“শুন গুণমণি কহি এক বাণী
কাঁধেতে করহ মোরে।
তবে সে এ পথে পারিয়ে চলিতে
নিশ্চয় কহিয়ে তোরে।।”
“আইস ধনী রামা কাঁধে করি তোমা”
সেখানে বসিলা হরি।
শ্যামের সরস বচন পাইয়া
দাঁড়াইল গোপনারী।।
বসন নিবিড় করিয়া বাঁধল
সেই যে চড়ব কাঁধে।
হেন বেলে তথি চলি গেলা কতি
সে নব-গোকুল-চাঁদে।।
সেই নব নারী কাষ্ঠের পুতলি
দাঁড়ায়ে চেতন হরি।
যেমন আকাশে বজর ভাঙ্গিয়া
পড়ল শিরের ‘পরি।।
কান্দয়ে করুণে পড়িয়া কাননে
ধূলায়ে ধূসর তনু।
যেমন হরিণী বিকল হইয়া
কাননে বেড়ায় পুনু।।
অচেতন সরে রোদন বেদন
হারায়ে পরাণ-পতি।
“কোথা গেল নাথ ছাড়ি মোর সাথ
তোমারে না দেখি কতি।।”
সেই নব-রামা শ্যামেরে খুঁজিয়া
একাকী কাননে পড়ি।
মুখে নাহি বাণী যেন অনাথিনী
শিরে করাঘাত পাড়ি।।
যেন সে ধবলি সোনার পুতলি
পড়িয়া কানন-বনে।
বিকল হইয়া মূরছা খাইয়ে
দীন চণ্ডীদাস ভণে।