যমুনা কিনারে

ঘন শ্যাম শরীর কেলি রস

ঘন শ্যাম শরীর কেলি রস
যমুনাক তীর বিহার বনি।
শ্রীদাম সুদাম ভায়া বলরাম
সঙ্গে বসুদাম রঙ্গে কিঙ্কিণী।।
ঘন চন্দন ভাল কানে ফুল ডাল
অঙ্গে গিরি লাল কিয়ে চলনি।
লুফিছে পাচনি বাজিছে কিঙ্কিণী
পদ নূপুর ঝুনু ঝুনু শুনি।।
কত যন্ত্র সুতান কলা রস গান
বাজায়ত মান করি সুমেলে।
যব বেণু পুরে মৃগ পাখী ঝুরে
পুলকে তরু পল্লব পুষ্প ফলে।।
কেহ রূপ চাহে কেহ গুণ গায়ে
কেহ প্রেমক আনন্দে বোল কহে ।
চণ্ডীদাস মনে অভিলাষ
স্বরূপ অন্তরে জাগি রহে।।

অন্তঃকথন:
পদটি গোষ্ঠলীলার অন্তর্গত। ঘন শ্যাম গাত্রবর্ণ, শরীর জুড়ে প্রণয়রস, সেই তিনি যমুনা তীরের বনভূমিতে বিহার করেন। শ্রীদাম, সুদাম, ভ্রাতা বলরাম, ও অন্য সখাগণ যেন অষ্টবসু, তাদের সঙ্গে কিঙ্কনি বাজিয়ে তামাশায় মেতেছে। কপাল তার চর্চিত গাঢ় চন্দনে, কানে ফুলের ডাল, অঙ্গে রক্তিম গিরি মৃত্তিকার অপরূপ আলপনা। হাতের পাঁচনখানি লুফে নেওয়ার ছন্দে বেজে উঠছে কিঙ্কিনী। শোনা যাচ্ছে নুপুরের রুনু ঝুনু ধ্বনি। কত যন্ত্র সহযোগে সুন্দর তাল, কলা, রস, গান বাজনার অপরূপ মেলবন্ধন রচিত হয়েছে। যখন বেনু বাজে মৃগ, পাখি আমোদিত হয়। তরু পল্লবে ফুলে ফুলে পুলক জাগে। কেউ রূপ দেখে, কেউ গুণগান গায়, কেউবা প্রণয়ানন্দে কথা বলে। চণ্ডীদাসের মনে অভিলাষ, স্বরূপ যেন সদা অন্তরে জেগে থাকে।

পদকর্তা:চণ্ডীদাস
রাগ:শ্রী
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:মুনমুন ঘোষ

সন্ধিনী