“দেখি নব রামা তুমি কোন জনা
কহ কহ দেখি মোরে।
কেন বা এখানে তোমার গমন
কহ কহ “–বলে তারে।।
সখী কহে তাথে– “শুনহ সুন্দরি,
গেছিল কানন-কুঞ্জে।
যথা রসময় ব্রজ রামাগণ
আছয়ে কতেক পুঞ্জে।।
মোরে বোলাইয়া গেছিল লইয়া
আমি সে বটি যে যতি।
কিছু তাল মান করিয়াছি গান
যে ছিল আপন শক্তি।।
গৌরী নট আর কেদার সুন্দর
পূররী সিন্ধুড়া আঢ়া কৌ।
শ্যাম নট আর মাধবী মঙ্গল
হিল্লোল মঙ্গলা দৌ।।
পাহিড়া দীপক আর বেলাবলি
সুরট মল্লার রাগ।
গাইতে প্রবন্ধে প্রকার করুণে
তাহার মরমে লাগ।।
এ রাগ শুনিতে বিনোদ নাগর
মোহিত হইলা গীতে।
পুনঃ পুনঃ কহে ‘ইহার উপর
আর কিছু শুনি চিতে।।’
তবে কৈল গান যে ছিল সুতান
তাহাই করিল গান।
রাধাকৃষ্ণ নাম অতি অনুপাম
বীণাতে উঠিল তান।।
এ তান শুনিয়া নাগর রসিয়া
হরষ হইল বড়ি ।
এই সে গানের মধুর শুনিয়া
আমারে না দিল ছাড়ি।।
‘রহ রহ ধনি, আর গান শুনি
কহত প্রথম নাম।
শুনিতে মধুর ও দুটি আখর
রাধানাম অনুপাম।।’
কানুর পীরিতি যে দেখিল রীতি
এ কথা কহিব কত।
রাধা নামে কত অমিয়া পাওল
রস উপজিল যত।।”
“গাও গাও ধ্বনি”– কহে গুণমণি–
“রাধা নাম কর গান।
ঐ রস বই আন না শুনিব
এ বড় মধুর তান।।
আলাপে রাগিণী রাগের উরণি
রাধা বলি যেন বাজ।
তোমার ও গানে মোর মনে হানে
যেমতি হৃদয়ে বাজ।।”
চণ্ডীদাসে বলে– এই গীতে মোহ
রসে ভেল অতি ভোর।
মুগধ মাধব বহু বিদগধ
সুখের নাহিক ওর।।