দেখিল নঅনে এই সত্য বটে
জসদা প্রসবে পুত্র।
ফিরই সকল দূত-চরগণ
কহিছে সকল সূত্র।।
প্রহরী সকল কহিতে লাগল
হিতের বচন সারা।-
”শুন গো, জসদা, রিপু কংস ওথা
জানিল সকল ধারা।।
মো সভা ভেজিল এই অন্বেষণ
দেখিতে ছাআল তোর।
মূরতি দেখিআ শুন গো, জসদা,
মনেতে হইলুঁ ভোর।।
হিত কহি তোরে এমত ছায়ালে
বাহির না কর কভু।
ছায়ালে ধরিতে মো সভা ভেজিল
কংসরাজ তাহে রিপু।।”
চর-দূতগণ কহিল কারণ
চলি গেলা মধুপুরে।
* * *
গিআ মধুপুরে রাজাএ গোচরে–
“শুন, মহারাজা কংস।
গোকুল-নগরে খুজি ঘরে ঘরে
নন্দের হইল বংশ।।
দেখিল গোচর শুন নৃপবর
রাত্রে সে জন্মিল পুত্র ।
নন্দের ঘরের ছায়াল দেখিল
কহিল এ সব সূত্র।।”
এ কথা শুনিআ কংসের পরাণ
উড়িল, চিন্তিত মনে–
“দেবতার বাক্য কভু নহে আন”–
জানিল মরম স্থানে।।
কহে বেরি বেরি– “কহ ফিরি ফিরি
দেখিলে কেমত শিশু।
উগারিআ কহ ভয় না করিহ
কপট না রাখ কিছু ।।”
তবে কহে দূত চরআদিগণ
“শুন, নৃপ মহারাজ।
দেখি[লুঁ] মুরতি যেন মিঘ-যুতি
জসদা-মন্দির-মাঝ।।
আকর্ণ নয়ন কিবা সে বয়ান
অধর জেমত রাতা।
জেন কন আসি দেবতা প্রবেশি
জনম লভিল উথা।।
কাড়িএ লইতে জবে মনে করি
আচম্বিতে হেদে আখি ।
জেন ঘোরতর অন্ধকার সম
দেখিতে নাহিক দেখি।।
গিয়া নন্দঘরে তাহার [দুয়ারে]
বাহির হইতে নারি।
সেই সে ছায়াল কিবা জানে তন্ত্র”
চণ্ডিদাস কহে ভালি।।