‘‘ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’ [মাতন]
ভজ ভাই রে—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম রাধে
ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম
জপ,–রাম রাম হরে হরে—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম
রমে রামে মনোরমে—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম
শ্রীরাধারমণ রাম—জপ,–হরে কৃষ্ণ হরে রাম
ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম রাধে
ভাই রে,–আমার নিতাই গুণমণি
আমি,–কি জানি গুণ কত বা বাখানি—ভাই রে—আমার নিতাই গুণমণি
যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
আচণ্ডালের দ্বারে দ্বারে গিয়ে—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
দন্তে,–তৃণ ধরি’ করি’ যোড়-পাণি—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
দু’নয়নে,–বহে ধারা যেন সুরধুনী—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
জাতি,–কুল, অধিকার কিছু না গণি—যেচে,–বিলায় রে প্রেম-চিন্তামণি
ও তার,–গৌর-প্রেমে গড়া কলেবর—ওরে,–ভাই রে আমার নিতাই সুন্দর
নিতাই আমার,–গোরাভাবে সদাই বিভোর
জানে না নিতাই আপন কি পর
গৌর-প্রেম,–মদিরা-পানে হয়ে বিভোর—জানি না নিতাই আপন কি পর
আমরি,–প্রেম-বাহু পসারিয়ে—নিতাই আমার,–আচণ্ডালে ধেয়ে করে কোর
তোর,–পাপ-তাপের বোঝা নিয়ে—বলে ভাই,–বিনামূলে আমি হব তোর
একবার,–মুখে বল ভাই গৌর গৌর—বলে ভাই,–বিনামূলে আমি হব তোর
নিতাইচাঁদের—দুনয়নে বহে অবিরত লোর—নিতাই আমার,–গৌর বলতে হারায় ঠউর
ওগো,–আমার নিতাই, আমার নিতাই—নিতাই আমার,–শ্রীচৈতন্য-চাঁদের চকোর
প্রেম-মধু-পানে সদাই বিভোর-নিতাই আমার,–গোরা-পদ্মে মত্ত-মধুকর
শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেম-বিনোদিয়া—ভাই রে,–নিতাই রঙ্গিয়া আমার
আমরি—গোরা-রসে রসিয়া—ভাই রে,–নিতাই রঙ্গিয়া আমার
আমরি—গৌর-প্রেমে উন্মাদিয়া—ভাই রে,–নিতাই রঙ্গিয়া আমার
আমার,–গৌর-প্রেমে পাগলা নিতাই—নিতাই আমার,–নিশিদিশি
এই,–সুরধুনীর তীর দিয়া—নিতাই আমার,–নিশিদিশি বেড়ায় কাঁদিয়া
সর্ব্বত্র বিহরে আমার নিত্যানন্দ-রাম।। রে !!
গলবাসে দন্তে তৃণ ধরিয়া—নিতাই আমার,–নিশিদিশি বেড়ায় কাঁদিয়া
নিতাই আমার,–করযোড়ে বলে কাঁদিয়া
আচণ্ডালের দ্বারেতে গিয়া—নিতাই আমার,–করযোড়ে বলে কাঁদিয়া
কতশত, ধারা বহে মুখ বুক বাহিয়া—নিতাই আমার,–করযোড়ে বলে কাঁদিয়া
তোদের,–পাপ-তাপের বোঝা নিয়া—আমি,–বিনামূলে যাব বিকাইয়া
একবার,–গৌরহরি বলে আমায় লও কিনিয়া—আমি,–বিনামূলে যাব বিকাইয়া
আমার,–গৌরীদাসের কাঁধে হাত দিয়া নিতাই আমার,–চলে যেতে পড়ে ঢলিয়া
ধূলি-ধূসরিত-অঙ্গে আবার উঠিয়া—আমার,–নিতাই কাঁদে ফুলিয়া ফুলিয়া
বাহু পসারি’,–আচণ্ডালে কোলে তুলিয়া—আমার, নিতাই কাঁদে ফুলিয়া ফুলিয়া
আয় বলি,’—পতিতেরে বুকে ধরিয়া—আমার, –নিতাই কাঁদে ফুলিয়া ফুলিয়া
নিতাইচাঁদের, নয়ন-ধারায় ধরা যায় ভাসিয়া—আমার,–নিতাই কাঁদে ফুলিয়া ফুলিয়া
তার,–গৌর-প্রেমে তনু গড়া—ভাই রে,–আমার নিতাই নয়নতারা।
নিতাই আমার,–গৌর-প্রেমে পাগল পারা
নিতাই আমার,–গেরৈ-প্রেমে দিগবিদিক হারা
নিতাই আমার, –গৌর-প্রেমে আত্মহারা
নিতাই আমার,–নিশিদিশি গায় গোরা গোরা
শ্রীঅঙ্গ,–পুলকে ভরা দুনয়নে শত-ধারা—নিতাই আমার,–নিশিদিশি
নিতাইচাঁদের,–নয়ন-ধারায় ভেসে যায় ধরা—নিতাই আমার,–
ভাই রে,–আমার প্রভু নিত্যানন্দ
নিত্যানন্দ-দাস মুঞি—ভাই রে,–আমার প্রভু নিত্যানন্দ
আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ
আমার,–পাগলের প্রাণ নিতাই—আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ
আমার,–ঐ গরবে হৃদয় ভরা—আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ
আমি,–ঐ গরবে সদাই ফিরি—আমার,–প্রভুর প্রভু নিত্যানন্দ
নিতাই আমার,–অক্রোধ-পরমানন্দ
আমার,–অদোষদরশী নিতাই—নিতাই আমার,–অক্রোধ-পরমানন্দ
আমার,–অযাচিত-কৃপাকরী নিতাই—নিতাই আমার,–অক্রোধ-পরমানন্দ
চাঁদ,–নিতাই আমার পতিতের বন্ধু
তার,–পতিত-উদ্ধারে সঙ্কল্প একান্ত—চাঁদ,–নিতাই আমার পতিতের বন্ধু
প্রেম-বন্যায় ভাসাইল ব্রহ্মাণ্ড—নিতাই আমার,–শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেম-ভাণ্ড
প্রেম মাতাইল পতিত-পাষণ্ড—নিতাই আমার,–শ্রীগৌরাঙ্গ-প্রেম-ভাণ্ড
আমার,–নিতাই-গুণমণির নাম-আমরি,–গৌর-বশীকরণ-মন্ত্র
সে নিশ্চয় দেখিবে আমার স্বরূপ-প্রকাশ।। রে !!
সংসারের পার হইয়া ভক্তির সাগরে। রে !
যে ডুবিবে সে ভজুক আমার নিতাইচাঁদেরে।। রে !!
গোপীগণের যেই প্রেম কহে ভাগবতে। রে !
আমার,—একলা নিত্যানন্দ হইতে পাইবে জগতে।।’’ রে !!
সে,–ভাজুক আমার নিতাইচাঁদে—গোপী,–প্রেম পেতে সাধ যার চিতে
আমার,–নিতাই-কৃপা বিনে ভাই—কোন কালে,–প্রেম কেউ পায় নাই
সে আমার, আমি তার
আমার,–নিতাই সবর্বস্ব যার—সে আমার, আমি তার
ঊর্ধ্ববাহে গৌরহরি ঘোষে—আমি,–বাঁধা তারই প্রেম-পাশে
আমার,–নিতাইকে যে ভালবাসে—আমি,–বাঁধা তারই প্রেম-পাশে
মাধাই মারে জগাই রাখে
গৌরহরি তারে ধরে বুকে—মাধাই মারে জগাই রাখে
গৌরহরি,–বলেন বাহু ঊর্দ্ধ করে—আমি,–বিকাইলাম নিতাই-করে
এবার,–বিশ্বম্ভর নাম ধরে—আমি,–বিকাইলাম নিতাই-করে
নিতাই আমায়,–যারে দিবে ইচ্ছা করে—আমি,–তারাই হব অবিচারে
পানিহাটি-গ্রামে বসি’—ভাবাবেশে বলেন গৌরহরি
রাঘব-পণ্ডিতের করেতে ধরি’—ভাবাবেশে বলেন গৌরহরি
আমার দ্বিতীয় নাই শ্রীনিত্যানন্দ বই।।’’ হে !!
আরে,–‘‘তিলার্দ্ধেক নিত্যানন্দে যার দ্বেষ রহে। রে !
আমায়,–ভজিলেও সে কভু আমার প্রিয় নহে।। রে !!
আমার,–নিত্যানন্দ-স্বরূপে যে প্রীতি করয়ে অন্তরে। রে !
সত্য সত্য সেই প্রীতি করয়ে আমারে।।’’ রে !!
ব্রজ-নদীয়ার একই কথা
মধুর শ্রীবৃন্দাবনে
শ্রীকৃষ্ণ বিষয়, শ্রীরাধিকা আশ্রয়
আর,–মধুর শ্রীনবদ্বীপে
শ্রীগৌরাঙ্গ বিষয়, শ্রীনিতাই আশ্রয়
বৃন্দাবনে এই প্রতিজ্ঞা
কোটি জন্ম যদি আমারে ভজয়ে বিফল ভজন তার।। রে !!
আমায়,–ভজিলেও সে কভু আমার প্রিয় নহে।।’’ রে !!
নিতাই ভজিলেই আমায় ভজা হয়—আমায় ভজিলেই আমায় ভজা হয় না
আর,–অপরূপ কথা শুন ভাই
একের অপ্রিয় আরে সম্ভাষা না করে।। রে !!
গদাধর-পণ্ডিতের সঙ্কল্প এইরূপ। রে !
নিত্যানন্দ-স্বরূপেতে প্রীতি যার নাই। রে !!
দেখাও না দেন তারে পণ্ডিত-গোসাঞি।। রে !!
গৌর-গদাধরের প্রতিজ্ঞা স্মঙরি—আয় ভাই আমরা নিতাই ভজি
কলিহত-পতিত-জীব মোরা—আমাদের,–নিতাই বিনে আর গতি নাই
এমন কার প্রাণ কাঁদে
পতিত-দুর্গতি দেখে—এমন কার প্রাণ কাঁদে
চির-অনর্পিত প্রেম-ধন—কে,–সেধে যেচে বিলায় রে
কত কত অবতার হয়েছে—কেউ কি শুনেছ কোথা
এমন করুণার কথা—কেউ কি শুনেছ কোথা
পাপ লয়ে প্রেম যাচে—কে কোথায় শুনেছে
‘পাপ লয়ে প্রেম যাচে’—
কে কোথায়,–পতিত আছে খুঁজে খুঁজে—পাপ লয়ে প্রেম যাচে
কেউ কি শুনেছ কোথায়
মার খেয়ে প্রেম বিলায়—কেউ কি শুনেছ কোথায়
‘মার খেয়ে প্রেম বিলায়’—
মধুর শ্রীনদীয়ায়—মার খেয়ে প্রেম বিলায়
মেরেছে মার আবার খাব
মেরেছ কলসীর কাণা
তা বলে কি প্রেম দিব না—মেরেছ কলসীর কাণা
কোন কালে,–হবে কি আর হয়েছে—এমন দয়াল আর কে আছে
মার খেয়ে প্রেম যাচে—আমার,–নিতাই বিনে আর কে আছে
আরে আমার নিতাই রে
ও পতিতের বন্ধু—আরে আমার নিতাই রে
আমি,–কি জানি গুণ কত বা বাখানি—কত গুণের নিতাই আমার
অশেষ –দোষের আকর জেনে—জগৎ,–যারে দেখে ঘৃণার চোখে
এ,–জগৎ যারে ত্যাগ করে
অশেষ-দোষের দোষী জেনে—এ,–জগৎ যারে ত্যাগ করে
আমার,–নিতাই তারে করে কোলে
এ,–জগৎ যারে ঠেলে ফেলে—আমার—নিতাই তারে করে কোলে
‘এ,–জগৎ যারে ঠেলে ফেলে,–
অদৃশ্য অস্পৃশ্য বলে—এ,–জগৎ যারে ঠেলে ফেলে
প্রেম-বাহু পসারিয়ে—আমার,–নিতাই তারে করে কোলে
প্রেম,–দিঠে চেয়ে আয় আয় বলে—আমার,–নিতাই তারে করে কোলে
ভয় নাই,–আমি তোর আছি বলে—আমার,–নিতাই তারে করে কোলে
আমাদের তরে আছে নিতাই—আর,–ভয় কি অছে পতিত ভাই
আয় ভাই আমরা নিতাই-গুণ গাই
আজ,–ভাই ভাই মিলেছি এক ঠাঁই
শ্রীগুরুদেবের কৃপায়—আজ,–ভাই ভাই মিলেছি এক ঠাঁই
নিতাইচাঁদের বিহার-ভূমিতে—আজ,–ভাই ভাই মিলেছি এক ঠাঁই
মধুর শ্রীনদীয়া—নিতাইচাঁদের বিহার-ভূমি
ভাগ্যবতী সুরধুনী-তীর—নিতাইচাঁদের বিহার-ভূমিঞ
আমার প্রভু নিত্যানন্দের—এ যে,–পদাঙ্কিত-ভূমি রে
এই,–ভূমির প্রতি ধূলি-কণা—পেয়েছে নিতাই-করুণা
এই,–সুরধুনীর কূলে কূলে—পাগলা নিতাই নেচে গেছে
গৌরাঙ্গ-নাম, প্রেম যেচে—পাগলা নিতাই নেচে গেছে
এই,–সুরধুনীর কূলে কূলে—নিতাই কেঁদে গেল বলে
ভজ প্রাণ-শচীদুলালে—ওই,–নিতাই কেঁদে গেল বলে
‘এমন সুযোগ আর পাই কি না পাই’—
এ জীবনে বিশ্বাস নাই—এমন সুযোগ আর পাই কি না পাই
প্রভুপাদ—শ্রীযুক্ত গোপাল গোস্বামী প্রভুর বাড়ীতে (শ্রীধামপুরী)
১৩৪৯ সাল, ১0ই শ্রাবণ, রবিবার রাত্রি ৮-১0টা পর্য্যন্ত
আমি,–কি জানি গুণ কত বা বাখানি—কতই গুণের নিতাই আমার
অদ্ভুদ চরিত আমার নিতাইচাঁদের।।’’ রে !!
এ কি বিপরীত রীতি—রসের,–খনি হয়েও রসের কাঙ্গাল
পূর্ণ হয়েও মানে অভাব—রস-রাজ্যের এই ত’ স্বভাব
রস-খনি নিতাই আমার—নিরন্তর রস দান করে
রসের আশ্রয় নিতাই আমার—নিরন্তর রস দান করে
রস-পিপাসু-গৌরাঙ্গেরে—নিরন্তর রস দান করে
রসের,–খনি হয়েও রসের কাঙ্গাল
রস,–দিয়ে দিয়ে ওর না পেয়ে—রসের,–খনি হয়েও রসের কাঙ্গাল
‘রস,–দিয়ে দিয়ে ওর না পেয়ে’—
রস-পিপাসু—গৌরাঙ্গের—রস,–দিয়ে ওর না পেয়ে
এই ত মনে গণে নিতাই
আমার ভাণ্ডারে আর রস নাই—এই ত’ মনে গণে নিতাই
পূর্ণ হয়েও মানে অভাব—রস-রাজ্যের এই ত’ স্বভাব
রসের খনি হয়েও—ভাবে,–আমার ভাণ্ডারে আর রস নাই
নিরন্তর রস দান করে—ভাবে,–আমার ভাণ্ডারে আর রস নাই
আমার ভাণ্ডারে আর রস নাই—কই,,–পিপাসা ত’ মিটল না
রস-পিপাসু-গৌরাঙ্গের—কই,–পিপাসা ত মিটল না
পিয়াস ত মিটে নাই—কেমনে করে পিয়াস মিটাব
মনে গণে আমার নিতাই—কেমন করে পিয়াস মিটাব
এ-ত,–নাম-প্রেম প্রচার নয়—তাই,–দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে
নাম-প্রেম প্রচার বাহিরের কথা—এই ত’ রহস্য কথা
দ্বারে দ্বারে রস ভিক্ষা করে
দর্শনেতে রস দান করে—দ্বারে দ্বারে রস ভিক্ষা করে
দর্শন দিয়ে রস দান করে—দ্বারে দ্বারে রস ভিক্ষা করে ;
সেই ত’ গোরা-রস পায়
যে দেখে নিত্যানন্দ-রায়—সেই ত’ গোরা-রস পায়
দর্শন দিয়ে রস দান করে—দ্বারে দ্বারে রস ভিক্ষা করে
রস দিয়ে রস ভিক্ষা করে—বলে,–দে রে আমায় রস দে রে
জগবাসি-নারী-নরে—বলে,–দে রে আমায় রস দে রে
আমি,–দিব রস রস-পিপাসুরে—বলে,–দে রে আমায় রস দে রে
এ ত’,–নাম প্রেম প্রচার নয়—বলে আমায়,–রস দে গো নর নারী
ফিরে বেড়ায় বাড়ী বাড়ী—বলে আমায়,–রস দে গো নর নারী
আমার ভাণ্ডার খালি হয়ে গেছে—বলে আমায়,–রস দে গো নর নারী
রস-পিপাসুর পিয়াস না মিটিছে—আমার,–ভাণ্ডার খালি হয়ে গেছে
নর নারী রস দে গো মোরে—তাই এলাম তোদের দ্বারে
রস-দিব রস-পিপাসু-গৌরাঙ্গেরে—তাই এলাম তোমাদের দ্বারে
রস পেয়ে রসের গোরা
দাতা-নিত্যানন্দ-দ্বারা—রস পেয়ে রসের গোরা
রস-পানে হয়ে ভোরা
নিত্যানন্দ রমে গোরা—রস-পানে হয়ে ভোরা
কীর্ত্তন-কেলি-বিলাস-রঙ্গে—নিত্যানন্দ-রমে গোরা
সঙ্কীর্ত্তন-রাস-রঙ্গে—নিত্যানন্দ-রমে গোরা
চৌদ্দ-মাদল বাজাইয়ে—নিত্যানন্দ-রমে গোরা
নাগর নিতাই, নাগরী নিতাই, নিতাই-কথা সে কয়।। রে !!
সাধন নিতাই, ভজন নিতাই, নিতাই নয়ন-তারা। রে !
দশ-দিকময়, নিতাই সুন্দর, নিতাই ভুবন ভরা,, রে !!
রাধার মাধুরী, অনঙ্গমঞ্জরী, নিতাই নিতু সে সেবে। রে !
কোটি শশধর, বদন সুন্দর, সখা সখীবল দেবে। রে !!
রাধার ভগিনী, শ্যাম-সোহাগিনী, সব-সখীগণ-প্রাণ। রে !
যাহার লাবণী, মণ্ডল-সাজনি, শ্রীমণিমন্দির নাম।। রে !!
নিতাই-সুন্দরে, যোগপীঠে ধরে, রত্ন-সিংহাসন সেজে। রে !
বসন নিতাই, ভূষণ নিতাই, বিলসে সখীর মাঝে।। রে !!
কি কহিব আর, নিতাই সবার, আঁখি, মুখ, সর্ব্ব-অঙ্গ। রে !!
নিতাই নিতাই, নিতাই নিতাই, নিতাই নূতন-রঙ্গ।। রে !!
এ কি,–কইবার কথা কইব কোথা—নিতাই আমার নূতন-রঙ্গ
‘এ কি,–কইবার কথা কইব কোথা’—
না কহিলে মরমে ব্যথা—এ কি,–কইবার কথা কইব কোথা
গুপত-গৌরাঙ্গ-লীলায়—নিতাই আমার নূতন-রঙ্গ
গুপত-ক্রীড়ার অঙ্গ—নিতাই আমার নূতন-রঙ্গ
আমার আমার আমার আমার—আমার প্রভু নিত্যানন্দ
আমার আমার আমার—আমার প্রভু নিত্যানন্দ
আমার আমার—আমার প্রভু নিত্যানন্দ
কেলি-ভূমি মূর্ত্তিমন্ত—আমার প্রভু নিত্যানন্দ
আমরা সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ—কেলি,–মূর্ত্তিমন্ত নিত্যানন্দ
নিতাই বলিয়া, দু’বাহু তুলিয়া, চলিব বরজ-পুরে।’ রে !
নিতাই নিতাই নিতাই বেল—আমরা ত, সেইখানে যাব
যেখানে হয়েছে ব্রজ পূর্ণ—আমরা ত’ সেইখানে যাব
যেখানে যুগল এক ঘটে—পূর্ণ-ব্রজ সেই ত’ বটে
যেখানে,–নিরন্তর জড়াজড়ি—সেখানে পূর্ণ ব্রজপুরী
যেখানে,–কখনও নয় ছাড়াছাড়ি—সেখানে পূর্ণ ব্রজপুরী
যেখানে,–একাধারে যুগল-মাধুরী—পূর্ণ-ব্রজ নদীয়াপুরী
কখনও নয় ছড়াছড়ি—যেখানে—নিরন্তর জড়াজড়ি
সেখানে,–রাই-সম্পুটে বংশীধারী—সেই ত’ পূর্ণ ব্রজপুরী
এই,–নীলাচলের গম্ভীরা—তার আবার নিভৃত-কুটীর
নদীয়ার,–গুপ্ত-উদ্যান নীলাচল হয়—নদে নীলাচল ভিন্ন নয়
সে ধরে গম্ভীরা নাম
নদীয়ার গুপ্ত-কুটীর বটে
এই,–নীলাচলরূপে প্রকটে—নদীয়ার গুপ্ত-কুটীর বটে
যারে গুপ্ত-কুটীর বলে—সে নদীয়ার চোরা-ঘর
এই নিভৃত-গম্ভীরা—নদীয়ার চোরা-ঘর হয়
এখানে—মূরতিমন্ত প্রেমবৈচিত্ত্য—নদীয়ার,–গুপ্ত-কুটীর গম্ভীরা ত’
নদীয়ার গুপ্ত-কুটীর—এখানে নব-রসের খেলা
মিলনে বিরহ, বিরহে মিলন—এখানে নব-রসের খেলা
বিলাস-বিবর্ত্ত-বিলাসে ভোরা—এই নিভৃত-গম্ভীরা
নিতাই-জড়িত প্রাণ-গোরারায়—বিহরে এই গম্ভীরায়
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য-নাম-ধারী
নিতাই-জড়িত গৌরহরি—শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য-নাম-ধারী
তোমার সবাই বলতে পার—কেমন করে হল বল
নাম ধরেছে গৌরহরি—রাই সম্পূটে বংশীধারী
যদি,–কেউ বা ধরে ফেলে কখন–দেখি,–রাইএর বরণ শ্যামের গঠন
আছে,–প্রাণ-বঁধূকে বুকে ধরি’—এ যে দেখি রাই-কিশোরী
সন্ন্যাস-বেশে দিল আবরণ–তাই,–সেবা-শকতি নিতাই-রতন
কেউ ধরে ফেলে পাছে—তাই আবরণ দিয়ে আছে
বাদী-পক্ষ ত’ সঙ্গেই আছে—তাই আবরণ দিয়ে আছে
সন্ন্যাস-বেশে নিতাই আমার—তাই আবরণ দিয়ে আছে
এ যে আমার,–নিতাই-জড়িত গোরাশশী—কে,–বলে আমার গৌর সন্ন্যাসী
নিতাই-আবৃত শচীসুত—এ যে,–গম্ভীরার নিধি গুপত
শ্রীগুরু-চরণ স্মরণ করে—হৃদয়ে ধর ভাই
এই নিগূঢ়-রহস্য—হৃদয়ে ধর ভাই
প্রাণভরে বল নিতাই নিতাই—হৃদয়ে ধর ভাই
নিতাই-জড়িত গৌর-মূরতি—আমাদের,–জীবনে মরণে গতি
এই নিগূঢ় গৌর-রহস্য—পাগলা-প্রভুর কৃপার দান
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—কৃপা করে দান করিলেন
নিতাই-গৌর-গুণ গান কর—সেই,–পাগলা প্রভু হৃদে ধর
শ্রীগুরু-চরণ হৃদে ধরি’—এস,–প্রাণভরে গান করি
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
‘‘গৌরহরি বোল, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।’’ [মাতন]