যমুনা কিনারে

জা লাগি চাঁদন বিখ তহ ভেল

জা লাগি চাঁদন বিখ তহ ভেল
চাঁদ অনল জা লাগি রে।
জা লাগি দখিন পবন ভেল সায়ক
মদন বৈরি জা লাগি রে।।
কে কাহ্নু কতে দিনে পাহুন
হসি ন নিহারসি তাহি রে।
হৃদয়ক হার হঠে টারহ জনু
পেম সুধা অবগাহি রে।।
রোঅইতে নোরে আতু্র ভেল লোচন
রয়নি জাম জুগে গেল রে।
ফূজল চিকুর চীর নহি চেতএ
হার ভার তনু ভেল রে।।
তপ তোর তরুন করুনে কাহ্নু আএল
কাঁই বঢ়াবসি মান রে।
জেও ন অছল মন সেও ভেল সংপন
কবি বিদ্যাপতি ভন রে।।

অন্তঃকথন:
বহুদিন রাধারানীকে বিরহের আগুনে দগ্ধ করে আজ শ্যামসুন্দর এসেছেন দর্শন দিতে। রাধারানীর তো মান হবারই কথা! কিন্তু মিলনের সময় বয়ে যায় দেখে সখী রাধিকাকে বুঝিয়ে বলছেন, যার জন্য অমন শীতল চন্দন তোর কাছে বিষের চেয়েও তীব্র জ্বালাময় হয়ে উঠলো, যার জন্য স্নিগ্ধ চন্দ্র তোর কাছে অগ্নিসম হল, যার জন্য দখিনা বাতাস তীরের মত বিঁধলো, যার জন্য কন্দর্প তোর শত্রু হল, সেই কানাই, তোর সেই বহু কাঙ্ক্ষিত কানাই, আজ কতদিন পরে তোর অতিথি হয়ে এলো, আর তুই কিনা একবার হেসে তার দিকে দেখছিসও না? প্রেমের সুধার মধুর স্বাদ জেনেও হৃদয়ের ধন, হৃদয়ের হার কানাইকে এমন জোর করে দূরে ঠেলে দিস না রে! ভেবে দেখ এই কানুর জন্যই কেঁদে কেঁদে তোরই দুচোখ আর্ত হল, রাতের এক এক যাম তোর কাছে এক যুগের মত মনে হত, মুক্ত কেশ গুছিয়ে বাঁধতিস না, এমন কি গলার হারও তোর কাছে ভারী লাগতো! আজ তোর তপস্যার ফলে তরুণ কানাই কৃপা করে তোর কাছে এলো, এখন আর কেন মান করে আছিস? এই কি মানের সময়? কবি বিদ্যাপতি বলছেন, যা কল্পনাতেও ছিলো না তাও সম্পন্ন হল।

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী