পথের মাঝেতে আছেন সুবল
হেনই সময়ে রাই।
সহচরী সনে ত্বরিতে মিলিল
যমুনা-সিনানে যাই।।
কহেন সুবল– “অপরূপ আগে
স্থল জল সেই দিকে।
যে রূপ ছায়াতে দেখিয়ে মূর্চ্ছিত
সহজ মূরতি আগে।।
এ পথে গমন না কর বিলম্ব
আগে দেখ নটরায়।”
হংস-গমনী রাজার নন্দিনী
প্রবেশ করল তায়।।
সহচরী রহে পথের মাঝারে
সুবল সঙ্গেতে তথা।
দেখিয়া নাগর নাগরীর মুখ
মূরছিত ভেল তথা।।
অবশ পরশ নয়ান নয়ান
হেরিয়া নাগরী পানে।
নাগরী নাগরে হৃদয়ের পরে
বাঁধিল সে দুই জনে।।
কেবল দরশ হইল হরস
নয়ানে নয়ানে খেলা।
বচনে মিলিন হইল যতন
হৃদয় ভিতরে মেলা।।
বৃকভানুসুতা চরণ হইতে
নিরীক্ষণ করে চূড়া।
মনের মানসে আপনার চিতে
হৃদয়ে বাঁধল গাঢ়া।।
মনে মনে বন- ফুল তুলি রাধে
পূজল চরণ দুই।
নহিল পরশ কেবল দরশ
মানস ভিতরে থুই।।
সূর্য্য-পূজাছলে আনি মিলাইব
তবে সে পরশ হব।
ললিতা বিশাখা সব সখী সঙ্গে
আনিয়া মিলায়া দিব।।
এ কথা অনেক বিচার করিতে
রসের চাতুর্য্য বড়ি।
সুগড় হইলে এ সব জানিলে
বুঝিব চাতুরী তারি।।
চণ্ডীদাস বলে এ সব জানিলে
চাতুরী রসের সার।
রসিক হইলে জানিতে পারয়ে
কিবা সে কি রসধার।।