পদাবলী-সাহিত্যে অলৌকিক ব্যঞ্জনা দিয়ে গিয়েছেন শ্রীচৈতন্যদেব কীর্তনসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে ৷ নামকীর্তন শ্রীচৈতন্যের আগেও ছিল ৷ রসকীর্তন বা পদাবলী-কীর্তনের প্রবর্তক শ্রীচৈতন্যদেব এবং তাঁর সহযোগিগণ ৷ এই কীর্তনসঙ্গীতের অভিনব দেশকালাতীত সুর ও কালের আকুতি পদাবলীকে যে লোকোত্তর ব্যঞ্জনা দান করে— তা আমাদের চিত্তকে এই লৌকিক জগৎ থেকে অনেক ঊর্ধ্বে তুলে ধরে ৷ কীর্তনসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে আমরা যদি পদাবলী উপভোগ করি, তা হলে আমরা যে কবিত্বের আস্বাদ লাভ করি, তা সাধারণ রোমাণ্টিক কবিতায় পাই না ৷ এটি ছাড়া, কীর্তনসঙ্গীতের আবেষ্টনী, লক্ষ্য, উপলক্ষ ও গৌরচন্দ্রিকার দ্বারা প্রারম্ভ— সমস্ত মিলিয়ে আমাদের চিত্তে একটা আধ্যাত্মিক ব্যঞ্জনার সৃ্ষ্টি করে ৷ তা ই পদাবলীতে সঞ্চারিত হয়ে তার আস্বাদ্যমানতাকে লোকাতীত করে তোলে ৷
কীর্তনসঙ্গীত শুনতে শুনতে আমাদের মত অভক্ত লোকদেরও দেহে ও মনে যে সাত্ত্বিক রসের সঞ্চার হয় তা ব্রহ্মস্বাদজনিত নয় বটে, তবে ‘ব্রহ্মস্বাদসহোদরের’ উন্মেষজনিত বটে ৷