‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই গৌর হরিবোল’’
‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
‘‘জয় রে জয় রে জয়,শ্রীগুরু,–শ্রীরাধারমণ জয়’’
প্রাণভরে জয় দাও ভাই
শ্রীগুরু-শ্রীরাধারমণের—প্রাণভরে জয় দাও ভাই
আজ,–মিলেছি সব ভাই ভাই—প্রাণভরে জয় দাও ভাই
‘আজ,–মিলেছি সব ভাই ভাই—
যাঁর কৃপায় এই ঠাঁই—আজ,–মিলেছি সব ভাই ভাই
নিতাই-গৌর-প্রেমে পাগলা-প্রভুর—প্রাণভরে জয় দাও ভাই
তাঁদের চরণ বুকে ধরে—প্রাণভরে জয় দাও ভাই
‘তাঁদের চরণ বুকে ধরে’—
যাঁরা তাঁর-চরণ সর্ব্বস্ব করেছে—তাঁদের চরণ বুকে ধরে
যাঁদের জীবনে মরণে গতি—তাঁদের চরণ বুকে ধরে
‘যাঁদের জীবনে মরণে গতি’—
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগলা-মূরতি—যাঁদের জীবনে মরণে গতি
নৈলে,–ভোগ হবে না তাঁর পাগল-পনা
যাঁদের সর্ব্বস্ব তাঁদের না হলে করুণা—নৈলে,–ভোগ হবে না তাঁর পাগল-পনা
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—আমার,–শ্রীরাধারমণ জয়
সে যে,–প্রেমদাতা রসের সদন।
আমার,–শ্রীগুরু শ্রীরাধারমণ—সে যে,–প্রেমদাতা রসের সদন।
প্রেমদাতা রসের সদন—নিশিদিশি হিয়ায় ধরে
প্রভু-নিতাই প্রাণ-গৌরাঙ্গ—নিশিদিশি হিয়ায় ধরে
আমার,–পাগলা প্রভু শ্রীরাধারমণ—নিশিদিশি হিয়ায় ধরে
‘আমার,–পাগলা প্রভু শ্রীরাধারমণ’—
হৃদে ধরি’ নিতাই-গৌর-রতন—আমার,–পাগলা প্রভু শ্রীরাধারমণ
বিলাসী আর বিলাস-রতন—তাঁর স্বরূপে বিলসে অনুক্ষণ
প্রভু নিতাই প্রাণ গৌর-রতন—তাঁর স্বরূপে বিলসে অনুক্ষণ
নিতাই প্রেমদাতা গৌর রসের সদন—তাঁর স্বরূপে বিলসে অনুক্ষণ
আমার,–শ্রীরাধারমণ-তনুখানি—নিতাই-গৌর-খেলার ভূমি
মূর্ত্তিমন্ত-প্রেম-রস—নিতাই-গৌর-খেলার ভূমি
আমার,–শ্রীরাধারমণ তনুখানি—দুই খেলার মূরতি মানি
পূর্ব্বলীলা পরলীলা—দুই খেলার মূরতি মানি
নদীয়া-লীলা খেতুরী-লীলা—দুই খেলার মূরতি মানি
নদীয়া-খেতুরী-লীলা প্রকট করে—পাগল আমার,–নিশিদিশি বিহরে
‘নদীয়া-খেতুরী-লীলা প্রকট করে’—
প্রকট-অপ্রকট-গণ-সনে—নদীয়া—খেতুরী-লীলা প্রকট করে
পাগল আমার,–রঙ্গিয়া রসিয়া হৃদে ধরে—প্রেম-রস দিতে সামর্থ্য ধরে
হৃদে ধরি’ নিতাই-গৌর-যুগলরতন—সে যে,–প্রেমদাতা রসের সদন
কিবা সে কোমল তনু,শিরীষ-কুসুম জনু,’’
ভজ বলে বাহু পসারি’—যারে,–পরশ করেছে তার অনুভব আছে
বাহু পসারি’ যারে বুকে ধরেছে—তারই তো অনুভব আছে
‘বাহু পসারি’ যারে বুকে ধরেছে’—
আমার,–নিতাই-গৌর ভজ বল—‘বাহু পসারি’ যারে বুকে ধরেছে’
শিরীষ-কুসুম জিনি কোমল-শরীর—তারই তো অনুভব আছে
যে,–আলিঙ্গন ছলে পরশ পেয়েছে—তারই তো অনুভব আছে
যে,–মরমে মরমে ঝুরেছে—তারই তো অনুভব আছে
যে,–মরমেতে ঝুরে মরিছে—তারই তো অনুভব আছে
‘যে,–মরমেতে ঝুরে মরিছে’—
আর কি পরশ পাব বলে—যে,–মরমেতে ঝুরে মরিছে
প্রেমে ঢর ঢর দু’নয়ন।।’’
নিশিদিশি গোরা-প্রেমে—গরগর-নিতাই বুকে ধরে
নিতাই রঙ্গিয়া গোরা রসিয়া—রঙ্গিয়া-রসিয়া-ভোগে মেতে
প্রেম-রস পান করে—রঙ্গিয়া-রসিয়া-ভোগে মেতে
ভাই রে তোদের পায়ে পড়ি—আমার,–নিতাই-গৌর ভজ বলে
পিরীতি মূরতি মানি, শ্যামল বরণ খানি,’’
প্রেমে ঢর ঢর দুনয়নে—পাগলের,–পিরীতি-মূরতি মানি
হৃদে ধরা,–পিরীতি-মুরতির বিলাস জানি—পাগলের,-পিরীতি-মূরতি, মানি
‘‘পিরীতি মূরতি মানি,শ্যামল বরণ খানি,’’
মহারাস-বিলাসের পরিণতি—পিরীতি-মুরতি বুকে ধরে
পাগলের শ্যামল-দেহখানি—নিতাই-গৌর-প্রেমের মুরতি
হৃদে ধরে প্রেমময় স্বরূপ—পাগলের আমার,–ভালবাসায় গড়া তনু
ভেবে ভেবে বরণ ধরেছে
পিরীতি নিশিদিনে—ভেবে ভেবে বরণ ধরেছে
ভাব-ভূষণে বিভূষিত
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—ভাব-ভূষণে বিভূষিত
মহাভাবনিধি হৃদে ধরে—ভাব-ভূষণে বিভূষিত
হৃদে ধরি’ পদ্মাবতী-শচী-সুত—পুলকে অঙ্গ সদা শোভিত
হৃদে ধরে প্রেমের মুরতি—সদা শ্রীঅঙ্গ পুলকিত
হৃদে ধরে প্রেমের মুরতি—সদাই অঙ্গ পুলকিত তাই
হৃদে নিতাই-চাঁদে পাই—সদাই অঙ্গ পুলকিত তাই
হৃদে বিলসে প্রেমের নিতাই—সদাই অঙ্গ পুলকিত তাই
সদাই,–প্রেমে অঙ্গ পুলকিত
পাগল আমার,–নিশিদিশি ভোগ করে
নিতাই-গৌর লীলারহস্য—পাগল আমার,–নিশিদিশি ভোগ করে
যে দেখে সে বলে—ইহার,–শ্রীঅঙ্গে দেখি যে ভাবের বিকার
সদাই,–বিলসে নিতাই-গৌর-বিহার—ইহার,–শ্রীঅঙ্গে দেখি যে ভাবের বিকার
ভাবের মুরতি হৃদে করে বিলাস—তাইতে অঙ্গে ভাবের বিকার
ভাবনিধি হৃদে ধরে—ভাবাবলী অঙ্গে শোভে
ভাবনিধির কথা-প্রসঙ্গে—ভাবাবলী অঙ্গে শোভে
পাগলের মুরতিখানি—ভাবাবলী-রত্নখনি
ভাবাবলী ভূষণেতে—শ্রীঅঙ্গ সদা বিভূষিত
নিতাই-গৌর-ভোগে মত্ত তাই—শ্রীঅঙ্গ সদা বিভূষিত
নামগানে সদাই বিভোর।’’
নিতাই-গৌর-প্রেমে পাগল মোর,–নাম গানে সদাই বিভোর
একতিল রইতে নারে
এই নাম-প্রসঙ্গ না করে—একতিল রইতে নারে
‘এই নাম-প্রসঙ্গ না করে’—
সাধ্য-সাধন নির্ণয় করা—এই নাম-প্রসঙ্গ না করে
একপদ চলে না
এই নাম-প্রসঙ্গ বিনা—একপদ চলে না
ভজ আমার নিতাই-গৌর—যারে দেখে তারে বলে
তোদের,–পাপ তাপ সব আমি নিব
সুমধুর-নৃত্যরঙ্গ,’’
বাহু যুগল দোলাইয়ে—পদে পদ ছাঁদি নেচে যায় চলে
রঙ্গিয়া রসিয়া ধরি’ হৃদয়ে—পদে পদ ছাঁদি বাহু দোলাইয়ে
তার,–নাটুয়া-মূরতি নিরন্তর জাগে প্রাণে—যে দেখেছে সেই ত’ জানে
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—যে দেখেছে সেই ত’ জানে
যা দেখে ভাবুক হিয়া-মাঝে—শ্রুত-পূর্ব্ব-রঙ্গ জেগে উঠে
দেখি’ পাগলের মধুর-নৃত্য—উদ্দীপ্ত হয় পূর্ব্ব-রঙ্গ
এ যে,–নাটুয়া-মুরতির বিহার-ভূমি
হৃদে ধরে নাচছে
সঙ্কীর্ত্তন-সুলস্পটে—হৃদে ধরে নাচছে
এ কে এল রে
এ কি অপরূপ নটন
বুঝি,–গুপতে গৌর হৃদে বিহরে
গুপতে গৌরাঙ্গ বিহরে
বুঝি ওর হৃদয়-মাঝারে—গুপতে গৌরাঙ্গ বিহরে
তাইতে বিকাশ এ নটন-মাধুরী
উহার,–হৃদে বিহরে গৌরহরি—তাইতে বিকাশ এ নটন-মাধুরী
‘উহার,–হৃদে বিহরে গৌরহরি’—
যার,–নটনে উৎপত্তি নটনে স্থিতি—উহার,–হৃদে বিহরে গৌরহরি
গৌর নাচে উহার ভিতরে
তার বিকাশ দেখি বাহিরে—গৌর নাচে—গৌর নাচে উহার ভিতরে
এই ত’ গৌরের স্বভাব বটে
আপনায় আপনি ভোগ করে
যোগ্য—হৃদে বিলাস করে—আপনায় আপনি ভোগ করে
আপন-নটন-মাধুরী ভোগ করে
বক্রেশ্বরের হৃদে নেচে নাচাইয়ে—আপন-নটন-মাধুরী ভোগ করে
আবেশে অবশ অঙ্গ—স্বাধীনতা নাই রে
যেমন নাচায় তেমনি নাচে—স্বাধীনতা নাই রে
প্রভু আমার সদা আবেশময়—কখনও বিষয় কখনও আশ্রয়
হৃদয়ে হয় যেমন প্রকাশ—বাহিরেতে তেমনি বিকাশ
ভাসি’ দুটী নয়ন-জলে—আমার,–নিতাই-গৌর ভজ বলে
মুখে বল নিতাই গৌর—বলে,–বিনামূলে আমি হব তোর
ম্লেচ্ছ-যবনাদি অবিচারে—সবাকারে কোলে করে
অদোষ-দরশী নিতাই হৃদে ধরে—সবাকারে কোলে করে
প্রেমদিঠে চেয়ে বাহু পসারিয়ে—সবাকারে কোলে করে
সবাকারে করি’ কোলে—পাগল আমার,–ভেসে যায় নয়ন-জলে
বাহু পসারি’ কোলে করি’—আমায় কিনে নে রে বিনামূলে
মুখে নিতাই গৌর বলে,–আমায় কিনে নে রে বিনামূলে
পাগল আমার,–কেঁদে বলে করেজোড়ে—প্রাণ নিতাই গৌর ভজ সুখে
তোদের,–পাপের বোঝা আমায় দিয়ে—প্রাণ নিতাই গৌর ভজ সুখে
আর যত যত ভক্তিগ্রন্থ।
সকল-ভকত-সঙ্গে, আলাপ করয়ে রঙ্গে,
লীলা-কথা ভকতি-সিদ্ধান্ত।।’’
আমার,–পাগলা প্রভু শ্রীমুখেতে—কখনও আন কথা নাই
গৌর-গোবিন্দ-কথা কহেন সদাই—কখনও আন কথা নাই
একতিল ব্যর্থ না যায়—সদাই প্রসঙ্গে গোঙায়
নাম-রূপ-গুণ-লীলা-কথায়—সদাই প্রসঙ্গে গোঙায়
‘নাম-রূপ-গুণ-লীলা-কথায়’—
প্রাণ-নিতাই-গৌরাঙ্গের—নাম-রূপ-গুণ-লীলা-কথায়
‘‘রথাগ্রে নৃত্য-কীর্ত্তন,’’
রথাগ্রে নৃত্য কীর্ত্তন—হৃদে ধরি’নাটুয়া-শচীনন্দন
এ যে,–জগন্নাথে মুগ্ধকারী—হৃদে ধরি’ সেই গৌরহরি
‘এ-যে,–জগন্নাথে মুগ্ধকারী’—
দেখায়ে নিজ-যুগল-মাধুরী—এ যে,–জগন্নাথে মুগ্ধকারী
‘‘রথাগ্রে নৃত্য কীর্ত্তন,’’
সেই নটনের কথা মনে করে—প্রাণ কেঁদে উঠেছে
আর কি দেখতে পাব না
শ্রীগুরু-স্বরূপে গৌরাঙ্গ-বিলাস—আর কি দেখতে পাব না
পূর্ব্বলীলা-উদ্দীপক নৃত্য-কীর্ত্তন—আর কি দেখতে পাব না
আমরা,–তাই যাই নীলাচলে
রথযাত্রাকালে ভাই ভাই মিলে—আমরা,–তাই যাই নীলাচলে
সেই ভাবাবেশে-নৃত্য-কীর্ত্তন সঙরিয়ে—আমরা,–তাই যাই নীলাচলে
সেই নটন দেখে,–গৌর নটন ভোগ করব বলে—আমারা,–তাই যাই নীলাচলে
যে,–সে নটন দেখে নাই—বলে তারে কি বুঝাব ভাই
তার হৃদিপটে আঁকা আছে—সেই ত’ জানে যে দেখেছে
পূরব-নৃত্য-কীর্ত্তন-রঙ্গ—তার হৃদে জেগেছে
এ-নটন দেখে সে-নটন—কেন বা জাগে বল
নিশ্চয়ই এ’-হৃদে সেই নাচে—নৈলে,–কেন বা জাগে বল
নৈলে,—নৃত্য কি এত মাধুরী ধরে—উহার হৃদয়ে গৌর বিহরে
প্রাণনাথ পাইনু বলি’ কাঁদে।’’
মহাভাবনিধি হৃদে ধরে
রথের আগে নটন-পর—মহাভাবনিধি হৃদে ধরে
স্বমাধুরী ভোগেতে ভোর—মহাভাবনিধি হৃদে ধরে
জগন্নাথের বদন চেয়ে—পাগলের,–বয়ান ভাসে নয়ন-জলে
দাঁড়ায়ে শ্রীরথের আগে—পাগলের,–বয়ান ভাসে নয়ন-জলে
প্রাণনাথ পাইনু বলে—পাগলের,–বয়ান ভাসে নয়ন-জলে
তার হৃদে যে কাঁদা-ঠাকুর আছে—তাইতে তো পাগল কাঁদে
সেই সে পরাণ-নাথে পাইনু—এ-কান্না তো আর কারো নয়
বিনা গৌর মহাভাবময়—এ-কান্না তো আর কারো নয়
এ-হৃদয়ে সে-লীলা হতেছে—তাইতে এ-কান্না দেখা দিছে
এ-হৃদয়ে গৌরকিশোরী কাঁদছে—তাইতে এ-কান্না দেখা দিছে
পূর্ব্বলীলা ভোগ করেছে—যে দেখেছে তার অনুভব আছে
যত নীলাচলবাসী,’’
যে হেরে সে পড়ে প্রেমে-ফাঁদে।।’’
অদ্ভুতভাবের বিকার হেরি’—বলে,–এ কি করে লুকাচুরি
এ কি অদ্ভুত-ভাব হেরি—বলে,–এ কি করে লুকাচুরি
রঙ্গিয়া রসিয়া—বলে,–এ কি করে লুকাচুরি
ভাববিষ্ট-কীর্ত্তন-নটন হেরে—তার শোনা-কথা মনে পড়ে
বলে,–এ আবার কে এল রে এ যে তেমনি করে কাঁদে
জগন্নাথে চেয়ে ব্যাকুল হয়ে—এ যে তেমনি করে কাঁদে
শুনেছি আমরা পূরবে—একদিন একজন কেঁদে গেছে
ভাবিনীর ভাবে বিভোর হয়ে—একদিন একজন কেঁদে গেছে
বুঝি বা বিরাজে
সেই কাঁদা-গৌর এর হৃদে—বুঝি বা বিরাজে
রথের আগে সেই নটন-পরে—দেখতে পাই নাই দুঃখ ছিল মনে
তার কথা কেবল শুনেছিলাম কানে—দেখতে পাই নাই দুঃখ ছিল মনে
এ-স্বরূপে সে-খেলা দেখে—আমাদের হিয়া গেল জুড়ায়ে
নিতাই-গৌর-বিলাস ভোগ করাতে—বুঝি এসেছে পাগল-সেজে
যা’ দেখি নাই তা’ দেখাইতে—বুঝি এসেছে পাগল-সেজে
যা’ দেখি নাই তা’ দেখাইতে—বুঝি এসেছে পাগল-সেজে
গৌর-সুন্দর হৃদে ধরে—ভাবের প্রভাব প্রকট করে
পাগলের কান্না শুনে—সবাই ব্যাকুল হয়ে কাঁদে
হা নিতাই গৌর বলে—সবাই ব্যাকুল হয়ে কাঁদে
কি সুন্দর-রূপঠাম,’’
অখিল-লাবণ্যামৃতধাম—হৃদে ধরি’ গৌর-গুণদাম
হৃদে ধরে গৌর-রূপের খনি
আমার,–রাধারমণ গুণমণি—হৃদে ধরে গৌর-রূপের খনি
সদাই বিহরে নীলাচলে।’’
গৌরলীলা ভোগে কেবল—পাগল হয়ে বেড়ায় পাগল
প্রকট-বিহার বুকে ধরে—নীলাচলে পাগল-বিহার
চিতচোর প্রাণগৌরাঙ্গের—নীলাচলে পাগল-বিহার
প্রাণগৌর-লীলা অনুশীলনে—কাঁদে প্রভু নিশিদিনে
নীলাচলচারী হৃদে ধরে—কাঁদে প্রভু নিশিদিনে
সঙ্কীর্ত্তন-রঙ্গে সদা ফিরে।।’’
ভাবনিধির বিহার হৃদে ধরে
যায়, গৌরাঙ্গের সঙ্গে করে
কভু নদীয়ায় কভু ব্রজপুরে—যায়, গৌরাঙ্গের সঙ্গে করে
পাগলা প্রভু রাধারমণের—ব্যর্থকাল নাহি যায়
নিতাই-গৌর-স্মরণ বিঁনে—ব্যর্থকাল যায় না রে
নিতাই-গৌর-গুণ গান বিনে—ব্যর্থকাল যায় না রে
ভারতের নানাস্থানে বুলে।।’’
তোদের,–পাপতাপের বোঝা আমায় দিয়ে—আমার,–নিতাই গৌর ভজ বলে
আমি,–বিকাইব বিনামূলে—ভজ,–আমার নিতাই গৌর বলে
বলে,–কাতরে তোদের মিনতি করি—ওরে,–ভাই রে তোদের পায়ে ধরি
ভজ,–প্রাণের নিতাই গৌরহরি,–ওরে,–ভাই রে তোদের পায়ে ধরি
ডুবাইল প্রেমের সাগরে।।’’
অপনি যেমন সঙ্গী তেমন—না হবে বা কেন রে
প্রেমদাতা–নিতাই হৃদে ধরে– সে যে,– প্রেমে জগত মাতাতে পারে
প্রেমদাতা নিতাই হৃদে ধরে—জগজনে মাতাল প্রেমে
নিতাই-গৌর-নাম-প্রসঙ্গে—জগজনে মাতাল প্রেমে
যে—নাম শুনে তাঁর শ্রীমুখে—সে কখনও ভুলতে নারে
এ মত্ততা পেল কোথায়
বুঝি,–এর ভিতরে খেলে মাতা-নিতাই—নৈলে,–এ মত্ততা পেল কোথায়
প্রতি নিতাই-কিঙ্করে—ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে
’
গৌরাঙ্গ-বিহার-ভূমি—পাগলা-প্রভুর মুরতিখানি
সুখভোগ তেয়াগিয়ে,পথের ভিখারী হয়ে,’’
তারেই পথের ভিখারী করে
প্রেমের ভিখারী যার হৃদে বিহরে—তারেই পথের ভিখারী করে
প্রেমভোক্তার ভোগ করাবার তরে—তারেই পথের ভিখারী করে
প্রভু-আমার,–নিতাই-গৌর-প্রেমের কাঙ্গাল
প্রেমে ধনী হয়েও প্রেমের কাঙ্গল
এ তো দান নয় গ্রহণ বটে
এ নিগূঢ়-গৌরাঙ্গ-লীলা—এ তো দান নয় গ্রহণ বটে
আমার প্রভু-নিত্যানন্দের—এ তো দান নয় গ্রহণ বটে
ভোক্তার ভোগ করাবার তরে—এ তো দান নয় গ্রহণ বটে
ভোগ করাব রসভোক্তারে—বলে আমায় নাম-রস দে রে
গলবাসে দন্তে তৃণ ধরে—যারে দেখে বলে তারে
ঐ আবেশে ত’ নিতাই বিহরে
দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে
আবেশে নিতাই বিহরে—দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে
হৃদে ধরি’ দ্বারোদ্ঘাটে—দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে
মনোভাব লুকায়ে রাখতে নারে
‘‘আচণ্ডালে দিয়ে কোল’’
সেই,–প্রেমের পাগল ধরি’ হৃদে—পাগল—নিতাই-স্বভাবেতে
প্রেমদিঠে চেয়ে আয় আয় বলে—প্রেমবাহু পসারিয়ে
বিকাইয়া যাব বিনামূলে।।’’
আমার,–নামের পাগল কেঁদে বলে—আমি,–বিকাইব বিনামূলে
‘আমার,–নামের পাগল কেঁদে বলে’—
প্রেমে নিতাই-গৌর বলে—আমার,–নামের পাগল কেঁদে বলে
আমায়,–কিনে নে রে গৌর বলে—আমি,–বিকাইব বিনামূলে
নিতাই-গৌর বুকে ধরে—আমি,–বিকাইতে এসেছি রে
পাগল আমার,–গলবাসে কেঁদে বলে,–গৌর ভজে কিনে নাও আমাকে
তোদের,–পাপ-তাপ নিয়ে যাব নরকে—গৌর ভজে কিনে নাও আমাকে
অসাধনে গুণনিধি, আনি’ মিলাওল বিধি,
জীব-লাগি কাঁদয়ে সদাই।’’
জীবের লাগি কাঁদে সদাই—তার কেন এ-স্বভাব ভাই
তার,–বুকে নিতাই বিলসয়—এই মনে অনুমান হয়
সে যে,–নিতাই-বিলাসের তনু ভাই—তার বুকেতে বিলসে নিতাই
জীবের দুঃখে দুঃখী হয়ে—ব্যাকুল হয়ে কেঁদে বলে
আমার এই কথা রাখ
যদি আমার প্রভু হও—আমার এই কথা রাখ
জগজীবের ভোগ-জ্বালা—কুড়ায়ে লয়ে দাও আমারে
নরকভোগ দাও আমাকে—গৌরপ্রেমে মাতাও জগতে
আমি বহু রূপ ধরে—আমি একা থাকব নরকে
সব-কর্ম্মফল ভোগ-করিতে—আমি একা থাকব নরকে
গৌর লয়ে তুমি থাক মজে—আমি একা থাকব নরকে
গৌর-নামের ধ্বনিতুলে—নরকেতে নাচব সুখে
আমার প্রভু নিত্যানন্দ—গরব করে বল্বো
‘আমার প্রভু নিত্যানন্দ’—
গৌর-নাম-প্রেমে মাতাল ব্রহ্মাণ্ড—আমার প্রভু নিত্যানন্দ
মহা-পাপী-তাপী দেখি’, সদা সকরুণ আঁখি,
কোল দিয়ে বলে ভয় নাই।।’’
জীবের বন্ধু আছে নিতাই—বলে,–আর কোন ভয় নাই
আমি নিব পাপ-তাপের বালাই—নিতাই গৌর ভজ ভাই
আমার গুণের পাগলা—প্রভুর—কি বলব করুণ-স্বভাবের কথা
নিজগুণে দেখালেন আমায়—বলতে বুক ফেটে যায়
আমার পাগলা প্রভুর—অদ্ভুত চরিত্র ভাই
পাপী-তাপীর দুঃখ—প্রত্যক্ষ দেখা দূরের কথা
প্রত্যক্ষ নরক-ভোগ অনুভব করে
চিত্র সাক্ষাৎ মেনে—প্রত্যক্ষ নরক-ভোগ অনুভব করে
নরকের জীবের দুর্দ্দাশা—প্রত্যক্ষ নরক-ভোগ অনুভব করে
আমাদের মত দেখা নয়—প্রাণে প্রাণে ভোগ করিলেন
নরকবাসী-জীবগণের দুঃখ—প্রাণে প্রাণে ভোগ করিলেন
বলে,–হা নিতাই কোথা তুমি ়
ব্যাকুল হয়ে বলে রে
ব্যাকুল হয়ে অভিমানে বলে
নিতাই,–কে বলে তোমায় পতিত-পাবন
জীবের যদি হয় এত পীড়ন—নিতাই,—কে বলে তোমায় পতিত-পাবন
তবে কেন পতিতের এত দুঃখ—তুমি যদি হও পতিত-পাবন
তবে,–জীবের কেন নরকে গমন—তুমি যদি হও পতিত-পাবন
তুমি পতিত-পাবন থাকতে—কেন জীবের এ দুর্গতি হবে
জীব যদি দুঃখই পায়—পতিত-পাবন কেমনে বলি তোমায়
জীব,–কেন পাবে ত্রিতাপ-ব্যথা—থাকতে প্রভু প্রেমদাতা
হা নিতাই,–অঙ্গীকার করেছ মোরে
নিজগুণে,–গুরুরূপে হা-নিতাই,–অঙ্গীকার করেছ মোরে
আমায় উদ্ধারিতে পার কি—নিতাই আমি ঘোর-নারকী
আমা-পতিত উদ্ধারিতে,–তোমার,–মনে যদি সাধ থাকে
আমার সঙ্কল্প শুন তবে
যাব না আমি তোমার কাছে
ও পতিতের বন্ধু-নিতাই—যাব না আমি তোমার কাছে
একজনও পতিত বাকী থাকতে—যাব না আমি তোমার কাছে
‘একজনও পতিত বাকী থাকতে’—
তোমার,–গৌর-নাম-প্রেম পেতে—একজনও পতিত বাকী থাকতে
পতিত হয়ে বর পড়—যাব না আমি তোমার কাছে
তোমার কৃপায় বঞ্চিত হয়ে—যদি,–একজনও আমার মত থাকে
আমার স্বগণ বা স্বজাতি বলে—থাকব আমি তার কাছে
আমি লব না তোমার মত—তার সঙ্গ করব সতত
তোমার,–পতিত-পাবন-নামে কলঙ্ক রটাব—তোমার কাছে নাহি যাব
যদি একজনও পতিত থাকে—আমরা,–তোমরা সঙ্কল্প ভঙ্গ করবো
তারি ত’ সঙ্গ করব—তোমার কলঙ্ক রটাবো
পতিত-উদ্ধারণ-নামের—যদি ধ্বজা উড়াতে চাও
আমার মত পতিতে উদ্ধারিয়ে—যদি,–পতিত-বাণা উড়াতে চাও
তবে,–জীবের নরক ভোগ ঘুচাও—যদি,–পতিত-পাবন-বাণা উড়াতে চাও
গৌর-নাম-প্রেমে আগে জগত মাতাও—যদি,–পতিত-পাবন-বাণা উড়াতে চাও
পতিত-পাবন-নাম ধর—যদি,–ঘুচাতে চাও নামের কলঙ্ক
জগভরি’ ভজাও প্রাণগৌরাঙ্গ—যদি,–ঘুচাতে চাও নামের কলঙ্ক
পতিত শূন্য কর আগে
যদি,–এ-পতিত উদ্ধারে সাধ থাকে—পতিত শূন্য কর আগে
যদি,–করাও গৌর-প্রেম ভোগে—পতিত শূন্য কর আগে
যখন,–খুঁজে দেখব জগমাঝে আর কেউ বাকী নাই প্রেম পেতে
সবাই,–তোমার কৃপায় গৌর ভজছে—আর কেউ বাকী নাই প্রেম পেতে
ওহে নিতাই তোমার কৃপায়—জগতে আর পতিত নাই
যখন,–দাঁড়াতে আর ঠাঁই না পাব
তখন,–আমি তোমার কাছে যাব
সেই দিন আমি হব তোমার
যে-দিন,–প্রেম দিয়ে জগত করবে উদ্ধার—সেই দিন আমি হব তোমার
ডাকতে হবে না বলতে হবে না—বিকাইব তোমার পদতলে
পতিত-উদ্ধার অবতার—গরব করে বলবো
পতিতের বন্ধু নিতাই—গরব করে বলবো সদাই
প্রভু-নিত্যানন্দ আমার—পতিত-উদ্ধার অবতার
একমাত্র পতিত-ত্রাতা—নিতাই,–প্রেম-বিতরণ-ধাতা
আমার,–পাগলা প্রভু শ্রীরাধারমণের—কি অপূর্ব্ব চরিত রে
পতিত-পবন নিতাই আছে—পাপী-তাপীর ভয় কি আছে
‘‘কেন জ্বালায় জ্বলে মর,’’
আমার—পাগল কেঁদে কেঁদে বলে—ভাই রে তোদের পায়ে পড়ি
এমন,–করুণাসিন্ধু-অবতারে—কেন মর জ্বালায় জ্বলে
এই-ধন্য-কলিযুগে—কেন মর জ্বালায় জ্বলে
নিতাই-গৌর না ভজিয়ে—কেন মর জ্বালায় জ্বলে
ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।’’
আমার,–নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—গলবাসে কেঁদে বলে
ভজ নিতাই গৌরহরি—ভাই রে তোদের পায়ে পড়ি
এমন,–তাপ-জুড়ান নাম থাকিতে—কেন জ্বল ত্রিতাপেতে
ত্রিতাপ-জ্বালার হবে বিরাম—ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
এ ত’ নয় ত্রিতাপ-ভোগের জনম—প্রভু-নিতাই-পদে লহ শরণ
লাভ হবে গৌর-প্রেমধন—প্রভু-নিতাই-পদে লহ শরণ
নিতাই-গৌর-নাম বল মুখে—নিতাই-গৌর ভজে থাক সুখে
‘হরে কৃষ্ণ’ নাম জপে—গৌর-গোবিন্দ-সেবা পাবে
‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ জপে—নামের স্বরূপ দেখতে পাবে
মধুর-শ্রীবৃন্দাবনে—নামের স্বরূপ দেখতে পাবে
প্রভু মোর নিজ-গুণে পতিত-পাষণ্ডী-জনে,
অবিচারে প্রেম দান করে।’’
তার,–হৃদে বিহরে নিতাই-সোণা—কেন দান করবে না
অদোষ-দরশী-নিতাই হৃদে ধরে—প্রেম দেন অবিচারে
‘‘কি বলিব অদ্ভুত,’’
নিত্যানন্দ-দাসের শকতি—অনুভব কর ভাই রে
প্রভু-নিতাই হৃদে ধরে—তারা,–ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে
পতিতের,–বন্ধু-নিতাই হৃদে ধরে—তারা,–ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে
প্রতি নিতাই-কিঙ্করে—তারা,–ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে
নাচাইলা প্রেমের হিল্লোলে।।’’
গৌরপ্রেমে মত্ত মহাবলী—পাগলা নিতাই হৃদে ধরি’
স্থাবর জঙ্গম প্রেমোন্মত্তকারী—পাগলা নিতাই হৃদে ধরি’
নিত্যানন্দ-দাসের প্রভাবে—নিত্যানন্দ-দাসের স্বভাবে
নাচে বালক-বালিকা সবাই—এখনও ত’ দেখতে পাও
আরতিকালে শ্রীমূর্ত্তি-আগে—সবে,—নাচে কত রঙ্গভঙ্গে
তাদের শিক্ষা-গুরু কে বল—কেবা এ নাচ শিখাল
বৈষ্ণব কি অবৈষ্ণব, কি নিন্দুক কি বান্ধব,
কিবা যোগী জ্ঞানী কর্ম্মী ভক্ত।’’
যাঁর,–হৃদে নিতাই বিহরপর—তার,–কিসে থাকবে আত্ম পর
সে তো আন দেখে না নয়নে
সে তো,–আমার নিতাই-কিঙ্কর বিনে—সে তো আন দেখে না নয়নে
কিবা যোগী জ্ঞানী কর্ম্মী ভক্ত—খোসা দেখে না ভিতর দেখে
নিত্যানন্দ-দাস-স্বভাবে-খোসা দেখে না ভিতর দেখে
গৃহী কিম্বা বিষয়-বিরক্ত।।
কি হিন্দু ম্লেচ্ছ যবন, কি ভক্ত অভক্তাধম,
সবা-প্রতি সম ব্যবহার।’’
কৃষ্ণ-নিত্যদাস জানি’—সবারে ভাবে আপনার
ভিতর দেখা স্বভাব তার
নিত্যানন্দদাস-স্বভাবে—ভিতর দেখা স্বভাব তার
নিত্যানন্দদাস-স্বভাবে—দেখে নিত্যানন্দ দেখে একাকার
আরও আনন্দ ভোগ করে
আবৃত দেখি’ নিতাই-চাঁদের—আরও আনন্দ ভোগ করে
কেন্দ্রাপাড়ায় লীলাকালে—একদিন এক-যবন-বালকে
যবন-বালক স্তম্ভিত
ঠাকুর আমায় করলেন কোলে
আমি অস্পৃশ্য-যবনের ছেলে—ঠাকুর আমায় করলেন কোলে
চরণেতে বিকাইল—কেঁদে বালক আকুল হল
জগত দেখে নিতাই-এর প্রকাশ—তাইতে তার এই স্বভাব
নিতাই জগতের আশ্রয়—দেখে,–নিতাইচাঁদের গণ সবাই
নিতাইদাসের এই স্বভাব বটে
ঔদার্য্যমুরতি-নিতাই হৃদে ধরে—নিতাইদাসের এই স্বভাব বটে
তার,–হৃদে নিতাই করে বিহার,–তাই,–পাগল আমার মহা-উদার
তার প্রীতি-ব্যবহারে—সবাই আপনার জন মনে করে
যখনই যার সঙ্গ করে—সেই ত’ আপান মনে বাসে
আমারে অধিক ভালবাসে—সেই ত’ আপন মনে বাসে
সুমধুর-সম্ভাষণে,’’
হৃদে ধরে গৌরকিশোর—পাগলের আমার,–চলন বলন সকলই মধুর
যে আসে তার পাশে—আগে তারে বেঁধে ফেলে
বয়স-অনুরূপ-সম্বন্ধ করে—আগে তারে বেঁধে ফেলে
বয়স-অনুসারে তারে—বাঁধে সম্বন্ধের বন্ধনে
বাবা, দাদা, ভাই বলে—বাঁধে সম্বন্ধের বন্ধনে
সে যে ভালবাসার আধার—পাগলের আমার এই ত’ স্বভাব
দেখ্বা মাত্র সম্বন্ধ করে—সম্বন্ধ বিনে রইতে নারে
আগে সম্ভাষে,–পিতা, মাতা, বন্ধু, ভ্রাতা—পিছে বলে গৌরকথা
অমনই সবাই পড়ে বাঁধা—আর বল কে যাবে কোথা
অদোষ-দরশী নিতাই আমার—ভিতরে বাইরে তারি ব্যবহার
করুণাসিন্ধু-অবতার—ভিতরে বাইরে তারি ব্যবহার
আইলা পাগল রূপ ধরি’
নিতাই করুণা-মুরতি-ধারী—আইলা পাগল রূপ ধরি’
পতিত-পাবন করে হৃদে বিহার—দয়া করাই স্বভাব তার
সর্ব্ব-শাস্ত্র-নিরূপণ, কলিযুগে সঙ্কীর্ত্তন,
বিনা জীবের অন্যগতি নাই।
ইহা দেখাবার তরে, ব্রজে কৃষ্ণ হলধরে,
নদে হল গৌরাঙ্গ-নিতাই।।
নদে হল প্রকট গৌরাঙ্গ-নিতাই।।
জীব-ত্রাণ-কারণ, হরিনাম-সঙ্কীর্ত্তন,
জীবে বুঝাইতে গৌরহরি।
আপনি সন্ন্যাসীবেশে,’’
ভোগ করি ভোগ করাইতে—আচরি’ ধর্ম্ম শিখাবে বলে
নিত্যানন্দ-বেশ আবরণে
প্রাণের,–ভাই-নিত্যানন্দ সঙ্গে করি’।।
অভিন্নতনু-নিতাই-দ্বারে—নাম-প্রেম-ধন বিতরে
নানামতে মুগ্ধ হইয়া।’’
হরিনাম-সঙ্কীর্ত্তনে—বহিরঙ্গ করে রেখেছিল
জীবের ঐ দুর্দ্দশা দেখিয়া।।’’
করুণানিধি তার হৃদে জাগে—তাইতে তার প্রাণ কাঁদে
পাগল আমার,–জীবের এ-দশা দেখে—নিশিদিশি কাঁদে রে
নামপ্রেমে জগত মাতালে
লয়ে নিজগণ সকলে—নামপ্রেমে জগতে মাতালে
কলিজীবের ধর্ম্ম নাম—ভুলে গেছে কলিজীব
নামে সর্ব্বশক্তি আছে—প্রাণে প্রাণে ভোগ করতে নারছে
মুখে কেবল বলছে—প্রাণে প্রাণে ভোগ করতে নারছে
তেমনি করে আবার মাতাও
নামের সর্ব্বশক্তি দেখাও—তেমনি করে আবার মাতাও
জীবের দুর্গতি ঘুচাও—তেমনি করে আবার মাতাও
নাম প্রচার কৈলা ঘরে ঘরে।’’
যারে দেখে পায়ে ধরে
ম্লেচ্ছ-যবনাদি-নরনারী—যারে দেখে পায়ে ধরে
শৃগাল-কুক্কুর-আদি করে—যারে দেখে পায়ে ধরে
কীর্ত্তনে অদ্ভুতশক্তি, যাতে মিলে প্রেমভক্তি,
সাক্ষাৎ দেখাইলা এ-সংসারে।।
কিবা অপরূপ লীলা, সঙ্কীর্ত্তনে গলে শিলা’’,
লীলাতেই শিলা গলে
জগজনে জানে সকলে—লীলাতেই শিলা গলে
নীলাচলে তার নিদর্শন আছে
পাষাণেতে পদচিহ্ন—নীলাচলে তার নিদর্শন আছে
‘পাষাণেতে পদচিহ্ন’—
জগন্নাথের শ্রীমন্দিরে—পাষাণেতে পদচিহ্ন
অনেক বিশ্বাস করে না
গৌর-লীলায় শিলা গলেছে—অনেকে বিশ্বাস করে না
নিদর্শন দর্শন করেও তবু—অনেকে বিশ্বাস করে না
পাগলা প্রভু রাধারমণের—সেই দুঃখ প্রাণে প্রাণে
নামীর শক্তি ভোগ করাবার তরে—নামে শিলা গলাইলা
পাগল আমার,–নামে শিলা গলাইল—লীলায় শিলা গলেছিল
‘নামে শিলা গলাইল’—
শিলা—গলান-প্রভু হৃদে ধরে—নামে শিলা গলাইল
তার,–নামেতে গলাইল শিলা
যার,–পরশ পেয়ে গলেছিল শিলা—তার,–নামেতে গলাইল শিলা
লীলাকারী গৌরহরি—এবার,–নূতন-খেলা খেলিল
‘লীলাকারী গৌরহরি’—
রাধারমণ-হৃদে বিহরি’—লীলাকারী গৌরহরি
অনুভব ছিল না ভাই রে
নামেতে যে অধিক শকতি—অনুভব ছিল না ভাই রে
পাগলা প্রভু দেখাইলা—নামেও শিলা গলাইতে পারে
যদি,–নাম নামী অভেদ হয়—কেন বা পারবে না
নামে শিলা গলেছে—অনেক ভাগ্যবানে দেখেছে
এখনও তার,–সাক্ষীলোক বিদ্যমান আছে।’’
ব্যাকুল হয়ে কাঁদে তারা
সে-লীলা দেখেছে যারা—ব্যাকুল হয়ে কাঁদে তারা
নামে শিলা-গলান-ঠাকুর—বলে,–আর কি আমরা দেখব না
নামে পাষাণ-গলান-ঠাকুর—আর কি আমরা দেখতে পাব
ডাল-পালা পুলকেতে নাচে।
সঞ্চারিলা নিজ-শক্তি,’’
স্থাবর-জঙ্গম-প্রেমোন্মত্তকারী—হৃদে ধরি’ নিতাই-মুরতি
নিতাই সদা তার হৃদ্বিহারী—হৃদে ধরি’ নিতাই-মুরতি
‘‘সঞ্চারিলা নিজ-শক্তি,’’
দেখি লোক কৃপা-কণা যাচে।।’’
নামের শকতি করি’ দর্শন—সবে আসি’ লইল শরণ
লীলা-ভূমির কত পাষণ্ডী যবন—সবে আসি’ লইল শরণ
নাম-প্রসঙ্গে গেলে সেখানে—এখনও ব্যাকুল হয়ে কাঁদে
প্রতিবাসী যবনগণে—এখনও ব্যাকুল হয়ে কাঁদে
‘প্রতিবাসী যবনগণে’—
যারা সেই-লীলা দেখেছে—প্রতিবাসী যবনগণে
জিজ্ঞাসিলে আবেশে বলে
এখনও সেই যবনগণ—জিজ্ঞাসিলে আবেশে বলে
প্রথমদিন গাছ নাচলে—অবিশ্বাস করেছিলাম মোরা
আমাদের সন্দেহ ঘুচাবার তরে—দ্বিতীয়-দিন দেখালে মোদের
গাছ আবার নাচ্ল নামে—দ্বিতীয়-দিন দেখালে মোদের
পঞ্চবটী দেখায়ে বলে—এই-তরু নামে নাচল
প্রত্যক্ষ দেখেছি মোরা—এই-তরু নামে নাচল
সেই,–পাগল-ঠাকুর কোথা গেল
যে নামে এই-তরু নাচাইল—সেই,–পাগল-ঠাকুর কোথা গেল
নামপ্রেমে গাছ নাচান ঠাকুর—হবে কি মোদের নয়ন-গোচর
প্রাণ নাচান গাছ নাচান ঠাকুর—হবে কি মোদের নয়ন-গোচর
পাগলা প্রভু রাধারমণ—প্রত্যক্ষ দেখাইলা
নামেতে যে ‘মরা’ বাঁচে–প্রত্যক্ষ দেখাইলেন
নামে সর্ব্ব–শক্তি আছে–প্রত্যক্ষ দেখাইলেন
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—নামে পাষাণ গলাল
তরু নাচাল মরা বাঁচাল—নামে পাষাণ গলাল
তরু নাচে মরা বাঁচে—পাষাণ গলিয়া যায়
কিন্তু বিশ্বাস করতে নারলাম
কি বলব দুর্দ্দৈবের কথা—কিন্তু বিশ্বাস করতে নারলাম
প্রত্যক্ষ দেখাইল—বিশ্বাস ত’ হল না
নামে সর্ব্বশক্তি আছে—বিশ্বাস ত’ হল না
তার সঙ্গে সম্বন্ধ আছে—পরিচয় দিতে লজ্জা করে
তার সম্বন্ধ আছে বলে—পরিচয় তো দেই না
তার,–নামে কলঙ্ক হবে বলে—পরিচয় তো দেই না
আমার,–নিতাই কত বলবান
যারে তারে করেন প্রেমদান—আমার,–নিতাই কত বলবান্
তরুকে কৈল প্রেমদান—দেখাইলা আমার,–আমার,–নিতাই কত বলবান
নরোত্তমের প্রাণকান্ত, শ্রীশ্রীরাধা রাধাকান্ত,
ঝাঁজ পিটায় পুনঃ সংস্থাপন।
আনি’ বন্দীশালা হতে, সেবা করে কত-মতে,
যাহা দেখি’ মুগ্ধ সর্ব্বজন।।
শ্রীল রাধাবিনোদ-ঠাকুর।’’
সন্ন্যাসীর সেব্য হয়ে—ছিলেন যিনি চিত্রকূটে
ব্রহ্মচারী-বেশধারী—তার নিজ-সেবকে
সেবা-সুখ ভুঞ্জিব প্রচুর।।
আমার হৃদয়ের ধন, প্রাণ শ্রীরাধারমণ,
আমি,–‘‘সর্ব্বদা থাকিব তার কাছে।’’
শ্রীল রাধাবিনোদ-ঠাকুর—অদ্যাপিও বিরাজিছে
নীলাচলে ঝাঁজপিটা-মঠে—অদ্যাপিও বিরাজিছে
তুমি ত’ আছ রাধাবিনোদ
নিতি নিতি সেবা দিছ
তুমি ত’ আছ রাধাবিনোদ
যে এনেছে সে কোথায় লুকাল—তুমি ত’ আছ রাধাবিনোদ
বহুদিন এই সাধ আছে।।
স্বপ্নাদেশে ব্রহ্মচারী, অনেক যতন করি,’
নীলাচলে কৈল উপনীত।’’
বিগ্রহের স্বপ্নাদেশ পেয়ে—চিত্রকূট-পর্ব্বত হতে
এ সমস্ত বিবরণ, শুনি’ প্রভু রাধারমণ,
বিনোদ-সেবা করিল স্থাপিত।।’’
ঝাঁজপিটামঠে সেই-স্মৃতি—এখনও আছেন বিরাজিত
শ্রীপুরীধামে ঝাঁজপিটায়—এখনও স্মৃতি বিরাজিত
সে মূরতি অদভুত—এখনও ধামে বিরাজতি
কোথা প্রাণ-রাধারমণ বলে—সে মুরতি দেখে প্রাণ কাঁদে
কৈলা বহু সেবার বিধান।’’
অপ্রকটেও অনেক খেলা
ঠাকুর,–হরিদাসের সমাধি উদ্ধারিলেন
যবনের হাত হতে—ঠাকুর,–হরিদাশের সমাধি উদ্ধারিলেন
কোন-ভাগ্যবতীকে—আগে,–প্রকটেতে বলেছিলেন
আমার প্রভুর প্রিয় কোন—কাজ হবে তোমার দ্বারে
অপ্রকটে সেই প্রিয়জনে—স্বপ্নাদেশে জানাইলেন
সামান্য অর্থদানে—হরিদাসের সমাধি উদ্ধার কর
শ্রীহরিদাস-ঠাকুর সমাধি—তার দ্বারে হইল রক্ষা
দিয়ে,–হরিদাসের সমাধি-সেবা—কৈলেন মোরে মহাকৃপা
মায়াগুরুর সেবা করবার—আমার,–নাই কোন অধিকার
মায়ার,–লাথি খাওয়া স্বভাব আমার—আমার,–নাই কোন অধিকার
মায়া-গুরু-হরিদাস—আমি মায়ার ক্রীতদাস
তোমার কৃপার যাই বলিহারি—সেই হরিদাসের,–সেবায় কৈলে অধিকারী
এ কি অহৈতুকী-কৃপার দান—অযোগ্যেরে কৈলে দান
আমি জানি আমি অযোগ্য—তোমার সেবা তুমি করো
নিজগুণে দিয়েছ—তোমার,–প্রাণের সেবা তুমি রেখো
করছ—রাধাকান্ত-রাধাবিনোদের সেবা—করো হরিদাসের সেবা
করছ—রাধাকান্ত-রাধাবিনোদের সেবা’—
যারা এলো,–তোমার সেবা করি’ আশা—করছ—রাধাকান্ত-
করো হরিদাসের সেবা
জগতের হিতকারী, জগজন-তাপহারী,
প্রভু মোর জগতের প্রাণ।
কটকনগরে যেবা, শ্রীরাসবিহারী-সেবা,
দীনভাবে ছিল অবিদিত।
নিজে প্রভু সেবা-দ্বারে, জানাইলা এ-সংসারে,
সেবারীত যাহে ভক্তহিত।।
নদীয়ার হরিসভা, যথা জগজন-লোভা,
প্রেমে নাচে গৌর নটরাজ।
ভেটপ্রথা করি’ নাশ, পুরাল সবার আশ,
তুষ্ট কৈলা ভকত-সমাজ।।
হিতব্রতী দানবীর, কৃপালু বিনয়ী ধীর,
গুণ যত কি বলিতে পারি ।’’
এমন-গুণের প্রভু পেয়েও—প্রাণ ত’ গলল না রে
পাগলের গুণে যদি প্রাণ কাঁদ্ত—তা হলে কি এ-দশা হত
যেন,–গুণ সঙরি’ ঝুরে মরতে পারি—সবে কর এই কৃপা করি’
পাগলের অপরূপ ব্যবহার—কি জানি কত বলব আর
এই-মধুর-নদীয়াবাসী—তোমরা ত’ শুনেছ
কুকুরের মহোৎসবের কথা—তোমরা ত’ শুনেছ
নামের সঙ্গে সঙ্গে ফিরতে
তার,–দু’নয়নে বারি ঝর্ত—নামের সঙ্গে সঙ্গে ফিরতে
অনুসন্ধান করে জানা গেল—আর কিছু খেল না
একমাত্র প্রসাদ বিনে—আর কিছু খেত না
একাদশীর দিনে—করিত উপবাস
পাগলা প্রভু রাধারমণ—প্রাণে প্রাণে জানলেন
কুক্কুর-দেহধারী—এ নিশ্চয় কোন মহাপুরুষ
কোথাও ত’ যায় না
সদাই কাছে পড়ে থাকে—কোথাও ত’ যায় না
মনে মনে গণলেন
এ ত’ কোন মহাপুরুষ
মহোৎসব করতে হবে
শ্রীমুখে আজ্ঞা করলেন
প্রাণপ্রিয় নবদ্বীপে—শ্রীমুখে আজ্ঞা করলেন
যাও নগরে নগরে
সংবাদ দাও যত কুকুরে
সবারে আসিবার তরে—সংবাদ দাও যত কুকুরে
‘সবারে আসিবার তরে’—
ভক্তিদাসীর উৎসবে—সবারে আসিবার তরে
নবদ্বীপদাস আজ্ঞা পেয়ে
যারে যারে দেখলেন কাছে
কুকুর-দেহধারী—যারে যারে দেখলেন কাছে
আজ,–ভক্তিদাসীর মহোৎসব
কৃপা করি’ যাবে সব—আজ,–ভক্তিদাসীর মহোৎসব
নবদ্বীপ-বড়ালঘাটে—সেই মহোৎসব হল
কত শত কুকুর-দেহধারী—আসিলেন সব ভক্তগণ
কোনও চাঞ্চল্য নাই
আর কুকুরের স্বভাব নাই—কোনও চাঞ্চল্য নাই
প্রসাদ খাইলা সন্তোষে
প্রসাদ বন্টন হলে—প্রসাদ খাইলা সন্তোষে
যারা,–আগে করেছিলেন কটাক্ষ
কুকুরের আবার উৎসব হয়—যারা,–আগে করেছিলেন কটাক্ষ
দেখি’ পাগলের এই লীলা—তাদের দুনয়নে বইল ধারা
এ কি তাই হয় কখনও
কুকুরের এত গম্ভীরতা—এ কি তাই হয় কখনও
অন্য-বুদ্ধি করো না
ধামবাসী-কুকুরে—অন্য-বুদ্ধি করো না
আনে কেন থাকবে ধামে—নিশ্চয়ই কোন মহাপুরুষ হবে
কুকুর-রূপে বিহরিছে—নিশ্চয়ই কোন মহাপুরুষ হবে
দণ্ডবৎ করিবেক বহুমান্য করি’।।
এই সে বৈষ্ণব-ধর্ম্ম সবারে প্রণতি।
সেই ধর্ম্মধ্বজী যার ইথে নাহি মতি।।’’
ধামবাসী বৈষ্ণব সবে—আচরিয়ে শিখাইতে
বৈষ্ণবের এই ধর্ম্ম—আচরিয়ে শিখাইতে
বিষয় সৎকুল ছিল, জীব-লাগি তেয়াগিল,
ভ্রমে পথে হইয়া ভিখারী।।
রাধারমণ-দাসে কয়, সাধ যেন পূর্ণ হয়,
সবার চরণে নিবেদন।
আমার অন্তিমকালে, হা রাধারমণ বলে,
সুখে যেন যায় এ-জীবন।।’’
সবে মিলি এই কৃপা কর
যেন,–প্রাণ যায় গুরু-রাধারমণ বলে—এই কৃপা কর সকলে
শ্রীরাধারমণ-চরণ হৃদে ধরি’—যেন আমি মরতে পারি
‘শ্রীরাধারমণ-চরণ হৃদে ধরি’—
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—শ্রীরাধারমণ-চরণ হৃদে ধরি’
নিতাই-গৌর-নাম মুখে বলি’—যেন আমি মরতে পারি
হা-প্রভু রাধারমণ বলি’—যেন আমি মরতে পারি
আজ আমাদের কাঁদবার দিন—আয় ভাই সবাই মিলে কাঁদি
‘আজ আমাদের কাঁদবার দিন’—
আজ,–শ্রীগুরু-সঙ্গ ছাড়া হয়েছি—আজ আমাদের কাঁদবার দিন
হেন প্রভু কোথা গেলা করিয়া অনাথ।।’’
হা রাধারমণ কোথা গেলা—হায়,–বিধি মোরে কি করিলা
প্রাণরাধারমণ কোথা গেলা—হায়,–বিধি মোরে কি করিলা
হায় রে,–রাধারমণ কোথা লুকাইলা—হায়,–বিধি মোরে কি করিলা
এবে শূন্য ভেল মোর সকল সংসার।।’’
পাগলা প্রভু রাধারমণ বিনে—আঁধার দেখিয়ে দিনে
দুঃখের কথা কারে বলব—আর কি দেখা দিবে না
হা রাধারমণ তুমি–আর কি দেখা দিবে না
কে আর বলবে—কেন কি হয়েছে বলে
প্রেমদিঠে চেয়ে আয় ভাই বলে—কে ডাকিবে মধুর-স্বরে
প্রথম যে-দিন দরশন—করেছিলেন সম্বোধন
ও ভাই ‘রাম’ বলে—করেছিলেন সম্বোধন
আর কেবা ডাকবে
আয় ভাই ‘রাম’ বলে—আর কেবা ডাকবে
মুখ মলিন দেখলে পরে—আর কেবা শুধাবে
কেন মুখ মলিন দেখি—কি হয়েছে ভাই বল দেখি
প্রেমদিঠে চেয়ে বাহু পশারিয়ে—কে আর করবে কোলে
কি হয়েছে আমার কাছে আয় বলে—কে আর করবে কোলে
প্রেমস্বরে আয় রাম আয় বলে—আর কি কোলে নিবে না
স্বতন্ত্রতা করেছি বলে—আর কি কোলে নিবে না
আপন-স্বভাব লয়ে—এমনি করে ভেসে বেড়াব
নিতাই-গৌর বলে দেশবিদেশে—বেড়াব আর কার সঙ্গে
নিতাই-গৌর-নাম-প্রসঙ্গে—বেড়াব আর কার সঙ্গে
প্রেমদিঠে চেয়ে আয় আয় বলে—বাহু পসারি’ করবে কোলে
কে মোরে লইয়া যাবে শ্রীবৃন্দাবন।।’’
কুণ্ডতীরে বিনোদকুঞ্জে—আর কি আমি পাব না
সেই দুর্ল্লভ-সঙ্গ-প্রসঙ্গ—আর কি আমি পাব না
ভক্ত-চূড়ামণিগণ-সঙ্গে—আর কি আমি দেখতে পাব
রামহরি-হরিচরণ-সনে—আর কি আমি দেখতে পাব
‘রামহরি-হরিচরণ-সনে’—
মাধবদাস-শ্যামদাস—রামহরি-হরিচরণ-সনে
নিকুঞ্জ-রহস্যের পরিণতি-প্রসঙ্গে—আর কি আমি দেখতে পাব
রাধাবিনোদের মন্দিরে বসি’—আর কি কীর্ত্তন করাবে না
নিগূঢ়-গৌরলীলা—রহস্য—আর কি কীর্ত্তন করাবে না
সঙ্কীর্ত্তনে আজ্ঞা দিয়ে—আর কি কীর্ত্তন করাবে না
তোমার,–প্রভু-রামহরির দ্বারে—আর কি কীর্ত্তন করাবে না
মনোবৃত্তি সঞ্চারিয়ে—আর,–গৌর-কীর্ত্তন করাবে না
‘মনোবৃত্তি সঞ্চারিয়ে’—
তোমার প্রভু-রামহরির—মনোবৃত্তি সঞ্চারিয়ে
সেই ভাবাবিষ্ট-মূরতি’—
তোমার প্রভু-রামহরির—সেই ভাবাবিষ্ট-মূরতি
গৌরকথা-প্রসঙ্গে—আর কি আমি দেখতে পাব
দাস-গোস্বামীর প্রসঙ্গ উঠল—পাগল হয়ে ছুটবেন
‘দাস-গোস্বামীর প্রসঙ্গ উঠল’—
গৌরকথা কইতে কইতে—দাস-গোস্বামীর প্রসঙ্গ উঠলে
তোমার পূজ্য-রামহরি—পাগল হয়ে ছুটবেন
‘তোমার পূজ্য-রামহরি’—
গোরারসে আর্তিভারি—তোমার পূজ্য-রামহরি
‘কোথা রঘুনাথ বলে’—
এই সেই কুণ্ডতীর—কোথা রঘুনাথ বলে
আর কি তা দেখাবে না
আর কি দেখতে পাব না
কুসুম-সরোবরে অপরূপ-রঙ্গ—আর কি দেখতে পাব না
‘কুসুম-সরোবরে অপরূপ-রঙ্গ’—
তোমার প্রভু-রামহরির—কুসুম-সরোবরে অপরূপ-রঙ্গ
শ্রীচৈতন্যমঙ্গল-কীর্ত্তনে—আর কি দেখতে পাব না
‘শ্রীচৈতন্যমঙ্গল-কীর্ত্তনে’—
গৌর-সম্ভোগে মাতা-মূরতি—শ্রীচৈতন্যমঙ্গল-কীর্ত্তনে
সে সম্মিলনী কি আর দেখব না
কুসুম-সরোবরে বকুলতলে—সে সম্মিলনী কি আর দেখব না
‘কুসুম-সরোবরে বকুলতলে’—
শ্রীদাউজীর অগ্রভাগে—কুসুম-সরোবরে বকুলতলে
হরিচরণ-মাধবাদি-সনে—সে সম্মিলনী কি আর দেখব না
গৌরকথা কইতে কইতে—পরস্পরের অঙ্গে পড়বে ঢলি’
করে লয়ে যাবে বৃন্দাবন—কোথা,–লুকায়ে আছ রাধারমণ
আর কি শুনিব সেই শ্রীমুখের বাণী।।’’
প্রেমদিঠে চেয়ে—আদর করে কেবা ডাকবে
আয় রাম আয় বলে—আদর করে কেবা ডাকবে
আর কি শুনিব অমিয়া-মাখান-কথা—আর কে বুঝবে প্রাণের ব্যথা
ব্যথাহারী মধুর-কথায়—আর কি জুড়াবে মনের ব্যথা
অমিয়া-মাখান-মধুর-কথায়—আর কি জুড়াবে মনের ব্যথা
হৃদ-কর্ণ-রসায়ন-বচন—আর কি শুনিবে শ্রবণ
সেই কথা শুনা অবধি—কথা-শুনা বাদ পড়েছে
সে কথা শুনে কর্ণ হয়েছে বধির—আর,–কারো কথা লাগে না ভাল
কোথা নীলাচল কে জগন্নাথ—কিছুই ত’ জানতাম না
নীলাচলে গৌরের কি-বা লীলা—কিছুই ত’ জানতাম না
শ্রীরথযাত্রা-কালে—নিজগুণে লয়ে গেলে
ভাবাবেশে কীর্ত্তন-রঙ্গে—সেই লীলা ভোগ করালে
রথাগ্রে আপনি নেচে—গৌর-নটন ভোগ করালে
গৌরলীলারস সিঞ্চনে—সকল-আশা পূরণ কৈলে
কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে গৌরবিলাস—আর কেবা ভোগ করাবে
হাতে ধরে আদর করে—আর কে আমাকে লয়ে যাবে
গৌরলীলা ভোগ করাবে—কে,–নীলাচলে লয়ে যাবে
‘গৌরলীলা ভোগ করাবে’—
ভাবাবেশে কীর্ত্তন-প্রসঙ্গে—কে—গৌরলীলা ভোগ করাবে
মূরতি কি আর দেখতে পাব
আইটোটার দ্বারে ভাবাবিষ্ট—মূরতি কি আর দেখতে পাব
‘আইটোটার দ্বারে ভাবাবিষ্ট’—
প্রাণবঁধু আসবে বলে—আইটোটার দ্বারে ভাবাবিষ্ট
শ্রীগৌড়মণ্ডল আমায়—আর কি দেখাবে
শ্রীনবদ্বীপ-পরিক্রমায়—আর কি লয়ে যাবে না
ভাবাবেশে নদীয়ায় ভ্রমণ—আর কি দেখতে পাব না
‘ভাবাবেশে নদীয়ায় ভ্রমণ’—
গৌরলীলা-প্রসঙ্গে—ভাবাবেশে নদীয়ায় ভ্রমণ
কুক্কুরের পায়ে লুটান—আর কি দেখতে পাব না
‘কুক্কুরের পায়ে লুটান’—
নিতাই গৌর ভজ বলে—কুক্কুরের পায়ে লুটান
হেন প্রভু কোথা গেলা ছাড়িয়া আমায়।।
মোরে দয়া কর প্রভু রাধারমণ-রায়।
দয়ার ঠাকুর তুমি ভুবনেতে গায়।’’
প্রাণ রাধারমণ কোথা লুকাইলা—আজ সে ফাল্গুনী শুক্লা-দ্বিতীয়া
এ তোমার কি কঠোর রীতি—হায় রে দারুণ-বিধি
নিধি দিলে যদি কৃপা করে—কেন বল হঠ্ করলে
সুখ-লাগি’ যদি দিলে—কেন নিধি হরে নিলে
দেখাও ভোগ করতে না দাও
দ্বিতীয়-তিথিতে চাঁদ—দেখাও ভোগ করতে না দাও
নিবিয়ে দিলে ভোগ করতে না দিলে—আজ—আমাদের ভাগ্যে তাই ঘটালে
চাঁদ উদয় হল দেখে—বড় মনে সাধ হয়েছিল
ষোলকলা ভোগ করিব—বড় মনে সাধ হয়েছিল
বড় সৌভাগ্যে চাঁদ মিলেছে—প্রাণভরে ভোগ করিব
কেন হঠাৎ কেড়ে নিলে
ভোগ করতে না দিলে—কেন হঠাৎ কেড়ে নিলে
দেখাইয়ে মুগ্ধ করলে—কেন হঠাৎ কেড়ে নিলে
আমাদের ভাগ্যে কৃপা করে—যদি চাঁদের উদয় করালে
হৃদিতম বিনাশের তরে—যদি চাঁদের উদয় করালে
চাঁদের প্রকাশ হতে না হতে—কেন তবে কেড়ে নিলে
দ্বিতীয়ার চাঁদের মত—কেন তবে কেড়ে নিলে
ভাল-করেও দেখা হল না
ভোগকরা ত’ দূরের কথা—ভাল-করেও দেখা হল না
কেউ দেখল কেউ দেখল না—ভাল-করেও দেখা হল না
ভোগ করতে না দিলে—কেবা বাধ সাধলে
সকলই আমাদের কপালের দোষ
চাঁদ পেলাম ভোগ হল না—সকলই আমাদের কপালের দোষ
সেই চাঁদের অদর্শনে—নিশিদিশি প্রাণ কাঁদছে
আজ,–চাঁদের অস্ত-যাবার দিন—প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠছে
দগ্ধ হৃদয় জুড়াইবার—আর আমাদের উপায় নাই
একমাত্র,–নামাশ্রয় বিনে ভাই—আর আমাদের উপায় নাই
প্রাণ-রাধারমণের নাম লয়ে—আয় কাঁদি সবাই মিলে
প্রাণের ঠাকুর রাধারমণ
আমার হৃদয়ের ধন—প্রাণের ঠাকুর রাধারমণ
পাগল আমার হৃদয়ের ধন—অনুভব না থাকলেও সত্য বটে
সে ত,–যেচে এসে হাত ধরেছে—আমি ত,–যাই নাই তার কাছে
যদিও হই স্বতন্ত্ররী—আমি ত,–যাই নাই তার কাছে
সে যে আমার হৃদবিহারী—গরব করে বলতে পারি
আমার হৃদয়ের ধরন—হা প্রাণ রাধারমণ
কোথাও ত’ যাও নাই
লীলা কর্ছ গোপনে
তোমার,–প্রাণ-নিতাই-গৌর-সনে—লীলা কর্ছ গোপনে
ত্রিকাল-সত্য-লীলায়—লীলা কর্ছ গোপনে
তোমার,–বিহারভূমি এই উদ্যানে—লীলা কর্ছ গোপনে
শ্রীনিত্যানন্দ—আবির্ভাব-দিনে—প্রবেশিলে এই উদ্যানে
সঙ্কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—কৈলে কত উৎসব-আনন্দ
একদিন তুমি বিদায় নিলে
তোমার শ্রীগুরুদেবের কাছে—একদিন তুমি বিদায় নিলে
একস্থানে ত’ রইতে নারি
বহুদূর যেতে হবে—একস্থানে ত’ রইতে নারি
একে শ্রীধাম নবদ্বীপ
তাতে হয়েছেন সম্মিলিত
বহু-দেশের ভক্ত যত—তাতে হয়েছেন সম্মিলিত
সকলেই উনমত
নিতাই-গৌর-গুণ-গানে—সকলেই উনমত
প্রভু আমায় বিদায় দাও
ফাঁকি দিয়ে পলাইলে
কোথাও ত’ যাও নাই
লুকাইয়ে কর্ছ খেলা
জানাইছ নিজগুণে
কত-ভাগ্যবতী-ভাগ্যবানে—জানাইছ নিজগুণে;
কোথাও,–যাও নাই তুমি আছ এখানে—জানাইছ নিজগুণে
যদি,–মনে ছিল লুকাইব
কেন,–দেখা দিয়ে মাতাইলে—যদি,–মনে ছিল লুকাইব
কতদিন থাক্বে লকায়ে—একবার এস হে
আমাদের জন্য নয়—তাই বলি আজ একবার এস
নিতাই-সীতানাথের গণ—এসেছেন,–কত কত মহাজন
ঠাকুর—নরহরির গণ—এসেছেন,–কত কত মহাজন
তোমার প্রীতি-আকর্ষণে—এসেছেন,–কত কত মহাজন
তাদের আদর সম্ভাষণ—আমরা ত’ জানি না
‘তাদের আদর সম্ভাষণ’—
আত্ম-সুখে মত্ত মোরা—তাদের আদর সম্ভাষণ
কর আদর সম্ভাষণ
এস প্রাণের রাধারমণ—কর আদর সম্ভাষণ
তাদের মর্য্যাদা কর্বার তরে—আজ একবার দেখা দাও
এই কৃপা কর সবে
আমায় পদধূলি শিরে দিয়ে—এই কৃপা কর সবে
শ্রীগুরু-চরণে যেন,–অবিচারে বিকাতে পারি
আমার ব্যবহারে তার নামে—যেন কলঙ্ক রটে না
নদীয়াবাসী-নরনারী—এই কৃপা ভিক্ষা করি
শ্রীগুরু রাধারমণ বলে—যেন,–প্রাণ ভরে গাইতে পারি
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—হা,–পাগলা প্রভু রাধারমণ
সমাধি-সম্মুখে
তুমি ত’ এইখানে বসে আছ—একবার দেখা দাও
তখন জনম পেলাম না
যখন হল প্রকট-বিহার—তখন জনম পেলাম না
‘যখন হল প্রকট-বিহার’—
প্রভু—নিতাই-প্রাণ-গৌরাঙ্গের—যখন হল প্রকট-বিহার
কারো দেখা পেলাম না
প্রাণগৌর-গৌরপরিকর—কারো দেখা পেলাম না
শ্রীগুরুরূপে সুখময়-সঙ্গ—যাও পেলাম তাও হারাইলাম
আমাদের দুর্ভাগ্য-দোষে—তুমিও ত’ লুকাইলে
তোমার কোন দোষ নাই—আমাদের দোষে দেখতে না পাই
নিরন্তর করছ বর্ষণ
তেমনি তেমনি করে—নিরন্তর করছ বর্ষণ
অহৈতুকী-কৃপা—নিরন্তর করছ বর্ষণ
তোমার কৃপা অনুভব করি
কিন্তু,—দেখতে ত’ পাই না
প্রাণ ত’ মানে না
কৃপা ভোগ করি বটে—প্রাণ ত’ মানে না
কৃপা ভোগ আশ মিটে না—একবার দেখতে দাও
প্রাণের ঠাকুর রাধারমণ—একবার দেখা দাও
সেই,–হাসিমাখা রসের বদন—অনেকদিন ত’ দেখি নাই
একবার দেখা দাও
নবদ্বীপ-গোবিন্দ-গোকুল-চৈতন্য-সঙ্গে—একবার দেখা দাও
সঙ্গে ললিতাদাসী সেবাপরা—একবার দেখব মোরা
তুমি ত’ তোমার,–গৌর-ভোগে আছ মেতে—একবার দেখ চেয়ে
তোমার,–দাস-দাসী এসেছে সবে—একবার দেখ চেয়ে
তাদের কি দুর্গতি,–আজ তোমায় হারাইয়ে—একবার দেখ চেয়ে
তুমি কেমনে সইছ তা—আজ আমাদের কি দুর্দ্দশা
কারো—মলিন মুখ দেখতে নার
বাহু পসারি’ কোলে কর
কারো দুঃখ সইতে নার—বাহু পসারি’ কোলে কর
তেমনি করে কোলে লও
তাই বুঝি দেখা দিছ না
অভিমান করেছ
বড় অভিমানী তুমি—অভিমান করেছে
আজ্ঞা পালন করি নাই বলে—অভিমান করেছ
‘আজ্ঞা পালন করি নাই বলে’—
স্বতন্ত্রতা-দোষে—আজ্ঞা পালন করি নাই বলে
অহৈতুকী-কৃপা-স্বভাবে—কতবার বলেছ
প্রদর্শিত-পথে চলতে—কতবার বলেছ
নিজ-স্বতন্ত্রতা-দোষে—কথা ত’ শুনি নাই
বাহু পসারি’ কোলে করেছ
কত উপদেশ করেছ
এই পথে চল বলে—কত উপদেশ করেছ
নিজ-গুণে কৃপা করে—কত উপদেশ করেছ
প্রদর্শিত-পথে চল—পুনঃ পুনঃ বলেছ
‘প্রদর্শিত-পথে চল’—
পরাণ-গৌরাঙ্গ—প্রদর্শিত-পথে চল
কথা ত’ শুনি নাই
তাইতে অভিমান করেছ
মনে ব্যতা পেয়েছ—তাইতে অভিমান করেছ
বড় দুঃখ দিতেছি তোমায়—মৌন হয়ে বুঝি আছ তাই
‘বড় দুঃখ দিতেছি তোমায়’—
তোমার আজ্ঞা পালন না করিয়ে—বড় দুঃখ দিতেছি তোমায়
জেনেই ত’ করেছ গ্রহণ
অশেষ-দোষের দোষী মোরা—জেনেই ত’ করেছ গ্রহণ
স্বতন্ত্রতার মুরতি মোরা—জেনেই ত’ করেছ গ্রহণ
অদোষ-দরশী-স্বভাবে—জেনেই ত’ করেছ গ্রহণ
ক্ষমা করাই ত’ স্বভাব তোমার—অপরাধ করাই স্বভাব মোদের
আমাদের স্বতন্ত্রতা স্বভাব—আমরা ত’ ছাড়ি নাই
তোমার কোলে নেওয়া স্বভাব—তুমি কেন ছাড়বে
অদোষ-দরশী তোমার স্বভাব—সেই ভরসায় করি আশা
‘অদোষ-দরশী তোমার স্বভাব’—
আমাদের চোখে আছে দেখা—অদোষ-দরশী তোমার স্বভাব
তোমায়,–দেখবার নাই আর কোন ভরসা—সেই ভরসায় করি আশা
কেবল তোমার কৃপা ভরসা—তাই করি দেখবার আশা
অপরাধ ক্ষমা কর—অভিমান ত্যাগ কর
অদোষ-দরশী প্রভু—তেম্নি করে কোলে লও
সকল দোষ ক্ষমা করে—তেমনি করে কোলে লও
কেউ আমাদের দিবে না ঠাঁই—তুমি,–উপেখিলে আর গতি নাই
আমরা,–অশেষ-দোষের দোষী বলে—তাইতে ত’ তুমি করেছ কোলে
কেউ আমাদের ছোঁবে না জেনে—তাইতে ত’ তুমি করেছ কোলে
তোমার নামে যে কলঙ্ক হবে
তোমার,–অদোষ-দরশী নাম ঘোষেছে—তোমার নামে যে কলঙ্ক হবে
তুমি ত’ ছাড়তে নারবে
যেচে এসে হাত ধরেছ
আপন-গরজে—যেচে এসে হাত ধরেছ
সত্য-সঙ্কল্প করে—যেচে এসে হাত ধরেছ
‘সত্য-সঙ্কল্প করে’—
অভাব ঘুচায়ে স্বভাব দিয়ে—সত্য-সঙ্কল্প করে
গৌর-গোবিন্দ-সেবার যোগ্যতা দিনে—সত্য-সঙ্কল্প করে
অঙ্গীকার করেছ
তুমি ত’ বাঁধা পড়েছ
আমরা ত’ বাঁধা পড়ি নাই –তুমি ত’ বাঁধা পড়েছ
আমাদের যোগ্যতা না দেওয়া অবধি—তোমার ত’ শান্তি নাই
‘আমাদের যোগ্যতা না দেওয়া অবধি’—
নিতাই-গৌর-গোবিন্দ-পাবার—আমাদের যোগ্যতা না দেওয়া অবধি
যদি ছেড়ে দাও আমাদের
তোমার নামে যে কলঙ্ক হবে
তোমার সঙ্কল্প ভঙ্গ হবে—তোমার নামে যে কলঙ্ক হবে
আমরা ত’ ঠেকি নাই—তুমি ত’ দায় ঠেকেছ
ততই চলে যাব দূরে
তোমায় ভুলে-স্বতন্ত্রতা—দোষে—ততই চলে যাব দূরে
আমাদের প্রতি তোমার—তাই বলি,–অভিমান করে কি ফল বল
অভিমান পরিহর—একবার চেয়ে দেখ
তোমায় ভুলে আমাদের কি দুর্দ্দশা—একবার চেয়ে দেখ
বাসনার তাড়নায়—ঘুরিয়া বেড়াই সদাই
বাহু পসারি’ কোলে কর—সকল অভাব দূর কর
যারা হৃদয়ে আছে লুকায়ে—তাদের—কেড়ে লও আমাদের কাঁদায়ে
‘যারা হৃদয়ে আছে লুকায়ে’—
দুর্ব্বাসনা-কপট-কুটিনাটী—যারা হৃদয় আছে লুকায়ে
করে লও তোমার করে
স্বতন্ত্রতা ঘুচাইয়া—করে লও তোমার করে
নিজ-দত্ত-ধন দাও ফিরায়ে—করে লও তোমার করে
তুমি,–সকলই ত’ দিয়েছিলে—সব হারায়ে ফেলেছি
নামে সর্ব্ব-শক্তি আছে—তুমি,–আচরিয়ে দেখাইলে
নামে,–তরু নাচে মরা বাঁচে
পাষাণ গলিয়া যায়,–নামে,–তরু নাচে মরা বাঁচে
কি বল্ব দুর্দ্দৈবের কথা
প্রাণে প্রাণে বিশ্বাস হল না
তুমি,–আচরিয়ে দেখাইলে
শ্রীবিগ্রহে ভগবদ্বুদ্ধি—তুমি,–আচরিয়ে দেখাইলে
শ্রীবিগ্রহে নিত্যবুদ্ধি—তুমি,–আচরিয়ে দেখাইলে
অবিচারে মহাপ্রসাদ ব্যবহার—তুমি,–আচরিয়ে দেখাইলে
মহাপ্রসাদে বিশ্বাস—আচরণ করে দেখাইলে
কেমন করে করতে হয়—আচরণ করে দেখাইলে
‘কেমন করে করতে হয়’—
শ্রীবৈষ্ণব-সেবা—কেমন করে করতে হয়
দিয়েছিলে এই চারিধন
নাম বিগ্রহ প্রসাদ বৈষ্ণব—দিয়েছিলে এই চারিধন
তোমার চরিতে করি’ আচরণ—দিয়েছিলে এই চারিধন
যা’ মিলে না করে সাধন—দিয়েছিলে এই চারিধন
পাত্র কি অপাত্র—বিচার ত’ কর নাই
ধনের আদর জানি কি না—বিচার ত’ কর নাই
হারায়ে ফেলেছি তোমার ধনে—দিয়েছিলে নিজ-উদারতা-গুণে
সে ব্যবহার ভুলে গেছি
যেন,–সর্ব্বদাই মনে বিচার
সব হারায়ে ফেলেছি
তোমার দানের দোষ নাই—সব হারায়ে ফেলেছি
শ্রীবিগ্রহে নিত্যবুদ্ধি নাই
মহাপ্রসাদে বিশ্বাস নাই
গুরু-বৈষ্ণবে শ্রদ্ধা নাই
সব হারায়ে ফেলেছি
আর কি উপায় কর্বে বলো
পেয়ে ধন হারাইলাম—আর কি উপায় করবে বলো
তোমার সম্বন্ধ ধরি বলে—পরিচয় দিতে লজ্জা করে
আমি হলাম বিশ্বাস-শূন্য—পরিচয় দিতে লজ্জা করে
আচরণ করি না—তোমার,–পরিচয় দিতে পারি না
‘আচরণ করি না’—
তোমার পরিচয় দিবার মত—আচরণ করি না
প্রাণের কেঁদে কেঁদে উঠছে
কিন্তু,–সবাই ত’ জেনেছে
যদিও হই স্বতন্ত্ররী—কিন্তু,–সবাই ত’ জেনেছে
আমরা তোমারই বলে—কিন্তু,–সবাই ত’ জেনেছে
প্রাণে প্রাণে তোমার হই বা না হই—কিন্তু,–সবাই ত’ জেনেছে
অঙ্গীকার করেছ বলে—কিন্তু,–সবাই ত’ জেনেছে
অঙ্গুলী দিয়ে দেখাবে
বহির্ম্মুখ লোক যত—অঙ্গুলী দিয়ে দেখাবে
আমাদের ব্যবহারে—তোমার,–নামে কলঙ্ক রটবে
বঞ্চিত হই দুঃখ নাই আমাদের যা হয় হোক্
কর্ম্মফল ভোগ করি—আমাদের যা হয় হোক
তোমার নামে কলঙ্ক হবে,–এই,–মনে বড় বেদনা
ওহে বেদনাহারী—ঘুচাও বেদনা ঘুচাও
তোমার অলকঙ্ক-নামে—কলঙ্করূপে মোদের রেখো না
ঘুচাও কলঙ্ক ঘুচাও
তোমার,–নামে যদি কলঙ্ক হয়
আমাদের স্বতন্ত্রতা-দোষে—তোমার,–নামে যদি কলঙ্ক হয়
তুমি বিনে আর কে আছে—সে কলঙ্ক কে মুছাবে
তেমনি করে কোলে লও—ঘুচাও কলঙ্ক ঘুচাও
একবার দেখ চেয়ে
নামে যে কলঙ্ক হল
তোমার প্রাণ-রাধারমণের—নামে যে কলঙ্ক হল
আমাদের স্বতন্ত্রতা-দোষে—নামে যে কলঙ্ক হল
একবার বলে দাও
তোমার প্রাণ-রাধারমণে—একবার বলে দাও
আপন-ভোগেতে মেতে—আছেন বুঝি উদাস হয়ে
‘আপন-ভোগেতে মেতে’—
তার নিতাই-গৌরাঙ্গ লয়—আপন-ভোগেতে মেতে
বুঝি তিনি শুনতে পান না
আমাদের কাতর-কান্না—বুঝি তিনি শুনতে পান না
তার,–ভাবের ঘোর ভেদ করে—বুঝি,–তার কাছে পৌঁছে না
আমাদের হয়ে বলা—চিরকাল স্বভাব তোমার
পূরব,–স্বভাবেতে আলিঙ্গীতে—তোমার,–পাগলেরে বলে দাও
অভিমান করে কোন ফল নাই—তোমার,–পাগলেরে বলে দাও
তেমনি করে কোলে লও
দোহাই তোমার নবদ্বীপের
তেমনি করে লও
অদোষ-দরশী-স্বভাবে—তেমনি করে কোলে লও
আজ্ঞা-পালনে শকতি দাও—সকল-দুর্দ্দৈব ঘুচাও
স্বতন্ত্রতা কেড়ে লও—দাও আনুগত্য দাও
দাও দাও শক্তি দাও
শ্রীবিগ্রহে ভগবদ্-বিশ্বাস দাও—দাও দাও শক্তি দাও
বৈষ্ণবেতে শ্রদ্ধা দাও
প্রাণে প্রাণে,–মহাপ্রসাদে বিশ্বাস দাও—বৈষ্ণবেতে শ্রদ্ধ দাও
গুরু-বৈষ্ণব-অপরাধে – আমাদের সব গেল
দাও দাও শকতি দাও
দাও তাদের শকতি দাও
যারা,–তোমার পরিচয়ে পরিচিত—দাও তাদের শকতি দাও
ভোক্তায় ভোগ করাবার তরে—এ ত,–দান নয় গ্রহণ করে
আমাদের পাগলা-দাদু বলে—প্রাণে প্রাণে গরব করে
শক্তি দাও স্বভাব জাগাও
তোমার আজ্ঞা-পালনে—শক্তি দাও স্বভাব জাগাও
অনুগত-জনে আনুগত্যাদি—তোমার,–আজ্ঞা-পালনে শকতি দাও
সেই পথে চালাও হে
মহাজনের অনুমোদিত—সেই পথে চালাও হে
প্রভু্ তোমায় হৃদে ধরে—সোজা-পথে চলি মোরা
তোমার,–দাস-নাম সার্থক করি—তোমার চরণ হৃদে ধরি
আমায়,–দেখা না দাও দুঃখ নাই
আমি,–মহাস্বতন্ত্রী অপরাধী—আমায়,–দেখা না দাও দুঃখ নাই
তোমার দেখা না পেয়ে—আপন-মনকে বুঝাব
স্বতন্ত্রতার ফলভোগ—আপন-মনকে বুঝাব
তাদের লাগি’ একবার এস
তাদের একবার দেখা দাও
যারা,–চোখে তোমায় দেখে নাই—তাদের একবার দেখা দাও
‘যারা,–চোখে তোমায় দেখে নাই’—
নাম মাত্র শুনেছে—যারা,–চোখে তোমায় দেখে নাই
যারা,–লীলা-কথা পড়েছে
তোমার চরিত-সুধায়—যারা,–লীলা-কথা পড়েছে
প্রাণে প্রাণে প্রাণ সঁপেছে
গুণ শুনে মুগ্ধ হয়ে—প্রাণে প্রাণে প্রাণ সঁপেছে
আমাদের পাগলা দাদু বলে—নিশিদিশি ঝুরছে
আমার মত স্বতন্ত্ররী নয়,–তারা,–তোমা ছাড়া জানে না
তাদের অনুরাগে তুমি—একবার দেখা দাও
তুমি,–যাও নাই কোথায় আছ এখানে,–তারা,–শুনেছে নিজ-গুরুর মুখে
তাইতে তোমায় দেখবার তরে—তারা,–বড় আশা করে এসেছে
নানাদিক-দেশ হতে—তারা,–বড় আশা করে এসেছে
তোমার গুণের কথা শুনে—তাদের সকলেরই মনে সাধ
শ্রবণ-নয়নের মিটাতে বিবাদ—তাদের সকলেরই মনে সাধ
একবার তাদের দাও দেখা—অনুভব করবে তারা
যার,–নাম গানে পাগল করে—তার,–মুরতি কত শকতি ধরে
এস তাদের বাসনা পুরাও
আমার বলবার শকতি নাই
মহাস্বতন্ত্ররী আমি—আমার বলবার শকতি নাই
তাদের দেখা দাও বলে—আমার বলবার শকতি নাই
তোমার সম্বন্ধ ধরে—বড় মনে গরব তাদের
দাদু,–আমরা তোমার নাতি বলে—তারা গরবে ফুলে
তাদের গরবে তুমি—একবার দেখা দাও
তাদের প্রেমে হও বদ্ধ—রাখ তাদের গরব রাখ
বড়,–আব্দার করে এসেছে
আমাদের দাদু বলে—বড়,–আব্দার করে এসেছে
একবার তাদের প্রীতে—তাই বলি দেখা দিতে
তাদের আনুগত্যে—আমি একবার দেখব
আমার দেখবার অধিকার নাই—তাদের পিছে দাঁড়ায়ে দেখব
দেখা দাও বলবার মুখ নাই—যদিও না দেখা পাই
তারা তোমায় দেখতে পেলে
কোন দুঃখ থাকবে না তাদের—তারা তোমায় দেখতে পেলে
তোমায় দেখে সুখী তারা—তাই দেখে সুখী হব
প্রেমদিঠে চেয়ে তেমনি করে হেসে—সম্বন্ধ ধরে ডাক তাদের
এস দাদা দিদি বলে—সম্বন্ধ ধরে ডাক তাদের
তাদের পানে চেয়ে প্রেমস্বরে—কর প্রীতি-সম্ভাষণ
তারা কে কি পাবে বল
আমাকে আশ্রয় করে –তারা কে কি পাবে বল
আমি ত’ বিশ্বাস শূন্য কে কি পাবে বল
আমার কাছে এসে তারা—কে কি পাবে বল
পাব বলে আশ্রয় নিল—তাদের আশা কি বিফল হবে
আমার যা হয় হোক—তাদের বাসনা পূরাও
তাদের পানে চেয়ে—এই অভয়-বাণী বল
ভয় কি দিদি আমি আছি
আয় আমার কাছে আয়
এই অভয়-বাণী বল
কৃপাশক্তি কর সঞ্চার
তাদের অভাব আমায় দিয়ে—কৃপাশক্তি কর সঞ্চার
তোমাকে ভোগ করিবার—তাদের অভাব আমায় দাও
নিজ-স্বভাব-বলে অভাব লয়ে—আমি একাই পড়ে থাকি
নামে সর্ব্বশক্তি আছে—দাও তাদের বিশ্বাস দাও
বৈষ্ণবের উচ্ছিষ্ট—অবিচারে গ্রহণ করুক্
মহাপ্রসাদ নষ্ট হয় না বলে—অবিচারে গ্রহণ করুক
মহা-মহা-পাবন বলে—অবিচারে গ্রহণ করুক
গৌরগোবিন্দ-বিহার-ভূমি জেনে—বৈষ্ণবের সেবা করুক
নিতাই—চাঁদের-গণ জেনে—বৈষ্ণবের সেবা করুক
শ্রীবিগ্রহ-দর্শনে তাদের—সাক্ষাৎ ভগবদ্বুদ্ধি হোক
বিগ্রহরূপে নিত্যলীলা—প্রাণে প্রাণে ভোগ করুক
তোমার সেবা-বিগ্রহে—সেবা করুক প্রাণে প্রাণে
নিতাই-গৌর-রাধা-শ্যামে—সেবা করুক প্রাণে প্রাণে
প্রেম-প্রীতির বন্ধনে—সেবা করুক প্রাণে প্রাণে
এই দুঃখময়—সংসারে—অনায়াসে কাল কাটাক্
সুখের পাথারে সাঁতার দিয়ে—অনায়াসে কাল কাটাক্
তোমার কৃপাশক্তি পেয়ে—তাদের আচরণ দেখে
তাদের লয়ে নাচ তুমি
তেমনি করে নটন-রঙ্গে-তাদের লয়ে নাচ তুমি
তোমার কৃপাশীর্ব্বাদ-বলে—তারা,–প্রাণভরে গান করুক্
তোমার মোহন-মুরতি হেরে—তারা,–প্রাণভরে গান করুক্
তোমায় সবে ঘিরে ঘিরে—তারা,–প্রাণভরে গান করুক্
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
তোমার সম্বন্ধে হৃদে ধরে—গরব করে বলুক সবাই
শুনে আমি শ্রবণ জুড়াই—গরব করে বলুক সবাই
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—পাগলা-দাদা রাধারমণ
আমার,–শোনবার বড় সাধ হয়েছে—তারা,–গান করবে প্রেমভরে
কাঙ্গাল-রামের সর্ব্বস্বধন—পাগলা-দাদা রাধারমণ
যেন কলঙ্ক হয় না
আমাদের ব্যবহারে তোমার নামে—যেন কলঙ্ক হয় না
বাহু পশারি’ হৃদে ধরে—তেমনি করে শক্তি দাও
তোমার,–কৃপাদত্ত-নাম-গানে—তেমনি করে শক্তি দাও
যেখানে নাম সেখানে তুমি
‘নিতাই গৌর রাধে শ্যাম’—যেখানে নাম সেখানে তুমি
এই,–নাম যেখানে পাগল সেখানে
‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম’—এই,–নাম যেখানে পাগল সেখানে
এই,–হরিনাম শুনিলে তোমায় দেখবার লাগি’—তবে কেন প্রাণ কাঁদে
‘নিতাই গৌর রাধে শ্যাম’—এই,–নাম নিলে কেন প্রাণ কাঁদে
নামের সঙ্গে তুমি নিশ্চয় আছ—নৈলে কেন প্রাণ কাঁদে
এই,–নাম তোমার সঙ্গে আছে—নৈলে কেন প্রাণ কাঁদে
নিশ্চয়,–নাম যেখানে পাগল সেখানে—তাই বুঝি প্রাণ কাঁদে
এই,–হরিনাম শুনিলে তোমায় দেখবার লাগি’—তাই বুঝি প্রাণ কাঁদে
‘নিতাই গৌর রাধে শ্যাম’,–নামের মুরতি সম্মুখে আছে—
প্রাণে প্রাণে ভোগ করাও
এই,–নাম যেখানে তুমি সেখানে—প্রাণে প্রাণে ভোগ করাও
নিতাই-গৌর-প্রেমের—এই কৃপা কর হে
ভাই ভাই ভাই মিলে—পাগল হয়ে বেড়াই সবে
গরব করে বেড়াবে
হা,–পাগল-দাদু রাধারমণ বলে—গরব করে বেড়াবে
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—হা,–পাগলা-দাদু রাধারমণ
গরব করে বল সবাই—হা,–পাগলা-দাদু রাধারমণ
নিজ-মুখে বলেছিলে
করুণা-স্বভাবেতে—নিজ-মুখে বলেছিলে
নরকের চিত্র দেখে—নিজ-মুখে বলেছিলে
আমায় উদ্ধারিতে নার কি—নিতাই আমি ঘোর-নারকী
আগে,–জগৎ পতিত-শূন্য কর—যদি আমায়,–উদ্ধারিতে ইচ্ছা কর
যে দিন,–জগৎ পতিল-শূন্য হবে—আমি তোমার হব তবে
যে দিন,–পতিত পতিতপাবন হবে—আমি তোমার হব তবে
‘যে নি,–পতিত পতিতপাবন হবে’—
তোমার অহৈতুকী-কৃপা-বলে—যে দিন,–পতিত পতিতপাবন হবে
সেই কথা মনে জাগছে
আর কারে জানাব
শুনেছি তোমার শ্রীমুখে
প্রতিজ্ঞা করেছেন গৌরহরি
বিশ্বম্ভর নাম ধরি’—প্রতিজ্ঞা করেছেন গৌরহরি
প্রেমে বিশ্ব ভরবে বলি’—প্রতিজ্ঞা করেছেন গৌরহরি
অভিন্নতনু-নিতাইচাঁদে—হাতে ধরে বলে দিয়েছেন
বিশ্বম্ভর নাম পূর্ণ করতে—হাতে ধরে বলে দিয়েছেন
বল বল পাগলা-প্রবু—সে দিনের আর কদিন বাকী
নিতাইচাঁদে শুধাবে না কি—সে দিনের আর কদিন বাকী
ম্লেচ্ছ-যবনাদি করি’—কবে ভজবে গৌরহরি
জগৎ,–গৌর-অনুরাগে মত্ত হবে—তাপিত-হিয়া জুড়াবে তবে
গরব করে বলতে দাও
তোমার দাসানুদাসগণে—গরব করে বলতে দাও
তোমার সম্বন্ধে ধরে—গরব করে বলতে দাও
তোমার কৃপা অনুভব করে—গরব করে বলতে দাও
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—আমাদের প্রাণ-রাধারমণ
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—হা,–পাগলা দাদু রাধারমণ
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—জয় আমাদের রাধারমণ
শুনে আমি শ্রবণ জুড়াই—জয় আমাদের রাধারমণ
(আম্রবৃক্ষতলে দাঁড়াইয়া)
পাগলের প্রাণারাম—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
প্রাণ-ভরে বলুক তারা—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’
‘প্রেমসে কহো শ্রীরাধে শ্রীকৃষ্ণ বলিয়ে—
প্রভু-নিতাই-শ্রীচৈতন্য-অদ্বৈত-শ্রীরাধারাণীকী জয় !
প্রেমদাতা-পরমদয়াল-পতিতপাবন-শ্রীনিতাইচাঁদকী জয় !
করুণাসিন্ধু-গৌরভক্তবৃন্দকী জয় !
শ্রীশ্রীনাম-সঙ্কীর্ত্তনকী জয় !
শ্রীখোল-করতালকী জয় !
শ্রীনবদ্বীপধামকী জয় !
শ্রীনীলাচলাধামকী জয় !
শ্রীবৃন্দাবনধামকী জয় !
চারিধামকী জয় !
চারিসম্প্রদায়কী জয় !
অনন্তকোটি-ব্রাহ্মণ-বৈষ্ণবকী জয় !
পরম করুণ-শ্রীগুরুদেবকী জয় !
প্রেমদাতা-পরমদয়াল-পতিতপাবন—
শিশুপশুপালক-বালকজীবন—শ্রীশ্রীমদ্ রাধারমণকী জয় !