পদাবলী যেন অর্ধসৃষ্টি, বাকি অর্ধেক সৃষ্টি সম্পাদিত হয় গায়কের কণ্ঠে ৷ কেবল পাঠ-মন্দিরে পাঠে আমরা যেটুকু রস পাই— নাটমন্দিরে কীর্তনীয়াদের কণ্ঠে শুনলে তার চেয়ে ঢের বেশি পাই ৷ গায়কের মুক্ত-কণ্ঠের আঁখর, আবেগ ও দরদ তাতে যুক্ত হয়ে তাকে পূর্ণাঙ্গ করে তোলে ৷ যে পদে আমরা ছন্দের অঙ্গহানি লক্ষ্য করি, বা আবৃত্তির দোষে ছন্দভঙ্গ করে ফেলি, গায়ক-কণ্ঠে শুনলে ছন্দের দিক্‌ থেকে তাকে নির্দোষ বলেই মনে হবে ৷ গানের সুরের দিকে উৎকর্ণ হয়ে মনে মনে গেয়ে রসাবিষ্ট অবস্থায় পদকর্তারা পদ রচনা করতেন ৷ তাই বোধ হয়, তাঁহাদের কাছে সে সৃষ্টি পূর্ণাঙ্গ বলেই মনে হত ৷ তা ছাড়া, এগুলো প্রাকৃত প্রেমের ভাষায় রচিত, ভক্তের মনে অপ্রাকৃত ঐশ্বর্য লাভ করলে পূর্ণাঙ্গতা লাভ করে ৷ অভক্ত কাব্যরসিকের কাছে এগুলো অর্ধসৃষ্টি ৷