শ্রীশ্রীরাধারমণো জয়তি
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’
‘‘ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
পরম-করুণ শ্রীগুরুদেব—দয়া করে দিলেন এই নাম
অহৈতুকী-কৃপা-স্বভাবে—দয়া করে দিলেন এই নাম
সাধ্য-সাধন-নির্ণয়-করা—দয়া করে দিলেন এই নাম
সাধ্য,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
সাধন,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম
সাধ্য-সাধন-নির্ণয়-করা নাম
আবার,–অতিগূঢ়-রহস্য আছে এই নামে
আশ্রয়-জাতীয়-সাধন-ক্রমে—আবার,–অতিগূঢ়-রহস্য আছে এই নামে
তাই,–আগে নিতাই পিছে গৌর—নিতাই আশ্রয়, গৌর বিষয়
শ্রীসেবা-বিগ্রহ নিতাই আমার—ভূমি প্রস্তুত করে দেয় রে
বিলাসী-গৌরাঙ্গ-বিলাসের—ভূমি প্রস্তুত করে দেয় রে
ভূমি প্রস্তুত হলে পরে
বিলাসি-গোরা আসি’ খেলা করে
ডাকতে হয় না বলতে হয় না—বিলাসী-গোরা আসি’ খেলা করে;
রসের গোরা খুঁজে বেড়ায়
বিলাসি-গোরা খুঁজে বেড়ায়
বিশুদ্ধ-চিত্ত আছে কোথায়—বিলাসি-গোরা খুঁজে বেড়ায়
আশ্রয়-তত্ত্বের মূল-সম্পত্তি—চাঁদ,–নিতাই আমার শুদ্ধ স্বর্ণ
গৌর,–অনুরাগ-সোহাগায় শোধন-করা—চাঁদ,–নিতাই আমার শুদ্ধস্বর্ণ
চাঁদ,–নিতাই আমার শুদ্ধস্বর্ণ—ধারায় পরশমণির বর্ণ
যারে তারে পরশ করে—ধরায় পরশমণির বর্ণ
সোনা ছুঁলে পরশ হয়—কে কোথায় শুনেছ
লোহা,–সোনা হয় পরশ-পরশনে—জগজনে এই ত’ জানে
পরশমণি বলে যারে—সেও ত’ ধাতুর বিচার করে
এ-যে বিপরীত গতি রে
প্রাণ-গৌরাঙ্গের প্রেম-রাজ্যে—এ-যে বিপরীত গতি রে ;
যারে তারে পরশ করে
নিতাই-সোনা পরশ করে—যারে তারে পরশ করে
পরশেরও অপেক্ষা রাখে না
ভাই রে, –এমনি আমার নিতাই-সোনা—পরশেও অপেক্ষা রাখে না
আমার নিতাই—সোনার নাম—শুধু,–মুখে বলা বা কানেতে শুনা
নিতাই নিতাই নিতাই নিতাই—শুধু,–মুখে বলা বা কানেতে শুনা
হেলায় শ্রদ্ধায় নিতাই নিতাই—বললেই হয় বা শুনলেই হয়
হেলায় শ্রদ্ধায়,–নিতাই নিতাই বল্তে শুন্তে—চিত্ত-দর্পণ মার্জ্জিত হয়
দুর্ব্বসনা-মালিন্য ক্ষালিত হয়ে—চিত্ত-দর্পণ মার্জ্জিত হয়
‘দুর্ব্বাসনা-মালিন্য ক্ষালিত হয়ে’—
অনাদিকালের সঞ্চিত যত –দুর্ব্বাসনা-মালিন্য ক্ষালিত হয়ে
চিত্ত-দর্পণ মার্জ্জিত হলে
হেলায় শ্রদ্ধায়,–নিতাই নিতাই বল্তে শুন্তে –চিত্ত-দর্পণ মার্জ্জিত হলে
পরশমণির খনি অমনি—হৃদয়ে জাগে রে
‘পরশমণির খনি’—
মহা,–ভাব-প্রেম-রসময়—পরশমণির খনি
সৌন্দর্য্যের সার, মাধুর্য্যের পার—পরশমণির খনি
‘সৌন্দর্য্যের সার মাধুর্য্যের পার’—
মহাভাবের আধার—সৌন্দর্য্যের সার মাধুর্য্যের পার
অপ্রাকৃত,–পরশমণির খনি –হদয়ে জাগে রে
মূর্ত্তিমান্ হয়ে খনি—হৃদয়ে জাগে রে
‘মুর্ত্তিমান, হয়ে’—
‘কীর্ত্তন-নাটুয়া-বেশে’—মূর্ত্তিমান হয়ে
‘কীর্ত্তন-নাটুয়া-বেশে’—
রসাবেশে হেসে হেসে—কীর্ত্তন-নাটুয়া-বেশে
নিতাই নিতাই বল্তে শুন্তে—হৃদয়ে গৌর উদয় হয় রে
‘নিতাই নিতাই বল্তে শুন্তে’—
গৌর-বশীকরণ-মন্ত্র –নিতাই নিতাই বল্তে শুনতে
অদ্বৈত-বলে বলী হয়ে–নিতাই নিতাই বলতে শুনতে
গদাধরের –কূলে দাঁড়ায়ে—নিতাই নিতাই বলতে শুনতে
নরহরির আনুগত্য—নিতাই নিতাই বল্তে শুনতে
নিশিদিশি গুণেতে কাঁদায়
হৃদয়ে গৌর উদয় হয়ে–নিশিদিশি গুণেতে কাঁদায়
গৌর-স্বরূপের এই ত’ স্বভাব—নিশিদিশি গুণেতে কাঁদায়
গৌর,–হৃদয়ে উদয় হয়ে গুণে কাঁদায়ে—প্রাকৃত-ভোগ-বাসনা ঘুচায়
দারুণ,–সংসার-বন্ধনের একমাত্র কারণ—এই,–দেহাভিমান যায় রে দূরে
আমার,-গৌর-গুণে ঝুরে ঝুরে—এই,–দেহাভিমান যায় রে দূরে
গরর-করে বলতে পারি—আর কোন উপায় নাই রে
বিধির কলম রদ করিবার—আর কোন উপায় নাই রে
‘বিধির কলম রদ করিবার’—
প্রাকৃত,–দেহাভিমান ঘুচাইবার –বিধির কলম রদ করিবার
আমার,–গৌর-গুণে কাঁদা বিনে—আর কোন উপায় নাই রে
আমার,–গৌর-গুণে কাঁদা বিনে—দেহাভিমান যায় না কোন সাধনে
‘আমার,–গৌর-গুণে কাঁদা বিনে’—
স্বরূপ-জাগান-স্বরূপ—আমার,-গৌর-গুণে কাঁদা বিনে
হয়ে গেছে রাধারূপ
শ্যাম-সুন্দর ভুলে আসন স্বরূপ—হয়ে গেছে রাধারূপ
রাধাভাবে ভুলেছে আপনায়-তাইতে স্বরূপ স্বরূপ জাগায়
গৌর-গুণে ঝুরে ঝুরে—এই,–দেহাভিমান যায় রে দূরে
‘গৌর-গুণে ঝুরে ঝুরে’,–
ভাবিনীর স্বরূপে ভোরা-গৌর-গুণে ঝুরে ঝুরে
ভাব-ভূষণে ভূষিত করে
কম্প-অশ্রু-পুলকাদি—ভাব-ভূষণে ভূষিত করে
ভাব-ভূষণে ভূষিত করে—গোপী-ভাবামৃতে লুব্ধ করে
আবরণ ঘুচাইয়ে—শ্রী,–রাধাদাসী-অভিমান দেয় রে
জীবের নিত্যসিদ্ধ-স্বরূপ—শ্রী,–রাধাদাসী-অভিমান দেয় রে
শ্রী,–রাধাদাসী—অভিমান দিয়ে—তখন,–যুগলরূপে দেখা দেয় রে
‘শ্রী,–রাধাদাসী-অভিমান দিয়ে,–
গৌর,–হৃদয়ে উদয় হয়ে গুণে কাঁদায়ে—রাধাদাসী-অভিমান দিয়ে
রাই-কানু-মিলিত গৌর—শ্রী,–রাধাশ্যাম-রূপে দেখা দেয় রে
নিত্যলীলা তারে স্ফুরে
গৌর-গুণে যে-ঝুরে—নিত্যলীলা তারে স্ফুরে
হৃদি-মণিমন্দিরে গৌর-যুগলরূপে দেখা দেয় রে
রাধাদাসী,–অভিমানের ভোগ দিতে –যুগলরূপে দেখা দেয় রে
পরিণতিভোগ করাবার লাগি—যুগলরূপে দেখা দেয় রে
শ্রীগুরু-রূপাসখী—তখন,–বলে দেন ইঙ্গিত করে
পরম-করুণ-শ্রীগুরুদেব—তখন, –বলে দেন ইঙ্গিত করে
নিশিদিশি জপ কর
‘হরে কৃষ্ণ রাম’ নাম—নিশিদিশি জপ কর
রাধাদাসী-অভিমান ধর,–নিশিদিশি জপ করে
‘রাধাদাসী-অভিমান ধর’—
আর,–হৃদয়ে যুগল স্মঙর—রাধাদাসী-অভিমান ধর
লীলা উপলব্ধি হবে –নিশিদিশি জপ কর
রাধাদাসী,–অভিমানে নাম জপে—নিত্যালীলা দেখ্তে পাবে
শ্রীগুরু-অনুগত সাধক—শ্রীগুরু-আজ্ঞায় নাম জপে
শ্রীগুরু-পদাশ্রয়ে নাম-সাধনে—যুগল-বিলাস হেরে
শ্রীযমুনা—পুলিন-বনে—যুগল-বিলাস হেরে
নিভৃত-নিকুঞ্জ-মাঝে—যুগল-বিলাস হেরে
হয়ে,–রূপে গুণে ডগমগি—যুগল-বিলাস হেরে
‘হয়ে,–রূপে গুণে ডগমগি’—
সদা হয়ে অনুরাগী—হয়ে,–রূপে গুণে ডগমগি
তখন,–লয়ে যান তার করেতে ধরে
শ্রীগুরু-রূপাসখী—তখন,–লয়ে যান তার করেতে ধরে
শ্রীরাস-মণ্ডল-মাঝে—তখন,–লয়ে যান তার করেতে ধরে
এক-পাশে দাঁড়ায়ে থেকে—ইঙ্গিত-করে দেখায়ে দেন
মূরতি ধরেছে
তোমার জপা নাম-মালা—মূরতি ধরেছে
যে নাম,–মালা জপে এখানে এলে—তার,–মূরতি ত’ দেখ নাই
নাম জপ করেছ—কিন্তু,–মূরতি ত’ দেখ নাই
স্বরূপ প্রকাশ হয়েছে
‘হরে কৃষ্ণ’ নাম-মালার—স্বরূপ প্রকাশ হয়েছে
‘হরে কৃষ্ণ’ নাম-মালার’—
যার আশ্রয়ে এখানে এলে—সেই,–‘হরে কৃষ্ণ’ নাম-মালার
ঐ দেখ,–মূরতিমন্ত নাম-মালা
শ্রীরাস-মণ্ডলে দেখ—মূরতিমন্ত নাম-মালা
শ্রীগুরুদেবে আজ্ঞায়—অনেতেই ত’ জপ কর ভাই
অষ্টোত্তর-শত-মালা—অনেকেই ত’ জপ কর ভাই
মালার ঝোলা রাসস্থলী
অপরূপ রহস্য ভাই
অষ্টোত্তর-শত-মালার—অপরূপ রহস্য ভাই
শ্রীগুরু-চরণ হৃদে ধরে—অনুভব কর ভাই রে
কেবল অনুভবের ধন
শ্রীগুরু-বৈষ্ণবের কৃপায়—কেবল অনুভবের ধন
এই আমাদের ভোগ্য-নিধি—অনুভব কর ভাই রে
মাঝে আছে সুমেরু
জড়াজড়ি কিশোরী-কিশোর-মাঝে আছে সুমেরু
চারিদিকে নামের মালা
নামের মালা ব্রজবালা
যুগল,–প্রেম-সূত্রে বাঁধা সবে—নামের মালা ব্রজবালা
বহু-প্রকাশে বিহরই—গ্রন্থি-রূপে চিকণ-কালা
মাঝে মাঝে বিহরই—গ্রন্থি-রূপে চিকণ-কালা
শ্রীগুরু-অনুগত সাধক—শ্রীগুরু-কৃপায় দেখে
দেখে,–মূরতিমন্ত নাম-মালা
দেখতে দেখতে কিছু দেখে না
কোন মূরতি দেখ্তে পায় না
রাধা, কৃষ্ণ, গোপী, মণ্ডলী—কোন,–মূরতি দেখ্তে পায় না
অকস্মাৎ প্রকাশ—দেখে,–অপরূপ এক গৌরবর্ণ
সেই,–গৌরবর্ণের প্রভাবেতে—কোন মূরতি দেখা যায় না
মূরতি দেখ্বার তরে—তখন,–অত্যন্ত উৎকণ্ঠা বাড়ে
এরা কোথা গেল বলে—তখন,–অত্যন্ত উৎকণ্ঠা বাড়ে
শ্রীগুরু-কৃপায়—কিছু পরে দেখতে পায়
যা,–ব্রজে কখনও দেখে নাই—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
নব-গৌরবর্ণ-ঘন—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
মাখামাখি পুরুষ-প্রকৃতি—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
কিশোরী-বরণ কিশোর-গঠন—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
রাইএর বরণ শ্যামের গঠন-আবির্ভাব এক নব-মূরতি
রাধাকৃষ্ণ,–প্রণয়-বিকৃতি-আকৃতি—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
যুগল-উজ্জ্বল-রস-নির্য্যাস—আবির্ভাব এক নব-মূরতি
মহাভাব,–প্রেম-রস-ঘনাকৃতি—অবির্ভাব এক নব-মূরতি
স্বর্ণ,–পঞ্চালিকা-ঢাকা নীলমণি-আবির্ভাব এক নব-মূরতি
দেখে,–আবির্ভাব এক সোনার মূরতি—সে-যে আমার গৌর-মূরতি
মহা,–রাস-বিলাসের পরিণতি—সে-যে আমার গৌর-মূরতি
রাই-কানু একাকৃতি—সে যে আমার গৌর-মূরতি
রসবতী-ঢাকা রসভূপতি—সে-যে আমার গৌর-মূরতি
‘হরে কৃষ্ণ’ নামের স্বরূপ—দেখে প্রাণের গৌরহরি
রাই-সম্পূটে বংশীধারী—দেখে প্রাণের গৌরহরি
রাই,–কিশোরী-ঢাকা বংশীধারী—দেখে প্রাণের গৌরহরি
মহাভাব-প্রেম-রস-বারিধি—দেখে গৌর গুণনিধি
মূরতি অদভূত—দেখে প্রাণের শচীসূত
ভানুসুতামণ্ডিত-নন্দসূত—দেখে প্রাণের শচীসূত
মুরতিমন্ত প্রেমবৈচিত্ত্য—দেখে প্রাণের শচীসূত
পরস্পর,–বুকে ধরে হারাই হারাই—দেখে প্রাণের নদের নিমাই
নিত্য-মিলনে নিত্য-বিরহ-দেখে মধুর গৌর-দেহ
পরস্পর,–বুকে ধরে আত্মহারা—দেখে চিতচোরা গোরা
দেখে, –বিরুদ্ধ-স্বভাবে মাতোয়ারা
রাই কানু, কানু রাই—দেখে,–বিরুদ্ধ-স্বভাব মাতোয়ারা
রমণী রমণ, রমণ রমণী–দেখে,–বিরুদ্ধ-স্বভাবে মাতোয়ারা
কিশোরী কিশোর, কিশোর কিশোরী—দেখে,–বিরুদ্ধ-স্বভাবে মাতোয়ারা
মহাভাব রসরাজ, রসরাজ মহাভাব—দেখে,–বিরুদ্ধ-স্বভাবে মাতোয়ারা
বিলাস-বিবর্ত্ত-রূপ—দেখে,-নিগম-নিগূঢ় গৌর-রূপ
ব্রজ দেখে নদীয়া
স্বরূপের সঙ্গেই ধামের প্রকাশ—ব্রজ দেখে নদীয়া
শ্রীযমুনা সুরধুনী—ব্রজ দেখে নদীয়া
তার—মাঝে নাচে শচীনন্দন
শ্রীরাস-মণ্ডল শ্রীবাস-অঙ্গন—তার,–মাঝে নাচে শচীনন্দন
পারিষদ সব গোপীগণ—চারিদিকে ঘিরে নাচে
নিগূঢ়—গৌরাঙ্গ-লীলার—অপরূপ রহস্য ভাই
সখা-সখী-মিলিত-গৌর-পরিকর যত
এ-যে,–আশ-মিটান লীলা রে
নিগূঢ়-গৌরাঙ্গ-লীলা—এ-যে,–আশ-মিটান লীলা রে
সখা-সখী-সঙ্গে যুগল-কিশোরের—সকলের সাধ পূর্ণ হল
স্বমাধুরী আস্বাদিল
রাধা-ভাব-কান্তি ধরে—স্বমাধুরী আস্বাদিল
আমাদের,–কিশোরীর মনে সাধ ছিল
লইয়া ফিরিতাম দেশে দেশে।’’
সদাই তোমা লয়ে ফিরতাম—যদি পুরুষাকৃতি পেতাম
রসময়ের গঠন পেয়ে—আজ সেই সাধ মিটিল
ফুকারিয়ে শ্যামসুন্দর—আগে,–নাম লইতে ছিল বাধা
এবার সব বাধা মিটিল
দেশে দেশে ফিরে গো
পার-বঁধূ বুকে ধরে –দেশে দেশে ফিরে গো
শচীদুলালে হেরি—সবাই বলে গৌরহরি
ও-যে আমাদের প্রাণকিশোরী
ফিরছে বঁধূকে বুকে ধরি’
বঁধূর বিরহ সইতে নারি’—ফির্ছে বঁধূকে বুকে ধরি
বঁধূকে বুকে ধরে বেড়াইছে—আর কেউ লখিতে নারছে
বুকে রেখে উপরে থেকে—বড় সাধে বেড়াইছে
গৌরাঙ্গ-স্বরূপে—যুগলের সাধ পূর্ণ হল
বড়ই বাধা ছিল
দাদা হয়ে রাস-ভোগে—বড়ই বাধা ছিল
যার,–সেবাতে যুগল আছে বাঁধা—তার কেবল সম্বন্ধ বাধা
বসন, ভূষণ, ভোজ্য, পেয়—সকলি ত’ বলাই আমার
পুষ্প-শয্যা বলাই আমার
এ দিকে কোন বাধা নাই
কেবল সম্বন্ধ বাধা
দাদা-স্বরূপে রাস-ভোগে—কেবল সম্বন্ধ বাধা
এ স্বরূপে রাস ভোগ করিব—বলরামের সাধ উঠিল
মনে মনে ভাবিল
আমারি ত’ স্বরূপ বটে
অনঙ্গমঞ্জরী—আমারি ত’ স্বরূপ বটে
যুগলকিশোরের—অন্তরঙ্গ-সেবা করে
অনঙ্গমঞ্জরীতে—আমি ত’ প্রবেশ কর্ব
শ্রীনিত্যানন্দ-স্বরূপে—বলাইএর সাধ পূর্ণ হল
অনঙ্গের ভাব-কান্তি নিল-বলাইএর সাধ পূর্ণ হল
তারা ত অন্য নয়
রাইএর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়—তারা ত’ অন্য নয়
সখী আর মঞ্জরী যত—কিশোরীর, –অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মূর্ত্তিমন্ত
আমাদের কিশোরীর—মনে সাধ উঠেছিল
এক-দেহে সেবা করে—আশা ত’ মিটেনা
যদি আমার,–প্রতি অঙ্গ দেহ হত—তবে আমার আশ মিটিত
যদি প্রতি অঙ্গ,–দেহ হয়ে সেবা দিত—তবে আমার আশ মিটিত
রাইএর প্রতি-অঙ্গের মূরতি—তখন,–করিলেন লীলা-শকতি
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সেই বাসনা
স্বরূপের যে বাসনা—অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সে বাসনা
শ্রীরাধিকার আনুগত্যে—তারাও পুরুষ-দেহ চায়
বলরামের গঠন পেল—অনঙ্গের বাসনা পূর্ণ হল
সখা আর সখীগণের—এইরূপে বাসনা পূর্ণ হল
গৌর-পরিকর—স্বরূপেতে—এইরূপে বাসনা পূর্ণ হল
শ্যামের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়—সখাগণ ত’ অন্য নয়
শ্যামসুন্দরের কায়ব্যূহ—তাঁরা,–সখীগণের ভাব চায়
শ্রীরাধিকার কায়ব্যূহ—সখী-মঞ্জরীরা পুরুষ-দেহ চায়
তারাই তারাই মিলিল
দুইএর কায়ব্যূহ—তারাই তারাই মিলিল
গৌর-পরিকর-স্বরূপেতে—তারাই তারাই মিলিল
যে অঙ্গে যে অঙ্গ লুব্ধ
প্রাণ-রাধা-রাধারমণের—যে অঙ্গে যে অঙ্গ লুব্ধ
রাধা-অঙ্গে সেই সখী
তারাই তারাই মিলিল
লুব্ধ-অঙ্গের সখা-সখীরা মিলল
সখাগণ—সখীর ভাব-কান্তি পেল
রাসের অধিকারী হল—সখাগণ,–সখীর ভাব-কান্তি পেল
ব্রজের যত সখাগণ—উজ্জ্বল-রস আস্বাদিল
সখার স্বরূপ পেল—সখীগণেরও আশা পূর্ণ হল
ভাবিনীর গণ সবে—আর কেউ চিনিতে নারে
ঐ ব্রজের ব্রজবালা
যমুনার,–তীরে লয়ে নন্দলালা—ঐ ব্রজের ব্রজবালা
এখন স্বচ্ছন্দে বিহরিছে
রাই-কানু-মিলিত-গৌর-সনে—এখন স্বচ্ছন্দে বিহরিছে
যুগলে যুগলে খেলা—মধুর গৌরাঙ্গ-লীলা
‘যুগলে যুদলে খেলা’—
গৌর যুগল, পরিকর যুগল—যুগলে যুগলে খেলা
রাই-কানু-মিলিত-স্বরূপ—গৌর আমার পূর্ণ—যুগল
পরিকর কায়ব্যূহ-যুগল—গৌর আমার পূর্ণ-যুগল
যুগল বিষয়, যুগল আশ্রয়—যুগলে যুগলে খেলা
শ্রীগুরু-অনুগত সাধক দেখে—সবে,–ঘিরে ঘিরে নাচিছে
রাই-কানু-মিলিত –গৌরাঙ্গে—সবে,–ঘিরে ঘিরে নাচিছে
পারিষদে-বেশে সখা-সখী-সবে,–ঘিরে ঘিরে নাচিছে
‘পারিষদ-বেশে সখা-সখী’—
দেখ্তে পুরুষ, ভাব প্রকৃতি—পারিষদ-বেশে সখা-সখী
সঙ্কীর্ত্তন-রাস-রঙ্গে—সবে,–ঘিরে ঘিরে নাচিছে
মদনমোহনত্বের নিত্যত্ব
নদীয়ায় গৌরাঙ্গ-রূপে—মদনমোহনত্বের নিত্যত্ব
শ্যামসুন্দর বংশীবদন—ততক্ষণই মদনমোহন
শ্রী,–রাধা সঙ্গে যতক্ষণ—ততক্ষণই মদনমোহন
রাধা ছাড়া শ্যাম যখন—সে-ত’ বটে শুধু মদন
নাই,–মদনমোহনত্বের নিত্যত্ব
ব্রজে,–কখনও মিলন কখনও ভঙ্গ—নাই,–মদনমোহনত্বের নিত্যত্ব
মদনমোহনত্বের নিত্যত্ব
রাধা-সঙ্গে সদা মিলিত—মদনমোহনত্বের নিত্যত্ব
রাই-কানু-মিলিত শচীনন্দন—হয় নিত্য-মদনমোহন
মদনমোহনের মনোমোহন—গৌর নিত্য-মদনমোহন
নাগরালির পূর্ণত্ব
শ্রী,–গৌরাঙ্গ-স্বরূপে—নাগরালির পূর্ণত্ব
তারেই ত’ নাগর বলে
যারে দেখ্লে,–সবাই প্রাণবল্লভ বলে—তারেই ত’ নাগর বলে
যখন,–একলা পুরুষ আর সকলই আলী—তখনি পূর্ণ নাগরালি
শ্যামসুন্দরের নাগরালি—ব্রজে পূর্ণ হয় নাই ভাই
বৃন্দাবনের রাসলীলা—কতক-গোপী পেয়েছিল
ব্রজে পুরুষ-দেহধারী—কেউ ত’ রাস পায় নাই
তারা ত’ বাদ পড়েছিল
বরজ-যুবতী-মাঝে—তারা ত’ বাদ পড়েছিল
বিরুদ্ধ-সম্বন্ধ যাদের—তারা ত’ বাদ পড়েছিল
সম্বন্ধ-মর্যাদা-হিসাবে—তারা ত’ বাদ পড়েছিল
অনেক-গোপী বঞ্চিত ছিল—জন-কতক পেয়েছিল
বাছা বাছা ব্রজবালা—ব্রজে পেল রাসলীলা
বাছাবাছা গোপনারী—তারা হল রাসের অধিকারী
মধুর-শ্রীনবদ্বীপে—এবার,–নাগরালির পূর্ণত্ব
সঙ্কীর্ত্তন-রাস-রঙ্গে—এবার,–নাগরালির পূর্ণত্ব
সবার স্বরূপ প্রকট করে—গৌরহরি রাস করে
জগজীবের গোপীভাব—ইচ্ছা করে জাগাতে হয় না
যে,–দেখে আমার গোরারায়—সেই,–গোপীভাবে মেতে যায়
শ্রীগৌরাঙ্গের মুখের হাসি—সবারে কৈল রাধাদাসী
গৌরাঙ্গ-মূরতি হেরে—সবাই বলে প্রাণবল্লভ
নিজ,–বাহ্য-স্বরূপ ভুলে গিয়ে—সবাই বলে প্রণবল্লভ
স্থাবর-জঙ্গম,–গুল্ম-লতা-আদি করি’—সবাই হইল গোপনারী
তার ইঙ্গিত দেখ ভাই
অনুশীলন কর রে
ঝারিখণ্ড-বিহারের কথা—অনুশীলন কর রে
হল,–সবাই গোপীভাবে মাতা—স্থাবর-জঙ্গম-গুল্ম-লতা
ঝারিখণ্ডে বিহার যখন—গোপীভাব হইল জাগরণ
স্বরূপ জাগিয়া উঠিল
‘হলাদিনীর বৃত্তি জীব-স্বরূপ জাগিয়া উঠিল
‘হলাদিনীর বৃত্তি জীব’—
জীব নিত্য-রাধাদাসী—হলাদিনীর বৃত্তি জীবন
সে,–যে আবরণে থাকুক্ না কেন—জীব-সত্তা নিত্য-রাধাদাসী
‘যে আবরণে থাকুক্ না কেন’—
পশু, পক্ষী, কীট, পতঙ্গ—যে আবরণে থাকুক্ না কেন
আজ,–জেগে উঠ্ল সেই স্বরূপ
দেখে আমার গৌর-রূপ—আজ,–জেগে উঠ্ল সেই স্বরূপ
ঝারিখণ্ড-পথে গৌর যায়—সিংহ-ব্যাঘ্র কেঁদে লুটায়
এস,–অনুভব কর ভাই রে
শ্রীগুরু-চরণ হৃদে ধরে—এস,–অনুভব কর ভাই রে
প্রাণ,–গৌরের বাঁকা আঁখি দেখে—তারা চিনিতে পেরেছে
রাধাদাসী-অভিমানে—বলে,–এ-ত’ বটে প্রাণের রাধারমণ
ঐ যে দেখি,–জোড়া ভুরু, বাঁকা নয়ন—বলে,–এ-ত’ বটে প্রাণের রাধারমণ
মনে হয়েছে মনে হয়েছে
শ্রীরাধার,–প্রেম-ঋণে ঋণী হয়েছে
তাই,–ঋণ শুধিতে এসেছে
শ্রী,–রাধাভাব-কান্তি অঙ্গী করি’—ঋণ শুধিতে এসেছে
বলে,–দেখে যা-গো ও প্রাণ-কিশোরী
তোর, প্রেমের দায়ে বঁধু দণ্ডদারী—বলে,–দেখে যা-গো ও প্রাণ-কিশোরী
স্বরূপ জাগাতে এসেছে
স্বরূপ-জাগান-স্বরূপ গোরা—স্বরূপ জাগাতে এসেছে
অনন্ত-ব্রহ্মাণ্ডবাসীর—স্বরূপ জাগাতে এসেছে
শ্রী,–রাধাভাবে আপনি মেতে—স্বরূপ জাগাতে এসেছে
সবারে করে বরজ-আলী—বিহরে গোরা বনমালী
বিলসে সঙ্কীর্ত্তন-মহারাসে
জগ,–জীবরে স্বরূপ করি’ প্রকাশে—বিলসে সঙ্কীর্ত্তন-মহারাসে
গৌরাঙ্গ-স্বরূপে—জগন্নাথ-নাম পূর্ণ হল
একলা,–পুরুষ কৃষ্ণ আর সব প্রকৃতি—সেই কথা সার্থক হল
নিরপেক্ষ-শক্তি যে—পুরুষ-শব্দ-বাচ্য সে
যদি,–নিরপেক্ষ-শক্তি থাকে—সেই ত’ নন্দদুলাল বটে
একমাত্র পরুষ জগতে—সেই ত’ নন্দদুলাল বটে
পুরুষ-শব্দ-বাচ্য হয়—কৃষ্ণ বিনা আর কেউ নয়
সকলেই প্রকৃতি-সত্তা
এক কৃষ্ণ শক্তিমান্—সকলেই প্রকৃতি-সত্তা
গৌরাঙ্গ-স্বরূপে সার্থক হল
এতদিন কেবল কথায় ছিল—গৌরাঙ্গ—স্বরূপে সার্থক হল
গোপীভাব জাগায়ে দিয়ে—গৌর বিলসিল সবা-সঙ্গে
সঙ্কীর্ত্তন-রাস-রঙ্গে—গৌর বিলসিল সবা-সঙ্গে
দর্শন-স্পর্শন-আলিঙ্গনে—গৌর বিলসিল সবা-সঙ্গে
নাগরে করিল আলী
এমনি,–মধুর গৌর-নাগরালি—নাগরে করিল আলী
রথাগ্রে গৌরের কীর্ত্তন-রঙ্গ—তার নিদর্শন মনে কর ভাই
রথাগ্রে গৌর-নটন দেখে—জগন্নাথ-শ্যাম হইল লুব্ধ
নিরন্তর, গৌর-স্বরূপ-ভোগের লাগি’–গৌর-পরিকরত্বে লোভ হল
এ-যে,–নাগরীর নাগরালি
শ্যাম-নাগরে করিল আলী—এ-যে,–নাগরীর নাগরালি
বেদে যারে পুরুষ বলে—সেই,–নাগর যদি নাগরী হল
জীবের সামান্য পুরুষ-অভিমান—কেমন করে থাক্বে বল
স্থাবর-জঙ্গম-গুল্ম-লতা যত—সবার স্বরূপ হল জাগ্রত
হেরি,’—রসময়-শচীসূত-সবার স্বরূপ হল জাগ্রত
বিশ্ব মধুরে মাাতিল—বিশ্বম্ভর-নাম পূর্ণ হল
অপূর্ণ-রাসরস-পূর্ণলীলা—পরিকর-সঙ্গে গৌর-স্বরূপের খেলা
এই,–সঙ্কীর্ত্তন মহা-মহা-রাসলীলা—শ্রীগুরু-কৃপায় সাধক দেখে
দেখে,–গৌর-স্বরূপে আবার নব-লালসা
মহারাস-রঙ্গে ভোরা সেই—দেখে,–গৌর-স্বরূপে আবার নব-লালসা
গৌরাঙ্গ-স্বরূপে যুগলের –একে ত’ বিবর্ত্ত-দশা
বিবর্ত্তে বিলাস-চেষ্টা
কেমনে পূরণ হবে বল
ভোগ্য-ভোক্তা এক-ঠাঁই—কেমনে পূরণ হবে বল
দুই স্বরূপ না হইলে—কেমনে পূরণ হবে বল
আর কি রইতে পারে
শ্রী,–গৌর সেবা-বিগ্রহ—আর কি রইতে পারে
ভোগদাতৃ-স্বরূপ—আর কি রইতে পারে
বিবর্ত্তে ভোগ-লালসা মিটাইতে—আসি’ দাঁড়াইল সম্মুখে
অভিন্ন-চৈতন্য-তনু—আসি’ দাঁড়াইল সম্মুখে
আশ্রয়-জাতীয়-ভাবে—আসি’ দাঁড়াইল সম্মুখে
বিবর্ত্তে বিলাসের ভোগরূপ—প্রকট নিত্যানন্দ—রূপ
বাহু পসারি ধর্ল বুকে
গৌর-স্বরূপ নিতাই দেখে—বাহু পসারি ধর্ল বুকে
দোঁহে মিলিল বাহু পসারি’—হল পরস্পর জড়াজড়ি
ভোগ্য ভোক্তা মূরতি—হল পরস্পর জড়াজড়ি
মহাভাব-নিতাই রসরাজ-গোরা—হল পরস্পর জড়াজড়ি
এই,–বিবর্ত্তে বিলাস-রঙ্গ হেরে—রামরায়,–মূরছিত গোদাবরী-তীরে
দেখি’ এই নব-উৎসবে—রামরায়,–মূরছিত ধরণীতে
রামরায় ব্রজের বিশাখা-সখী–স্বভাবে বিলাস দেখেছে বটে
বিবর্ত্তে বিলাস-রঙ্গ ঘটে—কিন্তু,–তার ত’ অনুভবে নাই
দেখি,’—বিলাস অনুভব-অতীত—রামরায় মূরছিত
শ্রীগুরু—কৃপাদত্ত—নাম-রহস্যের এই পরিণতি-ভোগ
তাঁর মুখোদ্গীর্ণ-নামে—একদিন রহস্য পুছেছিলাম
‘ভজ’-‘সাধন’-নির্ণয়-করা রইল
সাধ্য-সাধন-নির্ণয়-করা রইল
একান্তে নাম আশ্রয় কর
নাম সব বলে দিবে—একান্তে নাম আশ্রয় কর
পাগ্লা প্রভু মহাবলী—এখন,–যা’ বলায় তাই ত’ বলি
অপরূপ—রহস্যময়—এই,–নাম যে আশ্রয় করে
শ্রীগুরু-নিত্যানন্দ-পদাশ্রয়ে—এই,–নাম সে আশ্রয় করে
সে,–নিতাই-গৌরাঙ্গ-বিলাস ভোগ করে—এই,–নাম যে আশ্রয় করে
নরহরির চিতচোরা—দেখে,–নিতাই-রমণ গোরা
হৃদে ধরি’ শ্রীগুরু-মূরতি—আয় প্রাণভরে গান করি
‘হৃদে ধরি’ শ্রীগুরু-মূরতি’—
আমাদের,–জীবনে মরণে গতি—হৃদে ধরি’ শ্রীগুরু—মূরতি
এই,–নামদাতা মহাদানী—হৃদে ধরি’ শ্রীগুরু-মূরতি
নিতাই-গৌরাঙ্গ-বিলাস-ভোগে মাতি—আয়,–প্রাণভরে গান করি
‘ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
‘‘নিতাই গৌর রাধে শ্যাম’’—আমরি কি মধুর নাম
নামের বর্ণে বর্ণে পূর্ণামৃত—আমরি কি মধুর নাম
‘নামের বর্ণে বর্ণে পূর্ণামৃত’—
অমৃত হতেও পরামৃত—নামের বর্ণে বর্ণে পূর্ণামৃত
কত-সাধের গাঁথা নাম
‘পাগ্লা—প্রভু-শ্রীরাধারমণের—কত-সাধের গাঁথা নাম
‘পাগ্লা-প্রভু-শ্রীরাধারমণের’—
নিতাই-গৌরাঙ্গ-বিলাসের তনু—পাগ্লা-প্রভু-শ্রীরাধারমণের
নিরজনে আপন-মনে—কত-সাধের গাঁথা নাম
নিজ-গুণে প্রেমসূত্রে—কত-সাধের গাঁথা নাম
প্রেমসূত্রে ভকতি-গ্রন্থিতে—কত-সাধের গাঁথা নাম
আমাদের গলায় পরাবে বলে—কত-সাধের গাঁথা নাম
প্রেম-বাহু,–পসারিয়ে হৃদে ধরে—পরাইলেন এই নামের মালা
ঘুচাইতে মোদের প্রাণের জ্বালা—পারইলেন এই নামের মালা
নামের মালা পরতে নারিলাম–ঘুচল না আমাদের জ্বালা
নামাশ্রয় করতে নারলাম
স্বতন্ত্রতা গেল না—নামাশ্রয় করতে নারলাম
তার সম্বন্ধ ধরি বলে—কেবল কলঙ্ক রটালাম
নামে অনুরাগ দাও
প্রাণভরে গান করি
ভাই ভাই এক-প্রাণে—প্রাণভরে গান করি
পাগ্লা,–প্রভু তোমায় হৃদে ধরি’—প্রাণভরে গান করি
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
প্রেম্সে কহো শ্রীরাধে শ্রীকৃষ্ণ বলিয়ে—
প্রভু-নিতাই-শ্রীচৈতন্য-অদ্বৈত-শ্রীরাধারাণীকী জয় !
প্রেমদাতা পরম-দয়াল পতিত-পাবন শ্রীনিতাইচাঁদকী জয়!
করুণাসিন্ধু-গৌরভক্তবৃন্দকী জয় ! শ্রীশ্রীরাম-সঙ্কীর্ত্তনকী জয় !
খোল-করতালকী জয় ! শ্রীনবদ্বীপ-ধামকী জয় !
শ্রীনীলাচল-ধামকী জয় ! শ্রীবৃন্দাবন-ধামকী জয় !
চারি-ধামকী জয় ! চারি-সম্প্রদায়কী জয় !
অনন্ত-কোটি ব্রাহ্মণ-বৈষ্ণবকী জয় ! আপন আপন শ্রীগুরুদেবকী জয় !
প্রেমদাতা পরম-দয়াল পতিত-পাবন—
শিশু-পশু-পালক বালক-জীবন- শ্রীমদ্ রাধারমণকী জয়।