যমুনা কিনারে

নিতি নিতি আসি যাও রাধা সনে কথা কও

বড়াইর উক্তি — শ্রীকৃষ্ণের প্রতি

নিতি নিতি আসি যাও রাধা সনে কথা কও
শুনিয়াছিলাম পরের মুখে।
মনে করি কোন দিনে দেখা হবে তার সনে
ভাল হল দেখিলাম তোকে।।
চেটো নেটো যায় জলে তার নাকি ধর চুলে
এমত তোমার কোন রীত।
যাব তুমি ধর চুলে সেই এসে মোরে বলে
নহিলে নহিতাম পরতীত।।
সুজন কখন নও পর-নারী নিতে চাও
এমনি তোমার অভিলাষ।
আমি ত শুনিলাম ভালে যদি শুনে তার কুলে
শুনিলে হইবে অপভাষ।।
নিশ্বাস ফোঁপাশ ছাড় আছাড় খাইয়া পড়
বুঝিলাম তোমার মনের কথা।
নহে কেহ ঘাটে মাঠে তোর অপযশ রটে
শুনিতে পাই এ সব কথা।।
আমার কথাটি শুন না করিহ ইহা পুনঃ
না মজে নন্দের কুলগারি ।
দ্বিজ চণ্ডীদাস কয় ও কথা কি মনে লয়
নাগরীর পিরিত হৈল বৈরী।।

অন্তঃকথন:
এটি শ্রীকৃষ্ণের প্রতি বড়াইর উক্তি। রোজ রোজ আসো যাও, রাধার সঙ্গে কথা বল --- এসকল শুনেছিলাম পরের মুখে। মনে মনে ভাবছিলাম তার সঙ্গে কবে দেখা হবে। ভালোই হল তোকে দেখলাম। অল্পবয়সী স্ত্রীলোক কে নদীতে যেতে দেখলেই তুমি নাকি তার কেশাকর্ষণ করো, এ তোমার কেমন রীতি। তুমি যারই কেশাকর্ষণ করো, সেই এসে আমাকে জানায়। নাহলে কি এসকল কাণ্ড বুঝতে পারতাম। তুমি তো বাপু মোটেও ভালো লোক নও। পর-নারী নিতে চাও, এমন তোমার অভিলাষ। ভাগ্যি শুনলাম এসব কথা। যদি তাঁর কুলের কেউ একথা শোনে, তবে যে নিন্দা রটবে। দীর্ঘশ্বাস ফেলো না। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদো না আর। আমার কাছে যে আছাড় খেয়ে পড়লে, তোমার মনের কথাটি বুঝেছি। আমার কথা শোনও মন দিয়ে। আর কখন এমনটি করো না। নন্দের কুলের গৌরব বিনষ্ট কোরো না। দ্বিজ চণ্ডীদাস বলেন, ও কথার কিছু মনে করতে নেই। নাগরীর প্রেমই যে বৈরী।

পদকর্তা:চণ্ডীদাস
রাগ:শ্রীগান্ধার
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:মুনমুন ঘোষ

সন্ধিনী

বড়াইর উক্তি -- শ্রীকৃষ্ণের প্রতি1