ভজ, নিতাই গৌর রাধে শ্যাম।
জপ, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।।
আমাদের,–শ্রীরাধিকা-নয়ন-রঞ্জন—মুখ,–নিরখি মন বিচারো
আমাদের,–কিশোরী-নয়ন-রঞ্জন—মুখ,–নিরখি মন বিচারো
আমাদের,–শ্রীরাধিকা-নয়ন-অঞ্জন—মুখ,–নিরখি মন বিচারো
‘শ্রীরাধিকা-নয়ন-অঞ্জন-মুখ’—
যে মুখ দেখতে রাধা অনিমিখ—শ্রীরাধিকা-নয়ন-অঞ্জন-মুখ
যে মুখ,–অনিমিখ দেখতে সাধ করে গো
আমাদের,–ভানুদুলারী প্রাণ-কিশোরী—যে মুখ,–অনিমিখ দেখতে
আঁখির,–পলকে কোটী-যুগ মানে
যে মুখের অদর্শনে—আঁখির,–পলকে কোটী-যুগ মানে
তার,–মনে হয় রাখি করি’ অঞ্জনে—আঁখির,–পলকে কোটী-যুগ মানে
যখনি সাধ হয় তখনি দেখি—তার,–মনে হয় অঞ্জন করে রাখি
অনিমিখে ও চাঁদ-বদন দেখি—তার,–মনে হয় অঞ্জন করে রাখি
বিধাতারে নিন্দা করে
সবে দিল দুটা আঁখি
তাতে আবার নিমিখ দিল—সবে দিল দুটা আঁখি
সৃজন অরসিক-বিধি জানে না সৃজন
তারে কি দেয় দুটী নয়ন
যে দেখিবে গোবিন্দ-বদন-তারে কি দেয় দুটী নয়ন
সে বিধি করেছে সৃজন—বুঝি সে দেখে নাই,–নয়ন-রঞ্জন গোবিন্দ-বদন
নয়ন-রঞ্জন গোবিন্দ-বদন—দেখলে করত না এমন সৃজন
শ্রীরাধিকা-নয়ন-রঞ্জন—মুখ,–নিরখি মন বিচারো রে
শ্রীরাধিকা-নয়ন-অঞ্জন—মুখ,–নিরখি মন বিচারো রে
আমাদের শ্রীগোবিন্দের,–অলকা-আবৃত বদন—নিরখি মন বিচারো রে
শ্রীরাধার প্রাণ-গোবিন্দের,–হাসিয়া বাঁশিয়া বদন—নিরখি মন বিচারো রে
শ্রীরাধার প্রাণ-গোবিন্দের,–মুরলী-রঞ্জিতি বদন—নিরখি মন বিচারো রে
ও-যে অখিল-রসের সদন—আ’মরি ও-তো নয় বদন
ও-তো বদন নয় গো,–বংশীগানামৃত-ধাম—নিরখি মন বিচারো
ও-তো বদন নয় গো,–লাবণ্যামৃত-জন্মস্থান-নিরখি মন বিচারো
চন্দ্র-কোটী ভানু-কোটী,’’
শ্রীগোবিন্দ-শ্রীমুখ আগে—কোটী-চন্দ্র কিসে বা গণি
আমাদের,–প্রাণ-গোবিন্দ-শ্রীমুখ আগে—ছার,–গগন-চাঁদে কিসে বা গণি
গগন-চাঁদে প্রতিপদ আছে
গোবিন্দের বদন-চাঁদ,–অকলঙ্ক নিশিদিশি ষোলকলা—গগন-চাঁদে প্রতিপদ আছে
গোবিন্দের বদন-চাঁদের—নিশিদিশি সমান উদয়
ছার,–গগন-চাঁদে কিসে বা গণি
অভিমানে দশখণ্ড হল
গোবিন্দের,–বদন হেরে গগন-চাঁদ-অভিমানে দশখণ্ড হল আসি’,–পদ-নখে শরণ নিল—অভিমানে দশখণ্ড হল
যার,–নখ-কোণে চাঁদের বাজার—গগন-চাঁদে উপমা কি তার
যার,–পদ-নখে চাঁদের বাজার—গগন-চাঁদে উপমা কি তার
‘‘চন্দ্র-কোটী, ভানু-কোটী’’
গোবিন্দের,–শ্রীমুব-লাবণ্যের আগে—প্রভাত,–অরুণের লাবণ্য কিসে বা গণি
তারে ত’ তাপদায়ী মানি—প্রভাত,–অরুণের লাবণ্য কিসে বা গণি
মুখ-আগে,–‘‘কোটী-মদন ওয়ারো।।’’ রে !!
শ্রীরাধার প্রাণ-গোবিন্দের—কে-ও,–মুখানি মাজিয়াছে গো
না জানি কোন রসিক-বিধি—কে-ও,–মুখানি মাজিয়াছে গো
সে,–কারিগরের বালাই যাই গো—কে-ও,–মুখানি মাজিয়াছে গো
কোটী কোটী মদনের লাবণ্য বাটি—কে-ও,–মুখানি মাজিয়াছে গো
তাতে দিয়ে,–মাধুর্য্য-রস করি’ পরিপাটি—কে-ও,–মুখানি মাজিয়াছে গো
মুখ-আগে,–‘‘কোটী-মদন ওয়ারো।। রে !
সুন্দর কপোল লোল,’’
প্রাণ-গোবিন্দের লোল-কপোল—সহজেই হাসি-মাখা
সুন্দর-লোল-কপোল—সহজেই হাসি মাখা
তাহাতে অলকা-রেখা—সহজেই হাসি-মাখা
‘তাহাতে অলকা-রেখা’—
যেন,–মদন-বিজয়-বার্ত্তা রয়েছে লেখা—তাহাতে অলকা-রেখা
কূল-মজান বিষম-ডাকা—সহজেই হাসি-মাখা
‘কূল-মজান বিষম-ডাকা’—
বরজ-যুবতীর-কূল-মজান বিষম-ডাকা
গোবিন্দের,–লোল-কপোল হাসি-মাখা—কূল-মজান বিষম-ডাকা
মৃদু-মন্দ-হেসে যার পানে চায়—তার,–ভিতর-বাহির জুড়ায়ে যায় গো
‘মৃদু-মন্দ-হেসে যার পানে চায়’—
পঙ্কজ-নয়নে বঙ্কিম-দিঠে—মৃদু-মন্দ-হেসে যার পানে চায়
পঙ্কজ-নয়ন-কোণে যার পানে চায়—তার,–ভিতর-বাহির জুড়ায়ে যায় গো
মৃদু-মন্দ-হাসি’ ঈষৎ-অবলোকনে—তার,–ভিতর-বাহির জুড়ায়ে যায় গো
প্রাণে প্রাণে সরবস দিতে চায়—তার,–ভিতর-বাহির জুড়ায়ে যায় গো
অধর-বিম্ব মধুর-হাস,’’
আমার,–গোবিন্দের অধর-বিম্ব-মাধুরী—লীলাবতী-শুক মুগ্ধকারী
গোবিন্দের অধর-বিম্ব-মাধুরী—লীলাবতী-সারিকা মুগ্ধকারী
বরজ-ললনা যারা—লীলাবতী বটে গো তারা
লীলাবতী-সারিকার—বিপরীত-রতি জাগায়ে দেয় গো
লীলাবতী-গোপনারী—ধরে বিপরীত-রতি
গোবিন্দের,–অধর-মাধুরী ভোগের লাগি’—ধরে বিপরীত-রতি
লীলাবতী-গোপী-সারিকায়—করে দেয় শুকায়িত-মতি
এমনি গোবিন্দের বিম্বাধর-মাধুরী—করে দেয় শুকায়িত-মতি
লীলাবতী-সারিকা—হয়ে যায় শুকায়িত-মতি
আপন-স্বভাব ছাড়ি—হয়ে যায় শুকায়িত-মতি
হেরি গোবিন্দের বিম্বাধর-মাধুরী—হয়ে যায় শুকায়িত-মতি
অধর-রস,–আস্বাদনে হয়ে লুব্ধ-মতি—হয়ে যায় শুকায়িত-মতি
গোবিন্দের বিম্বাধর-মাধুরী—লীলাবতী-শুক মুগ্ধকারী
আস্বাদিতে,–গোবিন্দের বিম্বাধর-মাধুরী—শুকায়িত-মতি হয়ে যায় সারি
লীলাবতী-সারিকে শুকায়িত দেখি’
গোবিন্দ-মুখে ধরে না হাসি
লীলাবতী-সারির মুগ্ধতা দেখি’—গোবিন্দে-মুখে ধরে না হাসি
বিপরীত-রতি দেখি’—গোবিন্দ-মুখে ধরে না হাসি
দেখি’ বিপরীত-অভিলাষী’—
লীলাবতী-সারিকায়—দেখি’ বিপরীত-অভিলাষী
গোবিন্দ মুখে,–খলখলান মধুর-হাসি
তাতে—দেখি’ বিপরীত-অভিলাষী
লীলাবতী-সারিকায়—তাতে,–দেখি’ বিপরীত-অভিলাষী
গোবিন্দের একে বিম্ব অধর—তাতে,–সহজেই হাসি-মাখা
প্রাণ-গোবিন্দের মুখেতে-মৃদু-মন্দ মধুর-হাসি
তাতেই,–কুন্দ-দন্ত বিকশিত—খলখলান মধুর-হাসি
তাতেই,–দন্ত-পাঁতির প্রকাশ হল—খলখল-হাসি বিকাশ পেল
দন্তপাঁতি দেখে মনে হল—যেন দন্ত-কুন্দ ফুটল
আমাদের গোবিন্দ-মুখের—হাসি নয় যেন চাঁদ ফাটল
লীলাবতী শুকায়িত দেখে—হাসি নয় যেন চাঁদ ফাটল
তার-মাঝে,–দন্ত-পাঁতি কুন্দ ফুটল—হাসি নয় যেন চাঁদ ফাটল
রাশি রাশি অমিয়া ঝরিল—হাসি নয় যেন চাঁদ ফাটল
ঝরিল অমিয়া রাশি রাশি—হাসি নয় যেন ফাটল শশী
শ্রীগোবিন্দ-শ্রীমুখের হাসি—যেন,–চাঁদ ফেটে ঝরে অমিয়া-রাশি
শ্রীগোবিন্দ-মুখের হসন—যেন,–অমিয়ার প্রস্রবণ
গোবিন্দ-মুখের খলখলান হসন—যেন,–অমিয়ার প্রস্রবণ
অমৃত-ধারা করে বরিষণ—শ্রীগোবিন্দ-শ্রীমুখের হসন
অমৃত-ধারা করি’ বরিষণ—করে হৃদি রসায়ন
শ্রীমুখ-হাস্য-সুধা-ধারে—ব্রজ-ললনার চিত চুরি করে
গোবিন্দের অপরূপ হাসির মাধুরী—ব্রজ-ললনা-চিত লুব্ধকারী
গোবিন্দ-মুখে মধুর হাসি—হাসি নয় ও-যে প্রেমের ফাঁসি
গোবিন্দ-মুখে মৃদু মন্দ-হাসি—হাসি নয় ও-যে প্রেমের ফাঁসি
মন-প্রাণ,–উদাসী করে করে দাসী—হাসি নয় ও-যে প্রেমের ফাঁসি
শ্রী,—গোবিন্দ-মুখে মধুর-হাসি—আঁখি পাখী ধরা ফাঁসি
শ্রীগোবিন্দ মুখের হাসি—আঁখি-পাখী ধরা ফাঁসি
গৌরাঙ্গিণী-ব্রজ-ললনার—আঁখি পাখী ধরা ফাঁসি
দিয়ে হাস্য-সুধা-চার—আঁখি-পাখী ধরে ব্রজ-ললনার
অনুরাগিণীর আঁখি-পাখী—আসি উড়ি উড়ি পড়ে
লুব্ধ হয়ে হাস্য-সুধা-চারে—আসি উড়ি উড়ি পড়ে
লুব্ধ হয়ে হাস্য-সুধা-চারে—আঁখি-পাখী ধরা পড়ে
ব্রজ-ললনার আঁখি-পাখী—আর তো নড়িতে নারে
অঙ্গ-সুধা,–আঠায় পাখী জড়ায়ে যায় রে—আর তো নড়িতে নারে
আঁখি-পাখী ধরা পড়ে—আর তো নড়িতে নারে
গোবিন্দের অঙ্গচ্ছটা-আঠায়—আঁখি-পাখীর পাখা জড়ায়ে যায় গো
মণি-কুণ্ডল মকরাকৃতি,’’
আমাদের রাধার প্রাণ,–গোবিন্দের কাণের মকর-কুণ্ডল—গণ্ডস্থলে ভাল দোলে
শ্রীমুখের লাবণ্য-হিল্লোলে—গণ্ডস্থলে ভাল দোলে
আমি,–মনোমীন গিলিব বলে—কতনা গরব করে দোলে
রাধার,–প্রাণ-গোবিন্দের মকর-কুণ্ডল—মৃদু-মন্দ দোলে
মকরাকৃতি কুণ্ডল—মুখ ব্যাদান করে দোলে
রাধার প্রাণ,– গোবিন্দের কাণের মকর-কুণ্ডল—মুখ ব্যাদান করে দোলে
মনোমীন গিলিবে বলে—মুখ ব্যাদান করে দোলে
‘মনোমীন গিলিবে বলে’—
বরজ-ললনার—মনোমীন গিলিবে বলে
আস্ত আস্ত মানুষ গেলে
গোবিন্দের কাণের মকর-কুণ্ডল—আস্ত আস্ত মানুষ গেলে
কাঁচা পাকা বাছে না—আস্ত আস্ত মানুষ গেলে
শ্রীগোবিন্দ-শ্রীমুখে—অলকা নয় যেন ভৃঙ্গাবলী
শ্রীগোবিন্দের কপোলে আর কপালে—অলকা নয় যেন ভৃঙ্গাবলী
দেখে এই মন হয়—যেন,–অলকারূপে বিরাজিছে
বাদিনীর ভয়ে—যেন,–অলকারূপে বিরাজিছে
বরজ-আলি-চিত-ভৃঙ্গাবলী—যেন,–অলকারূপে বিরাজিছে
মধুপানে লুব্ধ হয়ে—যেন,–অলকারূপে বিরাজিছে
‘মধুপানে লুব্ধ হয়ে’—
শ্রীগোবিন্দ-মুখ-কমল-মধুপানে লুব্ধ হয়ে
মন-সাধে মধু পিবে বলে—যেন,–অলকারূপে বিরাজিছে
নীল-কমল-মধু পিবে বলে—যেন,–অলকারূপে বিরাজিছে
‘নীলকমল-মধু পিবে বলে’—
গোপনে গোবিন্দ-মুখ—নীল-কমল-মধু পিবে বলে
বাদিনী নিরাশ করে –গোপনে,–মুখ—কমল-মধু পিবে বলে
বাদিনী চোখে ধূলা দিয়ে—গোপনে,–মুখ-কমল-মধু পিবে বলে যেন,–অলকারূপে বিরাজিছে
কেশরকো তিলক বনয়ো,’’
আমাদের,–নন্দ-কিশোরের নাসায় কেশরের তিলক—যেন,–মদন-বিজয়ী ধবজা
অভিমানি-মদনের –যেন,–বিজয়-ধবজা উড়াইছে
রাস-রঙ্গে তারে দমন করে –তার,–বিজয়-ধবজা উড়াইছে
রাস-রস-রঙ্গ দেখে—হার মেনেছে মদন রাজা
‘রাস-রস-রঙ্গ দেখে’—
মদন-দরপ-দমন-লীলা—রাস-রস-রঙ্গ দেখে
মদনের বড় গরব ছিল
আমি,–জগ-মাঝে সুপুরুষ বলে—মদনের বড় গরব ছিল
ভুবন-মোহন,–গোবিন্দ-মূরতি দেখে—সে গরব ভেঙ্গে গেল
‘গোবিন্দ-মূরতি দে’খে—
রাস-রস-কেলি-রঙ্গে—গোবিন্দ-মূরতি দেখে
অখিল-ভুবন-মোহন—গোবিন্দ-মূরতি দেখে
হার মেনেছে মদন রাজা
তার,–পঞ্চ শর ভেঙ্গে গেছে
মদনের সরবস-ধন—পঞ্চ শর ভেঙ্গে গেছে
একবার,–চেয়েছিল আঁখি-কোণে—তাতে,–পঞ্চ শর ভেঙ্গে গেছে
‘একবার,–চেয়েছিল আঁখি-কোণে’—
রাস-রঙ্গে খেলতে খেলতে—একবার,–চেয়েছিল আঁখি—কোণে
হেসে হেসে মদন-পানে—একবার,–চেয়েছিল আঁখি-কোণে
রাস-রঙ্গে নাচতে নাচতে—একবার,–চেয়েছিল আঁখি-কোণে
‘রাস-রঙ্গে নাচতে নাচতে’—
মদন-দরপ-হর—রাস-রঙ্গে নাচতে নাচতে
তার,–পঞ্চশর ভেঙ্গে গেছে
গোবিন্দের কটাক্ষ-শরঘাতে—তার,–পঞ্চশর ভেঙ্গে গেছে
রাস-রসিয়ার মূরতি হেরি’—তার,–পঞ্চ শর ভেঙ্গে গেল
মদনের পঞ্চ বাণ—ভেঙ্গে হল খান খান
লেগে,–গোবিন্দের কুটিল-কটাক্ষবাণ—ভেঙ্গে হল খান খান
জগজনে জ্বালায়ে মারে
পঞ্চ শর বর্ষণ করে—জগজন জ্বালায়ে মারে
জগজীবের জ্বালা ঘুচেছে—ভেঙ্গে গেছে ভাল হয়েছে
সরবস-ধন-হীন—মদনের দুর্দ্দশা দেখে
টলে রতির হল বিপরীত-মতি
দেখি’ মদনের দুর্গতি—রতির হল বিপরীত-মতি
পরাণ-গোবিন্দ-পদে-রতির,–বিকাইতে হইল মতি
কামের রতি ছাড়ি পতি—বিকাইছে গোবিন্দের পায়
প্রাণপতি গোবিন্দ বলে—রতি,–বিকায় গোবিন্দের পদতলে
দেখি রতির গোবিন্দে রতি
মদন হল লুব্ধ-মতি
মদন রতির দশা দেখে
রতির সৌভাগ্য মানে—মদন-রতির দশা দেখে
রতির সৌভাগ্য মানি—মদন মনে মনে গণে
গোবিন্দ-পদে বিকাইতাম—আমি যদি রতি হতাম[মাতন]
দাসী হয়ে,–ঐ পদে বিকাইতাম—আমি যদি রতি হতাম[মাতন]
হইল মদনের বিপরীত মতি
রতির,–ভোগ-লালসায় গেল মাতি
রতির আনুগত্যে মদন—রতির,–ভোগ-লালসায় গেল মাতি
মদনের হল গোবিন্দে রতি—মদন হল অনুরাগবতী
নিজ,—অভিলষিত বাঞ্ছা পূর্ণ কাজে–মদন,–অনঙ্গ-রঙ্গদা-কুঞ্জরূপ বিরাজে
গোবিন্দের নাসায় তিলক দোলে—তাই ধ্বজা উড়াইছে
মদন মোহিত হয়েছে—তাই ধ্বজা উড়াইছে
স্বর্ণ-মণ্ডিত-গুঞ্জাহার—পরিহার-হিয়ায় দোলে
স্বর্ণ-মণ্ডিত-গুঞ্জাহার’—
অনুরাগিণীর অনুরাগে গাঁথা—স্বর্ণ-মণ্ডিত-গুঞ্জহার
ব্রজ-ললনা-চিত্ত দোলাইয়ে—পরিসর-হিয়ায় দোলে
মদন-দরপ-দমন-হিয়ায়—কতনা গরব করে দোলে
‘মদন-দরপ-দমন-হিয়ায়’—
রাধার প্রাণ-গোবিন্দের—মদন-দরপ-দমন-হিয়ায়
স্বর্ণ-মণ্ডিত-গুঞ্জাহার—তাতে,–কতনা গরব করে দোলে
মদনের বিপরীত-রতি দেখে—তাতে,–কতনা গরব করে দোলে
দমন দমিত হল দেখে—তাতে,–কতনা গরব করে দোলে
গোবিন্দের ডাকাতিয়া-বক্ষ—মদন-দরপ দমনে দক্ষ
মদন-দরপ দমনে দক্ষ—ও-যে ডাকাতিয়া বক্ষ
ব্রজ-ললনা-কূল নাশে দক্ষ—ও-যে ডাকাতিয়া বক্ষ
কূলবতী-ব্রত ভঞ্জনে দক্ষ—ও-যে ডাকাতিয়া বক্ষ
স্বর্ণ-মণ্ডিত-গুঞ্জাহার—তাতে,–কতনা গরব করে দোলে
শ্যাম-নাগরের নাগরালি দেখে—তাতে,–কতনা গরব করে দোলে
‘দেখি’ শ্যাম-নাগরের নাগরালি’—
যাতে মদনে করিল আলি—-দেখি’ শ্যাম-নাগরের নাগরালি
যাতে সবারি হল বিপরীত-মতি—দেখি শ্যাম-নাগরের নাগরালি
বরজ-ললনা-চিত দোলাইয়ে—কতনা গরব করে দোলে
গোবিন্দের,–শ্রীঅঙ্গ-লাবণ্য-হিল্লোলে—কতনা গরব করে দোলে
‘‘নবজলধর তড়িতাম্বর,’’
শ্রীরাধার প্রাণ-গোবিন্দ হে—নবীন-নীরদ-কাঁতিয়া
ও-কি শোভা রে—নবীন-নীরদ-কাঁতিয়া
বিনোদ-রঙ্গিয়া
ত্রিভঙ্গ-ভঙ্গিয়া
শ্যাম বিনোদিয়া আমাদের—‘‘নবজলধর’’
‘‘নবজলধর তড়িতাম্বর,’’
গোবিন্দের,–শ্যাম-অঙ্গে পীতাম্বর—যেন,–থির-বিজুরী-জড়িত-নবঘনে
মনে করি অনুমানে—যেন,–থির-বিজুরী-জড়িত-নবঘনে
গোবিন্দের,–শ্যাম-অঙ্গে পীতাম্বর জড়িত—দেখে এই মনে হয়
আমাদের,–থির-বিজুরী-বরণী রাই—যেন,–পীতাম্বর হয়েছে গো
এক-পলক,–না দেখিলে রইতে নারে—তাই যেন,–পীতম্বর হয়েছে গো
নিরন্তর,–শ্যাম-অঙ্গ-সঙ্গ লাগি’—যেন,–পীতাম্বর হয়েছে গো
এই অভিলাষ জেগেছে মনে
নিরন্তর বুকে ধরে রাখি
প্রাণ-শ্যাম-নটবরে আমি—নিরন্তর বুকে ধরে রাখি
নিশিদিশি,–বুকে জড়ায়ে রাখবে বলে—তাই,–পীতাম্বর হয়েছে গো
আমাদের,–কিশোরীর রূপান্তর—মনে হয়,–ও-তো নয় পীতাম্বর
পীতাম্বর হয়ে পরাণ—বঁধুকে,–বুকে জড়াইয়ে ধরেছে
পীতাম্বর-রূপে প্রাণ-বঁধুকে—বুকে বুকে জড়ায়ে ধরেছে
নিরন্তর বুকে রেখে—বুকে বুকে জড়ায়ে ধরেছে
গোবিন্দের গলার বনমালা—ব্রজবন করেছে আলো
‘গোবিন্দের গলার বনমালা’—
‘দেখি’,–বরজ-যুবতী হয় উতলা—গোবিন্দের গলার বনমালা
শ্যাম রসিক-নাগর-রাজ
বনফুলে,–মন্মথ-মনোমোহন-সাজ—শ্যাম রসিক-নাগর-রাজ
লীলা-নট সূরকো পহু, রূপে জগমন মোহে।।’’
যে দেখেছে সেই ভুলেছে—একা মেনে আমি নই গো
রাস-রস-রঙ্গিয়া—সে-যে জগ-মনো-মোহনিয়া
দূসরা ন কোই রে—‘‘লীলা নট সূরকো পহুঁ,’’
দূসরা ন কোই রে,–‘‘মেরে তো গির্ধারী গোপাল, দূসরা ন কোই’’
(দূস্রা ন কোই মেরে—দূসরা ন কোই)
‘‘মেরে তো গিরধারী গোপাল, দূসরা ন কোই।’’
‘‘যাঁকে শিরপর মোর-মুকুট, মেরো পতি সোই।।’’
গোধন চরাণে ওয়ারো—মেরো পতি সোই
মোহন-মুরলিয়া ওয়ারো প্যারো—মেরো পতি সোই
মোর-মুকুট ওয়ারো প্যারো—মেরো পতি সোই
সাঁবলিয়া প্যারো বংশী-ওয়ারো—মেরো পতি সোই)
(দুসরা না কোই আরে—মেরো পতি সোই)
‘‘মেরে তো গির্ধারী গোপাল, দুস্রা ন কোই।
‘‘ভাই ছোড়ে বন্ধু ছোড়ে, আউর নহিঁ কোই।।’’
আপন বলতে যারা ছিল—সবাই তো ছেড়েছে
এ-জগতে মীরার—-সবাই তো ছেড়েছে
কুলের অযোগ্যা জেনে—সবাই তো ছেড়েছে
মীরা—কালাপ্রেমে মজেছে—তাই,–সবাই তো ছেড়েছে
সন্তনকা সঙ্গ বৈঠি বৈঠি, লোক-লাজ খোই।।
অব তো বাত ফৈল গেও, জানত সব কোই।।
মীরা—কালাপ্রেমে মজেছে—সবাই তো জেনেছে
এবার—মীরার,–লগ্ন লেগেছে
না জানি কি অশুভ-যোগে—মীরার,–লগ্ন লেগেছে
নন্দনন্দনে—মীরার,–লগ্ন লেগেছে
যে যা বলে বলুক—মীরার,–লগ্ন লেগেছে
‘যে যা বলে বলুক’—
লোকের কথায় কি বা হবে—যে যা বলে বলুক
কি বলে বাদী বুঝাব—মীরার,–লগ্ন লেগেছে
সবাই তো জেনেছে—মীরা,–কালাপ্রেমে মজেছে
কালাপ্রেম-বন্ধনে—মীরা,–বাঁধা পড়েছে
কালাপ্রেমে মজেছে—মীরা,–গলায় পরেছে
কালা-কলঙ্কের হার—মীরা,–গলায় পরেছে
সরবস জেনে—মীরা,–গলায় পরেছে
লোক-লাজ খোয়াইয়ে—মীরা—মাথায় করেছে
কালা-কলঙ্কের পসরা—মীরা,–মাথায় করেছে
কলঙ্ক-পসরা মাথায় করে—রাজপথ দিয়ে চলেছে
লোক-গঞ্জন চন্দন করে—মীরা,–অঙ্গ-ভূষা করেছে
এবার—মীরা,–ঝাঁপ দিয়েছ
পরবশ—মীরা,–ঝাঁপ দিয়েছে
কালাপ্রেম-পারাবারে—মীরা,–ঝাঁপ দিয়েছে
যে যা বলে বলুক—মীরা,–ঝাঁপ দিয়েছে
যা কর গোবিন্দ বলে—মীরা,–ঝাঁপ দিয়েছে
যা কর গিরিধারী বলে—মীরা,–ঝাঁপ দিয়েছে
‘যা কর গিরিধারী’—
এ মীরা দাসী তোমারই—যা কর গিরিধারী
এ মীরা তোমার দাসী বলে—মীরা,–ঝাঁপ দিয়েছে
ছার,–কুল বামপদে ঠেলে—মীরা,–ঝাঁপ দিয়েছে
‘ছার,–কুল বামপদে ঠেলে’—
বড় বাধা দেয় বলে—ছার,–কুল বামপদে ঠেলে
‘বড় বাধা দেয় বলে’—
প্রাণ-গিরিধারী-ভজনের—বড় বাধা দেয় বলে
ছার,–কুল বামপদে ঠেলে—মীরা,–ঝাঁপ দিয়েছে
এ তনু ভাসায়েছে
এবার মীরা—এ তনু ভাসায়েছে
স্রোত-বিথার-জলে—এ তনু ভাসায়েছে
‘স্রোত-বিথার-জলে’—
কালাপ্রেম-পারাবারে—স্রোত-বিথার-জলে
কি করিবে কূলের কুকুর
পারে থেক ঘেউ ঘেউ করুক-কি করিবে কূলের কুকুর
ঘেউ ঘেউ করে মরুক—কি করিবে কূলের কুকুর
কুল ছেড়ে অকূলে—এ তনু ভাসায়েছে
যা কর গিরিধারী বলে—এ তনু ভাসায়েছে
স্রোত-বিথার-জলে—মীরা,–ভেসে যে চলেছ
আর কি,–কেউ ধরে রাখতে পারবে—মীরা,–ভেসে যে চলেছে
মীরা বানের টানে পড়েছে—কেমন করে ধরে রাখবে বল
মেরে তো গিরধারী গোপাল দূসর না কোই।’’
দুসরা ন কোই মেরো—দূসরা ন কোই
গিরিধারী-পদে আপনায় দিয়ে—ভাবাবেশে বলে মীরা
সবর্বস্ব দিয়ে আস্বাদনের লোভে—ভাবাবেশে বলে মীরা
‘‘দরশ দিখায় যা—মেরে,–দরশ দিখায় যা’’
‘‘প্যারো রে, প্রাণ-প্যারো রে, সাঁবলিয়া প্রাণ প্যারা রে’’
‘‘প্রাণ-প্যারো—মেরে,–দরশ দিখায় যা’’
নেক্–‘‘বাঁশরী বাজায় যা’’
‘‘প্যারো,–দরশ দিখায় যা—নেক্,–বাঁশরী বাজায় যা’’
‘‘প্যারো রে, প্রাণ—প্যারো রে, সাঁবলিয়া প্রাণ-প্যারো রে’’
‘‘প্রাণ-প্যারো—মেরে,–আঁগন মে আ যা’’
মাখন,–‘‘মিছরী তো খা যা’’
‘‘মেরে,–আঁগন মে আ যা—মাখন,–মিছরী তো খা যা’’
‘‘মাখন,–মিছরী তো খা যা—নেক্,– বাঁশরী বাজায় যা’’
কেলি,—“কদমকী নীচে মেরে, দরশ দিখায় যা রে।।”
——
তু নেক্ তো দয়া করো, তেনেক্ তো দয়া করো ।।
যেইসি তো তুমনে রাত, বাজাইথি বাঁশরী।
তেইসি বাজাও ফের, হামারী মন্ হরো।।’’
রজনীতে যেমন করে বাজাও বাঁশরী।
তেমনি করে বাজিযে বাঁশী মন কর চুরি।।
‘‘তেইসি বাজাও ফের, হামারী মন হরো।।
তেনেক্সি দহিকে কারণ প্রতীহার কিসিকে ঘর।
মেরো ইহাঁসে নিত নয়া-গোরস লিয়া করে।।’’
সামান্য-নবনীর তরে কেনে পরের ঘরে যাও।
আমার ঘরে সদ্য দধি নিতুই খেয়ে যাও।।
মেরো ইহাসে নিত্ নয়া-গোরস্ লিয়া করো।।
শ্রীযমুনাজীকা ঘাটপার প্যারে মিলা করো।
গোয়াল বাল লেকে প্রত্যহ দরশন দিয়া করো।।
এক লালজী ব্রাহ্মণ কহত রোই রাই।
মোর-মুকুট ধরকে প্যারো দরশ দিয়া করো।।’’)[ঝুমুর]
‘আ যা’ ‘খা যা—আ’মরি কি ভাষা রে
এ যে বেদবিধি ছাড়া—আ’মরি কি ভাষা রে
ভাষার বলিহারি যাই—আ’মরি কি ভাষা রে
এ-যে,–সম্বন্ধের বন্ধনে বাঁধা—বাণীর ভাণ্ডারে নাই এ ভাষা
সব দিয়ে আপন করে বাঁধা—বাণীর ভাণ্ডারে নাই এ ভাষা
এ-যে,–বশ করে অধীন করা—বাণীর ভাণ্ডারে নাই এ ভাষা
কোথাও কি আছে গো
ব্রজ বিনে এ ভাষা আর—কোথাও কি আছে গো
কত আপনার হলে—এ ভাষা প্রকাশ পায়
পরাণের পরাণ হলে—এ ভাষা প্রকাশ পায়
‘পরাণের পরাণ হলে—
ব্রজ-ললনার আনুগত্যে—পরাণের পরাণ হলে
‘ব্রজ-ললনার আনুগত্যে’—
শ্রীগুরু-কৃপায়—ব্রজ-ললনার আনুগত্যে
এ ভাষা প্রকাশ পায়
বাণীর ভাণ্ডারে নাই এ ভাষা
এ-যে,–যুগল-উজ্জ্বল-রসে রসা—বাণীর ভাণ্ডারে নাই এ ভাষা
এ-যে, –যুগল-উজ্জ্বল-রসে রসা—এ ভাষার,–ব্রজ-ললনার বুকে বাসা
‘আ যা’ ‘খা যা’—এ-যে,–ব্রজলীলা-রসে রসা
এ ভাষার,–ব্রজ-ললনার বুকে বাসা—আ’মরি কি ভাষার ধারা
অনুকূল-সঙ্গ পেয়ে—কখন কখন বাহিরে আসা
এ-যে বিধির ছাড়া—আ’মরি কি ভাষার ধারা
বিধির বিধান ছেড়েছে যারা—এ ভাষা তো বলে তারা
ব্রজ-ললনার বুকে বাসা—কখনও কখনও রসনায় বসা
রসনা-দ্বারে বাইরে আসা—কখনও কখনও রসনায় বসা
এ-যে,–ভাবুক-বোঝার বুকে থাকে—এ,–ভাষা নয় তো বোবার বোল
যারা করে যুগল-সেবা—ভাব-রাজ্যের তারাই বোবা
বরজ-ললনা সকল—তারাই তো বোবার দল
সখী আর মঞ্জরী সকল—তারাই তো বোবার দল
যুগল—কেলি—বিলাস-রহস্য—তারা,–দেখে চোখে তাদের বুকে থাকে
নিকুঞ্জ-বিলাস-রহস্য-কথা—সদাই থাকে যাদের বুকে
নিভৃত-কুঞ্জের বিহার–সদাই থাকে যাদের বুকে
নিকুঞ্জ-বিলাস-রহস্য—দেখে চোখে থাকে বুকে
ফুকারি বলতে নারে কাকে—দেখে চোখে থাকে বুকে
বুঝতে পারে ভাবুক-জনে
চেয়ে তাদের মুখ-পানে—বুঝতে পারে ভাবুক-জনে
বাদিনীর ভয় সদাই—ফুকারি বলবার জো নাই
পাছে আপন-ভোগে বাধা দেয়—তাইতে তাদের মন জোগায়
কথা বলবার আগে বুক ফাটে—বাদিনীর ভয়ে মুখে না ফুটে
দেখে চোখে থাকে বুকে—বাদিনীর ভয়ে মুখে না ফুটে
ভাষারূপে না ফুটে—কিন্তু,–প্রকাশ পায় অস্ফুট-ভাবে
সেই,–ভোগমাধুরী তাদের মুখেতে—কিন্তু,–প্রকাশ পায় অস্ফুট-ভাবে
বুঝতে পারে ভাবুক-জনে
চেয়ে তাদের মুখপানে—বুঝতে পারে ভাবুক-জনে
মুখ দেখে বুক বুঝতে পারে—ভাবরাজ্যের এই তো স্বভাব
‘মুখ দেখে বুক বুঝতে পারে’—
মরমী-জন পরস্পরে—মুখ দেখে বুক বুঝতে পারে
কেবল আঁখির ইঙ্গিতে–রসের আদান প্রদান করে
তাতে হয় সব সমাধান—এইরূপে,–চোখে চোখে আদান প্রদান
বরজ-ললনা যত—পরস্পর জানতে পেত
মুখ দেখে বুকের কথা—পরস্পর জানতে পেত
মুখ দেখে জানতে পেত—বাইরে কথা না বেরুত
অনুকূল-সঙ্গ পেলে—কখনও কখনও প্রকাশ পেত
এ ভাষা,–ব্রজ-ললনার বুকে বাসা—কখনও কখনও রসনায় বসা
অন্তরঙ্গ-জন-মাঝে—কখনও কখনও রসনায় বসা।
রহস্য ভোগ করি’ আশা—কখনও কখনও রসনায় বসা
‘রহস্য ভোগ করি’ আশা—
পরস্পর আলাপনে—রহস্য ভোগ করি’ আশা
রসনাদ্বারে বাইরে আসা—কখনও কখনও রসনায় রসা
এ ভাষা,–কুল-ললনার বুকে বসে—রসনা-দ্বারে বাইরে আসে
কখনও কখনও,–আপন-মণ্ডলী-মাঝে—রসনা-দ্বারে বাইরে আসে
আপন-মণ্ডলী ছাড়া—কেউ জানতে পেত না
প্রকাশ হবার আশা ছিল না—কেউ জানতে পেত না
মুখ দেখে বুকের কথা—তারা,–পরস্পর জানতে পেত
তাদের বুকে লুকান ছিল
যারা চোখে দেখেছিল—তাদের বুকে লুকান ছিল
প্রকাশের নয় বলে যতনেতে—তারা,–বুকে লুকায়ে রেখেছিল
হৃদয়-সম্পূটে তারা—যতনে রেখেছিল
যুগল-উজ্জ্বল-রহস্য-কথা—যতনে রেখেছিল
গূঢ়-রহস্য ভোগের কথা—যতনে রেখেছিল
বিশেষ-বিলাস-রহস্য’—
প্রাণ-রাধা-রাধারমণের—বিশেষ-বিলাস-রহস্য
আশা তো ছিল না
এ কথা বাহিরে আসবার—আশা তো ছিল না
এত গোপনে যদি বুকে ছিল—কেমন করে বাইরে এল
ভাষা যদি বুকে ছিল—কেমন করে বাইরে এল
চির,–অনর্পিত-অর্পণ-লীলার–অপরূপ রহস্য ভাই
গরজ বালাই দাঁড়াল
রসিকেন্দ্র-চূড়ামণির—গরজ বালাই দাঁড়াল
স্বমাধুরী আস্বাদনে—গরজ বালাই দাঁড়াল
রাধার প্রেম-মাধুরী দরশনে—এই সাধ জাগল মনে
আমি যে কত-মধুর—এবার আমি আস্বাদিব
আমায় দেখে কিশোরী—না জানি কি সুখ পায়
পরকে আপন করে—যাতে,—আপনারে পর করে
অশেষ-বিশেষে আস্বাদিব
নিজ,–নাম-রূপ-গুণ-লীলা—অশেষ-বিশেষে আস্বাদিব
আপন স্বভাবে থেকে—কতই না চেষ্টা কৈল
আপন কক্ষায় থেকে—কেমনে তা পাবে বল
সাধিত পূর্ণ না হইল—কেমনে তা পাবে বল
সে-তো লীলার বিষয় বটে—কেমন করে আস্বাদিবে
আশ্রয়-জাতীয়-লীলা-রহস্য—কেমন করে আস্বাদিবে
তখন,—মনে মনে ভেবে দেখল
আমা হতে হবে না
আমার অধিকার নাই
আপন-মাধুরী আস্বাদনে—আমার অধিকার নাই
আমার প্রাণ-কিশোরী—যে আস্বাদে আমার মাধুরী
আমার বাসনা পূর্ণ হবে—তার আস্বাদ নিব যবে
মহাভাব—স্বরূপিণীর ভাবে—আমায়,—বিভাবিত হতে হবে
স্বমাধুরী আস্বাদিতে—আমায়,–বিভাবিত হতে হবে
আপন,—মাধুরী আস্বাদ পাব বটে
শ্রীরাধা-ভাবাশ্রয় করে—আপন,–মাধুরী আস্বাদ পাব বটে
নিকুঞ্জ-রহস্য—কিন্তু,–কেমন করে পাব আমি
শুধু রাধা-ভাব নিলে—এ বাসনা তো পূরবে না
আমি রাধায় ভোগ করি—রাধা আমায় ভোগ করে
আমাদের—দুই মিলে কি মাধুরী—রাধাও তো জানে না
ব্রজের সখী আর মঞ্জরী—তারাই আস্বাদে যুগল-মাধুরী
বিশেষ,–বিলাস-রহস্য ভোগে মগন—তার মধ্যে মঞ্জরীগণ
তাই,–অনুগত হতে হল
শ্রীরাধার দাসীগণের—তাই,–অনুগত হতে হল
আস্বাদ যে তাদের কাছে—তাই,–তাদের কাছে ভিখ মাগে
ব্রজ-নিকুঞ্জ হতে—তাদের যে আনতে হল
আপন,–গরজ বালাই পুরাইতে—তাদের যে আনতে হল
ব্রজের ছয় মঞ্জরী—তারাই হল ছয় গোস্বামী
ব্রজের মঞ্জরী সকল—রূপান্তরে তারাই এল
তাদের আবার আনিল
তাদের বোল ফুটবার লাগি’—তাদের আবার আনিল
যোগমায়া লীলাশক্তি—তাদের বোল ফুটাল
তার ভোগের ইচ্ছা জেনে—তাদের বোল ফুটাল
ভাবরাজ্যের মহাভোগী—সেই বোবার বোল ফুটাল
ভাবের ভাষা বাইরে এল—সেই বোবার বোল ফুটাল
ভাবের ভাষা বাইরে এল—ভাবুক-বোবার বোল ফুটাল
লীলা-কথা প্রকাশ করে—বাণীর ভাণ্ডারে ছিল না ভাষা
যুগল-উজ্জ্বলরসে রসা—বাণীর ভাণ্ডারে ছিল না ভাষা
বাণী,–অপ্রাকৃত-শক্তি পেল—ভাবের ভাষা বাইরে এল
ভাগ্যবতী-বাণী আজ-অপ্রাকৃত-শক্তি পেল
ব্রজলীলা-বর্ণনের—অপ্রাকৃত-শক্তি পেল
লীলা-কথা প্রকাশিবার—বাণীর ভাষা স্ফূর্ত্তি পেল
স্বরূপে,–ভাষা যদি না প্রকাশ হত—নৈলে,–কে বা জানতে কে বা বুঝতে
গূঢ়-রহস্য-ভোগের কথা—নৈলে,–কে বা জানত কে বা বুঝত
বুকের কথা মুখে ফুটিল—গুপ্ত-ভাষা বাইরে এর
অপ্রাকৃত-শক্তি সঞ্চারি’—সেই ভাষা প্রকাশ কৈল
চির,–অনর্পিত-অর্পণ-লীলায়—সেইি ভাষা প্রকাশ কৈল
এতদিন কেবল কথায় ছিল—এবার মেনে সার্থক হল
তাদেরি দ্বারে প্রকাশ কৈল
ছয় মঞ্জরী, ছয় গোস্বামী—তাদের দ্বারে প্রকাশ কৈল
আর,–কে জানে কে বলবে বল—তাদেরি দ্বারে প্রকাশ কৈল
যারা,–হেরে যুগল-বিলাস-মাধুরী
তারাই,–‘ছয় গোস্বামী’ নাম ধরি’
ভাষায় প্রকাশে বিলাস-মাধুরী
বিতরিতে,–শ্যাম-নাগরে যুগল-মাধুরী—ভাষায় প্রকাশে বিলাস-মাধুরী
নিভৃত-নিকুঞ্জ-লীলা-রহস্য—গ্রন্থকারে প্রকাশ হল
নিজ-বিলাস-মাধুরী—আস্বাদন করবার আশে
কলিহত-পতিত-জীবে—আস্বাদিয়ে পিয়াইতে
নিভৃত-নিকুঞ্জ-বিলাস-রস—আস্বাদিয়ে পিয়াইতে
রাই-কানু-মিলিত গোরারায়—অনর্পিত-করুণায়
বড়-ভোগী শ্যামসুন্দর—অপনি তো আস্বাদিল
কলিহত-পতিত-জীবে—আপনি পিয়ে পিয়াইল
একা ভোগ করতে নারে—রস-ভোগের এই তো স্বভাব
দশে ভোগ না করালে পরে—বড়-ভোগীর পেট না ভরে
ছয় গোস্বামীর দ্বারে—যারে তারে পিয়াইল
চির,–অনর্পিত-অর্পণ-লীলায়—যারে তারে পিয়াইল
কলিহত-পতিত-জীবের—সৌভাগ্য প্রকট হল
গরজ বালাই দাঁড়াল—তাতে,–সৌভাগ্য প্রকট হল
কিন্তু,–মীরা এ-ভাষা কোথায় পেল
মানিলাম বটে,–গ্রন্থাকারে প্রকাশ—কিন্তু,–মীরা এ-ভাষা কোথায় পেল
এ-যে,–ব্রজ-গোপী-বোবার বুকে ছিল—এ-ভাষা মীরা কোথায় পেল
মঞ্জরী-আনুগত্য বিনা—এ ভাষা তো মিলে না
নৈলে,–এ-ভাষা কোথায় পেয়েছে—বুঝি,–আনুগত্য হয়েছে
সেই বোবাদের সঙ্গে—বুঝি সম্বন্ধ ঘটেছে
যাদের বোল ফুটেছে—বুঝি তাদের সঙ্গ হয়েছে
‘যাদের বোল ফুটেছে’—
অনর্পিত-করুণায়—যাদের বোল ফুটেছে
নিশ্চয় তাদের সঙ্গ পেয়েছে
যাদের দ্বারা,–এ ভাষা প্রকাশ পেয়েছে—নিশ্চয় তাদের সঙ্গ পেয়েছে
নৈলে,–এ-ভাষা কোথায় পেয়েছে—নিশ্চয় তাদের সঙ্গ পেয়েছে
শ্রীরূপ-শ্রীজীবে—মীরার,—আনুগত্য হয়েছে
বিলাসমঞ্জরী-জীবে—মীরার,—আনুগত্য হয়েছে
মধুর-শ্রীবৃন্দাবনে—মীরার,—আনুগত্য হয়েছে
শ্রীজীব-গোস্বামীর আনুগত্যে—মীরা এ-ভাষা পেয়েছে
যুগল-উজ্জ্বলরসে রসা—তাই মীরার ফুটেছে ভাষা
শ্রীরূপ-শ্রীজীবের কৃপায়—মীরা তো এ-ভাষা পায়
বিলাস-মঞ্জরী-শ্রীজীবের কৃপায়—মীরা তো এ-ভাষা পায়
‘‘প্যারো রে, প্রাণ-প্যারো রে, সাঁবলিয়া প্রাণ-প্যারো রে’’
‘‘প্রাণ-প্যারো—মেরে,—আঁগন মে আ যা’’
নেক্,—‘‘বাঁশরী বাজায় যা—মাখন,–মিছরী তো কা যা’’
কেলি,–‘‘কদমকী নীচে মেরে, দরশ দিখায় যা রে।।’’
যুগল-উজ্জ্বল-রসে রসা—মীরা শুধু পায় নাই ভাষা
পরিণতি-স্বরূপ-ভোগের—মীরা পেয়েছে লালসা
“পরিণতি-স্বরূপ-ভোগের”
মহারাস-বিলাসের—পরিণতি-স্বরূপ-ভোগের
রাই-কানু-একাকৃতি-পরিণতি-স্বরূপ-ভোগের
বোবার দলের ভাগ্য—পরিণতি-স্বরূপ-ভোগের
মীরা পেয়েছে লালসা
পরাণ-গৌরাঙ্গ-ভোগের—মীরা পেয়েছে লালসা
শ্রীরূপ—শ্রীজীবের কৃপায়—মীরা পেয়েছে লালসা
একবার দেখা দাও
ভাবাবেশে মীরা বলে—একবার দেখা দাও
ও প্রাণ-গিরিধারী—একবার দেখা দাও
তোমার,–পরিণতি-স্বরূপে—একবার দেখা দাও
নিত্য সঙ্কীর্ত্তন-রাসে স্থিতি—তোমার, পরিণতি-মূরতি
সেই,–পরিণতি-মূরতিতে—একবার দেখা দাও
‘সেই,–পরিণতি—মূরতিতে’—
মহারাস-বিলাসের—সেই,–পরিণতি-মূরতিতে
তোমার,–আশ-মিটান-মূরতিতে—একবার দেখা দাও
তোমার,–আশ-মিটান-মূরতিতে’—
রাধা-সঙ্গে বিজড়িত—তোমার,—আশ-মিটান-মূরতিতে
দেখা দাও প্রাণ-গিরিধারী
ভাবাবেশে বলে মরা—দেখা দাও প্রাণ-গিরিধারী
হয়ে—রাই-সনে জড়াজড়ি—দেখা দাও প্রাণ-গিরিধারী
নিরন্তর,–দেখতে সাধ জড়াজড়ি—আর,–ভাল লাগে না ছাড়াছাড়ি
দেখব গৌরাঙ্গ-মাধুরী—নিরন্তর জড়াজড়ি
শ্রীরূপ-শ্রীজীবের মুখে—শুনেছি সেরূপের কথা
শ্রীজীবের মুখে—শুনেছি সে রূপের কথা
তোমার,–গৌর-স্বরূপে লীলার কথা—শুনে অবধি লোভ আছে
একবার দেখব বলে—শুনে অবধি লোভ আছে
ও প্রাণ গিরিধারী—একবার দেখা দাও
জড়াজড়ি-মূরতিতে—একবার দেখা দাও
রাধা-সঙ্গে মিশামিশি—তোমার,–সেই রূপ বড় ভালবাসি
হয়ে,–রাধা-ভাব-দ্যুতি-সুবলিত—একবার দেখা দাও
রাধা-ভাব-দ্যুতি অঙ্গীকরি—দেখা দাও প্রাণ-গিরিধারী
কিশোরী-মণ্ডিত গৌরহরি—দেখা দাও প্রাণ-গিরিধারী
নিত্য মিলনে, নিত্য বিরহ—দেখতে,–সাধ তোমার গৌরদেহ
নিত্য মিলনে, নিত্য বিরহ—দেখব আমি অহরহ
দেখাও মধুর গৌরদেহ—দেখব আমি আহরহ
পরস্পর,–বুকে ধরে আত্মহারা—দেখব চিতচোরা গোরা
জড়াজড়িতেই ছাড়াছাড়ি—দেখব অপরূপ মাধুরী
কনক-রুচির গৌর—একবার দেখা দাও
সবর্ব-চিত্তৈকচৌর—একবার দেখা দাও
প্রকৃতি মধুর দেহ—একবার দেখা দাও
পূর্ণ-লাবণ্য-গেহ—একবার দেখা দাও
গৌর নাগর-বর—একবার দেখা দাও
‘গৌর নাগর-বর’—
রসে তনু ঢর ঢর—গৌর নাগর-বর
সৌন্দর্য্যের সার মাধুর্য্যের পার—একবার দেখা দাও
‘সৌন্দর্য্যের সার মাধুর্য্যের পার’—
মহাভাবের আধার—সৌন্দর্য্যের সার মাধুর্য্যের পার
দেখা দাও প্রাণ,–গিরিধারী গৌর আমার
দেখা দাও প্রাণ গোরা-শশী
রাই কানু মিশামিশি—দেখা দাও প্রাণ গোরা-শশী
বহুদিন হতে অভিলাষী—দেখা দাও প্রাণ গোরা-শশী
এ,–মীরা তোমার চিরদাসী—দেখা দাও প্রাণ গোরা-শশী
দেখা দাও দেখা দাও বলে—ব্যাকুল হয়ে কাঁদতে কাঁদতে
মধুর-শ্রীনদীয়ায়—ভাবাবেশে দেখে মীরা
মীরার ভোগ-লালসার সঙ্গে—ধাম এসে প্রকট হল
মীরা দেখে নদীয়ায়—বিহরিছে প্রাণ-গোরারায়
নরহরি-আদি-পরিকর-সঙ্গে—বিহরিছে প্রাণ-গোরারায়
শ্রীরূপ-শ্রীজীবের সঙ্গে—ভাবাবেশে মীরা দেখে
সঙ্কীর্ত্তন-রাসরঙ্গে—ভাবাবেশে মীরা দেখে
সঙ্কীর্ত্তন-মহারাস—বিহারী—বিহরে নিত্যানন্দ-সঙ্গে
সঙ্কীর্ত্তন-কেলি-বিলাস-রঙ্গে—বিহারে নিত্যানন্দ-সঙ্গে
ভাবাবেশে দেখে মীরা—নিত্যানন্দ রমে গোরা
চৌদ্দমাদল বাজাইয়ে—নিত্যানন্দ রমে গোরা
সব হয়েছে নদে—নাগরী
নদীয়ার যত পুরুষ-নারী—সব হয়েছে নদে—নাগরী
সব হয়েছে নদে—নাগরী
স্থাবর-জঙ্গল-গুল্মলতা—সব হয়েছে নদে নাগরী
‘স্থাবর-জঙ্গম-গুল্মলতা’—
মধুর-শ্রীনদীয়ার—স্থাবর-জঙ্গম-গুল্মলতা
না হবে বা কেন রে
নিত্যানন্দ-প্রকাশ বটে
ব্যাপক শ্রীনিত্যানন্দ
মধুর-শ্রীনদীয়ায়—ব্যাপক শ্রীনিত্যানন্দ
মূল আশ্রয়তত্ত্ব—ব্যাপক শ্রীনিত্যানন্দ
নদীয়ার,–স্থাবর-জঙ্গম-গুল্মলতা সবার—আজ স্বরূপ জেগে উঠেছে
সঙ্কীর্ত্তন,–রাসবিহারী গৌর দেখে—আজ স্বরূপ জেগে উঠেছে
সবারে নাগরী করি’—বিহরে গোরা রাসবিহারী
নবদ্বীপ-রাস-রঙ্গমঞ্চে—বিহরে গোরা রাসবিহারী
সেবা-বিগ্রহ নিতাই বুকে ধরি’—বিহরে গোরা রাসবিহারী
দেখে মীরা নয়নভরি’—বিহরে গোরা রাসবিহারী
ভাগ্যবতী-মীরার প্রীতিতে—প্রাণভরে বল ভাই তোরা
মীরার চিতচোরা গোরা—প্রাণভরে বল ভাই তোরা
শ্যাম-নবঘন রাই-বিজুরী মোড়া—মীরার চিতচোরা গোরা
সঙ্কীর্ত্তন-রাসরঙ্গে ভোরা—মীরার চিতচোরা গোরা
নিত্যানন্দ রমণে ভোরা—মীরার চিতচোরা গোরা
প্রাণভরে বল ভাই তোরা—নিতাই রমণ গোরা
মীরাবাঈ-এর চিতচোরা—নিতাই-রমণ গোরা
ভাগ্যবতী-মীরার চিতচোরা—নিতাই রমণ গোরা
একাধারে যুগল-মাধুরি—আমি নয়নভরে হেরি
মুখে বলি প্রাণ গৌরহরি—হৃদে ধরি জড়াজড়ি
মীরার চিতচোরা গোরা—প্রাণভরে বল ভাই তোরা
মীরার গোরা-অনুরাগে—জয় গৌরহরি বোল
প্রেমসে কহো শ্রীরাধে শ্রীকৃষ্ণ বলিয়ে—
প্রভু-নিতাই-শ্রীচৈতন্য-অদ্বৈত-শ্রীরাধারাণীকী জয় !
প্রেমদাতা-পরমদয়াল-পতিতপাবন-শ্রীনিতাইচাঁদকী জয় !
করুণাসিন্ধু-গৌরভক্তবৃন্দকী জয় !
শ্রীশ্রীনাম-সঙ্কীর্ত্তনকী জয় !
খোল-করতালকী জয় !
শ্রীনবদ্বীপধামকী জয় !
শ্রীনীলাচলধামকী জয় !
শ্রীবৃন্দাবনধামকী জয় !
আপন আপন শ্রীগুরুদেবকী জয় !
প্রেমদাতা-পরমদয়াল-পতিতপাবন—
শিশুপশুপালক-বালকজীবন-শ্রীমদ্রাধারমণকী জয় !