ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
‘‘শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য জয় জয় প্রভু নিত্যানন্দ।’’
‘‘প্রভু নিত্যানন্দ আমার’’
কত গুণের গুণনিধি—প্রভু নিত্যানন্দ আমার’’
ও চাঁদ নিতাই আমার—কতই গুণের গুণনিধি রে
‘‘প্রভু নিত্যানন্দ আমার প্রাণ গৌরচন্দ্র।।’’
ও, –প্রভু নিত্যানন্দ আমার—আমার, –প্রাণ গৌরচন্দ্র
‘‘জয় শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি ভক্তবৃন্দ।
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যজয় জয় প্রভু নিত্যানন্দ।’’
একবার, –প্রাণভ’রে গাও ভাই রে—জয় জয় শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য
বড় প্রাণারাণ নাম—একবার,–প্রাণভ’রে গাও ভাই রে
নামের প্রতি-বর্ণে পূর্ণামৃত—আমার, –গৌরাঙ্গনাম অমিয়াধাম
অমৃত হ’তেও পরামৃত—আমার, –গৌরাঙ্গনাম অমিয়াধাম
একবার, –প্রাণভ’রে গাও ভাই—বড় প্রাণজুড়ান নাম ভাই রে
আমার, –সীতানাথের আনানিধি
আ’মরি, –গঙ্গাজন তুলসী দিয়ে—আমার,–সীতানাথের আনানিধি
অনশনে, –হা কৃষ্ণ ব’লে কেঁদে কেঁদে—আমার, –সীতানাথের আনানিধি
শচীদুলাল গৌরহরি—আমার, –সীতানাথের আনানিধি
প্রাণ-শচীদুলালিয়া—নদীয়া-বিনোদিয়া
কীর্ত্তন, –কেলিরস-বিনোদিয়া—শ্রীবাস-অঙ্গনের নাটুয়া
সংকীর্ত্তন-সুলম্পট—আমার, –রসরাজগৌরাঙ্গ নট
সংকীর্ত্তনরাস-রসিয়া—গৌর আমার, –গদাধরের প্রাণবঁধুয়া
রসময়-গৌরকিশোর—নরহরির চিতচোর
সবর্বতত্ত্বের অবধি গৌর আমার—শ্রীসনাতনের গতি
মহাভাব, –প্রেমরস-ঘন গৌর আমার –শ্রীরূপ-হৃৎকেতন
আমার, –সোনারগৌরাঙ্গ প্রভু—দাস-রঘুনাথের সাধনের ধন
নদীয়াবিহারী গৌরহরি আমার—লোকনাথের হৃদ্বিহারী
কাবেরী-বিহারী গৌরহরি আমার—গোপালভট্টের প্রাণগোরা
শ্রীরঙ্গক্ষেত্র-বিলাসী গৌরহরি—গোপালভট্টের প্রাণগোরা
মায়াবাদি-মর্দ্দনকারী গৌরহরি আমার—প্রকাশানন্দের নয়নানন্দ
আত্মারামশ্লোক-ব্যাখাতা গৌর আমার—সার্ব্বভৌমের চৈতন্যদাতা
ষড়ভুজধারী গৌরহরি আমার—রাজা, –প্রতাপরুদ্রের ত্রাণকারী
ঔদার্য্য-মুরতি গৌরহরি আমার—অমোঘের প্রাণদাতা
বিংশতি-ভাবে বিবশ গৌর আমার—স্বরূপের সরবস
মহাভাবে, —বিভাবিত নিরবধি গৌর আমার—গম্ভীরার গুপ্তনিধি
গম্ভীরাভিতরে প্রাণ-গোরারায়—জাগিয়া রজনী পোহায়
স্বরূপ-রামরায়ের কণ্ঠধরি’—কাঁদিয়া রজনী পোহায়
গম্ভীরাভিতরে প্রাণ-গোরারায়—কাঁদিয়া রজনী পোহায়
কই, –এল না এল না ব’লে—কাঁদিয়া রজনী পোহায়
আ’মরি,–রাধাভাবে বিভাবিত নিরবধি –গম্ভীরার গুপ্তনিধি
রসময় প্রাণগৌর—রামরায়ের চিতচোর
অন্তঃকৃষ্ণ বহিগৌর—রামরায়ের চিতচোর
রাধাভাবে সদাই বিভোর—রামরায়ের চিতচোর
ওগো, –আমার গৌর আমার গৌর –রামরায়ের চিতচোর
শ্রীরাধাকৃষ্ণ-প্রণয়,–বিকৃতি-আকৃতি গৌর আমার—রামরায়ের চিতচোর
যুগল-উজ্জ্বল,–রস-নির্য্যাস-মুরতি গৌর আমার—রামরায়ের চিতচোর
মহাভাব, –প্রেমরস-ঘনাকৃতি গৌর আমার—রামরায়ের চিতচোর
বিলাস-বিবর্ত্ত-মুরতি
মুরতিমন্ত প্রেমবৈচিত্ত্য
মিলনে দুই রসেরখেলা
মিলনে, —মিলা অমিলা রসের খেলা
আমার, –নিগূঢ়গৌরাঙ্গলীলা—মিলনে, –মিলা অমিলা রসেরখেলা
রাই কানু একাকৃতি—বিলাস-বিবর্ত্ত-মুরতি
মহারাস-বিলাসের পরিণতি—বিলাস-বিবর্ত্ত-মুরতি
আমার,–প্রাণরাধা-রাধারমনের—আশমিটান মূরতি রে
রামরায়ে নিজরূপ—দেখায় গোরা রসভুপ
গোদাবরী-তীরে—দেখায় গোরা রসভূপ
বলে, –এ কি অপরূপ দেখিনু তোমায়
তোমায়, –প্রথমে দেখিলাম সন্ন্যাসী-রূপ
এবে দেখি তোমায় শ্যামগোপরূপ
তার আগে দেখি স্বর্ণপঞ্চালিকা
তার কান্তিতে তোমার সর্ব্ব-অঙ্গ ঢাকা—তার আগে দেখি স্বর্ণপঞ্চালিকা
নানাভাবে, –চঞ্চল তাহে কমল-নয়ন—তাতে, –প্রকট দেখি সবংশীবদন
করযোড় রামরায় বলে—আমি তোমায় চিনেছি হে
আমার আগে নিজরূপ না করিহ চুরি—আমি,–বুঝেছি সন্ন্যাসের ভারিভুরি
রসরাজ মহাভাব দুই একরূপ –হাসি, –প্রভু তারে দেখাইল স্বরূপ
রসরাজ মহাভাব দুই জড়াজড়ি—রাই কানু একত্র মিলন
রাই কানু একাকৃতি—রাসরাজ মহাভাব মূরতি
নিত্যমিলনে নিত্যবিরহ—মুরতিমন্ত প্রেমবৈচিত্ত্য
‘‘না সো রমণ না হাম রমণী’’—সেই কথার মূরতি রে
কিন্তু, —বিপরীতভাবে অবস্থিতি
ব্রজের,–অপূর্ণ-সাধ পুরাইতে—বিপরীতভাবে অবস্থিতি
যা’ দেখি’, –রামরায় মুরছিত—রাই কানু, কানু রাই
পরাণ-গৌরাঙ্গ আমার—রামরায়ের চিতচোর
আমার,–প্রভুনিতাই পাগল-করা—পাষাণ-গলান গোরা
আমার,–পাগ্লাপ্রভু পাগল করা—পাষাণ-গলান গোরা
একবার, –প্রাণভ’রে বল্ ভাই তোরা—আমার,–পাষাণ-গলান গোরা
জয় জয়, –‘‘শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য জয় জয় প্রভু নিত্যানন্দ।’’
‘‘জয় যশোদানন্দন’’
ওহে প্রাণের রাধারমণ—যশোদানন্দন
শ্রীরাধানায়ক নাগর শ্যাম।’’
গোপীজন-বল্লভ—রাধানায়ক শ্যাম
‘‘সো শচীনন্দন, নদীয়া-পুরন্দর,’’
নন্দের নন্দন যেই—শচীসূত হইল সেই
‘নন্দসূত বলি, যারে ভাগবতে গায়। রে !
সেই কৃষ্ণ অবতীর্ণ চৈতন্য গোঁসাই।।’’ রে !!
এবার, –গোবিন্দ গৌরাঙ্গ হ’ল –জান না কি কলিজীব
‘‘সো শচীনন্দন, নদীয়া-পুরন্দর,
সুরমুণিগণ-মনো-মোহন ধাম।।
জয় নিজ-কান্তা, কান্তি-কলেবর,’’
জয় নিজ-কান্তা—জয় নিজ-কান্তা—জয় নিজ-কান্তা [
‘‘জয় নিজ কান্তা, কান্তি কলেবর,
জয় নিজ-প্রেয়সী-ভাব-বিনোদ।’’
আমার প্রাণ রাধারমণ—রাধাভাব-দ্যুতি-চোরা
স্বমাধুর্য্য আস্বাসিতে—রাধাভাব-দ্যুতি-চোরা
চির, –অনর্পিত বিতরিতে—রাধাভাব-দ্যুতি-চোরা
আচরি’ ধর্ম শিখাইতে—রাধাভাব-দ্যুতি-চোরা
আপনি,–আপনায় ভ’জে ভজাইতে—রাধাভাব-দ্যুতি-চোরা
অনাদি আদি শ্রীগোবিন্দের—চিরকাল প্রতিজ্ঞা ছিল
‘‘যে যথা মাং প্রপদ্যন্ত—তাংস্তথৈব ভজাম্যহম্’’
যে আমারেযৈছে ভ’জ্বে—আমি তারে তৈছে ভ’জ্ব
যে, –আমায় কেমন ক’রে ভ’জ্বে—আমি তার,–ভজনের প্রতিদান দিব
ব্রজগোপিকার ভজনে—সে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ হইল
ব্রজগোপিকার ভজনের—প্রতিদান দিতে নারিল
ব’লতে হ’ল,–‘‘ন পারয়ে হম্’’
হইল ইচ্ছার উদ্গম
রাসরসে খেল্তে খেল্তে—ইহল ইচ্ছার উদ্গম
শ্রীরাধিকার, –প্রেম-মাধুর্য্যধিক্য দে’খে—হইল ইচ্ছার উদ্গম
আমি ত’ ভুবনমোহন—কে আমায় মুগ্ধ করে
কে আমায় মুগ্ধ ক’র্ছে—আমি উহায় আস্বাদিব
‘‘কৈছন রাধা-প্রেমা, কৈছন মধুরিমা,
কৈছন সুখে তিঁহো ভোর। রে।”
সে প্রেমের মাধুরী কেমন
সেই প্রেমে কিবা সুখ
‘‘এ তিন বাঞ্ছিত ধন, ব্রজে নহিল পূরণ,
কি করিয়ে না পাইয়া ওর।।‘’রে !!
কতই না চেষ্টা ক’র্লাম—কিছুতেই আস্বাদিতে নারিলাম
আশ্রয়-জাতীয় সুখাস্বাদন—আমা হ’তে হবে না
আমি আস্বাদ্যবিষয় বটি—আমা হ’তে হবে না
আমি ত’ লীলার বিষয় বটি—আমা হ’তে হবে না
তখন,–‘‘ভাবিয়া দেখিনু মনে, শ্রীরাধার স্বরূপ বিনে,
এ বাসনা পূর্ণ কভু নয়।’’ রে !
আমায়, –বিভাবিত হ’তে হবে
আশ্রয়-জাতীয়-ভাবে—আমায়,–বিভাবিত হ’তে হবে
মহাভাব-স্বরূপিণীর ভাবে—আমায়,–বিভাবিত হ’তে হবে
তাই,–‘‘রাধাভাব-কান্তিধরি, রাধা-প্রেম গুরু করি,
নদীয়াতে করল উদয় ।। রে !!
সাধিল মনের সাধা,ঘুচিল সকল বাধা,
ঘরে ঘরে বিলাল প্রেমধন।’’রে !
‘‘ব্রজ-তরুণীগণ, লোচন-মঙ্গল,”
সেই,–ব্রজ-তরুণীগণ—ব্রজ-তরুণীগণ—ব্রজ-তরুণীগণ—
সেই,–‘‘ব্রজ-তরুণীগণ,-লোচন-মঙ্গল,
এবে,–নদীয়া-বধূগণ-নয়ন-আমোদ।।’’[মাতন]
জয় জয় যশোদানন্দন শচীসূত গৌরচন্দ্র।
জয় জয় রোহিণীনন্দন,’’
শ্রীগৌরাঙ্গ-বিলাসের তনু—কুলের দেবা নিতাই আমার
আমি, –কি জানি গুণ কত বা বাখানি—আমার নিতাই গুণমণি
‘‘শেষশায়ীসঙ্কর্ষণ, অবতারী নারায়ণ,
যাঁর অংশ কলাতে গণন। রে !
সেই, –কৃপাসিন্ধু ভক্তিদাতা, জগতের হিতকর্ত্তা,’’
আমরা,–গরব ক’রে ব’লতে পারি—আর,–কে বা আছে রে
আমার,–প্রভু নিত্যানন্দের মত—আর, –কে বা আছে রে
পতিত-দুর্গতি দে’খে—এমন কার প্রাণ কাঁদে
চির-অনর্পিত নাম-প্রেম—কে, –সেধে যেচে বিলায় রে
কলিজীবের দ্বারে দ্বারে—কে, –সেধে যেচে বিলায় রে
কত কত অবতার হয়েছে—কেউ কি শুনেছ কোথা
এমন করুণার কথা—কেউ কি শুনেছকোথা
পাপ ল’য়ে প্রেম যাচে—কে কোথায় শুনেছে
‘পাপ ল’য়ে প্রেম যাচে’—
কে কোথায়, –পতিত আছে খুঁজে খুঁজে—পাপ ল’য়ে প্রেম যাচে
কেউ কি শুনেছ কোথায়
মার খেয়ে নাম-প্রেম বিলায় –কেউ কি শুনেছ কোথায়
বলে,–মেরেছ বেশ করেছ
মেরেছ মার আবার খাব
ও ভাই, —মেরেছ কলসীর কণা
আমি,–তা’ ব’লে কি প্রেম দিব না—মে’রেছ কলসীর কাণা
কোন কোলে,–হবে কি আর হয়েছে—এমন দয়াল আর কে আছে
মারখেয়ে নাম-প্রেম যাচে—আমার, –নিতাই বিনে আর কে আছে
[মাতন]
ও পতিতের বন্ধু—আরে আমার নিতাই রে
সেই,–‘‘কৃপাসিন্ধু ভক্তিদাতা,জগতের হিতকর্ত্তা,
সেই রাম রোহিণীনন্দন।। রে !
যার লীলা লাবণ্য-ধাম,আগমে নিগমে গান,
যাঁর রূপ ভুবনমোহন। রে !
এবে আকিঞ্চ ন বেশে, ফিরে পহুঁদেশে দেশে,’’
মাতি’ অনঙ্গ-মঞ্জরী আবেশে—ব্রজের বলাই নিতাই-বেশে
পুরাইতে ব্রজের অপূর্ণ আশে—ব্রজের বলাই নিতাই-বেশে
ঘুচাইতে, –কলিহত-জীবের ক্লেশে—ব্রজের বলাই নিতাই-বেশে
দীনহীন-কাঙ্গালের বেশে—ফিরে পহুঁ দেশে দেশে
গলবাসে গদভাষে
গিয়ে পতিতের পাশে—গলবাসে গদভাষে
ও কলিহত-জীব—একবার বল্রে
ভাই রে তোদের পায়ে পড়ি –একবার বল্ রে
প্রাণারাম গৌরাঙ্গ-নাম—একবার বল্ রে
‘‘অক্রোধ পরমানন্দ শ্রীনিত্যানন্দ-রায়। রে !
আমার, — অভিমান-শূন্য নিতাই নগরে বেড়ায়।। রে !!
অধব-চণ্ডাল-জনার ঘরে ঘরে গিয়া। রে !
ব্রহ্মার দুর্ল্লভ-প্রেম দিছেন যাচিয়া।। রে !!
যে না লয় তারে বলে দন্তে তৃণ ধরি।’ রে!
আমারে কিনিয়া লহ ভজ গৌরহরি।।’’ রে !!
নিতাই,–কেঁদে বলে জীবের দ্বারে দ্বারে—আমি,–বিকাইতে এসেছি রে
আমার নিতাই-চাঁদের, বয়ান, ভাসে নয়ান-নীরে—বলে, আমারে কিনে নে রে
গলবাসে করযোড়ে বলে—আমারে কিনে নে রে
আমি’—বিকাইব বিনামূলে
আমায়, কিনে নে রে গৌর ব’লে—আমি, –বিকাইব বিনামূলে
তোদের,–পাপ-তাপের বোঝা নিবো—বিনামূলে বিকাইব
একবার গৌরহরি বোল—বিকাইব প্রেম দিব
আমার প্রভু নিত্যানন্দের—দুটি আঁখি রক্তবর্ণ
নিশি দিশি কেঁদে কেঁদে—দুটি আঁখি রক্তবর্ণ
গৌর ভজ ব’লে কেঁদে কেঁদে- দুটি আঁখি রক্তবর্ণ—
আচণ্ডালে কোলে তুলি’- নিতাই কাঁদে ফুলি ফুলি
গৌরহরি ভজ বলি’ -নিতাইকাঁদে আকুলি বিকুলি
ও পতিতের বন্ধু—আরে আমার নিতাই রে
শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেমের পাগল—আরে আমার নিতাই রে
‘‘এবে অকিঞ্চন ন বেশে, ফিরে পহুঁ দেশে দেশে’’
নইলে, –কে বা মাতাইছে
নাম-প্রেমে জগজনে—কে বা মাতাইছে
নাম-প্রেমে মাতাইবার—আর কার অধিকার
গুঢ়,–রূপে নিতাই আমার—অদ্যপিহ বিহরিছে
যার প্রেম নেত্রের বিকাশ হয়েছে—সেই ভাগ্যবান জনে দেখিছে
যার,–প্রেমে-নেত্রের বিকাশ হয়েছে’—
শ্রীগুরু-কৃপায়—যার,-প্রেম-নেত্রের বিকাশ হয়েছে
অদ্যাবদি নিতাই-বিহার—সেই, ভাগ্যবান জনে দেখিছে
দয়া ক’রে একবার দেখাও
বড় সাধে এসেছি মোরা—দয়া করে একবার দেখাও
গৌরপ্রেমের পাগ্লা নিতাই—কোথা বা বিহরিছে
গৌরাঙ্গ-নাম-প্রেম যে’চে—কোথা নিতাই বিহরিছে
‘‘এবে অকিঞ্চন ন-বেশে ফিরে পহু দেশে দেশে,
উদ্ধার করয়ে ত্রিভুবন।।‘’ রে !!
সদাই গৌরপ্রেমে বিভোর—ভুবন-পাবন নিতাই মোর
‘‘ ব্রজেরবৈদগ্ধী সার, যত যত লীলা আর,
পাইবারে যদি থাকে মন।’’ রে !
সংসার-সাঁতার ভুলে—যদি ডুব্তে চাও রে
‘সংসার-সাঁতার ভুলে’—
দুর্ব্বাসনা-তরঙ্গময়—এই সংসার-সাঁতার ভুলে
পরানন্দ-পারাবারে—যদি ডুব্তে চাও রে
গৌরপ্রেম-রসার্ণবে’—
মহারাস—বিলাসের পরিণতি—গৌরপ্রেম-রসার্ণবে
গৌরপ্রেম-রসার্ণবে—যদি ডুবতে চাও রে
গৌরপ্রেম-রসার্ণব—বল দেখি সে কেমন
দশ দিক্ বহে যাহা হইতে। রে !
সে চৈতন্য-লীল হয়, সরোবর অক্ষয়,
মনোহংস চরাহ তাহাতে।।’’ রে !!
গৌরপ্রেম-রসার্ণবে—যদি ডুব্তে চাও ভাই
শ্রীরাধামাধবের—যদি,–অন্তরঙ্গ হ’তে চাও
ব্রজগোপী-দেহ পেয়ে—রাধাকৃষ্ণ পে’তে চাও
রাই কানু মিলিত—যদি,–গৌর পে’তে চাও
ভজ ভজ শ্রীপাদ-চরণ।।’’ রে ! !
ভাই রে আমার— নিতাই-গুণমণি ভজ
যদি,–গৌর পে’তে সাধ থাকে—নিতাই-গুণমণি ভজ
‘যদি,–গৌর পে’তে সাধ থাকে’—
একাধারে রাধাকৃষ্ণ— গৌর পে’তে সাধ থাকে
‘‘জয় জয় রোহিণীনন্দন বলরাম নিত্যানন্দ।।
জয় জয় মহাবিষ্ণু—অবতার শ্রীঅদ্বৈতচন্দ্র।’’
নিতাই,–গৌর-আনা ঠাকুর আমার
দয়ানিধি সীতানাথ—নিতাই,–গৌর-আনা ঠাকুর আমার
সুরধুনী-সন্নিধানে।
আঁখি মুদি রহে, প্রেমে নদী বহে,
বসন তিতিল ঘামে।।’’
আমার—প্রাণ-কৃষ্ণ—একবার আসিবে কি
তোমা বৈমুখ জগৎ দেখে—প্রতিজ্ঞা ক’রেছি আমি
তোমার, –শ্রীবাসের ক্রন্দন শুনে—প্রতিজ্ঞা ক’রেছি আমি
তোমারই বলে বলী হয়ে—প্রতিজ্ঞা ক’রেছি আমি
আমার, –প্রাণ-কৃষ্ণ—একবার আসিবে কি
এ দাসের,–প্রতিজ্ঞা রাখিবে কি—একবার আসিবে কি
বসন তিতিল ঘামে।।
নিজ পহুঁমনে, ঘন গরজনে,
উঠে জোড়ে জোড়ে লম্ফ।’’
তুমি,–আমারই ত’ প্রভু বট—কেননা আস্বে না
আবার, —‘‘ডাকে বাহু তুলি, কাঁদে ফুলি ফুলি,
দেহে বিপরীত কম্প।।’’
দয়ানিধি-সীতানাথের –বিলম্ব আর সয় না
অনশনে গঙ্গতীরে ব’সে— সীতানাথ ডাকে রে
গঙ্গাজল-তুলসী করে— সীতানাথ ডাকে রে
নিশ্চয় আনিব ব’লে—প্রতিজ্ঞা ক’রেছে
জগতেদেখাব ব’লে—প্রতিজ্ঞা ক’রেছে
‘জগতে দেখাব ব’লে’—
আমার প্রভু কৃষ্ণ আনি—জগতে দেখাব ব’লে
সীতানাথ ডাকে রে
একবার এস হে
আমার প্রাণকৃষ্ণ—একবার এস হে
ত্রিতাপানলে জগৎ জ্বলে—একবার এস হে
দেহে বিপরীত কম্প।।
শ্রীঅদ্বৈত-হুঙ্কারে, সুরধুনী-তীরে,
আইলা নাগর-রাজ।
তাঁহারপিরীতে, আইলা তুরিতে,
আসি,–উদয় নদীয়া মাঝ।।’’
যদি,–সীতানাথ না আনিত—কেবা পেত’ রে
কেমনে ধরিতাম দে। রে !
শ্রীরাধার মহিমা, রসসিন্ধু-সীমা,
জগতে জানাত কে।। রে !!
মধুর-বৃন্দা, বিপিন-মাধুরী,
প্রবেশ চাতুরী সার। রে !
বরজ-যুবতী ভাবের ভকতি,
শকতি হইত কা’র।।’’ রে ! !
পরিপূর্ণ-প্রাপ্তির উপায়—কেবা জানিত
গৌর-আনা-ঠাকুরের—প্রাণভ’রে জয় দাও
এমন সুন্দর গৌরাঙ্গ—কে আনিল রে
কে আনিল কেবা দিল—কোথা বা ছিল রে
সীতানাথ আনিল, নিতাই দিল—ব্রজে যে ছিল রে
নন্দের নন্দন হরি।
কহে বৃন্দাবন, শ্রীঅদ্বৈত—চরণ
হিয়ার মাঝারে ধরি।।’’
‘‘জয় জয় মহাবিষ্ণু অবতার শ্রীঅদ্বৈতচন্দ্র।
জয় জয় গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর-ভক্তবৃন্দ।।’’
হা,–‘‘শ্রীমন্নবদ্বীপ-কিশোরচন্দ্র।’’
কিশোর-বয়স আমার—রসময় গৌরকিশোর
হা নাথ বিশ্বম্ভর—তোমার, –বিশ্বম্ভর-নাম পূর্ণ কর
তোমার, –নাম-প্রেমে বিশ্ব ভর—বিশ্বম্ভর-নাম পূর্ণ কর
এ তোমার কেমন ধারা
চিত চুরি ক’রে দাও না ধরা—এ তোমার কেমন ধারা
যে দিন হ’তে তোমার নাম শুনেছি—খুঁজে খুঁজে হ’লাম সারা
নদীয়া নীলাচল শ্রীবৃন্দাবনে, –তোমায়,–খুঁজে খুঁজে হ’লাম সারা
অঙ্গ-বঙ্গ—কলিঙ্গ-দেশে,–তোমায়,–খুঁজে খুঁজে হ’লাম সারা
সুরধুনী আর সিন্ধুকূলে,–তোমায়,–খুঁজে খুঁজে হ’লাম সারা
হা, –চিতচোর-চূড়ামণি—কেন তুমি দাও না ধরা
আমরা ত’ তোমায় ভুলেই ছিলাম
সংসারে কৈশোর-খেলায় মেতে—আমরা ত’ তোমায় ভুলেই ছিলাম
আমরা, ভুলে ছিলাম ভালই ছিলাম—কেন তুমি জানাইলে
শ্রীগুরুরূপে দেখা দিয়ে—কেন তুমি জানাইলে
তুমি সেব্য আমরা সেবক ব’লে—কেন তুমি জানাইলে
তোমার সেবা’—আমাদের একমাত্র কর্ত্তব্য ব’লে—কেন বা বুঝাইলে
খোল-করতালে নাম-গুণ-গুনায়ে—কেন ঘরের বাহির কৈলে
কেন তুমি দাও না ধরা
আর ক’রো না ছলনা
দিয়ে মায়ার নানা খেলনা—আর ক’রো না ছলনা
তোমায় ভুলে এই পুতুল-খেলা—অনেকদিন ত’ খেলেছি হে
হা গৌরাঙ্গ,–তোমায় ভুলে এই পুতুল-খেলা—অনেকদিন ত’ খেলেছি হে
ও,–রসময় গৌরহরি—আর ক’রো না চতুরী
যদি,–ধরা না দাও ইচ্ছাকরি’—আমরা কি তোমায় ধ’র্তে পারি
আমরা যে—কলিহত-পতিত-জীব—আমরা কি তোমার পরীক্ষার পাত্র
অনাদিকালের স্বতন্ত্রতা দোষে—তোমায়—ভুলে থাকাই ত’স্বভা আমাদের
অমিয়া ব’লে পিতে যেতে ছিলাম
বিষয়, –বিষভাণ্ড করে ল’য়ে—অমিয়া ব’লে পিতে যেতে ছিলাম
জ্বলে ম’র্তাম্ আমরাই ম’র্তাম্–কেন তুমি কেড়ে নিলে
শ্রীগুররূপে দেখা দিয়ে কেন,–বিষয়-বিষভাণ্ড কেড়েনিলে
বাহু-পসারিয়ে হিয়ায় ধ’রে—কেন,–বিষয়-বিষভাণ্ড কেড়ে নিলে
আমরা,–দিতে চাই নাই তুমি জোর ক’রে—কেন,–বিষয়-বিষভাণ্ড কেড়ে নিলে
খেও না বাপ জ্ব’ল্বে ব’লে—কেন,–বিষয়-বিষভাণ্ড কেড়ে নিলে
ও যে বিষয়-বিষ,–খেও না বাপ বড়ই জ্বল্বে ব’লে—
কেন, –নাম-অমিয়া পিয়াইলে
আমরা,–পিতে চাই নাই তুমি পিয়াইয়ে—কেন, –নাম-অমিয়া পিয়াইলে
শ্রীগুরুরূপে—এ কি,–অহৈতুকী করুণা তোমার
তোমার করুণার,–বলাই ল’য়ে ম’রে যাই—একি,–অহৈতুকী করুণা
এতই যদি করুণা কৈলে
কেন,–ক্ষণের তরে পিয়াইলে
তোমার,–নিরুপম নাম-অমিয়া—কেন,–ক্ষণের তরে পিয়াইলে
ও,–প্রাণের প্রাণ গৌরকিশোর—তুমি আমাদের প্রাণ হও হে
তোমার,–নিরুপম নাম-অমিয়া—নিরন্তর,–পানের স্বভাব কেন না দিলে
বিষয়-বিষ ভাল লাগে না
তোমার,–নাম-অমিয়াও পিতে পাই না—বিষয়-বিষ ভাল লাগে না
আমরা,–ভুলেছিলাম বড়ই ভাল ছিলাম—কেন,–ফেলালে মোদের এ সঙ্কটে
কেবল বরণ ফিরেছে বটে—কিন্তু কৈ,–সে স্বভাব ত’ যায় নাই তোমার
পতঙ্গেরে আকর্ষিয়া মারে।
কৃষ্ণ তৈছে নিজগুণদেখাইয়া হরে মন,
পাছে দুঃখ-সমুদ্রেতে ডারে।।”
ওহে,–ও রসময় গৌরহরি—আর ক’রো না চাতুরী
যদি,–কৃপা ক’রে একবার পিয়ায়েছ—প্রাণভ’রে পিতে দাও হে
তোমার,–নিরুপম নাম-আমিয়া—প্রাণভ’রে পিতে দাও হে
হিয়ার,–দুবর্বাসনা-কপট-কুটিনাটি—কেড়ে লও আমাদের কাঁদাইয়ে
প্রাকৃত,–ভোগ-বাসনা হ’তে তুলে ল’য়ে—দাও, চিত্তবৃত্তি তোমাতে দাও
বাসনার বশে বিকায়েছি কত ঠাঁই—আমাদের,–ছড়ান প্রাণ কুড়ায়ে দাও
তোমার,–নাম-গুণ-লীলা-রসেতে মজি—কামনোবাক্যে তোমায় ভজি
আর কতদিন,–তোমা ছাড়া হ’য়ে থাকব’—এস’,–প্রাণের ঠাকুর প্রাণে এস’
যারা,-ব’সেছে তাদের তাড়ায়ে দিয়ে- তোমার,–আসন তুমি অধিকার কর
অখিল-রসের মুরতি—তোমায়,–হৃদে ধরি সব পাসরি
তোমার,–নাম-গুণ-লীলা-রসেতে ঝুরি—তোমায়,–হৃদে ধরি সব পাসরি
প্রতি হৃদয়ে উদয় হইয়া—মাতাও সবার হিয়া
এ জগতের,- রুপ-রস-শব্দ-গন্ধ-স্পর্শের-ছায়া দিয়ে রেখ’ না ভুলাইয়া
অখিল-রসামৃতময়—দেখাও তোমার কায়া দেখাও
এই,–জগবাসী নরনারী—তোমায়, –হৃদে ধরুক্আরসব পাসরুক্
শ্রীমন্নিত্যানন্দ অবধৌতচন্দ্র।
হা নাথ হাড়াই-পণ্ডিত-পুত্র।।’’
ও হাড়াই-পণ্ডিত-সূত—আমরা কি,–হারানিধি আর পাব’ না
নিজ, –স্বতন্ত্রতা দোষে তোমার গোরানিধি—আমরা,–বহুদিন হ’তে হারায়েছি
হা নিতাই প্রভু নিতাই—আমরা কি গৌরাঙ্গ পাব’
দুবর্বাসনার কিঙ্কর মোরা—কোন্ গুণে গৌরাঙ্গ পাব
কপটতার মূরতি মোরা—কোন্ গুণে গৌরাঙ্গ পাব
অভিমানের খনি মোরা—কোন্ গুণে গৌরাঙ্গপাব
ভালবাসিতে জানি না মোরা—কোন্ গুণে গৌরাঙ্গ পাব
একমাত্র তোমার ভরসা নিতাই—নৈলে, গৌর পাবার কোনও আশা নাই
তুমি না কি,–অসাধনে যেচে বিলাও—তাই তোমার ভরসা নিতাই
পাত্রাপাত্র বিচার না ক’রে বিলাও—তাই তোমার ভরসা নিতাই
আমার,–কোন্ গুণে সে গৌর পাব
সে যে,–রূপ-সনাতনের সাধনের ধন—কোন্ গুণে সে গৌর পাব
সে যে,–দাস-রঘুনাথের সাধ্যনিধি—কোন্গুণে সে গৌর পাব
কোথা আমার প্রভু নিতাই
একচাকার সুধাকর—কোথা আমার প্রভু নিতাই
হাড়াই-পণ্ডিত-সূত—কোথা প্রভু নিতাই
হা নিতাই কোথা তুমি—এই ত’ তোমার বিহারভূমি
এ জগতে,–আমার ব’ল্তে আর কিবা আছে—দুঃখের কথা কারে বা জানাব
কেন,–তখন জনম দাও নাই মোদের
যখন,–প্রকট-লীলায় বিহরিলে—কেন,–তখন জনম দাও নাই মোদের
সে,–প্রেম-পুরুষোত্তম-লীলা—দেখিতে ত’ পাই নাই মোরা
স্থাবর-জঙ্গম,-প্রেমোনমত্তকারী-লীলা- দেখিতে ত’ পাই নাই মোরা
সে,- পাষাণ-গলান-লীলা- দেখিতে ত’ পাই নাই মোরা
সে,–কীর্ত্তন-নটন-লীলা—দেখিতে ত’ পাই নাই মোরা
সে,–পরাণ-গৌরাঙ্গ-লীলা—দেখিতে ত’ পাই নাই মোরা
সে,–লীলা-অদর্শন-শেল—নিশিদিশি জ্বলছে হিয়া
আমরা,–হেসে খেলে বেড়াইছি বটে—কিন্তু,–নিশিদিশি জ্বল্ছে হিয়া
পাঁজর পুড়ে ঝাঁঝর হ’ল—নিশিদিশি জ্বল্ছে হিয়া
এ,–দগ্ধ-হিয়া জুড়াব ব’লে—কেবল,–আশা-পথ চেয়ে আছি
শ্রীমুখে বলেছেন গৌরহরি
‘‘এই,–পৃথিবীর মধ্যে আছে যত দেশ গ্রাম। রে !
সর্ব্বত্র প্রচার হইবে মোর নাম।।’’ রে ! !
হা নিতাই প্রভু নিতাই—সে দিনের আর ক’দিন বাকী
আমরা দেখ্তেপাব’ না কি—সে দিনের আর ক’দিন বাকী
যেখানে যাব’ দেখ্তে পাব
আমরা,–চাই না তোমার গৌর চাই না
গৌর পাবার আমাদের, কোনও অধিকার নাই—চাই না তোমার গৌর চাই না
যেখানে যাব’ দেখ্তে পাব
ঘরে ঘরে সবাই ঝুর্ছে
ম্লেচ্ছ,–যবনাদি নরনারী—ঘরে ঘরে সবাই ঝুর্ছে
তোমাকেই ত’ দিয়াছেন ভার
নাম-প্রেমে জগৎ মাতাইবার—তোমাকেই ত’ দিয়াছেন ভার
নাম-প্রেমে বিশ্ব ভরিবার—তোমাকেই ত’ দিয়াছেন ভার
মোদের,–এই বাসনা পূরণ কর
আমরা,–তোমারই ত’ কিঙ্কর বটি
যদিও হই স্বতন্তরী—তোমারই ত’ কিঙ্কর বটি
বহুদিন বঞ্চি ত গৌর-ধনে
আর,–কা’কেও যেন রেখ’না বঞ্চিত
আমাদের মত দুর্দ্দেব-দোষে—আর, –কা’কেও যেন রেখ’না বঞ্চিত
জগজীবের দুর্দ্দৈব-রাশি—কুড়ায়ে ল’য়ে আমাদের দাও
আর,–তোমায় নিতে বল্ব না—কুড়ায়ে ল’য়ে আমাদের দাও
আম্রা এবার থাাকি বঞ্চিত
দুর্দ্দৈবের বোঝা মাথায় ল’য়ে—আমরা এবার থাকি বঞ্চি ত
হা নিতাই প্রভু নিতাই—গৌর-প্রেমে জগৎ মাতাও
হা,–‘‘পদ্মাবতী-সূত ময়ি প্রসীদ।’’
গৌর-প্রেমে মত্ত মহাবলী—এস এস আমার প্রভু নিতাই
প্রাণ-গৌরাঙ্গের আজ্ঞা ল’য়ে—তেমনি ক’রে আবার এস
তোমার,–অভিরাম গৌরীদাস সঙ্গে ক’রে—তেমনি ক’রে আবার এস
রামাই সুন্দরানন্দ সঙ্গে ক’রে—তেমনি ক’রে আবার এস
রামাই সুন্দরানন্দসঙ্গে ক’রে—তেমনি ক’রে আবার এস
তেমনি ক’রে সেধে যেচে—গৌর,–নাম-প্রেমে জগৎ মাতাও
হা,–‘‘সীতাপতি শ্রীঅদ্বৈতচন্দ্র।
হা নাথ শান্তিপুর-লোকবন্ধো।।’’
শান্তিপুর-নাথ ব’লে—জগভরি’ নাম র’টেছে
কত শত জন জ্বলে ম’র্ছে
আমাদের মত গৌর-বৈমুখী হ’য়ে—কত শত জন জ্বলে ম’র্ছে
ঘুচাও নামের কালিমা ঘুচাও
দেখাও নামের মহিমা দেখাও—ঘুচাও নামের কালিমা ঘুচাও
বুঝি, –তারাই এই নাম দিয়েছে তোমায়
তুমি,- যাদের এনে দেখায়েছিলে- বুঝি,-তারাই এই নাম দিয়েছে তোমায়
‘তুমি,-যাদের এনে দেখায়েছিলে’-
ব্রজের নিকুঞ্জ-বিলাস-বৈভব- যাদের এনে দেখায়েছিলে
স্বর্ন-পঞ্চালিকা ঢাকা নীলমণি- যাদের এনে দেখায়েছিলে
তারা,–গৌর দেখে হিয়া জুড়ায়েছিল
তাই,–তারাই এই নাম দিয়েছিল
ম’লাম্ ম’লাম্ জ্বলে ম’লাম্
গৌর-ধনে বৈমুখী হ’য়ে-ম’লাম্ম’লাম্ জ্বলে ম’লাম্
শান্তিপুর-নাথ ব’লে—আমরা তোমায় কেন বা ব’ল্ব
তোমার,–আনানিধি গৌরহরি—কৈ,–আমাদের ত’ দেখালে না
আমরা,–না দেখি তায় কোনও দুঃখ নাই
আমরা,–কা’রে ফেলে কেবা দেখ্ব
আমরা,–জগভরি’ সব ভাই ভাই—আমরা,–কা’রে ফেলে কেবা দেখ্ব
প্রতি-হৃদে তোমার আনানিধি—যদি দেখাও তবে দেখি
তখন আমরা চেয়ে ল’ব
সীতানাথ,–একবার আমাদের গৌর দেখাও
বাসনা পূরণ হ’য়ে গেছে—সীতানাথ,–একবার আমাদের গৌর দেখাও
হা,-শ্রীঅচ্যুত-তাত ময়ি প্রসীদ।।”
তেমনি ক’রে- আর একবার চেয়ে দেখছ
তোমার,- গৌর-বিমুখ-জগৎপানে-তেমনি ক’রে,- আর একবার চেয়ে দেখছ
ওহে,-মহাবিষ্ণু জগতকর্ত্তা– তোমার জগত্ তুমি রাখ
আমরা,-কত ডাকছি ডাক্ পৌঁছায় না – তুমি,- তেমনি করে আবার ডাক
জগজীবের প্রতি-হৃদে বসি- তেমনি ক’রে আবার ডাক
এবার,-গঙ্গাতীরে ব’স্লে হবে না- প্রতি-হৃদে ব’সে ডাক
প্রাণ-কৃষ্ণ এস ব’লে-তেমনি ক’রে আবার ডাক
শ্রীমুখে বলেছেন গৌরহরি
নিদ্রাভঙ্গ হইল মোর নাঢ়ার হুঙ্কারে।” রে!!
অদ্বৈত-লাগি মোর এই অবতার- পুনঃ পুনঃ বলেছেন গৌরহরি
জগজীবের প্রতি-হৃদে ব’সে-তেমনি ক’রে আবার ডাক
প্রাণ-গঊর এস ব’লে- তেমনি ক’রে আবার ডাক
জগত্ শান্তিময় হউক্-প্রতি-হৃদে প্রাণ-গৌর দেখাও
হা শ্রীম মাধবাচার্য্যস্য পুত্র।।
শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেম-রস—বিলাস।
হা শ্রীগদাধর কুরুতে ঙ্ঘ্রিদাসম্।।’’
জীবের মায়িক-বন্ধন ছিন্ন ক’রে—গৌ-সম্বন্ধের বন্ধনে বাঁধ
গদাধর তোমার,–নিজ শক্তি সঞ্চারিয়ে এবার—গৌরগত প্রাণ ক’রে দাও
জীবনে গৌর মরণে গৌর গৌর গলার হারা।।’’ রে ! !
নিশিদিশি বহুক্-ধারা
আমার,–গদাধরের প্রাণ গৌর ব’ল্তে—নিশিদিশি বহুক্ ধারা
শ্রীঅদ্বৈত-প্রেম-করুণৈকপাত্র।।
হা শ্রীগৌরাঙ্গ-ভক্তাগ্রগণ্য।
হা,–শ্রীবাস-পণ্ডিত ভব মে প্রসন্ন।।’’
তোমার অঙ্গনের নাটুয়া মুরতি—প্রতি-হৃদে নাচাও হে
চিতচোর,–রসরাজ গৌরাঙ্গ-নট—প্রতি-হৃদে নাচাও হে
জগবাসী নরনারী সবাই- হৃদে ধরুক্ আর গুণে ঝুরুক্
প্রাকৃত,-ভোগবাসনা পাসরুক্-হৃদে ধরুক আর গুণে ঝরুক্
সহচর সঙ্গে, রঙ্গে পঁহু গৌরক,
হেরব নদীয়া-বিহার।। রে ! !
সুরধুনী-তীরে, নটনরসে পঁহুমোর,
করব কীর্ত্তন-বিলাস। রে !
সো কিয়ে হাম, নয়ন ভরি হেরব
পূরব চির—অভিলাষ।।’’ রে ! !
‘‘গমন নটন-লীলা’’,
আমার,-গৌরাঙ্গ্-নাটুয়ার—গমন নটন-লালী
মধুর-চাহনি আকর্ষণ। রে !
রঙ্গ বিনে নাহি অঙ্গ, ভাব বিনে নাহি সঙ্গ,
রসময় দেহের গঠন।।’ রে ! !
‘‘জননী-সম্বোধনে, যব ঘরে আওয়ব,
করব ভোজন-পান।।’’ রে !
মধ্যাহ্নকালে—শচী-মা ডাক্বেন
এস বাপ নিমাই ব’লে—শচী-মা ডাক্বেন
ভোজনের বেলা হ’ল ব’লে—শচী-মা ডাক্বেন
হেরব সো চাঁদ-বয়ান।। রে ! !
শ্রীবাস-ভবনে যব নিজগণ-সঙ্গহি,
বৈঠব আপন ঠামে।
দক্ষিণে শ্রী, নিত্যানন্দ ছত্র ধরি,
পণ্ডিত-গদাধর বামে।।
এ রামানন্দ , আনন্দে কি হেরব,
সফল করব দু’নয়ানে।।’’
হা শ্রীবাস-পণ্ডিত-কতদিনে কৃপা হবে
তোমার অঙ্গনে গঊরাঙ্গ-বিহার-কবে বা দেখাবে
হা শ্রীগুরুদেব—কবে বা দেখাবে
নদীয়ায় গৌরাঙ্গ-বিহার—কবে বা দেখাবে
স্বতন্ত্রতা ঘুটাইয়ে—কবে,–অনুগত ক’রে—অনুগত ক’রে ল’বে
শ্রীধামের,–স্বরূপ গোচর হবে—কবে প্রেম-নেত্র দিবে
শ্রীধাম ত্রিজগদনুপম। রে !
নাম স্মরণে যাঁর, হয় প্রেম ভক্তি-সার,
হৃদয়ের নাশে তাপ-তম।। রে ! !
বেষ্টিত জাহ্নবী-নীরে, মিলিত মন্দ-সমীরে,
উঠে তীরে তরঙ্গ-আবলিত। রে !
চতুর্ব্বিধ-কমলে, গুঞ্জরত অলি-দলে,
তীরে নীরে দ্বিজ করে কেলি।। রে ! !
ফল-পুষ্পে সুশোভিত, সুরম্য-আরামাবৃত,
মধ্যে দিব্য কনকমন্দির। রে !
রবি জিনি প্রভা অতি, অভক্ত-অসুর প্রতি,
সোম-জ্যোতিঃ প্রতি ভক্তাদির।। রে ! !
তার মধ্যে সুবিস্তার, কুর্ম্ম-পৃষ্ঠ আকার,
হেম-পীঠে রত্ন-সিংহাসন। রে !
মন্ত্র-বর্ণ-যন্ত্রান্বিত, ষট্ কোণ মনোরমিত,
তদুপরি দিব্য পুষ্পাসন।। রে ! !
তার,–মধ্যে গৌরকৃষ্ণেশ্বর, দক্ষিণে নিতাই হলধর,
বামে গদাধর রাধারূপ।
অগ্রে দেবদেবাদ্বৈত, দক্ষিণেতে ছত্র-হস্ত,
পণ্ডিত-শ্রীবাস ভক্তভূপ।।
চতুর্দ্দিকে মহানন্দ,– ময় গৌর-ভক্তবৃন্দ,
স্বানন্দদাতা সিংহাসন-পাশে।’’
শ্রীগুরু স্বানন্দদাতা—সিংহাসন-পাশে দাঁড়ায়ে
অনুগত-শিষ্যে—ইঙ্গিত ক’রে দেখাইছেন
দিব্য-পুষ্পাসনোপরি—ঐ চেয়ে দেখ বাপ
অখিল-রসের মুরতি—ঐ চেয়ে দেখ বাপ
সরবস-নিধি তোমার—ঐ চেয়ে দেখ বাপ
নিতাই গৌরাঙ্গ গদাই—ঐ চেয়ে দেখ বাপ
‘নিতাই গৌরাঙ্গ গদাই’—
অনঙ্গ কানাই রাই—নিতাই গৌরাঙ্গ গদাই
‘‘কি মোর অসত-মতি, চরণে না হ’ল রতি,
ধিক্ রহু এ মোহনদাসে।।‘’
জয়,–‘‘খণ্ডবাসী নরহরি’’
গৌর-প্রেমের হাট বসায়ে—ল’য়ে এস প্রেমের গাগরী
প্রেমের রমণী নরহরি—ল’য়ে এস প্রেমের গাগরী
আমরা শুনেছি শ্রীগুরু-মুখে
মত্ত কৈলা গৌরাঙ্গ-নাগরে। রে !
মাতিলসে নিত্যানন্দ, আর সব ভক্তবৃন্দ,
বেদবিধি পড়িল ফাঁপরে।।‘’ রে !!
পিয়াও সবে ধরি ধরি
শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেমমধু-পিয়াও সবে ধরি ধরি
মুখে ব’লে গৌরহরি—প্রেমে মাতুক নর-নারী
জয়,–স্বরূপ রূপ সনাতন রায়-রামানন্দ।।’
গোদাবরী-তীরে যা দেখেছিলে—কৃপা করি জগজীবে দেখাও
নৈলে,-তোমার স্বার্থপর বলিব-কৃপাকরি জগজীবে দেখাও
নিগম-নিগূঢ়-গৌররহস্য-প্রতি-জীবে ভোগ করাও
করযোড়ে রামারায় বলে
গোদাবরী-তীরে প্রাণ-গৌর দেখে—করযোড়ে রামরায় বলে
তোমায়,–প্রথমে দেখিলাম সন্ন্যাসী-রূপ
তার পরে দেখিলাম শ্যাম গোপরূপ
তার কান্তিতে শ্যাম-অঙ্গ ঢাকা
আমি তোমায় চিনেছি হে
তখন,–দেখায় গোরা রসভূপ
রামরায়ে নিজরূপ—দেখায় গোরা রসভূপ
মহাভাব রসরাজ—রাই কানু একত্র মিলন
কিন্তু,–বিপরীত ভাবে অবস্থিতি
রাই কানু, কানু রাই
বিলাস-বিবর্ত্ত মূরতি
সে মূরতি একবার দেখাও
জয়,–পঞ্চ পুত্র-সঙ্গে জয় জয় রায়-ভবানন্দ,
জয়,–কাশীমিশ্র সার্ব্বভৌম’’
ও ভাগ্যবান্ কাশীমিশ্র—দয়া ক’রে দেখাবে কি
গম্ভীরার গুপ্তনিধি—দয়া ক’রে দেখাবে কি
মহাভাবের মূরতি—দয়া ক’রে দেখাবে কি
জয়,–‘‘কাশীমিশ্র সার্ব্বভৌম’’
প্রাণে প্রাণে ব’লতে দাও হে
প্রাণে প্রাণে সবর্বস্ব ক’রে দাও হে
তোমার,–নিজ-স্বভাব সঞ্চারিয়ে—প্রাণ প্রাণে সবর্বস্ব ক’রে দাও হে
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য শচীসূত গুণধাম।
আমার,–এই জপ এই তপ এই লব না।।’’
জয়,–কানাইখুঁটিয়া শিখিমাহিতী গোপীনাথাচার্য্য।
জয়,–তিন পুত্র সঙ্গে জয় জয় সেন শিবানন্দ।।
জয়,–কাশীবাসী তপনমিশ্র জয় প্রকাশানন্দ।
জয়,–ছোট বড় হরিদাস’’
যেন আমাদেরভাগ্যে ঘটে
যেন আমরা ম’রতে্ পারি
গৌর-মূরতি হৃদয়ে ধরি—যেন আমরা ম’রতে্ পারি
গৌর-মূরতি হৃদে ধরি—যেন গৌর ব’লে মরি
জয়,–গিরীপুরী ভারতী আদি পুরী মাধবেন্দ্র।
জয়,–ছয় চক্রবর্ত্তী অষ্ট কবিরাজ চন্দ্র।।
জয়,–দ্বাদশ গোপাল আদি চৌষট্টি মহান্ত।
জয়,–বাসুদেব ঘোষ আদি বসু রামানন্দ।।’’
ওহে বসু রামানন্দ—বিতর সৌভাগ্য-কণা
শ্রীমুখে ব’লেছেনগৌরহরি
এই বাক্যে বিকাইনু বসুবংশের হাত।। রে !!
কুলীন-গ্রামে কথা কহনে না যায়। রে !
শুকর চরায় ডোম কৃষ্ণ-গুণ গায়।। রে !!
কুলীন-গ্রামের যেবা হয় ত’ কুক্কুর। রে !
সেহ মোর প্রিয় হয় অন্য রহু দূর।।’’ রে !!
ওহে বসু রামানন্দ—তোমার গ্রামের কুক্কুর কর
অনায়াসে গৌর কৃপা পাব—তোমার গ্রামের কুক্কুর কর
জয়,–শ্রীঅদ্বৈত-সীতাত্মজ শ্রীঅচ্যুতানন্দ।।
জয়,–কালিদাস ঝড়ু ঠাকুর’’
বৈষ্ণব-উচ্ছিষ্টে বিশ্বাস দাও হে
ও,–রঘুনাথের খুড়া কালিদাস—বৈষ্ণব-উচ্ছিষ্টে বিশ্বাস দাও হে
বৈষ্ণব-উচ্ছিষ্টে বিশ্বাসের বলে—তুমি,–অনায়াসে লাভ ক’রেছিলে
অলভ্য গৌর-চরণামৃত
যার একবিন্দু,–কেউ পরশিতে পায় না—সেই,–অলভ গৌর-চরণামৃত
ত
বৈষ্ণব-উচ্ছিষ্টে বিশ্বাসের বলে—তুমি তার,–তিন-অঞ্জলি পান কৈলে
জয়,–‘‘কালিদাস ঝড়ুঠাকুর জয় উদ্ধারণ দত্ত।’’
গৌর-প্রিয় ঝড়ুঠাকুর—নিজ-স্বভাব সঞ্চার কর
নিজ-স্বভাব সঞ্চার কর
ও,–নিতাই-প্রিয় উদ্ধারণ—গরব ক’রে ব’ল্তে দাও হে
তোমার,–নিজ-স্বভাব সঞ্চারিয়ে—গরব ক’রে ব’ল্তে দাও হে
আমার কুলের দেবা নিতাই—গরব ক’রে ব’ল্তে দাও হে
নিতাই বিনে নাহি জানি আন্। রে !
সাধন ভজন যত, আছয়ে অনেক মত,
মুঁই সে মূরখ অগেয়ান্ ।।’’ রে !!
সাধন ভজন—কারে বলে,–জানি না জানি না
জানিয়া পড়িনু পহুঁপায়।। রে !!
এ কথা অন্যথা ন’রে, অবশ্য করুণা হবে,
যদি হই বণিকের সুত।’’ রে !
যদি,–বণিক-কুলে জন্মে থাকি
তবে নিত্যানন্দ কৃপা হবে
বলিতে ঠাকুর অবধূত।।’’ রে !!
তবে কেন প্রাণ কাঁদে
দেখিবার লাগি—তবে কেন প্রাণ কাঁদে;
‘দেখিবার লাগি’—
নিতাই-গুণ শুনিলে—দেখিবার লাগি
করুণা করহ এইবার। হে !
দিয়েছি চরণে ভার, কর বা না কর পার
এ দাস বল্লভ কহে সার।।’’রে !!
ওহে ঠাকুর উদ্ধারণ—গরব ক’রে ব’ল্তে দাও
কুলের দেবতা নিতাই—গরব ক’রে ব’ল্তে দাও
নিতাইচাঁদের সপ্তগ্রাম বিহার–নিশিদিশি হিয়ায় জাগাও
জয়,–পুণ্ডরীক বিদ্যানিধি বক্রেশ্বর পণ্ডিত।।
জয়,–রাঘব পণ্ডিত গদাধর দাস।’’
রাঘর,–তোমার গৃহে ল’য়ে গিয়ে—প্রাণে প্রাণে অনুভব করাও
শ্রীগৌরাঙ্গ-মুখের বাক্য-প্রাণে প্রাণে অনুভব করাও
নিতাই-নর্ত্তনেগৌর-আবির্ভাব—প্রাণে প্রাণে অনুভব করাও
তোমার গৃহে,–গৌরাঙ্গের ভোজন-লীলা—প্রাণে প্রাণে অনুভব করাও
শচীমাতার রন্ধনে, শ্রীবাস-অঙ্গনে।।
নিত্যানন্দ-নর্ত্তনে, রাঘব-ভবনে।’’
নিতাই-নর্ত্তনে গৌর আগমন—প্রাণে প্রাণে অনুভব করাও
ও,–নিতাই-প্রিয় দাস গদাধর-কৃপা ক’রে ভোগ করাও
তোমার গৃহে নিত্যানন্দ-বিহার—কৃপা ক’রে ভোগ করাও
জয়,–‘‘রাঘব পণ্ডিত গদাধর দাস ভাগবতাচার্য্য।’’
ওহে ভাগবতাচার্য্য—আমাদের,–প্রাণে প্রাণে অনুভব করাও
প্রাণ-গৌরাঙ্গের মধুর-নৃত্য—আমাদের,–প্রাণে প্রাণে অনুভব করাও
তোমার মুখে শ্রীভাগবত শুনে—নৃত্য করিলেন তিন প্রহর
জয়,–‘‘ভাগবতাচার্য্য।
জয়,–অভিরাম গৌরীদাস নন্দন-আচার্য্য।
জয়,–পরমেশ্বর দাস পুরী গোসাঞি জয় জগদানন্দ।
জয়,–জগাই মাধাই চাপাল গোপাল জয় দেবানন্দ।।’’
যেন,–বৈষ্ণব-অপরাধ ঘটে না
যেন,–নিরপরাধে নাম লইতে পারি
এই,–কৃপাকর তোমরা সবে—যেন,–নিরাপরাধে নাম লইতে পারি
জয়,–ভূগর্ভ শ্রীলোকনাথ জয় শ্যামানন্দ।’’
ওহে ঠাকুর শ্যামানন্দ-শ্রীগুরুবাক্যে নিষ্ঠা দাও হে
শ্রীগুরুবাক্যে নিষ্ঠা হলে—বাসনা পূরণ হয় হে
হা শ্রীনিবাস হা নরোত্তম—বিতর ব্যাকুলতা-কণা
অবিচারে বিকাইতে শিখাও
নিজ-স্বভাব সঞ্চারিয়ে—অবিচারে বিকাইতে শিখাও
পরম-করুণ শ্রীগুরু-চরণে—অবিচারে বিকাইতে শিখাও
সেই সে উত্তমা গতি
শ্রীগুরু-চরণে রতি-সে সে উত্তমা গতি
জয়, উড়িয়া গৌড়িয়া আদি গৌরভক্তবৃন্দ
হইয়াছেন আর হবেন যত প্রভুর ভক্তবৃন্দ।।
তোমরা,–সবে মিলে দয়া কর’’
এইবার আমায় দয়া কর—হা,–পতিত-পাবন গৌরাঙ্গগণ
তোমরা,– ‘‘সবে মিলে দয়া কর আমি অতি-মন্দ
কপট,–কুটিনাটি ঘুচায়ে ভজাও শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য।।
আমার,–নিশিদিশি হিয়ায় জাগাও শ্রীগুরু-গৌরাঙ্গ।।
শ্রীসংকীর্ত্তন-রঙ্গে দেখাও শ্রীনিতাই-গৌরাঙ্গ।।
যেন,–ব্যাকুল-প্রাণে গাইতে পারি হা নিতাই গৌরাঙ্গ’’
‘‘ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
ভজনের দিন বয়ে যায় রে—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
‘ভজনের দিন বয়ে—
ও ভাই ভজ ভজ—ভজনের দিন বয়ে যায় রে
জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম[মাতন]
একবার,–প্রাণভ’রে গাও ভাই রে—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
‘একবার,–প্রাণভ’রে গাও’—
শ্রীগুরু-চরণ হৃ’দে ধ’রে—প্রাণভ’রে গাও
‘শ্রীগুরু-চরণ হৃ’দে ধ’রে—
অযাচিত-কৃপাকারী—শ্রীগুরু-চরণ হৃ’দে ধরে
প্রাণভ’রে গাও ভাই রে—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
‘একবার,–প্রাণভ’রে গাও’—বড় প্রাণারাম নাম—প্রাণভ’রে গাও
এ যে বড়,–প্রাণ-জুড়ান নাম—প্রাণভ’রে গাও ভাই রে নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
এ যে,–পাগল-বিকান নাম ভাই—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
‘এ যে—পাগল-বিকান নাম’—
এই নামে আমার পাগল পাগল—পাগল-বিকান নাম
‘এই নামে আমার পাগল পাগল’—একবার,–প্রাণভরে গাও’—
এখনি জুড়াবে হিয়া—একবার,–প্রাণভ’রে গাও ভাই রে
‘এই নামে আমার পাগল পাগল’—
এ যে, –পাগল-বিকান নাম ভাই—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
আ’মরি,–কত সাধের গাঁথা নাম ভাই—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
‘কত সাধের গাঁথা’—পাগলা প্রভু শ্রীরাধারমণের—কত সাধের গাঁথা
নিরজনে আপন-মনে বসে—কত সাধের গাঁথা
আমাদের গলায় পরাবে ব’লে—কত সাধের গাঁথা
‘সাধ্য সাধন নির্ণয় করে—কত সাধের গাঁথা
‘সাধ্য সাধন নির্ণয় করে’—
‘সাধ্য,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম’—সাধ্য সাধন নির্ণয় করে
‘সাধ্য,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম’—
সাধন, হরে কৃষ্ণ হরে রাম—সাধ্য,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
আ’মরি,–কত সাধের গাঁথা নাম ভাই—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
আমাদের—জীবনে মরণে গতি’রে—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
বড়,–প্রাণ জুড়ান নাম ভাই রে—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
‘বড়,–প্রাণ জুড়ান নাম’—
নামের প্রতি-বর্ণে পূর্ণামৃত-বড়,–প্রাণ-জুড়ান নাম
‘নামের প্রতি-বর্ণে পূর্ণামৃত’—
এইনাম,–অমৃত হ’তেও পরামৃত—নামের প্রতি-বর্ণে পুর্ণামৃত
বড়,–প্রাণ-জাড়ান নাম ভাই রে—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
‘এ যে,–পাষাণ-গলান নাম ভাই—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
‘এ যে,–পাষাণ-গলান নাম’—
‘এই নামে,–তরু নাচে মরা বাঁচে—পাষাণ-গলান নাম
‘এই নামে,–তরু নামে মরা বাঁচে,–
পাষাণ গলিয়া যায়—এই নামে,–তরু নাচে মরা বাঁচে
এ যে,–পাষাণ-গলান নাম ভাই-নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
ধন, পতি, প্রাণ আমাদের—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
‘ধন, পতি, প্রাণ’—
নিতাই ধন, গৌর পতি—ধন, পতি, প্রাণ আমাদের
‘নিতাই ধন, গৌর পতি’—
রাধা-শ্যাম প্রাণ আমাদের—নিতাই ধন, গৌর পতি
ধন,পতি, প্রাণ আমাদের—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
শ্রীশ্রী নাম-কীর্ত্তন পূর্ণ
যাদবায় মাধমায় কেশবায় নমঃ।।
গোপাল গোবিন্দ রামশ্রীমধুসূদন।।’’
(এই সব নাম প্রভুর আদি সংকীর্ত্তন।।)
‘‘গিরিধারী গোপীনাথ মদনমোহন।।
শ্রীচৈতন্য নিত্যানন্দ শ্রীঅদ্বৈত সীতা।
ভজ,–হরি গুরু বৈষ্ণব ভাগবত গীতা।।
জয় রূপ সনাতন ভট্ট রঘুনাথ।।’
শ্রীজীব গোপালভট্ট দাস রঘুনাথ।।’’
‘‘শ্রীনিবাস নরোত্তম প্রভু লোকনাথ।
রামচন্দ্র দাস্য দিয়া কর আত্মসাৎ।।
জয় জয় শ্যামানন্দ জয় রসিকানন্দ।
নিধুবনে নিত্যালীলায় পরম আনন্দ ।।’’
‘‘এই সব গোঁসাঞির করি চরণ-বন্দন।
যাহা হইতে বিঘ্ন-নাশ অভীষ্ট-পূরণ।
এই সব গোঁসাঞি যবে ব্রজে কৈলা বাস।
রাধাকৃষ্ণ-নিত্যলীলা করিলা প্রকাশ।।
এস সব গোঁসাঞি যাঁর তাঁর মুঁই দাস।
তাঁ’সবার পদরেণু মোর পঞ্চগ্রাস।।
তাঁদের চরণ সেবিভক্তসনে বাস।
জনমে জনমে হয় এই অভিলাষ
জয়,–জয় গৌর-ভক্তবৃন্দ গৌর যাঁর প্রাণ।
সবে মিলে দেহ মোরে প্রেমভক্তিদান।।
দন্তে তৃণ ধরি মুঁই করি নিবেদন।
কৃপা করি কর মোর অপরাধ মার্জ্জ।।
এইবার করুণা কর বৈষ্ণব-গোঁসাঞি।
এই,–কলি ভব তরাইতে আর কেহ নাই।।’’
‘‘মনের আনন্দে বল হরি ভজ বৃন্দাবন।
শ্রীগুরু-বৈষ্ণব-পদে মজাইয়া মন।।
শ্রীগুরু-বৈষ্ণব-পাদপদ্ম হৃ’দে করি আশ।
হরিনাম-সংকীর্ত্তন কহে নরোত্তম দাস।।’’
‘‘জয় শ্রীরাধারমণ, জয় শ্রীরাধারমণ।
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল, জয় শ্রীরাধারমণ।।
শ্রীনবদ্বীপের প্রাণধন, জয় শ্রীরাধারমণ
শ্রীললিতার সর্ব্বস্বধন, জয় শ্রীরাধারমণ।।
শ্রীরাধারমণের প্রাণ নিতাই, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।
বোল শ্রীনিত্যানন্দ, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।।
নিতাই নিতাই নিতাই নিতাই, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।
নিতাই বিনে আর গতি নাই, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।।
অগতির গতি নিতাই, বোলশ্রীনিত্যানন্দ।
আমাদের,–কুলের দেবতা নিতাই, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।।
আমাদের,–পাগলের প্রাণ নিতাই,বোল শ্রীনিত্যানন্দ।।
শ্রী,–গৌরাঙ্গ-বিলাসের তনু, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।।
শ্রী,–গৌরবশীকরণ-মন্ত্র, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।
অভিন্ন-চৈতন্য-তনু, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।।
বল নিতাই বোল নিতাই, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।
আমাদের,–সাধন ভজন নিতাই, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।।
পতিতের বন্ধু নিতাই, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।
নিতাই নিতাই নিতাই নিতাই নিতাই, বোল শ্রীনিত্যানন্দ।।
নিতাই,–নামে আমার গৌর পাগল বোল শ্রীনিত্যানন্দ।।
‘‘নিতাই এনেছে নাম, গৌরহরি হরিবোল।
আমার,–পাগল-নিতাই এর বোল, গৌরহরি হরিবোল।।
আমার নিতাই,–যারে, দেখে, তারে বলে, গৌরহরি হরিবোল।।’’
‘যারে দেখে তারে বলে’—
গৌরপ্রেমের পাগলা নিতাই—যারে দেখে তারে বলে
‘‘গৌরহরিবোল, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।।’’
নিতাই,–যারে দেখে তারে বলে, গৌরহরি বোল
দিয়ে,–আচণ্ডালে কোল বলে, গৌরহরি বোল
রাধারমণ বলে বোল, নিতাই-গৌরহরি বোল
ও ভাই,–বোল হরিবোল, নিতাই-গৌরহরি বোল
বোল হরিবোল, গৌরহরি বোল
গৌরহরি বোল, গৌরহরি বোল, গৌরহরি বোল।।”
প্রেমসে কহো শ্রীরাধে শ্রীকৃষ্ণ বলিয়ে—
প্রভু নিতাই শ্রীচৈতন্য অদ্বৈত শ্রীরাধারাণীকী জয় !
প্রেমদাতা পরম-দয়াল পতিত-পাবন শ্রীনিতাইচাঁদকী জয় !
করুণাসিন্ধু গৌরভক্তবৃন্দকী জয় !
শ্রীশ্রীনাম-সঙ্কীর্ত্তনকী জয় !
আপন আপন গুরুমহারাজকী জয় !
প্রেমদাতা পরমদয়াল পতিত-পাবন—
শিশু-পশু-পালক বালক-জীবন শ্রীমদ্রাধারমণকী জয়!
‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌরহরি বোল।।’’