বলরাম আগে কহিছে কানাই–
“বড় দিল মনে দুখ।
চোরা ধেনু হেদে বনেতে হইতে
গেছিল মথুরা-মুখ।।
তাহা ফিরাইতে তেঁইসে বিলম্ব
শুন বলরাম দাদা।
তোমা ছাড়া হয়ে তবে কিবা থাকি
পরাণ এখানে বাঁধা।।”
“ভাল হৈল ভাই আসিয়া মিলিলে
বলকি খেলাবে খেল।
তুরিত করিয়া খেলিয়া দুলিয়া
ঘরে রে যাইব চল।।
আজি যবে আসি গোঠেতে সাজিয়া
দেখেছি বনেতে ভয়।
কংস-চর আসি সবারে ধরিয়া
লয়েছে মনেতে লয়।।
কানাই থাকিতে তার ভয় নাহি
শঙ্কট-তারণ তুমি।
কত কত কংস সৃজিতে পারহ
তাহা সে আমরা জানি।।
তুমি কোন দেব দেবের দেবতা
আমরা আহীর-বালা।
কি জানি তোমার মহিমা অগম্য
অপার যাহার লীলা।।
সব শিশু বলে কানাই গোচরে —
“শুনহে কমল-আঁখি।
আজু সে ক্ষুধায়ে ক্ষুধিত হইয়া
ভোগ কিছু নাহি দেখি।।
এই বনে যদি অন্ন আনি দেহ
সকল বালকে খাই।
এই বড় মনে ক্ষুধার কারণে
শুনহ কানাই ভাই।।”
বালক-বচনে হরষ-বদন
গোপাল হইলা বড়ি।
বলরাম -পানে কমলনয়ান
চাহিলা নয়ন জুড়ি।।
কানু কহে –“শুন বলরাম দাদা,
ক্ষুধায় বালক দুখী।
চল চল যাব যজ্ঞপত্নী-স্থানে”
চণ্ডীদাস তাহে সুখী।।