‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
লীলারঙ্গিয়া-বিলাসী গৌরাঙ্গের—যাইরে লীলার বালাই যাইরে
মধুর শ্রীনবদ্বীপে—যাইরে লীলার বালাই যাইরে
মধুর গৌরাঙ্গ-লীলার—যাইরে লীলার বালাই যাইরে
দেখি’ ঋতুরাজ বসন্ত—আজ,–নবভাবের উদয় হল
ভাবনিধি প্রাণগৌরাঙ্গের—উপজিল নব-ভাব-তরঙ্গ
দেখি ঋতুরাজের আগমনে—উপজিল নব-ভাব-তরঙ্গ
জাগিল নব-লীলারঙ্গ
স্মঙরি পূরব রঙ্গ—জাগিল নব-লীলারঙ্গ
সুরধুনী-তীরে চলিলা।।’’
বাসন্তীরঙ্গে রঙ্গিয়া গৌর-আজ হোরি খেলবে বলে
ভাবনিধি গৌরাঙ্গ আমার—আজ হোরি খেলবে বলে
একদিকে গদাধর, সঙ্গে স্বরূপ দামোদর’’
হোরিরঙ্গে গদাধররূপ ধরি—সেই ত’ ভানুদুলারী
স্বরূপে ভিন্ন ভাবে অভিন্ন—সেই ত’ ভানুদুলারী
আজ হোরি খেলবে বলে—সেই ত’ ভানুদুলারী
বাসু ঘোষ গোবিন্দাদি মেলি।’’
মণ্ডলী বন্ধন করি—সারি সারি দাঁড়াইল রে
আজ হোরি খেলবে বলে—সারি সারি দাঁড়াইল রে
সহচরী সঙ্গে ভানুদালারী—সারি সারি দাঁড়াইল রে
গদাধর রাইকিশোরী—দাঁড়াইল সারি সারি
স্বরূপাদি নিজগণ মেলি—দাঁড়াইল সারি সারি
যেন,–সহচরী সঙ্গে ভানুদুলারী—দাঁড়াইল সারি সারি
সুরধুনী-পুলিনে—সারি সারি দাঁড়াইল রে
আজ হোরি খেলবে বলে—সারি সারি দাঁড়াইল রে
‘আজ হোরি খেলবে বলে’—
গৌরাঙ্গ-নাগর-সনে—আজ হোরি খেলবে বলে
দাঁড়াইল সম্মুখা সম্মুখী
গৌরাঙ্গ-শ্যাম-গদা-কিশোরী—দাঁড়াইল সম্মুখা সম্মুখী
নিজ নিজ যূথ প্রবন্ধ করি—দাঁড়াইল সম্মুখা সম্মুখী
‘‘গৌরীদাস আদি করি,’’
এবে,–গৌরীদাসরূপে দেখা—সেইত ব্রজের সুবল সখা
শ্যাম-নগরের সহায় সেরা—সেইত ব্রজের সুবল সখা
হোরিরঙ্গে,–শ্যাম-নাগরের সেনাপতি—সেইত ব্রজের সুবল সখা
গদাধরের অঙ্গে দেয় ফেলি।।’’
ও স্বরূপ তোমার গদাধরে—সামাল সামাল বলি
এ যে মোদের হোরি খেলা—এ ত,–ঘরের কণে বসে কাঁদা নয় হে
এ ত নয়,–ঘরের কণে বসে ক্রন্দন—একে বলে হোরিবরণ
তখন,–স্বরূপ নিজগণে-সাথে, আবির লইয়া হাতে,’’
হোরিরঙ্গে,–কিশোরী-মণির সেনাপতি,–সেইত ব্রজের ললিতা সখী
হোরিরঙ্গে,–ভানু-নন্দিনীর সেনাপতি,–সেইত ব্রজের ললিতা সখী
এ হো,–সঘনে ফেলায় গোরাগায়।’’
ও গৌরীদাস,–তোমার প্রাণ-গোরাঙ্গে—সামাল সামাল বলে
এ ত,–হরি বলে নাচা নয় হে
একে বলে হোরি খেলা—এক ত’,–হরি বলে নাচা নয় হে
গোরীদাস খেলি খেলি, গৌরাঙ্গ জিতল বলি,
করতালি দিয়া আগে ধায়।।’’
গৌরাঙ্গের সঙ্গে হোরিখেলায়—আজ গদাধর হারি গেল
আজ মেনে হোরিখেলায়—গৌরাঙ্গ জিতল
গদাধর হেরে গেল—গৌরাঙ্গ জিতল
গৌর,–হোলিখেলায় জিতেছে—বলতে কি লাজ বাস না হে
গদাধরের সনে কোন খেলায়—বলে,–কোন কালে সে জিতেছিল
জিতেছি,–বলতে কি লাজ বাস না হে
হারুয়ার সঙ্গে তাক হারাই দশা—জিতেছ,–বলতে কি লাজ বাস না হে
হারাই ত’ তোমাদের ব্যবসা—জিতেছি,–বলতে কি লাজ বাস না হে
ছিঃ ছিঃ,–শুনে আমরা লাজে মরি— হেরে গিয়ে বলছ জিতেছি
জিতল আমার গদাধর।”
গদাধর সনে হোরিখেলায়–হারিলা গৌরাঙ্গ–রায়
গৌরাঙ্গ হেরে গেল—গদাধর জিতল
কক্ষতালি দিয়ে কেহু, নাচে ঊর্দ্ধবাহু।।’’
গদাধর গৌরাঙ্গ খেলে—বলে,–হো হো হোরি
‘গদাধর গৌরাঙ্গ খেলে’—
নদীয়ায় সুরধুনী-পুলিনে—গদাধর গৌরাঙ্গ খেলে
দাঁড়াইল সবে দুই দলে
সম্মুখা সম্মুখী হয়ে—দাঁড়াইল সবে দুই দলে
গৌরাঙ্গ হারিল –কেউ বলে,–গৌরাঙ্গ জিতল
গদাধর হারিল—কেউ বলে,–গৌরাঙ্গ জিতল
গৌরাঙ্গ জিতল—গদাধর জিতল
গদাধর হারল—গৌরাঙ্গ হারল
হোরি-খেলায় মধুর—নদীয়ায়—আনন্দের পাথার বয়ে যায়
গদাধর গৌরাঙ্গের হোরিলীলা—দাস,–মনোহরের মন হরে নিল
যমুনা সিনানে কোই নাহি যাব।।’’
যমুনা সিনানে যেও না—ঘরের বাহির হয়ো না গো
যমুনা সিনানে কেউ যায় নারে—ঘরের বাহির হতে নারে
পন্থহি পন্থ ঘেরল চতুর চৌওর।’’
যমুনা সিনানে জল আনিবারে—আর যাবার পথ নাই
বটু সুবল দুহুঁ ভেল এক ঠাম।
যূথহি যূথ করল নিরমাণ।।
ভরি পিচকারী লেই সভে হাত।
ঘন বরিখন জনু পড়তহিঁ মাথ।।’’
বরিষার ধারার মত—পিচকারী ধারা পড়ছে
ব্রজের পথ হল সব—লালহি লাল হো
দিকবিদিক চেনা যায় না—লালহি লাল হো
কহ গোবর্দ্ধন রহ গৃহ-মাহ।
কোই নাই মন্দির ছোড়ি বাহিরাহ।।
ব্রজের পথে কেউ যেও না গো
বাহিরে গেলেই বড়ই বিপদ
হোরি খেলে ব্রজরাজ—বাহিরে গেলেই বড়ই বিপদ
ঝক্কা ঝোরি আবির উড়াওত,—‘‘আজুরে সখা সঙ্গে খেলত হোরি।’’
বর্ষাণকা মহল পর,–‘‘ঠারিদেখত বৃষভানু-দুলারী।। (চুটকী)
ললিতা কর ধরি,–‘‘হাসি বোলত বৃষভানু-দুলালী।
যমুনা সিনান ছলে,–‘‘ঝাঁপি বসনে সভে লেহ পিচকারী।
আজু সব সখী মেলি,–‘‘হোরিরঙ্গে ভেটব গিরিবরধারী।।
এদিন হোরি আনন্দে।’’
আজ কেন ঘরে বসে রইলি
আবেশে বলে ললিতা দেবী—আজ কেন ঘরে বসে রইলি
জিতব আন পরবন্ধে।।’’
শ্যাম-নাগর হোরি খেলবে—তাতে আবার ভয় কি আছে
যমুনা অবগাহন, চলব আন ছলে,
সবহুঁ ভরি লেহ রঙ্গে।।’’
যমুনার জল আনবার ছলে—রং ভরি কুম্ভ কক্ষে লও গো
বসনে ঝাঁপি পিচকারী।
তঁহি চলতঁহি যঁহি, শ্যাম সোহাগিনী,
ধনী বৃষভানু-কুমারী।
কালিন্দী-তীর, সবহুঁ ঊজোরল,
নিভৃত-নিধুবন-পাশ।’’
ব্রজবালা চাঁদের মালা—সারি সারি চলিল রে
সহচরী-সনে ভানুদুলারী—আলো করে চলেছে পথে
অপরূপ রূপের ছটায়—আলো করে চলেছে পথে
নিভৃত-নিধুবন-পাশ।’’
পরাণ বঁধুর সনে—কতক্ষণে মিলব বলে
সবহুঁ অধিক উল্লাস।।’’
‘‘রসবতী রাই, খেলত ফাগু সখী সঙ্গে,
আজু,–কি আনন্দ-বৃন্দাবনে—‘‘রসবতী রাই, খেলত ফাগু সখী সঙ্গে,
নিরুপম কান মাঝ।’’
সখী সঙ্গে কানন মাঝে—রসবতী রাই ফাগু-খেলে
এ কথা,–শুনাইতে সখা সঙ্গে,তুরিতঁহি সাজিয়া,
দূর সঙ্গে হেরি,চরিত ভেল দুহুঁ জন,’’
আঁখির পলক পড়ে নারে—অনিমেষে চেয়ে রইল
কখনও,–দেখে নাই যেন নূতন দেখা—কারো,–না চলে পা না সরে রা
কেউ,–যেন কখনও দেখে নাই—সবে,–এই যেন নূতন দেখা
শ্যাম-নাগর সেজে এল—দেখ সখী চেয়ে দেখ
সখা সঙ্গে হোরি খেলবে বলে—রসিক-নাগর সেজে আসছে
দেখ দেখ সখী দেখ
ঐ,–সখা সঙ্গে আওল নাগর-বর—দেখ দেখ সখী দেখ
আজ,–‘‘ঘের সবে করি চতুরাই।।’’
যেন কোথাও পলাতে নারে
সব সখী মেলি,–ওরে এমনি করে ঘের—যেন কোথাও পলাতে নারে
কপট-নাগর-বরে—ঘের ঘের রে
কুঞ্জ-বনসে না নিকসে কানাইয়া।’’
ললিতা বিশাখা আদি করি।
সুমুখা সুমুখী দুহুঁ, ছুটে পিচকারী মুহু,
রঙ্গ গোলাল বহু ভরি।।’’
আহারে,–‘‘সব সখী মেলি, ঘের রি,
কুঞ্জ-বনসে সহ,আগে মেল তঁহি,
‘‘এহো,–শ্যামরু নটবর-রায়।
উড়ত গোলাল, লাল ভেল দশদিশ’’
,
সখী সঙ্গে ফাগু খেলে—লালহি লাল হে
ঘের রি,–সব সখী মেলি, ঘের রি
কুঞ্জ-বনসে না নিকসে কানাইয়া।।
লাখে লাখে পিচকারী, মেলি সব সহচরী,
এহো,—ভারত শ্যামরু গায়।
মধুমঙ্গল সহ, সুবল পলাওল,’’
আজকের গতিক ভাল নয়—পালারে পালারে সুবল
খেলার গতি ভাল নয়—পালারে পালারে সুবল
আজ,–গোয়ালিনী খেপেছে—পালারে পালারে সুবল
আনন্দে থেহ নাহি পায়।।
আজুরে,–সব সখী মেলি, ঘের রি ,
কুঞ্জ-বনসে না নিকসে কানাইয়া।।’’
সুবল পলায়ে গেল—আর,–কারে লয়ে খেলবে বল
আর পালাপার পথ নাই হে—বিশাখা তখন,–কোথা পালাবে বলে
কত সাজা দিবে বলে—যেন,–চোর ধরে আনল রে
পুরুষ হয়ে রমণী মাঝে—ছিঃ ছিঃ নাগর হারলে হে
কেউ নাই একা—কেঁদে যে পড়ল নাগর
শ্যাম-নাগরে কাঁদায়েছি
বঁধু তোমার ভয় কি
এই যে তোমার আমি আছি—বঁধু তোমার ভয় কি
খেলতে গেলে অমন হয়ে থাকে—একবার হেরেছ তা কি হয়েছে
হার জিত্ খেলার রীতি—একবার হেরেছ তা কি হয়েছে
এবার হারিবা যদি, ফাগুহারা নিরবধি,’’
হারুয়া প্রাণ আমার,–এবার হারিবা যদি,ফাগুহারা নিরবধি,
রটে দিব ব্রজভরে
এবার যদি খেলায় হার—রটে দিব ব্রজভরে
ফাগুহারা শ্যাম বলে—রটে দিব ব্রজভরে
হাতে আর কি হযেছে,–
তোমার,–সঙ্গীগণ সব পলায়েছে—
একা কেমন করে খেলবে—একথা,–বললে তুমি বলতে পার
তোমার,–সকল অভাব পূরণ করব—কোন চিন্তা করো না হে
সঙ্গী হারা হয়েছ তাই—সযূথে বিশাখা তোমায় দিলাম
তোমার হয়ে খেলবে তারা—সযুথে বিশাখা তোমায় দিলাম
তুমি—কেমন খেলুয়া তাই দেখে নিব—ছাড়ব না আজ খেলতে হবে
ললিতা আমার সখী, আইস আবার খেল দেখি,
জানা যাবে কেমন খেলুয়া।।’’
তোমার,–যা চাই সব পূরণ করব-তোমায়,–খেলতে হবে ছাড়ব না হে
এ ত,–গোঠে মাঠে ঘুরা নয় হে
হৈ হৈ করে ধেনু পাল লয়ে—এ ত,–গোঠে মাঠে ঘুরা নয় হে
গহন বনে বাঁশী বাজায়ে—এ ত,–অবলা মজান নয় হে
যদি বল রং নাই, রং লেহ যত চাই,’’
দেবী পৌর্ণমাসীর কৃপায়—আমার,–রাজ-ভাণ্ডারে অভাব কিসের
তোমার মত,–গোটা কতক ধেনু পুঁজি নয় হে-–আমার, রাজ-ভাণ্ডারে অভাব কিসের
সকল অভাব পূরণ করব—তোমায় আবার খেলতে হবে
পিচকারী যদি নাই থাকে, দিব আমি লাখে লাখে
যত চাবে পাবে হে বঁধুয়া।।’’
তোমার,–সকল অভাব পূরণ করব—খেলতে হবে ছাড়বে না হে
হেন নাম হইল হারুয়া।’’
আমরা দুঃখে মরে গেলাম—ছিঃ ছিঃ –তোমার নামে কলঙ্ক হল
ছিঃ ছিঃ আমরা লাজে মইলাম—তোমার,–কত বড় নামে কলঙ্ক হল
ছিঃ ছিঃ আমরা লাজে মইলাম’—
শ্যাম,–হেন নাম হইল হারুয়া—ছিঃ ছিঃ,–আমরা লাজে মইলাম
তোমার,–অত বড় নাম ডুবে যায় হে—ছিঃ ছিঃ,–আমরা লাজে মইলাম
তোমার,–অতবড় নাম ডুবে যায় হে’—
রমণী সনে হোরি খেলায় হেরে—তোমার,–অত বড় নাম ডুবে যায় হে
বীরত্ব তোমার কোথায় গেল
যদি,–নারীর সঙ্গে হেরে গেলে—বীরত্ব তোমার কোথায় গেল
এবার নামের কালিমা ঘুচাও
আজ হোরি খেলাতে—এবার নামের কালিমা ঘুচাও
খেল আবার হোলি খেল—ভয় কি আছে শ্যাম-নাগর
আনন্দে,–খেল বটু ফাগু যোগাবে—ভয় কি আছে শ্যাম-নাগর
বটু তোমার ফাগু যোগাবে—কেন,–শ্যাম তোমার ভয় কি আছে
ললিতা বিশাখা—দুই জনে দাঁড়াইল রে
পরস্পর সম্মুখা-সম্মুখী—দুই জনে দাঁড়াইল রে
হোরিবরণ করবে বলে-দুই জনে দাঁড়াইল রে
হোরি খেলায় পাগল হল
রাইসনে শ্যামনাগর—হোরি খেলায় পাগল হল
‘‘আজুরে রঙ্গে,রঙ্গে হোরি,–খেলত শ্যাম গোরী।।
সখীগণ মেলি গাওত বাওত,’’
আজু কি আনন্দ বৃন্দাবনে—আনন্দের পাথার বয়ে যায় রে
‘‘সখীগণ মেলি গাও বাওত, কিশোর কিশোরী নাচি নাচাওত রে,’’
সখীগণ মেলিগাওত বাওত—কিশোর কিশোরী নাচি নাচাওত
আনন্দে মন ভোরি।তল লল তোরি।।
আজুরে রঙ্গে, হোরি,–খেলত শ্যাম গোরী।।’’
বাজে,–‘‘তথতথ তথতথৈয়া,’’
আজ,–হোরিরঙ্গে মৃদঙ্গ বাজে—বাজে,–‘‘তথতথ তথতথৈয়া,’’
কিশোর কিশোরী নাচে—হোরি রঙ্গে মৃদঙ্গ বাজে
চওল উল উলোরি।।’’
হোরিরঙ্গে মৃদঙ্গ বাজে,–‘‘চওল উল উলোরি।।’’
বাজে,–‘‘কুড়ু গুড়ু গুড়ু দাং,দ্রিমিদাং কিটধাং তৃগধাং,’’
আজুরে রঙ্গে, হোরি,–খেলত শ্যাম গোরী।।’’
ব্রজবনিতা ফাগু দেই শ্যাম-অঙ্গে।।
কানু ফাগু দেয়ল সুন্দরী-অঙ্গে
মুখ মোঢ়ল ধনী করি কত ঢঙ্গে।।’’
‘‘ফাগুরঙ্গে গোপী সব চৌদিকে বেড়িয়া।’’
আজ,–আনন্দের পাথার বয়ে যায় রে—কি আনন্দ বৃন্দাবনে
ফাগু খেলইেত ফাগু উঠিল গগনে।’’
হোরিরঙ্গে ভেল সব—লালহি লাল হো
রাঙ্গা ময়ূর নাচে গাছে রাঙ্গা কোকিল গায়।
রাঙ্গা ফুলেরাঙ্গা ভ্রমর রাঙ্গা মধু খায়।।
রাঙ্গা লতা রাঙ্গা পাতা রাঙ্গা বৃন্দাবন।
রাঙ্গা রাধা রাঙ্গা কৃষ্ণ রাঙ্গা গোপীগণ।।
রাঙ্গা বায়ে রাঙ্গা হল কালিন্দীর পানী।
গগনে ভুবন দিক বিদিক নাহি জানি।।
রতি জয় রতি জয় দ্বিজ কুলে গায়।
এ রাধা মোহন হেরে নয়ন জুড়ায়।’’
চৌদিকে ব্রজবধূ পথ নাহি পায়।।’’
সঙ্গীসব পলায়েছে—ফাঁপরে পড়িল শ্যাম-নাগর
পলাইবার পথ নাই—ফাঁপরে পড়িল শ্যাম-নাগর
‘পলাইবার পথ নাই’—
ব্রজবধূ চৌদিকে ঘিকেছে—পলাইবার পথ নাই।
হারিনু হারিনু শ্যাম বলে বারে বারে।।
করসঙ্গে মুরলী ভূমেতে পড়ে খসি।’’
পুরুষ হয়ে নারীর সনে—ছিঃ ছিঃ নাগর হারলে
আজ এই হোরিখেলায়– ছিঃ ছিঃ নাগর হারলে
শ্যামেরে কাতর দেখি রসবতী রাই।’’
বঁধূর চাঁদমুখ হয়েছে মলিন—আর কি ধনী রইতে পারে
অরুণ বসন দিয়া ওমুখ মুছাই।।’’
তোমার,–কেউ কিছু বলিস না গো—আইস আমার পরাণ বঁধু
বঁধুর,–চাঁদমুখ হয়েছে মলিন—তোরা,–তোরা,–আর কিছু বলিস না গো
এই যে তোমার আমি আছি—বঁধু তোমার ভয় কি
তোমায়,–দুঃখ দিয়ে আমার কিসের খেলা—আইস আমার পরাণ বঁধু
যত খেলা তোমার সুখের লাগি—আসি আমার পরাণ বঁধু
শ্রীরতিমঞ্জরী দোঁহে চামর ঢুলায়।’’
সখীগণ সবাই মিলে—ভোগের আয়োজন করে
মিষ্টান্ন পক্কান্নাদি—ভোগের আয়োজন করে
শ্রীরতিমঞ্জরী দেই সুবাসিত জল।
এ রাধামোহন হেরি নয়ন সফল।।’’
রাধামোহনের নয়ন সফল হল
আজ হোরিরঙ্গ দেখে—রাধামোহনের নয়ন সফল হল
বসন্তবিহার দেখে—রাধামোহনের নয়ন সফল হল
রাধাশ্যামের নবনব কেলি—নিতুই যেন এমনি দেখি
হোরিরঙ্গে বিহরিতে—শ্যামাঙ্গ গৌরাঙ্গ হল
অঙ্গে অঙ্গ মিলনে—শ্যামাঙ্গ গৌরাঙ্গ হল
জয় রাধা রাধারমণ বোলে—প্রাণভরে জয় দেগো
‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌর-হরিবোল।।’’