জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
আমাদের আমাদের আমাদের গো।–
ভিনু ভিনু তনু একই পরাণ।–
দোঁহার পরাণে পরাণ বাঁধা।–
দোঁহা দোঁহার অঙ্গ আধা।–
দোঁহার, মিলন লাগি’ দোঁহে ব্যাকুলিত চিত।–
দোঁহার,–দরশনে দোঁহে উৎকণ্ঠিত।–
এক-পলকে, অদর্শনে দোঁহে প্রলয় গণে।–
দোঁহার,–অদর্শনে দোঁহে প্রলয় গণে।–
দোঁহে দোঁহায়,–হিয়ায় রেখে হারায়ে যায় গো।–
মহাভাব-রসের মূরতি দুটী।–
আমাদের আমাদের আমাদের গো।–
[ঝুমুর]
‘‘সখী সঙ্গে ছিল রাই কৃষ্ণ-কথা আলাপনে।।’’
‘‘হেন কালে শ্যামের বাঁশী বাজ্ল বিপিনে।।’’—
বাঁশী বাজ্ল, জয় রাধে শ্রীরাধে বলে।।
বাঁশী শুনি’ চমকিয়া উঠ্ল ধনী।–
রাই যেন বাণে বেঁধা হরিণী।–
বাঁশরী শুনি’ কিশোরী উঠিল শিহরি’।–
‘‘খসিল নীবিবন্ধ, এলাল কবরী।’’–
‘‘ললিতার করে ধরে বলে ‘হরি হরি’।।‘
সহচরি,–আর যে ঘরে রইতে নারি।
ঐ শুন, বাজ্ল শ্যামের সঙ্কেত-বাঁশরী।
ঐ বাজে গোকূল-মঙ্গল-বংশী।–
আয় তোরা, কে যাবি গো আমার সঙ্গে।
কে কে যাবি বিপিন-বিহার-রঙ্গে।–
কে যাবি ভেটিতে শ্যাম-ত্রিভঙ্গে।–
এত বলি’ ধেয়ে চলিল ধনী।–
ধেয়ে চলিল রাই পাগলিনী।–
ললিতা বলে—অমনি কেন যাবি গো রাধে।–
ছি ছি, শ্যাম-নাগর দেখ্লে কী বা বল্বে।
বল্বে ও-মা, রাইএর বুঝি দাসী নাই গো।
কেন,–বনে যাবি গো একাকিনী।–
রাধে,–আমরা যে তোমার চির-সঙ্গিনী।–
আয় তোরে, ভাল করে সাজায়ে দিই গো।
তোর সেবা বিনে,–আমাদের আর কী ধন আছে।–
তোর,–সেবা লাগি’ ঘর পর করেছি।–
তোর,–সেবা লাগি’ রাতি দিবস করেছি–
তোর,–সেবা লাগি’ বন ঘর করেছি।
আয় তোরে,–ভাল করে সাজায়ে দিই গো।–
এত বলি,–ললিতা উল্লাস-প্রাণী।–
সুবর্ণের চিরুণী আনি।–
সাধে সাধে,–আঁচ্ড়ায় রাইএর চুলে।–
চুল আঁচ্ড়ায়, বাম-হাতে এক ফের দিয়ে।
পাছে, কমলিনীর মাথায় লাগ্বে বলে।
তখন,–বিশাখা সখী ধেয়ে এল।–
বলে,–একবার তুমি সর গো ললিতে।
ও’ ললিতে, আজ্কার সেবা আমি কি পাব না।
এত বলি,’—বিশাখা করবী বাঁধে।–
করবী বাঁধে, মনোহরের মনোমহন-ছাঁদে।
করবী বাঁধে, সারি সারি দিয়ে নানা-ফুলে।
তখন,–চিত্রা সখী সময় জানি’।–
আমরি,–সুবর্ণের সিঁথী আনি।–
পরায় রাইএর সিঁথী-মূলে।–
তখন,–চম্পকলতিকা ধনী।–
আমরি,–অপূর্ব্ব-সিন্দুর আনি।–
মন-সাধে, পরাওল রাইএর ভালে।
হল যেন, ভানুর উদয় রাই-চাঁদের কপালে।
চাঁদের কপালে ভানু হল পুষ্পবন্ত–
তখন,–সুদেবী হরিষ হইয়া।–
আমরি,–গজমতি-হার লইয়া।–
রাইএর,–গলায় দিয়ে চেয়ে রইল।
শোভা দেখে’ আঁখি পালটিতে নারে।
তখন,–নানা-রত্ন কর্ণ-মূলে।–
মন-সাধে,–রঙ্গদেবী পরাইলে।–
তার, কতই শোভা কহনে না যায়।
যত বাকী আভরণ ছিল।–
সে সব,–তুঙ্গবিদ্যা পরাইল।–-
ছুটে এসে,–ইন্দুরেখা নূপুর পরায়।
নূপুর পরায়, রাতুল-চরণ হৃদয়ে ধরে।
একবার একবার, রসের বদন-পানে চেয়ে।
বলে,–যা যা নূপুর তুই খসে যা রে।
খসে যারে,–নূপুর আমি আবার পরাই।–
পরাবার ছলে, খানিক চরণ হৃদয়ে রাখি।
সাজল ধনী চন্দ্রবদনী।–
আমরি,–সাজল শ্যাম-দরশ-আশে।–
যত,–সঙ্গিনীগণ রঙ্গিণী সব।–
ঘেরল রাইএর চারি-পাশে।–
‘‘শ্যাম-অভিসারে চলু বিনোদিনী রাধা।’’
‘‘নীল-বসনে মুখ ঝাঁপিয়াছে আধা।’’
রাই যেন,–থির-বিজুরী লুকায়ে যায় রে।–
নীল-বসন-মেঘের আড়ে—রাই যেন,–থির-বিজুরী লুকায়ে যায় রে।—
‘‘সুকুঞ্চিত ত-কেশে রাই বনায়েছে কবরী।’’
‘‘কুন্তলে বকুলমালা গুঞ্জরে ভ্রমরী।।’’–
ললিতা বলে, আঁচলে বদন ঢেঁকে চল গো।
ঐ দেখ, চকোর বিধুন্তুদ লুব্ধ হতেছে।
বদন ঢেঁকে আনত আনত চল।
আমাদের,–রাইএর কনক-মূকুর-কাঁতি।–
শ্যাম বিলসিতে তনু রাইএর।–
আমরি,–সাজিয়াছে কত ভাতি।–
যায়,–সখীরি অঙ্গে অঙ্গ হেলাইয়ে।
যায়, ললিতা-বিশাখার কাঁধে হাত দিয়ে।
যায়,–শ্যাম-বঁধূর কথা পরসঙ্গে।–
প্রতি, পদ-বিক্ষেপে মূরছি কোটি-অনঙ্গে।
যায় রে, মদনমোহন-মোহিনী ধনী।
বলে সখী, আর যে আমি চলতে নারি।
বল বল,–বৃন্দাবন আর কত দূরে।
যায়,–সখীর অঙ্গে অঙ্গ হেলাইয়ে।–
‘‘বৃন্দাবনে প্রবেশিল রাই শ্যাম-জয় দিয়ে।’’
‘‘বৃন্দাবনে প্রবেশিয়া ধনী ইতি উতি চায়।’’
‘‘মাধবীতরুর তলে দেখে শ্যাম-রায়।।’’
শ্যাম-নাগর, একবার উঠ্ছে একবার বস্চে।
শ্যামের, চূড়া এক ঠাঁই, বাঁশী এক ঠাই।
শ্যাম,–পুত্র-শব্দে চমকি’ উঠ্ছে।–
ঐ বুঝি রাই এল বলে-–শ্যাম,–পত্র্-শব্দে চমকি’ উঠ্ছে।–
হেল-কালে,–‘‘নূপুরের রুণু-ঝনু পড়ে গেল সাড়া।’’—
‘‘শ্যাম-নাগর উঠে বলে রাই এল পারা।।’’–
‘‘শ্যাম-বামে মিলল রাই রসের মঞ্জরী।।’’
ধেয়ে গিয়ে এলাম বলে দাঁড়াল বামে।
এই আমি এলাম বলে দাঁড়াল বামে।
‘‘শ্যাম-বামে মিলল রাই রসের মঞ্জরী।’’
‘‘জ্ঞানদাস মাগে রাঙা-চরণ-মাধুরী।।’’
বলে,–আমি যুগল-চরণ পেতে পারি।
রাই মিলালাম করি’ কত চাতুরী।–
মিলল,–‘‘নব-অনুরাগিণী নব-অনুরাগ।’’
‘‘তনু তনু মিলল গলে গল লাগ।’’মিলল রে,–নিতা রাধা, গৌর শ্যাম)
আজ কুঞ্জে,–মেঘ বিজুরী জড়াজড়ি রে।–
মিলন দেখে, ‘‘এক রঙ্গিণী পরম-রসাল।’’
‘‘দোঁহার গলে দিল এক ফুলমাল।।’’–
যুগলে সুখ দিতে কত-রঙ্গ জানে।–
যেন,–প্রেম-ডুরিতে বাঁধিল রে।–
মালা দেওয়া নয়—যেন,–প্রেম-ডুরিতে বাঁধিল রে।–
‘‘টুটব ভয়ে রহু দুঁহু একবন্ধ।’’–
পাছে মালা,–ছিঁড়বে বলে অমনি জড়ায়ে রইল।–
‘‘দৈবে ঘটাওল (আজ) প্রেম-আনন্দ।।’’
‘‘সখী মুখ হেরিতে দোঁহে হরষিত ভেল।’’—
‘‘দোঁহে মিলে সেই মালা সখীর গলে দিল।।’’
সখি আয় আয়,–কাছে আয় বলে মালা গলেতে দিল।
‘‘মরম-সোহাগিনী তার রাখিল নাম।’’
‘‘দূর হতে সখী অমনি করু পরনাম।।’’
যেন, এমনি দয়া থাকে বলে করু পরনাম।
‘‘দূরে গেল সখী, শিখণ্ড, পীতবাস।’’
সখীগন দূরে গেল কুঞ্জে মঞ্জরী এল।
‘‘দূরে রহি’ হেরত গোবিন্দদাস।।’’–
কুঞ্জের গবাক্ষ দিয়ে যুগল হেরে।–
আজ কুঞ্জে,–কে রাই কে শ্যাম চেনা ত’ যায় না।–
তনু তনু মিলে এক হয়েছে।–
রাই-অঙ্গচ্ছটা লেগে, শ্যাম গৌর হয়েছে।–
নিতাই গৌর রাধে শ্যাম রাধে।।’’
শ্রী,–‘‘বৃন্দাবন রম্যস্থান, দিব্য-চিন্তামণি-ধাম,
সুমধুর-রসের আধার।’’ রে !’’
কল্পবৃক্ষময় বন—চিন্তামণিময় ভূমি
সেই,–ব্রজের একটি রজঃ-রেণু—কোটি কোটি,–চিন্তামণিকেও তুচ্ছ করে
সৃষ্টিকর্ত্তা ব্রহ্মা যথায়—গুল্ম হতে বাঞ্ছা করে
রজঃপরশে ধন্য হবে বলে –গুল্ম হতে বাঞ্ছা করে
সেই ব্রজের তরুলতা তারা—দীনতার মূরতি রে
ভকতি-রাণীর একমাত্র আন—দীনতার মূরতি রে
তাদের সদাই অবনত শিরঃ—দীনতার মূরতি রে
যাদের,–ব্রজবাসে সাধ আছে—তাদের, –ইঙ্গিত করে জানাইছে
যদি,–ব্রজবাসে সাধ থাকে গো
তৃণাদপি-আসনে উপবেশন কর—যদি,–ব্রজবাসে সাধ থাকে গো
মদনমোহন শ্যাম, দলিত-নীরদ-দাম,
প্রিয়া সহ সতত বিহার।।’ রে !!
বিহরে,–রতন-বেদীর পর—দোঁহে,–বেদ-বিধির অগোচর
রাই-কানুর প্রেমের খেলা—সে যে,–অনুভব-পার লীলা
প্রাকৃত-বাক্য-মন-বুদ্ধির—সে যে,–অনুভব-পার লীলা
সে,–কামগন্ধহীন ব্রজলীলা—আলোচনার অধিকার হয় না
এই,–প্রাকৃতদেহ-স্মৃতি থাকতে—সে লীলা,–আলোচনার অধিকার হয় না
শ্রীগুরু-বৈষ্ণবের কৃপায়—একমাত্র গোপীভাবের গোচর
শ্যাম সহ সমরুচি, দামিনী-দমন-রুচি,
গোপীকার গাঢ়-আলিঙ্গনে।’’
রাই-কানুর মিলনে—যেন,–তড়িত-জড়িত-নবঘনে
সম্ভে দিয়া শ্যাম-সুচিক্কণে।।’’
রাই-অঙ্গে,–শ্যাম-অঙ্গ ঢাকা পড়েছে—কিন্তু ,–মাঝে মাঝে ঝলক দিছে
শ্যামের,–উজ্জ্বল-নীলমণির ছটা—কিন্তু,–মাঝে মাঝে ঝলক দিছে
শ্যাম-অঙ্গ ঢাকি’ গৌর রায়।’’ রে !
রাই-অঙ্গচ্ছটা লেগে—শ্যাম,–গৌরাঙ্গ হল রে
উপরে রাই ভিতরে কাল-শশী—হয়ে,–রাই কানু মিশামিশি
নদীয়া-আকাশে আসি—উদিল গৌরাঙ্গ শশী
স্থাবর, জঙ্গম, গুল্ম, লতা—প্রেমজলে ডুবালে
সুরধুনীর দুই-কূল—ভেসে গেল সেই প্রেমের বন্যায়
অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ—ভেসে গেল সেই প্রেমের বন্যায়
হিমালয় হতে কুমারিকা—ভেসে গেল সেই প্রেমের বন্যায়
বিষ্ণুপ্রিয়া আদি করি’, নবদ্বীপ-সুনাগরী,
গোরারসে নিমগ্ন সদাই।’’ রে !
গোরারসে আগরী—যত নদীয়া-নাগরী
কহিতে গৌরাঙ্গ কথা প্রেমজলে ভাসে।। গো !!
ভাব-ভরে ভাবিনী পুলুক-ভরে ভোরা।। গো !!
শ্রবণে নয়নে মনে গোরা গোরা গোরা।।’’ গো !!
গৌর বিনে আন দেখে না নয়নে
গৌর বিনে আন ভাবে না মনে
গৌর-ভাবিনী নদীয়া-রমণী—গৌর বিনে আন ভাবে না মনে
দিবা নিশি গৌর বিনে অন্য নাহি জানে।।’’ গো !!
শয়নে স্বপনে জাগরণে—গৌর বিনে আন নাহিক জানে
যতন করিয়া গোরা নাম লিখে তায়।।’’ গো !!
নিজ-অঙ্গে গৌর-নাম লিখে—গৌর-নামের পানে চেয়ে বলে
তারা,–নামেতে মূরতি হেরে—গৌর-নামের পানে চেয়ে বলে
একবার,–মৃদু হেসে কথা কও—গৌর-নামের পানে চেয়ে বলে
পূজয়ে চোখের জলে প্রাণ-ফুল দিয়া।।’’ গো !!
পুজে গোরা পদ-যুগলে
আঁখির জলে, প্রাণ-ফুলে—পূজে গোরার পদ-যুগলে
তাহে অভিসিঞ্চে গোরার রাঙ্গা দুচরণে।।’’ গো !!
বালাই লয়ে মরে যাই
নদে-নাগরীর গৌর-পূজার—বালাই লয়ে মরে যাই
পূজে গৌরাঙ্গ-সুন্দরে
গোরারসে আগরী নদে-নাগরী—পূজে গৌরাঙ্গ-সুন্দরে
নিজ,–দেহেন্দ্রিয়-উপচরে—পূজে গৌরাঙ্গ-সুন্দরে
পিরীতি নৈবেদ্য তাহে বচন তাম্বূল। গো !
পরিচর্য্যা করে ভাব-সময়—অনুকূল।। গো !!
অঙ্গকান্তি-প্রদীপে করয়ে আরত্রিকে। গো !
কঙ্কণ-শবদ ঘণ্টা আনন্দ অধিকে ।। গো !!
অঙ্গগন্ধ-ধূপ-ধুঁয়া বহে অনুরাগে গো !
পূজা করি দরশ-পরশ-রস মাগে।।’
তুমি গৌর আমার হলে—আমি গৌর তোমার হলাম
গোরারসে নিমগ্ন সদাই গো !
তাদের অনুগা হব, নিতাই-পদরজঃ পাব,
নবদ্বীপদাস গায় তাই।। গো !!
গৌরাঙ্গ-বিলাসের তনু—নিতাই পেলেই সকল পাব
গৌর-বশীকরণ-মন্ত্র-নিতাই পেলেই সকল পাব
এ-কথা অন্যথা নবে—আমরা,–নিতাই ভজে গৌর পাব
আছয়ে অদত্তা তনয়া ঘরে। বল্,—কেমনে ওদন রোচয়ে তোরে।।’’
বিবাহের,–যোগ্য কন্যা ঘরেতে রেখে—কেমনে অন্ন জল রোচে মা
আগে সম্বন্ধ না করিয়ে—কেমনে অন্ন জল রোচে মা
সম্বন্ধ না করে মরলে,–আবার,–চৌরাশি যোনি ভ্রমিতে হবে
এই বেলা,–যোগ্য-পাত্রে অর্পণ কর—তোমার,–মতি-তনয়া বড় হয়েছে
নইলে,–মতি ব্যভিচারিণী হবে—যোগ্য-পাত্রে অর্পণ কর
যেমন তোমার মতি-তনয়া,–তার,–উপযুক্ত পাত্র বটে
শচীদুলাল গৌর বিশ্বম্ভর—তার—উপযুক্ত পাত্র বটে
এমন সুপাত্র আর পাবি না—দে দে মতি গৌরাঙ্গ দে
তার,–‘‘কুল, গুণ, শীল, অসীম-রূপ। সে,–বিদ্যা-বিদগধ রসিক-ভূপ।।’’
অতুলন—কুল, গুণ, শীল, রূপের—অনন্ত-ব্রহ্মাণ্ডে তুলনা নাই মা
অতুলন,–কুল, গুণ, শীল, রূপ—তাতে আবার সে রসের রাজা
গোরা-রসরাজে অর্পণ করলে—তোমার,–মতি-তনয়া রাণী হবে
আর,–কোনও অভাব রবে না গো—তোমার,–মতি-তনয়া রাণী হবে
‘‘ভাব-রত্নহার দিবেন নাথ। রাগ-পদ্মরাগ-মণির সাথ।।
কৃষ্ণ-গুণময় কুণ্ডল দিবে।কীর্ত্তন-কঙ্কণ ভূষণ হবে।।
অনুরাগ-বসন গৌর দিলে। তা’’—মলিন না হবে কোনই কালে।।’’
মলিন হওয়া ত’ দূরের কথা—বরং,–দিনে দিনে বসন উজ্জ্বল হবে
উৎকণ্ঠা-লালসা-ঘর্ষণে—বরং,–দিনে দিনে বসন উজ্জ্বল হবে
‘‘অশ্রু, কম্প, স্বেদ, পুলক, হাসি। পরাবে সাত্ত্বিক-মুকুতা-রাশি।।’’
অষ্ট-সাত্ত্বিক-ভূষণেতে—নিশিদিশি ভূষিতা থাকবে
‘‘আদর-চন্দন জগতে দিবে। হরিনামামৃত খাইতে পারে।।’’
আদর করে ডেকে বসাইবে
মুখে হরিবোল বলে—আদর করে ডেকে বসাইবে
এস,–গৌর-প্রেয়সী এস বলে—আদর করে ডেকে বসাইবে
‘‘অনেক কুটুম্ব মিলিবে তোরে। শ্রীগুরু বৈষ্ণব পাইবি ঘরে।।’’
যাদের,–সাধন করেও মিলে না গো—খুঁজে খুঁজে তারা আপনি আসবে
কে গো—গৌরাঙ্গে মতি দিয়েছে বলে—খুঁজে খুঁজে তারা আপনি আসবে
‘‘অদ্বৈত, নিতাই, মাধবসুত। শ্রীবাসাদি করি’ এই পঞ্চ তত্ত্ব।।
চৌষট্টি মহান্ত গোপাল বার। এ সব কুটুম্ব মিলিবে তোর।।
সবাই আপন করিয়া লবে। ভূবন ভরিয়া খেয়াতি রবে।।
অষ্ট-সিদ্ধি, নব-বিধি যে আছে, ভুক্তি, মুক্তি পড়ি রহিবে নাছে।।’’
কত সাধনের ধন—তারা,–দুয়ারে গড়াগড়ি যাবে তারা দুয়ারে গড়াগড়ি যাবে
আমায়,–গ্রহণ কর জকর বলে—তারা,–দুয়ারে গড়াগড়ি যাবে
‘‘কৃষ্ণানন্দ কহে শুন গো মাই। ইহার অধিক (আর) সম্বন্ধ নাই।।’’
তোর,–হাতে ধরি পায়ে পড়ি—দে দে মতি গৌরাঙ্গে দে
তোর,–সকল অভাব পূরণ হবে—দে দে মতি গৌরাঙ্গ দে
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
বোল হরিবোল, নিতাই-গৌর-হরিবোল। [মাতন]
প্রেমসে কহো শ্রীরাধে শ্রীকৃষ্ণ বলিয়ে—
প্রভু নিতাই শ্রীচৈতন্য শ্রীঅদ্বৈত শ্রীরাধারাণীকী জয় !
প্রেমদাতা পরম-দয়াল পতিত-পাবন শ্রীনিতাই-চাঁদকী জয় !
করুণাসিন্ধু—গৌরভক্তবৃন্দকী জয় !
শ্রীশ্রীনাম-সঙ্কীর্ত্তনকী জয়!
খোল-করতালকী জয় !
আপন-আপন শ্রীগুরুদেবকী জয় !
প্রেমদাতা পরম-দয়াল পতিত-পাবন—
শিশু-পশু-পালক বালক-জীবন শ্রীমদ্ রাধাকমণকী জয় !