রাধার সখীদের ভাবকে কি নামে অভিহিত করা যাবে ? কোন কোন লীলায় সখীরা দাসীত্ব করছে, কোন কোন লীলায় তারা রাধাকৃষ্ণের নর্মসখী, আবার কোন কোন লীলায় শ্রীকৃষ্ণের প্রতি এদের কান্তাভাব ৷
সখীর কৃত্য সম্বন্ধে রসশাস্ত্রে বলা হয়েছে—
মিথঃ প্রেমগুণোৎকীর্তিস্তয়োরাসক্তিকারিতা ৷
অভিসারো দ্বয়োরেব সখ্যাঃ কৃষ্ণসমর্পণম্ ৷৷
নর্মাশ্বাসনং পথ্যঞ্চ হৃদয়োদ্ঘাটপাটবম্‌ ৷
ছিদ্রসংবৃতিরেতস্যাঃ পত্যাদেঃ পরিবঞ্চনা ৷৷
শিক্ষাসংগমনকালে সেবনং ব্যজনাদিভিঃ ৷
তয়োর্দ্বয়োরুপালম্ভঃ সন্দেশপ্রেষণং তথা ৷৷
নায়িকাপ্রাণসংরক্ষা প্রযত্নাদ্যাঃ সখীক্রিয়াঃ ৷

কৃষ্ণদাস কবিরাজ বলেছেন —

সখীর স্বভাব এক অকথ্য কথন ৷
কৃষ্ণসহ নিজ লীলায় নাহি সখীর মন ৷৷
কৃষ্ণসহ রাধিকার লীলা যে করায় ৷
নিজ কেলি হইতে তাহে কোটি সুখ পায় ৷৷

সখীদের আত্মেন্দ্রিয়-প্রীতি ইচ্ছা নয়, কৃষ্ণেন্দ্রিয়-প্রীতি ইচ্ছা, অতএব এটা কাম নয়, প্রেমই ৷ কিন্তু সখীদের ভাবকে পুরো কান্তাভাব বলা যায় না ৷ ইহা দাস্যভাবও নয় ৷ ‘তয়োর্দ্বয়োরুপালম্ভঃ’ দাস্যভাবের বিরোধী ৷ অতএব একে সখ্যভাবই বলতে হয় ৷ সখাদের ভাবও সখ্যভাব— সখীদের ভাবও সখ্যভাব ৷ তবে সখীদের ভাব সখাদের ভাবের চেয়ে ঢের বেশী উচ্চে অবস্থিত ৷ সখীভাব যেন কান্তভাব ও সখ্যভাবের মাঝামাঝি স্তর ৷