জনম হোঅএ জদি জওঁ পুনু হোই

জনম হোঅএ জদি জওঁ পুনু হোই।
জুবতী ভহ জনমএ জনি কোই।।
হোইহ জুবতি জনি হো রসমন্তি।
রসও বূঝএ জনি হো কুলমন্তি।।
ই ধন মাগওঁ বিহি এক পএ তোহি।
থিরতা দিহহ অবসানহু মোহি।।
মিলি সামি নাগর রসধারা।
পরবস জনি হোঅ হমর পিয়ারা।।
হোইহ পরবস বুঝিঅ বিচারি।
পাএ বিচার হার কওন নারি।।
ভনই বিদ্যাপতি অছ পরকার।
দন্দ সুমুদ হোএ জীব দএ পার।।


অন্তঃকথন:
বহুবাসনায় প্রেম ও মিলনের পরে রাধারানীকে ভুলে মাধব এখন অন্য নারীতে মগ্ন! আমাদের কুলবতী রাধারানী মাধবের এমত আচরণে যাতনায় জ্বলে যান! যাঁর জন্য কূলের মান ভুলে রসসাগরে ঝাঁপ দিলেন তিনিই যদি না রাখেন কোথা যান তবে রাই আমাদের! দ্বিধায় দীর্ণ হয়ে আক্ষেপ ভিন্ন তাঁর আর যে কোনো উপায় নেই! কখনো শ্রীমতী কানাই এর কথা ভেবে আক্ষেপ করেন কখনো নিজের ভাগ্যের কথা ভেবে! সব আক্ষেপের শেষে বিধাতার কাছে দরবার করেন পরজনমে যেন এ যাতনা সইতে না হয়! আক্ষেপানুরাগের এই পদে শ্রীমতী বড় বেদনায় বলছেন, এই জন্মের পরেও যদি আবার জন্ম তাহলে কেউ যেন যুবতী হয়ে না জন্মায়! যুবতী হয়ে জন্মালেও যেন রসবতী না হয়! আর যদিও বা রস বোঝে, রসবতী হয় তাহলে যেন কূলবতী না হয়! নিজের জীবন দিয়ে রাধারানী বুঝেছেন কুলবতী রসবতী যুবতী নারীর কপালে লেখা থাকে কেবল দুঃখ! তাই তিনি পরজনমে আর এমন জীবন চাইছেন না! বিধাতার কাছে বিনোদিনী রাই প্রার্থনা করছেন, এখন একমাত্র এই ধন দাও বিধি যেন শেষ সময় অবধি ধৈর্য রাখতে পারি! পরজন্মে যেন রসময় নাগর স্বামী পাই! আমার প্রিয় যেন পরবশ না হয় বিধি! পরবশ যদি হয়ও বা তাহলে যেন নিজের বিচার বিবেচনায় বুঝতে পারে কোন নারী বরণমালা পাবার যোগ্য! রাধারানীর প্রার্থনা শুনে বিদ্যাপতি বলছেন, উপায় আছে, নিজের জীবন দিয়ে দ্বন্দ্ব সমুদ্র পার হতে হয়! আসলে এই পদে শ্রীমতী যা প্রার্থনা করছেন তা সাময়িক দুঃখ থেকে, অভিমান থেকে, রাগ থেকে বলছেন! তাঁর মানসিক দ্বন্দ্ব বিদ্যাপতি বড় সুন্দর ভাবে ফুটিয়েছেন! পদটির শুরুতে রাধা বলছেন তিনি আর যুবতী হয়ে জন্মাতে চান না, প্রেমের প্রতিই যেন তাঁর বিরাগ! অথচ শেষে তিনি বলছেন পরজন্মে স্বামী যেন তাঁকেই ভালোবাসেন! আসলে এইটিই তাঁর মনের কথা! আর তা পরজন্মেও নয় এ জন্মে মাধব যেন তাঁর মূল্য বুঝে তাঁর কাছেই ফিরে আসেন তাই ই আসলে চাইছেন রাধিকা! সে কথাই আরো নানা কথায় ফুটে বেরোচ্ছে! কৃষ্ণ যে অন্য নারীর কাছে গেছেন এই জ্বালা থেকেই তাঁর সমস্ত আক্ষেপ! নইলে একবার যে কৃষ্ণপ্রেমরসের আস্বাদ পেয়েছে সেকি আর পরজন্মে রসহীন জীবন চাইতে পারে! আসলে প্রেমের জ্বালাও তো প্রেমেরই অঙ্গ! আর সেই জ্বালায় করা আক্ষেপে যতই বিরূপ কথা থাকুক না কেন, তাও আসলে প্রেমেরই প্রকাশ! আক্ষেপে প্রেম আরো গভীর হয়ে ফুটে ওঠে!
পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

keyboard_arrow_right
সন্ধিনী
অভিসার আক্ষেপানুরাগ কুঞ্জভঙ্গ খণ্ডিতা গীতগোবিন্দ গোষ্ঠলীলা দানলীলা দূতী ধেনুবৎস শিশুহরণ নৌকাখন্ড পূর্বরাগ বংশীখণ্ড বিপরীত বিলাস বিরহ বৃন্দাবনখন্ড ব্রজবুলি বড়াই বড়াই-বচন--শ্রীরাধার প্রতি মাথুর মাধবের প্রতি দূতী মান মানভঞ্জন মিলন রাধাকৃষ্ণসম্পর্ক হীন পরকীয়া প্রেমের পদ রাধা বিরহ রাধিকার মান লখিমাদেবি শিবসিংহ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন শ্রীকৃষ্ণের উক্তি শ্রীকৃষ্ণের পূর্বরাগ শ্রীকৃষ্ণের মান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ংদৌত্য শ্রীগুরু-কৃপার দান শ্রীরাধা ও বড়াইয়ের উক্তি-প্রত্যুক্তি শ্রীরাধার উক্তি শ্রীরাধার প্রতি শ্রীরাধার প্রতি দূতী শ্রীরাধার রূপবর্ণনা শ্রীরাধিকার পূর্বরাগ শ্রীরাধিকার প্রেমোচ্ছ্বাস সখীতত্ত্ব সখীর উক্তি সামোদ-দামোদরঃ হর-গৌরী বিষয়ক পদ