আসিতে অক্রূর দেখি অদভুত
পথের মাঝারে চিহ্ন।
শঙ্খ চক্র গদা পদ্ম সে পতাকা
রহিছেন অন্য অন্য।।
দেখি সে চরণ পড়িয়া সঘন
লোটাইয়া পড়ে অঙ্গ।
প্রেমে গদ্গদ সুখর আমোদ
উঠিল আনন্দ-রঙ্গ।।
প্রদক্ষিণ করি অষ্টাঙ্গ প্রণাম
সহস্র সহস্র করে।
নয়নের জলে অঙ্গ বহি যায়
যেমন যমুনা-নীরে।।
অচেতন পেয়ে পড়ে মুরছিয়ে
চেতন নাহিক হয়।
বহুক্ষণে তবে চেতন পাইয়ে
উঠিল সে মহাশয়।।
যমুনা দেখিয়া প্রণাম করিলা–
“তুমি সে সুধন্য মানি।
তোমার তীরেতে বিহরি খেলয়ে
সে হরি গোকুল-মণি।।
এ বোল বলিয়া গেল পার হইয়া
প্রবেশে গোকুল-পুরে।
নন্দের দুয়ারে রথ আরোপিয়া
চলিলা মন্দির-পরে।।
দেখি নন্দঘোষ হইলা সন্তোষ
বসিতে আসন দিয়া।
পাদ্য-অর্ঘ্য দিয়া তাহারে তুষিল
অতি সে আনন্দ হয়া।।
নানা আয়োজন বিবিধ ব্যঞ্জন
রন্ধন করায় তথি।
ঘৃত দুগ্ধ তথি মিষ্টান্ন সাকরি
বিবিধ ভোজন রীতি।।
চণ্ডীদাস বলে– “নন্দের সনেতে
দোঁহে করে কোলাকুলি।
আনন্দ-মগন ভেল দুইজন
কথার চাতুরী মেলি।।”