শ্রীল শ্রীমদ্ রাধারমণ চরণদাস দেবের সূচক-কীর্ত্তন

(ফাল্গুনী শুক্লা-দ্বিতীয়া)

‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই গৌর হরিবোল’’
‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।

‘‘জয় রে জয় রে জয়,শ্রীগুরু,–শ্রীরাধারমণ জয়’’
প্রাণভরে জয় দাও ভাই
শ্রীগুরু-শ্রীরাধারমণের—প্রাণভরে জয় দাও ভাই

[মাতন]

আজ,–মিলেছি সব ভাই ভাই—প্রাণভরে জয় দাও ভাই
‘আজ,–মিলেছি সব ভাই ভাই—
যাঁর কৃপায় এই ঠাঁই—আজ,–মিলেছি সব ভাই ভাই

তাঁর—প্রাণভরে জয় দাও ভাই

নিতাই-গৌর-প্রেমে পাগলা-প্রভুর—প্রাণভরে জয় দাও ভাই
তাঁদের চরণ বুকে ধরে—প্রাণভরে জয় দাও ভাই
‘তাঁদের চরণ বুকে ধরে’—
যাঁরা তাঁর-চরণ সর্ব্বস্ব করেছে—তাঁদের চরণ বুকে ধরে
যাঁদের জীবনে মরণে গতি—তাঁদের চরণ বুকে ধরে
‘যাঁদের জীবনে মরণে গতি’—
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগলা-মূরতি—যাঁদের জীবনে মরণে গতি

তাঁদের চরণ বুকে ধরে
নৈলে,–ভোগ হবে না তাঁর পাগল-পনা

যাঁদের সর্ব্বস্ব তাঁদের না হলে করুণা—নৈলে,–ভোগ হবে না তাঁর পাগল-পনা

‘‘জয় রে জয় রে জয়, আমার,–শ্রীরাধারমণ জয়,’’

আমার,–শ্রীরাধারমণ জয়

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—আমার,–শ্রীরাধারমণ জয়

‘‘প্রেমদাতা রসের সদন।’’


সে যে,–প্রেমদাতা রসের সদন।
আমার,–শ্রীগুরু শ্রীরাধারমণ—সে যে,–প্রেমদাতা রসের সদন।

নিশিদিশি হিয়ায় ধরে

প্রেমদাতা রসের সদন—নিশিদিশি হিয়ায় ধরে
প্রভু-নিতাই প্রাণ-গৌরাঙ্গ—নিশিদিশি হিয়ায় ধরে
আমার,–পাগলা প্রভু শ্রীরাধারমণ—নিশিদিশি হিয়ায় ধরে
‘আমার,–পাগলা প্রভু শ্রীরাধারমণ’—
হৃদে ধরি’ নিতাই-গৌর-রতন—আমার,–পাগলা প্রভু শ্রীরাধারমণ

সে যে,–‘‘প্রেমদাতা রসের সদন।’’

তাঁর স্বরূপে বিলসে অনুক্ষণ

বিলাসী আর বিলাস-রতন—তাঁর স্বরূপে বিলসে অনুক্ষণ
প্রভু নিতাই প্রাণ গৌর-রতন—তাঁর স্বরূপে বিলসে অনুক্ষণ
নিতাই প্রেমদাতা গৌর রসের সদন—তাঁর স্বরূপে বিলসে অনুক্ষণ

নিতাই-গৌর-খেলার ভূমি

আমার,–শ্রীরাধারমণ-তনুখানি—নিতাই-গৌর-খেলার ভূমি
মূর্ত্তিমন্ত-প্রেম-রস—নিতাই-গৌর-খেলার ভূমি

দুই খেলার মূরতি মানি

আমার,–শ্রীরাধারমণ তনুখানি—দুই খেলার মূরতি মানি
পূর্ব্বলীলা পরলীলা—দুই খেলার মূরতি মানি
নদীয়া-লীলা খেতুরী-লীলা—দুই খেলার মূরতি মানি

পাগল আমার,—নিশিদিশি বিহরে

নদীয়া-খেতুরী-লীলা প্রকট করে—পাগল আমার,–নিশিদিশি বিহরে
‘নদীয়া-খেতুরী-লীলা প্রকট করে’—
প্রকট-অপ্রকট-গণ-সনে—নদীয়া—খেতুরী-লীলা প্রকট করে

পাগল আমার,–নিশিদিশি বিহরে

সে যে,–‘‘প্রেমদাতা রসের সদন।’’


তাই,–প্রেম-রস দিতে সামর্থ্য ধরে


পাগল আমার,–রঙ্গিয়া রসিয়া হৃদে ধরে—প্রেম-রস দিতে সামর্থ্য ধরে

সে যে,–প্রেমদাতা রসের সদন

হৃদে ধরি’ নিতাই-গৌর-যুগলরতন—সে যে,–প্রেমদাতা রসের সদন

তাই,–‘‘প্রেমদাতা রসের সদন
কিবা সে কোমল তনু,শিরীষ-কুসুম জনু,’’

যারে,–পরশ করেছে তার অনুভব আছে

ভজ বলে বাহু পসারি’—যারে,–পরশ করেছে তার অনুভব আছে

তারই তো অনুভব আছে

বাহু পসারি’ যারে বুকে ধরেছে—তারই তো অনুভব আছে
‘বাহু পসারি’ যারে বুকে ধরেছে’—
আমার,–নিতাই-গৌর ভজ বল—‘বাহু পসারি’ যারে বুকে ধরেছে’

তারই তো অনুভব আছে

শিরীষ-কুসুম জিনি কোমল-শরীর—তারই তো অনুভব আছে
যে,–আলিঙ্গন ছলে পরশ পেয়েছে—তারই তো অনুভব আছে
যে,–মরমে মরমে ঝুরেছে—তারই তো অনুভব আছে
যে,–মরমেতে ঝুরে মরিছে—তারই তো অনুভব আছে
‘যে,–মরমেতে ঝুরে মরিছে’—
আর কি পরশ পাব বলে—যে,–মরমেতে ঝুরে মরিছে

তারই তো অনুভব আছে

‘‘কিবা সে কোমলতনু, শিরীষ-কুসুম জনু,
প্রেমে ঢর ঢর দু’নয়ন।।’’

আমার,—নিতাই-গৌর ভজ বলে
গরগর–নিতাই বুকে ধরে

নিশিদিশি গোরা-প্রেমে—গরগর-নিতাই বুকে ধরে

রঙ্গিয়া-রসিয়া-ভোগে মেতে

নিতাই রঙ্গিয়া গোরা রসিয়া—রঙ্গিয়া-রসিয়া-ভোগে মেতে
প্রেম-রস পান করে—রঙ্গিয়া-রসিয়া-ভোগে মেতে

‘‘প্রেমে ঢর ঢর দু’নয়ন।।

আমার,–নিতাই-গৌর ভজ বলে

ভাই রে তোদের পায়ে পড়ি—আমার,–নিতাই-গৌর ভজ বলে

‘‘প্রেমে ঢর ঢর দু’নয়ন।।
পিরীতি মূরতি মানি, শ্যামল বরণ খানি,’’

পাগলের,–পিরীতি-মূরতি মানি

প্রেমে ঢর ঢর দুনয়নে—পাগলের,–পিরীতি-মূরতি মানি
হৃদে ধরা,–পিরীতি-মুরতির বিলাস জানি—পাগলের,-পিরীতি-মূরতি, মানি
‘‘পিরীতি মূরতি মানি,শ্যামল বরণ খানি,’’

পিরীতি-মুরতি বুকে ধরে

মহারাস-বিলাসের পরিণতি—পিরীতি-মুরতি বুকে ধরে

নিতাই-গৌর-প্রেমের মুরতি

পাগলের শ্যামল-দেহখানি—নিতাই-গৌর-প্রেমের মুরতি

পাগলের আমার,–ভালবাসায় গড়া তনু

হৃদে ধরে প্রেমময় স্বরূপ—পাগলের আমার,–ভালবাসায় গড়া তনু

এও বস্তুর স্বভাব ধরায়
ভেবে ভেবে বরণ ধরেছে

পিরীতি নিশিদিনে—ভেবে ভেবে বরণ ধরেছে

প্রভুর আমার,–‘‘পুলক-কদম্ব অঙ্গে শোভা।’’
ভাব-ভূষণে বিভূষিত

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—ভাব-ভূষণে বিভূষিত
মহাভাবনিধি হৃদে ধরে—ভাব-ভূষণে বিভূষিত

পুলকে অঙ্গ সদা শোভিত

হৃদে ধরি’ পদ্মাবতী-শচী-সুত—পুলকে অঙ্গ সদা শোভিত

সদা শ্রীঅঙ্গ পুলকিত

হৃদে ধরে প্রেমের মুরতি—সদা শ্রীঅঙ্গ পুলকিত

সদাই অঙ্গ পুলকিত তাই

হৃদে ধরে প্রেমের মুরতি—সদাই অঙ্গ পুলকিত তাই
হৃদে নিতাই-চাঁদে পাই—সদাই অঙ্গ পুলকিত তাই
হৃদে বিলসে প্রেমের নিতাই—সদাই অঙ্গ পুলকিত তাই

সদাই,–হৃদে বিলসে প্রেমের মুরতি নিতাই
সদাই,–প্রেমে অঙ্গ পুলকিত
পাগল আমার,–নিশিদিশি ভোগ করে

নিতাই-গৌর লীলারহস্য—পাগল আমার,–নিশিদিশি ভোগ করে

পুলক সে ভোগের বিকাস করে

‘‘পুলক-কদম্ব অঙ্গে শোভা

কম্প-অশ্রু-পুলকাদি

‘‘সাত্ত্বিক-বিকার যত, ক্ষণে ক্ষণে সুবেকত,’’

হৃদে—নিতাই গৌর বিলাসের ফলে

‘‘সাত্ত্বিক-বিকার যত, ক্ষণে ক্ষণে সুবেকত,


ভাবাবলী জগ-মন-লোভা।।’’

ইহার,–শ্রীঅঙ্গে দেখি যে ভাবের বিকার

যে দেখে সে বলে—ইহার,–শ্রীঅঙ্গে দেখি যে ভাবের বিকার
সদাই,–বিলসে নিতাই-গৌর-বিহার—ইহার,–শ্রীঅঙ্গে দেখি যে ভাবের বিকার

তাইতে অঙ্গে ভাবের বিকার

ভাবের মুরতি হৃদে করে বিলাস—তাইতে অঙ্গে ভাবের বিকার

‘‘ভাবাবলী জগ-মন-লোভা।।’’

ভাবাবলী অঙ্গে শোভে

ভাবনিধি হৃদে ধরে—ভাবাবলী অঙ্গে শোভে
ভাবনিধির কথা-প্রসঙ্গে—ভাবাবলী অঙ্গে শোভে

ভাবাবলী-রত্নখনি

পাগলের মুরতিখানি—ভাবাবলী-রত্নখনি

শ্রীঅঙ্গ সদা বিভূষিত

ভাবাবলী ভূষণেতে—শ্রীঅঙ্গ সদা বিভূষিত
নিতাই-গৌর-ভোগে মত্ত তাই—শ্রীঅঙ্গ সদা বিভূষিত

‘‘নিতাই গৌর রাধে শ্যাম, হরে কৃষ্ণ হরে রাম,
নামগানে সদাই বিভোর।’’

পাগল আমার,–নাম গানে সদাই বিভোর

নিতাই-গৌর-প্রেমে পাগল মোর,–নাম গানে সদাই বিভোর

বিলাস-হৃদে ধরে তার ভোগের ফলে
একতিল রইতে নারে

এই নাম-প্রসঙ্গ না করে—একতিল রইতে নারে
‘এই নাম-প্রসঙ্গ না করে’—
সাধ্য-সাধন নির্ণয় করা—এই নাম-প্রসঙ্গ না করে

একতিল রইতে নারে
একপদ চলে না

এই নাম-প্রসঙ্গ বিনা—একপদ চলে না

যারে দেখে তারে বলে

ভজ আমার নিতাই-গৌর—যারে দেখে তারে বলে
তোদের,–পাপ তাপ সব আমি নিব

‘‘নাম গানে সদাই বিভোর।
সুমধুর-নৃত্যরঙ্গ,’’

পদে পদ ছাঁদি নেচে যায় চলে

বাহু যুগল দোলাইয়ে—পদে পদ ছাঁদি নেচে যায় চলে

পদে পদ ছাঁদি বাহু দোলাইয়ে

রঙ্গিয়া রসিয়া ধরি’ হৃদয়ে—পদে পদ ছাঁদি বাহু দোলাইয়ে

যে দেখেছে সেই ত’ জানে

তার,–নাটুয়া-মূরতি নিরন্তর জাগে প্রাণে—যে দেখেছে সেই ত’ জানে
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—যে দেখেছে সেই ত’ জানে

‘‘সুমধুর নৃত্যরঙ্গ, আবেশে অবশ অঙ্গ,’’

শ্রুত-পূর্ব্ব-রঙ্গ জেগে উঠে

যা দেখে ভাবুক হিয়া-মাঝে—শ্রুত-পূর্ব্ব-রঙ্গ জেগে উঠে

উদ্দীপ্ত হয় পূর্ব্ব-রঙ্গ

দেখি’ পাগলের মধুর-নৃত্য—উদ্দীপ্ত হয় পূর্ব্ব-রঙ্গ

কেন বা হবে না
এ যে,–নাটুয়া-মুরতির বিহার-ভূমি
হৃদে ধরে নাচছে

সঙ্কীর্ত্তন-সুলস্পটে—হৃদে ধরে নাচছে

তাই,–যে দেখেছে তার মনে হয়েছে
এ কে এল রে
এ কি অপরূপ নটন
বুঝি,–গুপতে গৌর হৃদে বিহরে
গুপতে গৌরাঙ্গ বিহরে

বুঝি ওর হৃদয়-মাঝারে—গুপতে গৌরাঙ্গ বিহরে

নৈলে,–এ স্বভাব পায় কেমন করে
তাইতে বিকাশ এ নটন-মাধুরী

উহার,–হৃদে বিহরে গৌরহরি—তাইতে বিকাশ এ নটন-মাধুরী
‘উহার,–হৃদে বিহরে গৌরহরি’—
যার,–নটনে উৎপত্তি নটনে স্থিতি—উহার,–হৃদে বিহরে গৌরহরি

তাইতে বিকাশ এ নটন-মাধুরী
গৌর নাচে উহার ভিতরে

তার বিকাশ দেখি বাহিরে—গৌর নাচে—গৌর নাচে উহার ভিতরে

না হবে বা কেন রে
এই ত’ গৌরের স্বভাব বটে
আপনায় আপনি ভোগ করে

যোগ্য—হৃদে বিলাস করে—আপনায় আপনি ভোগ করে

প্রকট লীলায় তার প্রমাণ আছে
আপন-নটন-মাধুরী ভোগ করে

বক্রেশ্বরের হৃদে নেচে নাচাইয়ে—আপন-নটন-মাধুরী ভোগ করে

‘সুমধুর নৃত্যরঙ্গ, আবেশে অবশ অঙ্গ,’’

স্বাধীনতা নাই রে

আবেশে অবশ অঙ্গ—স্বাধীনতা নাই রে
যেমন নাচায় তেমনি নাচে—স্বাধীনতা নাই রে

কখনও বিষয় কখনও আশ্রয়

প্রভু আমার সদা আবেশময়—কখনও বিষয় কখনও আশ্রয়

বাহিরেতে তেমনি বিকাশ

হৃদয়ে হয় যেমন প্রকাশ—বাহিরেতে তেমনি বিকাশ

‘‘সবাকারে ধরি’ দেয় কোর।।’’

আমার,–নিতাই-গৌর ভজ বলে

ভাসি’ দুটী নয়ন-জলে—আমার,–নিতাই-গৌর ভজ বলে

বলে,–বিনামূলে আমি হব তোর

মুখে বল নিতাই গৌর—বলে,–বিনামূলে আমি হব তোর

‘‘সবাকারে ধরি দেয় কোর।।’’

পাগল আমার,–সবাকারে ধরি দেয় কোর
নিতাই গৌর ভজ আমি হব তোর

এতবলি—‘‘সবাকারে ধরি’ দেয় কোর।।’’

সবাকারে কোলে করে

ম্লেচ্ছ-যবনাদি অবিচারে—সবাকারে কোলে করে
অদোষ-দরশী নিতাই হৃদে ধরে—সবাকারে কোলে করে
প্রেমদিঠে চেয়ে বাহু পসারিয়ে—সবাকারে কোলে করে

পাগল আমার,–ভেসে যায় নয়ন-জলে

সবাকারে করি’ কোলে—পাগল আমার,–ভেসে যায় নয়ন-জলে

বলে,–আমায় কিনে নে রে বিনামূলে

বাহু পসারি’ কোলে করি’—আমায় কিনে নে রে বিনামূলে
মুখে নিতাই গৌর বলে,–আমায় কিনে নে রে বিনামূলে

প্রাণ নিতাই গৌর ভজ সুখে

পাগল আমার,–কেঁদে বলে করেজোড়ে—প্রাণ নিতাই গৌর ভজ সুখে
তোদের,–পাপের বোঝা আমায় দিয়ে—প্রাণ নিতাই গৌর ভজ সুখে

এত বলি,–‘‘সরকারে ধরি’ দেয় কোর।।


শ্রী শ্রীমদ্ভাগবত, শ্রীচৈতন্য—চরিতামৃত,
আর যত যত ভক্তিগ্রন্থ।
সকল-ভকত-সঙ্গে, আলাপ করয়ে রঙ্গে,
লীলা-কথা ভকতি-সিদ্ধান্ত।।’’

কখনও আন কথা নাই

আমার,–পাগলা প্রভু শ্রীমুখেতে—কখনও আন কথা নাই
গৌর-গোবিন্দ-কথা কহেন সদাই—কখনও আন কথা নাই

সদাই প্রসঙ্গে গোঙায়

একতিল ব্যর্থ না যায়—সদাই প্রসঙ্গে গোঙায়
নাম-রূপ-গুণ-লীলা-কথায়—সদাই প্রসঙ্গে গোঙায়
‘নাম-রূপ-গুণ-লীলা-কথায়’—
প্রাণ-নিতাই-গৌরাঙ্গের—নাম-রূপ-গুণ-লীলা-কথায়

সদাই প্রসঙ্গে গোঙায়

‘‘রথাগ্রে নৃত্য-কীর্ত্তন,’’

হৃদে ধরি’ নাটুয়া-শচীনন্দন

রথাগ্রে নৃত্য কীর্ত্তন—হৃদে ধরি’নাটুয়া-শচীনন্দন

হৃদে ধরি’ সেই গৌরহরি

এ যে,–জগন্নাথে মুগ্ধকারী—হৃদে ধরি’ সেই গৌরহরি
‘এ-যে,–জগন্নাথে মুগ্ধকারী’—
দেখায়ে নিজ-যুগল-মাধুরী—এ যে,–জগন্নাথে মুগ্ধকারী

হৃদে ধরি’ সেই গৌরহরি

‘‘রথাগ্রে নৃত্য কীর্ত্তন,’’

প্রাণ কেঁদে উঠছে

সেই নটনের কথা মনে করে—প্রাণ কেঁদে উঠেছে
আর কি দেখতে পাব না
শ্রীগুরু-স্বরূপে গৌরাঙ্গ-বিলাস—আর কি দেখতে পাব না
পূর্ব্বলীলা-উদ্দীপক নৃত্য-কীর্ত্তন—আর কি দেখতে পাব না

গৌর-লীলা ত’ দেখি নাই মোরা
আমরা,–তাই যাই নীলাচলে

রথযাত্রাকালে ভাই ভাই মিলে—আমরা,–তাই যাই নীলাচলে
সেই ভাবাবেশে-নৃত্য-কীর্ত্তন সঙরিয়ে—আমরা,–তাই যাই নীলাচলে
সেই নটন দেখে,–গৌর নটন ভোগ করব বলে—আমারা,–তাই যাই নীলাচলে

বলে তারে কি বুঝাব ভাই

যে,–সে নটন দেখে নাই—বলে তারে কি বুঝাব ভাই

সেই ত’ জানে যে দেখেছে

তার হৃদিপটে আঁকা আছে—সেই ত’ জানে যে দেখেছে

তার হৃদে জেগেছে

পূরব-নৃত্য-কীর্ত্তন-রঙ্গ—তার হৃদে জেগেছে

কেন বা জাগে বল

এ-নটন দেখে সে-নটন—কেন বা জাগে বল
নিশ্চয়ই এ’-হৃদে সেই নাচে—নৈলে,–কেন বা জাগে বল

উহার হৃদয়ে গৌর বিহরে

নৈলে,—নৃত্য কি এত মাধুরী ধরে—উহার হৃদয়ে গৌর বিহরে

‘‘রথাগ্রে নৃত্য-কীর্ত্তন, সঙ্গে পারিষদ গণ,
প্রাণনাথ পাইনু বলি’ কাঁদে।’’

সঙ্গে প্রভুর নিজগণ
মহাভাবনিধি হৃদে ধরে

রথের আগে নটন-পর—মহাভাবনিধি হৃদে ধরে
স্বমাধুরী ভোগেতে ভোর—মহাভাবনিধি হৃদে ধরে

সেই গৌরকিশোর হৃদে ধরে

‘‘প্রাণনাথ পাইনু বলি’ কাঁদে।‘’

পাগলের,–বয়ান ভাসে নয়ন-জলে

জগন্নাথের বদন চেয়ে—পাগলের,–বয়ান ভাসে নয়ন-জলে
দাঁড়ায়ে শ্রীরথের আগে—পাগলের,–বয়ান ভাসে নয়ন-জলে
প্রাণনাথ পাইনু বলে—পাগলের,–বয়ান ভাসে নয়ন-জলে

তাইতে তো পাগল কাঁদে

তার হৃদে যে কাঁদা-ঠাকুর আছে—তাইতে তো পাগল কাঁদে

এ-কান্না তো আর কারো নয়

সেই সে পরাণ-নাথে পাইনু—এ-কান্না তো আর কারো নয়
বিনা গৌর মহাভাবময়—এ-কান্না তো আর কারো নয়

তাইতে এ-কান্না দেখা দিছে

এ-হৃদয়ে সে-লীলা হতেছে—তাইতে এ-কান্না দেখা দিছে
এ-হৃদয়ে গৌরকিশোরী কাঁদছে—তাইতে এ-কান্না দেখা দিছে

যে দেখেছে তার অনুভব আছে

পূর্ব্বলীলা ভোগ করেছে—যে দেখেছে তার অনুভব আছে

হা,–‘‘প্রাণনাথ পাইনু বলি’ কাঁদে।


যত নীলাচলবাসী,’’

সেই নটন-রঙ্গ দেখি’

‘‘যত নীলাচলবাসী, কিবা গৃহী কি উদাসী,
যে হেরে সে পড়ে প্রেমে-ফাঁদে।।’’

বলে,–এ কি করে লুকাচুরি

অদ্ভুতভাবের বিকার হেরি’—বলে,–এ কি করে লুকাচুরি
এ কি অদ্ভুত-ভাব হেরি—বলে,–এ কি করে লুকাচুরি
রঙ্গিয়া রসিয়া—বলে,–এ কি করে লুকাচুরি

তার শোনা-কথা মনে পড়ে

ভাববিষ্ট-কীর্ত্তন-নটন হেরে—তার শোনা-কথা মনে পড়ে
বলে,–এ আবার কে এল রে এ যে তেমনি করে কাঁদে
জগন্নাথে চেয়ে ব্যাকুল হয়ে—এ যে তেমনি করে কাঁদে

একদিন একজন কেঁদে গেছে

শুনেছি আমরা পূরবে—একদিন একজন কেঁদে গেছে
ভাবিনীর ভাবে বিভোর হয়ে—একদিন একজন কেঁদে গেছে

এ যে তেমনি করে কাঁদে
বুঝি বা বিরাজে

সেই কাঁদা-গৌর এর হৃদে—বুঝি বা বিরাজে

দেখতে পাই নাই দুঃখ ছিল মনে

রথের আগে সেই নটন-পরে—দেখতে পাই নাই দুঃখ ছিল মনে
তার কথা কেবল শুনেছিলাম কানে—দেখতে পাই নাই দুঃখ ছিল মনে

আমাদের হিয়া গেল জুড়ায়ে

এ-স্বরূপে সে-খেলা দেখে—আমাদের হিয়া গেল জুড়ায়ে

বুঝি এসেছে পাগল-সেজে

নিতাই-গৌর-বিলাস ভোগ করাতে—বুঝি এসেছে পাগল-সেজে
যা’ দেখি নাই তা’ দেখাইতে—বুঝি এসেছে পাগল-সেজে
যা’ দেখি নাই তা’ দেখাইতে—বুঝি এসেছে পাগল-সেজে

ভাবের প্রভাব প্রকট করে

গৌর-সুন্দর হৃদে ধরে—ভাবের প্রভাব প্রকট করে

সবাই ব্যাকুল হয়ে কাঁদে

পাগলের কান্না শুনে—সবাই ব্যাকুল হয়ে কাঁদে
হা নিতাই গৌর বলে—সবাই ব্যাকুল হয়ে কাঁদে

‘‘যে হেরে সে পড়ে প্রেম-ফাঁদে।।
কি সুন্দর-রূপঠাম,’’

হৃদে ধরি’ গৌর-গুণধাম

অখিল-লাবণ্যামৃতধাম—হৃদে ধরি’ গৌর-গুণদাম
হৃদে ধরে গৌর-রূপের খনি
আমার,–রাধারমণ গুণমণি—হৃদে ধরে গৌর-রূপের খনি

‘‘কি সুন্দর রূপঠাম, যত,–নীলাচলবাসী-প্রাণ,
সদাই বিহরে নীলাচলে।’’

পাগল হয়ে বেড়ায় পাগল

গৌরলীলা ভোগে কেবল—পাগল হয়ে বেড়ায় পাগল

নীলাচলে পাগল-বিহার

প্রকট-বিহার বুকে ধরে—নীলাচলে পাগল-বিহার
চিতচোর প্রাণগৌরাঙ্গের—নীলাচলে পাগল-বিহার

কাঁদে প্রভু নিশিদিনে

প্রাণগৌর-লীলা অনুশীলনে—কাঁদে প্রভু নিশিদিনে
নীলাচলচারী হৃদে ধরে—কাঁদে প্রভু নিশিদিনে

‘‘কভু নদীয়া-নগরে, কখনও বা ব্রজপুরে,
সঙ্কীর্ত্তন-রঙ্গে সদা ফিরে।।’’

হৃদি বিহার হৃদে ধরে
ভাবনিধির বিহার হৃদে ধরে
যায়, গৌরাঙ্গের সঙ্গে করে

কভু নদীয়ায় কভু ব্রজপুরে—যায়, গৌরাঙ্গের সঙ্গে করে

ব্যর্থকাল নাহি যায়

পাগলা প্রভু রাধারমণের—ব্যর্থকাল নাহি যায়

ব্যর্থকাল যায় না রে

নিতাই-গৌর-স্মরণ বিঁনে—ব্যর্থকাল যায় না রে
নিতাই-গৌর-গুণ গান বিনে—ব্যর্থকাল যায় না রে

‘‘গৌরাঙ্গ-বিলাস-স্থান, যত যত তীর্থধাম,
ভারতের নানাস্থানে বুলে।।’’

আমার,–নিতাই গৌর ভজ বলে

তোদের,–পাপতাপের বোঝা আমায় দিয়ে—আমার,–নিতাই গৌর ভজ বলে

ভজ,–আমার নিতাই গৌর বলে

আমি,–বিকাইব বিনামূলে—ভজ,–আমার নিতাই গৌর বলে

ওরে,—ভাই রে তোদের পায়ে ধরি

বলে,–কাতরে তোদের মিনতি করি—ওরে,–ভাই রে তোদের পায়ে ধরি
ভজ,–প্রাণের নিতাই গৌরহরি,–ওরে,–ভাই রে তোদের পায়ে ধরি

‘‘ভারতের নানাস্থানে বুলে।।’’

সঙ্কীর্ত্তন-বিহারী হৃদে ধরে

‘‘করি হরি-সঙ্কীর্ত্তন, মাতাইলা জগজন,
ডুবাইল প্রেমের সাগরে।।’’

না হবে বা কেন রে

অপনি যেমন সঙ্গী তেমন—না হবে বা কেন রে

সে যে,–প্রেমে জগত মাতাতে পারে

প্রেমদাতা–নিতাই হৃদে ধরে– সে যে,– প্রেমে জগত মাতাতে পারে

জগজনে মাতাল প্রেমে

প্রেমদাতা নিতাই হৃদে ধরে—জগজনে মাতাল প্রেমে
নিতাই-গৌর-নাম-প্রসঙ্গে—জগজনে মাতাল প্রেমে

সে কখনও ভুলতে নারে

যে—নাম শুনে তাঁর শ্রীমুখে—সে কখনও ভুলতে নারে

মনে মনে গণে রে
এ মত্ততা পেল কোথায়

বুঝি,–এর ভিতরে খেলে মাতা-নিতাই—নৈলে,–এ মত্ততা পেল কোথায়

ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে

প্রতি নিতাই-কিঙ্করে—ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে

‘‘ডুবাইল প্রেমের সাগরে।।’

পাগল-প্রভুর মুরতিখানি

গৌরাঙ্গ-বিহার-ভূমি—পাগলা-প্রভুর মুরতিখানি

তাই,–‘‘ডুবাইল প্রেমের সাগরে।।
সুখভোগ তেয়াগিয়ে,পথের ভিখারী হয়ে,’’

সাধে কি পথের ভিখারী হয়
তারেই পথের ভিখারী করে

প্রেমের ভিখারী যার হৃদে বিহরে—তারেই পথের ভিখারী করে
প্রেমভোক্তার ভোগ করাবার তরে—তারেই পথের ভিখারী করে

‘‘ফিরে প্রভু নগরে নগরে।’’
তাইতে ফিরে কাঙ্গাল-বেশে
প্রভু-আমার,–নিতাই-গৌর-প্রেমের কাঙ্গাল
প্রেমে ধনী হয়েও প্রেমের কাঙ্গল
এ তো দান নয় গ্রহণ বটে

এ নিগূঢ়-গৌরাঙ্গ-লীলা—এ তো দান নয় গ্রহণ বটে
আমার প্রভু-নিত্যানন্দের—এ তো দান নয় গ্রহণ বটে
ভোক্তার ভোগ করাবার তরে—এ তো দান নয় গ্রহণ বটে

তাই,–‘‘ফিরে প্রভু নগরে নগরে।’’

বলে আমায় নাম-রস দে রে

ভোগ করাব রসভোক্তারে—বলে আমায় নাম-রস দে রে

যারে দেখে বলে তারে

গলবাসে দন্তে তৃণ ধরে—যারে দেখে বলে তারে

তাই,–‘‘ফিরে প্রভু নগরে নগরে।’’
প্রভুর যে স্বভাব দাসেরও সে স্বভাব
ঐ আবেশে ত’ নিতাই বিহরে
দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে

আবেশে নিতাই বিহরে—দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে
হৃদে ধরি’ দ্বারোদ্ঘাটে—দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে

তারে’ হৃদে ধরে তাই দাসও বিহরে
মনোভাব লুকায়ে রাখতে নারে

‘‘আচণ্ডালে দিয়ে কোল’’

পাগল-নিতাই—স্বভাবেতে

সেই,–প্রেমের পাগল ধরি’ হৃদে—পাগল—নিতাই-স্বভাবেতে

প্রেমবাহু পসারিয়ে

প্রেমদিঠে চেয়ে আয় আয় বলে—প্রেমবাহু পসারিয়ে

‘‘আচণ্ডালে দিয়ে কোল, বলে নিতাই গৌর বোল,
বিকাইয়া যাব বিনামূলে।।’’

আমি,–বিকাইব বিনামূলে

আমার,–নামের পাগল কেঁদে বলে—আমি,–বিকাইব বিনামূলে
‘আমার,–নামের পাগল কেঁদে বলে’—
প্রেমে নিতাই-গৌর বলে—আমার,–নামের পাগল কেঁদে বলে

আমি,–বিকাইব বিনামূলে

আমায়,–কিনে নে রে গৌর বলে—আমি,–বিকাইব বিনামূলে

আমি,–বিকাইতে এসেছি রে

নিতাই-গৌর বুকে ধরে—আমি,–বিকাইতে এসেছি রে

গৌর ভজে কিনে নাও আমাকে

পাগল আমার,–গলবাসে কেঁদে বলে,–গৌর ভজে কিনে নাও আমাকে
তোদের,–পাপ-তাপ নিয়ে যাব নরকে—গৌর ভজে কিনে নাও আমাকে

আমি,–‘‘বিকাইয়া যাব বিনামূলে।।
অসাধনে গুণনিধি, আনি’ মিলাওল বিধি,
জীব-লাগি কাঁদয়ে সদাই।’’

তার কেন এ-স্বভাব ভাই

জীবের লাগি কাঁদে সদাই—তার কেন এ-স্বভাব ভাই

এই মনে অনুমান হয়

তার,–বুকে নিতাই বিলসয়—এই মনে অনুমান হয়

তার বুকেতে বিলসে নিতাই

সে যে,–নিতাই-বিলাসের তনু ভাই—তার বুকেতে বিলসে নিতাই

হৃদে বিহরে জীববন্ধু নিতাই

তাই,–‘‘জীব-লাগি’ কাঁদয়ে সদাই।’’

ব্যাকুল হয়ে কেঁদে বলে

জীবের দুঃখে দুঃখী হয়ে—ব্যাকুল হয়ে কেঁদে বলে

হা-নিতাই প্রভু-নিতাই
আমার এই কথা রাখ

যদি আমার প্রভু হও—আমার এই কথা রাখ

কুড়ায়ে লয়ে দাও আমারে

জগজীবের ভোগ-জ্বালা—কুড়ায়ে লয়ে দাও আমারে

গৌরপ্রেমে মাতাও জগতে

নরকভোগ দাও আমাকে—গৌরপ্রেমে মাতাও জগতে

আমি একা থাকব নরকে

আমি বহু রূপ ধরে—আমি একা থাকব নরকে
সব-কর্ম্মফল ভোগ-করিতে—আমি একা থাকব নরকে
গৌর লয়ে তুমি থাক মজে—আমি একা থাকব নরকে

নরকেতে নাচব সুখে

গৌর-নামের ধ্বনিতুলে—নরকেতে নাচব সুখে

গরব করে বল্‌বো

আমার প্রভু নিত্যানন্দ—গরব করে বল্‌বো
‘আমার প্রভু নিত্যানন্দ’—
গৌর-নাম-প্রেমে মাতাল ব্রহ্মাণ্ড—আমার প্রভু নিত্যানন্দ

গরব করে বলবো

‘‘জীব-লাগি’ কাঁদয়ে সদাই।
মহা-পাপী-তাপী দেখি’, সদা সকরুণ আঁখি,
কোল দিয়ে বলে ভয় নাই।।’’

বলে,–আর কোন ভয় নাই

জীবের বন্ধু আছে নিতাই—বলে,–আর কোন ভয় নাই

নিতাই গৌর ভজ ভাই

আমি নিব পাপ-তাপের বালাই—নিতাই গৌর ভজ ভাই

কি বলব করুণ-স্বভাবের কথা

আমার গুণের পাগলা—প্রভুর—কি বলব করুণ-স্বভাবের কথা

বলতে বুক ফেটে যায়

নিজগুণে দেখালেন আমায়—বলতে বুক ফেটে যায়

অদ্ভুত চরিত্র ভাই

আমার পাগলা প্রভুর—অদ্ভুত চরিত্র ভাই

প্রত্যক্ষ দেখা দূরের কথা

পাপী-তাপীর দুঃখ—প্রত্যক্ষ দেখা দূরের কথা

একদিন নরকের চিত্র দেখে
প্রত্যক্ষ নরক-ভোগ অনুভব করে

চিত্র সাক্ষাৎ মেনে—প্রত্যক্ষ নরক-ভোগ অনুভব করে
নরকের জীবের দুর্দ্দাশা—প্রত্যক্ষ নরক-ভোগ অনুভব করে

প্রাণে প্রাণে ভোগ করিলেন

আমাদের মত দেখা নয়—প্রাণে প্রাণে ভোগ করিলেন
নরকবাসী-জীবগণের দুঃখ—প্রাণে প্রাণে ভোগ করিলেন

দেখতে দেখতে কেঁদে উঠলেন
বলে,–হা নিতাই কোথা তুমি ়
ব্যাকুল হয়ে বলে রে
ব্যাকুল হয়ে অভিমানে বলে
নিতাই,–কে বলে তোমায় পতিত-পাবন

জীবের যদি হয় এত পীড়ন—নিতাই,—কে বলে তোমায় পতিত-পাবন

তুমি যদি হও পতিত-পাবন

তবে কেন পতিতের এত দুঃখ—তুমি যদি হও পতিত-পাবন
তবে,–জীবের কেন নরকে গমন—তুমি যদি হও পতিত-পাবন

কেন জীবের এ দুর্গতি হবে

তুমি পতিত-পাবন থাকতে—কেন জীবের এ দুর্গতি হবে

পতিত-পাবন কেমনে বলি তোমায়

জীব যদি দুঃখই পায়—পতিত-পাবন কেমনে বলি তোমায়

থাকতে প্রভু প্রেমদাতা

জীব,–কেন পাবে ত্রিতাপ-ব্যথা—থাকতে প্রভু প্রেমদাতা

বলতে বলতে পাগল আমার
ব্যাকুল হয়ে আবেশে বললেন
হা নিতাই,–অঙ্গীকার করেছ মোরে

নিজগুণে,–গুরুরূপে হা-নিতাই,–অঙ্গীকার করেছ মোরে

নিতাই আমি ঘোর-নারকী

আমায় উদ্ধারিতে পার কি—নিতাই আমি ঘোর-নারকী

তোমার,–মনে যদি সাধ থাকে

আমা-পতিত উদ্ধারিতে,–তোমার,–মনে যদি সাধ থাকে

যদি আমায়,—উদ্ধারিতে সাধ থাকে
আমার সঙ্কল্প শুন তবে
যাব না আমি তোমার কাছে

ও পতিতের বন্ধু-নিতাই—যাব না আমি তোমার কাছে
একজনও পতিত বাকী থাকতে—যাব না আমি তোমার কাছে
‘একজনও পতিত বাকী থাকতে’—
তোমার,–গৌর-নাম-প্রেম পেতে—একজনও পতিত বাকী থাকতে

যাব না আমি তোমার কাছে

পতিত হয়ে বর পড়—যাব না আমি তোমার কাছে

যদি,–একজনও আমার মত থাকে

তোমার কৃপায় বঞ্চিত হয়ে—যদি,–একজনও আমার মত থাকে

থাকব আমি তার কাছে

আমার স্বগণ বা স্বজাতি বলে—থাকব আমি তার কাছে

তার সঙ্গ করব সতত

আমি লব না তোমার মত—তার সঙ্গ করব সতত

তোমার কাছে নাহি যাব

তোমার,–পতিত-পাবন-নামে কলঙ্ক রটাব—তোমার কাছে নাহি যাব

আমরা,–তোমার সঙ্কল্প ভঙ্গ করবো

যদি একজনও পতিত থাকে—আমরা,–তোমরা সঙ্কল্প ভঙ্গ করবো

তোমার কলঙ্ক রটাবো

তারি ত’ সঙ্গ করব—তোমার কলঙ্ক রটাবো

যদি ধ্বজা উড়াতে চাও

পতিত-উদ্ধারণ-নামের—যদি ধ্বজা উড়াতে চাও

যদি,–পতিত-পাবন-বাণা উড়াতে চাও

আমার মত পতিতে উদ্ধারিয়ে—যদি,–পতিত-বাণা উড়াতে চাও
তবে,–জীবের নরক ভোগ ঘুচাও—যদি,–পতিত-পাবন-বাণা উড়াতে চাও
গৌর-নাম-প্রেমে আগে জগত মাতাও—যদি,–পতিত-পাবন-বাণা উড়াতে চাও

যদি,–ঘুচাও চাও নামের কলঙ্ক

পতিত-পাবন-নাম ধর—যদি,–ঘুচাতে চাও নামের কলঙ্ক
জগভরি’ ভজাও প্রাণগৌরাঙ্গ—যদি,–ঘুচাতে চাও নামের কলঙ্ক

পতিত উদ্ধার কর আগে
পতিত শূন্য কর আগে

যদি,–এ-পতিত উদ্ধারে সাধ থাকে—পতিত শূন্য কর আগে
যদি,–করাও গৌর-প্রেম ভোগে—পতিত শূন্য কর আগে
যখন,–খুঁজে দেখব জগমাঝে আর কেউ বাকী নাই প্রেম পেতে
সবাই,–তোমার কৃপায় গৌর ভজছে—আর কেউ বাকী নাই প্রেম পেতে

জগতে আর পতিত নাই

ওহে নিতাই তোমার কৃপায়—জগতে আর পতিত নাই

তখন,–যাব আমি তোমার ঠাঁই
যখন,–দাঁড়াতে আর ঠাঁই না পাব
তখন,–আমি তোমার কাছে যাব
সেই দিন আমি হব তোমার

যে-দিন,–প্রেম দিয়ে জগত করবে উদ্ধার—সেই দিন আমি হব তোমার

বিকাইব তোমার পদতলে

ডাকতে হবে না বলতে হবে না—বিকাইব তোমার পদতলে

গরব করে বলবো

পতিত-উদ্ধার অবতার—গরব করে বলবো

গরব করে বলবো সদাই

পতিতের বন্ধু নিতাই—গরব করে বলবো সদাই

পতিত-উদ্ধার অবতার

প্রভু-নিত্যানন্দ আমার—পতিত-উদ্ধার অবতার

নিতাই,–প্রেমে-বিতরণ-ধাতা

একমাত্র পতিত-ত্রাতা—নিতাই,–প্রেম-বিতরণ-ধাতা

কি অপূর্ব্ব চরিত রে

আমার,–পাগলা প্রভু শ্রীরাধারমণের—কি অপূর্ব্ব চরিত রে

‘‘কোল দিয়ে বলে ভয় নাই।।’’

পাপী-তাপীর ভয় কি আছে

পতিত-পবন নিতাই আছে—পাপী-তাপীর ভয় কি আছে
‘‘কেন জ্বালায় জ্বলে মর,’’

ভাই রে তোদের পায়ে পড়ি

আমার—পাগল কেঁদে কেঁদে বলে—ভাই রে তোদের পায়ে পড়ি

কেন মর জ্বালায় জ্বলে

এমন,–করুণাসিন্ধু-অবতারে—কেন মর জ্বালায় জ্বলে
এই-ধন্য-কলিযুগে—কেন মর জ্বালায় জ্বলে
নিতাই-গৌর না ভজিয়ে—কেন মর জ্বালায় জ্বলে

‘‘কেন জ্বালায় জ্বলে মর, মোর নিবেদন ধর,
ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।’’

গলবাসে কেঁদে বলে

আমার,–নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—গলবাসে কেঁদে বলে

ভাই রে তোদের পায়ে পড়ি

ভজ নিতাই গৌরহরি—ভাই রে তোদের পায়ে পড়ি

কেন জ্বল ত্রিতাপেতে

এমন,–তাপ-জুড়ান নাম থাকিতে—কেন জ্বল ত্রিতাপেতে

ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম

ত্রিতাপ-জ্বালার হবে বিরাম—ভজ,–নিতাই গৌর রাধে শ্যাম

প্রভু-নিতাই-পদে লহ শরণ

এ ত’ নয় ত্রিতাপ-ভোগের জনম—প্রভু-নিতাই-পদে লহ শরণ
লাভ হবে গৌর-প্রেমধন—প্রভু-নিতাই-পদে লহ শরণ

নিতাই-গৌর ভজে থাক সুখে

নিতাই-গৌর-নাম বল মুখে—নিতাই-গৌর ভজে থাক সুখে

‘‘সকল সন্তাপ যাবে, ব্রজে যুগল-সেবা পাবে,’’

গৌর-গোবিন্দ-সেবা পাবে

‘হরে কৃষ্ণ’ নাম জপে—গৌর-গোবিন্দ-সেবা পাবে

নামের স্বরূপ দেখতে পাবে

‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ জপে—নামের স্বরূপ দেখতে পাবে
মধুর-শ্রীবৃন্দাবনে—নামের স্বরূপ দেখতে পাবে

‘‘জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
প্রভু মোর নিজ-গুণে পতিত-পাষণ্ডী-জনে,
অবিচারে প্রেম দান করে।’’

কেন দান করবে না

তার,–হৃদে বিহরে নিতাই-সোণা—কেন দান করবে না

প্রেম দেন অবিচারে

অদোষ-দরশী-নিতাই হৃদে ধরে—প্রেম দেন অবিচারে
‘‘কি বলিব অদ্ভুত,’’

অনুভব কর ভাই রে

নিত্যানন্দ-দাসের শকতি—অনুভব কর ভাই রে

তারা,–ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে

প্রভু-নিতাই হৃদে ধরে—তারা,–ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে
পতিতের,–বন্ধু-নিতাই হৃদে ধরে—তারা,–ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে
প্রতি নিতাই-কিঙ্করে—তারা,–ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে

‘‘কি বলিব অদভূত, পশু-পাখী’-শিশু কত,
নাচাইলা প্রেমের হিল্লোলে।।’’

পাগলা নিতাই হৃদে ধরি’

গৌরপ্রেমে মত্ত মহাবলী—পাগলা নিতাই হৃদে ধরি’
স্থাবর জঙ্গম প্রেমোন্মত্তকারী—পাগলা নিতাই হৃদে ধরি’

বাহু পসারি’,–বুকে ধরে স্বভাব দিয়ে

‘‘নাচাইলা প্রেমের হিল্লোলে।।’’

নিত্যানন্দ-দাসের স্বভাবে

নিত্যানন্দ-দাসের প্রভাবে—নিত্যানন্দ-দাসের স্বভাবে

‘‘নাচাইলা প্রেমের হিল্লোলে।।’’

এখনও ত’ দেখতে পাও

নাচে বালক-বালিকা সবাই—এখনও ত’ দেখতে পাও

সবে,–নাচে কত রঙ্গভঙ্গে

আরতিকালে শ্রীমূর্ত্তি-আগে—সবে,—নাচে কত রঙ্গভঙ্গে

কেবা এ নাচ শিখাল

তাদের শিক্ষা-গুরু কে বল—কেবা এ নাচ শিখাল

‘‘নাচাইলা প্রেমের হিল্লোলে।।
বৈষ্ণব কি অবৈষ্ণব, কি নিন্দুক কি বান্ধব,
কিবা যোগী জ্ঞানী কর্ম্মী ভক্ত।’’

তার,–কিসে থাকবে আত্ম পর

যাঁর,–হৃদে নিতাই বিহরপর—তার,–কিসে থাকবে আত্ম পর

‘‘কিবা যোগী জ্ঞানী কর্ম্মী ভক্ত।’’

সে তো কখনও আন দেখে না
সে তো আন দেখে না নয়নে

সে তো,–আমার নিতাই-কিঙ্কর বিনে—সে তো আন দেখে না নয়নে

খোসা দেখে না ভিতর দেখে

কিবা যোগী জ্ঞানী কর্ম্মী ভক্ত—খোসা দেখে না ভিতর দেখে
নিত্যানন্দ-দাস-স্বভাবে-খোসা দেখে না ভিতর দেখে

‘‘কি ভিখারী কিবা ধনী, মূরখ বিদ্ধান মানি,
গৃহী কিম্বা বিষয়-বিরক্ত।।
কি হিন্দু ম্লেচ্ছ যবন, কি ভক্ত অভক্তাধম,
সবা-প্রতি সম ব্যবহার।’’

সবারে ভাবে আপনার

কৃষ্ণ-নিত্যদাস জানি’—সবারে ভাবে আপনার

তাই সকলই তার
ভিতর দেখা স্বভাব তার

নিত্যানন্দদাস-স্বভাবে—ভিতর দেখা স্বভাব তার

দেখে নিত্যানন্দ দেখে একাকার

নিত্যানন্দদাস-স্বভাবে—দেখে নিত্যানন্দ দেখে একাকার

খোসা দেখা স্বভাব নয় তার
আর‍ও আনন্দ ভোগ করে

আবৃত দেখি’ নিতাই-চাঁদের—আরও আনন্দ ভোগ করে

‘‘সবা-প্রতি সম ব্যবহার।

একদিন এক-যবন-বালকে

কেন্দ্রাপাড়ায় লীলাকালে—একদিন এক-যবন-বালকে

আয় ভাই বলি’ করলেন কোলে
যবন-বালক স্তম্ভিত
ঠাকুর আমায় করলেন কোলে

আমি অস্পৃশ্য-যবনের ছেলে—ঠাকুর আমায় করলেন কোলে

কেঁদে বালক আকুল হল

চরণেতে বিকাইল—কেঁদে বালক আকুল হল

‘‘সবা-প্রতি সম ব্যবহার।’’

তাইতে তার এই স্বভাব

জগত দেখে নিতাই-এর প্রকাশ—তাইতে তার এই স্বভাব

দেখে,–নিতাইচাঁদের গণ সবাই

নিতাই জগতের আশ্রয়—দেখে,–নিতাইচাঁদের গণ সবাই

তাইতে তার এই উদার-ব্যবহার
নিতাইদাসের এই স্বভাব বটে

ঔদার্য্যমুরতি-নিতাই হৃদে ধরে—নিতাইদাসের এই স্বভাব বটে

তাই,–পাগল আমার মহা-উদার

তার,–হৃদে নিতাই করে বিহার,–তাই,–পাগল আমার মহা-উদার

সবাই আপনার জন মনে করে

তার প্রীতি-ব্যবহারে—সবাই আপনার জন মনে করে

সেই ত’ আপনার মনে বাসে

যখনই যার সঙ্গ করে—সেই ত’ আপান মনে বাসে
আমারে অধিক ভালবাসে—সেই ত’ আপন মনে বাসে

‘‘সবা-প্রতি সম ব্যবহার।


সুমধুর-সম্ভাষণে,’’

পাগলের আমার,–চলন বলন সকলই মধুর

হৃদে ধরে গৌরকিশোর—পাগলের আমার,–চলন বলন সকলই মধুর

‘‘সুমধুর-সম্ভাষণে, তোষে সদা প্রতিজনে,’’

আগে তারে বেঁধে ফেলে

যে আসে তার পাশে—আগে তারে বেঁধে ফেলে
বয়স-অনুরূপ-সম্বন্ধ করে—আগে তারে বেঁধে ফেলে

বাঁধে সম্বন্ধের বন্ধনে

বয়স-অনুসারে তারে—বাঁধে সম্বন্ধের বন্ধনে
বাবা, দাদা, ভাই বলে—বাঁধে সম্বন্ধের বন্ধনে

পাগলের আমার এই ত’ স্বভাব

সে যে ভালবাসার আধার—পাগলের আমার এই ত’ স্বভাব

সম্বন্ধ বিনে রইতে নারে

দেখ্‌বা মাত্র সম্বন্ধ করে—সম্বন্ধ বিনে রইতে নারে

পিছে বলে গৌরকথা

আগে সম্ভাষে,–পিতা, মাতা, বন্ধু, ভ্রাতা—পিছে বলে গৌরকথা

আর বল কে যাবে কোথা

অমনই সবাই পড়ে বাঁধা—আর বল কে যাবে কোথা

পাগ্‌লা,–‘‘প্রভু মোর দয়ার আধার।।’’

ভিতরে বাইরে তারই ব্যবহার

অদোষ-দরশী নিতাই আমার—ভিতরে বাইরে তারি ব্যবহার
করুণাসিন্ধু-অবতার—ভিতরে বাইরে তারি ব্যবহার

তাই,–‘‘প্রভু মোর দয়ার আধার।।’’

রূপ সঙরি’ মনে হয়
আইলা পাগল রূপ ধরি’

নিতাই করুণা-মুরতি-ধারী—আইলা পাগল রূপ ধরি’

দয়া করাই স্বভাব তার

পতিত-পাবন করে হৃদে বিহার—দয়া করাই স্বভাব তার

‘‘প্রভু মোর দয়ার আধার।।
সর্ব্ব-শাস্ত্র-নিরূপণ, কলিযুগে সঙ্কীর্ত্তন,
বিনা জীবের অন্যগতি নাই।
ইহা দেখাবার তরে, ব্রজে কৃষ্ণ হলধরে,
নদে হল গৌরাঙ্গ-নিতাই।।
নদে হল প্রকট গৌরাঙ্গ-নিতাই।।
জীব-ত্রাণ-কারণ, হরিনাম-সঙ্কীর্ত্তন,
জীবে বুঝাইতে গৌরহরি।
আপনি সন্ন্যাসীবেশে,’’

আচরি’ ধর্ম্ম শিখাবে বলে

ভোগ করি ভোগ করাইতে—আচরি’ ধর্ম্ম শিখাবে বলে

আপনি সে ছন্নবেশে
নিত্যানন্দ-বেশ আবরণে

‘‘আপনি সন্ন্যাসী-বেশে, ফিরে প্রভু দেশে দেশে,
প্রাণের,–ভাই-নিত্যানন্দ সঙ্গে করি’।।

নাম-প্রেম-ধন বিতরে

অভিন্নতনু-নিতাই-দ্বারে—নাম-প্রেম-ধন বিতরে

‘‘সেই হরি-সঙ্কীর্ত্তন, ভুলে ছিল জগজন,
নানামতে মুগ্ধ হইয়া।’’

বহিরঙ্গ করে রেখেছিল

হরিনাম-সঙ্কীর্ত্তনে—বহিরঙ্গ করে রেখেছিল

‘‘প্রভু মোর রাধারমণ, সদাই দুঃখিত মন,
জীবের ঐ দুর্দ্দশা দেখিয়া।।’’

তাইতে তার প্রাণ-কাঁদে

করুণানিধি তার হৃদে জাগে—তাইতে তার প্রাণ কাঁদে

নিশিদিশি কাঁদে রে

পাগল আমার,–জীবের এ-দশা দেখে—নিশিদিশি কাঁদে রে

হা,–প্রভু-নিতাই প্রাণ-গৌর
নামপ্রেমে জগত মাতালে

লয়ে নিজগণ সকলে—নামপ্রেমে জগতে মাতালে

নামে সর্ব্বশক্তি দেখাইলে
ভুলে গেছে কলিজীব

কলিজীবের ধর্ম্ম নাম—ভুলে গেছে কলিজীব

প্রাণে প্রাণে ভোগ করতে নারছে

নামে সর্ব্বশক্তি আছে—প্রাণে প্রাণে ভোগ করতে নারছে
মুখে কেবল বলছে—প্রাণে প্রাণে ভোগ করতে নারছে

একবার এস প্রভু
তেমনি করে আবার মাতাও

নামের সর্ব্বশক্তি দেখাও—তেমনি করে আবার মাতাও
জীবের দুর্গতি ঘুচাও—তেমনি করে আবার মাতাও

এই প্রার্থনা হৃদে ধরে

‘‘তাই প্রভু কাঙ্গালবেশে ফিরি ফিরি দেশে দেশে,
নাম প্রচার কৈলা ঘরে ঘরে।’’

দন্তে তৃণ গলবাসে
যারে দেখে পায়ে ধরে

ম্লেচ্ছ-যবনাদি-নরনারী—যারে দেখে পায়ে ধরে
শৃগাল-কুক্কুর-আদি করে—যারে দেখে পায়ে ধরে

‘‘নাম প্রচার কৈলা ঘরে ঘরে।
কীর্ত্তনে অদ্ভুতশক্তি, যাতে মিলে প্রেমভক্তি,
সাক্ষাৎ দেখাইলা এ-সংসারে।।
কিবা অপরূপ লীলা, সঙ্কীর্ত্তনে গলে শিলা’’,

অনেকের অনুভব ছিল
লীলাতেই শিলা গলে

জগজনে জানে সকলে—লীলাতেই শিলা গলে

লীলাতে শিলা গলেছিল
নীলাচলে তার নিদর্শন আছে

পাষাণেতে পদচিহ্ন—নীলাচলে তার নিদর্শন আছে
‘পাষাণেতে পদচিহ্ন’—
জগন্নাথের শ্রীমন্দিরে—পাষাণেতে পদচিহ্ন

নীলাচলে তার নিদর্শন আছে
অনেক বিশ্বাস করে না

গৌর-লীলায় শিলা গলেছে—অনেকে বিশ্বাস করে না
নিদর্শন দর্শন করেও তবু—অনেকে বিশ্বাস করে না

সেই দুঃখ প্রাণে প্রাণে

পাগলা প্রভু রাধারমণের—সেই দুঃখ প্রাণে প্রাণে

তাইতে,–নামে শিলা গলাইলা

নামীর শক্তি ভোগ করাবার তরে—নামে শিলা গলাইলা

লীলায় শিলা গলেছিল

পাগল আমার,–নামে শিলা গলাইল—লীলায় শিলা গলেছিল
‘নামে শিলা গলাইল’—
শিলা—গলান-প্রভু হৃদে ধরে—নামে শিলা গলাইল

এবার কিবা অপরূপলীলা
তার,–নামেতে গলাইল শিলা

যার,–পরশ পেয়ে গলেছিল শিলা—তার,–নামেতে গলাইল শিলা

এবার,–নূতন-খেলা খেলিল

লীলাকারী গৌরহরি—এবার,–নূতন-খেলা খেলিল
‘লীলাকারী গৌরহরি’—
রাধারমণ-হৃদে বিহরি’—লীলাকারী গৌরহরি

এবার,–নূতন-খেলা খেলিল
অনুভব ছিল না ভাই রে

নামেতে যে অধিক শকতি—অনুভব ছিল না ভাই রে

নামেও শিলা গলাইতে পারে

পাগলা প্রভু দেখাইলা—নামেও শিলা গলাইতে পারে

‘‘কিবা অপরূপ লীলা, সঙ্কীর্ত্তনে গলে শিলা,’’

কেন বা পারবে না

যদি,–নাম নামী অভেদ হয়—কেন বা পারবে না

‘‘পদচিহ্ন তাহে পড়িয়াছে।’’

অনেক ভাগ্যবানে দেখেছে

নামে শিলা গলেছে—অনেক ভাগ্যবানে দেখেছে

‘‘কৃষ্ণ-নগরেতে যাই,প্রত্যক্ষ দেখছ ভাই,
এখনও তার,–সাক্ষীলোক বিদ্যমান আছে।’’

যাদের সৌভাগ্য হয়েছিল
ব্যাকুল হয়ে কাঁদে তারা

সে-লীলা দেখেছে যারা—ব্যাকুল হয়ে কাঁদে তারা

বলে,–আর কি আমরা দেখব না

নামে শিলা-গলান-ঠাকুর—বলে,–আর কি আমরা দেখব না

আর কি আমরা দেখতে পাব

নামে পাষাণ-গলান-ঠাকুর—আর কি আমরা দেখতে পাব

এখনও,–‘‘সাক্ষীলোক বিদ্যমান আছে।।


দিগ্‌নগরে সঙ্কীর্ত্তনে, বৃক্ষ পঞ্চবটী বনে,
ডাল-পালা পুলকেতে নাচে।
সঞ্চারিলা নিজ-শক্তি,’’

হৃদে ধরি’ নিতাই-মুরতি

স্থাবর-জঙ্গম-প্রেমোন্মত্তকারী—হৃদে ধরি’ নিতাই-মুরতি
নিতাই সদা তার হৃদ্‌বিহারী—হৃদে ধরি’ নিতাই-মুরতি
‘‘সঞ্চারিলা নিজ-শক্তি,’’

সঞ্চারি’ নিত্যানন্দ-শক্তি

‘‘সঞ্চারিলা নিজ-শক্তি, স্থাবরে দিলা প্রেমভক্তি,
দেখি লোক কৃপা-কণা যাচে।।’’

সবে আসি’ লইল শরণ

নামের শকতি করি’ দর্শন—সবে আসি’ লইল শরণ
লীলা-ভূমির কত পাষণ্ডী যবন—সবে আসি’ লইল শরণ

এখনও ব্যাকুল হয়ে কাঁদে

নাম-প্রসঙ্গে গেলে সেখানে—এখনও ব্যাকুল হয়ে কাঁদে
প্রতিবাসী যবনগণে—এখনও ব্যাকুল হয়ে কাঁদে
‘প্রতিবাসী যবনগণে’—
যারা সেই-লীলা দেখেছে—প্রতিবাসী যবনগণে

এখনও ব্যাকুল হেয় কাঁদে
জিজ্ঞাসিলে আবেশে বলে

এখনও সেই যবনগণ—জিজ্ঞাসিলে আবেশে বলে

অবিশ্বাস কবেছিলাম মোরা

প্রথমদিন গাছ নাচলে—অবিশ্বাস করেছিলাম মোরা

দ্বিতীয়-দিন দেখালে মোদের

আমাদের সন্দেহ ঘুচাবার তরে—দ্বিতীয়-দিন দেখালে মোদের
গাছ আবার নাচ্‌ল নামে—দ্বিতীয়-দিন দেখালে মোদের

এই-তরু নামে নাচ্‌ল

পঞ্চবটী দেখায়ে বলে—এই-তরু নামে নাচল
প্রত্যক্ষ দেখেছি মোরা—এই-তরু নামে নাচল

ব্যাকুল হলে কেঁদে বলে
সেই,–পাগল-ঠাকুর কোথা গেল

যে নামে এই-তরু নাচাইল—সেই,–পাগল-ঠাকুর কোথা গেল

হবে কি মোদের নয়ন –গোচর

নামপ্রেমে গাছ নাচান ঠাকুর—হবে কি মোদের নয়ন-গোচর
প্রাণ নাচান গাছ নাচান ঠাকুর—হবে কি মোদের নয়ন-গোচর

হায়,–কি বলব দুর্দ্দৈবের কথা
প্রত্যক্ষ দেখাইলা

পাগলা প্রভু রাধারমণ—প্রত্যক্ষ দেখাইলা

প্রত্যক্ষ দেখাইলেন

নামেতে যে ‘মরা’ বাঁচে–প্রত্যক্ষ দেখাইলেন
নামে সর্ব্ব–শক্তি আছে–প্রত্যক্ষ দেখাইলেন

নামে পাষাণ গলাল

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—নামে পাষাণ গলাল
তরু নাচাল মরা বাঁচাল—নামে পাষাণ গলাল

[মাতন]
পাষাণ গলিয়া যায়

তরু নাচে মরা বাঁচে—পাষাণ গলিয়া যায়

[মাতন]
এই চোখে দেখলাম
কিন্তু বিশ্বাস করতে নারলাম

কি বলব দুর্দ্দৈবের কথা—কিন্তু বিশ্বাস করতে নারলাম

বিশ্বাস ত’ হল না

প্রত্যক্ষ দেখাইল—বিশ্বাস ত’ হল না
নামে সর্ব্বশক্তি আছে—বিশ্বাস ত’ হল না

পরিচয় দিতে লজ্জা করে

তার সঙ্গে সম্বন্ধ আছে—পরিচয় দিতে লজ্জা করে

পরিচয় তো দেই না

তার সম্বন্ধ আছে বলে—পরিচয় তো দেই না
তার,–নামে কলঙ্ক হবে বলে—পরিচয় তো দেই না

‘‘দেখি’ লোক কৃপা-কণা যাচে।।’’

দেখাইলা জগজনে
আমার,–নিতাই কত বলবান

যারে তারে করেন প্রেমদান—আমার,–নিতাই কত বলবান্
তরুকে কৈল প্রেমদান—দেখাইলা আমার,–আমার,–নিতাই কত বলবান

[মাতন]

‘‘দেখি’ লোক কৃপা-কণা যাচে।।
নরোত্তমের প্রাণকান্ত, শ্রীশ্রীরাধা রাধাকান্ত,
ঝাঁজ পিটায় পুনঃ সংস্থাপন।
আনি’ বন্দীশালা হতে, সেবা করে কত-মতে,
যাহা দেখি’ মুগ্ধ সর্ব্বজন।।


আর এক অপরূপ, রসময় রসভুপ,
শ্রীল রাধাবিনোদ-ঠাকুর।’’

ছিলেন যিনি চিত্রকূটে

সন্ন্যাসীর সেব্য হয়ে—ছিলেন যিনি চিত্রকূটে

‘‘বলেছিল স্বপ্নচ্ছলে, লয়ে চল নীলাচলে,’’

তার নিজ-সেবকে

ব্রহ্মচারী-বেশধারী—তার নিজ-সেবকে

‘‘বলেছিল স্বপ্নচ্ছলে, লয়ে চল নীলাচলে,
সেবা-সুখ ভুঞ্জিব প্রচুর।।
আমার হৃদয়ের ধন, প্রাণ শ্রীরাধারমণ,
আমি,–‘‘সর্ব্বদা থাকিব তার কাছে।’’

অদ্যাপিও বিরাজিছে

শ্রীল রাধাবিনোদ-ঠাকুর—অদ্যাপিও বিরাজিছে
নীলাচলে ঝাঁজপিটা-মঠে—অদ্যাপিও বিরাজিছে

দরশনেতে প্রাণ কাঁদে
তুমি ত’ আছ রাধাবিনোদ
নিতি নিতি সেবা দিছ
তুমি ত’ আছ রাধাবিনোদ

যে এনেছে সে কোথায় লুকাল—তুমি ত’ আছ রাধাবিনোদ

[মাতন]

আমি,–‘‘সর্ব্বদা থাকিব তার কাছে।


করিবে সে নিতি নিতি, প্রেমসেবা পরিপাটী,
বহুদিন এই সাধ আছে।।
স্বপ্নাদেশে ব্রহ্মচারী, অনেক যতন করি,’
নীলাচলে কৈল উপনীত।’’

চিত্রকূট-পর্ব্বত হতে

বিগ্রহের স্বপ্নাদেশ পেয়ে—চিত্রকূট-পর্ব্বত হতে

‘‘নীলাচলে কৈল উপনীত।
এ সমস্ত বিবরণ, শুনি’ প্রভু রাধারমণ,
বিনোদ-সেবা করিল স্থাপিত।।’’

এখনও অছেন বিরাজিত

ঝাঁজপিটামঠে সেই-স্মৃতি—এখনও আছেন বিরাজিত

এখনও স্মৃতি বিরাজিত

শ্রীপুরীধামে ঝাঁজপিটায়—এখনও স্মৃতি বিরাজিত

এখনও ধামে বিরাজিত

সে মূরতি অদভুত—এখনও ধামে বিরাজতি

সে মুরতি দেখে প্রাণ কাঁদে

কোথা প্রাণ-রাধারমণ বলে—সে মুরতি দেখে প্রাণ কাঁদে

‘‘শ্রীটোটা-গোপীনাথে, হরিদাস-সমাধিতে,
কৈলা বহু সেবার বিধান।’’

কেবল প্রকটলীলায় নয়
অপ্রকটেও অনেক খেলা
ঠাকুর,–হরিদাসের সমাধি উদ্ধারিলেন

যবনের হাত হতে—ঠাকুর,–হরিদাশের সমাধি উদ্ধারিলেন

আগে,–প্রকটেতে বলেছিলেন

কোন-ভাগ্যবতীকে—আগে,–প্রকটেতে বলেছিলেন

কাজ হবে তোমার দ্বারে

আমার প্রভুর প্রিয় কোন—কাজ হবে তোমার দ্বারে

স্বপ্নাদেশে জানাইলেন

অপ্রকটে সেই প্রিয়জনে—স্বপ্নাদেশে জানাইলেন

হরিদাসের সমাধি উদ্ধার কর

সামান্য অর্থদানে—হরিদাসের সমাধি উদ্ধার কর

তার দ্বারে হইল রক্ষা

শ্রীহরিদাস-ঠাকুর সমাধি—তার দ্বারে হইল রক্ষা

কৈলেন মোরে মহাকৃপা

দিয়ে,–হরিদাসের সমাধি-সেবা—কৈলেন মোরে মহাকৃপা

আমার,–নাই কোন অধিকার

মায়াগুরুর সেবা করবার—আমার,–নাই কোন অধিকার
মায়ার,–লাথি খাওয়া স্বভাব আমার—আমার,–নাই কোন অধিকার

আমি মায়ার ক্রীতদাস

মায়া-গুরু-হরিদাস—আমি মায়ার ক্রীতদাস

সেই হরিদাসের,–সেবায় কৈলে অধিকারী

তোমার কৃপার যাই বলিহারি—সেই হরিদাসের,–সেবায় কৈলে অধিকারী

[মাতন]
অযোগ্যেরে কৈলে দান

এ কি অহৈতুকী-কৃপার দান—অযোগ্যেরে কৈলে দান

[মাতন]
তোমার সেবা তুমি করো

আমি জানি আমি অযোগ্য—তোমার সেবা তুমি করো

তোমার,–প্রাণের সেবা তুমি রেখো

নিজগুণে দিয়েছ—তোমার,–প্রাণের সেবা তুমি রেখো

করো হরিদাসের সেবা

করছ—রাধাকান্ত-রাধাবিনোদের সেবা—করো হরিদাসের সেবা
করছ—রাধাকান্ত-রাধাবিনোদের সেবা’—
যারা এলো,–তোমার সেবা করি’ আশা—করছ—রাধাকান্ত-

রাধাবিনোদের সেবা
করো হরিদাসের সেবা

‘‘কৈলা বহু সেবার বিধান।
জগতের হিতকারী, জগজন-তাপহারী,
প্রভু মোর জগতের প্রাণ।
কটকনগরে যেবা, শ্রীরাসবিহারী-সেবা,
দীনভাবে ছিল অবিদিত।
নিজে প্রভু সেবা-দ্বারে, জানাইলা এ-সংসারে,
সেবারীত যাহে ভক্তহিত।।
নদীয়ার হরিসভা, যথা জগজন-লোভা,
প্রেমে নাচে গৌর নটরাজ।
ভেটপ্রথা করি’ নাশ, পুরাল সবার আশ,
তুষ্ট কৈলা ভকত-সমাজ।।
হিতব্রতী দানবীর, কৃপালু বিনয়ী ধীর,
গুণ যত কি বলিতে পারি ।’’

প্রাণ ত’ গলল না রে

এমন-গুণের প্রভু পেয়েও—প্রাণ ত’ গলল না রে

তা হলে কি এ-দশা হত

পাগলের গুণে যদি প্রাণ কাঁদ্‌ত—তা হলে কি এ-দশা হত

সবে কর এই কৃপা করি’

যেন,–গুণ সঙরি’ ঝুরে মরতে পারি—সবে কর এই কৃপা করি’

কি জানি কত বলব আর

পাগলের অপরূপ ব্যবহার—কি জানি কত বলব আর

তোমরা ত’ শুনেছ

এই-মধুর-নদীয়াবাসী—তোমরা ত’ শুনেছ
কুকুরের মহোৎসবের কথা—তোমরা ত’ শুনেছ

ভাগ্যবতী এক কুকুর ছিল
নামের সঙ্গে সঙ্গে ফিরতে

তার,–দু’নয়নে বারি ঝর্‌ত—নামের সঙ্গে সঙ্গে ফিরতে

আর কিছু খেত না

অনুসন্ধান করে জানা গেল—আর কিছু খেল না
একমাত্র প্রসাদ বিনে—আর কিছু খেত না

করিত উপবাস

একাদশীর দিনে—করিত উপবাস

প্রাণে প্রাণে জানলেন

পাগলা প্রভু রাধারমণ—প্রাণে প্রাণে জানলেন

এ নিশ্চয় কোন মহাপুরুষ

কুক্কুর-দেহধারী—এ নিশ্চয় কোন মহাপুরুষ

নাম দিলেন ভক্তিদাসী
কোথাও ত’ যায় না

সদাই কাছে পড়ে থাকে—কোথাও ত’ যায় না

তার প্রাণ অন্ত হলে
মনে মনে গণলেন
এ ত’ কোন মহাপুরুষ
মহোৎসব করতে হবে
শ্রীমুখে আজ্ঞা করলেন

প্রাণপ্রিয় নবদ্বীপে—শ্রীমুখে আজ্ঞা করলেন

যাও নবদ্বীপ-দাস
যাও নগরে নগরে
সংবাদ দাও যত কুকুরে

সবারে আসিবার তরে—সংবাদ দাও যত কুকুরে
‘সবারে আসিবার তরে’—
ভক্তিদাসীর উৎসবে—সবারে আসিবার তরে

সংবাদ দাও যত কুকুরে
নবদ্বীপদাস আজ্ঞা পেয়ে
যারে যারে দেখলেন কাছে

কুকুর-দেহধারী—যারে যারে দেখলেন কাছে

বলিলেন কর-জোড়ে
আজ,–ভক্তিদাসীর মহোৎসব

কৃপা করি’ যাবে সব—আজ,–ভক্তিদাসীর মহোৎসব

সেই মহোৎসব হল

নবদ্বীপ-বড়ালঘাটে—সেই মহোৎসব হল

আসিলেন সব ভক্তগণ

কত শত কুকুর-দেহধারী—আসিলেন সব ভক্তগণ

বসিলেন সারি সারি
কোনও চাঞ্চল্য নাই

আর কুকুরের স্বভাব নাই—কোনও চাঞ্চল্য নাই

বসিলেন সারি সারি
প্রসাদ খাইলা সন্তোষে

প্রসাদ বন্টন হলে—প্রসাদ খাইলা সন্তোষে

যত সব নবদ্বীপবাসী
যারা,–আগে করেছিলেন কটাক্ষ

কুকুরের আবার উৎসব হয়—যারা,–আগে করেছিলেন কটাক্ষ

তাদের দু’নয়নে বইল ধারা

দেখি’ পাগলের এই লীলা—তাদের দুনয়নে বইল ধারা

তারা—পরস্পর বলতে লাগল
এ কি তাই হয় কখনও

কুকুরের এত গম্ভীরতা—এ কি তাই হয় কখনও

দেখাইলেন পাগল আমার
অন্য-বুদ্ধি করো না

ধামবাসী-কুকুরে—অন্য-বুদ্ধি করো না

নিশ্চয়ই কোন মহাপুরুষ হবে

আনে কেন থাকবে ধামে—নিশ্চয়ই কোন মহাপুরুষ হবে
কুকুর-রূপে বিহরিছে—নিশ্চয়ই কোন মহাপুরুষ হবে

তাই এই কথা বলতো।

‘‘ব্রাহ্মণ-আচণ্ডাল-কুক্কুরান্ত করি’।
দণ্ডবৎ করিবেক বহুমান্য করি’।।
এই সে বৈষ্ণব-ধর্ম্ম সবারে প্রণতি।
সেই ধর্ম্মধ্বজী যার ইথে নাহি মতি।।’’

আচরিয়ে শিখাইতে

ধামবাসী বৈষ্ণব সবে—আচরিয়ে শিখাইতে
বৈষ্ণবের এই ধর্ম্ম—আচরিয়ে শিখাইতে

করিলেন কুকুরের মহোৎসব

‘‘গুণ যত কি বলিতে পারি।।
বিষয় সৎকুল ছিল, জীব-লাগি তেয়াগিল,
ভ্রমে পথে হইয়া ভিখারী।।
রাধারমণ-দাসে কয়, সাধ যেন পূর্ণ হয়,
সবার চরণে নিবেদন।
আমার অন্তিমকালে, হা রাধারমণ বলে,
সুখে যেন যায় এ-জীবন।।’’

এই কৃপা কর সবে মিলি
সবে মিলি এই কৃপা কর
এই কৃপা কর সকলে

যেন,–প্রাণ যায় গুরু-রাধারমণ বলে—এই কৃপা কর সকলে

[মাতন]
যেন আমি মরতে পারি

শ্রীরাধারমণ-চরণ হৃদে ধরি’—যেন আমি মরতে পারি

[মাতন]

‘শ্রীরাধারমণ-চরণ হৃদে ধরি’—
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—শ্রীরাধারমণ-চরণ হৃদে ধরি’

যেন আমি মরতে পারি

নিতাই-গৌর-নাম মুখে বলি’—যেন আমি মরতে পারি
হা-প্রভু রাধারমণ বলি’—যেন আমি মরতে পারি

আয় ভাই সবাই মিলে কাঁদি

আজ আমাদের কাঁদবার দিন—আয় ভাই সবাই মিলে কাঁদি
‘আজ আমাদের কাঁদবার দিন’—
আজ,–শ্রীগুরু-সঙ্গ ছাড়া হয়েছি—আজ আমাদের কাঁদবার দিন

আয় ভাই সবাই মিলে কাঁদি

‘‘জয় জয় রাধারমণ করুণানিধান।
হেন প্রভু কোথা গেলা করিয়া অনাথ।।’’

হায়,–বিধি মোরে কি করিলা

হা রাধারমণ কোথা গেলা—হায়,–বিধি মোরে কি করিলা
প্রাণরাধারমণ কোথা গেলা—হায়,–বিধি মোরে কি করিলা
হায় রে,–রাধারমণ কোথা লুকাইলা—হায়,–বিধি মোরে কি করিলা

‘‘হেন প্রভু কোথা গেলা না দেখিয়ে আর।
এবে শূন্য ভেল মোর সকল সংসার।।’’

আঁধার দেখিয়ে দিনে

পাগলা প্রভু রাধারমণ বিনে—আঁধার দেখিয়ে দিনে

আর কি দেখা দিবে না

দুঃখের কথা কারে বলব—আর কি দেখা দিবে না
হা রাধারমণ তুমি–আর কি দেখা দিবে না

‘‘কে মোরে করিবে দয়া বাৎসল্য করিয়া।’’

কেন কি হয়েছে বলে

কে আর বলবে—কেন কি হয়েছে বলে

কে ডাকিবে মধুর-স্বরে

প্রেমদিঠে চেয়ে আয় ভাই বলে—কে ডাকিবে মধুর-স্বরে

করেছিলেন সম্বোধন

প্রথম যে-দিন দরশন—করেছিলেন সম্বোধন
ও ভাই ‘রাম’ বলে—করেছিলেন সম্বোধন

সেই হতে ঐ সম্বোধন
আর কেবা ডাকবে

আয় ভাই ‘রাম’ বলে—আর কেবা ডাকবে

আর কেবা শুধাবে

মুখ মলিন দেখলে পরে—আর কেবা শুধাবে

কি হয়েছে ভাই বল দেখি

কেন মুখ মলিন দেখি—কি হয়েছে ভাই বল দেখি

কে আর করবে কোলে

প্রেমদিঠে চেয়ে বাহু পশারিয়ে—কে আর করবে কোলে
কি হয়েছে আমার কাছে আয় বলে—কে আর করবে কোলে

আর কি কোলে নিবে না

প্রেমস্বরে আয় রাম আয় বলে—আর কি কোলে নিবে না

আর কি কোলে নিবে না

স্বতন্ত্রতা করেছি বলে—আর কি কোলে নিবে না

এমনি করে ভেসে বেড়াব

আপন-স্বভাব লয়ে—এমনি করে ভেসে বেড়াব

‘‘কার সঙ্গে দেশে দেশে বুলিব ভ্রমিয়া।।’’

বেড়াব আর কার সঙ্গে

নিতাই-গৌর বলে দেশবিদেশে—বেড়াব আর কার সঙ্গে
নিতাই-গৌর-নাম-প্রসঙ্গে—বেড়াব আর কার সঙ্গে

বাহু পসারি’ করবে কোলে

প্রেমদিঠে চেয়ে আয় আয় বলে—বাহু পসারি’ করবে কোলে

হায়—‘‘কার সঙ্গে করিব আর তীর্থ পর্য্যটন।
কে মোরে লইয়া যাবে শ্রীবৃন্দাবন।।’’

আর কি আমি পাব না

কুণ্ডতীরে বিনোদকুঞ্জে—আর কি আমি পাব না
সেই দুর্ল্লভ-সঙ্গ-প্রসঙ্গ—আর কি আমি পাব না

আর কি আমি দেখতে পাব

ভক্ত-চূড়ামণিগণ-সঙ্গে—আর কি আমি দেখতে পাব
রামহরি-হরিচরণ-সনে—আর কি আমি দেখতে পাব
‘রামহরি-হরিচরণ-সনে’—
মাধবদাস-শ্যামদাস—রামহরি-হরিচরণ-সনে

আর কি আমি দেখতে পাব

নিকুঞ্জ-রহস্যের পরিণতি-প্রসঙ্গে—আর কি আমি দেখতে পাব

আর কি কীর্ত্তন করাবে না

রাধাবিনোদের মন্দিরে বসি’—আর কি কীর্ত্তন করাবে না
নিগূঢ়-গৌরলীলা—রহস্য—আর কি কীর্ত্তন করাবে না
সঙ্কীর্ত্তনে আজ্ঞা দিয়ে—আর কি কীর্ত্তন করাবে না
তোমার,–প্রভু-রামহরির দ্বারে—আর কি কীর্ত্তন করাবে না

আর,–গৌর কীর্ত্তন করাবে না

মনোবৃত্তি সঞ্চারিয়ে—আর,–গৌর-কীর্ত্তন করাবে না
‘মনোবৃত্তি সঞ্চারিয়ে’—
তোমার প্রভু-রামহরির—মনোবৃত্তি সঞ্চারিয়ে

আর,–গৌর-কীর্ত্তন করাবে না
আর কি আমি দেখতে পাব

সেই ভাবাবিষ্ট-মূরতি’—
তোমার প্রভু-রামহরির—সেই ভাবাবিষ্ট-মূরতি

আর কি আমি দেখতে পাব

গৌরকথা-প্রসঙ্গে—আর কি আমি দেখতে পাব

পাগল হয়ে ছুটবেন

দাস-গোস্বামীর প্রসঙ্গ উঠল—পাগল হয়ে ছুটবেন
‘দাস-গোস্বামীর প্রসঙ্গ উঠল’—
গৌরকথা কইতে কইতে—দাস-গোস্বামীর প্রসঙ্গ উঠলে

পাগল হয়ে ছুটবেন

তোমার পূজ্য-রামহরি—পাগল হয়ে ছুটবেন
‘তোমার পূজ্য-রামহরি’—
গোরারসে আর্তিভারি—তোমার পূজ্য-রামহরি

পাগল হয়ে ছুটবেন

‘কোথা রঘুনাথ বলে’—
এই সেই কুণ্ডতীর—কোথা রঘুনাথ বলে

পাগল হয়ে ছুটবেন
আর কি তা দেখাবে না
আর কি দেখতে পাব না

কুসুম-সরোবরে অপরূপ-রঙ্গ—আর কি দেখতে পাব না
‘কুসুম-সরোবরে অপরূপ-রঙ্গ’—
তোমার প্রভু-রামহরির—কুসুম-সরোবরে অপরূপ-রঙ্গ

আর কি দেখতে পাব না

শ্রীচৈতন্যমঙ্গল-কীর্ত্তনে—আর কি দেখতে পাব না
‘শ্রীচৈতন্যমঙ্গল-কীর্ত্তনে’—
গৌর-সম্ভোগে মাতা-মূরতি—শ্রীচৈতন্যমঙ্গল-কীর্ত্তনে

আর কি দেখতে পাব না
সে সম্মিলনী কি আর দেখব না

কুসুম-সরোবরে বকুলতলে—সে সম্মিলনী কি আর দেখব না
‘কুসুম-সরোবরে বকুলতলে’—
শ্রীদাউজীর অগ্রভাগে—কুসুম-সরোবরে বকুলতলে

সে সম্মিলনী কি আর দেখব না

হরিচরণ-মাধবাদি-সনে—সে সম্মিলনী কি আর দেখব না

পরস্পরের অঙ্গে পড়বে ঢলি’

গৌরকথা কইতে কইতে—পরস্পরের অঙ্গে পড়বে ঢলি’

‘‘কে মোরে লইয়া যাবে শ্রীবৃন্দাবন।।’’

কোথা,–লুকায়ে আছ রাধারমণ

করে লয়ে যাবে বৃন্দাবন—কোথা,–লুকায়ে আছ রাধারমণ

‘‘আর কি দেখিব সেই চরণ দু’খানি।
আর কি শুনিব সেই শ্রীমুখের বাণী।।’’

আদর করে কেবা ডাকবে

প্রেমদিঠে চেয়ে—আদর করে কেবা ডাকবে
আয় রাম আয় বলে—আদর করে কেবা ডাকবে

আর কে বুঝবে প্রাণের ব্যথা

আর কি শুনিব অমিয়া-মাখান-কথা—আর কে বুঝবে প্রাণের ব্যথা

আর কি জুড়াবে মনের ব্যথা

ব্যথাহারী মধুর-কথায়—আর কি জুড়াবে মনের ব্যথা
অমিয়া-মাখান-মধুর-কথায়—আর কি জুড়াবে মনের ব্যথা

আর কি শুনিবে শ্রবণ

হৃদ-কর্ণ-রসায়ন-বচন—আর কি শুনিবে শ্রবণ

কথা-শুনা বাদ পড়েছে

সেই কথা শুনা অবধি—কথা-শুনা বাদ পড়েছে

আর,–কারো কথা লাগে না ভাল

সে কথা শুনে কর্ণ হয়েছে বধির—আর,–কারো কথা লাগে না ভাল

‘‘আর কে লইয়া মোরে যাবে নীলাচল।’’

কিছুই ত’ জানতাম না

কোথা নীলাচল কে জগন্নাথ—কিছুই ত’ জানতাম না
নীলাচলে গৌরের কি-বা লীলা—কিছুই ত’ জানতাম না

নিজগুণে লয়ে গেলে

শ্রীরথযাত্রা-কালে—নিজগুণে লয়ে গেলে

সেই লীলা ভোগ করালে

ভাবাবেশে কীর্ত্তন-রঙ্গে—সেই লীলা ভোগ করালে

গৌর-নটন ভোগ করালে

রথাগ্রে আপনি নেচে—গৌর-নটন ভোগ করালে

সকল-আশা পূরণ কৈলে

গৌরলীলারস সিঞ্চনে—সকল-আশা পূরণ কৈলে

আর কেবা ভোগ করাবে

কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে গৌরবিলাস—আর কেবা ভোগ করাবে

আর কে আমাকে লয়ে যাবে

হাতে ধরে আদর করে—আর কে আমাকে লয়ে যাবে

কে,–নীলাচলে লয়ে যাবে

গৌরলীলা ভোগ করাবে—কে,–নীলাচলে লয়ে যাবে
‘গৌরলীলা ভোগ করাবে’—
ভাবাবেশে কীর্ত্তন-প্রসঙ্গে—কে—গৌরলীলা ভোগ করাবে

কে,–নীলাচলে লয়ে যাবে
মূরতি কি আর দেখতে পাব

আইটোটার দ্বারে ভাবাবিষ্ট—মূরতি কি আর দেখতে পাব
‘আইটোটার দ্বারে ভাবাবিষ্ট’—
প্রাণবঁধু আসবে বলে—আইটোটার দ্বারে ভাবাবিষ্ট

মূরতি কি আর দেখতে পাব

‘‘আর কে দেখাবে আমায় শ্রীগৌড়মণ্ডল।।’’

আর কি দেখাবে

শ্রীগৌড়মণ্ডল আমায়—আর কি দেখাবে

আর কি লয়ে যাবে না

শ্রীনবদ্বীপ-পরিক্রমায়—আর কি লয়ে যাবে না

আর কি দেখতে পাব না

ভাবাবেশে নদীয়ায় ভ্রমণ—আর কি দেখতে পাব না
‘ভাবাবেশে নদীয়ায় ভ্রমণ’—
গৌরলীলা-প্রসঙ্গে—ভাবাবেশে নদীয়ায় ভ্রমণ

আর কি দেখতে পাব না

কুক্কুরের পায়ে লুটান—আর কি দেখতে পাব না
‘কুক্কুরের পায়ে লুটান’—
নিতাই গৌর ভজ বলে—কুক্কুরের পায়ে লুটান

আর কি দেখতে পাব না

‘‘যার কথা শুনে ভাই পাষাণ গলয়।
হেন প্রভু কোথা গেলা ছাড়িয়া আমায়।।
মোরে দয়া কর প্রভু রাধারমণ-রায়।
দয়ার ঠাকুর তুমি ভুবনেতে গায়।’’

আজ সেই ফাল্গুনী শুক্লা-দ্বিতীয়া

প্রাণ রাধারমণ কোথা লুকাইলা—আজ সে ফাল্গুনী শুক্লা-দ্বিতীয়া

হায় রে দারুণ-বিধি

এ তোমার কি কঠোর রীতি—হায় রে দারুণ-বিধি

কেন বল হঠ্‌ কর্‌লে

নিধি দিলে যদি কৃপা করে—কেন বল হঠ্ করলে

কেন নিধি হরে নিলে

সুখ-লাগি’ যদি দিলে—কেন নিধি হরে নিলে

এই ত’ স্বভাব তোমার
দেখাও ভোগ করতে না দাও

দ্বিতীয়-তিথিতে চাঁদ—দেখাও ভোগ করতে না দাও

আজ,–আমাদের ভাগ্যে তাই ঘটালে

নিবিয়ে দিলে ভোগ করতে না দিলে—আজ—আমাদের ভাগ্যে তাই ঘটালে

বড় মনে সাধ হয়েছিল

চাঁদ উদয় হল দেখে—বড় মনে সাধ হয়েছিল
ষোলকলা ভোগ করিব—বড় মনে সাধ হয়েছিল

প্রাণভরে বোগ করিব

বড় সৌভাগ্যে চাঁদ মিলেছে—প্রাণভরে ভোগ করিব

কি বলব বিধি তোমার ব্যবহার
কেন হঠাৎ কেড়ে নিলে

ভোগ করতে না দিলে—কেন হঠাৎ কেড়ে নিলে
দেখাইয়ে মুগ্ধ করলে—কেন হঠাৎ কেড়ে নিলে

যদি চাঁদের উদয় করালে

আমাদের ভাগ্যে কৃপা করে—যদি চাঁদের উদয় করালে
হৃদিতম বিনাশের তরে—যদি চাঁদের উদয় করালে

কেন তবে কেড়ে নিলে

চাঁদের প্রকাশ হতে না হতে—কেন তবে কেড়ে নিলে
দ্বিতীয়ার চাঁদের মত—কেন তবে কেড়ে নিলে

কারো ভাগ্যে ভোগ হল না
ভাল-করেও দেখা হল না

ভোগকরা ত’ দূরের কথা—ভাল-করেও দেখা হল না
কেউ দেখল কেউ দেখল না—ভাল-করেও দেখা হল না

কেবা বাধ সাধলে

ভোগ করতে না দিলে—কেবা বাধ সাধলে

না,–তোমার কোন দোষ নাই
সকলই আমাদের কপালের দোষ

চাঁদ পেলাম ভোগ হল না—সকলই আমাদের কপালের দোষ

নিশিদিশি প্রাণ কাঁদ্‌ছে

সেই চাঁদের অদর্শনে—নিশিদিশি প্রাণ কাঁদছে

প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠছে

আজ,–চাঁদের অস্ত-যাবার দিন—প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠছে

আর আমাদের উপায় নাই

দগ্ধ হৃদয় জুড়াইবার—আর আমাদের উপায় নাই
একমাত্র,–নামাশ্রয় বিনে ভাই—আর আমাদের উপায় নাই

আর কাঁদি সবাই মিলে

প্রাণ-রাধারমণের নাম লয়ে—আয় কাঁদি সবাই মিলে

পাগলা প্রভু রাধারমণ
প্রাণের ঠাকুর রাধারমণ

আমার হৃদয়ের ধন—প্রাণের ঠাকুর রাধারমণ

অনুভব না থাকলেও সত্য বটে

পাগল আমার হৃদয়ের ধন—অনুভব না থাকলেও সত্য বটে

আমি ত,–যাই নাই তার কাছে

সে ত,–যেচে এসে হাত ধরেছে—আমি ত,–যাই নাই তার কাছে
যদিও হই স্বতন্ত্ররী—আমি ত,–যাই নাই তার কাছে

গরব করে বলতে পারি

সে যে আমার হৃদবিহারী—গরব করে বলতে পারি

হা প্রাণ রাধারমণ

আমার হৃদয়ের ধরন—হা প্রাণ রাধারমণ

কোথা লুকায়ে করছ খেলা
কোথাও ত’ যাও নাই
লীলা কর্‌ছ গোপনে

তোমার,–প্রাণ-নিতাই-গৌর-সনে—লীলা কর্‌ছ গোপনে
ত্রিকাল-সত্য-লীলায়—লীলা কর্‌ছ গোপনে
তোমার,–বিহারভূমি এই উদ্যানে—লীলা কর্‌ছ গোপনে

প্রবেশিলে এই উদ্যানে

শ্রীনিত্যানন্দ—আবির্ভাব-দিনে—প্রবেশিলে এই উদ্যানে

কৈলে কত উৎসব-আনন্দ

সঙ্কীর্ত্তন-নটন-রঙ্গে—কৈলে কত উৎসব-আনন্দ

তার পরেই ব্যাধির ছল কৈলে
একদিন তুমি বিদায় নিলে

তোমার শ্রীগুরুদেবের কাছে—একদিন তুমি বিদায় নিলে

প্রভু আমায় বিদায় দাও
একস্থানে ত’ রইতে নারি

বহুদূর যেতে হবে—একস্থানে ত’ রইতে নারি

এ বড়ই সুসময় বটে
একে শ্রীধাম নবদ্বীপ
তাতে হয়েছেন সম্মিলিত

বহু-দেশের ভক্ত যত—তাতে হয়েছেন সম্মিলিত
সকলেই উনমত
নিতাই-গৌর-গুণ-গানে—সকলেই উনমত

বড়ই সুসময় বটে
প্রভু আমায় বিদায় দাও
গুরুদেবের কাছে বিদায় নিয়ে
ফাঁকি দিয়ে পলাইলে
কোথাও ত’ যাও নাই
লুকাইয়ে কর্‌ছ খেলা
জানাইছ নিজগুণে

কত-ভাগ্যবতী-ভাগ্যবানে—জানাইছ নিজগুণে;
কোথাও,–যাও নাই তুমি আছ এখানে—জানাইছ নিজগুণে

দেখা দিয়ে কোথা লুকালে
যদি,–মনে ছিল লুকাইব

কেন,–দেখা দিয়ে মাতাইলে—যদি,–মনে ছিল লুকাইব

একবার এস হে

কতদিন থাক্‌বে লকায়ে—একবার এস হে

তাই বলি আজ একবার এস

আমাদের জন্য নয়—তাই বলি আজ একবার এস

এসেছেন,–কত কত মহাজন

নিতাই-সীতানাথের গণ—এসেছেন,–কত কত মহাজন
ঠাকুর—নরহরির গণ—এসেছেন,–কত কত মহাজন
তোমার প্রীতি-আকর্ষণে—এসেছেন,–কত কত মহাজন

আমরা ত’ জানি না

তাদের আদর সম্ভাষণ—আমরা ত’ জানি না
‘তাদের আদর সম্ভাষণ’—
আত্ম-সুখে মত্ত মোরা—তাদের আদর সম্ভাষণ

আমরা ত’ জানি না
কর আদর সম্ভাষণ

এস প্রাণের রাধারমণ—কর আদর সম্ভাষণ

আজ একবার দেখা দাও

তাদের মর্য্যাদা কর্‌বার তরে—আজ একবার দেখা দাও

হা,–মহান্ত সন্তান-মহান্তগণ
এই কৃপা কর সবে

আমায় পদধূলি শিরে দিয়ে—এই কৃপা কর সবে

যেন,–অবিচারে বিকাতে পারি

শ্রীগুরু-চরণে যেন,–অবিচারে বিকাতে পারি

যেন কলঙ্ক রটে না

আমার ব্যবহারে তার নামে—যেন কলঙ্ক রটে না

এই কৃপা ভিক্ষা করি

নদীয়াবাসী-নরনারী—এই কৃপা ভিক্ষা করি

যেন,–প্রাণ ভরে গাইতে পারি

শ্রীগুরু রাধারমণ বলে—যেন,–প্রাণ ভরে গাইতে পারি

হা,–পাগলা প্রভু রাধারমণ

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—হা,–পাগলা প্রভু রাধারমণ

সমাধি-সম্মুখে

একবার দেখা দাও

তুমি ত’ এইখানে বসে আছ—একবার দেখা দাও

সকল-সুখেই বঞ্চিত মোরা
তখন জনম পেলাম না

যখন হল প্রকট-বিহার—তখন জনম পেলাম না
‘যখন হল প্রকট-বিহার’—
প্রভু—নিতাই-প্রাণ-গৌরাঙ্গের—যখন হল প্রকট-বিহার

তখন জনম পেলাম না
কারো দেখা পেলাম না

প্রাণগৌর-গৌরপরিকর—কারো দেখা পেলাম না

যাও পেলাম তাও হারাইলাম

শ্রীগুরুরূপে সুখময়-সঙ্গ—যাও পেলাম তাও হারাইলাম

তুমিও ত’ লুকাইলে

আমাদের দুর্ভাগ্য-দোষে—তুমিও ত’ লুকাইলে

আমাদের দোষে দেখতে না পাই

তোমার কোন দোষ নাই—আমাদের দোষে দেখতে না পাই

তোমার কোন দোষ নাই
নিরন্তর করছ বর্ষণ

তেমনি তেমনি করে—নিরন্তর করছ বর্ষণ
অহৈতুকী-কৃপা—নিরন্তর করছ বর্ষণ

প্রাণে প্রাণে অনুভব করি
তোমার কৃপা অনুভব করি
কিন্তু,—দেখতে ত’ পাই না
প্রাণ ত’ মানে না

কৃপা ভোগ করি বটে—প্রাণ ত’ মানে না

একবার দেখতে দাও

কৃপা ভোগ আশ মিটে না—একবার দেখতে দাও

একবার দেখা দাও

প্রাণের ঠাকুর রাধারমণ—একবার দেখা দাও

অনেকদিন ত’ দেখি নাই

সেই,–হাসিমাখা রসের বদন—অনেকদিন ত’ দেখি নাই

বহুবর্ষ হল গত
একবার দেখা দাও

নবদ্বীপ-গোবিন্দ-গোকুল-চৈতন্য-সঙ্গে—একবার দেখা দাও

একবার দেখব মোরা

সঙ্গে ললিতাদাসী সেবাপরা—একবার দেখব মোরা

একবার দেখ চেয়ে

তুমি ত’ তোমার,–গৌর-ভোগে আছ মেতে—একবার দেখ চেয়ে
তোমার,–দাস-দাসী এসেছে সবে—একবার দেখ চেয়ে
তাদের কি দুর্গতি,–আজ তোমায় হারাইয়ে—একবার দেখ চেয়ে

আজ আমাদের কি দুর্দ্দশা

তুমি কেমনে সইছ তা—আজ আমাদের কি দুর্দ্দশা

তোমার ত’ এই স্বভাব
কারো—মলিন মুখ দেখতে নার
বাহু পসারি’ কোলে কর

কারো দুঃখ সইতে নার—বাহু পসারি’ কোলে কর

তেমনি করে এস হে
তেমনি করে কোলে লও
তাই বুঝি দেখা দিছ না
অভিমান করেছ

বড় অভিমানী তুমি—অভিমান করেছে
আজ্ঞা পালন করি নাই বলে—অভিমান করেছ
‘আজ্ঞা পালন করি নাই বলে’—
স্বতন্ত্রতা-দোষে—আজ্ঞা পালন করি নাই বলে

কতবার বলেছ

অহৈতুকী-কৃপা-স্বভাবে—কতবার বলেছ
প্রদর্শিত-পথে চলতে—কতবার বলেছ

কত ত’ শুনি নাই

নিজ-স্বতন্ত্রতা-দোষে—কথা ত’ শুনি নাই

আবার কাছে ডেকে নিয়েছ
বাহু পসারি’ কোলে করেছ
কত উপদেশ করেছ

এই পথে চল বলে—কত উপদেশ করেছ
নিজ-গুণে কৃপা করে—কত উপদেশ করেছ

পুনঃ পুনঃ বলেছ

প্রদর্শিত-পথে চল—পুনঃ পুনঃ বলেছ
‘প্রদর্শিত-পথে চল’—
পরাণ-গৌরাঙ্গ—প্রদর্শিত-পথে চল

পুনঃ পুনঃ বলেছ
কথা ত’ শুনি নাই
তাইতে অভিমান করেছ

মনে ব্যতা পেয়েছ—তাইতে অভিমান করেছ

মৌন হয়ে বুঝি আছ তাই

বড় দুঃখ দিতেছি তোমায়—মৌন হয়ে বুঝি আছ তাই
‘বড় দুঃখ দিতেছি তোমায়’—
তোমার আজ্ঞা পালন না করিয়ে—বড় দুঃখ দিতেছি তোমায়

মৌন হয়ে বুঝি আছ তাই
জেনেই ত’ করেছ গ্রহণ

অশেষ-দোষের দোষী মোরা—জেনেই ত’ করেছ গ্রহণ
স্বতন্ত্রতার মুরতি মোরা—জেনেই ত’ করেছ গ্রহণ
অদোষ-দরশী-স্বভাবে—জেনেই ত’ করেছ গ্রহণ

অপরাধ করাই স্বভাব মোদের

ক্ষমা করাই ত’ স্বভাব তোমার—অপরাধ করাই স্বভাব মোদের

আমরা ত’ ছাড়ি নাই

আমাদের স্বতন্ত্রতা স্বভাব—আমরা ত’ ছাড়ি নাই

তুমি কেন ছাড়বে

তোমার কোলে নেওয়া স্বভাব—তুমি কেন ছাড়বে

সেই ভরসায় করি আশা

অদোষ-দরশী তোমার স্বভাব—সেই ভরসায় করি আশা
‘অদোষ-দরশী তোমার স্বভাব’—
আমাদের চোখে আছে দেখা—অদোষ-দরশী তোমার স্বভাব

সেই ভরসায় করি আশা

তোমায়,–দেখবার নাই আর কোন ভরসা—সেই ভরসায় করি আশা

তাই করি দেখবার আশা

কেবল তোমার কৃপা ভরসা—তাই করি দেখবার আশা

অভিমান ত্যাগ কর

অপরাধ ক্ষমা কর—অভিমান ত্যাগ কর

তেমনি করে কোলে লও

অদোষ-দরশী প্রভু—তেম্‌নি করে কোলে লও
সকল দোষ ক্ষমা করে—তেমনি করে কোলে লও

তুমি,–উপেখিলে আর গতি নাই

কেউ আমাদের দিবে না ঠাঁই—তুমি,–উপেখিলে আর গতি নাই

তাইতে ত’ তুমি করেছ কোলে

আমরা,–অশেষ-দোষের দোষী বলে—তাইতে ত’ তুমি করেছ কোলে
কেউ আমাদের ছোঁবে না জেনে—তাইতে ত’ তুমি করেছ কোলে

যদি আমাদের উপেক্ষা কর
তোমার নামে যে কলঙ্ক হবে

তোমার,–অদোষ-দরশী নাম ঘোষেছে—তোমার নামে যে কলঙ্ক হবে

অভিমান করে লাভ কি তোমার
তুমি ত’ ছাড়তে নারবে
যেচে এসে হাত ধরেছ

আপন-গরজে—যেচে এসে হাত ধরেছ
সত্য-সঙ্কল্প করে—যেচে এসে হাত ধরেছ
‘সত্য-সঙ্কল্প করে’—
অভাব ঘুচায়ে স্বভাব দিয়ে—সত্য-সঙ্কল্প করে
গৌর-গোবিন্দ-সেবার যোগ্যতা দিনে—সত্য-সঙ্কল্প করে

যেচে এসে হাত ধরেছ
অঙ্গীকার করেছ
তুমি ত’ বাঁধা পড়েছ

আমরা ত’ বাঁধা পড়ি নাই –তুমি ত’ বাঁধা পড়েছ

তোমার ত’ শান্তি নাই

আমাদের যোগ্যতা না দেওয়া অবধি—তোমার ত’ শান্তি নাই
‘আমাদের যোগ্যতা না দেওয়া অবধি’—
নিতাই-গৌর-গোবিন্দ-পাবার—আমাদের যোগ্যতা না দেওয়া অবধি

তোমার ত’ শান্তি নাই
যদি ছেড়ে দাও আমাদের
তোমার নামে যে কলঙ্ক হবে

তোমার সঙ্কল্প ভঙ্গ হবে—তোমার নামে যে কলঙ্ক হবে

তুমি ত’ দায় ঠেকেছ

আমরা ত’ ঠেকি নাই—তুমি ত’ দায় ঠেকেছ

যতই উপেক্ষা করিবে
ততই চলে যাব দূরে

তোমায় ভুলে-স্বতন্ত্রতা—দোষে—ততই চলে যাব দূরে

তাতে,–তোমার দুঃখ যাবে বেড়ে
তাই বলি,–অভিমান করে কি ফল বল

আমাদের প্রতি তোমার—তাই বলি,–অভিমান করে কি ফল বল

একবার চেয়ে দেখ

অভিমান পরিহর—একবার চেয়ে দেখ
তোমায় ভুলে আমাদের কি দুর্দ্দশা—একবার চেয়ে দেখ

ঘুরিয়া বেড়াই সদাই

বাসনার তাড়নায়—ঘুরিয়া বেড়াই সদাই

সকল অভাব দূর কর

বাহু পসারি’ কোলে কর—সকল অভাব দূর কর

তাদের,–কেড়ে লও আমাদের কাঁদয়ে

যারা হৃদয়ে আছে লুকায়ে—তাদের—কেড়ে লও আমাদের কাঁদায়ে
‘যারা হৃদয়ে আছে লুকায়ে’—
দুর্ব্বাসনা-কপট-কুটিনাটী—যারা হৃদয় আছে লুকায়ে

তাদের,–কেড়ে লও আমাদের কাঁদায়ে
করে লও তোমার করে

স্বতন্ত্রতা ঘুচাইয়া—করে লও তোমার করে
নিজ-দত্ত-ধন দাও ফিরায়ে—করে লও তোমার করে

সব হারায়ে ফেলেছি

তুমি,–সকলই ত’ দিয়েছিলে—সব হারায়ে ফেলেছি

তুমি,–আচরিয়ে দেখাইলে

নামে সর্ব্ব-শক্তি আছে—তুমি,–আচরিয়ে দেখাইলে

প্রত্যক্ষ দেখাইলে
নামে,–তরু নাচে মরা বাঁচে

পাষাণ গলিয়া যায়,–নামে,–তরু নাচে মরা বাঁচে

প্রত্যক্ষ দেখাইলে
কি বল্‌ব দুর্দ্দৈবের কথা
প্রাণে প্রাণে বিশ্বাস হল না
তুমি,–আচরিয়ে দেখাইলে

শ্রীবিগ্রহে ভগবদ্বুদ্ধি—তুমি,–আচরিয়ে দেখাইলে
শ্রীবিগ্রহে নিত্যবুদ্ধি—তুমি,–আচরিয়ে দেখাইলে
অবিচারে মহাপ্রসাদ ব্যবহার—তুমি,–আচরিয়ে দেখাইলে

আচরণ করে দেখাইলে

মহাপ্রসাদে বিশ্বাস—আচরণ করে দেখাইলে
কেমন করে করতে হয়—আচরণ করে দেখাইলে
‘কেমন করে করতে হয়’—
শ্রীবৈষ্ণব-সেবা—কেমন করে করতে হয়

আচরণ করে দেখাইলে
দিয়েছিলে এই চারিধন

নাম বিগ্রহ প্রসাদ বৈষ্ণব—দিয়েছিলে এই চারিধন
তোমার চরিতে করি’ আচরণ—দিয়েছিলে এই চারিধন
যা’ মিলে না করে সাধন—দিয়েছিলে এই চারিধন

বিচার ত’ কর নাই

পাত্র কি অপাত্র—বিচার ত’ কর নাই
ধনের আদর জানি কি না—বিচার ত’ কর নাই

দিয়েছিলে নিজ-উদারতা-গুণে

হারায়ে ফেলেছি তোমার ধনে—দিয়েছিলে নিজ-উদারতা-গুণে

সদাই ত’ দেখায়েছ
সে ব্যবহার ভুলে গেছি
যেন,–সর্ব্বদাই মনে বিচার
সব হারায়ে ফেলেছি

তোমার দানের দোষ নাই—সব হারায়ে ফেলেছি

নামের শকতিতে বিশ্বাস নাই
শ্রীবিগ্রহে নিত্যবুদ্ধি নাই
মহাপ্রসাদে বিশ্বাস নাই
গুরু-বৈষ্ণবে শ্রদ্ধা নাই
সব হারায়ে ফেলেছি
আর কি উপায় কর্‌বে বলো

পেয়ে ধন হারাইলাম—আর কি উপায় করবে বলো

পরিচয় দিতে লজ্জা করে

তোমার সম্বন্ধ ধরি বলে—পরিচয় দিতে লজ্জা করে
আমি হলাম বিশ্বাস-শূন্য—পরিচয় দিতে লজ্জা করে

তোমার,–পরিচয় দিতে পারি না

আচরণ করি না—তোমার,–পরিচয় দিতে পারি না
‘আচরণ করি না’—
তোমার পরিচয় দিবার মত—আচরণ করি না

তোমার,–পরিচয় দিতে পারি না
প্রাণের কেঁদে কেঁদে উঠছে
কিন্তু,–সবাই ত’ জেনেছে

যদিও হই স্বতন্ত্ররী—কিন্তু,–সবাই ত’ জেনেছে
আমরা তোমারই বলে—কিন্তু,–সবাই ত’ জেনেছে
প্রাণে প্রাণে তোমার হই বা না হই—কিন্তু,–সবাই ত’ জেনেছে
অঙ্গীকার করেছ বলে—কিন্তু,–সবাই ত’ জেনেছে

যদি করি অন্য-ব্যবহার
অঙ্গুলী দিয়ে দেখাবে

বহির্ম্মুখ লোক যত—অঙ্গুলী দিয়ে দেখাবে

তোমার,–নামে কলঙ্ক রটবে

আমাদের ব্যবহারে—তোমার,–নামে কলঙ্ক রটবে
বঞ্চিত হই দুঃখ নাই আমাদের যা হয় হোক্‌
কর্ম্মফল ভোগ করি—আমাদের যা হয় হোক

কিন্তু,–মনে বড় বেদনা

তোমার নামে কলঙ্ক হবে,–এই,–মনে বড় বেদনা

ঘুচাও বেদনা ঘুচাও

ওহে বেদনাহারী—ঘুচাও বেদনা ঘুচাও

কলঙ্করূপে মোদের রেখো না

তোমার অলকঙ্ক-নামে—কলঙ্করূপে মোদের রেখো না

তোমার নামের কলঙ্ক ঘুচাও
ঘুচাও কলঙ্ক ঘুচাও
তোমার,–নামে যদি কলঙ্ক হয়

আমাদের স্বতন্ত্রতা-দোষে—তোমার,–নামে যদি কলঙ্ক হয়

সে কলঙ্ক কে মুছাবে

তুমি বিনে আর কে আছে—সে কলঙ্ক কে মুছাবে

ঘুচাও কলঙ্ক ঘুচাও

তেমনি করে কোলে লও—ঘুচাও কলঙ্ক ঘুচাও

কোথা আছ নবদ্বীপ-দাদা
একবার দেখ চেয়ে
নামে যে কলঙ্ক হল

তোমার প্রাণ-রাধারমণের—নামে যে কলঙ্ক হল
আমাদের স্বতন্ত্রতা-দোষে—নামে যে কলঙ্ক হল

তুমি কি তা সইতে পারবে
একবার বলে দাও

তোমার প্রাণ-রাধারমণে—একবার বলে দাও

আছেন বুঝি উদাস হয়ে

আপন-ভোগেতে মেতে—আছেন বুঝি উদাস হয়ে
‘আপন-ভোগেতে মেতে’—
তার নিতাই-গৌরাঙ্গ লয়—আপন-ভোগেতে মেতে

আছেন বুঝি উদাস হয়ে
বুঝি তিনি শুনতে পান না

আমাদের কাতর-কান্না—বুঝি তিনি শুনতে পান না

বুঝি,–তার কাছে পৌঁছে না

তার,–ভাবের ঘোর ভেদ করে—বুঝি,–তার কাছে পৌঁছে না

চিরকাল স্বভাব তোমার

আমাদের হয়ে বলা—চিরকাল স্বভাব তোমার

বলে দাও বলে দাও
তোমার,–পাগলেরে বলে দাও

পূরব,–স্বভাবেতে আলিঙ্গীতে—তোমার,–পাগলেরে বলে দাও
অভিমান করে কোন ফল নাই—তোমার,–পাগলেরে বলে দাও

হা,–পাগলা প্রভু রাধারমণ
তেমনি করে কোলে লও
দোহাই তোমার নবদ্বীপের
তেমনি করে লও

অদোষ-দরশী-স্বভাবে—তেমনি করে কোলে লও

সকল-দুর্দ্দৈব ঘুচাও

আজ্ঞা-পালনে শকতি দাও—সকল-দুর্দ্দৈব ঘুচাও

দাও আনুগত্য দাও

স্বতন্ত্রতা কেড়ে লও—দাও আনুগত্য দাও

বল দাও শক্তি দাও
দাও দাও শক্তি দাও

শ্রীবিগ্রহে ভগবদ্‌-বিশ্বাস দাও—দাও দাও শক্তি দাও

নামে বিশ্বাস শকতি দাও
বৈষ্ণবেতে শ্রদ্ধা দাও

প্রাণে প্রাণে,–মহাপ্রসাদে বিশ্বাস দাও—বৈষ্ণবেতে শ্রদ্ধ দাও

আমাদের সব গেল

গুরু-বৈষ্ণব-অপরাধে – আমাদের সব গেল

নামের কালিমা ঘুচাও
তোমার জনে তুমি রাখো
দাও দাও শকতি দাও
দাও তাদের শকতি দাও

যারা,–তোমার পরিচয়ে পরিচিত—দাও তাদের শকতি দাও

এ ত,–দান নয় গ্রহণ করে

ভোক্তায় ভোগ করাবার তরে—এ ত,–দান নয় গ্রহণ করে

প্রাণে প্রাণে গরব করে

আমাদের পাগলা-দাদু বলে—প্রাণে প্রাণে গরব করে

একবার চাও কৃপাদিঠে
শক্তি দাও স্বভাব জাগাও

তোমার আজ্ঞা-পালনে—শক্তি দাও স্বভাব জাগাও

তোমার,–আজ্ঞা-পালনে শকতি দাও

অনুগত-জনে আনুগত্যাদি—তোমার,–আজ্ঞা-পালনে শকতি দাও

দাও প্রাণে শকতি দাও
সেই পথে চালাও হে

মহাজনের অনুমোদিত—সেই পথে চালাও হে

সোজা-পথে চলি মোরা

প্রভু্ তোমায় হৃদে ধরে—সোজা-পথে চলি মোরা

তোমার চরণ হৃদে ধরি

তোমার,–দাস-নাম সার্থক করি—তোমার চরণ হৃদে ধরি

আর এক নিবেদন
আমায়,–দেখা না দাও দুঃখ নাই

আমি,–মহাস্বতন্ত্রী অপরাধী—আমায়,–দেখা না দাও দুঃখ নাই

আপন-মনকে বুঝাব

তোমার দেখা না পেয়ে—আপন-মনকে বুঝাব
স্বতন্ত্রতার ফলভোগ—আপন-মনকে বুঝাব

আমার জন্য নাই বা এলে
তাদের লাগি’ একবার এস
তাদের একবার দেখা দাও

যারা,–চোখে তোমায় দেখে নাই—তাদের একবার দেখা দাও
‘যারা,–চোখে তোমায় দেখে নাই’—
নাম মাত্র শুনেছে—যারা,–চোখে তোমায় দেখে নাই

তাদের একবার দেখা দাও
যারা,–লীলা-কথা পড়েছে

তোমার চরিত-সুধায়—যারা,–লীলা-কথা পড়েছে

যারা,–নাম-গুণ শুনে মজেছে
প্রাণে প্রাণে প্রাণ সঁপেছে

গুণ শুনে মুগ্ধ হয়ে—প্রাণে প্রাণে প্রাণ সঁপেছে

নিশিদিশি ঝুরছে

আমাদের পাগলা দাদু বলে—নিশিদিশি ঝুরছে

তারা,–তোমা ছাড়া জানে না

আমার মত স্বতন্ত্ররী নয়,–তারা,–তোমা ছাড়া জানে না

একবার দেখা দাও

তাদের অনুরাগে তুমি—একবার দেখা দাও

তারা,–শুনেছে নিজ-গুরুর মুখে

তুমি,–যাও নাই কোথায় আছ এখানে,–তারা,–শুনেছে নিজ-গুরুর মুখে

তারা,–বড় আশা করে এসেছে

তাইতে তোমায় দেখবার তরে—তারা,–বড় আশা করে এসেছে
নানাদিক-দেশ হতে—তারা,–বড় আশা করে এসেছে

তাদের সকলেরই মনে সাধ

তোমার গুণের কথা শুনে—তাদের সকলেরই মনে সাধ
শ্রবণ-নয়নের মিটাতে বিবাদ—তাদের সকলেরই মনে সাধ

অনুভব করবে তারা

একবার তাদের দাও দেখা—অনুভব করবে তারা

তার,–মুরতি কত শকতি ধরে

যার,–নাম গানে পাগল করে—তার,–মুরতি কত শকতি ধরে

এই অনুভব করতে এসেছে
এস তাদের বাসনা পুরাও
আমার বলবার শকতি নাই

মহাস্বতন্ত্ররী আমি—আমার বলবার শকতি নাই
তাদের দেখা দাও বলে—আমার বলবার শকতি নাই

বড় মনে গরব তাদের

তোমার সম্বন্ধ ধরে—বড় মনে গরব তাদের

তারা যে গরবে ফুলে

দাদু,–আমরা তোমার নাতি বলে—তারা গরবে ফুলে

একবার দেখা দাও

তাদের গরবে তুমি—একবার দেখা দাও

রাখ তাদের গরব রাখ

তাদের প্রেমে হও বদ্ধ—রাখ তাদের গরব রাখ

তাদের পিরীতে দেখা দাও
বড়,–আব্দার করে এসেছে

আমাদের দাদু বলে—বড়,–আব্দার করে এসেছে

তাই বলি দেখা দিতে

একবার তাদের প্রীতে—তাই বলি দেখা দিতে

আমি তোমায় দেখব

তাদের আনুগত্যে—আমি একবার দেখব

তাদের পিছে দাঁড়ায়ে দেখব

আমার দেখবার অধিকার নাই—তাদের পিছে দাঁড়ায়ে দেখব

যদিও না দেখা পাই

দেখা দাও বলবার মুখ নাই—যদিও না দেখা পাই

তাদের,–গরব দেখে সুখী হব
তারা তোমায় দেখতে পেলে

কোন দুঃখ থাকবে না তাদের—তারা তোমায় দেখতে পেলে

তাই দেখে সুখী হব

তোমায় দেখে সুখী তারা—তাই দেখে সুখী হব

সম্বন্ধ ধরে ডাক তাদের

প্রেমদিঠে চেয়ে তেমনি করে হেসে—সম্বন্ধ ধরে ডাক তাদের
এস দাদা দিদি বলে—সম্বন্ধ ধরে ডাক তাদের

কর প্রীতি-সম্ভাষণ

তাদের পানে চেয়ে প্রেমস্বরে—কর প্রীতি-সম্ভাষণ

তাদের প্রাণে ভরসা দাও
তারা কে কি পাবে বল

আমাকে আশ্রয় করে –তারা কে কি পাবে বল
আমি ত’ বিশ্বাস শূন্য কে কি পাবে বল
আমার কাছে এসে তারা—কে কি পাবে বল

তাদের আশা কি বিফল হবে

পাব বলে আশ্রয় নিল—তাদের আশা কি বিফল হবে

তাদের বাসনা পূরাও

আমার যা হয় হোক—তাদের বাসনা পূরাও

এই অভয়-বাণী বল

তাদের পানে চেয়ে—এই অভয়-বাণী বল

ভয় কি ভাই আমি আছি
ভয় কি দিদি আমি আছি
আয় আমার কাছে আয়
এই অভয়-বাণী বল
কৃপাশক্তি কর সঞ্চার

তাদের অভাব আমায় দিয়ে—কৃপাশক্তি কর সঞ্চার

তাদের অভাব আমায় দাও

তোমাকে ভোগ করিবার—তাদের অভাব আমায় দাও

আমি একই পড়ে থাকি

নিজ-স্বভাব-বলে অভাব লয়ে—আমি একাই পড়ে থাকি

দাও তাদের বিশ্বাস দাও

নামে সর্ব্বশক্তি আছে—দাও তাদের বিশ্বাস দাও

অবিচারে গ্রহণ করুক

বৈষ্ণবের উচ্ছিষ্ট—অবিচারে গ্রহণ করুক্‌
মহাপ্রসাদ নষ্ট হয় না বলে—অবিচারে গ্রহণ করুক
মহা-মহা-পাবন বলে—অবিচারে গ্রহণ করুক

বৈষ্ণবের সেবা করুক

গৌরগোবিন্দ-বিহার-ভূমি জেনে—বৈষ্ণবের সেবা করুক
নিতাই—চাঁদের-গণ জেনে—বৈষ্ণবের সেবা করুক

সাক্ষাৎ ভগবদ্বুদ্ধি হোক্‌

শ্রীবিগ্রহ-দর্শনে তাদের—সাক্ষাৎ ভগবদ্বুদ্ধি হোক

প্রাণে প্রাণে ভোগ করুক

বিগ্রহরূপে নিত্যলীলা—প্রাণে প্রাণে ভোগ করুক

সেবা করুক প্রাণে প্রাণে

তোমার সেবা-বিগ্রহে—সেবা করুক প্রাণে প্রাণে
নিতাই-গৌর-রাধা-শ্যামে—সেবা করুক প্রাণে প্রাণে
প্রেম-প্রীতির বন্ধনে—সেবা করুক প্রাণে প্রাণে

অনায়াসে কাল কাটাক্

এই দুঃখময়—সংসারে—অনায়াসে কাল কাটাক্
সুখের পাথারে সাঁতার দিয়ে—অনায়াসে কাল কাটাক্

তাদের আচরণ দেখে

তোমার কৃপাশক্তি পেয়ে—তাদের আচরণ দেখে

আমার প্রাণ যাক্ জুড়ায়ে
তাদের লয়ে নাচ তুমি

তেমনি করে নটন-রঙ্গে-তাদের লয়ে নাচ তুমি

তারা,–প্রাণভরে গান করুক

তোমার কৃপাশীর্ব্বাদ-বলে—তারা,–প্রাণভরে গান করুক্
তোমার মোহন-মুরতি হেরে—তারা,–প্রাণভরে গান করুক্
তোমায় সবে ঘিরে ঘিরে—তারা,–প্রাণভরে গান করুক্

‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’

[মাতন]
গরব করে বলুক সবাই

তোমার সম্বন্ধে হৃদে ধরে—গরব করে বলুক সবাই
শুনে আমি শ্রবণ জুড়াই—গরব করে বলুক সবাই

পাগলা—দাদা রাধারমণ

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—পাগলা-দাদা রাধারমণ

[মাতন]
তারা,–গান করবে প্রেমভরে

আমার,–শোনবার বড় সাধ হয়েছে—তারা,–গান করবে প্রেমভরে

পাগলা-দাদা রাধারমণ

কাঙ্গাল-রামের সর্ব্বস্বধন—পাগলা-দাদা রাধারমণ

[মাতন]
এই কৃপা কর হে
যেন কলঙ্ক হয় না

আমাদের ব্যবহারে তোমার নামে—যেন কলঙ্ক হয় না

তেমনি করে শক্তি দাও

বাহু পশারি’ হৃদে ধরে—তেমনি করে শক্তি দাও
তোমার,–কৃপাদত্ত-নাম-গানে—তেমনি করে শক্তি দাও

প্রাণে প্রাণে সবাই জানুক
যেখানে নাম সেখানে তুমি

‘নিতাই গৌর রাধে শ্যাম’—যেখানে নাম সেখানে তুমি

যেখানে নাম সেখানে পাগল
এই,–নাম যেখানে পাগল সেখানে

‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম’—এই,–নাম যেখানে পাগল সেখানে

তবে কেন প্রাণ কাঁদে

এই,–হরিনাম শুনিলে তোমায় দেখবার লাগি’—তবে কেন প্রাণ কাঁদে

নাম নিলে কেন প্রাণ কাঁদে

‘নিতাই গৌর রাধে শ্যাম’—এই,–নাম নিলে কেন প্রাণ কাঁদে

নৈলে কেন প্রাণ কাঁদে

নামের সঙ্গে তুমি নিশ্চয় আছ—নৈলে কেন প্রাণ কাঁদে
এই,–নাম তোমার সঙ্গে আছে—নৈলে কেন প্রাণ কাঁদে

তাই বুঝি প্রাণ কাঁদে

নিশ্চয়,–নাম যেখানে পাগল সেখানে—তাই বুঝি প্রাণ কাঁদে
এই,–হরিনাম শুনিলে তোমায় দেখবার লাগি’—তাই বুঝি প্রাণ কাঁদে

এই,–নাম তোমার সঙ্গে আছে

‘নিতাই গৌর রাধে শ্যাম’,–নামের মুরতি সম্মুখে আছে—

এই,–নাম তোমার সঙ্গে আছে—
প্রাণে প্রাণে ভোগ করাও

এই,–নাম যেখানে তুমি সেখানে—প্রাণে প্রাণে ভোগ করাও

এই কৃপা কর হে

নিতাই-গৌর-প্রেমের—এই কৃপা কর হে

পাগল হয়ে বেড়াই সবে

ভাই ভাই ভাই মিলে—পাগল হয়ে বেড়াই সবে

গরব করে বলুক সবে
গরব করে বেড়াবে

হা,–পাগল-দাদু রাধারমণ বলে—গরব করে বেড়াবে

হা,–পাগলা-দাদু রাধারমণ

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—হা,–পাগলা-দাদু রাধারমণ
গরব করে বল সবাই—হা,–পাগলা-দাদু রাধারমণ

আর একটি কথা আছে
নিজ-মুখে বলেছিলে

করুণা-স্বভাবেতে—নিজ-মুখে বলেছিলে
নরকের চিত্র দেখে—নিজ-মুখে বলেছিলে

নিতাই আমি ঘোর-নারকী

আমায় উদ্ধারিতে নার কি—নিতাই আমি ঘোর-নারকী

যদি আমায়,–উদ্ধারিতে ইচ্ছা করে

আগে,–জগৎ পতিত-শূন্য কর—যদি আমায়,–উদ্ধারিতে ইচ্ছা কর

আমি তোমার হব তবে

যে দিন,–জগৎ পতিল-শূন্য হবে—আমি তোমার হব তবে
যে দিন,–পতিত পতিতপাবন হবে—আমি তোমার হব তবে
‘যে নি,–পতিত পতিতপাবন হবে’—
তোমার অহৈতুকী-কৃপা-বলে—যে দিন,–পতিত পতিতপাবন হবে

আমি তোমার হব তবে
সেই কথা মনে জাগছে
আর কারে জানাব
শুনেছি তোমার শ্রীমুখে
প্রতিজ্ঞা করেছেন গৌরহরি

বিশ্বম্ভর নাম ধরি’—প্রতিজ্ঞা করেছেন গৌরহরি
প্রেমে বিশ্ব ভরবে বলি’—প্রতিজ্ঞা করেছেন গৌরহরি

হাতে ধরে বলে দিয়েছেন

অভিন্নতনু-নিতাইচাঁদে—হাতে ধরে বলে দিয়েছেন
বিশ্বম্ভর নাম পূর্ণ করতে—হাতে ধরে বলে দিয়েছেন

সে দিনের আর ক’দিন বাকী

বল বল পাগলা-প্রবু—সে দিনের আর কদিন বাকী
নিতাইচাঁদে শুধাবে না কি—সে দিনের আর কদিন বাকী

কবে ভজবে গৌরহরি

ম্লেচ্ছ-যবনাদি করি’—কবে ভজবে গৌরহরি

তাপিত-হিয়া জুড়াবে তবে

জগৎ,–গৌর-অনুরাগে মত্ত হবে—তাপিত-হিয়া জুড়াবে তবে

সেই আশা পূরণ কর
গরব করে বলতে দাও

তোমার দাসানুদাসগণে—গরব করে বলতে দাও
তোমার সম্বন্ধে ধরে—গরব করে বলতে দাও
তোমার কৃপা অনুভব করে—গরব করে বলতে দাও

আমাদের প্রাণ-রাধারমণ

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—আমাদের প্রাণ-রাধারমণ

[মাতন]
হা,–পাগলা দাদু রাধারমণ

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—হা,–পাগলা দাদু রাধারমণ

[মাতন]
জয় আমাদের রাধারমণ

নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—জয় আমাদের রাধারমণ
শুনে আমি শ্রবণ জুড়াই—জয় আমাদের রাধারমণ

———–


(আম্রবৃক্ষতলে দাঁড়াইয়া)

নিতাই গৌর রাধে শ্যাম

পাগলের প্রাণারাম—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম
প্রাণ-ভরে বলুক তারা—নিতাই গৌর রাধে শ্যাম

‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।’’

[মাতন]

গৌরহরি-বোল, হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।।

[মাতন]

‘প্রেমসে কহো শ্রীরাধে শ্রীকৃষ্ণ বলিয়ে—
প্রভু-নিতাই-শ্রীচৈতন্য-অদ্বৈত-শ্রীরাধারাণীকী জয় !
প্রেমদাতা-পরমদয়াল-পতিতপাবন-শ্রীনিতাইচাঁদকী জয় !
করুণাসিন্ধু-গৌরভক্তবৃন্দকী জয় !
শ্রীশ্রীনাম-সঙ্কীর্ত্তনকী জয় !
শ্রীখোল-করতালকী জয় !
শ্রীনবদ্বীপধামকী জয় !
শ্রীনীলাচলাধামকী জয় !
শ্রীবৃন্দাবনধামকী জয় !
চারিধামকী জয় !
চারিসম্প্রদায়কী জয় !
অনন্তকোটি-ব্রাহ্মণ-বৈষ্ণবকী জয় !
পরম করুণ-শ্রীগুরুদেবকী জয় !
প্রেমদাতা-পরমদয়াল-পতিতপাবন—
শিশুপশুপালক-বালকজীবন—শ্রীশ্রীমদ্‌ রাধারমণকী জয় !

‘‘শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌর হরিবোল।।’’



অভিসার আক্ষেপানুরাগ কুঞ্জভঙ্গ খণ্ডিতা গীতগোবিন্দ গোষ্ঠলীলা দানলীলা দূতী ধেনুবৎস শিশুহরণ নৌকাখন্ড পূর্বরাগ বংশীখণ্ড বিপরীত বিলাস বিরহ বৃন্দাবনখন্ড ব্রজবুলি বড়াই বড়াই-বচন--শ্রীরাধার প্রতি মাথুর মাধবের প্রতি দূতী মান মানভঞ্জন মিলন রাধাকৃষ্ণসম্পর্ক হীন পরকীয়া প্রেমের পদ রাধা বিরহ রাধিকার মান লখিমাদেবি শিবসিংহ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন শ্রীকৃষ্ণের উক্তি শ্রীকৃষ্ণের পূর্বরাগ শ্রীকৃষ্ণের মান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ংদৌত্য শ্রীগুরু-কৃপার দান শ্রীরাধা ও বড়াইয়ের উক্তি-প্রত্যুক্তি শ্রীরাধার উক্তি শ্রীরাধার প্রতি শ্রীরাধার প্রতি দূতী শ্রীরাধার রূপবর্ণনা শ্রীরাধিকার পূর্বরাগ শ্রীরাধিকার প্রেমোচ্ছ্বাস সখীতত্ত্ব সখীর উক্তি সামোদ-দামোদরঃ হর-গৌরী বিষয়ক পদ