শ্রীশ্রী নিত্যানন্দ-মহিমা কীর্ত্তন (১)

শ্রীশ্রীরাধারমণো জয়তি

শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌর-হরিবোল।
‘‘ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
[মাতন]

ভজ ভাই রে—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম রাধে

জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

জপ,–রাম রাম হরে হরে—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম
রমে রামে মনোরমে—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

[ঝুমুর]

শ্রীরাধারমণ রাম—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম

জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম
ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম রাধে
আমার,–নিতাই-গুণমণি ভজ
ভাই রে,–আমার নিতাই গুণমণি

আমি,–কি জানি গুণ কত বা বাখানি—ভাই রে,–আমার নিতাই গুণমণি

নিতাই আমার,–অখণ্ড-প্রেমের খনি
যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি

আচণ্ডালের দ্বারে দ্বারে গিয়ে—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
দন্তে,–তৃণ ধরি’ কর’ যোড়-পাণি—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
দুনয়নে,–বহে ধারা যেন সুরধুনী—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
জাতি,–কূল, অধিকার কিছু না গণি—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি

ওরে,–ভাই রে আমার নিতাই সুন্দর

ও তার,–গৌর-প্রেমে গড়া কলেবর—ওরে,–ভাই রে আমার নিতাই সুন্দর

নিতাই আমার,–গোরা-রসে গর-গর
নিতাই আমার,–গোরাভাবে সদাই বিভোর
জানে না নিতাই আপনি কি পর

গৌরপ্রেম,–মদিরা-পানে হয়ে বিভোর—জানে না নিতাই আপনি কি পর

নিতাই আমার,–আচণ্ডালে ধেয়ে করে কোর

আমরি,–প্রেম-বাহু পসারিয়ে—নিতাই আমার,–আচণ্ডালে ধেয়ে করে কোর

বলে ভাই,–বিনামূলে আমি হব তোর

তোর,–পাপ-তাপের বোঝা নিয়ে—বলে ভাই,–বিনামূলে আমি হব তোর
একবার,–মুখে বল ভাই গৌর গৌর—বলে ভাই, –বিনামূলে আমি হব তোর

নিতাই আমার,–গৌর বল্‌তে হারায় ঠউর

নিতাইচাঁদের,–দুনয়নে বহে অবিরত লোর—নিতাই আমার,–গৌর

বলতে হারায় ঠউর
নিতাই আমার,–শ্রীচৈতন্যচাঁদের চকোর

ওগো,–আমার নিতাই, আমার নিতাই—নিতাই আমার,–শ্রীচৈতন্যচাঁদের চকোর

নিতাই আমার,–গোরা-পদ্মে মত্ত-মধুকর

প্রেম-মধু-পানে সদাই বিভোর—নিতাই আমার,–গোরা-পদ্মে মত্ত-মধুকর

ভাই রে,–নিতাই রঙ্গিয়া আমার

শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেম-বিনোদিয়া—ভাই রে—নিতাই রঙ্গিয়া আমার
আমরি,–গোরা-রসে রসিয়া—ভাই রে,–নিতাই রঙ্গিয়া আমার
আমরি,–গৌর-প্রেমে উন্মাদিয়া—ভাই রে,–নিতাই রঙ্গিয়া আমার

নিতাই আমার,–নিশিদিশি বেড়ায় কাঁদিয়া

–গৌর-প্রেমের পাগ্‌লা নিতাই—নিতাই আমার,–নিশিদিশি বেড়ায় কাঁদিয়া
এই,–সুরধুনীর তীর দিয়া—নিতাই আমার,–নিশিদিশি বেড়ায় কাঁদিয়া
ই,–সুরধুনীর তীর আছে যত দেশ গ্রাম। রে !
সর্ব্বত্র বিহরে আমার নিত্যানন্দ-রাম।।’’ রে !!

নিতাই আমার,–নিশিদিশি বেড়ায় কাঁদিয়া

গলবাসে দন্তে তৃণ ধরিয়া—নিতাই আমার,–নিশিদিশি বেড়ায় কাঁদিয়া

নিতাই আমার,–আচণ্ডালে বলে যাচিয়া

গলবাসে দন্তে তৃণ ধরিয়া—নিতাই আমার—আচণ্ডালে বলে যাচিযা

করযোড়ে বলে কাঁদিয়া

আচণ্ডালের দ্বারেতে গিয়া—করেযাড়ে বলে কাঁদিয়া
কত-শত,–ধারা বহে মুখ-বুক বাহিয়—করযোড়ে বলে কাঁদিয়া

আমি,–বিনামূলে যাব বিকাইয়া

তোদের,–পাপ-তাপের বোঝা নিয়া—আমি,–বিনামূলে যাব বিকাইয়া
একবার,–গৌরহরি বলে আমায় লও কিনিয়া–আমি—বিনামূলে যাব বিকাইয়া

নিতাই আমার,–চলে যেতে পড়ে ঢলিয়া

আার,–গৌরহরি ভজ বলিয়া—নিতাই আমার,–চলে যেতে পড়ে ঢলিয়া
রামাই-গৌরদাসের কাঁধে হাত দিয়া—নিতাই আমার,–চলে যেতে পড়ে ঢলিয়া

আমার,–নিতাই কাঁদে ফুলিয়া ফুলিয়া

ধুলি-ধুসরিত-অঙ্গে আবার উঠিয়া—আমার,–নিতাই কাঁদে ফুলিয়া ফুলিয়া
আয় বলি,’—পতিতের বুকে ধরিয়া—আমার,–নিতাই কাঁদে ফুলিয়া ফুলিয়া
নিতাইচাঁদের,–নয়ন-ধারায় ধরা যায় ভাসিয়া—আমার,–নিতাই কাঁদে ফুলিয়া ফুলিয়া

ভাই রে,–আমার নিতাই নয়ন-তার


তার,–গৌর-প্রেমে তনু গড়া—ভাই রে,–আমার নিতাই নয়ন-তারা

নিতাই আমার,–গৌর-প্রেমে মাতোয়ারা
নিতাই আমার,–গৌর-প্রেমে পাগল-পারা
নিতাই আমার,–গৌর-প্রেমে দিগ্‌বিদিক্‌ হারা
নিতাই আমার, –গৌর-প্রেমে আত্মহারা
নিতাই অমার,–নিশিদিশি গায় গোরা গোরা

শ্রীঅঙ্গ,–পুলকে ভরা দুনয়নে শত-ধারা—নিতাই আমার,–নিশিদিশি

গায় গোরা গোরা

নিতাইচাঁদের,–নয়ন-ধারায় ভেসে যায় ধরা—নিতাই আমার,–নিশিদিশি

গায় গোরা গোরা
ভাই রে—আমার প্রভু নিত্যানন্দ

নিত্যানন্দ-দাস মুঞি—ভাই রে,–আমার প্রভু নিত্যানন্দ

[মাতন]
আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ

আমার,–পাগলের প্রাণ নিতাই—আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ
আমার,–ঐ গরবে হৃদয়ে ভরা—আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ
আমি,–ঐ গরবে গরব করি—প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ
আমি,–ঐ গরবে সদাই ফিরি—আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ

নিতাই আমার,–অখণ্ড-পরমামন্দ
নিতাই আমার,–অক্রোধ-পরমানন্দ

আমার,–অদোষদরশী নিতাই—অক্রোধ-পরমানন্দ
আমার,–অযাচিত-কৃপাকারী নিতাই-অক্রোধ-পরমানন্দ

নিতাই আমার,–পাষণ্ড-দলনদণ্ড
চাঁদ,–নিতাই আমার পতিতের বন্ধু

তার,–পতিত-উদ্ধারে সঙ্কল্প একান্ত—চাঁদ,–নিতাই আমার পতিতের বন্ধু

নিতাই আমার,–শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেম-ভাণ্ড

প্রেম-বন্যায় ভাসাইল ব্রহ্মাণ্ড—নিতাই আমার,–শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেম-ভাণ্ড
প্রেমে মাতাইল পতিত-পাষণ্ড—নিতাই আমার,–শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেম-ভাণ্ড

আ’মরি,–গৌর-বশীকরণ-মন্ত্র

আমার,–নিতাই-গুণমণির নাম—আমরি—গৌর-বশীকরণ-মন্ত্র

শ্রীমুখে বলেছেন প্রাণ-গৌরাঙ্গ

‘‘মুখেও যে জন বলে মুঞি নিত্যানন্দ-দাস রে !
সে নিশ্চয় দেখিবে আমার স্বরূপ-প্রকাশ রে !
সংসারের পার হইয়া ভক্তির সাগরে। রে !
যে ডুবিলে যেই প্রেম কহে ভাগবতে। রে !
আমার,–একলা নিত্যানন্দ হইতে পাইবে জগতে।।’’ রে !!

গোপী,–প্রেম পেতে সাধ যার চিতে

সে,–ভজুক আমার নিতাইচাঁদে—গোপী,–প্রেমে পেতে সাধ যার চিতে

কোন-কালে,–প্রেম কেউ পায় নাই

আমার,–নিতাই-কৃপা বিনে ভাই—কোন-কালে,–প্রেম কেউ পায় নাই

বাহু তুলে’ বলেন গৌরহরি
সে আমার আমি তার

আমার,–নিতাই সর্ব্বস্ব যার—সে আমার আমি তার

[মাতন]
আমি,–বাঁধা তারই প্রেম-পাশে

ঊর্দ্ধবাহে গৌরহরি ঘোষে—আমি,–বাঁধা তারই প্রেম-পাশে
আমার,–নিতাইকে যে ভালবসে—আমি,–বাঁধা তারই প্রেম-পাশে

[মাতন]
তাহার প্রমাণ নদীয়াতে
মাধাই মারে জগাই রাখে

গৌরহরি তারে ধরে বুকে—মাধাই মারে জগাই রাখে

আমি,—বিকাইলাম নিতাই-করে

গৌরহরি বলেন বাহু ঊর্দ্ধ করে—আমি,–বিকাইলাম নিতাই-করে
এবার,–‘বিশ্বম্ভর’ নাম ধরে—আমি,–বিকাইলাম নিতাই-করে

আমি,–তারই হব অবিচারে

নিতাই আমায়,–যারে দিবে ইচ্ছা করে—আমি,–তারই হব অবিচারে

ভাবাবেশে বলেন গৌরহরি

পাণিহাটি-গ্রামে বসি’—ভাবাবেশে বলেন গৌরহরি

‘‘শুন শুন ওহে রাঘব তোমায় গোপ্য কই। হে !
আমার দ্বিতীয় নাই শ্রীনিত্যানন্দ বই।।’’ হে !!
আরে,–‘‘তিলার্দ্ধেক নিত্যানন্দে দ্বেষ যার রহে রে !
আমার,–ভজিলেও সে কভু আমার প্রিয় নহে।। রে !!
আমার,–নিত্যানন্দ-স্বরূপেরে যে প্রীতি করয়ে অন্তরে। রে !
সত্য সত্য সেই প্রীতি করয়ে আমারে।।’’ রে !!

সেখানে এখানে একই কথা
ব্রজ-নদীয়ায় একই কথা
মধুর-শ্রীবৃন্দাবনে
শ্রীকৃষ্ণ বিষয়, শ্রীরাধিকা আশ্রয়
আর, –মধুর-শ্রীনবদ্বীপে
শ্রীগৌরাঙ্গ বিষয়, শ্রীনিতাই আশ্রয়
বৃন্দাবনে এই প্রতিজ্ঞা

‘‘কিশোরীর-দাস মুঞি পীতবাস ইহাতে সন্দেহ যার। রে !
কোটি জন্ম যদি আমারে ভজয়ে বিফল ভজন তার।। রে !

আবার,–নবদ্বীপে সেই প্রতিজ্ঞা

‘‘তিলার্দ্ধেক নিত্যানন্দে দ্বেষ রহে । রে !
আমার,–ভজিলেও সে কভু আমার প্রিয় নহে।।’’ রে !!

আমার ভজিলেই আমার ভজা হয় না

নিতাই ভজিলেই আমায় ভজা হয়—আমায় ভজিলেই আমায় ভজা হয় না

প্রাণ,–গৌরহরির এই প্রতিজ্ঞা
আর,–অপরূপ কথা শুন ভাই

‘‘নিত্যানন্দ গদাধরে যে প্রীতি অন্তরে। রে !
একের অপ্রিয় আরে সম্ভাষা না করে।। রে !!
গদাধর-পণ্ডিতের সঙ্কল্প এইরূপ ! রে !
নিত্যানন্দ-বিমুখের না দেখেন মুখ।।’’ রে !!
‘‘নিত্যানন্দ-স্বরূপেতে প্রীতি যার নাই। রে !
দেখাও না দেন তারে পণ্ডিত-গোসাঞি।।’’ রে !!

আয় ভাই আমরা নিতাই ভজি

গৌর-গদাধরের প্রতিজ্ঞা স্মঙরি—আয় ভাই আমরা নিতাই ভজি

আমাদের,–নিতাই বিনে আর গতি নাই

কলিহত-পতিত-জীব মোরা—আমাদের,–নিতাই বিনে আর গতি নাই

আর পতিতের বন্ধু কে
এমন-কার প্রাণ কাঁদে

পতিত-দুর্গতি দেখে—এমন কার প্রাণ কাঁদে

কে,–সেধে যেচে বিলায় রে

চির-অনর্পিত প্রেমধন—কে,–সেধে যেচে বিলায় রে

কেউ কি শুনেছ কোথা

কত কত অবতার হয়েছে—কেউ কি শুনেছ কোথা
এমন করুণার কথা—কেউ কি শুনেছ কোথা

কে কোথায় শুনেছে

পাপ লয়ে প্রেম যাচে—কে কোথায় শুনেছে
‘পাপ লয়ে প্রেম যাচে’—
কে কোথায়,–পতিত আছে খুঁজে খুঁজে—পাপ লয়ে প্রেম যাচে

কে কোথায় শুনেছে
কেউ কি শুনেছ কোথায়

মার খেয়ে প্রেম বিলায়—কেউ কি শুনেছ কোথায়
‘মার খেয়ে প্রেম বিলায়’—
মধুর-শ্রীনদীয়ায়—মার খেয়ে প্রেম বিলায়

[মাতন]
বলে মেরেছ বেশ করেছ
মেরেছ মার আবার খাব
মেরেছ কলসীর কাণা

আমি,–তা’ বলে কি প্রেম দিব না—মেরেছ কলসীর কাণা

এমন দয়াল আর কে আছে

কোন-কালে,–হবে কি আর হয়েছে—এমন দয়াল আর কে আছে

আমার,–নিতাই বিনে আর কে আছে

মার খেয়ে নাম প্রেম যাচে—আমার,–নিতাই বিনে আর কে আছে

[মাতন]
আরে আমার নিতাই রে

ও পতিতের বন্ধু–-আরে আমার নিতাই রে

[মাতন]
কত-গুণের নিতাই আমার

আমি,–কি জানি গুণ কত বা বাখানি—কত-গুণের নিতাই আমার

জগৎ–যাদের দেখে ঘৃণার চোখে

অশেষ-দোষের আকর জেনে—জগৎ,–যাদের দেখে ঘৃণার চোখে

আমার,–নিতাই তারে ধরে বুকে
এ,–জগৎ যারে ত্যাগ করে

অশেষ-দোষের দোষী জেনে—এ,–জগৎ যারে ত্যাগ করে

আমার,–নিতাই তারে কোলে করে
আমা,–নিতাই তারে করে কোলে

এ,–জগৎ যারে ঠেঁলে ফেলে—আমার,–নিতাই তারে করে কোলে
‘এ,–জগৎ যারে ঠেলে ফেলে’—
অদৃশ্য অস্পৃশ্য বলে—এ,–জগৎ যারে ঠেলে ফেলে

আমার,–নিতাই তারে করে কোলে

প্রেম-বাহু পসারিয়ে—আমার,–নিতাই তারে করে কোলে
প্রেম,–দিঠে চেয়ে আয় আয় বলে—আমার,–নিতাই তারে করে কোলে
ভয় নাই,–আমি তোর আছি বলে—আমার,–নিতাই তারে করে কোলে

[মাতন]
আর,–ভয় কি আছে পতিত ভাই

আমাদের তরে আছে নিতাই—আর,–ভয় কি আছে পতিত ভাই

[মাতন]
আয় ভাই আমরা নিতাই ভজি
আয় ভাই আমরা নিতাই-গুণ গাই
আজ,–ভাই ভাই মিলেছি এক-ঠাঁই

শ্রীগুরুদেবের কৃপায়—আজ,–ভাই ভাই মিলেছি এক-ঠাঁই
নিতাইচাঁদের বিহার-ভূমিতে—আজ,–ভাই ভাই মিলেছি এক-ঠাঁই

নিতাইচাঁদের বিহার-ভূমি

মধুর-শ্রীনদীয়া—নিতাইচাঁদের বিহার-ভূমি

এ যে,–পদাঙ্কিত-ভূমি রে

আমার প্রভু নিত্যানন্দের—এ যে,–পদাঙ্কিত-ভূমি রে

[মাতন]
পেয়েছে নিতাই-করুণা

এই,–ভূমির প্রতি ধূলি-কণা—পেয়েছ নিতাই-করুণা

পাগ্‌লা নিতাই নেচে গেছে

এই,–সুরধুনীর কূলে কূলে –পাগ্‌লা নিতাই নেচে গেছে
গৌরাঙ্গ-নাম-প্রেম যেচে—পাগ্‌লা নিতাই নেচে গেছে

[মাতন]
পেয়েছে নিতাই-করুণা
নিতাই কেঁদে গেল বলে

এই,–সুরধুনীর কূলে কূলে—নিতাই কেঁদে গেল বলে

ওই,–নিতাই কেঁদে গেল বলে

ভজ প্রাণ-শচীদুলালে—ওই,–নিতাই কেঁদে গেল বলে

[মাতন]
আয় ভাই আমরা নিতাই-গুণ গাই

এমন সুযোগ,–আর পাই কি না পাই—আয় ভাই আমরা নিতাই-গুণ গাই
‘এমন সুযোগ,–আর পাই কি না পাই,–
এ জীবনে বিশ্বাস নাই—এমন সুযোগ,–আর পাই কি না পাই

প্রাণভরে নিতাই—গুণ গাই

‘‘অন্তরে নিতাই, বাহিরে নিতাই, নিতাই জগতময়।’’ রে !

আমার,–নিতাই জগতময় রে
আমার,–অতিগূঢ় শ্রীনিত্যানন্দ

এই,–গুপত-গৌরাঙ্গ-লীলায়—আমায়,–অতিগূঢ় শ্রীনিত্যানন্দ

যারে জানায় সেই ত’ জানে

আমার,–অতিগূঢ়-নিতাইধনে—যারে জানায় সেই ত’ জানে
প্রাণ-গৌরাঙ্গ নিজগুণে—যারে জানায় সে ত’ জানে

‘‘অতিগূঢ় শ্রীনিত্যানন্দ এই অবতারে। রে !
শ্রীচৈতন্য যারে জানায় সে জানিতে পারে।’’ রে !!

আনে বা বল জান্‌বে কেমনে
জানে না গৌরের নিজ-জনে

গৌরহরি,–না জানালে নিজগুণে—নিতাইধনে,–জানে না গৌরের নিজজনে

তার পরিচয় প্রথম-মিলনে
পূবের্ব ইঙ্গিত করিলেন প্রভু

নিজ-প্রিয়গণের প্রতি—পূবের্ব ইঙ্গিত করিলেন প্রভু
অবিলম্বে,–নদীয়ায় আস্‌বেন নিতাই—পূবের্ব ইঙ্গিত করিলেন প্রভু

যে-দিনে আসিলেন প্রভু-নিতাই
আসিয়া রহিলেন গোপনে

শ্রী,–নন্দন-আচার্য্যের ঘরে—আসিয়া রহিলেন গোপনে
প্রাণ-গৌরাঙ্গের ইচ্ছাক্রমে –আসিয়া রহিলেন গোপনে

প্রভাতে উঠি গৌরহরি
আদেশিলেন নিজ-প্রিয়গণে

করিতে,-নিতাই-চাঁদের অন্বেষণে—আদেশিলেন নিজ-প্রিয়গণে

আজ্ঞা পেয়ে গৌরাঙ্গগণ
খুঁজিলেন নদীয়ার ঘরে ঘরে

কিন্তু,–কোথাও দেখ্‌তে পেলেন না তারে –খুঁজিলেন নদীয়ার ঘরে ঘরে

আসি,–নিবেদিলেন করযোড়ে
আমরা,–খুঁজিলাম নদীয়ার ঘরে ঘরে

কোথাও দেখ্‌তে—পেলাম না সে মহাপুরুষ-বরে—আমরা,–খুঁজিলাম

নদীয়ার ঘরে ঘরে
তখন,–মৃদু হাসিলেন গৌরহরি

প্রিয়গণের ঐ কথা শুনি—তখন,–মৃদু-হাসিলেন গৌরহরি

মৃদু-হাসিতে এই জানালেন
আমার,–অতিগূঢ় শ্রীনিত্যানন্দ

আমি,–না জানালে কেউ জান্‌তে নারে—আমার,–অতিগূঢ় শ্রীনিত্যানন্দ
আমি,–না দেখালে কেউ দেখ্‌তে নারে—আমার,–অতিগূঢ় শ্রীনিত্যানন্দ

তখন,–ভাবাবেশে ঢুলি’ ঢুলি’

শ্রীমুখে—হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল বলি’—তখন,–ভাবাবেশে ঢুলি’ ঢুলি’
নিজ-প্রিয়গণ-মেলি—তখন,–ভাবাবেশে ঢুলি’ ঢুলি’

চলিলেন নিত্যানন্দ-মিলনে
আনন্দ আর ধরে না

আজ,–বহুদিন-পরে মিলিবেন বলে—আনন্দ আর ধরে না

উপনীত নন্দন-আচার্য্যের ঘরে

শ্রীমুখে,–হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল বলে—উপনীত নন্দন-

আচার্য্যের ঘরে
গোপনে ছিলেন প্রভু-নিতাই

নিজ-ইস্ট-ধ্যানানন্দে—গোপনে ছিলেন প্রভু-নিতাই

অকস্মাৎ হইল ধ্যানভঙ্গ

গৌর,–মুখোদ্গীর্ণ—নামের রোলে—অকস্মাৎ হইল ধ্যানভঙ্গ

প্রাণে প্রাণে জান্লেন নিতাই

এসেছেন আমার প্রাণের ঠাকুর—প্রাণে প্রাণে জান্লেন নিতাই

নইলে আমার,–প্রাণ ধরে কেবা টানে

আমার প্রাণের ঠাকুর বিনে—নইলে আমার,–প্রাণ ধরে কেবা টানে

[মাতন]
উঠি চলিলেন আগুসরি

ভেটিবারে প্রাণ-গৌরহরি—উঠি’ চলিলেন আগুসরি

অপরূপ সে মিলন-রঙ্গ

শ্রী,–নন্দন-আচার্য্যের ঘরে—অপরূপ সে মিলন-রঙ্গ

একবার ভাই কর রে স্মরণ

হৃদে ধরি’ শ্রীগুরু-চরণ—একবার ভাই কর রে স্মরণ
এই আমাদের ভাবনার ধন—একবার ভাই কর রে স্মরণ
‘এই আমাদের ভাবনার ধন’—
নিতাই—গৌরাঙ্গের মধুর-মিল—এই আমাদের ভাবনার ধন

[মাতন]
একবার ভাই কর রে স্মরণ
আর,–কারও পদ চলে না

কারও মুখে না সরে রা—আর,–কারও পদ চলে না
দূরে পরস্পর হেরি’—আর,–কারও পদ চলে না
কারও মুখে না সরে রা –কারও পদ চলে না

না চলে পা, না সরে রা
নদীয়াতে হল প্রকট

যমুনাতীরের সেই রঙ্গ—নদীয়াতে হল প্রকট

পহিলহি রাগ রে
মধুর-শ্রীব্রজ-লীলায়
শ্রীকৃষ্ণ বিষয়, শ্রীরাধিকা আশ্রয়
মধুর-নদীয়া-লীলায়
শ্রীগৌরাঙ্গ বিষয়,শ্রীনিতাই আশ্রয়
পহিলহি রাগ রে

এ যে,–নিতাই-গৌরাঙ্গ-লীলার—পহিলহি রাগ রে
নাগর নাগরী, নাগরী নাগরের—পহিলহি রাগ রে
বিলাস-বিবর্ত্ত-বিলাস-রঙ্গের—পহিলহি রাগ রে

[মাতন]
দিনে দিনে বাড়‌‌বে

অবধি ত’ কেউ পাবে না–দিনে বাড়বে

[মাতন]
না চলে পা, না সরে রা

হইল দোঁহে,–থাকিত-পারা ঠউর হারা—না চলে পা, না সরে রা
কেবল,–দুনয়নে বহে ধারা—না চলে পা, না সরে রা

[মাতন]
দোঁহার শ্রীঅঙ্গে হল বেকত

সাত্ত্বিক-বিকার যত—দোঁহার শ্রীঅঙ্গে হল বেকত
‘সাত্ত্বিক-বিকার যত’—
কম্প-অশ্রু-পুলকাদি—সাত্ত্বিক-বিকার যত

দোঁহার শ্রীঅঙ্গে হল বেকত

প্রাণ,–গৌরের যত নিতাইর তত—দোঁহার শ্রীঅঙ্গ হল বেকত

দোঁহার,–শ্রীঅঙ্গ হল বিভূষিত

অষ্ট-সাত্ত্বিক-ভূষণেতে—দোঁহার,–শ্রীঅঙ্গ হল বিভূষিত

তখন,–চিনিলেন গৌরাঙ্গগণ

অতিগূঢ় নিতাই-ধন,–তখন—চিনিলেন গৌরাঙ্গগণ

তখন,–ভাবাবেশে সবাই বলে
ওগো,–চিনেছি চিনেছি মোরা

গুপত হইল বেকত—ওগো,–চিনেছি চিনেছি মোরা

এই ঠাকুর অবধূত

ওগো,–চিনেছি চিনেছি মোরা—এই ঠাকুর অবধূত
অভিন্ন-চৈতন্য-তনু—এই ঠাকুর অবধূত

[মাতন]
বিহরে নদীয়া—পুরে

ভাবাবেশে বলেন গৌরাঙ্গগণ—বিহরে নদীয়া-পুরে
একাত্মা দুই দেহ ধরে—বিহরে নদীয়া-পুরে

[মাতন]
ভাবাবেশে সবাই বলে

নিতাই-চাঁদের বদন-চেয়ে—ভাবাবেশে সবাই বলে

‘‘দেখরে নয়ন-ভরি এই নিতাই-সুন্দর। রে !
গৌরাঙ্গ-প্রণয়-রসময় পুরন্দর।। রে !!
গোরারসে গঠিত এই নিতাই-কলেবর। রে !
গোরা-রস-কমলের মত্ত-মধুকর।। রে !!
গোরা-রস-চাঁদের চকোর নিত্যানন্দ। রে !
জীব-হৃদি-তমোবিনাশের পূর্ণতম-চন্দ্র।।’’ রে !!

হৃদি,–তমোবিনাশের পূর্ণচন্দ্র

কলিহত-জীব-হৃদি—তমোবিনাশের পূর্ণচন্দ্র
মূরতি ধরে এসেছে—হৃদি,–তমোবিনাশের পূর্ণচন্দ্র
জগদ্‌গুরু নিত্যানন্দ—হৃদি,–তমোবিনাশের পূর্ণচন্দ্র

[মাতন]

‘‘অন্তরে নিতাই, বাহিরে নিতাই, নিতাই জগতময়।’’ রে !

আমার,–নিতাই জগতময় রে
অনন্ত-ব্রহ্মাণ্ড নিতাইর প্রকাশ

আমার,–নিতাইর সত্তায় জগতের সত্তা—অনন্ত-ব্রহ্মাণ্ড নিতাইর প্রকাশ

এই ত’,–নিতাই-চাঁদের স্থূলতত্ত্ব
আর‍ও,–গূঢ়-রহস্য আছে ভাই
‘‘নাগর নিতাই, নাগরী নিতাই নিতাই–কথা সে কয়।।’’ রে !!
চাঁদ,–নিতাই আমার সকলই জানে

শ্রী,–গৌরাঙ্গ-বিলাসের তনু নিতাই—চাঁদ,–নিতাই আমার সকলই জানে
প্রাণ,–গৌরাঙ্গের যখন যে ভাব মনে—চাঁদ,–নিতাই আমার সকলই জানে

যখন যেমন তেমনই হয় রে

গৌরাঙ্গ সুখ দিবার লাগি’—যখন যেমন তেমনই হয় রে
ভাবনিধির ভার-পুষ্টির লাগি’—যখন যেমন তেমনই হয় রে

নিতাই,–নাগর হয়ে তার পায়ে ধরে রে

প্রাণ,–গৌর যখন মানিনী হয়—নিতাই,–নাগর হয়ে তার পায়ে ধরে রে
‘প্রাণ’—গৌর যখন মানিনী হয়’—
ভাবিনীর ভাবাবেশে—প্রাণ,–গৌর যখন মানিনী হয়

নিতাই,–নাগর হয়ে তার পায়ে ধরে রে

গললগ্নীকৃত-বাসে—নিতাই,–নাগর হয়ে তার পায়ে ধরে রে
অপরাধ ক্ষমা কর বলে—নিতাই,–নাগর হয়ে তার পায়ে ধরে রে

আবার,–কখনও গিয়ে দাঁড়ায় বামে

চাঁদ,–নিতাই আমার সকলই জানে—আবার—কখনও গিয়ে দাঁড়ার বামে

‘‘নিতাই নাগর, রসের সাগর, সকল রসের গুরু। রে !
যে যাহা চায়, তারে তাহা দেয়, বাঞ্ছা-কল্পতরু।।’’ রে ।।

যে যাহা চায় তারে তাহা দেয়

নিতাই,–সকল-রসের আশ্রয়-আলয়—যে যাহা চায় তার তাহা দেয়

[মাতন]
আবার,–বাঞ্ছা-পূরণে কল্পতরু

নিতাই অখিল-রসের গুরু—আবার,–বাঞ্ছা-পূরণে কল্পতরু
নিত্যানন্দ জগদ্‌গুরু—আবার,–বাঞ্ছা-পূরণে কল্পতরু

[মাতন]
কর্ত্তব্য বুঝায় জীবে

এই,–নিত্যানন্দ গুরুরূপে—কর্ত্তব্য বুঝায় জীবে

যত দেখ শ্রীগুরুরূপ

কর্ম্মী, জ্ঞানী, যোগী, ভক্ত—যত দেখ শ্রীগুরুরূপ

শ্রী,–নিত্যানন্দ-প্রকাশ-স্বরূপ

যত দেখ শ্রীগুরুরূপ—আমার,–নিত্যানন্দ-প্রকাশ-স্বরূপ

[মাতন]
পরা-ভক্তি দেয় জীবে

শ্রী,–নিত্যানন্দ গুরুরূপে—পরা-ভক্তি দেয় জীবে

‘‘যে যাহা চায়, তারে তাহা দেয়, বাঞ্ছা-কল্পতরু।। রে !!
নিতাই,–‘‘রাধার সমান, কৃষ্ণে করে মান, সতত থাকয়ে সঙ্গে। রে !
নিশিদিশি নাই, ফিরয়ে সদাই, কৃষ্ণ-কথা-রসরঙ্গে।। রে !!
বসি বাম-পাশে, মৃদু মৃদু হাসে, প্রাণ-নাথ বলি’ ডাকে।’’ রে !

আমার,–প্রাণনাথ বলি’ ডাকে রে

কতই না গরব করে—আমার,–প্রাণনাথ বলি’ ডাকে রে
চেয়ে—আড়্‌-নয়নে গৌর-পানে—আমার,–প্রাণনাথ বলি’ ডাকে রে
চেয়ে,–আড়্‌-নয়নে গৌর-পানে—
আধ-বদনে ঘোম্‌টা টেনে’—চেয়ে,–আড়্‌-নয়নে গৌর-পানে

আমার,–প্রাণনাথ বলি’ ডাকে রে

প্রধান্য-নাগরী নিতাই—আমার,–প্রাণনাথ বলি’ ডাকে রে

প্রধানা—নাগরী নিতাই

রসরাজ-গৌরাঙ্গ-নাগরের—প্রধানা-নাগরী নিতাই

নিতাই-রমণ গোরা
নিত্যানন্দ রমে গোরা

কীর্ত্তন-কেলি-বিলাস-রঙ্গে—নিত্যানন্দ রমে গোরা
সঙ্কীর্ত্তন-রাস-রঙ্গে—নিত্যানন্দ রমে গোরা
বিলাস-বিবর্ত্ত-বিলাস-রঙ্গে—নিত্যানন্দ রমে গোরা

[মাতন]

‘‘রাধার যেমন, মনেরই বাসনা, তেমনি করিয়া থাকে।’’ রে !!
‘‘সাধন নিতাই, ভজন নিতাই, নিতাই নয়ন-তারা।’’রে !

আমার,–নিতাই নয়ন-তারা রে

শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেমের মূরতি—আমার,–নিতাই নয়ন-তারা রে
নিতাই বিহনে সব আঁধিয়ারা—আমার,–নিতাই নয়ন-তারা রে

‘‘দশদিগ্‌ময়, নিতাই-সুন্দর, নিতাই ভুবন-ভরা।।’’রে !!

আমার—কতদিনে সে দিন হবে

তোমরা,–সবে মিলে এই কৃপা কর গো—আমার,–কতদিনে সে দিন হবে
জগৎ,–নিত্যানন্দময় হেরিব—আমার,–কতদিনে সে দিন হবে

যে দিকে চাইব দেখতে পাব

গৌর-প্রেমের মূরতি নিতাই—যে দিকে চাইব দেখ্‌তে পাব
‘গৌর-প্রেমের মূরতি নিতাই’—
গৌর,–ভজ বলে কেঁদে বেড়াইছে—গৌর-প্রেমের মূরতি নিতাই

[মাতন]

‘‘দশদিগ্‌ময় নিতাই-সুন্দর, নিতাই ভুবন-ভরা।। রে !!
রাধার মাধুরী, অনঙ্গ-মঞ্জরী, নিতাই নিতু সে সেবে। রে
কোটি-শশধর, বদন-সুন্দর, সখা-সখী বলদেবে।। রে !!
রাধার ভগিনী, শ্যাম-সোহাগিনী, সব-সখীগণ-প্রাণ।’’ রে !


অনঙ্গমঞ্জরী নিতাই—সব-সখীগণ-প্রাণ রে

সেই ত’ আমাপ গুণের নিতাই

অনঙ্গমঞ্জরী-ভাবে বিভাবিত বলাই—সে ত’ আমার গুণের নিতাই

‘‘সব-সখীগণ-প্রাণ।’’ রে !

তাই,–গরব করে সদাই ফিরে রে

বাহু নাড়া দিয়ে নিতাই—তাই,–গরব করে সদাই ফিরে রে
গরবিণীর কনিষ্ঠা বলে—তাই,–গরব করে সদাই ফিরে রে

নিতাই,–‘‘সব-সখীগণ-প্রাণ। রে !
যাহার লাবণী, মণ্ডল-সাজনি, শ্রীমণিমন্দির নাম।।’’ রে ।।
যার লাবণ্যের মূরতি রে

এ-কি,–কইবার কথা কইব কোথা—যার লাবণ্যের মূরতি রে
গৌর-গোবিন্দের মণিমন্দির—যার লাবণ্যের মূরতি রে

মণিমন্দির-রূপ ধরেছে

নিতাইচাঁদের,–লাবণ্য মূর্ত্তিমান্‌ হয়ে—মণিমন্দির-রূপ ধরেছে
গৌর-গোবিন্দ বিলসিবে বলে—মণিমন্দির-রূপ ধরেছে

‘‘নিতাই-সুন্দরে যোগপীঠে ধরে, রত্নসিংহাসন সেজে।’’ রে

ভাইরে আমার নিতাই সে যে

রত্ন-সিংহাসন সেজে—ভাইরে আমার নিতাই সে যে

সেজেছে নিতাই কতই-সাজে

সেবিতে গোরা—রসরাজে—সেজেছে নিতাই কতই-সাজে

সকলই যে নিতাই আমার

গৌর-গোবিন্দের যত সেব্য-দ্রব্য—সকলই যে নিতাই আমার

বিহার,–ভূমিরূপে নিতাই আমার

শ্রীব্রজমণ্ডল, শ্রীগৌড়মণ্ডল—বিহার,–ভূমিরূপে নিতাই আমার
গৌর-গোবিন্দ বিহরিবে বলে—বিহার,–ভূমিরূপে নিতাই আমার

স্রোতস্বিনীরূপে নিতাই আমার

শ্রীযমুনা, সুরধুনী—স্রোতস্বিনীরূপে নিতাই আমার
গৌর-গোবিন্দ কেলি করবে বলে—স্রোতস্বিনীরূপে নিতাই আমার
স্নান, পান, কেলি করবে বলে—স্রোতস্বিনীরূপে নিতাই আমার

তরু-গুল্প-রূপে নিতাই আমার

ছায়া দিয়ে সেবা কর্‌বে বলে—তরু-গুল্ম-রূপে নিতাই আমার
‘ছায়া দিয়ে সেবা কর্‌বে বলে’—
পত্র, পুষ্প, ফল—ছায়া দিয়ে সেবা করবে বলে

তরু-গুল্ম-রূপে নিতাই আমার
যোগপীঠ নিতাই আমার
মণিমন্দির নিতাই আমার
তাতে,–পুষ্পশয্যা নিতাই আমার

গৌর-গোবিন্দ বিলসিবে বলে—তাতে,–পুষ্পশয্যা নিতাই আমার

সকলই যে নিতাই আমার

বসন, ভূষণ, ভোজ্য, পেয়—সকলই যে নিতাই আমার

গৌর-গোবিন্দের সেবা করে

নিতাই অনন্ত-রূপ ধরে—গৌর-গোবিন্দের সেবা করে

সেবে গোরা—রসভূপে

অনন্ত-পরিকর-রূপে—সেবে গোরা-রসভূপে

আমার নিত্যানন্দ-দেহ

গৌর-সেবা-বিগ্রহ—আমার নিত্যানন্দ-দেহ

নিত্যানন্দরূপে বিহরে

গৌর-সেবা মূরতি ধরে—নিত্যানন্দরূপে বিহরে

আমার নিতাই-কলেবর

শ্রীগৌরাঙ্গ-বিলাসের ঘর—আমার নিতাই-কলেবর

আর নিতাই-তনুখানি

গৌরাঙ্গ-ক্রীড়ার বসতি-ভূমি—আমার নিতাই-তনুখানি
প্রাণ-গৌরাঙ্গের রঙ্গ-ভূমি—আমার নিতাই-তনুখানি

[মাতন]
নিতাই-দেহ-কুঞ্জ-কুটিরে

রসরাজ-গৌরাঙ্গ বিহরে—নিতাই-দেহ-কুঞ্জ-কুটিরে

নিতাই-দেহ-কেলি-পারাবার

রসের গোরা সুখে সাঁতারে—নিতাই-দেহ-কেলি-পারাবারে

[মাতন]
আমার নিতাই গুণমণি

শ্রীগৌরাঙ্গ-সুখের খনি—আমার নিতাই গুণমণি

কেউ নাই আমার নিতাই বিনে

সুখ দিতে গৌরাঙ্গ-ধনে—কেউ নাই আমার নিতাই বিনে

[মাতন]
নিতাই ওড়ন, নিতাই পাড়ন

নিতাই-বুকে গোরার শয়ন –নিতাই ওড়ন, নিতাই পাড়ন

[মাতন]

‘‘বসন নিতাই, ভূষণ নিতাই, বিলসে সখীর মাঝে।। রে !!
কি কহিব আর, নিতাই সবার, আঁখি, মুখ, সর্ব্ব-অঙ্গ। রে !
নিতাই নিতাই, নিতাই নিতাই, নিতাই নূতন-রঙ্গ।।’’ রে !!

চাঁদ,–নিতাই আমার নূতন-রঙ্গ

গুপত-গৌরাঙ্গ-লীলায়—চাঁদ,–নিতাই অমার নূতন-রঙ্গ
মিলিত বলাই অনঙ্গমঞ্জরী-সঙ্গ—চাঁদ,–নিতাই আমার নূতন-রঙ্গ
অন্তরঙ্গ-বিলাস-অঙ্গ—চাঁদ,–নিতাই আমার নূতন-রঙ্গ

[মাতন]

অন্তরঙ্গ—খেলার অঙ্গ—চাঁদ,–নিতাই আমার নূতন-রঙ্গ

[মাতন]

‘‘নিতাই বলিয়া, দু’বাহু তুলিয়া, চলিব রবজ-পুরে।’’ রে !

আমাদের,–ব্রজে যাবার এই ত’ সাধন

নিতাই-গুণ কীর্ত্তন নর্ত্তন—আমাদের,–ব্রজে যাবার এই ত’ সাধন

আমার,–নিতাই ভজে ব্রজে যাব

গৌর-রহস্য ভোগের লাগি’—আমরা,–নিতাই ভজে ব্রজে যাব
‘গৌর-রহস্য ভোগের লাগি’—
মহারাস-বিলাসের পরিণতি—গৌর-রহস্য ভোগের লাগি’

নিতাই ভজে গোপী হব
রাধাদাসী নাম ধরা’ব
নিতুই নিতুই মিলাইব

নিভৃত-নিকুঞ্জে যুগল—নিতুই নিতুই মিলাইব
অভিসারে রাই কানু—নিতুই নিতুই মিলাইব ।।

—–


অভিসার আক্ষেপানুরাগ কুঞ্জভঙ্গ খণ্ডিতা গীতগোবিন্দ গোষ্ঠলীলা দানলীলা দূতী ধেনুবৎস শিশুহরণ নৌকাখন্ড পূর্বরাগ বংশীখণ্ড বিপরীত বিলাস বিরহ বৃন্দাবনখন্ড ব্রজবুলি বড়াই বড়াই-বচন--শ্রীরাধার প্রতি মাথুর মাধবের প্রতি দূতী মান মানভঞ্জন মিলন রাধাকৃষ্ণসম্পর্ক হীন পরকীয়া প্রেমের পদ রাধা বিরহ রাধিকার মান লখিমাদেবি শিবসিংহ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন শ্রীকৃষ্ণের উক্তি শ্রীকৃষ্ণের পূর্বরাগ শ্রীকৃষ্ণের মান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ংদৌত্য শ্রীগুরু-কৃপার দান শ্রীরাধা ও বড়াইয়ের উক্তি-প্রত্যুক্তি শ্রীরাধার উক্তি শ্রীরাধার প্রতি শ্রীরাধার প্রতি দূতী শ্রীরাধার রূপবর্ণনা শ্রীরাধিকার পূর্বরাগ শ্রীরাধিকার প্রেমোচ্ছ্বাস সখীতত্ত্ব সখীর উক্তি সামোদ-দামোদরঃ হর-গৌরী বিষয়ক পদ