নাচত নব নন্দ-লাল
রসবতি করি সঙ্গে।
রবাব খবাব বিণ কপিনাস
বাজত কত রঙ্গে।।
কোই গায়ত কোই বায়ত
কোই ধরত তাল।
সখিগণ মিলি নাচই গাওই
মোহিত নন্দ লাল।।
শূক নাচিছে শারী নাচিছে
বসিয়া তরুর ডালে।
কপোত কপোতী দুজনে মিলিয়া
ধরিছে কতই তালে।।
চাতক চকোর আনন্দে নাচিছে
বদনে নয়ন রাখি।
কুরঙ্গ নাচিছে মউর নাচিছে
নাচিছে কোকিল পাখী।।
রাধাশ্যাম কুণ্ডে কুমুদ কহ্লার
নাচনে উছলে বারি।
তরুলতা যত আনন্দে নাচিছে
ফল-ফুল সারি সারি।।
ফুলের উপরে ভ্রমরা নাচিছে
ভ্রমরী নাচিছে সঙ্গে।
মধুকর যত নাচে কত শত
মধু পিয়ে তারা রঙ্গে।।
যমুনা নাচিছে তরঙ্গের ছলে
তাহাতে মকর-মীনে।
জলচর পাখী নাচিয়া বুলিছে
নাহি জানে রাতি-দিনে।।
ঊর্দ্ধ্বে নাচিছে যত দেবগণ
হইয়া আনন্দ-চীত।
গন্ধর্ব্ব কিন্নর নাচিয়া নাচিয়া
গাইছে মধুর গীত।।
ব্রহ্মা নাচিছে সাবিত্রী সহিতে
পুলকে পূরিত অঙ্গ।
বৃষের উপর নাচে মহেশ্বর
পার্ব্বতী করিয়া সঙ্গ।।
মিহির নাচিছে স্ব-পত্নী সহিতে
রোহিণী সহিতে চান্দে।
যত দেব-গণে আনন্দে নাচিছে
হিয়া থির নাহি বান্ধে।
সুরাসুর আদি আনন্দে নাচিছে
পাতালে নাগের সনে।
কূর্ম্মের সনে অনন্ত নাচিছে
অতি আনন্দিত মনে।।
সুমেরু সহিতে পৃথিবী নাচিছে
বলিছে ভালি রে ভালি।
গোবর্দ্ধন গিরি আনন্দে নাচিছে
যার তটে রাস-কেলি।।
এ সব নাচন দেখিয়া মগন
বহিছে আনন্দ ধারা।
নিমানন্দ দাস নাচন দেখিয়া
নাচিছে বাউল পারা।।