অজ্ঞানতিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জনশলাকয়া।
চক্ষুরুন্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।।

প্রথমে বন্দিব শ্রীশচীর নন্দন।
যাহার কৃপায় জীব পাইল প্রেমধন ।।
নিত্যানন্দ গোসাঞি বন্দো অবধৌত বেশে।
পাষণ্ডদলন যার নাম সর্বদেশে।।
অদ্বৈত গোসাঞি বন্দো সাবধান মনে।
যাহার কৃপায় পাইল চৈতন্য চরণে।।
শ্রীবীরভদ্র গোসাঞির চরণের রেণু।
জীবনে মরণে আর নাহি তুয়া বিনু।।
গঙ্গার চরণপদ্ম করি শিরোপরি।
শ্রীগুরু চরণ ধূলি ভরসা আমারি।।
বন্দিব সে গুরুদেব আনন্দিত হঞা।
চক্ষুদান দিল মোর অন্ধক দেখিয়া।।
কৃষ্ণ বিজ নাম মন্ত্র শ্রবণেতে দিল।
নামমন্ত্র চন্দ্র সূর্য হৃদয়ে পশিল।।
অজ্ঞান উত্তম যত অন্ধকার ছিল।
নামমন্ত্র চন্দ্র সূর্যে সব নাশ কৈল।।

সর্ব বস্তু সম্পূর্ণ ধন গুরুর চরণ।
যাহার আজ্ঞাতে পাই বৈষ্ণব রত্ন ধন।।
সাবধান মনে বন্দো বৈষ্ণব গোসাঞি।
জীবনে মরণে তুয়া আর কেহো নাই।।
এক নিবেদন করি শুন ভক্তগণ।
যেমতে পাইবে শ্রীকৃষ্ণ প্রেমধন।
কৃষ্ণ প্রাপ্তির কথা হয়ে বহুদূর।
প্রাপ্তির উপায় তাহা নিবেদি প্রচুর।।
বালক কালে স্বপ্নে সাধু আজ্ঞা পাঞা।
মন মধ্যে সিদ্ধ হইল কৃষ্ণ গুণ গাঞা।।
এবে ত পৌগণ্ড আসি উপসন্ন হয়।
আচম্বিতে অন্য কথায় কৃষ্ণ গুণ গায়।
অন্যান্য বালক সঙ্গে হস্তে তালি দিয়া।
কৃষ্ণ গুণ গায় সবে নাচিয়া নাচিয়া ।।
এবে ত কৈশোর আসি হয় উপস্থিত।
নানা দুর্দৈব তবে পড়ে আচম্বিত ।।
মাতা পিতা স্থানে তবে (দৃঢ়) আজ্ঞা লয়্যা।
বৈষ্ণব গুরু করে দূর পথে যাঞা।।
যদি তারে আজ্ঞা নাঞি দেই মাতাপিতা।
মনমধ্যে সাধু আজ্ঞা স্মরে স্বপ্ন কথা।।
মাতাপিতা আজ্ঞা তবে কিছুই না মানে।
ক্রোধে উপবাস করি রহে প্রিয় স্থানে।।
এই মত কতোদিন বিবাদ করিঞা।
উপাসনা করে মাতা পিতাকে ছাড়িঞা।।

সাধুসঙ্গ হইতে তবে শ্রদ্ধা ভক্তি হয়।
শ্রদ্ধা নইলে তবে সাধুসঙ্গ নয়।।
এই গুপ্ত কথা বুঝিব ভক্ত ঠাঞি।
শ্রীগুরু প্রসাদে এই সব ধন পাই।।
তবে তার দেহে কৃষ্ণ বীজাঙ্কুর হয়।
উপশাখা যত হয় তারে করে ক্ষয়।।
উপশাখার অর্থ (কহি) শুন সর্বজন।
জীবহিংসা কুটিনাটি নিষিদ্ধ আচরণ।।
লাভ পূজা প্রতিষ্ঠাদি সকলি ছাড়িয়া।
মনের সহিতে কায় বাক্য ঘুচাইঞা।।
রিপু ভয় দেবাদেবী পূজা করে মনে।
গুরুকৃষ্ণ ভক্তি তারে ছাড়ে সেই ক্ষণে ।।
আপনার মন মধ্যে ছাড়ি এই সব ।
তাবে তার মন যদি হয়েত বৈষ্ণব।।
কৃষ্ণগুণ তার দেহে তিন ত প্রকার।
সত্ত্বগুণ রজগুণ তমোগুণ আর।।
সত্ত্বগুণ হইলে তবে কৃষ্ণ প্রেম পাই।
রজ তমে স্বর্গ পাইলে তাহা নাহি চাই।।
সেই সত্ত্বগুণ হয় তিন ত প্রকার।
কায়িক বাচিক (এই) মানসিক আর।।
মানসিকে কৃষ্ণ পাই কায় বাক্যে নাই।
সেই মানসিক গুণ প্রকারেতে দুই ।।
দুই মত মানসিক সমান নিবন্ধ।
নির্মলেতে কৃষ্ণ পাই না ছুই সম্বন্ধ।।

সেই নির্মল হয় দুই ত প্রকার।
সদম্ভ বুঝি এক নির্দন্ত (সে) আর।।
নির্দম্ভে কৃষ্ণ পাই সদম্ভে অতি দূর।
তবে হৃদয়ের মধ্যে আগে প্রেমাঙ্কুর।।
তবে ত জানিতে চাহি হরি নামের তত্ত্ব।
কিবা বস্তু বটে সেই কেমন মহত্ত্ব।।
বত্রিশ অক্ষরে (যে) হইল ষোল নাম।
বত্রিশ অক্ষর আর হরে কৃষ্ণ নাম।।
না জানিয়া নাম লইলে স্বর্গ বাস হয়।
কৃষ্ণের নিকটে সেই যাইতে না পায়।।
সেই হরিনামের অর্থ শুন সর্বজন।
য়ে জানিলে পাই শ্রীকৃষ্ণ প্রেমধন।।
বাদার্থ করিঞা পুছে জানিবার তরে।
শুনিঞা ভক্তের মুখে সাধয়ে অন্তরে।।
হরে কৃষ্ণ নাম হইল প্রকারে ত তিন।
যেই তিন ভাব কৈলে প্রেম গন্ধ হীন।।
হরি নাম বুঝিব (এ) শিব অভিধানে।
সাবধানে শুনিতে চাই ইহার প্রমাণে।।
তবে সাধু কহে ভক্ত ইহ বাক্য নয়।
হরের্নাম শ্রীরাধিকা দৃঢ় নাম কয়।।
কৃষ্ণ হরি রাধা(র) হরে নাম হইল।
তবে কহে মহাশয় সমাধান পাইল।।
তবে পুছে আরবার শুন মহাশয়।
কৃষ্ণ রাম নামের কিবা ফল হয়।।

তবে সাধু কহে শুন(হ) ভক্ত জন।
কৃষ্ণ নাম সাক্ষাৎ কৃষ্ণ ব্রজেন্দ্র নন্দন।।
তবে কহে সেই রাম তিন মত হয়।
বলরাম ভৃগুরাম শ্রীরাম কহয়।।
সাধু কহে তিন রামের কোন রাম নয়।
রাম শব্দে রমণ মনে এই হয়।
রাধাকৃষ্ণের রমণ এই ত সাধন ।
এমত জানিলে পাই কৃষ্ণের চরণ।।
এই ত পরম ফল পরম পুরুষার্থ।
যার আগে তৃণ তুল্য তিন পুরুষার্থ।।
অহৈতুক বলি তবে তার নাম কয়।
অহৈতুক ভক্তি হৈলে শুদ্ধ ভক্তি হয়।।
ভক্তি মুক্তি (আদি) বাঞ্ছা যদি মনে হয়।
সাধন করিলে প্রেম উৎপন্ন না হয়।।
তথাহি–ভক্তি মুক্তি স্পৃহা যাবৎ পিচাসি হৃদি বর্ত্তেত।
তাবৎ ভক্তি সুখ সাধ্য কথো সুখদয়ো ভবেৎ।।
সাধন ভক্তি হইতে রতি উপজয়।
রতি গাঢ় হইলে তবে প্রেম নাম কয়।।
প্রেম রিপু ক্রমে ক্রমে সেহ প্রলয়।
রাগানুগার ভাব মহাভাব কয়।।
যৈছে ইক্ষু বীজ রস গুড় খণ্ড সার।
সর্করা সিতা মিশ্রি উত্তম মিশ্রি আর।।*
*ইহার পর অতিরিক্ত —
(এই সব কৃষ্ণ ভক্তি রসে স্থাই ভাব।
স্থাই ভাবে মিলে যদি বিভাব অনুভাব।।-(ক)
এই সব সিদ্ধান্ত ভক্তি রসের স্থাই ভাব।
স্থাই ভাব মিলে যদি ভাব অনুভাব।।-(গ)

সাত্ত্বিক ব্যভিচারী ভাবের মিলনে।
কৃষ্ণ ভক্তি রস হয় অমৃত আস্বাদনে।।
যৈছে দধি সিতা ঘৃতে মরিচী কর্পূর।
মিলনে রসাল হয় অমৃত মধুর।।
আলম্বন উদ্দীপন দুই ভাব করি।
রাগ বৈধি ভাব ইবে কহিব বিচারি।।
রাগাত্মিকা হইলে পাই কৃষ্ণ প্রেমধন।
সাধন ভক্তিতে পাই কৃষ্ণ প্রেমধন।।
সাধন হয়েন যৈছে দুই ত প্রকার।
এক বিধি ভক্তি হয়ে রাগানুগা আর।।
বৈধি বলিয়ে যার রাগ দেহে নাই।
বৈধি বলিয়ে তারে সর্ব শাস্ত্রে গাই।।
এই বৈধি রাগে ভক্তি কিছু নাহি হয়।
রাগানুগা ভক্তি বলি সর্বশাস্ত্রে কয়।।
নিত্য সিদ্ধ কৃষ্ণ প্রেম সাধ্য কভূ নয়।
শ্রবণাদি শুদ্ধ চিত্তে করয়ে উদয়।।
গুরু পাদাশ্রয় শিক্ষা গুরুর সেবন।
চৌষট্টি অঙ্গ ভক্তি আগে করিব সাধন।।
এক অঙ্গ সাধে কেহ সাধে বহু অঙ্গ।
নিষ্ঠা হইলে উপজয় প্রেমের তরঙ্গ।।
এক অঙ্গে সিদ্ধ পাইল বহু ভক্তগণ।
অম্বু রিষি আদি ভক্তের বহু অঙ্গ সাধন।।
বিধি ধর্ম ছাড়ি ভজ কৃষ্ণের চরণ।
নিষিদ্ধ পাপাচারে কভু নহে মন।।
অজ্ঞানে (তে) যদি হয় পাপ উপস্থিত।
কৃষ্ণ তারে শুদ্ধ করে না করে প্রাশ্চিত্ত।।

অহিংস(ক) অমানিনে বুলে ভক্ত সঙ্গে।
জ্ঞান বৈরাগ্য ভক্তের কভু নহে ভঙ্গে।।
বিধি ভক্তি সাধনের কৈল বিবরণ।
রাগানুগা ভক্তের শুনহ লক্ষণ।।
রাগাত্মিকা ভক্তের মুখ্য ব্রজবাসি জন।
তার অনুগত ভক্ত রাগানুগা নাম।।
ইষ্টে গাঢ় নিষ্ঠা এই স্বরূপ লক্ষণ।
ইষ্টে আবিষ্টতা এই তটস্থা লক্ষণ।।
অতঃপর কহি রাগ ভক্তের কথন।
দীপ্তরূপে সর্বথা আছেন ব্রজজন।।
রাগাত্মিকা ভক্তের সম নাহি লেখি।
রাগানুগা কহি তার অনুগত দেখি।।
অনুগত বিনে কার্য সিদ্ধ নাহি হয়।
অতএব রাগাত্মিকা করিঞা আশ্রয়।।
রাগাত্মিকা ভক্তি বিনে ব্রজপ্রাপ্তি নাঞি।
এই সব গ্রন্থে লেখে শ্রীরূপ গোসাঞি।।
নিত্য সিদ্ধা পরিবার রাগাত্মিকা কহি।
শ্রুতি মুনি রাগানুগা কহিব বিচারি।।
কামরূপা আর সম্বন্ধ রূপা হয়।
গোপিকার প্রেম তার কাম নাম কয়।।
কামরূপা কহি তার স্বরূপ লক্ষণ।
সম্ভোগের প্রায় মাত্র করয়ে ভজন।।
আপ্ত কাম গন্ধ হীন কাম কৃষ্ণ সুখে।
রাগানুগাকে কামী বলে না জানে মূঢ় লোকে।।

কাম গায়ত্রী দীক্ষা (এ) কাম রস হয়।
সেই কাম রতি তবে তিন মত কয়।।
সামর্থা সাধারণী সমঞ্জসা তিন।
সামর্থা কহি (এ) কৃষ্ণ সুখেতে প্রবীণ।।
গোপী নিত্য সিদ্ধা সামর্থা সদা দীপ্ত করে।
তার ভাব প্রেম চেষ্টা কে কহিতে পারে।।
অপূর্ব মাধুরী প্রাপ্তি গোপিকার প্রেম।
নির্মল উজ্জ্বল রস যেন দগ্ধ হেম।।
সাধারণী সমঞ্জসা আপ্ত কামে সুখী।
নায়কের সুখ গন্ধ কিছুই না লেখি।।*
*ইহার পর অতিরিক্ত —
(কাম সম্বন্ধ দুই প্রেমের স্বরূপ।।
নিত্যসিদ্ধা স্থাই সদা হয়ে নিত্যরূপ।।)-(ক)
কামগন্ধ দুই প্রেমের স্বরূপ।
নিত্য সিদ্ধ শ্রেয় সদা হয় নিত্যরূপ।।-(গ)
কামানুগা আর সম্বন্ধানুগা হয়।
এই দুই রাগানুগা প্রেমের আশ্রয়।।
রাগাত্মিকা ভজনের সম্বন্ধ অধিক্যরী।
তার অনুগত হব সে রূপ আচরি।।
তবে তার কামানুগা সম্বন্ধ নিশ্চয়।
গোপী অনুগত বিনে ঐছে ভাব নয়।।
গোপীদের প্রেম কথা ভজন আচরি।
ভাব শুদ্ধ হইতে পায় ব্রজলোকপুরী।।

প্রেমসেবা পরিপাটি করে নিজ সুখে।
রাধাকৃষ্ণলীলাকথা শুনে সখী মুখে।।*
*ইহার পর অতিরিক্ত–
(বৃন্দাবনে কুঞ্জসেবা অত্যন্ত দুর্গম।
অন্যভাবে নাহি তার প্রাপ্তির কারণ।।)
রাধাকৃষ্ণ প্রাপ্তি লোভ সদা চিত্তে আশা।
শাস্ত্র যুক্তি নাঞি মানে না করে জিজ্ঞাসা।।
রাগাত্মিকা ব্রজবাসী দ্বিবিধ প্রকার।
কামরূপা এক (সে) সম্বন্ধ রূপা আর ।।
কামরূপা গোপীগণ প্রেমরূপা কহে।
এমন করিলে মাত্র ব্রজ প্রাপ্তি হয়ে।।
রাগাত্মিকার অনুগা হইব অনুরাগে।।
অন্য অভিলাষ কথা চিত্তে নাহি লাগে।।
অপিক্ষার কর্ম যাতে ভক্তি হয় হানি।
শাস্ত্রবিধি বাক্য তাহে শত্রু প্রায় জানি ।।
রাগ ভক্তি নিরন্তর শুনি যার স্থানে।
শিক্ষাগুরু বলিঞা বলিব সেই জনে।।
শাস্ত্রবিধি বাকাদি শুনিল বিস্তর।
কিছু নাঞি মানে চিত্তে রাগেতে তৎপর।।
অন্যকথা স্বাদ নাঞি লাগে রাগ বিনে ।
রাগ ভক্ত জনারে দুর্লভ করি মানে।।
শ্রুতিগণ গোপিকার অনুগত হঞা।
বৃন্দাবনে ক্রীড়া কৈল গোপীদেহ পাঞা।।
মুনিগণ সাধন করিল এই মতে।
বৃন্দাবনে বিহরিলা শ্রীকৃষ্ণ সহিতে।।
গোপীকার অনুগত ছাড়িঞা ভজন।
ঐছে ভাব বিনে না মিলে বৃন্দাবন।।

অনুগত ছাড়িঞা (যে) শাস্ত্রা(দি) আচরে।
গোপিকার প্রসাদ না পায় কোন কালে।।
অন্যের কি কথা লক্ষ্মী করিলা ভজন।
ঐছে ভাবে না পাইল ব্রজেন্দ্র নন্দন।।
রাগানুগা ভজনে মিলয়ে কুঞ্জসেবা।
দেখিব দুঁহার রূপ ভরি রাত্রি দিবা।।
সর্ব বাঞ্ছা পূর্ণ হব সখির সহিতে।
গান বিচার কথা শুনিব ভালমতে।।
সাধুগণ (করে) রাধাকৃষ্ণ গুণ গান ।
তদ্ভাবে ভাবিত তবে করি এক মন।।
যে রসে হইব গান সেই রসে মন।
সেই আরোপিয়া আমি করিব ক্রন্দন।।
অভিসার গান যদি হয় রাধিকার।
তার সঙ্গে থাকিব আশ্রয় হঞা তার।।
কুঞ্জে অভিসার যদি কৃষ্ণ করেন রঙ্গে।
রঙ্গে থাকিতে চাহি রাধিকার সঙ্গে।।
তুরিত মিলন হৈলে করিব দর্শন।
বিলম্ব হইলে তার করিব অন্বেষণ।।
বাসক শয্যায় যদি শুনিয়ে শ্রবণে।
কুঞ্জে থাকিতে চাহি রাধিকার সনে।
কৃষ্ণ না আইলে কহি উৎকণ্ঠিতা বচন।
উৎকণ্ঠিতায়ে তার সঙ্গে করিয়ে ক্রন্দন।।
সংকেত স্থানে (তে) কেহো করয়ে গমন।
এক ব্যক্তি না আইলে বিপ্রলব্ধায় মন।।
খণ্ডিতা বলিয়ে যদি নায়কের অঙ্গে চিহ্ন।
নায়ক দেখিলে তারে করে ভিন্ন ভিন্ন।।

কলহান্তরিতা কহি কলহ হইলে।
দেখা শুনা আছে সঙ্গ হয়ে মান গেলে।।
প্রোষিতভর্ত্তৃকা কহি সুদূর গমন।
স্বাধীন ভর্ত্তৃকায়ে করে নায়িকা সেবন।।
আপ্ত রস গনে যদি হয় উপস্থিত।
তদ্ভাবে ভাবিত তবে করিবেক চিত্ত।।
আশ্রয় আলম্বন উদ্দীপন কহি যে।
সাধুশাস্ত্র গ্রন্থ এই তিন মত হয়ে।
বিশেষ সামান্য দুই শুনহ বচন।
সামান্য আশ্রয় গুরু বৈষ্ণব আলম্বন।।
রাধাকৃষ্ণ উদ্দীপন সামান্য বিচার।
আশ্রয় হইব বিষয় চরণ রাধার।।
আলম্বন কৃষ্ণ কথা গ্রন্থ দরশন।
বংশীধ্বনি পুষ্পোঘ্রাণ দর্শন উদ্দীপন।।
শিখিপুচ্ছ গহন মেঘাদি দর্শনে।
দেখিলে শুনিলে মাত্র হয় উদ্দীপনে।।
শুন শুন আরে ভক্ত করি নিবেদন।
অপরাধ না লইবে কিছু করিল বর্ণন।।
এই সব সাধনে পাই শ্রীবৃন্দাবন।
এমন করিলে সখি মধ্যে একজন।।
পূর্বাপর যদি হয়ে সব মন্দ।
তথাপিহ এই গ্রন্থে বৈষ্ণব আনন্দ।।*
*ইহার পর অতিরিক্ত –
(বৈষ্ণব কৃপাতে হেন সাধন করিলে।
অবশ্য অবশ্য তার রাধাকৃষ্ণ মিলে।। )

শ্রীলোকনাথ প্রভুর পদধূলি আশ।
ভক্তি উদ্দীপন কহে নরোত্তম দাস।।

।।ইতি ভক্তি উদ্দীপন গ্রন্থ সম্পূর্ণ।।

(সা. প. ৪৭৭হইতে আদর্শ পাঠ গৃহীত)