রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলার পদের অনুকরণে গৌরলীলার পদাবলী রচিত হয়েছে। গৌরলীলার পদাবলী নিয়ে এ পুস্তকে আলোচনার স্থান নাই। গৌরলীলার পদরচনা মুরারি গুপ্ত, নরহরি, বসু ঘোষ, নয়নানন্দ ইত্যাদি গৌরাঙ্গের সমসাময়িক কবি থেকে আরদ্ধ হয়েছে।
চৈতন্যদেবের তিরোধানের পর গৌরলীলার পদ বহুল পরিমাণে রচিত হয়েছে ৷ কবিত্বের দিক হেকে বিচার করতে হলে চৈতন্যোত্তর কবিদের গৌরলীলার পদগুলিই চমৎকার ৷ বলা বাহুল্য, কীর্তনসঙ্গীতের ক্রমোৎকর্ষের সাথে এর সম্বন্ধ আছে ৷ গৌরলীলার পদগুলি বিবিধ শ্রেণীর : —
(১) শ্রীচৈতন্যের রূপ ও মহিমা বর্ণনা;
(২) শ্রীচৈতন্যের লৌকিক জীবন, সন্ন্যাস ও নামকীর্তনের বর্ণনা ;
(৩) নদীয়া-নাগরীভাবকে আশ্রয় করে রচিত পদাবলী ;
(৪) ব্রজের বিবিধ লীলারঙ্গের প্রকরণ অনুসরণে রচিত পদাবলী ;
(৫) শচীমাতার বাৎসল্য ও বিষ্ণুপ্রিয়ার বিরহ অবলম্বনে রচিত পদাবলী ;
(৬) শ্রীচৈতন্যের সহচরগণের উদ্দেশে ও সম্বন্ধে রচিত পদাবলী ৷
এইগুলির মধ্যে প্রধানতঃ প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদাবলী ব্রজ-পদাবলীর সঙ্গে স্থান পেয়েছে গৌরচন্দ্রিকারূপে ৷ পদাবলীর প্রকরণ-বিভাগ কীর্তনসঙ্গীতের জন্য পরিকল্পিত ৷ প্রত্যেক প্রকরণের বাছাই-করা কতগুলি করে পদ নিয়ে কীর্তনের এক-একটি পালা রচিত হ্যেছে ৷ পূর্বরাগ,মান, মাথুর,ইত্যাদিকে এক-একটি লীলা বলা হয় ৷ এক-একটি লীলা অবলম্বন বিন্যস্ত এক-একটি প্রকরণের পদাবলীর বিবিধ সুরতালের সাথে গাওয়াই লীলাকীর্তন ৷