যমুনা কিনারে

চরণ নূপুর উপর সারী

চরণ নূপুর উপর সারী।
মুখর মেখল করে নিবারী।।
অম্বরে সামর দেহ ঝপাঈ।
চলহি তিমিরপথ সমাঈ।।
কুমুদ কুসুম রভস বসী।
অবহি উগত কুগত সসী।।
আএল চাহিঅ সুমুখি তোরা।
পিসুন লোচন ভম চকোরা।।
অলক তিলক ন কর রাধে।
অঙ্গে বিলেপন করহি বাধে।
তয়ঁ অনুরাগিনি ও অনুরাগী।
দূসন লাগত ভূসন লাগী।।
ভনে বিদ্যাপতি সরস কবি।
নৃপতিকুলসরোরূহ রবি।।

অন্তঃকথন:
রাধারানী শ্যামের অভিসারে যাবেন। কেমন করে কোন সাজে গেলে সেই অভিসার সুচারুরূপে সম্পন্ন হবে দূতী সেই উপদেশ দিচ্ছেন। দূতী বলছেন চরণের নূপুর শাড়ীতে জড়িয়ে নাও যাতে নুপুরধ্বনি কেঊ শুনতে না পায়, মুখর মেখলা করে নিবারণ করে ঘন নীল বস্ত্রে দেহ আচ্ছাদিত করে তুমি অন্ধকার নিশীথে নিজেকে গোপন করে পথে চল। চাঁদের আলোয় কুসুম প্রস্ফুটিত হয়। কুসুমের মিলন রসিক অশুভ চন্দ্র এখনই উদিত হবে। চাঁদের অলো শ্রীমতীর অভিসারের জন্য অশুভ। তাই দূতী বলছেন অশুভ চন্দ্র। সুমুখী চন্দ্রবদনী তোমাকে দেখে মন্দ লোকের দৃষ্টি যেন চকোরের মত ধেয়ে আসে। তাই তুমি সাবধানে পথ চল। হে রাধে, অলকা তিলকে সময় নষ্ট ক'রো না। কেশসজ্জায় আর অঙ্গবিলেপনে অভিসার যাত্রায় বিলম্ব হয়ে যাবে যে! সাজসজ্জা বিহীন হয়ে মাধবের কাছে যেতে শ্রীমতীর যাতে দ্বিধা না হয় তাই দূতী বলছেন, তুমি অনুরাগিনী আর সে অনুরাগী, এমত অবস্থায় ভূষণেই দোষ হবে। তুমি যেমন আছো তেমনি চল আর ক'রো না সাজ! রসিক কবি বিদ্যাপতি, রাজসভাকবি বিদ্যাপতি পদের শেষে রাজবন্দনা করে বলছেন, রাজা শিবসিংহ, নৃপতিকূলপদ্মের সূর্যস্বরূপ। তাঁর প্রভাতেই নৃপতিকুল প্রস্ফুটিত!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি (বাঙ্গালী)
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:সুজাহাঁ দাস

সন্ধিনী