শ্রীশ্রীনীলাচল যাত্রা কীর্ত্তন
‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
নিতাই-গৌর প্রেমের পাগল—হা,–পরম করুণ শ্রীগুরদেব
আমরা,–কিছুই তো জানতাম না
সংসার-অন্ধকূপে পড়েছিলাম—আমরা,–কিছুই তো জানতাম না
কে আমি আমার কি কর্ত্তব্য—আমরা—কিছুই তো জানতাম না
কে নিতাই-গৌর তার কিবা লীলা—আমরা,–কিছুই তো জানতাম না
সংসার-কূপ হতে টেনে তুলে—তুমি,–নিজগুণে জানাইলে
কৃপা করে কেশে ধরে—তুমি,–নিজগুণে জানাইলে
‘কৃপা করে কেশে ধরে’—
সংসার-কূপ হতে টেনে তুলে—কৃপা করে কেশে ধরে
সঙ্গে করে লয়ে গেলে
যেখানে যেকালে যে লীলা হয়—সঙ্গে করে লয়ে গেলে
নিতাই-গৌর-লীলা জানাইলে—সঙ্গে করে লয়ে গেলে
ভাবাবেশে কীর্ত্তন-রঙ্গে—নিতাই-গৌর-লীলা জানাইলে
প্রাণের,–নিতাই-গৌর সঙ্গে লয়ে—আজ,–লুকাইয়ে করছ খেলা
হা পরমকরুণা শ্রীগুরুদেব—আজ,–লুকাইয়ে করছ খেলা
মধুর শ্রীরথযাত্রা—সেই লীলা আগত-প্রায়
মধুর শ্রীনীলাচলে—চলিলেন সব গৌরাঙ্গগণ,
নিতাই-অদ্বৈত-সনে—সেই লীলা আগত-প্রায়
শ্রীশান্তিপুর-নাথের প্রতি—আজ্ঞা আছে প্রাণ-গৌরাঙ্গের
প্রতিবর্ষে নীলাচলে আসিতে—আজ্ঞা আছে প্রাণ-গৌরাঙ্গের
‘প্রতিবর্ষে নীলাচলে আসিতে’—
গৌড়দেশের ভক্ত-সাথে—প্রতিবর্ষে নীলাচলে আসিতে।
তাই,–চলিলেন সব গৌরাঙ্গগণ
‘‘শচীমাতার আজ্ঞা লইয়া, সকল ভকত ধাইয়া”,
আমরা,–প্রাণ-গৌর দেখতে যাব—বলে,–দাও মা আমাদের বিদায় দাও
তোমার,–পদধূলি শিরে দিয়ে—দাও মা আমাদের বিদায় দাও
দেখিতে তোমার প্রাণ-দুলালে—যাব মধুর-নীলাচলে
চলিলেন নীলাচল-পুরে।
শ্রীনিবাস হরিদাস, অদ্বৈত-আচার্য্য-পাশ,
আসি,–মিলিলা সকল সহচরে।।’’
আমরা,–প্রাণগৌর দেখতে যাব—চল শান্তিপুর-নাথ
‘প্রাণগৌর দেখতে যাব’—
মধুর শ্রীনীলাচলে—প্রাণগৌর দেখতে যাব,
চলিলেন সেন শিবানন্দ
ঘাটি সমাধান করবে বলে—চলিলেন সেন শিবানন্দ
আপ্তবর্গ সঙ্গে লয়ে—চলিলেন সেন শিবানন্দ
তিন পুত্র সঙ্গে লয়ে—চলিলেন সেন শিবানন্দ
কুলীন-গ্রামবাসী সঙ্গে লয়ে—চলিলেন বসু রামানন্দ
প্রভুর সেব্যদ্রব্য লয়ে—চলিলেন শ্রীরাঘব পণ্ডিত
পানিহাটিবাসী সঙ্গে লয়ে—চলিলেন শ্রীরাঘব পণ্ডিত
দময়ন্তী-দত্ত-দ্রব্যে ঝালি সাজায়ে—চলিলেন শ্রীরাঘব পণ্ডিত
প্রাণগৌর বলে কাঁদতে কাঁদতে—চলিলেন শ্রীরাঘব পণ্ডিত
নবদ্বীপ-বাসী-সাথে—চলিলেন মুরারি মুকুন্দ
নিতাই-অদ্বৈত-সঙ্গে, মিলিলা কৌতুক-রঙ্গে।।’’
প্রতিবর্ষে শ্রীনীলাচলে আসিতে—আমার,–নিতাইচাঁদের প্রতি আছে মানা
গৌর না দেখিলে রইতে নারে—আমার,–পাগলা নিতাই মানা মানে না
নীলাচল-পথে চলি যায়।’’
গৌর-লীলা-গুণ গাইতে গাইতে –চলিলেন,–গৌর-প্রেমের পাগলের দল
হা গৌর প্রাণ গৌর বলে—চলিলেন,–গৌর-প্রেমের পাগলের দল
মিলিতে গৌরপ্রেম-সিন্ধু-সনে—চলিলেন,–গৌরাঙ্গগণ নদনদী
অতি উৎকণ্ঠিত মনে, দেখিতে গৌরাঙ্গ-ধনে,
অনুরাগে আকুল-হিয়ায়।।’’
হা গৌর বলে কাঁদে সদাই—আহার নাই নিদ্রা নাই
পথে দেবালয় হেরে—করযোড়ে প্রার্থনা করে
যেন,–দেখিতে পাই প্রাণ শচীনন্দন—এই কৃপা কর দেব-দেবীগণ
আসি,–উতরিলা আঠার নালাতে।
সকল ভকত সাথে, নাচি গাই মন-সাধে,
যায় সবে গৌরাঙ্গ দেখিতে।।
কীর্ত্তনের মহারোল, ঘন ঘন হরিবোল,
অদ্বৈত নিতাই মাঝে নাচে।
শুনি নীলাচল-বাসী, পরম আনন্দে ভাসি,
দেখিবারে ধায়, আগে পাছে।।’’
বলে,–একি অপরূপ নামের ধ্বনি
আঠার নালার পথে শুনি—বলে,–একি অপরূপ নামের ধ্বনি
এ যে,–প্রাণ ধরে করে টানাটানি,–এমন,–নামের ধ্বনি কভু না শুনি
আগুসারি যায় মিলিবারে।’’
বলে,–শুন স্বরূপ-রামরায়
অপরূপ,–নামের ধ্বনি শুনা যায়
আঠার-নালার পথে—অপরূপ,–নামের ধ্বনি শুনা যায়
এমন নাম আর কেবা করবে
আমার,–গৌড়দেশের ভক্ত বিনে—এমন নাম আর কেবা করবে
প্রাণগৌর-সনে গৌরগণের—অপরূপ সে মিলন রঙ্গ
হবে মধুর নীলাচলে—অপরূপ সে মিলন রঙ্গ
সে মিলন রঙ্গ দেখাইতে—কেবা,-সঙ্গে করে লয়ে যাবে
হা,–পরম করুণ শ্রীগুরুদেব ! –তেমনি করে লয়ে যাবে না
সব অপরাধ ক্ষমা করে—তেমনি করে লয়ে যাবে না
নিশ্চয়ই যাবে তুমি
তেমনি করে লয়ে যেও
মধুর শ্রীনীলাচলে—তেমনি করে লয়ে যেও
একবার দেখা দিও
শ্রীজগন্নাথের রথের আগে—একবার দেখা দিও
কিশোরী ভাবিত গেরা—তোমার সঙ্গে দেখব মোরা
শ্রীগুরু-গৌরাঙ্গ-বিহার—হৃদিপটে এঁকে নিব
ভাই ভাই ভাই মিলে—পাগল হয়ে কেঁদে বেড়াব
হা গুরু গৌরাঙ্গ বলে—পাগল হয়ে কেঁদে বেড়াব
ম্লেচ্ছ যবনাদি নরনারী—যারে দেখব তারে বলব
তোমার কৃপাদত্ত নামাবলি,–যারে দেখব তারে বলব
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
‘‘নিতাই-গৌরহরিবোল, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।।’’
‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌরহবিবোল।।’’