগনী।। একতালী।। দণ্ডকঃ।।