যমুনা কিনারে

আরতি আপু পবার ন চিহ্নহ

আরতি আপু পবার ন চিহ্নহ
ধরহ কত কুবানি।
অপনি রমনি রাগে সন্তাবহ
পরক পেয়সি আনি।।
কহ্না তোঁঞে বড় লোক নিসঙ্ক।
হসি হসি সেহে করম করসি
জেঁ হো কুল-কলঙ্ক।।
জাহি জাহি তোহি গুরু নিবারএ
তাহি তোরা নিরবন্ধ।
আঁখি দেখি জে কাজ ন করএ
তাহি পারে কে অন্ধ।।
তথুহু চীর সমাগম মাগহ
এত বড় তোর লোভ।
পরক ভূসনে পরক বৈভবে
কত খন দহু সোভ।।
দূতিক বচনে কাহ্ন লজাএল
কবি বিদ্যাপতি ভানে।
জে ভেল সে ভেল জেহি তেহি গেল
আবে করু অবধানে।।

অন্তঃকথন:
বহুবল্লভ মাধবের আচরণ রাধারানীর প্রাণে বড় বেজেছে। তাঁর সেই ব্যথা অনুভব করে দূতী মাধবকে এসে তিরস্কার করে বলছেন, এত তোমার ভোগাসক্তি কানাই যে তুমি নিজের রত্ন চিনতে পারো না। কত কুকথা বলো, পরের প্রেয়সীর সঙ্গে প্রণয় করে নিজের রমণীকে রাগান্বিত করে সন্তপ্ত কর। কানাই, তুমি একেবারে লোক-ভয়শূণ্য, হেসে হেসে সেই কাজ কর যাতে কুলকলঙ্ক হয়! যা যা তোমার গুরুগণ তোমায় করতে বারণ করে সেটা করাই তোমার জেদ। যে চোখে চেয়ে দেখে কাজ করে না, তার চেয়ে অন্ধ আর কে আছে? সেখানে, এত কিছু করেও আবার নাকি তুমি, দীর্ঘ সমাগম চাও! এত বড় তোমার লোভ! পরের ভূষণে, পরের বৈভবে কতক্ষণ শোভা পাবে? অর্থাৎ নিজ নারী রাধিকাকে ছেড়ে অন্য নারীর প্রেমে তুমি কতদিন সুখ পাবে? অন্যের আভরণে সেজে কতদিন শোভা পাওয়া যায়? কবি বিদ্যাপতি মন্তব্য করছেন, দূতীর বচনে কানাই লজ্জা পেলেন। তারপর তিনি কানাই কে উপদেশ দিচ্ছেন, যা হওয়ার তা তো হয়ে গেছে, এখন তুমি আগামীতে মনোনিবেশ করো, এবার থেকে নিজ কাজে সাবধান হও।

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী