পদাবলীর কাব্যরূপ এক-একটি লীলা অবলম্বনে যেন এক একটি স্বতন্ত্র কাব্যই বিরচিত হয়ে আছে ৷ এই কাব্যের রচয়িতা একজন নয়, অনেকে ৷ পদসঙ্কলয়িতারা ও কীর্তনীয়ারা এই কাব্যগুলির সম্পাদক ৷ বহু জনের মিলিত কণ্ঠের উদ্‌গীত সঙ্কীর্তনের মত বহু জনের নিবেদিত রসগীতিকার সমাবেশে এই কাব্যগুলি রচিত ৷ ভিন্ন ভিন্ন কবির পদ নিয়ে রসের ক্রম অনুসারে এমন করে পালাগুলি সাজানো হয়েছে, যাতে এক-একটি পালা এক-একটি কাব্যে পরিণত হয়েছে ৷ পদামৃত-সমুদ্র, পদকল্পতরুর মত যে সব সংগ্রহ-পুস্তকে ব্রজলীলার সব পালাগুলি সুবিন্যস্ত হয়েছে, সেগুলি ভাগবতের মত এক-একখানি মহাকাব্যের রূপ ধারণ করেছে ৷ একভাবনিষ্ঠ লীলারসে বিভাবিত অভিন্নহৃদয় কবিদের প্রয়াসে ও সমবেত সাধনায় এই মহাকাব্যের সৃষ্টি ৷
বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস, গোবন্দিদাস, জ্ঞানদাসের মত কবিরা ব্রজের প্রত্যেক লীলাঙ্গেরই পদ রচনা করেছেন ৷ ফলে, তাঁদের পদাবলী সুবিন্যস্ত হয়ে এক-একটা পরিপূর্ণাঙ্গ কাব্যরূপ ধারণ করেছে ৷ আর অনন্তদাস, উদ্ধবদাস, ঘনশ্যাম, বলরামদাস, কবিশেখর, শশিশেখর ইত্যাদি কবিরা লীলার কোন কোন অঙ্গের পদ রচনা করেছেন— তাঁদের পদ কীর্তনগানের পালার মধ্যে স্থান পেয়ে সর্বাঙ্গসুন্দর কাব্যের অঙ্গীভূত হয়েছে ৷