নিশি অবসানে দাস দাসীগণে
ত্বরায় করয়ে কাজে।
যার সেই কাম করে অনুপাম
সভাই সভারে তাজে।।
দেব পুরন্দর জিনি তার ঘর
রন্ধন মন্দির সাজে।
ধনিষ্ঠা সুন্দরী রন্ধন সামগ্রী
রাখল তাহার মাঝে।।
জ্বালিতে ইন্ধন আনল চন্দন
দেয়ল যতন করি।
বসিতে আসন জলের ভাজন
তাহার নিকটে ধরি।।
সুশীলা সুন্দরী রসের চাতুরী
বিবিধ বন্ধান জানে।
বিধিআগোচর নানা উপহার
করল আপন মনে।।
কর্পূর মালতি করল যুবতি
মনোলোভা মনোহরা।
কঙলা কদম্বা রেউড়ি পদুমা
মতিচুর সুমধুরা।।
অমৃতকেলিকা বিবিধ লড্ডুকা
চাকি খণ্ড পদ্মচিনি।
গজা খাজা পেড়া চানা চন্দ্রচূড়া
মিছিরি মারিয়া ফেনি।।
লুচি পুরি করি রস-পাকে ভরি
সরভাজা সরপুরি।
বুঁদি রসকরা রসপুর ঝুরা
যতন করিয়া করি।।
সুগন্ধি শীতল করিয়া নির্ম্মল
ভরিয়া সোনার থালী।
ভোজনভবনে রাখিল যতনে
ঢাকিয়া নেতের ফালি।।
রসালা মথনি করল রমণী
খণ্ড মণ্ডা আদি যত।
লছিমি কেতনে নাহিক যতনে
নন্দের ঘরের মত।।
দধি দুগ্ধ কত আর গাবীঘৃত
নওল নবনী ছানা।
নারিকেলজল করল শীতল
নবীন বাসনে পানা।।
আম্রের আচার কতেক প্রকার
কলা পানিফল আদা।
ভাজনে ভরিয়া রাখিল ঢাকিয়া
রাণীর মনের সাধা।।
সভে করে কাম নাহিক বিশ্রাম
আনন্দে আকুল চীত।
একতান হৈয়া মধুর করিয়া
গাওত মঙ্গল গীত।।
নিজ কাজ সারি সকল সুন্দরী
রাণীরে কহিতে যায়।
রাধিকা দুলারি দেখিতে চললি
কহয়ে শেখর রায়।।