নয়ন তরল বহে প্রেমবারি
অথির কুলের বালা।
খেনে খেনে উঠে বিরহ আগুন
দুগুন হইল জ্বালা।।
মলয়-চন্দন মৃগমদ যত
অঙ্গেতে আছিল মাখা।
হৃদয়-কাঁচুলি তিতিল সকল
তাহা নাহি গেল রাখা।।
প্রেমে ঢল ঢল যেমন বাউল
বনের হরিণী তারা।
ব্যাধ-বাণ খায়্যা হইয়া ঘাউল
চারিদিকে চাহি সারা।।
ক্ষীণ গোপীগণে চাহে চারিপাশে
বিরহ বেদনা পায়্যা।
কাষ্ঠ-সম যেন চিত্রের পুতলি
সারি সারি দাণ্ডাইয়া।।
“কি শুনি কি শুনি বিষম শঙ্কট
হৃদয়ে হইল বেথা
আর কি জীবন শঙ্কট হইল
কি আর দেখহ হেথা।।
যাহার লাগিয়া এত পরমাদ
এমত তাহার রীত।
চল গিয়া জলে পৈস কুতূহলে
মরিব এ নহে চিত।।
কি আর পরাণ রাখিব আমরা
কি শুনি দারুণ বোল।
যার লাগি এত বিষম বিবাদ
নয়নে বহিছে লোর।।”
এই অনুমান করে গোপীগণ
কহত ইহার বাণী।
নাগর-বচন বিষের সমান
এবে সে ইহার জানি।।
চণ্ডীদাস কহে শুনহ গোপিনী
এই মোর মনে লয়।
ভকতি-আদরে সরস বচনে
বিনতি করহ পায়।।