চৈতন্যোত্তর পদকর্তারা সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণনা লাভ করেছেন রূপ, সনাতন, কবিকর্ণপুর, স্বরূপ দামোদর, জীবগোস্বামী ইত্যাদি বৈষ্ণবাচার্যগণের রচনা থেকে ৷ শ্রীচৈতন্যের সময়ে শ্রীরূপের রচনা সম্ভবতঃ বঙ্গদেশে এসে পৌঁছয়নি— বহু গ্রন্থ তখনও বিরচিতও হয়নি৷ সেজন্য তাঁর রচনার প্রভাব চৈতন্যের সমসাময়িক পদকর্তাদের রচনায় বিশেষভাবে লক্ষ করা যায় না৷ চৈতন্যের তিরোধানের পর পঞ্চাশ বছরের মধ্যে বৈষ্ণব গুরুদের গ্রন্থগুলো বাংলার বৈষ্ণবসমাজে সুপরিচিত হয়৷ তার ফলে ঐ সকল রচনার ভাবসম্পুট চৈতন্যোত্তর যুগের অর্থাৎ খেতুরীর মহাসম্মেলন যুগের পদাবলীর পুষ্টিসাধন করেছে ৷ এই বৈষ্ণব গুরুদের রসঘন শ্লোকগুলিকে যাঁরা পদে পরিণত করেছিলেন— তাঁদের মধ্যে গোবিন্দদাস কবিরাজ এবং রসকদম্ব ও গোবিন্দলীলামৃতের গ্রন্থকার যদুনন্দন দাস অগ্রগণ্য ৷ বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর চমৎকার-চন্দ্রিকাকে কতকগুলি পদে পরিণত করেছেন অর্বাচীন পদকর্তারা৷ গৌরচন্দ্রিকার পদ রচনায় পরবর্তী পদকর্তারা কৃষ্ণদাস কবিরাজ, বৃন্দাবন দাস, রায় রামানন্দ ও শ্রীচৈতন্যদেবের সামসময়িক ভক্তগণের রচনা থেকে প্রেরণা ও উপাদান লাভ করেছেন ৷