‘‘ভজ নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
মহাতীর্থ ত্রিবেণীর তীরে।”
প্রভু-নিত্যানন্দের লীলাধাম—এই,–সুখময় সপ্তগ্রাম
আনন্দের নিত্যধাম—এই,–সুখময় সপ্তগ্রাম
যাঁহা,—গঙ্গা যমুনা সরস্বতী মিলিত—সেই ত’ ত্রিবেণী তীর্থ
বহে যাঁহা মিলিত ত্রিধারে।।’’
তারুণ্য-কারুণ্য-লাবণ্যামৃতধারা—যেন,–বিহরিছে রূপান্তরে
যমুনা ভাগীরথী সরস্বতী—যেন,–বিহরিছে রূপান্তরে
লীলার অনুকূল হয়ে—যেন,—বিহরিছে রূপান্তরে
যমুনা ভাগীরথী সরস্বতী—যেন-বিহরিছে রূপান্তরে
মহাভাব-প্রেম-রস—যেন,–তিন নাম ধরে বিহরে
বিলাসীকে সুখ দিবার তরে—যেন,–তিন নাম ধরে বিহরে
সঙ্কীর্ত্তন-রাস-রস—যেন,–তিন নাম ধরে বিহরে
মহাভাব-প্রেম-রস-ঘনাকৃতি—যেন,–তিন নাম ধরে বিহরে
যাঁহা সপ্তঋষিবর, করি’ তপ সুদুশ্চর,
আরাধিয়া গোবিন্দ-চরণ।
বসি’ ত্রিবেণীর তটে, হরি স্মরি’ অকপটে,
সিদ্ধি পাইলা প্রেম মহাধন ।।
সেই সপ্তগ্রাম পুরে, সুবর্ণ-বণিক-ঘরে,
ব্রজের সেই সুবাহু-গোপাল।
উদ্ধারিতে ত্রিভুবন, নাম ধরি’ উদ্ধারণ,
প্রকটিল ভকত-ভূপাল।।’’
ব্রজের সুবাহু-গোপাল যে—এবে উদ্ধারণ নাম ধরে
ত্রিভুবন উদ্ধারিতে—এবে উদ্ধারণ নাম ধরে
উদ্ধারণ-দ্বারে ত্রিভুবন উদ্ধার—না হবে বা কেন রে
ত্রিভুবনের কিবা কথা—ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে
প্রতি নিতাই-কিঙ্করে—ব্রহ্মাণ্ড তারিতে পারে
মাতা ভদ্রাবতী সর্ব্বোত্তমা।
ব্রজের গোপাল যাঁর, পুত্ররূপে পরচার,
কে কহিবে তাঁর ভাগ্যসীমা।।’’
ঠাকুর,–উদ্ধারণের পিতামাতার—প্রাণ-ভরে জয় দাও
শ্রীকরদত্ত-ভদ্রাবতীর—প্রাণ-ভরে জয় দাও
ভাসে নিশিদিশি উদ্ধারণ।
কোথা কৃষ্ণ-রাম বলি,’’
‘‘কোথা কৃষ্ণ-রাম বলি, কাঁদে সদা ফুলি ফুলি,
অদর্শনে মন উচাটন।।’’
সুবাহু-স্বভাবে ডাকে সদাই—কোথা গেলে প্রাণের ভাই
আরে আমার রাম-কানাই—কোথা গেলে প্রাণের ভাই[মাতন]
কলিজীবে কৃতার্থ কারণ।’’
শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য,–শ্রী,–বলরাম নিত্যানন্দ
‘‘নবদ্বীপে অবতরি,’’
মধুর-নদীয়ারূপে প্রকট—ব্রজের নিভৃত-কুঞ্জের নিভৃত-কুঞ্জ
সঙ্গে সব নিজ-ব্রজজন।।
যত গোপ গোপীগণ, তাঁরা—এবে, মহান্তেরগণ,
প্রেম-বিতরণ-লীলাকালে।
যে দ্বাদশ গোপাল, সখ্য-প্রেমে মাতোয়াল,
জনমিলা শ্রীগৌড়মণ্ডলে।।’’
প্রেম-পুরুষোত্তম লীলায়—মধুর রস আস্বাদিবে বলে
সপ্তগ্রামে সতত নিবাস।
বণিক-কুল-পাবন, নিত্যানন্দ-প্রাণধন,’’
আমার ঠাকুর-উদ্ধারণ-বণিক-কুল-পাবন
শ্রীনিত্যানন্দ-প্রাণধন—বণিক-কুল-পাবন
ব্রজের,–কানাই-বলাই-ধনের—অদর্শনে হা-হুতাশ করে
উদ্ধারণ সুবাহু-স্বভাবে—অদর্শনে হা-হুতাশ করে
প্রেম-বন্যায় জগত ভাসায়।
পারিষদ-প্রিয়জনে, আকর্ষিলা প্রাণে প্রাণে,
নিজগণ যতেক যথায়।।
প্রেমসিন্ধু-আকর্ষণে, ভক্ত-নদনদীগণে,
প্রেমোচ্ছাসে ধাইয়া মিলিল।
মহানদ উদ্ধারণ, তাতে,–প্রেম-ঊর্ম্মি অগণন,
সেও,–গৌরলীলার্ণওব ঝাঁপ দিল।।
নিতাই-তরঙ্গ-সনে ,নাচে প্রেম-সঙ্কীর্ত্তনে,
উচ্ছাসেতে অবনী ভাসিল।
ভক্ত-হংস সে সাগরে, কেউ বা ডুবে কেউ সাঁতারে,
প্রেমানন্দ-পাথার ছুটিল।।
নবদ্বীপ পরিহরি’, কাঙ্গাল সাজি’ গৌরহরি,
নীলাচলে যবে বাস কৈলা।
নিতাই গদাই উদ্ধারণ, অভিরাম-আদিগণ,
সে লীলার নিত্য সাথী হৈলা।।
নিত্যানন্দে আজ্ঞা দিলা, গৌড়দেশে পাঠাইলা,
অবিচারে প্রেম বিলাইতে।
অভিরাম গদাধর, উদ্ধারণ পুরন্দর,
প্রিয়জন দিলা তাঁর সাথে।।’’
নিরজনে প্রেমসিন্ধু গৌরহরি—কেঁদে বল্লেন নিতাই-এর হাতে ধরি’
নিভৃত-গম্ভীরায় বসি’—কেঁদে বল্লেন নিতাই-এর হাতে ধরি’
নাম-প্রেম দাও বিশ্ব ভরি’—যাও নিতাই ত্বরা করি’
আমার,–কলিজীব বড়ই দুঃখী—যেন,–কাকেও বঞ্চিত করো না
অবিচারে নাম-প্রেম দিয়া—জগৎ মাতাও গিয়া
নাম-প্রেম দিয়ে বিশ্ব ভর—আমার,–বিশ্বম্ভর-নাম পূর্ণ কর
আমার, যতেক কার্য্য তোমা-দ্বারে—আমার এ নাম,–সার্থক হবে তোমা হতে
স্বভাব-করুণ নিতাই চাঁদের—আনন্দ আর ধরে না
তাতে,–পেলেন আবার গৌর-আজ্ঞা
অবিচারে নাম-প্রেম বিলাতে—তাতে,–পেলেন আবার গৌর-আজ্ঞা
গণ-সহ প্রভু নিত্যানন্দ।
গৌর-আজ্ঞা শিরে ধরি’, আরম্ভিলা জগভরি’,
অযাচিত দান প্রেমানন্দ।।’’
পূণ্যভূমি-পানীহাটীতে—প্রথম নাম-প্রেম-প্রচার
গৌর-আজ্ঞায় নিতাইচাঁদের—প্রথম নাম-প্রেম-প্রচার
সবে মত্ত ব্রজের গোপাল।’’
আমার প্রভু নিত্যানন্দ—আপনি যেমন সঙ্গী তেমন
পাত্রাপাত্র নাহি কালাকাল।।’’
আমার প্রভু-নিত্যানন্দের—পানীহাটীতে মধুর বিহার
সঙ্কীর্ত্তন-আনন্দে—তিন-মাস কৈলা স্থিতি
চিঁড়া-দধি-মহোৎসব-ছলে—দাস-রঘুনাথে কৈলা কৃপাদণ্ড
শ্রীগৌরাঙ্গ-নাম-প্রেমে—স্থাবর-জঙ্গমে মাতাইলা
জাম্বিরের গাছে নিতাই—ফুটাইলা কদম্বের ফুল
রাঘব-পণ্ডিতের ঘরে—ফুটাইলা কদম্বের ফুল
আমি থাকি সেই-খানে
শ্রীমুখে বলেছেন গৌরহরি—আমি থাকি সেই খানে
আমার,–নিতাই নাচে যেই-খানে—আমি থাকি সেই-খানে
জানাইলা গৌর-আগমনে
নিতাই-সুন্দর ইঙ্গিতেতে—জানাইলা গৌর-আগমনে
দ্রোণ-পুষ্পের গন্ধ-ছলে—জানাইলা গৌর-আগমনে
নিতাই,–জানাইলেন নিজগণে—প্রাণগৌর এসেছেন নীলাচল হতে
তোমাদের কীর্ত্তনে আকৃষ্ট হয়ে—প্রাণগৌর এসেছেন নীলাচল হতে
তাই গন্ধ পেয়েছ তোমরা—তাঁর গলে দ্রোণ-ফুলের মালা
অতিগূঢ়-নিত্যানন্দের—পানীহাটীতে নিগূঢ়-বিহার
আইলেন,–দাস-গদাধরের ঘরে—পানীহাটী হতে নিতাই-সুন্দর
এঁড়িয়াদহ-গ্রামে—করিলেন নিগূঢ়-বিহার
এঁড়িয়াদহে দাস-গদাধর-সনে—করিলেন নিগূঢ়-বিহার
দাস-গদাধরের গোপীভাব দেখি’—দান-লীলা কৈলেন নিতাই
আইলেন প্রভু খড়দহে
প্রেম প্রকাশয়ে নিরন্তর।
প্রেম-সুখে মত্ত করি’ আবাল-বৃদ্ধ-নরনারী,
বিহরয়ে নিতাই-সুন্দর।।’’
এই সুরধুনীর তীরে তীরে—বিহরে আমার নিতাই-সুন্দর
প্রেম-ভাবোদ্দাম-সঙ্গী লয়ে—বিহরে আমার নিতাই-সুন্দর
গৌর-প্রেমে মাতা নিত্যানন্দ-রায়—অবিচারে নাম-প্রেম বিলায়
এই গঙ্গা-তীর দিয়া—এইরূপে বিহার করতে করতে
নিতাই-সুন্দরের বিশিষ্ট-বিহার-স্থান—এই সেই পুণ্যভূমি সপ্তগ্রাম
প্রেম-সুখে সতত বিহরে।’’
নিত্যানন্দের বিলাসের ঘর—এই ত’ উদ্ধারণের ঘর
এই,–সপ্তগ্রামে উদ্ধারণ-ঘরে—প্রেম-সুখে নিতাই বিহরে
কত প্রেম-পরিপাটী করে।।’’
ঠাকুর-উদ্ধারণ প্রেম-ভরে—গৌর-প্রেমের মূরতির সেবা করে
অনুক্ষণ আজ্ঞার কিঙ্কর।
নিত্যানন্দ-স্বরূপের, পাইলা সেবা-অধিকার,
ভাগ্যবন্ত কে বা সম তার।।’’
গৌর-সেবা-বিগ্রহের সেবা করে—ঠাকুর,–উদ্ধারণ কত ভাগ্য ধরে
হৃ’দে ধরি’ সে রাঙ্গা-চরণ।
অকৈতবে উদ্ধারণ, নিত্যানন্দ-স্মরণ,
সে যে,–জন্মে জন্মে নিত্যানন্দগণ।।
নিত্যানন্দ প্রাণেশ্বর, নিত্য তাঁর কিঙ্কর,
উদ্ধারণ আপনারে মানে।’’
নিতাই আমার প্রাণেশ্বর—গরব করে বলে রে
‘নিতাই আমার প্রাণেশ্বর’—
আমি তাঁর নিত্য-কিঙ্কর—নিতাই আমার প্রাণেশ্বর
আমার কুলের দেবা নিতাই
শ্রীমুখে বলেছেন চৈতন্য-গোসাঞি—আমার কুলের দেবা নিতাই
মত্ত সদা নিতাই-গুণ গানে।।
যতেক বণিকগণ, উদ্ধারিলা উদ্ধারণ,
নিত্যানন্দ-ধন দিয়া দান।’’
বণিক-কুল-পাবন উদ্ধারণ—বণিকগণে কৈলা তারণ
ভজাইয়া নিতাই-চরণ—বণিকগণে কৈলা তারণ
ঠাকুর,–উদ্ধারণের শরণ লও—বণিক-কুলে জন্মেছ যারা
‘ঠাকুর,–উদ্ধারণের শরণ লও’—
নিতাই বলে ধনী হও—ঠাকুর,–উদ্ধারণের শরণ লও
জয় ঠাকুর উদ্ধারণ—প্রাণভরে বল সবাই
‘জয় ঠাকুর উদ্ধারণ’—
বণিক-কুল-পাবন উদ্ধারণ—বণিকগণে কৈলা তারণ
করে গৌর-কৃষ্ণ-গুণ গান।।
বণিক তারণ-তরে, নিত্যানন্দ অবতারে,
বণিকেরে প্রেমভক্তি দিলা।
সবে আত্মসাৎ করি, দয়াল নিতাই-হরি,
বণিক-কুল কৃতার্থ করিলা।।
এই,–সর্ব্ব-সপ্তগ্রাম-পুরে, বণিকের ঘরে ঘরে,
নিত্যানন্দ কীর্ত্তনে বিহরে।’’
এই সপ্তগ্রামে প্রতি-বণিক-ঘরে—প্রভু নিতাই বিহরে
সর্ব্বভাবে সমাশ্রয়ে করে।।’’
সপ্তগ্রাম বাসী বণিকগণ—ভাবাবেশে গান করে
নিতাইচাঁদের কৃপা পেয়ে—ভাবাবেশে গান করে
উদ্ধারণের চরণ হৃদে ধরে—ভাবাবেশে গান করে
আমার,-কুল-দেবতা নিতাই রে
বণিককুল বলে গরব করে—আমার,–কুল-দেবতা নিতাই রে
নিতাই বিনে নাহি জানি আন রে।’’
নিরন্তর গৌর-গুণ গান—এই ত’ নিতাই-সেবার উপাদান
মুঁই সে মূরখ অগেয়ান।’’
সাধন ভজন কারে বলে—কিছুই ত’ জানি
আমি মূর্খ অজ্ঞান—সাধন ভজন জানি না
জানি কেবল নিতাই-সোণা—সাধন ভজন জানি না
সাধন-ভজন আর কিছুই না জানি—জানতে হয় তো নিতাই জানি
কেন এত গরব তোমাদের—বল্লে কেউ বল্লতে পারে
সাধন-ভজন জান তাতে—বল্লে কেউ বল্লতে পারে
আবেশে বণিক-কুল বলে—গরবের কথা বলি ভাই রে
আবেশে বণিক-কুল বলে—গরবের কথা বলি ভাই রে
শ্রীগৌরাঙ্গ-শ্রীমুখের কথা—নিতাই মোদের কুলের দেবা
এ গরব কি যায় গো রাখা—নিতাই মোদের কুলের দেবা
বণিক-কুলের নিতাই বিনে—অন্য উপায় নাই জেনে
যদি হই বণিকের সুত।’’
যদি,–জন্মে থাকি বণিক-কুলে—অবশ্য নিতাই-করুণা হবে
বলবান্,–কুলের দেবা নিতাই যাদের—নিতাই ধরে আনবে কেশে
যদিও,–যাই কোথায় দুর্দ্দৈব বশে—নিতাই ধরে আনবে কেশে
তাঁর নিজ-পদ-পাশে—নিতাই ধরে আনবে কেশে
যদি হই বণিকের সুত—নিতাই-কৃপা পাব নিশ্চিত
গরব করে বল দেখি ভাই
বণিককুলে জন্মেছ যারা—গরব করে বল দেখি ভাই
আমাদের কুলের দেবা নিতাই—গরব করে বল দেখি ভাই
বণিক-কুলে জন্ম মোদের—নিশ্চয় গৌর-কৃপা হবে
এসেছি ঐ,–গরব-মাখা-কথা শুনতে—এ-কথা,–বল ভাই গরব করে
সাধ হয় আমাদের প্রাণে প্রাণে—ঐ,–গরব-মাখান-কথা শুনে
গরব কর বলে বেড়াতাম—যদি,–বণিক-কুলে জন্ম পেতাম্
আমাদের কুলের দেবা নিতাই—গরব করে বলে বেড়াতাম্
জনম পাব বণিক-কুলে—কতদিনে সেই দিন হবে
নিতাই কুলের দেবা বলে—বলে বেড়াব গরব করে
বলিতে ঠাকুর অবধূত।।’’
নাম শুনিলে দেখবার লাগি’—কেন প্রাণ কেঁদে উঠে
যদি,–প্রাণে প্রাণে সম্বন্ধ না থাকে—কেন প্রাণ কেঁদে উঠে
যদি,–চির-সম্বন্ধ না থাকে—কেন প্রাণ কেঁদে উঠে
যদি,–চির-সম্বন্ধ না থাকে’—
ঠাকুর-অবধুত-সনে—যদি,–চির-সম্বন্ধ না থাকে
ব্যাকুল হয়ে বলে রে
এ ত’ অতি-সত্য-কথা
নিতাই বণিক-কুলের দেবা
সপ্তগ্রামবাসী বণিক-কুল-বলে—নিতাই বণিক-কুলের দেবা
করুণা করহ এইবার।
দিয়েছি চরণে ভার,’’
তুমি কুলের দেবা জেনে—ভার দিয়েছি ঐ চরণে
শ্রীচৈতন্য-মুখের কথা শুনে—ভার দিয়েছি ঐ চরণে
ভজি না আর কিছু তোমা বিনে—ভার দিয়েছি ঐ চরণে[মাতন]
এ দাস বল্লভ কহে সার।।’’
তুমি একমাত্র গতি মোদের—ভার দিয়ে খালাস হলাম
যাতে সুখ হয় তাই কর—ভার দিয়ে খালাস হলাম্
সর্ব্বভাবে সমাশ্রয় করে।।
বণিকের কৃষ্ণভজন, দেখি কত জগজন,
সবে চমৎকার পায় মনে।
নিত্যানন্দ-কৃপা-গুণে, ধনী বণিক প্রেমধনে,
অধম-মূর্খ করিলা তারণে।।
ক্ষুধা তৃষ্ণা নিদ্রা ভয়, জীব-ধর্ম্ম পাইল লয়,
রাত্রি দিন ভেদ জ্ঞান গেল।
সদা হরি-সঙ্কীর্ত্তনে, সর্ব্বদিকে অনুক্ষণে,
স্থাবর জঙ্গম মত্ত হৈল।।’’
সপ্তগ্রামে নিত্যানন্দ-রায়—স্থাবর জঙ্গম প্রেমে মাতায়
কে বিহ্বল না হয় তা’ হেরি’।
অন্যের আছুক দায়, যবন লোটায় পায়,
মুখে বলি’ রাম কৃষ্ণ হরি।।’’
ম্লেচ্ছ,–যবনাদি সপ্তগ্রামপুরে—নিতাই গুণে মা’ত্ল সকলে
নিতাইচাঁদের করুণায়—যবনেও নাচে গায়
গৌরহরি বোল বলে—যবনেও নাচে গায়
প্রেমের মুরতি নিতাই-কৃপাবেশ—সপ্তগ্রাম প্রেমে ভাসে
সুব্রাহ্মণ আপনা ধিক্কারে।
হেন নিতাই না ভজিয়া, পাষাণ সমান হিয়া,
তাপানলে সদা প্রাণ পুড়ে।।’’
নিতাই না ভজন করে—তাপানলে মলাম পুড়ে
শতবর্ষে নারি বর্ণিবারে।
পূরবে নদীয়াপুরে, যে হইল ঘরে ঘরে,
তাই পুনঃ সপ্তগ্রামপুরে।।’’
সপ্তগ্রামে তেমনি নিতাই-এর বিহার
এই,–সপ্তগ্রামে নিতাই-এর বিহার তেমন
নদীয়ার প্রাণ-গৌরের যেমন—এই,–সপ্তগ্রামে নিতাইএর বিহার তেমন
পদস্পর্শে পরশ হইল।’’
হৃদে ধরি’ শ্রীগুরু-চরণ দুখানা—প্রাণে প্রাণে কর ধারণা
যদি,–ভাগ্যবলে এলে সপ্তগ্রামে—প্রাণে প্রাণে কর ধারণা
সপ্তগ্রামের প্রতি রজঃকণা—পেয়েছে নিতাই-করুণা
নিতাই-এর,–অভয়-চরণ হৃদে ধরে—পেয়েছে নিতাই-করুণা [মাতন]
সপ্তগ্রামের প্রতিধূলি—প্রেম পেয়ে হইল পরশমণি
হৃদে ধরি’ নিতাই-গুণমণি—প্রেম পেয়ে হইল পরশমণি [মাতন]
হৃদয়ে ধরেছ তুমি
প্রাণ-গৌরাঙ্গ-বিলাসের ভূমি—হৃদয়ে ধরেছ তুমি
একদিন নিতাই-অজ্ঞাতে।
অড়হর-ডালের কাঠি, রোপিলেন খুঁদি মাটি,
আপনার গৃহ-প্রাঙ্গণেতে।।
অতি অপরূপ-কথা, তখনি মাধবী-লতা,
উপজিয়া অঙ্গণ ছাইল।
পত্রপুষ্প শোভাময়, ভ্রমর গুঞ্জরে তায়,
জগজন-মন মাতাইল।।’’
অড়হর,—ডালের কাঠি মাধবী হল—অপরূপ সৃজন রে
এই সেই মাধবীলতা-কুঞ্জ-অদ্যাপিও বিরাজিছে
সেই লীলার সাক্ষীরূপেতে—অদ্যাপিও বিরাজিছে
নিতাইএর ভক্ত-বাৎসল্যের নিদর্শন—মাধবীকুঞ্জ কর দরশন
সামান্য মানব মাত্র নয়।
নিত্যানন্দ-অন্ন-পাকে, তারই অধিকার থাকে,
হেন শক্তি যে জনের হয়।।’’
নিত্যানন্দের,–রন্ধন-সেবা-অধিকার পায়—উদ্ধারণ সামান্য মানব নয়
নিত্যানন্দ-সনে উদ্ধারণ।
নিতাই-চরণ হইতে, নূপুর খসি’ পড়ে তাতে,
নূপুর-কুণ্ড হইল প্রচারণ।।’’
শ্রীনূপুর-কুণ্ড বলে—এই যে এখানে সাক্ষী দিছে
সূর্য্যদাস-পণ্ডিতের ঘরে।
চৈতন্যের আজ্ঞায়, নিত্যানন্দ-লাগি’ চায়,
বসুধা-জাহ্নবা-দুহিতারে।।
শুনি’ তথা ব্রাহ্মণ, জিজ্ঞাসেন একজন,
শ্রীপাদের কিবা পরিচয়।
সঙ্গে নাহি ব্রাহ্মণ, নিতি নিতি রন্ধন,
স্বপ্নাকে কি সর্ব্বদাই হয়।।
শুনি’ নিত্যানন্দ-রায়, কৌতুকে কহয়ে তায়,
কখন বা আমি পাক করি।
না পারিলে উদ্ধারণ, করি পাক সমাপন,
অন্ন-ব্যঞ্জন রাখয়ে উতারি।।
শুনি’ সেই বিপ্র কয়, এই বৈষ্ণব কেবা হয়,
কি পরিচয় কোথায় বসতি।
প্রভু কহে উদ্ধারণ, সুবর্ণ-বণিক হন,
দত্ত খ্যাতি সপ্তগ্রামে স্থিতি।।
শুনি’ হাসি’ বিপ্র কয়, এই অবধূত-রায়,
কিবা তার জাতির পরিপাটী।
উদ্ধারণ সোণার বেণে, রন্ধনেতে প্রতিদিনে,
যার ডালে সদা দেয় কাঠি।।
পরিহাস করি’ কয়, গৌরীদাস মহাশয়,
সুকুলীন-জামাতা পাইলা।
সমাজ-বিরোধী হেরি,’ সূর্য্যদাস শঙ্কা করি’,
নিত্যানন্দে কন্যা নাহি দিলা।।
বিরহে বসুধা প্রাণ, করিলেন বিসর্জ্জন,’’
নিত্য সম্বন্ধ আছে
প্রভু-নিত্যানন্দ সনে—নিত্য সম্বন্ধ আছে
দাহ লাগি’ চিতায় চড়াইলা।
হেনকালে আচম্বিতে, উদ্ধারণ লয়ে সাথে,
প্রভু-নিতাই তথায় আইলা।।
হরিনাম-মন্ত্র দিলা, বসুধারে বাঁচাইলা,
দেখি’,–সূর্যদাস আনন্দে মগন।
বেদবিধি-বিধানেতে, মহা-সমারোহ-মতে,
বসুধা-জাহ্নবা কৈল দান।।’’
আমার নিত্যানন্দ-রায়
বসুধা-জাহ্নবা-প্রাণ—আমার নিত্যানন্দ-রায়,
কার সাধ্য কহে তাঁর লীলা।
কন্যারূপে গঙ্গা যাঁরে, পিতা সম্বোধন করে,
শঙ্খ পরি’ হস্ত দেখাইলা।।’’
ভাগিরথী উদ্ধারণে—পিতা-সম্বোধন কর
তথায় গঙ্গা উর্দ্ধে বাহু তুলি।
জগজনে জানাইলা, উদ্ধারণে খ্যাত কৈলা,
নিতাই-সখা-সূত্রে পিতা বলি।।’’
কি বলব গুণ কত বা জানি—উদ্ধারণ গুণের খনি
বিষয়-বিরক্ত উদাসীন।
অকৈতব অকিঞ্চন, অখিল আপন-জন,
ভক্তি-ভরে তৃণাদপি দীন।।
সৎশাস্ত্রে সদালাপে, সঙ্কীর্ত্তনে সদা যাপে,
আনন্দেতে দিবস-যামিনী।
রাই-কানু কণ্ঠহারা, গৌরাঙ্গ নয়ন-তারা,
যার,– প্রাণের প্রাণ নিতাই গুণমণি।।
ভক্তগণ নিজ-জন, নবদ্বীপ নিকেতন,
নীলাচল বৃন্দাবন বাস।
গোবর্দ্ধনে গোচারণে, যমুনা পুলিস বন,
যথা নিতি ভোজন-বিলাস।।
অনাস্বাদ্য অপূরণ, মনোরথ আস্বাদন,
সর্ব্ব-বাঞ্ছাসিদ্ধি সুখোল্লাস।
রাধাকৃষ্ণ একঅঙ্গ, অপরূপ শ্রীগৌরাঙ্গ,
সঙ্গে সদা সঙ্কীর্ত্তন-রাস।।
প্রভু-নিত্যানন্দ-সনে, প্রেম-ধর্ম্ম নিশিদিনে,
গৌর-গুণ-কীর্ত্তন নর্ত্তন।
গৌর-প্রেমে গরগর, ঝরে আঁখি ঝরঝর,
প্রেমানন্দ-সাগরে মজ্জন।।
এই,–ষড়ভুজ শ্রীগৌরাঙ্গ, নিজ-গৃহে প্রেমরঙ্গ,
স্বহস্তে করয়ে সেবন।
নিত্য নিত্যানন্দ-ধনে, সেবা করে স-যতনে,
নিতাই-প্রেমে পরিপূর্ণ মন।।
প্রভু-নিত্যানন্দ-সনে, সর্ব্ব তীর্থ পর্য্যটনে,
কত অতীর্থেরে তীর্থ কৈলা।’’
যে ভূমি,–নিতাই-পদেরজঃ পেল—সেই ভূমি তীর্থ হৈল
নিশিদিশি যাঁর প্রেমখেলা।।
ভ্রমি’ সর্ব্ব-বৃন্দাবন, বিরহে ব্যাকুল মন,
বংশীবটে হইলা অদর্শন।
পৌষ-কৃষ্ণা-ত্রয়োদশীতে, লুকাইলা আচম্বিতে,
শূন্য হইল অখিল-ভুবন।।
ঠাকুর-শ্রীউদ্ধারণ, উদ্ধারিলা জগজন,
দিয়া নিত্যানন্দ-প্রেমধন।
দীন-দ্বিজ-দূরাচারে, কৃপা কর অবিচারে,
নিতাই-পদে বাঁধি দাও প্রাণ।।’’
নিতাই-প্রিয় উদ্ধারণ—কোথাও বা লুকালে
দেখিতে ত’ পাই নাই
তখন জনম হয় নাই—দেখিতে ত’ পাই নাই
প্রভু-নিতাই সঙ্গে করে—বিহরিলে এই সপ্তগ্রামপুরে
বণিকের ঘরে ঘরে—বিহরিলে এই সপ্তগ্রামপুরে
গৌর-নাম-প্রেম দান করে—বিহরিলে এই সপ্তগ্রামপুরে
আমাদের দুর্দ্দৈব-দোষে—হয় নাই মোদের নয়ন-গোচর
নিতাই-সনে সে মধুর-বিহার—হয় নাই মোদের নয়ন-গোচর
সেই লীলা-অদর্শন-শেল-নিশিদিশি জ্বলছে হিয়ায়
আজ,-এসেছি বড় আশা করি’
দগ্ধ-হৃদয় জুড়াবার লাগি’—আজ,–এসেছি বড় আশা করি’
নিতাই-গৌর-লীলা ত্রিকাল-সত্য
তাঁর,–গণের খেলা তেমনি নিত্য—নিতাই-গৌর-লীলা ত্রিকাল-সত্য
আজ,–এসেছি আশা লয়ে প্রাণে
ঠাকুর-উদ্ধরণ তোমার ঘরে—আজ,–এসেছি আশা লয়ে প্রাণে
শ্রীগুরু,–কৃপা-প্রেরণা আনলে টেনে—আজ,–এসেছি আশা লয়ে প্রাণে
ত্রিকাল-সত্য লীলা জেনে,–আজ,–এসেছি আশা লয়ে প্রাণে
এই ত’ তোমার বসতি—ভূমি—ঠাকুর-উদ্ধারণ কোথা তুমি
তোমা-সনে নিতাইচাঁদের প্রীতির—নিদর্শন এই যে পড়ে আছে
মাধবী-লতার কুঞ্জ-নিদর্শন এই যে পড়ে আছে
নিতাইচাঁদের বিহার তোমার সনে—নূপুর-কুণ্ড সাক্ষী দিছে
রঙ্গিয়া,–নিতাই-সনে শ্রীভূমিতে—অদ্যাপিও করছ খেলা
এই,–মাধবী-কুঞ্জে নিতাই লয়ে—কোথা বা লুকায়ে আছ
ওহে ঠাকুর উদ্ধারণ—কোথা,–গূঢ়রূপে বিহরিছ
অতিগূঢ়-নিতাই-সনে—কোথা,–গূঢ়রূপে বিহরিছ
নিতাইচাঁদের,–গূঢ়-লীলা তোমার ঘরে—বড় সাধ দেখব বলে
সেবক থাকে না সেব্য বিনে—জগতে ত’ সবাই জানে
প্রত্যাখ্যান কৈলেন
প্রাণের প্রাণ শ্রীগৌরাঙ্গ—প্রত্যাখ্যান কৈলেন
জগদানন্দ-স্বরূপের সেবা—প্রত্যাখ্যান কৈলেন
নীলাচলে গৌরহরি—কারো সেবা নিলেন না
দুটী,–হাতে ধরে কেঁদে কেঁদে—বলিলেন নিতাইচাঁদে
আমার,–বিশ্বম্ভর নাম পূর্ণ করতে—যাও নিতাই ত্বরা করে
‘আমার,–বিশ্বম্ভর নাম পূর্ণ করতে’—
নাম-প্রেম বিতরিয়ে—আমার,–বিশ্বম্ভর নাম পূর্ণ করতে
মনো দুঃখে নিতাই কাঁদে
আমি,–কেমন করে থাকব
এ-সব-সেবা আমারই ত’—আমি,–কেমন করে থাকব
আমার ত’ স্বভাব বটে
নিরন্তর বিশেষ-সেবা—আমার ত’ স্বভাব বটে
গৌর,–সেবা যদি না নিল—আমি,–কেমন করে থাকব
যারে,–কত সাজে সাজিয়েছি—সে সেজেছে আজ সন্ন্যাসী
আমি তা কেমন করে দেখি—সে সেজেছে আজ সন্ন্যাসী
নিরন্তর বিশেষ-সেবা ছেড়ে—থাকি বা কেমন করে
গৌর-আজ্ঞা শিরে ধরে—এলেন নিতাই গৌড়-মণ্ডলে
সেব্য ছেড়ে আছে দূরে—সদাই দুঃখী অন্তরে
নিতাই আমার ভাবাবেশে—গৌরাঙ্গ-নাম উচ্চরয়ে
নাম-প্রেম প্রচার-কাজে—গৌরাঙ্গ-নাম উচ্চারয়ে
গৌর সেবা নিল না বলে—অমনি প্রাণে জেগে উঠে
বিরহে ব্যাকুল সদাই—মনে মনে ভাবলেন নিতাই
কেমনে বা প্রাণ জুড়াই—মনে মনে ভাবলেন নিতাই
মনে মনে স্থির করলেন
এ দেহ ত’ আমার নয়
এ-যে গৌরাঙ্গে অর্পিত দেহ—এ দেহ ত’ আমার নয়
এ-যে আমার গৌর-দেহ—মনে-সাধে সাজাব
গৌরের মনোরম-সাজে—মন-সাধে সাজাব
মনের তাপ মিটাব—মন-সাধে সাজাব
প্রাণ-গৌরাঙ্গ-সেবায়—মন-সাধ পূর্ণ কৈলেন
উদ্ধারণ তোমার ঘরে—মন-সাধ পূর্ণ কৈলেন
যত গৌর-ভূষণ অঙ্গে পরে—সাজলেন গৌরের রসের সাজ
গৌর-সেবা-বিগ্রহ নিতাই—সাজলেন গৌরের রসের সাজ
গৌরের নানা-বেশ-ভূষা পরে—সাজলেন গৌরের রসের সাজ
নিতাই বলেন তোমায় ডেকে—আপনি সেজে গৌরের সাজে
আমার,–বিলাসী গোরা সেজেছে কেমন—দেখ দেখ উদ্ধারণ
ত্রিকাল-সত্য নিতাই-বিহার—একবর দেখাও হে
সপ্তগ্রামে তোমার ঘরে—একবার দেখাও হে
সেই-স্বরূপে নিতাই-চাঁদে—একবার দেখাও হে
নিজ-বাস-ভবনে—যদি,–কৃপা করে এনেছ টেনে
নিমন্ত্রণ করে এনে—বঞ্চিত করো না
যথাযুক্ত সেবা না করলে—বড় তাপ লাগবে তোমায়
অতিথি বিমুখ হলে—বড় তাপ পাবে প্রাণে
আমরা,–বঞ্চিত হয়ে ফিরে গেলে—বড় তাপ পাবে প্রাণে
আমরা,–না দেখি দুঃখ নাই—সেই দুঃখ লাগছে প্রাণে
তুমি বড় দুঃখী হবে—সেই দুঃখ লাগছে প্রাণে
সেই লীলা একবার দেখাও
তোমার দুঃখ দেখতে নারব—সেই লীলা একবার দেখাও
একবার দেখাও সেই-লীলা—গৌরময় নিতাইএর খেলা
কথা যে কইছ না
নামে যে কলঙ্ক হবে—কথা যে কইছ না
নিতাই-দাসের এই ত’ স্বভাব
একা ভোগ করতে নারে—নিতাই-দাসের এই ত’ স্বভাব
আপন-ভোগ ত্যাগ করে—ভোগ করায় দীন-জনে
নিজেই নিয়ে মেতে আছ—কথা যে কইছ না
তোমার নিতাই তোমার থাকবে—ভয় নাই আমরা নিয়ে যাব না
ভাল বাসতে জানি না—কি দিয়ে তারে বেঁধে রাখবো
শুধু একবার দেখব—কি দিয়ে তারে বেঁধে রাখবো
গৌর-প্রেমে তনু গড়া—নিতাই আমার প্রেম-পিয়ারা
তোমার,–অতিগূঢ় নিতাই-ধন—দেখাও ঠাকুর উদ্ধারণ
সেই গূঢ়-লীলা হেরে
হৃদে ধরি সদাই ঝুরি—সেই গূঢ়-লীলা হেরে
প্রাণে প্রাণে ভোগ করি—গৌর-জড়িত নিতাই মানি
অভিন্ন-চৈতন্য-তনু—আমার ঠাকুর অবধূত
ঠাকুর,–বৃন্দাবনের চরণ হৃদে ধরি’—গরব করে বলি ফুকারি’
শ্রীগৌর-সেবা বিগ্রহ—আমার,–মহাপ্রভু নিত্যানন্দ
অভিন্ন-শ্রীচৈতন্য—আমার,–মহাপ্রভু নিত্যানন্দ
প্রাণে প্রাণে জাগায়ে দাও
নিতাইচাঁদের এই গূঢ়-রহস্য—প্রাণে প্রাণে জাগায়ে দাও
নিতাই-আবৃত-গৌর বিনে—যেন,–আন নাহি জানি মনে
জগদগুরু-নিতাই হৃদে ধরি’—যেন,–প্রাণভরে গান করি
বণিক-কুল-পাবন—আমার নিতাই মহা-উদ্ধারণ
ঠাকুর,–উদ্ধারণের প্রাণধন—আমার নিতাই মহা-উদ্ধারণ
নিতাই-গৌর-প্রেমের পাগল—হা,–পরম-করুণ শ্রীগুরুদেব
এই,–সপ্তগ্রামে উদ্ধারণ-ঘরে—সঙ্গে করে এনেছিলে
নিতাই-বিহারভোগ করাতে—সঙ্গে করে এনেছিলে
ত্রিকাল-সত্য-লীলায়—নিশ্চয় এসেছ তুমি
গৌর-সাজা নিতাইচাঁদ—একবার দেখাও মোদের
পাগলা-প্রভু তোমার আনুগত্যে—হৃদি-পটে এঁকে নেব
প্রাণভরে বলবো—হৃদি-পটে এঁকে নেব
প্রাণভরে বলবে—হৃদি-পটে এঁকে নেব
নিতাইএর,–বিহারভূমিতে এসেছ সবাই—প্রাণভরে বল নিতাই নিতাই
ঠাকুর,– উদ্ধারণের প্রাণ নিতাই নিতাই বল ভাই।।’’
‘‘নিতাই নিতাই নিতাই নিতাই নিতাই বল ভাই।
বণিক-কুলের দেবা নিতাই নিতাই বল ভাই।।’’
নিত্যানন্দ-আনন্দে—গৌরহরি-হরিবোল
শ্রীগুরু-প্রেমানন্দে নিতাই-গৌর-হরিবোল।।